মি মাফিয়া পর্ব ৫১

মি মাফিয়া পর্ব ৫১
সুমাইয়া সাবিহা

নিজেকে আগের মতো স্ট্রংলি দাঁড় করিয়ে চেহারা আগের মতো মলিন করে কর্কশ গলায় বললো , লজ্জা থাকার কথা মেয়ে হিসেবে ,কেনো এসেছিস এখানে? বলেছিলাম না আমার রুমে আসার মতো সাহস দেখাবি না । মার খাওয়ার ইচ্ছে হয়েছে বুঝি ? ১০ সেকেন্ড সময় দিলাম রুম ছাড়,আফরান কথা টা বলেই আরুর সামনে থেকে ধীর পায়ে হেটে সামনের দিকে যেতে নেয় আরিয়া সেই সুযোগ টা আফরান কে না দিয়ে আফরান এর সামনে গিয়ে আচমকাই দু পা একটু উপুড় করে ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে দেয় ।

আফরান হত বিহ্বল হয় ,, কয়েক সেকেন্ডের মাথায় নিজের অবস্থান বুঝে আরিয়ার বাহু ধরে শক্ত হাতে সরিয়ে দিয়ে চাপা গলায় বললো,সাহস কি করে হয় তোর আফরান চৌধুরীর সাথে অসভ্যতামী করার ,পেট পিঠ দেখিয়ে কবে থেকে চলাফেরা করা শুরু করে দিয়েছিস? সত্যি করে বল তো বাড়িতে কোনো ছেলে মানুষ আছে নাকি ? আর এতো রাতে পরপুরুষের রুমে আসতে রুচিতে বাঁধলো না ? তার উপর জঘন্য ব্যাবহার করেছিস , নাকি সহ্য হচ্ছিল না নিজেকে কন্ট্রোল করার ?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আফরানের প্রতিটা কথা আরিয়ার শরীরে কাটার মতো বিদ্ধ হলো,এতো জঘন্য শব্দ কিভাবে উনি করতে পারলেন ,সঙ্গে সঙ্গে চোঁখে জল টলমল করতে লাগলো , কিন্তু এভাবে থেমে গেলে চলবে কি করে ,উনি রাগ করবেন এটাই তো স্বাভাবিক তাইনা তবে কেনো কথা গুলো আমার বুকে তীরের মতো বিদ্ধ হচ্ছে?
এতো কষ্ট করে ৪ ঘন্টা ধরে সেজেছি ভেবেছিলাম রাগ টা একটু তো কমে যাবে ,আরু কে এভাবে দেখে মি মাফিয়া রাগ করে থাকতে পারবে নাকি ,মোটেও পারবেনা ,তবে কেনো আমার ধারনা ভুল প্রমানিত করলেন?
ছলছল চোখে আফরানের দিকে তাকিয়ে রইলো ,,,

আফরান : কি হলো বল ,আর শুন , আগের কথা মাথা থেকে ফেলে দে বুঝলি ,যেদিন বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলি সেদিন থেকে রুচি থেকে উঠে গিয়েছিস,সো নেক্সট টাইম যেনো এসব করতে না দেখি ,আর এসব ড্রেস কোথা থেকে নিয়েছিস? কিছু না পড়লেই তো ভালো হতো ,কথা টা বলে আফরান আরিয়ার উন্মুক্ত পেটে হাত বাড়িয়ে নাভী বরাবর বেরী টা একটানে ছিরে ফেলে ।
আরিয়া ব্যথায় শব্দ করে বললো :- ,ওহ কি করছেন কি ? না দেখার হলে না দেখবেন এমন ছিঁড়ে ফেলার কি আছে ।
আফরান : আওয়াজ নিচে একদম , নোংরা মানুষদের আমার রুমে আসা নিষেধ । তা এখনো পালাসনি কেনো আবার? রাস্তা একদম ক্লিয়ার চলে যা , ট্রাস্ট মি ,আর খোজবোনা ফাইনাল ।
শক্ত গলায় দাঁতে দাঁত চেপে কথা গুলো বলে আফরান আরিয়ার সামনে থেকে গিয়ে বিছানার পাশ‌ থেকে শার্ট টা নিয়ে দ্রুত পায়ে বারান্দায় চলে গেলো ।

আরিয়া দাঁড়িয়ে দুই ফোঁটা চোঁখের জল ফেলে নিজেই মুছে নিয়ে বললো , যতো যাই বলুন না কেনো আপনার রাগ কতোক্ষণ থাকে আমিও দেখে নিবো ।
কথা টা ভেবে আরিয়াও আফরানের পিছে বারান্দায় গেলো ,আফরান চেয়ারে বসে সিগারেট টা মাত্র হাতে নিলো জ্বালানোর জন্য,, প্রচন্ড রাগ হলে আফরান সিগারেট হাতে নেয় ,,,
আরিয়া এসে আফরানের হাত থেকে সিগারেট টা নিয়ে ফেলে দিয়ে বললো ,বলেছি না এটা আমার পছন্দ না ,বুঝেন না কথা ? আশ্চর্য তো আপনিও দেখছি কম বুঝেন সব কিছু।
আফরান চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে বললো ,,হাউ ডেয়ার ইউ। লিমিটের মধ্যে থাক আরু নয়তো আমাকে আগের রুপে ফিরাস না ।

