মি মাফিয়া পর্ব ৯

মি মাফিয়া পর্ব ৯
সুমাইয়া সাবিহা

আফরান প্রথম এই কলেজে পা রখলো । হ্যা সে নিজ কাজেই ব্যস্ত ছিল কিন্তু বাধ্য হয়েই আসতে হয়েছে ।খবর টা পাওয়া মাত্র হন্তদন্ত হয়ে বের হয়ে গিয়েছিলো এসিসট্যান্ট তানভীর কে নিয়ে ।
গায়ে ব্লাক শার্ট গলায় টাই বাধা কোট টা যদিও পরে আসেনি তানভীর নিয়ে এসেছে।গাড়ী থেকে নামার সাথে সাথে পরিয়ে দিয়েছে।
আরিয়ার জন্য যে গার্ডস কে দিয়ে গোপনে নজরবন্দী করে রাখা হয়েছিলো তার থেকে কোন রুমে কোন জায়গা তে বসে সেটা জেনে নিয়ে ডিরেক্ট আরিয়ার ক্লাস রুমে চলে যায় ক্লাসের মাঝেই ।
ক্লাসের মাঝখানে হঠাৎ এমন হ্যান্ডসাম ছেলে দেখে কেউ কি ঠিক থাকতে পারে ? তাইতো কিছু মেয়ের মুখ হা হয়ে আছে আর কিছু মেয়েদের চোখ গুলো গোল গোল রসগোল্লার মতো হয়ে আছে।উফস এমন হ্যান্ডসাম সুদর্শন ছেলে তারা জীবনে আর দুটো দেখেনি।

আরিয়া প্রেমা সামিরা অবাক হয়ে চেয়ে আছে । আরিয়া ভয়ে মুখের সামনে বই ধরে আছে সে জানে নিশ্চয়ই তাকে মারবে বলেই এসেছে ।নাহলে এখানে উনার তো কোনো কাজ নেই।
আফরান সোজা এসে আরিয়ার মুখের উপর থেকে বইটা ছুড়ে ফেলে আরিয়ার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো।
সামিরা প্রেমার দিকে তাকিয়ে বললো
___:নিশ্চয়ই মেয়েটার কপালে আজকেও থাপ্পড় আছে ।
প্রেমা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে ।
স্টুডেন্টদের এই অবস্থা দেখে ক্লাস স্যার বুজতে পারলো সবাই স্বপ্নের রাজ্যে বিভোর হয়েছে । তাইতো সামনে থাকা বেন্চ টিতে পেন দিয়ে টুন শব্দ করে আওয়াজ দিলো ।
__ এমন কিছুই হয়নি এখানে সবাই ক্লাসে মন দাও। ঐ ছেলেটা একজন মাফিয়া ওকে , অভদ্রতামী করা ওর পেশা হয়ে গিয়েছে ।
স্যারের কথায় সবাই থতমত খেয়ে যায়,এতো সুইট একটা ছেলেকে তারা কেউ অবশ্যই মাফিয়ার লি্ষ্টে ফেলতে চায়না।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আফরান তানভীর কে না নিয়েই আরিয়া কে নিয়ে অজানা কোনো প্রান্তে যাচ্ছে সেটা তানভীরের জানা।
আরিয়া:প্লীজ স্টপ ,স্টপ প্লীজ বলেই যাচ্ছে তখন থেকে ।
গাড়ী ফুল স্প্রীডে চলছে । এক্সিডেন্ট হবে তো প্লীজ ভাইয়া স্টপ।
এভাবে কেনো নিয়ে এলেন আমায় ? ক্লাসের সবাই কি মনে করবে ? আর আপনার এতো স্প্রিডে গাড়ি চালানোর ইচ্ছে হলে আমাকে নামিয়ে যেভাবে ইচ্ছা চালান।আমি আপনার সাথে মরতে চাইনা । আফরান কোনো কথা না বলেই গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে একধ্যানে ।
বেশ খানিক টা পথ পাড়ি দিয়ে হঠাৎ করে গাড়ির ব্রেক করলো।
আকস্মিক ব্রেক করায় আরিয়া টাল সামলাতে না পেরে মাথা গিয়ে বারি খেলো সামনের মেরুরে। কপালের সাইডে কেটে বিন্দু রক্ত জমেছে ।করছেন টা কি ব্যাথা পেলাম তো।

