মি মাফিয়া পর্ব ৪৫
সুমাইয়া সাবিহা
-একটা লোক হাসতে হাসতে বললো , এইটুকু মেয়ে কি কয় শুনছস তোরা ,পেটের ভেতর যখন ছুরিটা বসবে তখন বুজবে আমাদের পাওয়ার ঐ মেয়ে ।
আরিয়া : আপনাদের ওসব বাজে কথা ছাড়ুন আমি ওসব হুমকিতে ভয় পাইনা ,ভালো ভাবে বলছি চলে যান এখান থেকে ।
একটা ছেলে সামনে এগিয়ে বললো ,তাই নাকি তা প্রথমে হাত ভাঙবো না পা ভাঙবো সেটা বল,
আরিয়া একটু স্মীত হেসে বললো ,কথায় হবেনা বুজলাম তোদের ।
ছেলেটা নিজের হাতের লাঠি টা দেখিয়ে বললো ,এতো বড় বড় কথা কিভাবে বলছিস , আমাদের কে দেখে ভয় পাচ্ছিস না ।
আরিয়া স্মীত হেসে বললো , বললাম তো ট্রাই কর ।
ছুরি হাতের ছেলেটা সামনে এসে বললো ,এতো দেখছি পাওয়ারফুল লেডিস রে মাইরি , কিভাবে তুই করে কথা বলা শুরু করে দিসে। বলে হাতের ছুরিটা নিয়ে আরিয়ার সামনে এগুতে লাগলো ধীর পায়ে , কিন্তু আকস্মিক আরিয়া তার সামনের ছেলেটার হাত থেকে লাঠিটা এক টানে নিয়ে নিলো নিজের হাতে ,তারপর বলতে লাগলো ,কাম অন ফার্স্ট।
লোক দুটো অবাক হয়ে বললো ,তোর দম আছে দেখছি ।
আরিয়া: তোদের কি মনে হচ্ছিল?
পেছন থেকে একটা ছেলে বলতে লাগলো ,ওটার সাথে এতো কি বলে যাচ্ছিস ,মেরে দিয়ে চলে আয় ।
– মেডাম কইছে বাচাইয়া রাখতাম ,নিজের হাতে মারবো নাইলে মেডামের শান্তি নাই ।
– তাইলে এমনেই দাঁড়াইয়া না থাইকা হাত পা বান নয়তো এইটারে সুবিধার মনে হইতাছে না।
– লোকটার কথা মত আরিয়ার দিকে ছুড়ি এগুতে এগুতে বললো , চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক নয়তো এইডা দিয়া গলা কাটতে সময় লাগবো না।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
– আরিয়া এবার একটু ভয় পেলো , নিশ্চয়ই মেয়ে হয়ে এতো গুলো ছেলের সাথে পেরে উঠবে না,তাই দিক বেদিক না ভেবে হাতের লাঠি টা দিয়ে লোক দুটির মাথায় বারি মেরেই সামনে দৌড়াতে লাগলো ।
সাথে সাথে লোক দুটো মাথায় হাত দিয়ে নিচে এলিয়ে পরে ,মাথার রক্ত কপাল টপকায়,আহত গলায় বললো ,তোরা দেখছিস কি ওটাকে ধর,মেডাম আসতে দেরী হলে তোরাই কাজ সেরে দিস ।
লোক গুলো কথা মত আরিয়ার পেছনে ছুটতে লাগলো ।
আরিয়া দৌড়াচ্ছে হঠাৎ সামনে একটা গাড়ি এসে থামে , এতোক্ষণ তো একটাও গাড়ি ছিলো না এটা কোথা থেকে আসলো ? আরিয়া খেয়াল না করে জানালার সামনে গিয়ে গ্লাস থাপরিয়ে হেল্প চাচ্ছে , পরমুহূর্তেই গাড়ি থেকে নেমে এলো শবনম ।
শবনম কে দেখে আরিয়া যেনো একটু স্বস্তি বোধ করছে,দৌড়ে গিয়ে শবনমের সামনে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলো,দেখুন না ম্যাম ঐ ছেলেগুলো তখন থেকে ….. কথা টা বলা শেষ করতে পারলো না তার আগেই শবনম আরিয়ার চুলের মুঠি ধরে বললো ,কোথায় পালাচ্ছিস? পথ নেই যে এবার তোর ।
আরিয়া :আহ .. ম্যাম কি করছেন এসব , ছাড়ুন লাগছে আমার ,এমন করছেন কেনো আপনি?