আরিয়া আফরানের আরো কাছে আসতে আসতে বললো , আচ্ছা তাই? তাহলে তো আমাকে ….
কথা শেষ না করে চুপ হয়ে যায় নিজেই ,একদম কাছে এসে আফরানের শার্টের উপরের বোতাম টা লাগাতে লাগাতে বললো ,, সত্যিই কি চেন্জ হয়ে গিয়েছেন নাকি রা…..
কথা শেষ করার আগেই আরিয়া কে কাছ থেকে সরিয়ে দিয়ে ঠাস করে গালে চর বসিয়ে দিল ।
-বলেছিলাম না একদম কাছে আসবি না ,তোর কাছাকাছি থাকার জন্য তো অনেক মানুষ আছে তাইনা যাদের কাছে হেল্প চাইতে পারিস থাকার জন্য এখন ও সেখানেই যেতে পারিস । ভালো ভাবে বলছি সামনে থেকে চলে যা আমার সামনে যেনো আর না দেখি কখনো । একই ভুল দ্বিতীয় বার হলে এবার মেরে একদম চাপা দিয়ে দিবো ।
আরিয়া এখনো গালে ধরে আছে না চাইতেও চোখের জল ফেলছে ,,
আফরান : এখনো দাঁড়িয়ে আছিস ,তোর সাহস দেখে অবাক হচ্ছি আমি,বলে তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে আরিয়া কে পেছনে ফেলে চেয়ার ঘুরিয়ে বসে ।

আরিয়া নিজেকে সংযত করে আর কথা না বাড়িয়ে হাটা ধরে সামনের দিকে ।
আফরান : যাওয়ার সময় আয়শ আর সাদেক কে ঐ উন্মুক্ত শরীর টা দেখিয়ে যাস ঠিক আছে ।
আফরান এর কথা টা একদম গা জ্বালা শুরু করে ,ভিষন ভাবে ইগো তে প্রভাব ফেলে ,আবারো উল্টো ঘুরে দ্রুত পায়ে ফিরে এসে একটু কুঁজো হয়ে আফরানের কলার দুহাতে চেপে ধরে উপর নিচ দাঁত চেপে বলতে লাগলো , আপনার ব্যাবহার কোনো দিন চেন্জ হবে না তাইনা । কি করে এসব ধরনের কথা বলতে পারেন আপনি,আমি মানছি আমার ভুল হয়েছে আমি আপনাকে ভুল বুঝে চলে গিয়েছি কিন্তু আপনিও তো আমাকে কখনো বলেননি আমাদের বিয়ে হয়েছে ,আপনিও তো আমাকে স্পষ্ট ভাবে কিছুই বলেননি ।
আফরান বিদ্রুপ হেসে বললো : তোকে .. আবার বিয়ে ? কে তোকে বললো যে আমি তোকে বিয়ে করেছি ? ফালতু কথা কোত্থেকে শুনেছিস?

আরিয়া : আপনার কাজ শুধু আমাকে কনফিউজড করা তাইনা ,শুনুন আপনার পার্সোনাল ড্রয়ের এর লক চেন্জ করতে ভুলে গিয়েছেন বুঝলেন ওখানে আমি কাগজ পত্র গুলো দেখেছি আমাদের বিয়ের প্যাপার গুলো ওখানেই আছে ,বিয়েতে কাবিন নামা হিসেবে আপনার সম্পুর্ন সম্পত্তির সঙ্গে আপনার জীবন টাও দিয়ে দিয়েছেন স্পষ্ট ভাবে লিখা আছে। আমি সব টা দেখেছি । কিন্তু আমার থেকে বিষয় টা এড়িয়ে যাচ্ছেন কেনো বলবেন প্লীজ?
আফরান একটু অবাক হলো এই মেয়ে তো একটু নয় অনেক টাই কথা বলছে আজকাল ।
-আমার পার্সোনাল জিনিসও দেখতে গিয়েছিল সাহস দেখছি তোর বেড়েই চলেছে ।
আরিয়া: পার্সোনাল জিনিসে তবে আমার নাম দিয়ে থাকবে কেনো? এতোই ঘৃনা আমার প্রতি তবে কেনো এখনো ড্রয়ারের লক টা আরু দিয়ে সেট করা?
আফরান এবার একটু শক্ত গলায় বললো ,বেশি বলে ফেলছিস কিন্তু,আমি ভুলে গিয়েছি তাই করা হয়নি।
আরিয়া: আপনি কোনো কিছু ভুলে যাওয়ার ব্যক্তি নয় সেটা আমার খুব ভালো করেই জানা আছে মি আফরান চৌধুরী।

