মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ৬১
ইশরাত জাহান
শাহানা পারভীনের কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে মায়া।খাটে হেলান দিয়ে বসে আছেন শাহানা পারভীন।রাজ যাওয়ার পর থেকে শাহানা পারভীনকে নিয়ে মায়া নিজের বাসায় থাকে।সরদার বাড়িতে থাকার জন্য সবাই অনেক অনুরোধ করেছিলো।কিন্তু শাহানা পারভীন নিজের আত্মসম্মানের কথা চিন্তা করে থাকেন নি।তার ভাষ্যমতে,”যে বাড়িটা এখন আমার মেয়ের শশুরবাড়ি যে বাড়িতে আমার পরিচয় নিঃশেষ হয়ে গেছে,সেই বাড়িতে থাকার কোনো মানে নেই।আমি আমার মেয়ের কষ্টে গড়া বাড়িতেই থাকবো।”
অগত্যা কেউ কথা বাড়ালো না।এই একমাস শাহানা পারভীন আর মায়া একসাথে সময় কাটিয়েছে।কাল রাজ আসবে।এছাড়া সিয়াকে দেখতে আদ্রর দাদা দাদী আসবেন।তাই মায়া সরদার বাড়িতে চলে যাবে।শাহানা পারভীনের হাঁটুর উপর হাত রেখে তার উপর মাথা রাখা।ওই অবস্থায় মায়া বলে,”কাল মন্ত্রী মশাই আসবে।আর তারপর তোমার সাথে এভাবে থাকতে পারবো না।তুমি কি একা একা থাকতে পারবে মা?”
মায়ার মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে শাহানা পারভীন বলেন,”কেনো পারবো না?একটা না একটা সময় তো আমাদের একাই থাকতে হবে।আজ নাহয় কাল একা থাকার জন্য নিজেকে অভ্যস্ত করা উচিত। তুই নিজেও তো একা ছিলি।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“না মা।আমি একা ছিলাম না।আমার সাথে হাসি ছিলো।তোমার মত করে আমার ঢাল হয়েছিলো।কিন্তু আফসোস!ছেলের প্রতারণার শিকার হলো।এমন সন্তান না জন্মানো ভালো,যে তার মাকে খুন করে।”
শাহানা পারভীনের চোখের সামনে হাসির মুখটা ভেসে উঠলো।কখনও ভুলতে পারবে না হাসিকে।হাসি ছিলো বলে মায়া আজ নিজেকে সামলে নিতে পেরেছে।শাহানা পারভীনের মত করে মায়ার সাথে ছিলো হাসি।একসাথে তিনজনকে সামলানো কম কিছু না।কিছু একটা ভেবে মায়া বলে,”আচ্ছা মা ওইদিন রাতে তুমি সরদার বাড়িতে কেনো গিয়েছিলে?মানে তুমি তো বলেছিলে আমাদের শত্রুদের আগে শাস্তি দিয়ে তারপর ঐ সিক্রেট রুমে যাবে।কারণ ওই রুমের কথা কেউ জানে না।ফর্মুলা ওই রুমটাতেই সেফ।তাহলে আমাদের কাউকে না জানিয়ে কেনো গিয়েছিলে তুমি?”