শবনম তাচ্ছিল্যের স্বরে বললো ,আহারে বেচারী তোর জন্য কষ্ট হচ্ছে খুব জানিস , দোষ না করেও দোষী ।
আরিয়া: হাত সরান না ,মাথায় ব্যাথা হচ্ছে খুব । এতো জোড়ে ধরেছেন কেনো? আমাকে ভাইয়াও তো এমন করে ধরে শাস্তি দিতো কিন্তু আপনার মতো এতো জোড়ে ধরেনি কখনো ,আমি আর সহ্য করতে পারছিনা ছাড়ুন বলছি । আরিয়ার চোখে পানি জমে ।
শবনম অট্টহেসে বললো ,তোর জন্য, শুধু মাত্র তোর জন্য আমার ভাইদের মরতে হয়েছে ,কি ভেবেছিস এমনি এমনি তোকে ছেড়ে দেবো? অনেক আগেই মেরে দিতাম কিন্তু তোর ঐ মাফিয়া হাসব্যান্ড এর জন্য পারিনি ,বলে আরিয়ার গালে চর বসায় ।আরিয়া টাল সামলাতে না পেরে নিচে পরে যায় ,গালে হাত রেখে কান্না জড়িত কন্ঠে বললো ,এভাবে মারছেন কেনো আমায়? কিসের কথা বলছেন আমি বুজতেছি না ।
শবনম এবার আরিয়ার দিকে ঝুঁকে হালকা ভাবে এক পায়ে ভর দিয়ে উপর হয়ে বসে আরিয়ার চিবুক চেপে ধরে বললো ,তুই এতো ন্যাকা কেন হা? অবশ্য তোর এই না বুঝার কারনে আজ তুই আমার হাতে ,,ভেবেছিলাম তোকে মারতে কষ্ট হবে ঐ বেটার জন্য কিন্তু পরে দেখি পাখি নিজে নিজেই আমার হাতে এসছে ।
ভেবেছিলাম সেদিন ঐ মেরে দিবো কিন্তু মারিনি কেনো জানিস? আপন মানুষ চোখের সামনে মরলে কতোটা কষ্ট হয় ঐ বেটা আফরান কে বুঝানোর জন্য।
আরিয়া শবনমের হাত সরাতে চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা ,শবনম আরো শক্ত ভাবে ধরে বলতে লাগলো,আর শুনবিনা? মৃত্যুর আগে অন্তত সব টা শুনে মর ,মরার আগে একটু আফসোস করবি নাহয় ।
আরিয়া কথা বলতে পারছেনা স্পষ্ট ভাবে ,তবে বলার চেষ্টা করছে কিছু ।
শবনম বিরক্ত হয়ে বললো ,আজ তোর তেজ কোথায় গেলো? এতো দিন তো ভালোই তেজ নিয়ে ঘুরেছিস । নিশ্চয়ই ঐ মাফিয়ার সান্নিধ্য পেয়ে এক দিনেই চেন্জ হয়ে গিয়েছিস,বাহ তোদের ভালোবাসার জবাব নেই ,এই যুগে এসেও হাসব্যান্ড ওয়াইফের মাঝে এতোটা দুরত্ব থাকা সত্বেও ভালোবাসা হারায় না । কিন্তু আফসোস কি জানিস ,এতো প্রেমের পরেও তোদের মিলন হবেনা । সো সেড সুইটি ।
তবে কি জানিস বড্ড আফসোস হয় তোর ঐ মাফিয়া হাসব্যান্ড এর জন্য,এতো কিছু করেও তোর জন্য ওই বেটার ভালোবাসা টাই বুঝলি না ,সে যাই হোক তোদের ব্যাপার নিয়ে কথা বলে লাভ নাই আবার কখন চলে আসে তোকে খোঁজে খোজতে,