আরিয়ার মুখে নিজের নাম টা এমন ভাবে নিতে দেখে কলিজা টা বিষাদ হয়ে গেলো সঙ্গে সঙ্গে,মাথার তেজ গুলো মনে হয় নাড়া দিয়ে উঠলো ,কলারে ধরে রাখা আরিয়ার হাত টা ধরে হেঁচকা টানে আরিয়া কে নিজের উপর বসিয়ে শক্ত হাতে ধরে ,আরিয়ার পিঠ আফরানের চিবুক ঠেকায় ,,
আরিয়া: আহ আবারো শুরু করে দিলেন , ছাড়ুন বলছি ।লাগছে আমার ।
আফরান কিছু না বলে আরো চেপে ধরে ।
আরিয়ার মনে হচ্ছে এই বুঝি তার হাত ,বাহু ,পিঠ ,পেটের হাড়গোড় ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে । কিন্তু আসল কথা তো ইচ্ছে করেই আরিয়া চেয়েছে আফরান রাগ করুক ,একটু শাস্তি দিক , নিশ্চয়ই উনি মেরে ফেলবেন না তার আরুকে, শাস্তি দিয়ে রাগ টা একটু কমিয়ে নিক ,, কিন্তু এখন তো মনে হচ্ছে এই বজ্জাত লোক টা সত্যিই চেপে ধরেই মেরে ফেলবেন।

-ছাড়ুন না,শরীরে যা আছে সব ভেঙে যাচ্ছে,মরে গেলে আপনি কি নিয়ে থাকবেন বলুন ।
কথা টা যেনো আফরানের কাছে আরো শতগুণ বিষাদময় লাগলো ,তাই এবার আরিয়ার দুহাত ধরে ক্রস করে ধরে আরিয়ার বা গালে নিজের গাল লাগিয়ে কানের কাছে আস্তে গলায় চাপা স্বরে বললো ,, বলেছিলাম না কাছে আসবি না , অনেক জালিয়েছিস,সেই প্রথম থেকে আমাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিচ্ছিস যদি পারতাম ঠিক আমার মতো করেই তোকেও পুড়াতাম । ভালো ভাবে বলছি চলে যা আর জালা দিস না । বুজতে পারছিস কি বলেছি?
আরিয়া শরীরে ব্যাথা পেলেও আপাতত তার চোখে জল আনার কোনো ইচ্ছে নেই ,সেও দেখতে চায় কতোক্ষণ পারে উনি এমন শাস্তি দিতে ।

– আআ, ছাড়ুন বলছি ব্যাথা লাগছে আমার লাগছে ।
– আফরান: লাগুক তাতে আমার কি ? শরীর তোর,,আর তুই তো…
– এটুকু বলতে আরিয়া আফরানের কথা কেড়ে নিয়ে হঠাৎ বলে ফেললো ,তাতে কি হয়েছে কিন্তু বুকে ব্যাথা তো আপনার হয় তাইনা ।
– আরিয়ার এমন কথায় আফরান একটু চুপসে যায় কিন্তু পর মুহূর্তে আবারো বলে উঠে ,,মুখের উপর কথা বলছিস দেখছি ।
– আরিয়া কিছু বললো না
– আফরান এবার আরিয়ার হাত দুটো ছেড়ে দিয়ে আওয়াজ করে বললো ,গেট আউট।
– আরিয়া না উঠে কোলেই বসে রইলো ।

বিরক্ত হয়ে আফরান আরিয়ার হাত ধরেই উঠিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যায় ,রুম থেকে বের করে দিয়ে বললো ,একদম আসবি না দ্বিতীয় বার ।বলে দরজা আটকিয়ে দেয় ।
বারান্দায় এসে সিগারেট টা জ্বালিয়ে মুখে তুলে, হাত পা কাঁপছে রাগের কারনে , অধিক মাত্রায় রাগের কারনে পেটের সেলাই টাতেও ব্যাথা অনুভব হচ্ছে।
অবশ্য রাগের কারন টা আজ ভিন্ন,,,একটু শাস্তি দিতে গিয়ে হয়তো বেশিই বলে ফেলেছে মেয়েটাকে ,,,, কিন্তু এতোটা তো রাগ করতে চায়নি সে একটু শাস্তি দিতে চেয়েছে শুধু।

