মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ১৫
ইশরাত জাহান
জারাকে বাসায় রেখেই বাইরে যেতে হয় বীরের।জরুরি ডাক পড়ে তার।তাই এখন রাত করে বাড়িতে ফিরে সোজা চলে যেতে নেয় জারার ঘরের দিকে।সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় মৌ কিছু বলতে নেয়।পাত্তা দিল না বীর।সকালে জারার করা সেই বাড়াবাড়িটা এখনও তার মাথায় চেপে আছে।মৌ মনটা খারাপ করে বলে,”এখনও বিয়ে হতে পারল না ভাই তো পুরো বউ পাগল হয়ে আছে।ওদিকে আপু বিয়ের পরেরদিন আমাকে ভুলেই গেছে।ধুর আমি যেয়ে একটু বক্সিং করি।”
জারা আয়নার সামনে দাড়িয়ে মেকআপ করছিল।এই রাতেও যেনো মেয়েটার মেকআপ করা লাগবেই।ঘুম থেকে উঠে মেকআপ ঘুমানোর সময় মেকআপ গোসলের পরে মেকআপ।সাজগোজ যেনো তার একটা দুনিয়া।চুলগুলো সুন্দর করে আঁচড়িয়ে ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়ে চোখটা আইশ্যাডো দিয়ে সাজালো।বীর এসে দরজার কাছে দাড়িয়ে দেখলো আবারও সেই শপিং মলের মত করে মুখটা পাউট করে আছে জারা।কোমড়ে হাতটা রেখে কোমড়টা বেকিয়ে নিজেকে দেখছে।মুখটা হাসিহাসি করে বলে,”হায়য়য় মে কিতনি সুন্দার হু।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“ওটা ন্যাচারাল সুন্দরী না ওটা মেকআপ নিয়ে পেত্নী সুন্দরী।”
বলেই ঘরের ভিতরে ঢুকলো বীর।জারা ক্রব্ধ চোখে তাকালো।এটাকে পাত্তা দেওয়ার পোলা তো বীর না।উল্টো জারাকে টান মেরে নিজের কাছে এনে পাশে টেবিলে থাকা টিস্যু পেপার নিয়ে ঠোঁটটা জোরে জোরে ঘষতে থাকে।লিপস্টিক মুছে গেলেও ঠোঁট হালকা গোলাপী হয়েই আছে।বীর বিরক্তির সাথে বলে ওঠে,”এসব বাল ছাল মেখে ঠোঁটের বারোটা কেন বাজাও?এই ঠোঁটের ভবিষ্যত মালিক তো আমি।”
“আমি আপনাকে এই ঠোঁটের মালিক বানাবো না।”
“আচ্ছা তো কাকে বানাবে?”
“যাকেই বানাই আমার ইচ্ছা।”
“ওয়!আমাকে কি ইচ্ছা পূরণের সার্ভিস সেন্টার পেয়েছিস তোরা?যখন যে পারে তার ইচ্ছা পূরণ করতে আমার কাছে আসে।তোর একটা ইচ্ছাও পূরণ করব না।”
“কেন?”
“কারণ তোর ইচ্ছা পূরণ করতে হলে এই পুরো ঘটনা জুড়ে বলতে হবে,আমি পূরণ করব আমার নটাংকির ইচ্ছা।”
জারা রেগে গেলো।চোখ দুটো বড় বড় করে বলে,”আমি নটাংকি?থাকব না আমি আপনার কাছে।পূরণ করতে হবে না আমার ইচ্ছেগুলোকে।সুযোগ পেলেই এখান থেকে চলে যাব আর অন্য কোনো রাজপুত্রের বউ হয়ে যাবো।”
বীর জারার থুতনিতে জোরে হাতটা চেপে ধরলো।ব্যাথা পাচ্ছে জারা।বীরকে ছাড়াতে চায় সে।পারছে না।বীর রাগ মিশ্রিত কণ্ঠে বলে,”তোর খুব মুখ ফুটেছে তাই না?এতটাই মুখ ফুটেছে যে আমার থেকে পালানোর কথা এই জবানে আসে।তোর এই জবান যদি আমি বন্ধ করে দেই ভালো লাগবে তো?”
