মি মাফিয়া পর্ব ২০
সুমাইয়া সাবিহা
আরিয়া:আরে কি করছেন কি? ছাড়ুন বলছি।
আফরান কোনো কথা না বলে আরিয়া কে রশি দিয়ে খাটের সাথে বেধে সামনে বসে আফরান।
আফরান:বল এবার কি কি খাবি ,,বল
আরিয়া:কিছু খাবো না আমাকে যেতে দিন বলছি।
আফরান: ঐ নাবিলের আশে পাশে ঘুরঘুর করতে ভালো লাগে? ঐ ছেলে কি আমার থেকেও বেশি হ্যান্ডসাম বল।
আরিয়া: আরে এখানে হ্যান্ড সাম এর কি আছে আজব তো।
আফরান:তাহলে? ঐ ছেলের সাথে কাল থেকে ইটিশ পিটিস কেনো করছিস হ্যা? কি ভাবছিস কাছে নেই বলে খবর রাখিনা?
আরিয়া:যা ইচ্ছা করুন কিন্তু আমাকে ছেড়ে দিন বলছি। আমি কি পাগল নাকি আমাকে এভাবে বেধেছেন কেনো
আফরান:তুই পাগল না পুরাই পাগল ,,সাথে আমাকেও পাগল বানাস ,,যতো সুযোগ দেই তত অবাধ্য হোস।
আরিয়া: আপনার কি তাতে । আমি যা ইচ্ছা করবো ।
আফরান:ঠিক আছে যা ইচ্ছা কর ,গেলাম আমি সারাদিন এভাবে এখানেই থাকবি । বলে আফরান উঠে রুম ছাড়লো।
আফরান কে নিচে আসতে দেখে জাফর বললেন,মামনি কোথায়?
আফরান:তোমার যেনে কাজ নেই, বলে বেড়িয়ে গেলো।
উপর থেকে আরিয়ার চিৎকার চেচামেচির আওয়াজ শুনে সবাই আফরানের রুমের সামনে গেলো কিন্তু হতাশ হলো সবাই,,রুম লক করা এই রুমের চাবি শুধু আফরানের কাছেই থাকে।
সামিরা প্রেমা দুজন একে অপরের দিকে তাকিয়ে মিটমিট হাসলো।এই পরিস্থিতি সবার সামনে হাসলে ব্যাপার টা খারাপ দেখায় ।
নাবিল:চাচা এসব কি হচ্ছে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
জাফর কোনো উত্তর দিতে পারলেন না রেগে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলেন।
আয়শ সবার আগেই বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলো।
সবাই যাওয়ার পর , প্রেমা সামিরা এবার হু হু করে হাসতে লাগলো।
প্রেমা : তা আরু তোর কি অবস্থা এখন?
সামিরা:নিশ্চয়ই আরু কে এখন বেধে রেখেছে
আরিয়া ভেতর থেকে বললো,মজা নিচ্ছিস নে আমারো সময় আসবে।
প্রেমা: তোর এই মাফিয়া বয়ফ্রেন্ডের মতো আমাদের জীবনে কোনো বয়ফ্রেন্ড হবে না আর তর সময় ও কখনো আসবেও না ,
প্রেমার কথায় সামিরা হাসলো।
আমরা গেলাম তুই থাক ।
এখন বাড়িতে তেমন কেউ নেই সামিরা প্রেমা এ দুজন রুমেই গল্প করছে।
প্রায় এক দের ঘন্টা পরে আফরান আসে,দরজ খুলে ফ্রিজ খুলে কি যেনো রাখে। আরিয়া মাথা ঘুরিয়ে তাকায় ,আবার মুখ ভেংচি কেটে অন্য দিকে তাকায়।
আফরান আরিয়ার সামনে গিয়ে বসে ,,আরিয়া অন্য দিকে তাকায়।
আফরান:তুই তো বলেছিলি সব কথা শুনবি?