কেনো জানিনা তখন রাগ টা পুরো শরীরে হঠাৎ করেই চেপে বসে ছিলো ,যখন মনে হলো আরু এ অবস্থায় এতোক্ষণ তার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো ,যদি তখনই খুলে দিতো নিশ্চয়ই বাহিরে থাকতে হতো না আরুকে,বাড়িতে ছেলেরাও আছে কারো দৃষ্টি তে পড়েনি তো আবার? কথাটা যখন থেকে মাথায় এসেছে তখন থেকেই রাগ টা একটু বেশি হয়েছে নিজের ভেতরে ।তাই নিজের উপর ক্ষোভে সিগারেট হাতে নেয় ,,নয়তো আফরান স্বাধারনত সিগারেট খায়না অতিমাত্রায় রাগ টা না আসলে ।

সকাল নয়টা কি সাড়ে নয়টা বাজে , প্রেমা সামিরা সেই কখন থেকে দরজা ধাক্কিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আরিয়ার কোনো সারা পাওয়া যাচ্ছে না ।
এতো ডাকাডাকির পরেও আরিয়া কে বের হতে না দেখে দুজনেই ভয় পেয়ে যায় ,আবার কিছু হয়নি তো?
সামিরা :- আমি কাউকে গিয়ে বিষয় টা জানাই তুই এখানেই থাক।
প্রেমা: – টেনশন দিয়ে লাভ নেই আরেকটু দেখি তারপর নাহয় ..
প্রেমার কথার মাঝেই আরিয়া দরজা খুলে দিলো ,হাতের তোয়ালে টা দিয়ে চুল মুছতে মুছতে বললো ,, কিছু হয়েছে? এভাবে ডাকছিলি কেনো?
সামিরা প্রেমা আশ্চর্য হয়ে তাকায় ,এই মেয়ে এতোক্ষণ ধরে গোসলে ছিলো আর আমরা এতোক্ষণ ধরে কি না কি ভেবে নিয়েছি।

আরিয়া: -এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?
সামিরা কপালে হাত রেখে বিরক্ত নিয়ে বললো :-তুই এতোক্ষণ গোসলে ছিলি?
আরিয়া:হুম কেনো কিছু হয়েছে?
প্রেমা :- এই তোর কি সর্বক্ষণ সবাইকে প্যারা দিতেই ভালো লাগে?
আরিয়া চুল মুছা থামিয়ে বললো – আমি আবার কি করলাম?
সামিরা : এই মেয়েকে আর বলে লাভ নেই । আচ্ছা শুন যেটা বলতে আসছিলাম , ভার্সিটি তে যাবি?
আরিয়া: – সে তো যাবোই কিন্তু…
সামিরা দুষ্টু হেসে বললো :-স্টুডেন্ড দের কথা ভাবছিস তাইতো? একদম চিন্তা করিস না আমরা আছি প্রবলেম নেই ,, সুন্দরী কে দেখে ছেলেরা একটু পেছনে থাকবেই তাই বলে কি পড়া লেখা করতেও যাওয়া যাবেনা নাকি ..
প্রেমাও মজার ছলে বললো :- হ্যাঁ সেটাই তো কিন্তু কথা হলো মিস শ্রাবনী কে টিচার্স রা চেনে তাহলে সাধারণ ভাবে কিভাবে….

আরিয়া : মার চিনিস?একটা দিমু সব ভুলে যাবি একদম।
সামিরা:- তুই মার পিট ও শিখে গিয়েছিস নাকি ।
আরিয়া: ওহ ,তোরা থামবি প্লিজ ?
প্রেমা : ওকে ওকে , এখন‌ নিচে আস ,
আরিয়া: কেনো?
সামিরা : এতো প্রশ্ন কেনো করিস? আড্ডা দিবো আর কি করবো ?
আরিয়া : আমার ভালো লাগছে না ।
সামিরা: একদম উল্টা পাল্টা কিছু বলবি না ,এতো বছর আলাদা থেকেও এখন ভালো লাগছেনা ,শুন সবার সাথে ভাব নিলেও আমার সাথে নিতে আসিস না ওকে ।
আরিয়া :- তোরাও সেই আগের মতোই ,ঠিক আছে আসছি আমি ।তোরা যা‌ ।

রহিমা বেগম একটু আগে বাড়ির সব গুলা ছেলে মেয়ে দের জোড় পূর্বক ডেকে এনে খাবার টেবিলে বসিয়েছে , এতোক্ষণ কিভাবে না খেয়ে আছে সবাই এটাই উনার মাথায় ঢুকে না,,,সকালে উঠে রান্না করেছেন অথচ ডাকতে ডাকতে এই পর্যন্ত হলো ,আড্ডা দেওয়ার মাঝেই সবাইকে ছোটদের মতো শাসন করে কড়া গলায় বললেন টেবিলে গিয়ে বসতে ,,,অথচ এখানের প্রত্যেক টা মানুষ বিবাহিত তবে মায়েদের চোখে বোধয় সমবয়সী সন্তানেরা ছোটই থেকে যায় তাইতো সবার সাথে এতোটা সময় না পার করলেও মায়ের মতো করে ওভাবে কথা বললেন ।
আসলে বাড়িতে কোনো মহিলা না থাকলে যে বাড়ি টা উল্টো চলে এটা এতোক্ষণে তিনি বুঝে গিয়েছেন । অথচ জাফর সাহেব বছরের পর বছর এমন করে সামলে রাখার চেষ্টা করেছে ,হয়তো পুরুষ হয়েছে বিধায় আগলে রাখতে পারেননি একত্রে।