জারা বীরের হাতটা ধরে ছাড়ানোর চেষ্টায় আছে।বীর আবারও বলে,”নিজে থেকে আমার মনে রাজত্ব করতে এসেছিলি তুই।পালানোর ব্যার্থ চেষ্টা করলেও ফলাফল খারাপ হবে বলে দিলাম।কারণ মনের রাজত্বের স্থান পেয়ে গেছিস।তাই এই স্থানের মাঝেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখবি।”
জারার মুখটা ছেড়ে দিয়ে জারার চুলগুলো ছুঁতে লাগলো।জারা চুপ হয়ে গেলো।বীর এবার একটু শান্ত হলেই জারা বলে ওঠে,”মেরে ফেলতে চান আমাকে?”
বীরের হাতটা থেমে গেলো।জারার মুখের দিকে তাকালো।জারা সাহসের সাথেই বলে,”আমাকেও কি ওই লোকটার মত খুন করে গুম করতে চান?”
বীর এবার সপাটে থাপ্পড় মেরে দিলো জারার গালে।জারা উল্টো হয়ে পড়ে গেলো বিছানার পাশের ছোট্ট টেবিলের কাছে।জারার চুলের মুঠি ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বীর বলে,”কি ভেবেছছিস তুই আমাকে?তোর চাল আমি বুঝিনা?আমি সব বুঝি এবং সব জানি।শুধু মনে রাখ এই বীরের শত্রু কোনোদিন তার উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারে না।সেক্ষেত্রে তুই তো!”
বাকি কথা বলল না বীর।জারা অবাক চাহনিতে আছে।বীর হালকা হেসে ঝাটকা মেরে ছেড়ে দিলো জারার চুল।চলে যেতে নিলো জারার ঘর থেকে।দরজার কাছে এসেই পা থামিয়ে বলে,”তোমার বাবা মায়ের মৃত্যুর জন্য তোমার আপন মানুষ দায়ী।আমি না।আর তার প্রমাণ আমিই এনে দিব।শুধু শুধু মিথ্যা অপবাদে প্রতিশোধ নিতে এভাবে আমাদের ভালোবাসাকে নষ্ট করার দরকার নেই।”
বীর চলে যেতেই জারা হতাশার চাহনি দিলো।বীর তাহলে জেনে গেছে এতদিন জারা তার সাথে অভিনয় করছিলো।বীর যাওয়ার পর জারা ওর ফোনটা হাতে নেয়।যেখানে দেখলো সোনালীর কল।যেটা দেখেও কোনো প্রতিক্রিয়া জানালো না জারা।ভাবছে বীর তাকে প্রমাণ দেখাবে।তবে কি এবার বাবা মায়ের মৃত্যুর তদন্ত চলছে?জারা এবার মুখটা হাসিহাসি করেই বলে,”তাহলে আমার প্ল্যান কাজে দিয়েছে।আমি এবার বের করতে পারব ওই খুনিকে।বীর যদি তাকে শাস্তি দেয় তাহলে তো খেলা আরো জমে যাবে।”
বলেই হেসে দিলো জারা।ভাবতে থাকে এই অভিনয়ের শুরুর দিনের কথা।নিজের বাবা মায়ের মৃত্যুর দায়ী হিসেবে কে আছে এটা জারা জেনেই যায়।যার সাথে জড়িত আছে বীরের সম্পর্ক।তাই তো সোনালীর কাছে থাকাকালীন বীরের সমস্ত বিষয়ে খোজ নেয়।একপর্যায়ে যখন জানতে পারে বীর কানাডা আছে তখন জারা সোনালীর দামী স্বর্ণের হার চুরি করে বিক্রি করে সেই টাকা নিয়ে পালিয়ে চলে যায় কানাডা।শুরু করে ফ্রেন্ডের সাথে ট্রুথ অন্ড ডেয়ার খেলা।যেখানে একটা ডেয়ার থাকে প্রোপোজ করতে হবে অচেনা কাউকে।জারা ইচ্ছা করেই বন্ধুদের নিয়ে ওই প্লেসে যায়।কারণ সে জানতো ওখানে বীর আসবে। জারা এদিক ওদিক তাকিয়ে বীরকে দেখে।সবার দেওয়া ডেয়ার অনুসারে সে বীরকে টার্গেট করে চলে গেলো প্রোপোজ করতে।বীরের কাছে এসে গোলাপ ফুল দিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে জারা বলে,”ইউ নো হোয়াট?ইউ আর সো হ্যান্ডসাম।বাট আই লাইক ইওর কিলার অ্যাটিটিউড।নট ইওর হ্যান্ডসাম লুকস।দ্যাটস হোয়াই আই ওয়ান্ট টু সে,আই লাভ ইউ মিস্টার হ্যান্ডসাম।”
বীর তখন ওর চোখের সানগ্লাস খুলে দেখতে থাকে জারাকে।মিটিং করতে এসেছিল এখানে সে।এতগুলো ক্লায়েন্টের সামনে এভাবে প্রপোজ পাওয়ায় একটু অবাক।সাথে আশেপাশের সবাই হা হয়ে আছে।বিশেষ করে বীরের অ্যাসিসট্যান্ট অবাকের সাথে মনে মনে বলে,”দেখতে তো সুন্দরী।বয়সের সাথে পিনিক বেড়েছে নাকি যে মরার জন্য লাফাচ্ছে।প্রোপোজ করতে এই জমকেই খুঁজতে হলো?”