আরিয়া কথা বললো না ।
আফরান:আমার কথা শুনতে কি তোর কষ্ট হয় বল ।
আরিয়া:আমি বলেছিলাম সব কথা শুনবো কিন্তু আপনার মন পড়ে আপনাকে বুজবো সেটা বলিনি।
আফরান কপাল কুচকায় ।
আরিয়া:আমায় যেতে দিন ভালো লাগছে না আমার
আফরান:আমার যখন ইচ্ছা যেতে দিবো ,তর কথা শুনতে আসিনি।
বলে আরিয়ার কপালে হাত রাখলো । হাত নামিয়ে কপাল কুচকে বলে ,তুই তখন বলেছি জ্বর ,আমি তো জরের ছিটেফোটাও দেখছিনা
আরিয়া ভয়ে ছোটার চেষ্টা করে মিথ্যে বলেছে এটা বুজতে পারলেই আবার মার খাবে।
আফরান কপাল কুচকে বলে:মিথ্যে বলেছিস কেনো? আমার নামে মিথ্যে বলে লাভ কি তোর?
আরিয়া :বলবো আগে হাত টা খুলে দিন
আফরান :আগে উত্তর দে
আরিয়া: আগে খুলে দিন
আফরান:আমার উপরে কথা বলার সাহস কোথায় পেলি?
আরিয়া :আসমান থেকে ,এখন আমাকে ছেড়ে দিন।
আফরান এবার বিরক্তি নিয়ে আরিয়ার হাত পা খুলে দিলো।
আরিয়া খাট থেকে নামতে নেয় আফরান পেছন থেকে এক হাত দিয়ে আরিয়ার পেট চেপে ধরে বলে,বাড়াবাড়ি করো না চুপচাপ বসে থাকো নয়তো …
আরিয়া ভয় চুপ করে আবার খাটের উপর এসে বসলো।
আরিয়া:আমাকে এভাবে শাস্তি দিয়ে কি পান আপনি?
আফরান:অযথা কাউকে শাস্তিকেনো দেবো আমার কি সময়ের দাম নেই।দোষ করলে অবশ্যই শাস্তি পাওয়া উচিৎ তাইনা।
আরিয়া:আমি কিছু করিনি তো।
আফরান:আচ্ছা তাহলে আমি করেছি?
আরিয়া:হ্যা আপনি তো করেছেন
আফরান কপাল কুচকায়।
আরিয়া:তখন টেবিলে এভাবে রক্ত ঝড়ালেন কেনো? বলে আফরানের বাম হাত টা নিজের হাতের তালুতে নেয় ।
উফ ,দেখুন কি হয়েছে ,আমাকে শাস্তি দেওয়ার হলে আমাকে দিবেন ,আমি কি নিষেধ করেছি? আমার উপর রেগে নিজেকে শাস্তি দেওয়ার মানে কি হুম? আমার কষ্ট হয় না?
আফরান আরিয়ার দিকে অবাক চোখে তাকায় ।
আরিয়া: ওয়েট …
বলে টি টেবিলের উপর থেকে ফাষ্ট এইড বক্সটা নিয়ে আফরানের হাতে ব্যান্ডেজ করতে করতে বলে,,আপনি খুব খারাপ জানেন।
আফরান: জানি।
আরিয়া: আবার মুখের উপর বলছেন । এতো সাহস হয় কিভাবে হুম
আফরান:আমার ডায়লগ আমাকে দাও?
আরিয়া:তাহলে কার সাথে বলবো? আচ্ছা শুনুন,,আমি অতো বড় হইনি আপনাকে বুঝার মতো শক্তি আমার নেই ,আমাকে সব টা বুঝিয়ে দিবেন।
আফরান: আমি বুঝাতে পারিনা
আরিয়া: তাহলে আমাকে ছেরে দেন।
আরিয়ার কথা টা আপরানের মাথায় তীব্র আঘাত হানলো।
সাথে সাথে আরিয়া গলা টিপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বললো:কেনো? আমার কাছে থাকতে তোর অনেক অসুবিধে? অন্য ছেলেদের সাথে তো সারাদিন ঘসাঘসি করিস তখন থাকতে অসুবিধে হয় না?