__আফরান কিছু না বলে আরিয়ার ডান হাত ধরে টেনে নামিয়ে সামনের দিকে ড়াটতে লাগলো ।
__ প্রব্লেম টা কি আপনার হ্যা আমাকে পুতুল মনে হয় আপনার কাছে?
আরিয়ার কথায় পাত্তা না দিয়ে আরিয়ার হাত টেনে নিয়ে গেলো একটা পুরাতন বাঙলো তে।একটু জঙলের দিকেই হবে।আশে পাশে ঘর দেখা গেলো না তবে এখানে থেকে একটু দুরে কয়েকটা চালের বাড়ির রেশ পাওয়া গেলো।
__আমাকে এখানে কেনো নিয়ে আসছেন হ্যা? আমাকে কি মনে হয় আমি ভিতু? জঙলে ফেলে গেলে বাড়ী ফিরতে পারবনা । are you kidding me মি,আফরান চৌধুরী। ভেরি ফানি , কি ভেবেছেন আপনাকে ভয় পাই এখনো? নু ওয়ে,এখন আমি আর ভয় পাইনা আমি বুঝে গিয়েছি আপনার মাথার স্ক্রু একটু ঢিলা তাই এমন করেন।
আফরান কোনো পাত্তা না দিয়ে ঐ খালি বাঙলো টার ভেতরে ঢুকলো।বেড রুমে নিয়ে গিয়ে ঠাস করে বিছানায় ফেলে দিয়ে পেন্ট থেকে বেল্ট খুলতে লাগলো।
আরিয়া ভয়ে এবার কাপা গলায় বলতে লাগলো,

___কি করছেন ? প্লীজ আমাকে মারবেন না। সত্যি বলছি আপনাকে আমি কিছু বলিনি,বকিওনি। দেখুন ভাইয়া ,আমি কিন্তু….আহ
আরিয়ার কথা শেষ না করতে দিয়ে আফরান আরিয়ার উপর আঘাত করলো হাতের বেল্ট দিয়ে।
আরিয়ার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো। ভাইয়া ..আহ ,
আফরান ডেভিল হেসে বললো,
__ খুব ব্যাথা করছে? উফফফ সো সেড ।জানিস তোর জন্য মায়া হচ্ছে ,ঐদিন এভাবে বুঝালাম তাও তুই বুজলি না,সুন্দর ভাবে আদর দিয়ে বুজিয়ে ছিলাম ।মূল্য রাখতে পারিসনি আমার আদরের। তাহলে নিশ্চয়ই আঘাতের মূল্য দিতে পারবি । বলেই আবারো আরিয়ার শরীরে আঘাত করলো।
কার লাভ রিকোয়েস্ট যেনো আজকে এক্সেপ্ট করেছিলি ? বল বল ।আর কি বলেছিলি যতো তারাতারি পারিস বিয়ে করে এ বাড়ি ছেড়ে চলে যাবি আর সেটা যেকোনো মুল্যে?
কিন্তু কি জানিস সত্যি বলতে তোর আইডিয়া টা খুব সুন্দর হলেও তোর ভাগ্য টা খারাপ ভিষন।
বলেই ডেভিল হেসে আবারও আঘাত করলো।
আরিয়া চিৎকার করে কাঁদছে আর বলছে

__ভাইয়া আর হবে না ।আমি কোথাও যাবোনা,আর কোনো প্লেন করবোনা ।তুমি যত খুশি বাড়িতে রেখে মেরো।
কিন্তু এখন আমার খুব কষ্ট হচ্ছে এখনের জন্য ছেড়ে দাও সত্যি বলছি ,চাচা জানের দিব্বি আর কোনো প্লেন করবো না।
বলে জোড়ে জোড়ে কাঁদতে লাগলো।
আফরানের কোনো থামাথামিনেই এই রাগ আজকে কন্ট্রলে আসার নয়।
এক পর্যায়ে আরিয়া আর সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারায়।