টেবিলে সুন্দর একটা সময় উপভোগ করছেন জাফর সাহেব ,চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। কি সুন্দর একটা জয়েন ফ্যামিলির মতো হয়েছে বিষয় টা ,বউরা স্বামীদের পাশে বসেছে ,আজ রহিমা বেগম সামিরাও সবার সাথেই বসে গিয়েছে জাফর সাহেবের কথায় ।
তবে এখনো দুটো চেয়ার খালি পড়ে আছে ।আরিয়ার পরের দুটো চেয়ার ।
আরিয়া জাফর সাহেবের পাশেই বসেছে অভ্যাস মতো ,আসলে মা বাবার চেয়েও মনে হয় জাফর সাহেবের প্রতি ভেতর থেকে আলাদাই অনুভূতি হয়ে গেছে এতো দিনে।কেনোই বা হবেনা? মেয়ে থাকলেও বোধহয় তাকেই প্রাধান্য দিতো মেয়ের উপরে ,কোনো দিক দিয়ে পিছিয়ে রেখেছে কি ?যা যা লাগবে না চাইতেই তিনি দিয়েছেন ,,কতোটা স্নেহ করেছেন , প্রতি সপ্তাহে না চাইতেই টাকা দিয়েছে ,প্রতি মাসেই জামা পেয়েছে কয়েক সেট সব কিছু বলতে গেলে শেষ হবে নাকি তাই এসব কথা বাদই দিলাম নাহয় ।সব কিছুর উপরে জাফর সাহেবের ভালোবাসা টাই প্রাধান্যতা লাভ করেছে আরিয়ার জন্য ।

এসব কথা খাবার মাঝেই আড়িয়া ভাবছে আর ঠোটের কোনায় মৃদু হাসি জমে ।
সামিরা আয়শের পাশে ,প্রেমা সাদেকের পাশে বসেছে ।
সবাই ব্রেকফাস্ট এ মনোযোগ, চুপচাপ খাচ্ছে।
মাঝেই জাফর সাহেব বলে উঠলেন:- খলিল তুমি তো জানো আরিয়া মামনি আর আফরানের ব্যাপার টা , তবুও আমি একবার জিজ্ঞেস করে নেই তোমাকে ভাবলাম ।
সবাই জাফর সাহেবের দিকে দৃষ্টি ফেলে আসলে কি বলতে চাচ্ছ শুনতে চাচ্ছে সবাই ,
খলিল:হ্যাঁ, বলো ভাইজান

জাফর: আফরান কে টা নিয়ে জানি তোমাদের মনের মধ্যে অনেক বাজে ধারনা কিন্তু বিশ্বাস….
এটুকু বলতে খলিল বললো – কি বলছেন ভাই সাহেব ,হ্যাঁ মানছি আফরান একটু অন্য রকম কিন্তু আমাদের নিয়ে যা কিছু করেছে এগুলোও কিন্তু মিথ্যে নয় ,আমাদের ধারনা অনেক আগেই পাল্টে গেছে ভাইজান ।
জাফর স্মীত হেসে বললো – তাহলে তো কোনো কথাই নেই ,,আমি যতটুকু বুঝেছি আফরান আরিয়া মামনি কে পছন্দ করে তাই বিয়েটা করেছিলো নয়তো এতো বছর বলে বলেও যেই ছেলেকে বাড়িতে আনতে পারতাম না তার হঠাৎ চেন্জ হওয়া রোজ বাড়িতে আসা আবার হঠাৎ করেই বিয়ে করা এগুলো কিন্তু মিছে মিছে নয় ,যার কারনে ভেতরে পাথর গলেছে সামান্য আমার মনে হয় তার মাধ্যমে আমার ছেলেটার পরিবর্তন হবে আর নিশ্চয়ই আরু মা তার জন্য কতোটা ইমপোর্টেন্ট তোমরা জেনে গিয়েও এতো দিনে।