জারার বন্ধু মহলের একজন বীরকে দেখে চিনতে পারে।বীর মাফিয়া সাথে নিজস্ব ব্যাবসা আছে।সেই ব্যবসার মাধ্যমে তাকে সবাই খুব ভালো করেই চেনে।দ্রুত দৌড়ে এসে বলে,”দোস্ত তুই ভুল মানুষের সামনে ডেয়ার পূরণ করেছিস।তাড়াতাড়ি চল এখান থেকে।”
বলেই জারার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়। জারা যেতে যেতে পিছনে ঘুরে বীরের দিকে হাতটা দিয়ে ফ্লায়িং কিস দেখিয়ে দিলো।তারপর চোখ টিপ দিয়ে ইশারা করল তার পাশের বান্ধবীর মাথায় সমস্যা আছে।ওখান থেকেই শুরু হয় ওদের প্রণয়ের সম্পর্ক।এক সময় বন্ধুত্ব তারপর প্রেম।এরপর জারা ইচ্ছা করেই পালিয়ে আসে বীরের থেকে।কারণ তার চাল তো এটাই।বীর তার পিছে পাগলের মতো ছুটতে থাকবে।তবেই না আস্থা পাবে সে।তার বাবা মায়ের মৃত্যুর জন্য যে দায়ী তাকে শাস্তি দিবে বীরের মাধ্যমে।
তারেকের সাথে কথা বলে রাজ।মায়ার আজকের খুন করার ঘটনাটা বলে দিলো রাজকে।সব শুনে রাজ মৃদু হেসে বলে,”ভাবছি বউকে মাফিয়া বানাবো।আমার ডান হাত হবে আমার বউ।”
তারেক নিজেও মৃদু হাসলো।অতঃপর বিদায় জানিয়ে চলে গেলো।রাজ মিটিং ঘর থেকে বের হয়ে এসে নিজের ঘরের দিকে যেতে নেয়।পথিমধ্যে দেখা হয় মাহমুদ সরদারের সাথে।তিনি প্রেশারের ঔষধ খেতে এসেছিলেন।ঘরে পানি ছিলো না।তাই ঔষধের বক্স নিয়েই বাইরে আসেন।রাজ এসে বক্স খুলে প্রেসক্রিপশন মিলিয়ে ঔষধ দিয়ে দেয়।মাহমুদ সরদার পানি দিয়ে ঔষধ গিলে খায়।রাজ এটা দেখেই চলে যেতে নেয়।কিছু একটা ভেবে পা থামিয়ে বলে,”শোনো বাবা!এই যে আমি দরজাটা লাগিয়ে দিবো যতক্ষণ না আমি বের হবো আমার ঘুমের ডিস্টার্ব করতে আসবে না।সে আমার বিরোধী দল এসে বাড়িতে বোমা ফাটাক না কেন।মনে রাখবে ছেলে এখন বিবাহিত।যথেষ্ট পরিমাণের ঘুমের প্রয়োজন তোমার ছেলের।আশা করি বিষয়টি বুঝেছো?”