-এই একটা চাকু দিয়ে যা ।
শবনমের কথা মতো পেছন থেকে একজন লোক ছোট একটা ছুরি শবনমের হাতে ধরিয়ে দিলো ।
-এটা দেখছিস? এটা দিয়ে ঠিক আমার ভাইদের যেভাবে মেরেছিলো এইভাবেই তোকে এখন কেটে দিবো ,উহুম একদম ভয় পাসনা ধীরে ধীরেই মারবো কোনো তারা নেই ।
আরিয়া শবনমের হাত টা কোনো রকমে নিজের চিবুক থেকে সরিয়ে বলতে লাগলো ,এতোদিনেও মানুষ চিনলেন না দেখছি । বলেই আচমকা শবনমের হাত থেকে ছুরিটা একটানে নিয়ে উঠে দাঁড়াবার আগেই শবনমের হাতটায় ছুরি টানলো ।
শবনম ব্যাথায় ওহ বলে চেঁচিয়ে সাথে সাথে উঠে দাড়িয়ে বলতে লাগলো ,কি করেছিস এটা?এই শবনম কে চিনিস না এখনো তোর কি অবস্থা করবো তোর চিন্তার বাইরে ।
আরিয়া কথা না বাড়িয়ে যেই দৌড়ে পালাতে যাবে তার আগেই ছেলেগুলো আরিয়া কে ধরে ফেলে ।
আরিয়া : ছাড়ুন বলছি ,ঠিক করছেন না আপনারা ছেড়ে দিন আমায় ।
শবনম কাটা জায়গায় এক হাতে ধরে রক্ত আটকানোর চেষ্টা করে আরিয়ার সামনে এসে দাড়িয়ে বললো ,ভেবেছিলাম এক রাতেই ঐ সালা তোকে পরিবর্তন করে দিয়েছে এখন দেখছি তেজ টা আগের মতোই আছে ,বলতে বলতে আরিয়ার হাত থেকে ছুড়ি টা নিয়ে যায় ।
আরিয়া বুজতে পারছে তার সাথে খারাপ কিছু হতে চলেছে ,কি করবে মাথায় আসছেনা ,এই মুহূর্তে কি করবে সে মৃত্যু টা মনে হয় খুব নিকটে চলে এসেছে।
শবনম এক মুহূর্তও দেরী না করে আরিয়ার ডান হাত টা ধরে প্রথমে ঠিক সেই জায়গায় পুচ মারে যেখানটায় আরিয়া শবনমের হাতে মেরেছে।
আরিয়া চিৎকার করে উঠে ,আরিয়ার কান্না গুলো বৃষ্টির সাথে মিশে যাচ্ছে, রক্ত গুলো প্রবাহিত বৃষ্টির পানির সাথে গড়িয়ে যাচ্ছে রাস্তায় ,
পাশে থেকে শবনমের সাথে লোকগুলোর ও পৈশাচিক হাসির তুমুল শব্দ ,
শবনম এবার বললো , খুব কষ্ট হচ্ছে? আমিও দেখতে চাই তোর এমন নিসংশময় মৃত্যু তে মি চৌধুরী ওরফে মি মাফিয়া কেমন কষ্ট প্রকাশ করে তখনি তো আমার প্রতিশোধের আগুন মুছবে। কথা গুলো বলতে বলতে এবার শবনম আরিয়ার ডান হাতের আঙ্গুল গুলো ধরে বললো ,এখন কি করবো তুই বুজতে পারছিস? যেমন ভাবে আমার ছোট ভাইয়ের আঙুল গুলো আলাদা করে দিয়েছিলো তোকে ছোঁয়ার জন্য এমন করেই….
