মি মাফিয়া পর্ব ৪৮

মি মাফিয়া পর্ব ৪৮
সুমাইয়া সাবিহা

আজ আকাশ টা একদম চকচকে পরিস্কার ,নেই কোনো বৃষ্টির ছিটেফোঁটাও। ঝড়ো হাওয়ার কোনো পুর্বা বাস ও দেখা যাচ্ছে না ,রোদের তাপ টাও একটু প্রখর । আরিয়া ঘুমিয়ে আছে ফেইস টা তেলতেলে হয়ে একটু ঘামছে । বিরক্ত নিয়ে শরীর থেকে কম্বল টা এক হাতে ফেলে দিয়ে চোখের উপর নিজের হাত রেখে আবার ঘুমিয়ে যায় ।
কিন্তু নিচ থেকে হঠাৎ করেই এতো চেঁচামেচির আওয়াজ শুনতে পেয়ে আরিয়া বিরক্ত নিয়েই চোখ বন্ধ অবস্থায় উঠে বসে । চোখ কচলিয়ে আবারো ঝিমোচ্ছে আরিয়া । তখনি দরজায় করাঘাতের আওয়াজ পেয়ে আরিয়া খাট থেকে নামে দরজা খোলার জন্য।

কিন্তু তার আগেই চোখে পরে হাতের ব্যান্ডেজ এর দিকে । এটা তো নিউ মনে হচ্ছে। আবার কখন এটা বেদে দিলো সামু । কিন্তু আমি তো … নিজের কথা শেষ করতে পারলো না দরজার আওয়াজের কারনে । তাই আর না ভেবে গিয়ে দরজা টা খুলে দিলো আরিয়া ।
সামিরা : এতোক্ষণ ধরে ঘুমচ্ছিস কখন থেকে আওয়াজ করছি শুনিস না ।
আরিয়া সামিরা কে পেছনে ফেলে ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে বললো ,কি হয়েছে এভাবে ডাকছিস কেনো । আমি ফ্রেস হয়ে আসছি ।বলে ওয়াশ রুমের দিকে পা বাড়াতে যায় কিন্তু পরক্ষণেই আবার পা জোড়া আটকে যায় সামিরার কথা টা শুনে ,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-সামিরা: ভাইয়া ফিরেছে হসপিটাল থেকে ।
আরিয়া সামিরার দিকে ফিরে বললো ,মজা করছিস? উনার অবস্থা ঠিক হয়নি এখনো , ডঃ বলে দিয়েছে আরো ৭/১০ দিন ওখানেই থাকবে ।
সামিরা: মজা করছি না আরু,ভাইয়া ফিরেছে শরীরের অবস্থা ঠিক নেই সেটা সবাই জানি বাট ভাইয়া রাতেই বাড়ি এসেছে কাউকে না বলে ।
আরিয়া আর কিছু না বলে দ্রুত পায়ে বের হয় রুম থেকে ।
আফরান এর রুমের দিকেই যাচ্ছিলো আরিয়া কিন্তু চোখ যায় ড্রয়িং রুমে সোফায় ,জাফর সাহেব,রহিমা, খলিল সবাই আফরান কে ঘিরে দাঁড়িয়ে কথা শুনিয়ে যাচ্ছে।
আফরান বিরক্ত নিয়ে কপাল কুঁচকে আছে ।
জাফর : আফরান তোমাকে আসতে কে বলেছে? একবারও আমাদের কে বলার প্রয়োজন মনে করোনি কেনো ? তুমি কি…

