মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ২৬

মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ২৬
ইশরাত জাহান

সকাল বেলা,
এগারোটার দিকে ফ্রেশ হয়ে বাইরে বের হয় মায়া।একটি জর্জেট শাড়ি পরেছে সাথে হালকা গহনা।ঘর থেকে বেরিয়ে নিচে তাকিয়ে দেখছে সবার কি রিয়েকশন।রাজ এখনও রেডি হচ্ছে।নিচে সোফায় বসে আছে মালিনী।সোনালী ও জারা বসে বসে কিছু পরামর্শ দিচ্ছে।মায়া এগুলো শুনে হালকা হাসলো।রাজ বেরিয়ে এসে মায়াকে গেটের সামনে দাড়িয়ে থাকতে দেখে বলে,”এখানে দাড়িয়ে কি করছো?”

মায়া একবার রাজের দিকে তাকিয়ে আবার জারার দিকে তাকালো।তারপর ডেভিল হাসি দিয়ে রাজকে ঘরে নিয়ে যায়। গাঢ় লাল রংয়ের লিপস্টিক ঠোঁটে দিয়ে মায়া তাকায় রাজের দিকে।রাজ ভ্রু কুচকে মায়াকে বলে,”বউ আমার সামনে কেমিক্যাল মুক্ত থাকে আর বাইরে বের হলে কেমিক্যাল যুক্ত থাকে কেনো?”
মায়া কোনো উত্তর না দিয়ে সোজা রাজের গালে লিপস্টিকের ছাপ একে দিলো।মেঘ না চাইতে জল পেলো রাজ তাই সে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো।মায়া বলে,”চলুন আমার সাথে।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রাজ কিছু বলার আগেই মায়া রাজের হাত ধরে নিয়ে যায় নিচে।সিড়ি দিয়ে নামার সময় রাজ সোফায় বসা সবাইকে দেখে বলে,”আমার ইজ্জতের ফালুদা এভাবে না করলেই কি হতো না,বউ?”
মায়া বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে থাকে রাজের দিকে।রাজ ভয় পাওয়ার অভিনয় করে বলে,”ওকে ওকে।আমার বউ আমাকে যেভাবে সাজাবে আমি তো তেমনই থাকবো।”
মায়া ও রাজকে নিচে নামতে দেখে সবাই তাকিয়ে থাকে।জারা রাজের গালে লাল লিপস্টিক দেখে আহত সুরে বলে,”ওহ বেইবী!তোমার স্কিনে লাভ স্পট শো হয়ে আছে।”
রুদ্র খোঁচা মেরে বলে,”যেটা তোর দেওয়ার ইচ্ছা ছিলো।”
জারা আহত কণ্ঠে বলে,”ইয়াহ।”

মায়া তার কাজে সফল।তাই এখন সবাইকে দেখিয়ে নিজের শাড়ির আঁচল দিয়ে রাজের গাল মুছতে মুছতে বলে,”এভাবে বউয়ের দেওয়া উপহার সবার সামনে প্রকাশ করতে নেই।আপনার নেকু মায়ের হার্টে লাগে তো।”
মালিনী তেড়ে এসে বলেন,”মুখ সামলে বলো।আমার কেনো কষ্ট হবে?”
“এই যাহ!আমি আপনার কথা কখন বললাম?আমি তো আমার স্বামীর আরেক মায়ের কথা বলেছি।যে সারাক্ষণ বেইবী বেইবী করতে থাকে।আমার আরেক শাশুড়ি।”

মাহমুদ সরদার রুম থেকে মাত্র বের হলেন।এমন এক কথা শুনে ওনার বিষম পেলো।খুক খুক করে কেশে ওঠেন তিনি।সিয়া ও হিয়া হেসে দেয়।রাজ মাহমুদ সরদারের দিকে তাকিয়ে বলে,”নাতি নাতনীর মুখ দেখার বয়সে যদি তার কচি বউ জুটে লোকে কি বলবে!মন্ত্রীর বাবার চরিত্রে সমস্যা আছে।”
মাহমুদ সরদার চোখ রাঙিয়ে বলেন,”বাবা হই তোমার।শব্দচয়ন ঠিক করো।”
“আমার শব্দচয়ন ঠিক আছে।তোমার বউমার কথার প্রেক্ষিতে তো এমনটাই আভাস পায় বাবা।”
মালিনী তেতে ওঠেন।মায়াকে বলেন,”এই শিক্ষা পেয়েছো তুমি?কিভাবে কথা বলতে হয় জানো না?তোমার জন্য বাড়ির লোকজন উচ্ছন্নে।”