এটুকু বলতেই পেছন থেকে বিকট আওয়াজে কেউ বলে উঠলো,হেয়! ডোন্ট, ডোন্ট শুড , ডোন্ট কিল ।
সবার দৃষ্টি পেছনে এই মুহূর্তে পেছনে , রাস্তার পাশের ল্যাম্পলাইট গুলোতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে কতোটা ছন্নছাড়া হয়ে দৌড়ে আসছে আফরান ।
শবনম এবার আফরান কে দেখে মনে হয় আরেকটু খুশি হলো ,বাহ এতো দেখছি আরো বেশি মজার হবে বিষয়টা ,একদম চোখের সামনে মরতে দেখলে যন্ত্রণা টা তীব্রতা বাড়িয়ে যাবে তাই না বল।
পাশ থেকে একটা লোক বললো ,জি মেডাম ।
শবনম হেসে আফরান কে উদ্দেশ্য করে বললো,নিজেই এসে গিয়েছিস ভালো হয়েছে চোখের সামনে নিজের প্রান প্রিয় কে মরতে দেখ এখন ।
আফরান এবার শবনমের কাছে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বলতে লাগলো , দেখ ওকে ছেড়ে দে ,কথা টা বলেই আরুর দিকে তাকালো হাতে রক্তের আভা দেখেই রাগ কন্ট্রোল সিমা পেরিয়ে যায় ,দৌড়ে আরুর দিকে আসতে নিলেই শবনম আরিয়ার গলা বরাবর ছুড়ি টা ধরে বললো ,এক পা এগুবিনা নয়তো একদম বসিয়ে দিবো ।
আফরান একদম স্টপ হয়ে গেলো,কি করবে মাথায় ঢুকছে না। দুহাত উঁচিয়ে নিজেকে সেরেন্ডার করে বললো , দেখ আমার সাথে যা ইচ্ছা কর ,তোর আমার সাথে শত্রুতা ওকে কেনো মাঝে টানছিস।
শবনম: নো,নো ,একদম না , শত্রুতা কিসের ? প্রতিশুধের নেশায় ধরেছে যতক্ষণ না তোকে সেই যন্ত্রণা দিতে পারবো ততক্ষন যে বুকের ব্যাথা থামবেনা ,কথা শেষ করে আরুর চুল গুলো মুঠো করে ধরে বললো ,এই মেয়ের জন্য দিওয়ানা তাইনা , কিন্তু জানিস আমায় ভিষন ভাবায় একটা বিষয় ,এই মেয়ে তোর কথা বিন্দু পরিমাণ ও ভাবেনা আর তুই এর মধ্যে কি এমন দেখছি ,ওহ গড বোরিং দিস স্টোরি।
আরিয়া: আহ ছেড়ে দিন ,ব্যাথা পাচ্ছি তো । আরিয়ার কাতর কন্ঠের কথা টা আফরানের বুকে তীরের মতো বিদ্ধ হলো । খুব ব্যাথা হচ্ছে বুকের বা পাশ টা ,আজ কাজে যদি বের না হতো তবে এই সময় টা আসতো না ,সব টা দোষ নিজের উপর চাপিয়ে দিলো আফরান ।
– অনুনয় স্বরে কাতর কন্ঠে আফরান বললো ,দেখ ওর কষ্ট হচ্ছে ভিষন, ছেড়ে দে প্লীজ।আমাকে যা ইচ্ছা কর । বলে হাঁটু গেড়ে মাথা নত করে বসলো আফরান ।
শবনম যেনো এই একটা মুহূর্তের আশায় ছিলো । হুংকার দিয়ে জোড়ে জোড়ে হাসতে লাগলো।
আরিয়ার চোখ জোড়া আফরানের দিকে তাকিয়ে আছে । সত্যি দেখছে তো সব কিছু? নাকি কল্পনা ? কিন্তু আমাকে দেখেও কোনো প্রতিক্রিয়া কেনো জানাচ্ছেন না? কথা গুলো আরিয়ার মাথায় এমন পরিস্থিতিতেও ঘোরপাক খাচ্ছে।