খলিল সাহেবের খাবার আটকায় গলায় ,পানি টা নিয়ে ঢকঢক করে গিলে একটু স্বাভাবিক হয়ে বললো ,আসলে ভাইজান হ্যাঁ মানছি আমার মেয়ের জন্য আফরানের অবদান অনেক , কিন্তু আফরানের থেকেও মতামত টা স্পষ্ট ভাবে জেনে নেওয়া উচিত এর পেছনে অন্য কারন ও থাকতে পারে তাইনা কারন…
জাফর:- বুঝেছি ,তবে তোমাদের মনে সন্দেহ থাকাটাই স্বাভাবিক মনে করি কারন আফরানের মতো একজন কঠোর মনের মানুষ কখনো কারো ভালো করতে পারেনা এটা যে কেউ মনে করবে ,কোনো মেয়ের জন্য তো চেন্জ হওয়ার মানেই নেই তবুও আমার মন বলছে …
কথার মাঝেই আরিয়া কাশতে লাগলো ,,

প্রেমা সাদেক সামিরা আয়শ সবাই একটু আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে রইলো এদের কথার দিকে ।
আয়শ পাশ থেকে পানির গ্লাস টা আরুকে দিতে গিয়েও থামে কারন সিঁড়িতে আফরান ক্রুদ্ধ চোখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ।এই বুঝি এসে টেবিল টাও উল্টিয়ে দিবে , ভাঙচুর শুরু করবে ,তারপর আর কি হতে পারে আয়শের ধারনা নেই ।আফরান কে এভাবে দেখে আয়শ একটু ভীত হয়ে পানিটা আস্তে করে জায়গায় রেখে দিয়ে সামিরা কে বললো আরুকে পানি দাও ।

সামিরা পানিটা আরিয়ার সামনে এগিয়ে দিয়ে আস্তে করে বললো , তোর আবার…. কথাটা শেষ করার আগেই আফরান কে দেখলো জাফরের ঠিক ডান পাশ কেটে আস্তে পায়ে হেঁটে আসছে।
সামিরার গলা আটকে যায় । মনে হচ্ছে দম টা আটকে যাবে, এখুনি কিছু হতে চলেছে নিশ্চিত ভাইয়া সবটা শুনেছে ।
আরিয়া এখনো আফরান কে দেখেনি কারন আফরান ঠিক আরুর পিছেই মনে হচ্ছে পাশের চেয়ার টায় বসবে ।
সামিরা কে এভাবে বড় বড় চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখে আরিয়া বললো- কি হলো তোর এভাবে কেনো তাকিয়ে আছিস? মনে হয় ভুত দেখছিস।

কথাটা শেষ করতেই আফরান আরিয়ার পাশের চেয়ার টা টেনে বসলো ।
পাশে তাকাতেই আরিয়ার বুক টা কেঁপে উঠলো ,এই ছিলো সামিরার এমন রিয়েকশনের কারন ।নিজেকে যথেষ্ট ভীত হওয়া থেকে সংযত রাখলো আরিয়া , কিন্তু তবুও যেনো হাত দুটো নিজে নিজে কাঁপছে । আরিয়া জাফর সাহেবের দিকে একবার তাকালো ।
জাফর সাহেব এতোক্ষণ দেখছিলেন আসলে কি করে আফরান ,এখন মনে হচ্ছে হয়তো সবার সাথে ব্রেকফাস্ট এ বসেছে ।

– কখন আসলে?
– আফরান জাফরের কথার উত্তর না দিয়ে বললো ,, কিসের কথা বলছিলে এতোক্ষণ?
– জাফর: দেখো আফরান …
– আফরান : ডিরেক্ট আনসার চাই।
– খলিল: দেখো বাবা আসলে তোমার …
– আফরান : ফার্স্ট।
– জাফর : এমনভাবে কথা বলছো কেনো? কথা সম্পুর্ন করতে দাও তারপর তুমি বলো ।
– আফরান ঘরির দিকে তাকিয়ে বললো – সময় নেই
– জাফরের একটু কঠোর গলা – তাহলে বসতে কে বলেছে?
– আফরান:- কাজ আছে তাই ।এখন বলো কি বলছিলে?

– জাফর: দেখো আফরান সব সময় নিজের মুডে থাকলে কখনো কিছু চেন্জ হবেনা একটু স্বাভাবিক হও ।
– আফরান: চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো , ডিরেক্ট বলো কি বলছিলে ।
– আয়শ: এমন ভাবে বলছিস কেনো? আসলে তোর আর আরুর বিয়ে নিয়েই কথা বলছিলো ,বিয়ে তো করে নিয়েছিস কিন্তু একটু নিয়ম কানুন তো আছে তাইনা হয়তো বাবা সুন্দর ভাবে বিয়ে টা হবার কথা বলছে ।
– আফরান বাঁকা হেসে চেয়ারে বসে বললো , বিয়ে…! কার সাথে বললি? এই মেয়েটার সাথে? কে করেছে? আমি …?
তোদের কে দেখে আমার একেকটা কে জোকারের লিস্টে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছে ।
– আয়শ:- দেখ আফরান সব বিষয় নিয়ে হেঁয়ালি করা ঠিক না ,এটা কোনো করার বিষয় না ।
– আফরান এবার বাম হাত টা টেবিলের উপর রেখে তার আঙুল দিয়ে হালকা শব্দে টেবিলে আওয়াজ করতে লাগলো ।