শাহানা পারভীনের মনে পড়ে গেলো পুরোনো কথা।বলতে থাকেন সেদিনের ঘটনাগুলো।
“তুই ঢাকায় আসার পর শাহমীর আসে।ঠিক তার কয়েক মাস পর শাহমীর চলে যায় সিলেট।বড়ভাই(মাহমুদ সরদার)আমার কাছ থেকে তোর খোঁজ নিতেন। শাহমীর আর তোর বিয়ে নিয়েই কথা বলি আমরা।শাহমীর গ্র্যাজুয়েশন করেছে আর তোর আঠারো বছরে পা দিলে তোদের বিয়ে দিবো।কিন্তু এর মধ্যে শাহমীরের ইচ্ছা ছিলো দেশের সেবা করাটা।মানে মন্ত্রী হবে।আইডল হিসেবে নিজের নানাকে দেখেছিলো।কিন্তু চলাফেরার ধাচ ছিলো তোদের দাদুর মত।যেহেতু তখন দেশে এসেই রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে পড়ে তাই ওকে বেশি প্রেশার দিতে চাইনি। আমিই বড়ভাইকে বলেছিলাম যে আগে শাহমীর ওর সব ঝামেলা শেষ করুক তারপর বিয়ের কথা উঠবে। শাহমীর তো তোকে দেখার জন্য উতলা হয়ে থাকতো।প্রায় প্রায় তোর জন্য আমাদের শিবচরে আসতো।এদিকে আমি আর তুই মিলে ঢাকায় একটা কোম্পানি ওপেন করার চেষ্টায় থাকি।এভাবে চলতে চলতে কোম্পানি ওপেনিংয়ের অর্ধেক কাজ হয়।একদিন আমার কাছে অচেনা নাম্বার থেকে কল আসে।আমি রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলে,”সিক্রেট রুমের খোঁজ সোনালী পেয়ে গেছে।”
কলটা আসে মালিনীর ফোন থেকে।আমি ভেবেছিলাম মালিনী বলেছিলো কথাগুলো।কয়েক বছর হয়ে যায় ওর ভয়েস শুনিনি।তাই চিনতেও পারিনি যে ওটা সোনালী ছিলো।আমি ছুটে যাই ওই বাসায়।মালিনীর ব্যাপারে আমি তখনও কিছু জানতাম না।আমি জানতাম ও এসবের ভিতরে নেই।হয়তো পরে সব জেনে আমাকে খোঁজ দিয়েছে।কারণ আমার সাথে অল্প স্বল্প কথা হতো।মালিনী প্রায় চুপ থাকতো।ব্যাপারটা কেমন যেনো লাগতো আমার কাছে।কল দিয়ে চুপ থেকে আবার কল কাটা আমি কিছুই বুঝতাম না।ওই বাড়িতে আমি বউ হয়ে যাওয়ার পর একবার বলেছিলো,”এই সংসারে এসেছো ভালো কথা।বুঝেশুনে পদক্ষেপ রেখো।এখানে কুকুর শেয়ালের হামলা আছে।”
আমি না ওর ওই কথাগুলোকে বুঝে উঠতে পারতাম না।প্রায় অন্য মনষ্ক থাকতো ও। শাহমীরকে তেমন দেখতো না।মা ছাড়া শাহমীরকে দেখলেও মায়া লাগতো।তাই আমি ওর সাথে বেশি থাকতাম।তখনও মালিনী আমাকে বলত,”নিজের লোকের দিকে নজর দেও।”
আমি ভাবতাম ও হিংসা করছে তাই এমন বলে।সরদার বাড়ি থেকে আসার পর একদিন আমাকে কল দিয়ে অনেক কান্না করে।কিন্তু কিছু বলতে পারে না।শুধু কান্না করে।আমি তখনও বুঝিনি কিছু।ওদিকে রুদ্রের কথা জানার পর ওর বাবা মাকে সাহায্য করতে থাকি।তখন মালিনী আমাকে একটা এসএমএস দেয়।লেখা থাকে,”যা করবে সাবধানে।কিছু ভিডিও আর ছবি দিচ্ছি এগুলো তাড়াতাড়ি নিজের কাছে সেভ করে রাখো।আমি ডিলিট করে দিবো।আর হ্যাঁ আমাকে কল করে কিছু জিজ্ঞাসা করবে না।এই বাড়ির চারপাশে সবার কান পাতা থাকে।আমি কোনো কিছুই বলতে পারবো না।আমি নিজেও হাত পা বেঁধে আছি।”