মায়া তেজ দেখিয়ে বলে,”আমি আর যাই শিখে থাকি না কেনো কারো বরের দিকে নজর দেওয়া শিখিনি।যেটা এই পরিবারের অনেকেই করে এসেছে।বলে দিবেন আপনার না হওয়া বৌমাকে আমার বরের দিকে যেনো শকুনের দৃষ্টি না দেয়।আমি সেই দৃষ্টিতে ছুরি ঘোরাতে জানি।”
জারা ভয় পেয়ে পিছিয়ে যায় সোনালীর পিছনে।সোনালী জারার হাত ধরে শান্তনা দেয়।মাহমুদ সরদার বলেন,”মাথা ঠান্ডা রাখো সবাই।ব্রেকফাস্ট করতে হবে তো।”
রাজ নিজেও তাড়াহুড়া দিয়ে বলে,”হ্যাঁ বাবা।আমাকেও আজ মিটিংয়ে যেতে হবে।”
বলেই বসে পরে চেয়ারে।সোনালীর ইশারা পেয়ে জারা এগোতে যাবে রাজের পাশের চেয়ারের দিকে ওমনি মায়া তার বাম পা এগিয়ে দিয়ে জারাকে ফেলে দেয়।জারা ব্যালেন্স হারা হয়ে পড়ে যায়।কোমড়ে একটু ব্যাথা পায়।সোনালী এসে ধরে জারাকে।রাজ ও বাকি সবাই ঘুরে তাকিয়ে দেখে।রাজ বিড়বিড় করে বলে,”আমার বউ আমার থেকেও অ্যাডভান্স।”

টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছে সবাই।সবার মুখেই নিরবতা।হিয়ার খাওয়া শেষ।হাত ধুয়ে পরীক্ষার কাগজপত্র নিয়ে বের হতে নিলে রুদ্র বলে ওঠে,”দ্বারা একটু।আমিও যাবো বাইরে।তোকে দিয়ে ওদিক থেকেই আমি যাবো।”
হিয়া না বলতে চেয়েছিলো কিন্তু মাহমুদ সরদার বলেন,”এটা তো ভালো। যাও হিয়া মামণি।রুদ্র আজকে তোমাকে দিয়ে আসবে।”

সিয়া ফোড়ন কেটে বলে,”আমাকে একটু এভাবে এক্সামে নিয়ে যেতে তো চাও না।”
“তোর তো আজ এক্সাম নেই।থাকলে তোকেও নিয়ে যাবো।”
বলেই হিয়াকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে রুদ্র।সিয়া বিজ্ঞান শাখায় তাই আজ তার ছুটি।হিয়া মানবিক শাখায় তাই তার পরীক্ষা আছে।গাড়িতে বসে আছে হিয়া ও রুদ্র।হিয়া বিড়বিড় করে পড়াগুলো মনে করার চেষ্টা করে।রুদ্র বলে,”এত প্যারা নিচ্ছিস কেনো?তুই তো এমনিতেও ভালো রেজাল্ট করবি না। আর তোর ভালো রেজাল্ট না হলেও আমার সমস্যা নেই।”

হিয়া চশমা ঠিক করে বলে,”আপনার সমস্যা আছে কি না নেই তা দিয়ে আমি কি করবো,রুদ্রভাই?”
“এই ভাই শব্দটা তোকে কে বলতে বলেছে?”
“চাচাতো ভাইকে ভাই বলবো না তো কি দাদু বলে ডাকবো?”
“দিলি তো আমার প্রেমিক মনের বারোটা বাজিয়ে।কোথায় ভাবলাম একটু মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে জার্নিটা অনুভব করবো।”