রহিমা: ভাই সাহেব, আচ্ছা অনেক হয়েছে এসে গেছে যেহেতু বাড়িতেই ডঃ রাখার ব্যবস্থা করুন না ।
জাফর: ও কি জানেনা ওর অবস্থা? এখনো ছোট নাকি যে বুঝিয়ে বুঝিয়ে বলতে হবে সব কিছু ।
আফরান এবার ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে সোফা থেকে আস্তে করে দাঁড়িয়ে বললো , হয়েছে ? আমার বিষয় নিয়ে কেউ কথা বলুক আমার পছন্দ নয় ,কথা বাড়ালে এর ফল ভালো হবে না ।কখনো তো কাউকে কিছু বলে করিনি তবে আজ কেনো নিজেদের অধিকার আমার উপর ক্রিয়েট করছো ।
বলে সবাইকে পাশ কেটে শার্টের উপরের বোতাম টা লাগাতে লাগাতে বের হতে যায় কিন্তু আবারো পা স্থির করে শার্ট থেকে হাত টা নামিয়ে সামনে ঘুরে বললো ,নেক্সট টাইম যেনো আমার ব্যাপারে আজকের মতো সিনক্রিয়েট করতে না দেখি ।

আরিয়া উপর থেকে একদৃষ্টিতে দেখছে লোকটাকে,সেই আগের মতোই আছে ,মেচিউরিটি কি এই লোকটার মধ্যে কখনো আসবেনা ? শরীরের কি অবস্থা এটা কি উনি জানেনা ? এতোটা careless কিভাবে হয় মানুষ ।
আচ্ছা উনি কি আমার কথা একবারও জিজ্ঞেস করেনি কাউকে? একবারও দেখতে ইচ্ছে হয়নি ?
আরিয়া নিচে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় কিন্তু একটা কথা মাথায় আসতেই সাহস হাড়ায় আরিয়া ,গিয়ে কি বলবো ? কিভাবে কথা বলবো উনার সাথে?
আরিয়া এসব ভাবার মাঝেই আফরান গেইট‌ পেরোয় ।
আলিয়ার মন টা যতোটা উদ্বিগ্ন হয়ে ছিলো একটু কথা বলার জন্য এখন ততটাই খারাপ হয়ে গেলো । তবে নিজেকে বুজিয়ে নিয়েছে হয়তো ইমারজেন্সি কাজ পরেছে তার জন্য।

আফরান কিছু ফাইল দেখা শেষ করলো মাত্র । তানভীর সামনেই দাঁড়িয়ে আছে ।
আফরান গালের ডান পাশে জিহ্বা ঢুকিয়ে বাঁকা হেসে বললো: ঐ দুটোর যত্ন নিয়েছিস?
তানভীর: সব ঠিক আছে স্যার ।
আফরান: গুড ,বলে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পরনের কোট টা খুলে তানভীরের হাতে দিয়ে রুম থেকে বের হলো ।
তানভীর ও আফরানের সাথে গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে বললো ,বাড়ি যাবেন?
আফরান: বাঙলো তে।
তানভীর একবার ঢোক গিলে বললো , স্যার আপনি আগে সুস্থ হয়ে নিন তারপর নাহয় ….
তানভীর কথা টা বলে শেষ করার আগেই আফরান গাড়ি থেকে নেমে তানভীরের দরজা টা খুলে দিয়ে বললো ,গেট আউট।
তানভীর আফরানের দিকে তাকিয়ে মুখে হাসি টানার চেষ্টা করে বললো ,স …সরি স্যার আমি যাচ্ছি বসুন না আপনি ।বলে গাড়ি স্টার্ট দিলো।
আফরান এবার তানভীরের দিকে একই দৃষ্টি তে তাকিয়ে রইলো ।তবে হিংস্রতায় ঘেরা এই চোখ।
তানভীর না চাইতেও নামতে হলো ।আফরান সাথে সাথে উঠে বসে গাড়ি নিয়ে চলে গেলো ।
তানভীর: কোনো দিন ও পরিবর্তন হবার নয় এই ক্যেরেক্টার । বলে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে অন্য গাড়ি নিয়ে আফরানের অনুসরণ করলো । এই অবস্থায় একা ছাড়া মোটেও ঠিক হবে না ।