মালিনীর ম্যাসেজের বানান অনেক ভুল।বোঝা যায় দ্রুত লিখেছে।আমি তখন বুঝতে পারলাম মালিনী নিজেও এসবের মধ্যে ফেসে আছে।নাহলে এভাবে নিজে থেকে কেনো বললো।ওই প্রমাণ পেয়েই আমি পুলিশ নিয়ে ডাক্তারদের ধরিয়ে দেই।এই ভুলের জন্য তখন এলার্ট হয়ে যায় সোনালী।সবকিছু না জানলেও শত্রু দমন করতে হবে এটা বুঝে যায়।তাই তখন শেষ করে দেয় আদ্র রুদের বাবা মাকে।সেদিন যখন সবাই লাশ নিয়ে কান্নাকাটি করে মালিনী আমাকে ম্যাসেজ দিয়ে বলে,”প্রমাণগুলো তোমাকে দিয়েছিলাম যাতে তুমি রুদ্রকে নিয়ে যেতে পারো।তুমি এই ভুলটা না করলেও পারতে।এই রকম যদি সবকিছু কাছে পাওয়া যেতো তাহলে আমি আজ চুপ থাকতাম না।এরা অনেক ধূর্ত।এদের দমন করা সহজ না।আমরা যাই করবো এরা তার থেকেও কয়েক কদম এগিয়ে।দয়া করে এখন আর কিছু করো না।আমি শেষ হয়ে যাবো।”
মালিনীর এমন ম্যাসেজ দেখে আমি সিদ্ধান্ত নেই ওদের মত করেই আড়ালে ওদের শেষ করতে হবে।তাই অদ্রকে পাঠিয়ে দিলাম ওর দাদা দাদীর কাছে আর আমরাও চুপ থাকলাম।যেহেতু ওই বাড়িতে কোনো কথা আড়াল থাকে না সব সোনালী জেনে যায় হিডেন ক্যামেরার জন্য তাই আমিও চুপ হয়ে যাই।কিন্তু সোনালীর পিছনে লোক রাখি।ধীরে ধীরে সোনালীর ব্যাবসায় লস হয়।এই যেমন নারীগুলোকে পাচার করতে পারে না।তার আগে পুলিশ হাজির হয়।ড্রাগ সাপ্লাই করার আগে পুলিশ খবর পেয়ে যায়।তাই তখন সোনালী ওর এই কাজগুলো বন্ধ করে দেয়।
খোঁজ করতে থাকে আমাকে।সেদিন মালিনীর ফোন দিয়ে আমাকে কল দিয়েছিলো।কারণ সোনালী জেনে যায় মালিনী আমাকে এলার্ট করেছে।মালিনীর ফোনে সব ডিলিট হলেও আমার দেওয়া শেষ ম্যাসেজটি সোনালী দেখে নেয়।কারণ আমি ম্যাসেজ করার সাথে সাথে সোনালী ফোন নিয়ে দেখে ফেলে।যার ফলে মালিনী বিপদে পড়ে যায়।সোনালী আমাকে ফ্যাক কল দেয়।আমিও ছুটে যাই ওই রাতে।ওই বাড়িতে যেয়ে যখনই আমি ওই রুমের দিকে যাবো আমার হাত ধরে টান দেয় মালিনী।আমি অবাক হয়ে যাই।এক এক করে আমাকে সবকিছু খুলে বলে মালিনী।সাথে এটাও বলে,”মিনার মারা যাওয়ার আগে আমাকে একটা চিঠি দিয়ে যায় যেটা আমার বাবার বাসায় পৌঁছায়।সেই চিঠি বিভান পেয়ে যায়।ওখানে মিনার লিখেছিলো,”রোহিনী এই ফর্মুলা রাজের দাদুর কাছে রেখেছে।যেই লকারে রাখা আছে ওটার পাসওয়ার্ড রাজের দাদু জানে।
কারণ রোহিনীর মৃত্যুর দিন রোহিনী ওটা ওর শ্বশুরের কাছে দিয়ে বাইরে যায়।আর রোহিনীর গাড়ি ব্লাস্ট হয়ে যায়।যেটা বিভান করিয়েছে।রাজের দাদু ওটা নিজের সিক্রেট রুমে রেখেছে।এই রুম কোথায় অবস্থিত আমি জানি না।আমি বেঁচে থাকব কি না জানি না।আমার বাবা মাকে ওই বিভান শেষ করে দিয়েছে।আমি তোমার বোনের সাথে কোনো বাজে সম্পর্কে ছিলাম না।বিশ্বাস করো তোমাদের রূপ একই হলেও আমার মন সব সময় তোমাকে চেয়েছে।তোমার ভিতরের চঞ্চলতা আমাকে উন্মাদ করে দিত।ইচ্ছা ছিলো এই ফর্মুলা দেশের কৃষকদের হাতে পৌঁছে দিয়ে তোমাকে নিয়ে সুখের রাজ্যে পারি দিবো।দেশের মানুষ ফ্রেশ খাবার খেয়ে রোগমুক্ত থাকবে।এটা মনে হয় পূরণ হবে না।সাথে তোমাকে নিয়েও আমার আর সংসার করা হলো না।
