মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ৪১
নওরিন কবির তিশা
সময় যেন এক চলমান খরস্রোতা,যেন সোনালি ডানায় ভর করা কোনো দূরাগত পাখি,যা অবিরাম উড়ে চলেছে।থেমে নেই কোথাও, শুধু বয়ে চলেছে অচেনা গন্তব্যের দিকে। এইতো সেদিনই নির্ঝর আর ফারিনের বিয়ে থেকে ফিরল শিশিররা। ইতিমধ্যে একটি সপ্তাহ পার।
আজ প্রায় অর্ধমাস পর ভার্সিটির চৌহদ্দিতে পা রেখেছে শিশির।ক্লাস শেষে হালকা বাতাসের ঝাপটায় হেজাবের পাড় করতে করতে সে হেঁটে চলেছে বন্ধুদের সঙ্গে,ক্যাম্পাসের পুরনো পথ ধরে।কথা আর হাসির ফোয়ারায় ভিজে যাচ্ছে মুহূর্তগুলো।
হঠাৎ শিশিরের চোখ থমকে যায় ক্যাম্পাসের মেইন গেটের দিকে।বাইকের পাশে হেলান দিয়ে দাঁড়ানো এক সুদর্শন পুরুষাবয়বের দিকে, যেটা আর কেউ নয় তার একান্ত ব্যক্তিগত পুরুষ তার নাহিয়ান,তার পরনে সব সময়ের মতো একটা ব্লাক শার্ট যার বুকের কাছের বোতাম দুটো নিয়মমাফিক খোলা। হেলমেট এর মধ্য দিয়েও যেন গম্ভীর অথচ অবহেলাময় দৃষ্টি ছুঁয়ে যাচ্ছে বাতাস।
তাকে দেখে আশা কিছু একটা বলতে গিয়েই নিজের মুখ চেপে ধরে শিশিরের দিকে তাকায় তা দেখে সাইফ সজল লিসা হেসে কুটি কুটি। সাইফ চোখ টিপে বলে ওঠে—
—”ভাইরে ভাই! একটু দেখে শুনে কথা বলিস, না হলে আমাদের শিশির কিন্তু তোর ক*লি*জা ভুনা করে আমাদের দাওয়াত করে খাওয়াবে!”
সজল:”তাছাড়া আর কি?”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
লিজা:”যাই বলিস, শিশির, নাহিয়ান ভাইয়া কিন্তু রিয়েল লাইফ প্রিন্স চার্মিং।দেখ তোর ছুটির আগে এসেই দাঁড়িয়ে আছে! এরকম একটা হ্যান্ডসাম ছেলের এত কেয়ার এখনকার যুগে চোখে পড়ে না।”
আর এসব কথার ভেতরেও আনায়া যেন এক নিস্তব্ধ ছায়া হয়ে থাকে।ওর শুকনো মুখ, অবুঝ চোখ দেখে লিজা হালকা কৌতুক করে বলে,,
—”এই যে আরেক দেবদাসী, যখন রিদিত ভাই ওনার পিছন পিছন ঘুরে বেড়াতো তখন উনি পাত্তা দিতেন না আর এখন দেখো ভাইয়া ওর সামনে আসে না বলে সারাদিন মন মরা হয়ে থাকে!”
শিশির একবার আনায়ার চোখে চোখ রাখে।হয়তো মনের ভেতরে সেই অগোচর চাপা ব্যথাটা আরেকবার বাজে।সত্যিই, আনায়া যেন ফ্যাকাশে হয়ে গেছে এই ক’দিনে। না,না আজকেই শিশির একবার নাহিয়ান এর সাথে এই বিষয়ে কথা বলবে। অনেকদিন হলো এবার মনে হচ্ছে রিদিতের আনায়ার সাথে একবার দেখা করা উচিত।
সে সকলকে বিদায় জানিয়ে এগিয়ে গেল নাহিয়ানের দিকে। নাহিয়ান সামনে এসে সে মুচকি হেসে বলল,,
—”কি ব্যাপার আজকেও এখানে?”