“তোমার কারণেই বাড়িতে একদিন বোম ফাটবে অসভ্য ছেলে।”
“ওই বোম আমার বউয়ের থেকেই ফাটবে।জাতে বেশি জোরে বোম না ফাটে তারই চেষ্টা করছি।”
রাজ বড় বড় পা ফেলে ঘরের দরজা লাগিয়ে দিল।মাহমুদ সরদার দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন,”দিনদিন ছেলেটার মুখের লাগামহীন কথা পারমাণবিক বোমার থেকেও দ্রুত গতিতে কাজ করছে।”
ঘরে এসে দেখলেন মালিনী বসে বসে কিছু ভাবছে।মাহমুদ সরদার খুব ভালো করেই বুঝলেন কি ভাবছে মালিনী।তাই তার পাশে বসে বলেন,”আমাদের ছেলেটা ফিরবে কিনা জানি না কিন্তু তোমার এই কষ্টটা কমানোর একটু চেষ্টা কর।এখন তো তোমার দুই মেয়ে আছে।একটা সন্তান হারালেও তোমার কোল জুড়ে কিন্তু একসাথে দুজনকে এনে দিয়েছি।তুমি চাইলে সন্তান হারানোর কষ্ট আবারও কমিয়ে দিতে পারি।”
মালিনী ভ্রুকুটি করে মাহমুদ সরদারের দিকে ফিরে বলে,”তোমার ছেলেটা আসলে তোমার মতই।তুমি গিরগিটি তাই শুধু ঘরের মধ্যে লাগামহীন কথা বল।তোমার ছেলে একরূপী তাই ঘরের বাইরেও লাগামহীন কথা বলে বেড়ায়।”
মাহমুদ সরদার কপালে হাত দিয়ে বসে থাকলেন।ঘরে বাইরে যেখানেই যান সেখানেই দু চারটে শুনতে থাকেন।
রাজ ঘরে এসে মায়াকে দেখতে পেলো না।ব্যালকনির দিকে একটু উকি দিয়ে বলে,”বউ কি আমার বাসরের ভয়তে পলাপোলি খেলছে?”
ব্যালকনি থেকে কথাটা শুনে বিরক্ত মায়া।রাজ আবারও বলে,”দেখো বউ অনেক রাত হয়েছে।সকালে উঠে কাজে যেতে হবে।ছুটির আগেরদিন রাতে এভাবে পলাপোলি খেলবে।এখন আসো একটু বাসর করি।”
মায়া উত্তর দেয়না।রাজ এসে মায়াকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।মায়া আকাশের দিকে তাকিয়েই বলে,”আমাকে ছেড়ে দিন মন্ত্রী মশাই।”
রাজ মায়ার গলার কাছে ছোট করে চুমু দিয়ে বলে,”উহু কখনোই ছাড়বো না।”
“এভাবে উন্মাদের মত আচরণ আপনার সাথে যায় না।”
“বউয়ের সাথে সব যায়।”
মায়ার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।রাজ বুঝতে পারল।তাই মায়াকে নিজের দিকে ফিরিয়ে সোজা নিজের বক্ষে আটকে রাখলো।মায়ার চোখের পানিতে রাজের বুকটা ভিজে গেলো।রাজ ঠোঁট প্রসারিত করলো শুধু।মায়া ছাড়তে চাইছে নিজেকে কিন্তু ওই যে রাজ তো তাকে ছাড়তে দিবে না।স্বামীর অধিকার আছে যে এখানে।রাজ আরেকটু শক্ত করে আগলে নিয়ে বলে,”এবার একটু মন ভরে কান্না কর মায়াবতী।তোমার এই কান্না ওই চাঁদটাও দেখতে পারবে না।”
“চাঁদ আমার কান্না দেখলে ক্ষতি কি?”
“আমার বউয়ের কান্না দেখার অধিকার যখন আমি রাখিনা সেই কান্না দেখার অধিকার ওই চাঁদেরও নেই।তুমি কান্না করবে তো আমার বক্ষে মুখ ডুবিয়ে কান্না করবে।অন্তত তোমার অশ্রুর পানি সব আমার বক্ষে এসে স্পর্শ করবে।”
মায়া কান্না থামিয়ে দিলো।মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে তার।কতগুলো বছর মা ছাড়া কাটিয়েছে সে।মায়া এবার সাভাবিক হয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে দিলো।বলে,”আমি ঠিক আছি মন্ত্রী মশাই।”
“ঠিক না থাকলেও নিজেকে ঠিক রাখতে জানে আমার মায়াবতী।”
“আপনি জানেন?”
“আমার বউ তুমি।তোমার ব্যাপারে এটুকু জানব না?”
“আপনার বউকে নিয়ে আপনার মনে অনেক ভালোবাসা তাই না?”
“অবশ্যই।আমি আমার বউকে অনেক ভালোবাসি।”
“একদম মিথ্যে বলবেন না।আপনি ভালোবাসতেই জানেন না।যদি জানতেন তবে এভাবে ভালোবাসাকে কবর দিতেন না।”
“আমি ভালোবাসাকে কবে কবর দিয়েছি?”