আরিয়া চোখ খুলে চারদিকে তাকায় তার মাথার কাছে দু তিন টা মেয়ে দাড়িয়ে আছে,
___এটা কোথায়?এখানে কেনো আমি? বলে উঠে বসতে চায় কিন্তু শরীরে পচন্ড ব্যাথায় উঠতে পারেনা ।সে শক্তি টুকু আপাতোত তার নেই।একজন মেয়ে সামনে এসে বসে বলে
__,ম্যাম এখন কেমন লাগছে?
আরিয়া বুজে উঠতে পারেনা তার কি হয়েছে।
__স্যার বলেছে খাবার টা খেয়ে নিতে নাহলে শাস্তি পাবেন আবারো।
আরিয়ার এবার সব কথা মনে পরে ,,হ্যা তাকে যে কুত্তার মতো আঘাত করেছে সেই মি,মাফিয়াই তাকে এখানে আটকে রেখেছে।তার বুঝতে বাকি রইলো না।
__আমি খাবো না
__না খেলে স্যার আপনাকে তো মারবেই আমাদের কেও বকা দেবে।
___যা ইচ্ছা করুক আপনার স্যার ,আমাকে এখান থেকে যেতে দিন হয়তো ভালো হবেনা কিন্তু।
মেয়ে গুলো এবার চুপচাপ আবার আগের জায়গায় ঠাই দড়িয়ে রইলো।
আরিয়া পালানোর ও কোনো সুযোগ পেলো না ,বেশ খানিক ক্ষন এভাবে শুয়ে থাকতে থাকতে আবারো ঘুমিয়ে পড়লো আরিয়া।
রাত অনেক হয়ে গেছে সেটা বাহির টা দেখলেই বুজা যায় আরিয়ার ঘুম ভাঙে একটু আগে,পাশের মেয়ে গুলো কে না দেখে বেশ ভালোই লাগছে,,

__এখনই পালানোর সুযোগ , কথাটা ভেবে দুর্বল শরীর টা কে কষ্ট করে উঠিয়ে ধীর পায়ে হেটে দরজা খোলতে যায় কিন্তু সত্যিই মনে হচ্ছে আজ যে ,আমার ভাগ্য টা খারাপ না হলে বারবার ঘুরে ফিরে তাকে কেন এমন আটকে থাকতে হয় বাধ্য হয়ে ?
এইযে চাচাজানের বাড়িতেও বাধ্য হয়ে আছি ,বাধ্য হয়ে বাড়িতেও যেতে পারছিনা,বাধ্য হয়ে পড়াশুনা করছি,বাধ্য হয়ে বেচে আছি সব তো আমার জিবনে বাধ্য বাধকতায় কেটে গেলো কপাল খারাপ হলে যা হয় আর কি।
হঠাৎ করে রুমের লাইট জলে উঠলো।আরিয়া হকচকিয়ে উঠে সেদিকে তাকায় আফরান কে দেখে অন্য দিকে আবার চোখ সরালো । এই লোকটার চেহারা টাও বিরক্ত লাগে একদম দেখতে ইচ্ছে করেনা বিন্দুমাত্র।
আফরান আসতে আসতে গলার টাই খুলে সোফার উপরে ফেললো,শার্টের উপরের বোতাম দুটো খুলে আরিয়ার পাশে এসে বসে এসির পাওয়ার টা একটু বাড়িয়ে দিলো।
আরিয়া এখনো অন্য দিকে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে যানো আফরান কে দেখছেই না।

__খাবার খেতে বলেছিলাম না খাসনি কেনো এখনো?
আরিয়া কোনো উত্তর করলো না।
___আমাকে আবার রাগাস না বলে দিলাম ভালোভাবে বলছি খেয়ে নে।
আরিয়া এদিকে না ফিরেই বললো
__,আমি বাড়ি যাবো ,চাচাজান চিন্তা করছে অনেক।
___তোকে বলেছে চিন্তা করছে?
____এখনো বাসায় যাইনি তো চিন্তা করবেই তাইনা।
____বলেছি তুই ছায়া দের বাসায় গিয়েছিস প্রয়োজন আছে।
আরিয়া এবার কপাল কুচকে আফরানের দিকে তাকিয়ে বললো,,
___আপনি মিথ্যে বলেছেন ।অবশ্য আপনাদের মতো মাফিয়া গ্যাংস্টার দের থেকে ভালো সত্য কিছু আশা করাই বৃথা।
আফরান নিজের রাগ কন্ট্রল করার চেষ্টা করলো।