নাহিয়ান:”কি আর করবো আমার পিচ্চি বউটা এই ভার্সিটিতে পড়ে তো!”
শিশির নাক শিটকে বলল,,
—”আপনার বউ পিচ্চি?”
নাহিয়ান:”হুম!”
শিশির:”ফর ইওর কাইন্ড ইনফরমেশন এই ভার্সিটিতে যারা পড়ে তাদের সবার বয়স ১৮ প্লাস তাই এখানে আপনার পিচ্চি বউকে খুঁজতে এসে ভুল করেছেন!”
নাহিয়ান কিছুটা ভেবেচিন্তে উত্তর দিল,,
—”তার বয়সও ১৮ প্লাস কিন্তু রাগ অভিমান আর ভুল বোঝারক্ষমতা আট বছরের বাচ্চা শিশুর মত!”
শিশির:”ওহ তাই নাকি?”
নাহিয়ান:”হ্যাঁ!”
শিশির কিছু বলার আগে নাহিয়ান ফের বলল,,
—”তা মিস অর মিসেস…”
সে কিছু বলার আগে শিশির বলল,,
—”মিস।”
নাহিয়ান:”ওওওও, তো মিস আমার বউটাকে দেখেছেন?”
শিশির:”না!”
নাহিয়ান বাচ্চাদের মত মুখ করে বলল,,
—”তাহলে আর কিইবা করা যাবে! আপনিই না হয় চলুন আমার সাথে!”
শিশির:”কোথায় যাব?”
নাহিয়ান:”যেহেতু আপনি মিস দ্যাট মিন্স আপনি আনম্যারিড আর আমার বউটাও ছোট, তাই চলুন আমরা দুজন ডেটে যায়!”
শিশির:”আপনার তো দেখছি সাহস মন্দ নয়! আমার হাজবেন্ড জানতে পারলে….”
ব্যাস নিজের কথাই নিজেই ফেসে গেল শিশির। নাহিয়ান বাঁকা হেসে বলল,,
—”আপনি না আনম্যারিড? তাহলে হাজবেন্ড কোথা থেকে এলো?”
শিশির ও কি কম যায়! সেও বলল,,
—”ফিউচার হাজবেন্ডের কথা বলেছি!”
নাহিয়ান:”বাব্বা হাজবেন্ডের উপর এত লয়ালিটি যে বিয়ের আগে থেকেই!”
শিশির:”জ্বী!”
নাহিয়ান:”আচ্ছা ম্যাম বুঝলাম আপনার সাথে কথাই পারা যাবে না! এজন্য বলছি এই রোদের ভেতর দাঁড়িয়ে থাকতে আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে তাই আপাতত ফিউচার হাজবেন্ডের কথা চিন্তা না করে প্রেজেন্ট হাজবেন্ডের কথাই ভাবুন! আর তাছাড়াও এই ব্যক্তিই আপনার পাস্ট প্রেজেন্ট ফিউচার সবটা জুড়ে আছে ইন ফ্যাক্ট মৃত্যুর পর হাশরও আপনার এই ব্যক্তিটির সাথেই হবে তাই আপাতত এনারই কেয়ার করুন!”
শিশির আর কিছুই বলল না। মুচকি হেসে গাড়ির পিছনে সিটে বসলো নাহিয়ানও মুচকি হেসে গাড়ি স্টার্ট দিল।
🌺🌺🌺
বাইক এসে থামে ঢাকার এক অভিজাত শপিং কমপ্লেক্সের সামনে।কমপ্লেক্সটার গেটে ঝলমল করছে সোনালি অক্ষরের নামফলক,আর কাঁচের দরজায় প্রতিফলিত হচ্ছে দুপুরের প্রখর রৌদ্রকিরণ।শিশির কিছুটা অবাক কন্ঠ শুধালো,,
—”এখানে কি?”