“কি বলুন তো!আপনার সাথে থাকলে আমার মুখ থেকে মিষ্টি মধুর আলাপ আসবে না।”
“তাহলে কার সাথে থাকলে আসবে?ওই তারেকের সাথে।”
হিয়া প্রতিউত্তর না করে জানালার দিকে তাকিয়ে আছে।রুদ্র গাড়ি থামিয়ে দিলো।গাড়ি এসে থেমেছে পরীক্ষার সেন্টারে।হিয়া রুদ্রের দিকে না তাকিয়েই চলে যায় কলেজের দিকে।রুদ্র তাকিয়ে আছে হিয়ার চলে যাওয়ার দিকে।হিয়ার প্রতিটি পা চালানোতে বাড়িয়ে দিচ্ছে তাদের দূরত্ব।সেদিকে তাকিয়ে রুদ্র বলে ওঠে,”আমার নষ্ট জীবনের সুখের ছোঁয়া হয়ে জন্ম নিয়েছিস তুই হিয়াপাখি।তুই বিহীন আমি শূন্য তুই হবি আমার পূর্ণ।”
বলেই চোখের কোনা থেকে পানির বিন্দু মুছে গাড়ি চালায় রুদ্র।রুদ্রের গাড়ি স্থান পরিবর্তন করতেই পিছনে ঘুরে দাঁড়ায় হিয়া।বলে ওঠে,”এই নষ্ট পুরুষের জন্যই আমার মনে জন্ম নেয় কষ্ট।ভালোবাসা পবিত্র কিন্তু অপবিত্র ব্যাক্তিকে ভালোবাসার ফল বিষে পরিপূর্ণ।এই বিষের স্বাদ আমি চাই না গ্রহণ করতে।তাই তো চাই আমি আপনার থেকে দূরে থাকতে।”

বলেই নিজের পরীক্ষার রুমে প্রবেশ করে হিয়া।
অফিসে নিজের কক্ষে বসে আছে রাজ।একটু পর তার মিটিং।মিটিং করা হবে একটি জায়গা ঘিরে।ছোটখাটো একটি হোটেল পুরো আড়াই কাটা জমির উপর বানিয়ে রেখেছে এক বৃদ্ধ।জমিটি তার নিজের।গরীব মানুষ টুকটুক করে টাকা গুছিয়ে এই জমি কিনেছিলো।এখনও বাড়ি করতে পারেনি।সেখানে নিজস্ব হোটেল খুলে দিনে রাতে সিঙ্গারা পুরি আরো কিছু নাস্তা বানিয়ে বিক্রি করেন তিনি।তার পাশেই একটি বার সেন্টার। বারটি আরো বড় করে গড়া হবে।আশেপাশের লোকজনের থেকে তাদের জমি কিনে নিয়েছে।কিন্তু বৃদ্ধ লোকটি তার জমি বিক্রি করতে না করছেন। বাকিরাও চাননি বিক্রি করতে কিন্তু টাকার চেহারা দেখে বিক্রি করে দেন।

বৃদ্ধ লোকটির কথা,”এইটুকু জমির উপর আমি কুঁড়েঘর বানালেও আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ বেড়ে উঠবে।কিন্তু এখন যদি আমি এই জমি বিক্রি করি আমি কোথায় জায়গা জমি কিনবো আর বাড়ি করবো কিভাবে?আজকাল দালাল ধরা লাগে আবার জমির দাম চওড়া।”
বৃদ্ধটির কথায় সহমত পোষণ করেন অনেকে।কিন্তু তারা বারের মালিকের উপর কথা বলতে পারেন না।কারণ এই বারের মালিক অনেক শক্তিশালী।তার সাথে ওঠানামা করে অনেক নেতা।সবাই চুপ থাকলেও গুটি কয়েকজন মিলে বৃদ্ধ লোকটির হয়ে আবেদন করে রাজের কাছে।রাজের সম্পর্কে তার এলাকার লোকজন অবগত।রাজ সবসময় সঠিক বিচার করে এসেছে। যার যেটা প্রাপ্য নেয় তাকে সেটা বুঝিয়ে দেয়।

রাজ ও বারের মালিক মিলে মিটিং করছে।দুজনের কথাবার্তা চলছে।কথাবার্তার এক পর্যায়ে বারের মালিক রাজের টেবিলের উপর একটি বড় ব্যাগ রাখে।যেটা খুলে রাজকে দেখিয়ে দেয় মোটা অঙ্কের টাকা।রাজ টাকাগুলো দেখলো।কিছু বললো না।লোকটি বলে,”এখানে প্রায় দশ লাখ টাকা আছে।আপনি যদি চান আরো বাড়িয়ে দিবো।কিন্তু এখানে বড় বার সেন্টার খুলতে আটকাবেন না দয়াকরে।এখানে বার হলে আপনার আমার সবার লাভ হবে।বিদেশ থেকে সুন্দরী মেয়েরাও আসবে।বেনিফিট পাবেন আপনি।”