– জাফর:-তোমার তামাশা বন্ধ করবে?
– আফরান হাত থামিয়ে বললো , আরো কিছু বলছিলে শুনলাম ,আমি এই মেয়েটার জন্য চেন্জ হবো ,এসব কি বাবা আমায় বলবে ? আমাকে দেখে কি কোনো মেয়ের আশেক বা এসিস্ট্যান্ট মনে হয় যে ,যেভাবে যেতে বললে যাবো ? আর এই মেয়েটার সাথে কেনো তোমরা আমায় জড়াচ্ছো ? হুয়াই?
– জাফর:- এসব বলতে লজ্জা করেনা তোমার ? তোমার সাথে ওর বিয়ে হয়েছে এটা মিথ্যা?
– আফরান: ইয়েস ।আমি কেনো এটাকে বিয়ে করবো? কোন দিক দিয়ে পার্ফেক্ট মনে হয় আমার সাথে? বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে কিলারদের সাথে চলাফেরা করেছে ,হাজার টা ছেলের সাথে ঘুরে বেড়িয়েছে এমন একটা আমার বউ ? কিভাবে ভাবলে ?
জাফর : সত্যি বলছো তো?
আফরান:অভিয়াসলি ,কোনো সন্দেহ আছে? স্পষ্ট ভাবে বলে দিলাম আর যেনো ফালতু কথা আমার শুনতে না হয় ।
জাফর: ওকে ,তুমি যেতে পারো ।

আফরান আর এক সেকেন্ড ও‌ নষ্ট না করে উঠে দাঁড়িয়ে হাটা ধরলো ।
আরিয়ার চোখে জল নেই তবে ব্যাথার ছাপ স্পষ্ট হয়তো কারো সামনে কাঁদতে চাচ্ছে না ।
আফরান গেইট অবদি যাওয়ার পর এমন একটা কথা শুনতে পারবে এটা মোটেও ভাবেনি ।
জাফর সাহেব আফরান উঠে যাওয়ার সাথে সাথেই বললো ,আমার হাতে ভালো ছেলে আছে খলিল ,মামনি যখন ফিরে এসেছে আমি চাই আমার মামনির যেনো এলন সময় পার করতে না হয় তাছাড়া দ্বিতীয় বার কোনো ডিপ্রেসড হতে না হয় ,তোমরা বললে আজই পাত্র পক্ষ আসবে ।

খলিল সাহেব : আমিও তাহলে সেটাই ভালো মনে করছি ভাইজান ।
আফরান যেমন ভাবে বের হয়েছিলো ঠিক তেমন ভাবেই ভেতরে আসলো আবার ।
জাফর সাহেব: তোমার আবার কি হলো? কাজ নেই? এইতো বলছিলে সময় নেই ।
আফরান সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে উঠতে বললো – আফরান চৌধুরী কারো কথার আনসার দেয় না ।

সামিরা : ভাইয়া কি সত্যি বলছে? তবে সেদিন কিসের কাগজ পত্র ছিলো সেগুলো।
আরিয়া:- একটু একা থাকতে দিবি?
সামিরা বুঝলো আরিয়ার মন খারাপ তাই কথা না বাড়িয়ে রুম ছাড়লো ।
সামিরা যেতেই আরিয়ার এতোক্ষণের জমিয়ে রাখা অশ্রু গড়গড় করে পড়তে লাগলো ,আমি তো স্পষ্ট দেখলাম উনার সাথে আমার মেরেজ সার্টিফিকেট,তাহলে মিথ্যে কেনো বললেন আপনি । ? এমন করছেন কেনো ?

বিকেল বেলা আকাশ বরাবরের রোদহীন আলোকিতো, কিন্তু আকাশ টা পরিস্কার নয় ,বাতাসে গাছ পালা গুলো একটার সাথে আরেকটা বারি খেয়ে ঝুম শব্দ হচ্ছে,এখুনি বোধহয় বৃষ্টি নামবে ।
আরিয়া সামিরা প্রেমা একটু আগেই এসেছে সময় টা উপোভোগ করতে , কিন্তু আরিয়ার মোড অফ দেখে তারাও আপাতত চুপ চাপ শরীরে স্নিগ্ধ হাওয়ার অনুভব নিচ্ছে । দুর থেকে কিছু পাতাও এসে পড়ছে ছাদে । আরিয়া অন্যমনস্ক হয়ে কিছু ভেবে চলছে ।
গুরিগুরি বৃষ্টি শুরু হয়েছে