___দেখ আরু! আমি কিন্তু মিথ্যা বলিনা,সত্য বললে বাবা চিন্তা করতো ।
___এতোই চিন্তা যখন তাহলে এখানে কেনো আটকে রেখেছেন আমার থেকে কি চাই হ্যা? আমার শরীর নাকি আমার চরিত্র খারাপ প্রমান করার চেষ্টা কোনটা?
আফরানের ধৈর্যের বাধ ভেঙেছে এই মেয়ে ভালোভাবে বুঝার মতো মেয়েনা,
তাই ঠাস করে ডান পাশের গাল টায় চর বসিয়ে দিল।
আরিয়ার চোখে সাথে সাথে জল এসে গড়িয়ে পরে। মেরে ফেলুন না নিষেধ তো করিনি এভাবে প্রতিদিন মারার চেয়ে একদিনেই শেষ করে দেন না আমায় ,কাম অন #মি_মাফিয়া ।
আফরানের চোখ দুটো লাল হয়ে আসছে এমনিতেই রেগে আছে আরো এই মেয়ে আগুনে ঘি ঢেলে দিচ্ছে ।
দাত খিচে বললো,

___তোর মরার শক হয়েছে না ওকে মেরে দেই ,বলে খাট থেকে উঠে দাড়ালো।দু হাত মুষ্ঠি বদ্ধ করে চারদিকে একবার তাকিয়ে পানির গ্লাস টা নিয়ে টেবিলে জোড়ে বাড়ি মারে ,
আরিয়া ভয়ে কেপে উঠে এটার জন্য আরিয়া মনে হয় বিন্দু মাত্র প্রস্তুত ছিলো না
আফরানের হাত থেকে রক্ত ঝরঝর করে পরতে থাকে কিছু ছোট টুকরো ঢুকে গিয়েছে হাতে । ভাঙা গ্লাসের অর্ধেক টা এখনো তার হাতে আফরানের শরীর কাপছে চোখ দুটো রক্তিম লাল হয়ে আছে ,এই বুজি টুপ করে চোখ থেকে রক্ত গড়াবে। আফরানের এসবের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই উল্টো সে আরিয়ার দিকে ঝুকে গ্লাসের ভাঙা কাচ আরিয়ার গলা বরাবর ধরে বলতে লাগলো ,
__মরতে চাস তাইনা ? ওকে মেরে দেই এটাই ঠিক আছে যেভাবে বলবি ঐভাবেই মারবো,
বলে ডেভিল হাসলো
আফরানের হাতের রক্ত আরিয়ার বুকে গিয়ে পড়ছে ,আরিয়া ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে চোখ বন্ধ করে বলতে লাগলো

__,ভ..ভাইয়া আমাকে মারবেন না প্লীজ আর বলবো না,,আর হবেনা ।আমার খুব ব্যাথা লাগছে সব কথা শুনবো আপনার সত্যি বলছি।
বলে ডুকরে কাদতে লাগলো।
অবশ্য আফরানের সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিলো না কিন্তু হঠাৎ চোখ গেলো ভাঙা গ্লাসের একটু অংশে লেগে গলায় হালকা কেটে রক্ত জমে আছে আরিয়ার ।
সাথে সাথে আফরান নিজ অবস্থানের কথা মনে পরতেই গ্লাসের টুকরো টা হাত থেকে ফেলে দিয়ে ব্যাকুল কন্ঠে উন্মাদের মতো বলতে লাগলো ,