রাজ মুখের গভীর চাহনি দিয়ে দেখছে লোকটিকে।কোনো কথা এখনও বলছে না।তবে তার মুখে ফুটে আছে এক অদ্ভুত হাসি।লোকটি আরো লোভ দেখাতে বলে,”আপনি চাইলে এই বারের শেয়ার সার্ভিসটা পেতে পারেন।মন্ত্রী বলে কথা।আপনার সব রকম ডিমান্ড পূরণ করব।এই বার খুললে দেশ বিদেশ থেকে বড় বড় লোকেরা আসবে।আমার বারের উন্নতি হবে।এতে আপনিও হাফ শেয়ার পাবেন।অফারটা ভালো না বলুন?ওই বুড়োটা বুঝলো না।আরে ওকে তো জমির আসল দামের থেকেও বেশি টাকা দিচ্ছিলাম।সে না নিয়ে ওখানে জেদ ধরে আছে।এভাবে করলে আমি উন্নতি করতে পারবো না তো।”

বলেই টাকার ব্যাগটি আরো একটু এগিয়ে দিলো রাজের দিকে।রাজ টাকাগুলো হাতে নিয়ে দেখলো।মাত্র ব্যাংক থেকে আনা টাকার ঘ্রাণ আসছে।লোকটি রাজের দিকে তাকিয়ে জয়ের হাসি দিতে থাকে।কিন্তু হঠাৎ রাজ টাকাগুলো ব্যাগে রেখে টেবিলের উপর জোরে শব্দ করে দুই হাত ভড় করে দাড়িয়ে পড়ে।লোকটি একটু অবাক হয়।রাজ ঠোঁটে হাসি বজায় রেখেই লোকটির দিকে এগিয়ে আসে।লোকটির কলার চেপে ধরে টানতে টানতে নিয়ে আসে বাইরে।মুখে তার কাঠিন্য ভাব।অফিসের বাইরেই সাংবাদিক ঘেরাও করে ছিলো।এই যে বার সেন্টারের জন্য এক বৃদ্ধকে প্রতিদিন আতঙ্কে থাকতে হয় এটা পুরো মিডিয়া জানাজানি হয়ে গেছে।বারের মালিককে টানতে টানতে বাইরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় রাজ।

সাংবাদিক এগুলো দেখেই এগিয়ে আসে।ভিডিও হতে থাকে রাজের এই কর্ম।সাংবাদিক মাইক ক্যামেরা নিয়ে রাজের সামনে আসতেই রাজ চেঁচিয়ে বলে ওঠে,”কোনো প্রকার ঘুষ এই শাহমীর রাজ গ্রহণ করে না।এই লোক আমাকে টাকার ঘুষ দেখিয়ে বার ওপেনিং করতে চায়।আপনারা বলুন কি করা উচিৎ এই লোকটিকে?একজন গরীব লোক ওই এলাকায় টাকা জমিয়ে অল্প সংখ্যক জায়গা কিনে নেয়।শুধুমাত্র নিজের পরিবারের একটা ভবিষ্যৎ গড়ে উঠবে।কিন্তু এই লোভী মানুষ তার সুখ কেড়ে নিতে ব্যাস্ত।এই শাহমীর রাজ কারো হকের দিকে নজর দেয়নি আর দিবেও না।আপনারাই বলে দিন কারো কষ্টের গড়া সম্পদের দিকে হাত বাড়ানো কি উচিত?”
সবাই চিল্লিয়ে বলে ওঠে,”না।”

রাজ সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে,”উকি জনগণের কষ্টের সম্পদ নিজের শক্তি দ্বারা একা দাপট দেখিয়ে ব্যাবহার করতে চায়।আপনারা তো অসংখ্য মানুষ।আপনাদের কি একত্রিত হয়ে লড়াই করার এবিলিটি নেই?আপনারা এক হয়ে যদি এই শক্তিশালী লোকদের দিকে রুখে দাড়ান তাহলে তো এরা নিজেদের শক্তি দেখাতে পারে না।আপনারা আজকাল কি করেন? কারো কোনো ক্ষতি হলে ভিডিও করে তার ভাইরাল করেন।কিন্তু এই ভিডিও না করে একটু সময়মত প্রতিবাদ করলে আজ মানুষ ক্ষতির দৃশ্য না দেখে অন্যায় থেকে প্রতিরোধের দৃশ্য দেখতো।আপনারা সবাই সুবিধাবাদী।কেউ একটু আগ বাড়িয়ে সাহায্য করেন না।