শবনম: তোদের এতো ভালোবাসা দেখে আমি খুবই আবেগ প্রবন কিন্তু আফসোস এসব কিছুই আজ আটকারে পারবেনা আমার দেওয়া পৈশাচিক মৃত্যু থেকে তোর প্রান প্রিয় অবাধ্য বউকে ।
আফরান আরিয়ার চোখের দিকে তাকায় অসহায়ের মতো , চোখাচোখি হয় দীর্ঘ সময় বললে ভুল হবে হাজার হাজার প্রহর পর প্রথম বার আফরানের চোখের দিকে তাকায় আরিয়ার বুক টা কেমন করছে ,এমন পরিস্থিতি তে কখনো দেখেনি আফরান কে তাও এমন অসহায় মূহুর্ত।
শবনম:হয়েছে তোদের প্রেমালাপ ইশারায় ও প্রেম হয় হাউ সুইট কাপল, বলেই শবনম ছুড়ি টা আরিয়ার গলায় আরেকটু চেপে ধরতে যাবে তখনি শবনমের হাতের উপরিভাগ বরাবর গুলি লাগে । হাত থেকে ছুড়ি টা পরে যায় , লোকগুলো আকস্মিক ঘটনা বুঝার জন্য আরিয়া কে ছেরে কোন দিক থেকে এসেছে গুলিটা সেটা বুঝার চেষ্টা করে ।
আরিয়া সুযোগ পেয়েই শবনম কে ধাক্কা মেরে দৌড়ে এসে আফরান কে জড়িয়ে ধরে ।
আফরান বাচ্চাদের মতো আরুকে বুকে পেয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো,খুব মেরেছে? ব্যাথা পেয়েছো খুব ,
তারপর পরক্ষনেই আবার বুক থেকে সরিয়ে মুখোমুখি করে আলতো ভাবে দুহাত গালে রেখে বললো, কোথায় কোথায় মেরেছে বলো ,ওদের অস্তিত্ব মুছে ফেলবো পৃথিবী থেকে ।
আরিয়া কিছুই বলছে না শুধু ভয়ে বুক কাঁপছে তার , আফরান কে আবারো জড়িয়ে ধরে।
শবনমের কিছু বুঝে আসার আগেই নাবিল গাড়ি থেকে নেমে এসে বললো ,তোকে বারবার বলেছিলাম আরুর কিছু না করতে শুনলি কোথায় । সেই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আরুকে আঘাত করলি ।
শবনম নিজেকে সামলিয়ে বললো ,,মাঝ খানে এসে সব ভেস্তে দিলি এখন নিজেকে তো আগে বাঁচা ,তোর তো কিছু করিনি তবুও কেনো ইয়ার তোরা এই মেয়েটাকে নিয়ে কেনো পরে আছিস? কি আছে এই মেয়ের মধ্যে? (বিরক্ত গলায় )
নাবিল ভিলেনি হাসি দিয়ে শবনমের একদম সামনে গিয়ে বন্দুক টা বুক বরাবর ধরে বললো , ওকে বুঝিয়ে দিচ্ছি।
নাবিল আর আফরান কে দেখে চেলাপুলে গুলো ভয়ে কদম পিছিয়ে দৌড়ে পালায় ,যেখানে দুই জন গ্যাংস্টার লিস্টের প্রথম পাতায় নাম লেখা সেখানে তারা জীবনের ঝুঁকি ইচ্ছে করে ফেলতে চায়না ।
লোক গুলো যাওয়ার পর শবনম নিজেও হালকা ভয় পায় কিন্তু সেটা প্রকাশ না করে কন্ফিডেন্স নিয়ে বললো ,তুই ভুলে যাচ্ছিস মনে হয় আমার সম্পর্কে।
নাবিল বাঁকা হেসে বললো , ভালোভাবে কালকে বলেছিলাম যদি তুই আরিয়া কে কিছু করে থাকিস বলে দে তারপরও বললি জানিস না ,তারপর বুঝে গিয়েছিলাম আরিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না সেখানে আফরান নিশ্চয়ই চুপ করে বসে থাকবেনা ,তারপর খেয়াল করলাম আফরান একদম স্বাভাবিক তখনি বুঝে গিয়েছিলাম আফরান আটকেছে , কিন্তু কোথায় সেটা আমি জানার আগে তুই মনে হয় সেইদিন রাতেই বুঝে গিয়েছিলি আফরান শেয়ার দেবে না তাই আফরানই আটকেছে আরুকে। আর আমি অপেক্ষা করছিলাম আরুর একটা কলের জন্য।