আরিয়া চোখ থেকে পানি পরছে ,নিশ্বাস আটকে আসছে ,কিছু বলতে পারছে না।শুধু হাত দিয়ে আফরানের হাত টা ছাড়ানোর চেষ্টা করছে ।
আফরান: যদি থাকতে না চাস,,জোড় করে রাখবো,যদি বাড়াবাড়ি করিস ,পা কেটে রেখে দিবো বুজলি,,। বারবার এক কথা বলতে বলতে বিরক্ত আমি ,,তোকে আমার কাছেই থাকতে হবে সেটা তুই চাইলেও থাকবি না চাইলেও থাকবি ,,কখনো দরকার পরলে মেরে বডি টা রেখে দিবো ? বারবার কেনো বলতে হবে? তুই কি ছোট ? বুজিস না কিছু? একদম মেরে দেবো বুজলি,কি ভাবিস নিজেকে?
আরিয়ার চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে নিশ্বাস টা এবার বোধয় বন্ধ হয়ে যাবে ।
ঠিক সেই মুহুর্তে আফরান আরিয়া কে ছেড়ে দেয়। আরিয়া বোধয় জীবনের শেষ মুহুর্তে এসে আবার বেচে গেছে । জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিতে নিতে কাশতে লাগলো। সেকেন্ড কয়ের পর চোখ গেলো আফরানের হাতের দিকে হাত থেকে বেন্ডেজের উপর দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পরছে।
আরিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে বলতে লাগলো: আপনি এমন কেনো? নিজের ভালোটা বুজতে শিখুন ,
আফরান রক্তাক্ত লাল চোখে:আচ্ছা ? তোকে ছেড়ে দিলে বুঝি আমার ভালো হবে?
আরিয়া:আপনি একটু বেশি বুঝেন ভাইয়া ,বলে আফরানের রক্ত পরা হাত টা ধরতে চাইলো কিন্তু আফরান ধরতে না দিয়ে খাট থেকে উঠে দাড়িয়ে দাড়িয়ে বললো,ডোন্ট টাচ , বলে যেটা বাধা ছিলো ঐটাও খুলে ফেলে দিয়ে রুম ছাড়লো।
আরিয়া জায়গায় বসে মুখে হাত দিয়ে কাদতে লাগলো।
আয়শ শাওয়ার নিয়ে কবার্ড খুলে কপাল কুচকায়।এসব কি?
সামিরা :কোন সব?
আয়শ:এগুলো এখানে কেনো?
সামিরা:তাহলে আমার জন্য এক্সট্রা কবার্ড আনুন। তাহলে আমার জামা কাপর এখানে রাখতে হবেনা।
আয়শ : এগুলো সরাও সামিরা ,তুমি খুব ভালো করেই জানো আমার এসব পছন্দ না
সামিরা:আমি কি জানি? হয়তো নতুন আমার জন্য এনে দেন নয়তো এখানেই থাকবে।
আয়শ:বাড়াবাড়ি করছো কিন্তু সামিরা।
সামিরা :কোনটা বাড়াবাড়ি? প্রত্যেক টা ওয়াইফের জামা তো হাসব্যেন্ডের সাথেই রাখবে তাইনা তাছাড়া হাসব্যান্ডের সব কিছু তে ওয়াইফদের অধিকার আছে তাই নয় কি?
আয়শ সামিরার দিকে তাকিয়ে সামনে এগুয় ,সামিরা ভয়ে পেছনে পা পা করে যাচ্ছে।
সামিরার পিঠ দেয়ালে ঠেকে ,আয়শ কপাল কুচকে এক হাত দেয়ালে রেখে বলে ,একটা মারবো দাত সব পরে যাবে ,এইটুকুনি মেয়ে হাসবেন্ড ওয়াইফের কি বুঝিস হ্যা?