আফরান কাঁচের টেবিল টার উপর বসে দুহাত দুই সাইডে রেখে এক পা অন্য পায়ের উরুর উপর রেখে চোখ বন্ধ করে বসে আছে ।
সামনেই শবনম আর নাবিল কে চেয়ারে বেঁধে রাখা হয়েছে মুখে টেব পেছানো তাই কোনো আওয়াজ নেই ।
আফরানের ঠিক ডান পাশে একটা বিশাল লোহার মটকায় তেল গরম করা হচ্ছে।
শবনম একটু পরপর আফরান আর ঐ পাত্রের দিকে তাকিয়ে ঘামছে । শরীরের জামা ভিজে ছুপছুপ হয়ে আছে । চোখে মুখে ভয়ের ছাপ ,শরীর কাঁপছে ভিষন।

নাবিলের ও সেইম অবস্থা তবে দেখে বুঝা যাচ্ছে হয়তো আগে থেকেই জানতো অমন টাই হবে ।
তানভীর পেছনে দাঁড়িয়ে একদম চুপসে আছে নিজের দুহাত আকরে ধরে ।তবে এসব তার রোজকার দেখে অভ্যস্ত তাই ভয় নেই ভেতরে কিন্তু উল্টা পাল্টা কিছু হলে যে তাকেও এখানে চুবিয়ে ছাড়বে এটাও নিশ্চিত।
কারন আফরান সাধারণত মানুষ মারে একেকরকম স্টাইলে তবে বেশির ভাগ সময়ই সময় নষ্ট করেনা এসবে ডিরেক্ট ছুরি চালায় । কিন্তু রাগ যখন গতি সীমার বাইরে যায় আর অপরপক্ষের মানুষ টার অপরাধ টা আফরান কে আঘাত করে ঠিক তখনই এসব পুরিয়ে,আগুনে অথবা ফুটন্ত পানিতে কিংবা গরম তেলে ভাজে নয়তো এই রাগ ঠান্ডা হওয়ার নয় । এই কারনেই মনে হয় জ্ঞেন ফিরতেই হসপিটাল থেকে চলে এসছে নয়তো কখন‌ নিজেকেই হসপিটালে বসে আঘাত করে বসতো ।
আফরান তানভীরের দিকে মাথা বাঁকা করে তাকায় , তানভীর সাথে সাথে পাশ থেকে ৭ ইঞ্চির ছুরি টা আফরানের দিকে এগিয়ে ধরে ।

তারপর পাশ থেকে একটা ছেলেকে আফরানের সামনে পাঠায়।
আফরান ছুরি টা হাতে নিয়ে প্রথমে একবার ঘুরে ঘুরে দেখে সেকেন্ড কয়েক পর নিজের হাতেই প্রথমে আক টানে ,সাথে সাথে রক্ত গড়িয়ে ফ্লোরে পরে ।
তানভীর জানে আফরান এটা কেনো করেছে ,যখন কাউকে কঠিন ভাবে শাস্তি দেওয়ার প্লেন করে ঠিক তখনি প্রত্যেক টা অস্ত্র চেক করে দেখে যে ,এটা এর আগে কখনো ব্যবহার হয়েছে কিনা কিন্তু আজ নিজের হাতে চেক করবে এটা জানতো না ,সব সময় তো অন্য কারো শরীরে আঘাত করে ।
তানভীর আফরানের সামনের ছেলেটাকে চোখের ইশারায় সরে যেতে বলে ,ছেলেটা ও দ্রুত পায়ে সরে যায় ।
আফরান এবার দৃষ্টি ফেলে প্রথমেই শবনমের দিকে ডেভিল হাসে আওয়াজ হীন।
তানভীর শবনমের পেছনে থাকা লোক দুটোকে ইশারা করতেই শবনমের চেয়ার টেনে একদম আফরানের সামনে আনে ।
শবনম বারবার মাথা নাড়িয়ে কিছু বলার চেষ্টা করছে । কিন্তু সেই সুযোগ কি আদৌ হবে শবনমের?
পাশের ফুটন্ত তেলের কড়াই টাও যেনো তীব্র থেকে তীব্র ধোঁয়া তুলে জানান দিচ্ছে এই বুঝি সব ছাড়কার হয়ে যাবে ।