নাহিয়ান:”দেখি কি করা যায়?”
দুজনই কমপ্লেক্সের ভেতরে ঢুকল।বিলাসী সাজে মোড়া শপিংমলের মেঝেতে পা রাখতেই ঝলমলে আলো ছড়িয়ে পড়ল চারপাশে।একটা স্টাফ ছুটে এসে নাহিয়ানের সামনে দাঁড়িয়ে আদবের সঙ্গে বলল,,
—”জি স্যার, কী করতে পারি আপনাদের জন্য?”
নাহিয়ান ঠান্ডা কণ্ঠে বলল,,
—”এই মলের এক্সক্লুসিভ ইউনিটে যা যা লিমিটেড এডিশন, সিলেক্টেড ডিজাইনার কালেকশন আছে,সব দেখান।”
স্টাফ মাথা নত করে জ্বী স্যার বলে ভিতরে চলে গেল।
শুরু হলো রাজকীয় শপিং।ডিসপ্লের পর ডিসপ্লে সাজানো হতে থাকল একের পর এক সাজ।সাজানো হলো শিশিরের জন্য ড্রেসের পাহাড় যেখানে রাজকীয় আর দৈনন্দিনের মিশেলে গড়ে তোলা এক wardrobe। শাড়ি গাউন ফ্রক থেকে শুরু করে কুর্তি, প্লাজো ল্যাগিংস সবকিছু।
শিশির হতবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল।প্রায় ১৮০টা ড্রেস দেখানো হলো।আর প্রতিটি ড্রেসের সাথে নিখুঁত ম্যাচিং হিজাব বাছাই করে কিনল নাহিয়ান,সাটিন, জর্জেট, নেট, সিল্ক, কটন—যা যা চাই, সব। শেষমেষ শিশির বেশ রেগে গিয়ে বলল,,
—”আপনার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে? এত ড্রেস দিয়ে আমি কি করবো শপিংমল খুলব নাকি?”
তবে নাহিয়ান তার কথায় পাত্তা না দিয়ে এগুলোর অর্ডার কনফার্ম করে বিল মিটিয়ে বলল,,
—”তাহলে কালকে সকালের ভিতরেই যেন এগুলো আমার বাসায় ডেলিভারি হয়ে যায়!”
পুরো কমপ্লেক্সের সবাই হতো হতবিহ্বল। একটা দুইটা ড্রেস নয় একসাথে ১৮০ খানা ড্রেস সে সাথে ম্যাচিং হিজাব। একজন স্টাফ ছুটে এসে বলল,,
—”ওকে স্যার আপনি বললে আজকে রাতের ভিতরেই ডেলিভারি হয়ে যাবে!”
—”অ্যাজ ইয়োর উইস বাট আমার কালকে সকালের ভিতরেই চাই!”
—”ওকে স্যার!”
তারা বের হয়ে গেল। শিশিরের বিস্ময় যেন কাটছেই না, একটা নয় দুইটা নয় একেবারে ১৮০ খানা ড্রেস, এত ড্রেস তো মনে হয় ঢাকার অনেক ফ্যাশন বুটিকেও একসাথে পাওয়া যাবে না, তবে নাহিয়ানের এরকম কাজের সাথে শিশির পরিচিত কিন্তু আজকের কাজটা একটু বেশিই গড়বড়ে, যদিও এরকম ঘটনা ইলমা আর সাজিদের বিয়ের সময়ও ঘটেছিল!