বরং নিজে ভিডিও করে নিজেদের অনলাইন ইনকাম এর ব্যাবস্থা করেন।আপনাদের কমেন্ট বক্সে দেখা যায় কত মানুষের হাহাকার কত মানুষ আমাদের নেতাকে গালাগালি করেন তো কেউ দেশের আইন নিয়ে।কিন্তু আপনারা কি করেন?একবারও কি এগিয়ে এসেছেন বাঁচাতে।এই বৃদ্ধটিকে যে দুই সপ্তাহ ধরে উত্যক্ত করা হয় এটা কি কেউ একবারও প্রতিবাদ করেছিলো?করেনি।বরং ওই হোটেলে প্রতিদিন সবাই নাস্তা করে চুপ করে বেরিয়ে আসতো।সবারই আলাদা আলাদা স্বার্থের টান আসে।আপনারা নিজেরাও নিজের স্বার্থে ওখান থেকে সরে যান।কারণ প্রতিবাদ করলে তো আপনিও পড়তে পারেন কোনো বিপদের মুখে।এখন আমি আপনাদের বলছি।আপনারা সবাই মিলে শাস্তি দিন এই লোকটিকে। যাতে করে আর কোনোদিন আপনাদের সামনে দাপট দেখাতে না পারে। আর হ্যাঁ আপনাদের জমি আপনাদের থাকবে।এখানে আছে হাজারো গরীব কর্মীদের পরিশ্রমের ফল।দিন এনে দিন খাওয়া লোকদের হক এটা।উনি সেই হক নষ্ট করতে চেয়েছিলো।তাই আপনারা এখন তাকে শাস্তি দিবেন।”

সবাই মিলে হাত তালি দিয়ে মারতে শুরু করে বারের মালিককে।সাংবাদিক ভিডিও করতে থাকে।বাইরে রোদ্রের তাপ বেড়েছে।রাজের মুখের সামনা সামনি স্থির হয়ে আছে সূর্য।দূরে থাকা সূর্যের তাপ রাজের মুখে এসে ঘাম সৃষ্টি করছে।সাদা পাঞ্জাবি পরা রাজের পিঠ ঘেমে একাকার।হঠাৎ অনুভব করলো একটি হাত তার আচল দিয়ে মুছে দিচ্ছে রাজের গাল।রাজ হালকা তাকিয়ে দেখলো হাতের মালিককে।হাতের মালিক আর কেউ না মায়া
।রাজের ঘাম নিজের শাড়ির আঁচল দিয়ে মুছে মিষ্টি হেসে বলে,”আমার জনাব দেখছি অন্যায়ের প্রবিতাদ করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে গেছে।তার এই ক্লান্তিকে একটু প্রশান্তি দিতে চায় তাহার জনাবা।”
রাজ স্মিত হেসে তাকিয়ে থাকে মায়ার দিকে।মায়া রাজের মুখের ঘাম মুছে দিতে থাকে।দুজন সাংবাদিক রাজ ও মায়ার এই মুহূর্তটি ক্যাপচার করে নেয়।তারা প্রশ্ন করে,”স্যার অ্যান্ড ম্যাম আপনারা মাইন্ড না করলে বলবেন আপনাদের মধ্যে কি সম্পর্ক?”

রাজ মায়ার কাধে হাত রেখে বলে,”she is my beloved wife.”
সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।প্রশ্ন করে,”আপনারা কবে বিয়ে করেছেন?”
“কাল।রিসেন্টলি পার্টি অ্যারেঞ্জ করা হবে।কিন্তু আমার বোনেদের পরীক্ষা চলছে। তাই আপাতত এটা নিয়ে তোলপাড় করতে চাই না। বোনেদের পরীক্ষার শেষে আমরা ধুমধাম করে আয়োজন করে আপনাদের দাওয়াত দিব ইন শা আল্লাহ।”

মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ২৫

সবাই হাত তালি দিয়ে কংগ্রাচুলেশন জানিয়ে দেয়।টিভিতে ফুটে উঠেছ মায়া ও রাজের এই মুহূর্তগুলো।লোক জানাজানি হয়ে গেলো মায়া ও রাজের বিয়ে নিয়ে।
টিভিতে মায়া ও রাজের এই নিউজ দেখার সাথে সাথেই মস্তিষ্ক ফাঁকা হতে থাকে এক আগন্তুকের।রিমোট ছুড়ে মারে টিভির দিকে।নিজেকে হিংস্রভাবে তৈরি করেছে।সামনে থাকা ছোট টেবিলে দুই হাত রেখে বলে,”নো জানেমান।তুমি অন্য কারো হতে পারো না।তুমি শুধু আমার।আমি আসছি।তোমাকে আমার করতে আসছি জানেমান।মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি আবারও।এবার আর তোমাকে ছাড়ছি না।”

মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ২৭