একটা লোক শবনমের বাম হাত টা খুলে দিয়ে মুখের টেব টাও খুলে দেয় ,তারপর হাতটা শক্ত করে ধরে রাখে আফরানের দিকে ।
শবনম হাঁপাতে হাঁপাতে কাশতে কাশতে বলে : দেখ আফরান ,এটা কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে। আমি কিন্তু তোর বউকে কিছু করিনি সত্যি বলছি ।
আফরান শবনমের দিকে একবারও তাকালো না শুধু কথা গুলো শুনে গেলো ।
লোকটা এখনো আফরানের সামনে শবনমের হাত ধরে আছে পুক্ত ভাবে ।
আফরান একদম সাইলেন্ট ভাবে ছুরিটা শবনমের ঠিক শিরা বরাবর বসার । শবনম চিৎকার করে উঠে ,পুরো বাংলোতে যেনো চিৎকারের ধ্বনি কয়েকবার উচ্চারিত হলো ।

শবনমের হাত থেকে রক্ত নিচে পড়ার আগেই লোকটা শবনমের হাত টা ফুটন্ত গরম তেলে ধরে । সেকেন্ড কয়েকের মধ্যেই পুরো ১০ হাতের চওড়া লম্বা মটকার তেল টা রক্তে পরিনত হয় ,
শবনম চিৎকার করেই যাচ্ছে হাত টা গলে যাচ্ছে, রক্ত এবার উপত্যকার পানির ন্যায় বের হতে লাগলো ,তেল টা দেখলেই সেটা বুঝা যাচ্ছে মুলতো এটা কি তেল নাকি রক্ত রান্না করে প্রগাঢ় করা হয়েছে বুঝার উপায় নেই ।
আফরান যেনো এতেও শান্তি পাচ্ছে না , তাই তেলের উপর দিয়েই পাশ থেকে ১৩ ইঞ্চির ছুরি টা নিয়ে শবনমের হাতে একের পর এক আঁকতে থাকলো । শবনমের জ্ঞেন তার মধ্যেই হারায় । আসলে জ্ঞেন হারিয়েছে নাকি মারা গেছে বুঝার জন্য আরেকজন লোক শবনমের অপর হাতে চেক করে জানায় জ্ঞেন হারিয়েছে ।
এবার তানভীরের দিকে তাকিয়ে বললো , আমার বউয়ের হাত থেকে রক্ত কতোটা ঝড়েছে? পানির পরিমান টা কতো হবে রে তানভীর?

তানভীর কাপা গলায় উত্তর দেয় , বৃষ্টির পানি তো পরিমাপ করা যায় না স্যার ।
আফরনের চোখ জোড়া সাথে সাথেই আগুনের উপরের যেই লাভা টা লালচে কালার থাকে ঠিক সেই কালারই হয়েছে ।
তানভীর বুঝতে পারছে আফরানের এই অগ্নিসংযোগ থামার নয় তানভীর কে কিছু করার আগেই গড়গড়িয়ে বলতে লাগলো ,স্যার আপনি চাইলে একদিনে না মেরে প্রতিদিন এমন বিশাল কড়াইতে তেলের মধ্যে শাস্তি দিতে পারেন যতোদিন মরে না যায় ততদিন রক্ত ঝড়াবেন ।
আফরান এর মনে হয় প্রস্তাব টা পছন্দ হয়েছে তাই মুখে হাসি ফুটিয়ে বললো ,গুড জব। আই লাইক ইউর দিজ প্রপোজাল।
তারপর সামনের লোকটাকে বললো ,এখন তাহলে এই হাত টা কেটে দে কাল নাহয় ঐ হাত টা দেওয়া যাবে ।
লোকটা সম্মতি জানিয়ে তেল থেকে হাত টা উঠিয়ে পাশ থেকে কন্চি দা টা এনে এক কুপে ঠিক কনুই পর্যন্ত বিখন্ড করে । শবনম এতোক্ষণ অজ্ঞেনে থাকলেও এই শেষের আঘাতের তুপে আবারো চিৎকার করতে থাকে ।
আফরান: তাকিয়ে আছিস কেনো? ঐ রক্ত গুলো যেনো তেলের সাথেই মিশে, এক ফোঁটাও আর নিচে দেখতে চাইনা ।