কিন্তু তুই তো পুরো প্লেন টাই বানিয়ে নিলি,ভেবেছিলি শেয়ার নেওয়ার পর মারবি যখন দেখলি শেয়ার পেলিনা তখন ভাবলি বাঁচিয়ে লাভ নেই তাই ছেলেপুলে লাগিয়েছিস। ভেরি গুড,কথা তো শুনলি না এখন কি হবে নিজেই ভেবে নে ।
শবনম:দেখ বাড়াবাড়ি করিস না ,ঠিক আছে আমি ছেড়ে দিবো ঐ মেয়েকে ।
নাবিল তাচ্ছিল্যের স্বরে বললো: ওহ ! বাচার শখ জেগেছে দেখছি ।
শবনম চারদিকে একবার তাকায় কিন্তু কোনো হাতিয়ার তার ধারেকাছেও নেই , বাঁচার মতো কোনো রাস্তা নেই ।
নাবিল আর দেরী না করে যেই না ট্রিগারে চাপ বসাতে পরমুহূর্তেই পেছন থেকে তানভীর এসে শবনমের পায়ে গুলি করে ,শবনম চিৎকার করে নিচে পরে যায় ।
নাবিল অবাক হয় কিছুটা ,কি করলি এটা? আমিই মেরে দিতাম ।
তানভীরের পেছনে কমপক্ষে শত এর উপর লোক হবে মনে হয় দৈহিক গঠনাকৃতি বেশ চওড়া । লম্বায় একেকজন মনেহয় ছয় ফুটের মতো আবার কম বেশিও আছে ।
তানভীর কোনো উত্তর না দিয়ে প্রথমে শবনমের দিকে ইশারা করে তারপর তানভীরের দিকে ।
দুজন লোক প্রথমে শবনম কে উঠিয়ে নেয় কালো একটা গাড়িতে ,
নাবিল এসবে পাত্তা না দিয়ে পেছনে ফিরে আফরান কে দেখে আরুকে কোলে তুলে মাত্র দাঁড়িয়েছে ,
– আরিয়া দুর্বল হয়ে শুধু আফরানের দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু ভেতর থেকে একটু আগের সব ঘটে যাওয়া বিষয় গুলোতে ভয় পেয়েছে খুব বেশিই তাই শরীরের কম্পন যেনো থামছেই না ।
মি মাফিয়া পর্ব ৪৪
নাবিল: এই কি করছিস ? ওকে তুই নয় আমি বাঁচিয়েছি,দেখ আফরান গাদ্দারী করবি না বলে দিলাম । নয়তো ভালো হবেনা বলে কয়েক কদম বাড়াতেই পেছন থেকে কয়েকজন গার্ড এসে নাবিল কে ধরে ফেলে ।
নাবিল রাগের তুপে কি করবে বুঝতে পারছেনা ছুটার চেষ্টা চালাচ্ছে, কিন্তু লোক গুলোর সাথে পেরে উঠতে না পেরে মুহুর্তেই ডেভিল হেসে বললো , এতো প্লেন করেছি সব কিছু জলে মিশিয়ে দিলি ,এতো কষ্ট করলাম তবুও যেহেতু পেলাম না বুঝে নে তুই ও পাবিনা ,আরিয়া আমার না হলে কারো না , কিন্তু আফসোস সেদিন রাতে আরিয়া আমার কাছে আসলেও নিজের করতে পারিনি এতো বছরে । তোর মতো ভিলেন মাফিয়া হতে চেয়েও আমি ওর কাছে হেরে গিয়েছি চাইলেই পারতাম জোড় করতে কিন্তু করিনি আমি তবুও যেহেতু পেলাম না ….. কথা শেষ না করে নাবিল বাঁকা হেসে আচমকা হাতের বন্দুক টা চালিয়ে দেয় আরিয়ার দিকে . তারপর……