__বেশি ব্যাথা পেয়েছিস? দেখ আমি তোকে মারবো না সত্যি বলছি । তুই আমাকে শুধু শুধু কেন রাগিয়ে দিস ? আফরান এর কথা গুলো বাচ্চাদের মতো লাগছে এই মুহূর্তে।
আফরানের কথার পরিবর্তন দেখে আরিয়া চোখ খুলে তাকালো ।
এই মুহুর্তে মি,মাফিয়া কে একদম বাচ্চাদের মতো লাগলো ,কিন্তু ফাস্ট এইড বক্স টা কখন আনলো সেটা আরিয়ার বোধ গম্য হলো না ।আরিয়ার গলায় ওয়ান টাইমার লাগিয়ে দিয়ে বললো ,
__খাবার খেয়ে ওষুধ খেয়ে নিবি জলদি খেয়ে নে নাহলে অনেক ব্যাথা লাগবে । গলায় কতখানি কেটে গেছে ।তুই সত্যি বলিস আমি খুব বাজে , খুব খারাপ ।
আরিয়া অবাক হলো আফরানের বাচ্চামু দেখে । নিজের হাত থেকে যে এতোটা কেটে রক্ত বের হচ্ছে সেদিকে কোনো খেয়ালই নেই । লোকটার কি সত্যি সাইকোলজী কোনো প্রব্লেম আছে? নাহলে এমন সাইকো কেনো?
আরিয়া এক দৃষ্টে তাকিয়ে একমনে এসব ভেবে চলছে ।
আফরান খাবারের প্লেট টা এনে আরিয়ার জন্য লোকমা তুলে হাত বাড়িয়ে দিতেই খেয়াল করলো তার হাত থেকে রক্ত পরে খাবার টা নষ্ট হয়ে গেছে।
রাগে বলতে লাগলো,,ডেম ইট ।
ওয়াশ রুমে গিয়ে হাত টা ধুয়ে কাকে যেনো কল দিলো।
আবারো আরিয়ার কাছে এসে বলতে লাগলো

__ ক্ষুদা পেয়েছে না তোর ?একটু ওয়েট খাবার এসে পরবে এখনি।
আরিয়া কিছু বলছেই না এক দৃষ্টে তাকিয়ে রইলো ।আজ সত্যি আফরান কে দেখতেই ইচ্ছা হচ্ছে এ কেমন মানুষ? খোদা মালুম।
কেউ একজন দরজায় নক করতেই আফরান দ্রুত পায়ে গিয়ে দরজা খুলে খাবার টা নিয়ে আবার দরজা আটকে দিলো।
আফরানের হাত থেকে এখনো রক্ত পরছে তাই আবারো হাত ধুয়ে এসে খাবারে হাত দিতে চাইলো কিন্তু তার আগেই আরিয়া আফরানের হাত টা ধরে ফাস্ট এইড বক্স থেকে বেন্ডেস টা নিয়ে প্রথমে একটা মলম লাগিয়ে দিয়ে তার উপরে ব্যান্ডেস করে দিতে লাগলো ।
আফরান একটু অবাক হয় ।
কাজ শেষে আরিয়া বললো
__আমি নিজেই খেতে পারবো ।
আরিয়ার এমন ব্যাবহারে আফরান কিছু বললো‌ না ,,সাভাবিক হলো এতোক্ষনে।
আরিয়া মুখে লোকমা তুলে বললো ,আপনি খেয়েছেন ?
আফরানের শান্ত গলা ,

__তোমাকে জানতে হবে না
___আচ্ছা আপনার কি মাথায় কোনো সমস্যা আছে? সত্যি বলুন তো।
আরিয়ার কথায় আফরান কপাল কুচকায়।
__এভাবে তাকানোর কি আছে সত্যি বললাম,আমার মনে হয় আপনার ডাক্তার দেখানো উচিৎ
___:তোমাকে ওসব ভাবতে হবে না ।
__মাঝে মাঝে তুমি বলার হিসাব টা মিলাতে পারিনা আপনার মুখে
__এতো কিছু লক্ষ করো?
আরিয়া কিছু বললো না।
আরিয়ার খাবার শেষ ।আফরান একটা ওষুধ আরিয়া কে দিয়ে বললো ,এটা খেয়ে নাও ব্যাথা কমে যাবে।
আরিয়া:খুব হাস্যকর,নিজে আঘাত করে আবার নিজেই ব্যাথা সারানোর ওষুধ দিচ্ছেন।
__আমাকে রাগিও না।
আরিয়া কথা না বাড়িয়ে হাত থেকে অষুধ নিয়ে খেয়ে নেয়।