সামিরা ভয়ে কাপছে ।
আয়শ:এখন ভয় পাচ্ছিস কেনো হুম? বলেছি না বাধ্য হয়ে বিয়ে করেছি ,আর একটা কথা ,আমি যখন বলেছিলাম আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি তখন তুই দেখলাম মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিচ্ছিলি,তা কবে থেকে আমার সাথে প্রেম করছিস হ্যা? বল
সামিরা: আ..আমি তো ,আপনি তো বলেছেন ।
আয়শ:আমি তো মুখ ফসকে বলে ফেলেছিলাম ,কিন্তু তুই কেনো বলেছিস?
সামিরা: আয়শের দিকে একটুও তাকাচ্ছে না অন্য পাশে বারবার চোখ ঘুরিয়ে এদিক সেদিক দেখছে ,আমি ভেবেছিলাম আপনি…।
আয়শ সামিরার কথা শেষ করতে না দিয়ে বললো,চোখে চোখ রেখে কথা বলার সাহস নেই আসছে ওয়াইফের অধিকার চাইতে । বলে আয়শ সামিরা কে ছেড়ে কবার্ডের কাছে এসে বললো, এগুলো কি করবি তুই জানিস এখানে রাখবি না।
সামিরা যেনো হাফ ছেড়ে বাচলো , নিশ্বাস টা আটকে গিয়েছিলো একটুর জন্য বেচে গেছে বোধয়।
আয়শ হাতে একটা টিশার্ট নিয়ে ড্রেসিন টেবিলের সামনে গিয়ে আরেক দফা মাথা গরম হয়,আমার ঘড়ি টা কোথায়? এখানেই তো রেখেছিলাম ।
সামিরা কাপা গলায় :ড্রয়েরে
আয়শ এবার সামিরার সামনে গিয়ে বাহু চেপে ধরে বললো ,একদম অধিকার নিয়ে কিছুতে হাত দেবিনা আমার জিনিসে, আমি কোথায় রাখবো না রাখবো নিজে জানি,তোকে এগুলো তে হাত দিতে কে বলেছে?
সামিরা:আহ লাগছে তো ছাড়ুন বলছি,,এগুলো সব অগুছালো ছিলো তাই তো গুছিয়েছি।
আয়শ সামিরা কে ছেড়ে দিয়ে বললো,নেক্সট টাইম যেনো এমন না হয় । বলেই ঘরিটা নিয়ে হনহন করে নিচে গেলো।
আরিয়া চুপ করে বসে আছে খাবার টেবিলে ,অল্প অল্প খাচ্ছে কি যেনো ভাবছে ।
জাফর:কি হলো তর কখন থেকে দেখছি কি ভেবেই চলছিস।
আরিয়া ভাবনা থেকে বের হয়ে এসে বললো,কই কিছু না বলে দ্রুত খাবার শেষ করে সামিরা কে বললো,আজ থেকে কলেজ যাবিনা? আর ২ মাস বাকি এক্সামের।
সামিরা: বাবা বললে আজ থেকেই যাবো।
জাফর: আমি কি নিষেধ করেছি নাকি ,,যত ইচ্ছা পড়বে পরা কমপ্লেট করার আগ পর্যন্ত পড়বে ইচ্ছে হলে।
সামিরা খুশি হয়। কিন্তু ভাইয়া কে তো বলাই হয়নি।তাহলে? উনার অনুমতি ছাড়া যেতে ইচ্ছে করছে না।
আরিয়া:ভাইয়ার অনুমতি নিয়ে তাহলে যাস , আজ যাস না ,আমি গেলাম বলে সোফার উপর থেকে ব্য্যাগ টা নিয়ে বের হয়ে গেলো ।
নাবিল বাগানেই ছিল আরিয়াকে বাহির হতে দেখা মাত্র বললো ,
মন খারাপ?
আরিয়া একবার নাবিল কে দেখে নিয়ে বললো:নাহ ,
নাবিল আরিয়ার পাশাপাশি হাটছে ,তাহলে এমন করে আছো যে?