শিশির যে ড্রেসটাতেই হাত রেখেছিল নাহিয়ান সেই ড্রেসটাই প্যাক করে নিয়ে এসেছিল, এমনকি ফারিনদের বিয়ের সময়ও, নাহিয়ান মুখে বলেছিল আচ্ছা থাক লাগবে না, কিন্তু প্রতিদিন শাওয়ার থেকে বের হয়েই নিজের বিছানার উপর পাওয়া এক একটা নতুন নতুন ড্রেসের কালেকশন বারংবার প্রমাণ করছিল এগুলো নাহিয়ানেরই কাজ।
তবে শিশির আর কোন প্রশ্ন করল না। শপিং কমপ্লেক্স থেকে এখনো পর্যন্ত অনেকবার একই প্রশ্ন করেছে সে কিন্তু প্রতিউত্তরে নাহিয়ান প্রতিবারই নির্বিকার। শেষমেষ বিরক্ত হয়ে সেও আর প্রশ্ন করলো না। চুপচাপ গিয়ে বাইকের পিছনে বসলো, নাহিয়ানও মুচকি হেসে বাইক স্টার্ট দিল।
ঘড়ির কাটায় হয়তো রাত সাড়ে আটটার কিছু বেশি বাইক ছুটছে আপন গতিতে, আর তার ওপর বসে আছে এক জোড়া কপোত-কপতি, হৃদয়ে বেড়ে যাচ্ছে উষ্ণ প্রেম-পরশ, নিস্তব্ধ প্রকৃতির মৃদুমন্দ বাতাস ছুঁয়ে যাচ্ছে তাদের এক আবেশীয় ভালবাসায়, হৃদয়ে বয়ে যাচ্ছে প্রেমময় দোলাচল।একজোড়া হৃদয়ের গল্প লেখা হচ্ছে নিঃশব্দে।
এক অদ্ভুত ভালোবাসার ঢেউ বয়ে যাচ্ছে দু’জনের মাঝখান দিয়ে।ঢাকার কোলাহল পেরিয়ে তারা পৌঁছেছে শহরের এক প্রান্তিক কোণে।একটা নির্জন প্রকৃতি বেষ্টিত পথ ধরে। ঢাকা শহরেও যে এমন নির্জন এলাকা আছে তা কল্পনাতীত ছিল শিশিরের। সে বুঝতে পারছে না নাহিয়ান তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে হঠাৎই বাইক থামে, দূর থেকে দেখা যাচ্ছে একটি নিয়ন আলো।
এবার শিশির বেশ অবাক কন্ঠে শুধালো,,
—”কোথায় আসলাম আমরা?”
নাহিয়ান:”একটি নির্জন প্রেমময় প্রহর উপভোগ করতে!”
শিশির আর কোন কথা বলল না। নাহিয়ান টুক করে নিজের রুমালটা দিয়ে শিশিরের চোখ বেঁধে বলল,,
—”চলো তোমার জন্য অপেক্ষা করছে একটা ছোট্ট উপহার!”
শিশির বুঝতে পারল না। নাহিয়ান করছেটা কি? কিন্তু সে নিজের থেকেও বেশি বিশ্বাস করে নাহিয়ানকে! তাই আর প্রশ্ন না করে সে হেঁটে চলল নাহিয়ানের সাথে।কিছুদূর যাওয়ার পর নাহিয়ান থামলো এক আলোকময় প্রান্তে।, তারপর শিশিরের চোখ থেকে বাঁধন আলাদা করে তার কানের কাছে ফিসফিস করে বলল,,
—”এবার ধীরে ধীরে চোখটা খুলুন ম্যাম!”