তুমি আমার জীবনে ফিরে আসো বা না আসো এই ফর্মুলা বাজে লোকদের থেকে বাঁচিয়ে রেখো।আমাদের দেশের খাদ্যের মধ্যে এখন এত ভেজাল যে দেশের লোক এখন ভিন্ন রোগে ভুগছে।আমি একজন কৃষি বৈজ্ঞানিক হিসেবে এই দেশের সুরক্ষা চাই।বিদেশে এটা বিক্রি করে দেশের ক্ষতি করতে চাই না।অন্তত নিজের স্বপ্নকে বিসর্জন দিতে পারব না।কেউ যেনো ফর্মুলার অসৎ ব্যাবহার না করে এটা দেখো।”
এই চিঠি বিভান বাংলাদেশ এসে দেখতে পায়।বছর কয়েক পর দেশে এসে ঘুরে যেতো।ঠিক তখন বিভান জেনে যায় সব।কারণ বাবা(রাজের দাদুর) ফোন বিভানের কাছে ছিলো।আমিও জানতাম না বাবা কাকে কল করে সব বলেছে।বিভান সন্দেহের বসে আবার যায় বাবার কাছে।তখন শুনে নেয় শেষের কথা।তারপর বিভান কিছু বলার আগে বাবা মারা যান।ওই ফোনটা সূত্র হিসেবে রেখে দেয়।বাবার লাস্ট কল নাম্বার আর আমার ফোনের ম্যাসেজে তোমার নাম্বার একই।এটা দেখে সোনালী আর বিভান বুঝে যায় তুমি সব জানো।ওইদিন থেকে প্ল্যান করে তোমাকে খোঁজ করার।আমার সাথেও মানিককে আর দেখা করতে দেয় না।যা একটু ভিডিও কলে মানিকের পিছন পাশ বা ওর অস্তিত্ব দেখতাম তাও বন্ধ হয়ে যায়।রাজ এসেছে বলে সোনালী সাবধানে চলেছে এই কয়দিন।আমার ফোন ওর কাছে ছিলো।তাই আজকে তোমাকে ও ফ্যাক কল দিয়েছে।তুমি পালিয়ে যাও।এই রুমের খোঁজ ওরা পেলেও পাসওয়ার্ড তুমি না বলা অব্দি ওরা ফর্মুলা পাবে না।তুমি পালাও বোন।তোমার মোহকে নিয়ে দূরে থাকো।”
মালিনীর কথা শেষ হতে না হতেই আমার চোখ যায় সোনালীর দরজার দিকে।যেখানে আমি সোনালীর অবয়ব দেখছিলাম।কিছু মাথায় আসেনি আমার।আমাকে যাতে পাসওয়ার্ড নিয়ে বেশি কিচ্ছু না বলে তাই আমি বলি,”আমি তো পাসওয়ার্ড জানি না।ওইদিন মোহর সাথে ওর দাদু কথা বলেছিল।পাসওয়ার্ড আমি না মোহ জানে।”
আমি তখন এগুলো বলেছিলাম কারণ তোর নাম এখন মায়া।তোকে ওরা খুঁজে পাবে না। তাই আমি তোর নামে সব বলে দেই। আর তুই তো শিবচরে যাবি না।ওরা আমাদের ফ্যাক্টরির খোঁজ পাবে না।কারণ আমার ফ্যাক্টরির নাম প্লাটানো হয়।যেটা তোর নামে।
তাই কেউ সন্দেহ করতে পারবে না যে মায়া আসল মোহ।সোনালী তখন হামলা করলো আমাকে মেরে ফেলার জন্য।আমি তখন ওখান থেকে পালিয়ে যাই।সুযোগটা আমাকে মালিনী করে দেয়।ও সোনালীর সামনে এসে বাধা দিতে থাকে।তখন আমার পিছন থেকে শুট করে দেয় সোনালী।দ্বিতীয়বার শুট করতে যাবে সোনালীর হাত ধরে বাধা দেয় মালিনী।ওই সুযোগে আমি পালিয়ে আসি।তোকে কল করে কিছু কথা বলি।কিন্তু আমার গায়ে শক্তি কমে আসে।তাই স্পষ্ট কিছু বলতে পারি না।তোর সাথে কথা বলতে বলতে আমার মাথায় আঘাত অনুভব করি।পিছনে তাকিয়ে দেখি সোনালী আর ওর লোকজন।বাবাকে মেরে ওরা বাবার ফোন কালেক্ট করে শত্রু ধরার সূত্র পেয়েছে।আমি এই ভুল করতে চাই না।তাই আমি সাথে সাথে ফোনটা দূরে ছুড়ে মারি। যাতে ওদের নাগালে না আসে।ওরা ফোনটা পেলে জেনে যেতো যে তুই মোহ।”
“আজ সবকিছুর দমন হয়েছে তাই না মা?”