আরিয়া: আমার লেট হচ্ছে ,বায় বলে দ্রুত পায়ে গাড়িতে উঠলো। ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দিলো।
নাবিল :এটিটিউটের ডিব্বা একটা ।বাট আই লাইক ইট
বলে বাকা হাসলো।
প্রেমা:কি হয়েছে রে বল তো এমন করে আছিস সারাটা ক্লাস।
আরিয়া : ভালো লাগছে না ।
প্রেমা : কি হয়েছে বল না ,আমি তোর ফ্রেন্ড তাইনা?
আরিয়া প্রেমার দিকে তাকালো ,
প্রেমা:বল না আমরা তো সব বলি তাইনা ।
আরিয়া : সত্যি বলতে কিছু হয়নি আমার শুধু শুধু কেনো জানি রাগ হচ্ছে।
প্রেমা : কিসের জন্য?
আরিয়া:সেটাই জানিনা।
প্রেমা :তোর ভিলেন বয়ফ্রেন্ডের খবর কি?
আরিয়া: জানিনা ।আমার কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই।
প্রেমা : একটা দিবো ধরে । ভাইয়া তোকে সীমাহীন ভালোবাসে সেটা এ কয়দিনেই বুঝে গেছি আর তুই বুজছিস না?
আরিয়া: আমার লাগবেনা কারো ভালোবাসা ।
প্রেমা : ওওও ,এখন বুঝলাম ,ভাইয়ার উপর রাগ করেছিস?
আরিয়া: নাহ
প্রেমা : তাহলে?
আরিয়া:জানিনা
প্রেমা: তা ভাইয়া কি করেছে?
আরিয়া : বারবার ঐ লোকটার নাম কেনো নিচ্ছিস হ্যা? ভালোবাসা এমন হয়না । যেখানে আন্ডারস্টেন্ডিং নেই ।এমন ভালোবাসা চাইনা আমার।
প্রেমা : কেনো কি করেছে ভাইয়া?
আরিয়া:রাগ উঠাস না উনার নাম টা শুনতে চাইনা ।
প্রেমা নাম নিলাম কখন ? বলবি নাকি কাট্টি নিবি?
আরিয়া:তুইও বাচ্চা?
প্রেমা : যেটা ভাবিস
আরিয়া:ভালো
প্রেমা :ওকে শুনবো না বলে উঠে যেতে নিলেই আরিয়া বললো,ঠিক আছে বলবো ।বস
প্রেমা হাসিটা লুকিয়ে রাগ নিয়ে বললো : লাগবেনা শুনবো না।
আরিয়া: ঠিক আছে যাহ
প্রেমা:আরে তুই তো একটা বজ্জাত মেয়ে
আরিয়া: এমনি ভালো।
প্রেমা : ঠিক আছে শুনবো বল না।
আরিয়া ব্যাগ টা পাশে রেখে বললো ,আজ দুদিন হয় উনি বাড়ি আসেনা ,তুই বল না আমার কি দেখতে ইচ্ছে হয়না? কি এমন করেছিলাম ?
প্রেমা : কি করেছিলি ?
আরিয়া: উনার রাগ কন্ট্রোলের বাহিরে সেটা তো জানিস ।
প্রেমা : হুম
আরিয়া : আমি শুধু উনাকে বুঝাতে চেয়েছিলাম যদি আমার জন্য নিজেকে আঘাত করে তাহলে আমাকে ছেড়ে দিতে ,ব্যাস হয়ে গেলো ,,আমাকে মেরে ফেলার ট্রাই করে । আরো বলে ,যদি কখনো দরকার হয় আমাকে মেরে বডি টা রেখে দিবে ।
কিছু হলেই আমাকে থাপ্পড় মারবে ,আমাকে আঘাত করবে ,এতোদিন অনেক কিছু তোদের কে বলিনি ,বলে আরিয়া নিজের ঘাড়ের কাটা দাগ গুলো দেখিয়ে বললো ,দেখ এগুলো উনার দেওয়া।
প্রেমা অবাক হয়ে বললো : ইয়েস ,,এমন পুরো শরীরে কাটা দাগ আছে ,বিশ্বাস কর না কর ,সব গুলো আমাকে মেরে মেরে এমন করেছে । কই তবুও তো কিছু বলিনি ,,আমি তো সব সহ্য করি তাহলে আমি একটু কিছু করলে উনি কেনো আমার সাথে এমন ব্যাবহার করে দিনের পর দিন।
আমি আর পারছিনা । লাগবেনা কাউকে আমার ।উনাকে তো নয়ই ।
প্রেমা : কপালে হাত দিয়ে বললো ,হায় আল্লাহ ,তুই কি সত্যি অবুজ?