ধীরে ধীরে অক্ষীপল্লব মেলে তাকালো শিশির।মুহূর্তেই তার দৃষ্টি আটকে গেল সামনের দৃশ্যে।এ যেন কোনো স্বপ্নের দৃশ্য নয় বরং স্বপ্নের থেকেও বেশি মৃদু, বেশি নরম, অধিক জীবন্ত।
চোখের পাতার ফাঁক দিয়ে ভেসে আসা সেই আলোয় তার হৃদয় যেন কেঁপে উঠল।এক অজানা আর অপ্রস্তুত শিহরণ ছড়িয়ে পড়ল তার রক্তের প্রতিটি কণায়।সে বুঝতে পারল না, আনন্দে তার বুক ভরে যাচ্ছে,নাকি এই নিস্তব্ধ সৌন্দর্যের কাছে নিজেকে ক্ষুদ্র মনে হচ্ছে।
সামনেই নদীর ধারে মাথা নত করে দাঁড়িয়ে আছে একটি বৃদ্ধ উইলো গাছ।যার বাঁকানো ডালপালাগুলো নদীর জলে ছায়া ফেলেছে, যেন সে নিজেই নিজের জীবনের গল্প শুনছে পানির কাননে। পাতাগুলো যেন সোনালি-সবুজ আলোয় ঝলমল করছে,আর সেই আলো নদীর কালো মখমলের মতো শান্ত জলে প্রতিফলিত হয়ে তৈরি করছে এক স্বপ্নীল আবেশ।
গাছের ডালে ঝোলানো কাঁচের লণ্ঠনগুলো টিমটিম করে জ্বলছে।প্রতিটি লণ্ঠনের ভেতর একটি করে মোমবাতি।যার নরম, উষ্ণ আলো চারপাশের অন্ধকারে এক নরম মায়ার রেখা এঁকে দিচ্ছে।মৃদু বাতাসে সেই লণ্ঠনগুলো দুলছে,মনে হচ্ছে যেন তারা রাতের নীরবতায় এক অজানা সুরে সাড়া দিচ্ছে।
গাছের নিচে কাঠের ছোট টেবিল আর চেয়ার।টেবিলের উপর কাঁচের পাত্রে একটি বৃহৎ মোমবাতি জ্বলছে যেন কোনো নিঃসঙ্গ পাঠকের জন্য সাজানো এক শরণার্থী আলোর আশ্রয়। সব মিলিয়ে এ যেন পৃথিবীর বুকে নেমে আসা এক টুকরা জান্নাতি খন্ড।
শিশির মুখে হাত চেপে বিস্ময় ভরা দৃষ্টিতে এগিয়ে যায় সেদিকে। সামনেই কাঠের টেবিলটির উপর দুটি কাঁচের জার আর তার ভেতরে অসংখ্য জোনাকি পোকা মৃদু আলো ছড়িয়ে মুক্তির আকুতি জানিয়ে কাঁপছে।শিশির ভির পায়ে এগিয়ে গিয়ে নরম হাতে জারগুলো খুলে দিল।আর মুহূর্তেই সেই জোনাকিগুলো চারপাশে ছড়িয়ে গেল।আলোয় আলো মিশে রাতকে আরও মায়াবী করে তুলল।নদীর জলে নেমে এল তারার মেলা,আর গাছের ডালে বাতাসের তালে তালে দুলে উঠল সেই আলোয় ভেজা নীরবতা।
ঠিক তখনই ফিসফিসিয়ে বেজে উঠল সুর…
🎶 জ্বলে জ্বলে জোনাকি দিয়ে যায় আলো……
আরো বেশি তোমাকে বেসেছি যে ভালো…..
জন্ম জনম তোমাকে দেখেও……
ভরবে না আমার এ নয়ন…….🎶
শিশির মুগ্ধ নয়নে পিছনে চেয়ে দেখে গিটার হাতে গানটি গাইছে নাহিয়ান, তবে এখানেই শেষ নয় বাংলা গানের সমাপ্তি চরন টুকু শেষ করেই সে গেয়ে ওঠে এক পুরাতন প্রেমময় হিন্দি গান,,
মাঝরাতের রোদ্দুর পর্ব ৪০
🎶Rehte ho aankhen Jo tum paas mere…
Tham jaaiye paliye wahi bas mein ye socho….
Socho main tham jaaye paliye…
Pass mere jab ho tum…..
Socho main tham jaaye paliye…
Pass mere jab ho tum…..
Jeene laga hoon…..
Pahle se jyada….
Pahle se jyada….
Tumpe Marne laga hoon…🎶