প্রেমা বললো – সামু চলে যাই ছাদ থেকে বৃষ্টি পড়ছে ।
সামিরা – হ্যাঁ ঠিক বলছিস এখন সময় টা বৃষ্টি ভেজা ঠিক হবেনা অসুস্থ হয়ে যাবো ,আরু চল
আরিয়া ভাবনা থেকে ফিরে এসে বললো : আমি ভিজবো তোরা যা ।
সামিরা : কি বলছিস আরু জ্বর আসবে ।
আরিয়া: ওষুধ খেয়ে নিলেই চলবে ।
সামিরা কিছু বলতে যায় কিন্তু আকাশ যেনো তার এখন সীমা ছাড়িয়ে প্রবল বৃষ্টির বাধা ভেঙে দিয়েছে ,শশশশ শব্দে বৃষ্টি পড়ছে ।

প্রেমা এক মিনিট ও না দাঁড়িয়ে সামিরার হাত ধরে একটু দৌড়ে সিঁড়িতে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললো ,থাক ও একটু মন ফ্রেস করুক , ঠিক হয়ে যাবে।
সামিরা: কিন্তু আরু তো অসুস্থ হয়ে পরবে ।
প্রেমা : সামান্য তে কিছু হবে না ।তাছাড়া বৃষ্টি ভিজলে মন টাও ভালো থাকে ।
সামিরা কথা বাড়ালো না আরিয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেললো ,,
প্রেমা: – ছেলে কি কালকেই দেখতে আসবে?
সামিরা প্রেমার কথাটা প্রথমে না বুঝলেও একটু ব্যাবধান মুহূর্তে বুঝে গেলো আরিয়ার কথা যে বলছে ,- চাচা তো তাই বললো ।

প্রেমা: আমার মনে হয় চাচা ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে ।
সামিরা : সিদ্ধান্ত সঠিক হলেও আমার মনে হচ্ছে এসব শুধু শুধু সময় নষ্ট করছে বাবা।
প্রেমা : কেনো তোর এমন কেনো মনে হচ্ছে?
সামিরা : আফরান ভাইয়াকে চিনিস তুই?আমি ভালো করেই চিনি দেখে নিস ,আমার মনে হচ্ছে ভাইয়া ইচ্ছে করেই সকালে এসব বলেছে কিন্তু কেনো সেটা বলতে পারবো না ।
সিঁড়িতে পায়ের শব্দ পেয়ে প্রেমা সামিরা পেছনে তাকায় ,আফরান কে দেখে একবার ঢোক গিলে ,
আফরান কিছু না বলে পাশ কেটে সামনে আসে ।
সামিরা প্রেমা সেখান দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতা হারায় । দ্রুত পায়ে জায়গা ছাড়ে , নিশ্চয়ই আফরানের সামনে তারা এভাবে কলা গাছের মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এদের ঝগড়া কিংবা প্রেম দেখবে না ।

আরিয়া এখনো আফরান কে দেখেনি ,পরনে আজ সাদা রাউন্ড জামা টাই ছিলো ।উরনা গলায় ঝুলানো ।চুল গুলো ছেরে দেওয়া, বৃষ্টিতে ভিজার কারনে জামাটা শরীরে লেপ্টে আছে ।
আফরান ফোনেই ফলো করে যাচ্ছে সারাদিন এই মেয়েকে ,আজ অফিসে তো যাওয়াই হয়নি তানভীর কে বলেছে সামলে নিতে সব টা । সারাদিন রুমে বসে বসে ফোনে এই মেয়েকে দেখেছে কি কি পাগলামু করতে পারে ,আফরান এখানে আসতো না বাধ্য হয়েই আসতে হয়েছে একপ্রকার , বৃষ্টি যে ভিজলে এই মেয়ের যে জড় উঠবে এই মেয়ে কি জানেনা ? তাহলে কেনো এখনো ফিরলো না ?

মি মাফিয়া পর্ব ৫০ (২)

দুদিনেই এতো সুক পালন করছে আর আমাকে যে তিনটা বছর করিয়েছে এই মেয়ে এটার হিসেব করেছে? তখন তো এসব কিছুই ভাবেনি এই মেয়ে নিজের মতো চলেছে ,যা ইচ্ছা করেছে ,কখনো একটু মনে করেছে? করেনি তো তবে সে কেনো চেষ্টা করেও পারছেনা ?
আফরান গম্ভীর কন্ঠে বললো:- ওখান থেকে আসবি নাকি মার খাবি ?
আফরান এর গলা শুনে আরিয়া ভয়ে কেঁপে উঠে ঘুরে তাকায় আরিয়া …
তারপর……

মি মাফিয়া পর্ব ৫২