আরিয়া: আজব তো আমি আবার কি করলাম?
প্রেমা : দেখ তো ভাইয়া তোকে শরীরে আঘাত করেছে কতটুকু করেছে? মরে তো যাসনি তাইনা অথচ ভাঈয়া মানুষ মারতে সেকেন্ড সময় ও নেন না। আর যেখানে তোর নাম টা অবদি কারো মুখে নেওয়া সহ্য করতে পারেনা সেখানে যদি তুই বলিস ছেড়ে দেওয়ার কথা সেখানে কি করবে বল? যেখানে তোর সাথে রেগে নিজেকে আঘাত পর্যন্ত করতে দুবার ভাবেনা রাগ টা নিজের শরীরে নিয়ে নেয় তোকে আঘাত করবেনা ভেবে সেখানে তুই চলে যাওয়ার কথা বলিস,আর দেখ তোকে ভাইয়া আঘাত করে আমার মনে হয় ভাইয়ার রাগের কাছে খুব অল্প তোর জায়গায় অন্য কেউ হলে এতোদিন বেচে থাকতো বলে মনে হয়না । দেখ তুই ভাইয়াকে নিজের কাজ ব্যাবহার দ্বারা কষ্ট দিস কিন্তু ভাইয়া শরিরে আঘাত করে তোকে কিন্তু কখনো দেখেছিস অন্য মেয়ের সাথে কথা বলতে? আমার তো মনে হয় না ।
ভাইয়া তোকে হারানোর ভয় বেশি করে তাই তোকে আঘাত করে এটাই বুঝায় যে,জোড় করে হলেও তোকে উনার চাই । মানে ভাইয়া তোকে কতটা ভালোবাসে ভাবতেই আমার গা জলে উঠছে আর সেটাকে তুই ভালোবাসাই মনে করিস না।
কখনো তুই ভাইয়াকে শরীরে আঘাত দিয়ে দেখিস ভাইয়া কি করে বলে তোকে ,,আমার তো মনে হয় ভাইয়া তোর সব রকম আঘাত মেনে নেবে কিন্তু তোকে অন্য কারো সাথে দেখার ভেতরে যে কষ্ট টা ঐটা সহ্য করবে না । উনি একদম অন্য রকম আরু ,সবার মতো না,উনার ভালো বাসার ধরন টাও অন্য রকম সবার মতো সহ্য করে মানিয়ে নিতে শিখেনি । যেটা উনার সেটার বিন্দু পরিমান ও অন্য কিছুর সাথে শেয়ার করবে না ।
আরিয়া কপাল কুচকায়: তা তুই কি জোতিশি সব নিজে নিজে বলে দিলি।
প্রেমা:আরে এ ধরনের মানুষ রা এমনি হয় । সেটা আমি মুভি দেখে দেখে বুজেছি।
মি মাফিয়া পর্ব ১৯
আরিয়া:ভালো যাহ তো,ভালো লাগছে না।
প্রেমা : যেটা বললাম সেটা মিলিয়ে দেখিস।
আরিয়া : যাহ তো জালাস না ।বলে ব্যাগ কাধে উঠিয়ে স্থান ত্যাগ করলো।
প্রেমা :ইশ এমন একটা মি,মাফিয়া বয়ফ্রেন্ড যদি আমারো হতো 😑🔪 অবশ্য না হলেই ভালো আরুর মতো কি আর আমিও সহ্য করতে পারবো নাকি 😫