“হ্যাঁ।কিন্তু আমাদের শত্রু দমন হলেও পৃথিবীতে এমন অনেক নিকৃষ্ট ব্যাক্তি আছে যাদের দ্বারা অন্যরা বিপদে আছে।”
“আমার হাতে যদি এমন ক্ষমতা থাকতো যে ওই নিকৃষ্ট লোকদের ধরে মেরে ফেলব আমি সত্যি তাই করতাম।”
“তুই তো তাই করিস।আমি কোমায় থাকলে কি হবে তোর সব কথা শুনতাম।আমার মেয়ে যে কি না ছিলো সহজ সরল সে যে এতগুলো অন্যায়ের বিচার করে এটা ভেবেই আমি অবাক লাগে।”
“যাদের হাতে আইন কেনা থাকে তাদেরকে এভাবেই দমন করতে হয় মা।”
শাহানা পারভীন মায়াকে আদর করতে করতে বলেন,”আমার মেয়েটা অনেক বড় হয়ে গেছে।বিয়েও হয়েছে তার।এখন আমি নানু ডাক শুনতে চাই।”
“হ্যাঁ শুনবে তো।আমাদের মৌয়ের ছেলেটা বড় হোক তোমাকে নানু বলবে।”
“আমার সামনে বোকা সাজা হচ্ছে না?তুমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারছ আমি কি বলছি।তোমার স্বামীও তো তাই চায়।”
মায়া আলতো হেসে বলে,”তোমাদের ইচ্ছাটাও যদি পূরণ হয় কেমন হবে মা?”
“আমি তো অনেক খুশি হব।আমার মৌ মা তো ছেলে জন্ম দিয়েছে।এখন মায়া মা কি জন্ম দিবে দেখার বাকি।তোদের পরিপূর্ণ সংসার দেখতে পেলেই আমি খুশি।”
শাহানা পারভীনের হাত মায়া নিজের পেটের উপর রেখে বলে,”এখানে তোমার নাতি বা নাতনী আছে মা।”
খুশি হয়ে শাহানা পারভীন বলেন,”তুই আগে বলিসনি কেনো?”
“ভেবেছিলাম মন্ত্রী মশাই আসলে জানাবো।ও তো কাল আসবে।ওকে সারপ্রাইজ দিবো।কিন্তু তোমার থেকে লুকিয়ে রাখতে ইচ্ছা করছে না।”
শাহানা পারভীন তাড়াতাড়ি দৌড়ে গেলো রান্নাঘরে।যেতে যেতে বলে,”আমি এই রাতেই পায়েস রান্না করব।আমার মেয়ের আজ শুভ দিন।মিষ্টি না খেলে কি হয়?”
মায়া হেসে দেয়।ঠিক তখন মায়ার ফোন ম্যাসেজ করে রাজ,”আমার বক্ষের শূন্যতা পূর্ণ করতে আমি আসছি মায়াবতী।”
মায়া কিছু ইমোজি দিলো।রাজ আবার লিখেছে,”এবার আমি বাবা ডাক শুনেই ছাড়বো।নাহলে জনগণ বলবে মন্ত্রী বাচ্চা দিতে অক্ষম।ওরা তো জানে না মন্ত্রীর বউ মন্ত্রীকে বাবা ডাক শোনানো থেকে বহিস্কার করেছে।এবার নিজের অধিকার আদায় করেই ছাড়বো।আমি বাবা হওয়ার অধিকার রাখি।আমার বাচ্চা চাই।”
“আপনি পাগল হয়ে গেছেন মন্ত্রী মশাই।”
মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ৬০
“এই মন্ত্রী শাহমীর রাজের একটাই স্লোগান,বাচ্চা চাই বাচ্চা চাই।বাচ্চা ছাড়া মায়াবতীর উপায় নাই।”
মায়া হাসতে থাকে। পেটে হাত রেখে বলে,”তোর বাবা কাল আসবে।সারপ্রাইজ দিবো দুজনে মিলে।”
তারপর রাজকে ম্যাসেজ দিলো,”তাড়াতাড়ি আসবেন মন্ত্রী মশাই।কাল সিয়াকে দেখতে আসবে আদ্রর দাদা দাদী।আংটি পরিয়ে যাবে।”