ভ্রু কুঁচকে বলে রাজ।মায়া কথাটা এড়াতে বলে,”কিছু না।ঘুম পেয়েছে আমার।”
বলেই মায়া ভিতরে যেতে নেয়।রাজ মায়ার হাত আটকে নিজের দিকে আনে।মায়া বিরক্তির সাথে বলে,”কি হলো টা কি?”
“ওই চাঁদ তোমার চোখের পানি দেখেছে।যেটা আমি দেখিনি।”
“তো?”
“আমার হিংসে হচ্ছে।তাই এখন এই চাঁদের সামনে আমি আমার চুম্বন বিলাস করে দেখিয়ে দিব।”
“কিঃ!”
“হুম।”
বলেই রাজ মায়াকে নিজের আরো কাছে এনে ওষ্ঠে ওষ্ঠ মিলিয়ে দিলো।চাঁদের সামনেই মায়ার ঠোঁট ছুঁয়ে দিলো নিজের ঠোঁট দিয়ে।মায়া চোখ বন্ধ করে আছে।রাজ চোখটা মেলেই আছে।চোখটা চাঁদের দিকে রেখে চোখটিপ দিলো।যেনো ওই চাঁদকে সে হারিয়ে দিলো।মায়ার কান্না মায়া কাউকেই দেখায়না।কারণ কান্না তো দুর্বলতা।সেই কান্না যখন চাঁদ দেখেছে তারমানে রাজের থেকেও মায়ার কাছে মূল্যবান ওই চাঁদ।তাই এখন হিংসে করে চাঁদের সামনে চুম্বন বিলাস করে নিলো।মায়াকে ছেড়ে রাজ বলে,”শোনো মায়াবতী!জীবনে বাথরুম বিলাস করব চুম্বন বিলাস করব আরো অনেক বিলাস করব কিন্তু এই চন্দ্র বিলাস করব না।”
“কেন?”
“কারণ এই শালা চাঁদটাও কি না তোমার চোখের পানি দেখে নিলো।”
“আপনি কি পাগল মন্ত্রী মশাই?”
“শুধুমাত্র বউয়ের জন্য পাগল।বাকিদের জন্য ঠিকই আছি।”
বলেই মায়াকে নিজের কোলে করে নিয়ে গেলো ঘরে।মায়াকে বিছানায় শুইয়ে দিয়েই বলে,”আজকে নাইট ড্রেস পরনি কেন?”
“আপনার বদ নজর থেকে বাঁচতে।”
“সে তুমি বোরকা পরে থাকলেও স্বামীর হাত থেকে বাঁচতে পারবে না।স্বামীর এই বদ নজর তোমার উপর পার্মানেন্ট লেগে গেছে।”
বলেই রাজ মায়াকে নিজের বুকের মাঝেতে রেখে শুয়ে থাকে।পাতলা কম্বল দিয়ে নিজেদের ঢেকে রাখল।মায়ার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে,”এভাবেই ঘুমিয়ে পড় শীত করবে না।”
মায়া মাথাটা উচু করে চাইলো রাজের মুখের দিকে।রাজ মৃদু হেসে বলে,”চুম্বন বিলাসের সময় বউয়ের জ্বরের মাত্রাটা উপলব্ধি করেছি ।তাই তো আজকেও পারফেক্ট বাসর ব্যতীত পার করছি।”
মায়া সরে যেতে নেয়।রাজ মায়ার গলার কাছে হাতটা শক্ত করে রেখে বলে,”হুশ!দুষ্টুমি করবে না মায়াবতী।”
“করলে কি হবে শুনি?”
মায়ার কণ্ঠে সর্দি লাগার মতো আভাস।যে গরম পড়েছে আবার বৃষ্টি মাঝে মাঝে তো শীত।এতে করে সর্দি লেগেছে মেয়েটার।রাজ মায়ার নাকের গোড়ায় ঠোঁট ছুঁয়ে বলে,”কি আর হবে তোমার বরের ছোট ছোট রোমান্সে বাধা পড়বে।”
“রোমান্স আবার ছোট বড় আছে নাকি?”
মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ১৪
“আছে তো।এই যে এখন যেই ভালোবাসা দিচ্ছি এগুলো ছোট ছোট রোমান্স।”
“আর বড় রোমান্স কোনটা?”
“যেই রোমান্সের ফল হিসেবে আমি বাবা হব আর তুমি মা হবে ওটাই বড় রোমান্স।”