লোকটা সাথে সাথে শবনমের অর্ধহাত কড়াইয়ের উপরে ধরে ,রক্ত গুলো শশশশ আওয়াজে কড়াইতে পড়তে থাকে ।
শবনম আবারো জ্ঞেন হারায় ।
তার কিছুক্ষণ পর একটা লোক এসে শবনমের হাত টায় বেন্ডেজ করে দেয় আফরানের আদেশে ।
এতোক্ষণ নাবিল সব টাই দেখছিলো ,,মাথার উপর দিয়ে সব টা গেছে ভয়ে চোখ বিয়ে পানি বের হয় ,লাল হয়ে আছে চোখ দুটো নাবিলের ,থরথর করে কাঁপছে শরীর।
আফরান স্মীত হেসে এবার এক লাফে টেবিল থেকে নেমে নাবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় ।
পাশ থেকে একজন চেয়ার টেনে দেয় ।
আফরান সেটাতে বসে নরম গলায় বললো , নিশ্চয়ই এর আগে কখনো এমন দেখিসনি,আগেই বলেছি শুধু শুধু লাগিস না আমার পেছনে ,আমাকে এখনো চিনতে পারিসনি ,এখন বল দোষ টা কার ?
নাবিলের পুরো শরীর দিয়ে ঘাম ঝরেই যাচ্ছে একাধারে ।

আফরান: চিন্তা করিস না তোকে একেবারে মারবো না ইয়ার ,হিসেব মিলিয়ে তারপর মারবো ।দেখ বুঝিয়ে দিচ্ছি,তিন বছর আমার থেকে কেড়ে নিয়েছিস ,ওহ সরি তিন বছর থেকে ১৭ দিন কম আই মিন ১০৭৮ ডে। তোকে তিলে তিলে মারবো। যদিও আমার বউয়ের ও একটু ভুল আছে এতে ওটাকে তো পরে দেখে নেবো ।
বাট তিন টা বছর আমার বউয়ের কাছাকাছি থাকার ফল টা ঠিক তিন বছর করেই মিটাবো ,কি বললাম বুঝেছিস?
একটু থেমে আবার বললো,আচ্ছা দাড়া ভালো ভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছি,ঠিক তিন বছর তোকে বাচিয়ে রাখবো নিজের মন মতো করে তোর শরীর টাকে একে একে কাট কাট করে সাজাবো তারপর মারবো। এখন‌ নিশ্চয় বুঝেছিস ।
নাবিলের শরীর থেকে টিশার্ট টা খুলে দিলো তানভীর,
আফরান আরেকটা নতুন ছোট সাইজের ছুরি নিয়ে প্রথমে নাবিলের সম্মুখে বুকের উপর হালকা করে কয়েক টা জায়গায় আক বসায় ।

নাবিল চিৎকার অব্দি করতে পারছেনা মুখ বাধার কারনে ,চোখ বন্ধ করে চোখের পানি ঘাম একসাথ করছে ।
আফরান একটু শব্দ করে হেসে বললো ,জানিস এটা কিসের জন্য? সেদিন রাতে আমার কলিজায় স্পর্শ করেছিস সেই কারনে ।তবে এটুকু তেই হবেনা আমার । যতো বড় সাহস নিয়ে অন্ধকারে আমার বউয়ের সুযোগ নিয়েছিলি , ঠিক তোর সাহস টা যতদিন না কমবে এভাবেই চলবে সব ।
তারপর নাবিলেন ডান হাতের দিকে তাকিয়ে প্রথমে মাঝের তিন আঙুল ধরে তাচ্ছিল্যের স্বরে বললো ,এগুলো দিয়ে আমার বউয়ের পা স্পর্শ করেছিলি সেদিন তাইনা ।
আমি কিভাবে এসব জানলাম অনেক প্রশ্ন তোর মনে ,ওকে উত্তর দিচ্ছি ওয়েট ,আফরান নাবিলের হাত থেকে নিজের হাত সরিয়ে একটু পিছে গিয়ে বসে পায়ের উপর পা তুলে বললো ,তোর কি মনে হয় আমি আমার বউকে এমনি এমনি তোর কাছে রেখে চলে গিয়েছি?