__ঘুমিয়ে যাও।
আরিয়া বাড়ি যাবো এখানে আমার ভালো লাগছে না।
__ বাড়ি গিয়ে কি করবি ? কোনো কাষ্টমার রেখে এসেছিস নাকি ?
__যাকেই রেখে আসি আপনার তাতে প্রবলেম কি?
__মুখের উপর তর্ক করছিস?
__আপনার উপরে কথা বলার মতো সাহস আছে নাকি ,বললেই তো মেরে দিবেন।
আফরান আপাতত এখন আর রাগতে চাচ্ছে না।তাই আরিয়ার কথা কানে তুললো না।
__যাবার সময় লাইট অফ করে যাবেন।আর তালা টা পারলে ঝুলিয়ে যাবেন না ওকে।
আফরান কথা না বলে গিয়ে লাইট অফ করে দেয়।
__ডিম লাইট টা লাগিয়ে দিন।
__:নেই,পারলে ল্যাম্প লাগিয়ে নেও। না লাগালেও প্রব্লেম নেই ,আমি কিছু করবো না।
__ঠিক বুঝলাম না?
আফরান কথা না বলে আরিয়ার পাশের সিট টায় শুয়ে পড়লো।

__পাগল হয়ে গেছেন? আমি এখন বড় হয়েছি।
___ছোট বেলায় তো বিনা কাপড়েই সামনে হাটা হাটি করতি ,কোলেও উঠে যেতি।
___আমি তখন ছোট ছিলাম এখন আমি বড় হয়েছি
আফরান উঠে আরিয়ার কাছাকাছি গিয়ে চোখে চোখ বললো
__তা কতোটুকু বড় হয়েছিস? ঘুমের মধ্যে তো দেখি একদম যা পরেছিস সব হাওয়া। আফরানের দুষ্টু কন্ঠ ।
___সেটা ঘুমের মধ্যে হয় কিন্তু…এটুকু বলে আটকে গিয়ে কাশতে লাগলো
– কি বলে লোকটা এসব?
___কিন্তু আপনি জানলেন কিভাবে হা?
আফরান আরিয়ার থেকে সরে গিয়ে বললো
___তোর ব্যাপারে এমন সব কিছু জানি যা তুই নিজেই জানিসনা,এখন ঘুমিয়ে পর তাছাড়া এতো কিছু জেনে তুই কি করবি ? এমনিতেও বিয়ে তো তোর আমার সথেই হবে তাইনা ? তোর সব কিছু দেখার রাইট ও শুধুমাত্র আমারই আছে।

___এসব বাজে কথা বন্ধ করুন মরে গেলেও আপনাকে বিয়ে করবো না।তাছাড়া আপনাকে বিয়ে করার কথা কেনো আসে,,ইটস সো ফানি ।
আফরানের রাগ টা বোধয় আবার তার কপালের রগ ভাসা দেখেই বুঝা গেলো।
___দেখুন যাই হোক পরে দেখা যাবে এখন আপনি এখান থেকে যান নয়তো আমি ঘুমাবো না।আপনার উপর বিন্দু মাত্র বিশ্বাস নেই ।কখন কি করে বসবেন…
__ তুই তো বললি বড় হয়েছিস তো এখন কিছু করলে প্রবলেম কোথায়?
__দেখুন এবার কিন্তু বাড়াবাড়ি হচ্ছে ।
আফরান একটু হেসে আবার পাশ ফিরে শুয়ে যায় ।
আরিয়া কিছুক্ষন বকবক করে কিছু না করতে পেরে নিজেও পাশ ফিরে শুয়ে যায়।

মি মাফিয়া পর্ব ৮

আয়শ এই মুহুর্তে পুলিশেষ সামনে বসে আছে।
পুলিশ:জি স্যার বলুন?হুয়াট ইউর প্রবলেম?
আয়শ : আমি একজন ডিটেক্টিভ।
কলেজের সামনে যে ঐ দিন একজনের মৃত্যু হয়েছিলো সেটা নিয়ে আমি অনেক সন্দেহের মধ্যে ছিলাম । শেষ পর্যন্ত এর খোলাসা আমি করেছি। আসল কিলার এর বিরুদ্ধে প্রমান নিয়ে এসেছি।
পুলিশ চমকায় । আচ্ছা তাহলে বলুন কি কি প্রমান এনেছেন ?
আয়শ তার ফোন টা বের করে কিছু ভিডিও দেখায়।
তারপর……

মি মাফিয়া পর্ব ১০