হ্যাঁ সেদিন রাতে আমার একটু রাগ হয়েছিলো বউয়ের উপর মনে হয়েছিলো মিথ্যা বলছে পরে যখন ঠান্ডা মাথায় ভাবলাম বূজলাম আমার আগে কেউ এসেছিলো যাকে আমার বউ আমি মনে করেই জড়িয়ে ছিলো । তাই লোকটার ব্যাপারে খোঁজ নিলাম ,কয়েক ঘন্টার মধ্যেই সব পরিস্কার ভাবে বুঝে গিয়েছিলাম তোর প্লেন ,তারপর যখন আবার আমাকে চেলেন্জ দিয়েছিলি তখন তো ফুল কনফার্ম ছিলাম ।
কিন্তু বউয়ের উপর রাগ হলো প্রচন্ড আমার , রাগ করে তোর কাছেই কেনো যেতে হলো ? ভেবেছিলাম কদিন থাকলেই বউ আমার শূন্যতা বুঝবে কিন্তু বউ যে আমার মতোই কন্ট্রললেস রাগী সেটা আমার জানা ছিলো না ।
কি আর করার আমিও দেখতে থাকলাম চুপচাপ সব , কিন্তু বউয়ের আশে পাশের প্রতিটা কাজের লোক , ড্রাইভার হতে শুরু করে রান্নার লোক সব গুলোই আমার পাঠানো লোক ।

প্রতিটা সেকেন্ডের খবর আমার কাছেই ছিলো ।
কথাগুলো বলা শেষ করে আফরান পা থেকে পা নামিয়ে চেয়ার টেনে নাবিলের কাছে এসে যেই হাতে স্পর্শ করেছিলো আরিয়া কে সেই আঙ্গুল গুলো বাম হাতে ধরে ডান হাতের ছুরিটাই দিয়ে এক আঘাতেই আলাদা করে দিলো ।
নাবিলের সহ্য সীমার বাইরে সব হচ্ছে কিন্তু ছেলে মানুষ বলেই মনে হয় এখনো সজ্ঞেনে আছে ।
রক্ত পরা শুরু করেছে আঙুল থেকে ।

আফরানের মনে হয় এখানেই শান্তি মিললো না ,তাই বুকের উপরও আরো কয়েকবার ছুরিটা দিয়ে আঘাত হানলো ।
বুক চিরে স্রোতের মতো রক্তক্ষরণ হতে লাগলো ,শেষ পর্যায়ে এসে নাবিল ও জ্ঞেন হারায় ।
আফরান ইশারা করে পাশ‌ থেকে একজন কে । সাথে সাথে লোকটা এসে নাবিলের খাতির করা শুরু করলো ।
আফরান বাঁকা হেসে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ছুরিটা পেছনে ছুঁরে ফেলে দ্রুত পায়ে বাঙলো থেকে বের হয় ।
তানভীর ও আফরানের পিছে আসে ।

মি মাফিয়া পর্ব ৪৭

আফরান: দুটো যেনো না মরে যায় এর উল্টো‌ হলে তোকে এদের জায়গায় বসাবো ।
তানভীর নিজের কপালের ঘাম মুছতে লাগলো ।
আফরান আবারো ডেভিল হেসে গাড়িতে গিয়ে বসলো । তারপর……

মি মাফিয়া পর্ব ৪৯