মেহরিনের সপ্নরঙ পর্ব ৪৩
মির্জা সূচনা
রাত ১১টা।
রাজ আর লাবিব বের হয়েছে কোনও একটা কাজে।
বাড়ির ভেতর মেহরিন লামিয়া আর কুলসুমের সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছে। রূপা বেগম ঘুমিয়ে গেছেন।
ঠিক তখনই মেহরিনের ফোনে মেহেরের নাম ভেসে উঠল। স্ক্রিনে নাম দেখেই মেহরিন হেসে উঠল।
মেহরিন বলল—
— আমি একটু আসছি।
বলে নিজের ঘরে চলে আসে মেহরিন।
চুপচাপ দরজা বন্ধ করে কলে ব্যাক করে।
— কি ম্যাডাম? বাংলাদেশে কবে আসবেন?
মেহরিন হেসে জিজ্ঞেস করল।
— কাল রাতেই চলে আসছি ম্যাম।
ওপাশ থেকে মেহেরের চঞ্চল গলা।
— কালকে বাসায় চলে আয়। ভাইয়াকে একটা ধামাক্কা দিবো। আমার ব্যাপারে কিছু বলবি না কিন্তু!
মেহরিন হেসে ফেলে,
— আমার তো মনে হয় তুই যেই ফাঁদ পাতবি, উনি ওতে পা দিবে না!
মেহের হেসে বলে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
— বাব্বা, কত বিশ্বাস।
মেহরিনও হেসে ওঠে,
— তা বলতে পারিস! আচ্ছা, ওসব বাদ দে… পাপা কেমন আছেন?
— হুম, ভালোই আছেন। তোর বিয়েতে আসতে পারেননি বলে খুব দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বলেছিলেন ভুল বোঝা যেনো না হয়। তুই তো জানিস, পাপা কতটা বিজি থাকেন।
— হ্যাঁ, জানি তো। কিন্তু পাপা কবে আসবেন?
— খুব তাড়াতাড়ি।
মেহরিন বিছানায় বসে একটা বালিশ জড়িয়ে ধরে বলল—
— তা আর কত সিঙ্গেল ঘুরবি? এবার বিয়ের চিন্তা ভাবনা কর?
— ভাবছি বিয়েটা করেই ফেলি বুঝলি তো!
মেহেরের কণ্ঠে রহস্য আর হাসির মিশেল।
মেহরিন ব্রু কুঁচকে বলল—
—রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি কেমন যেনো।তা কে সেই মহান পুরুষ? যাকে আমাদের ম্যাডাম শেষমেশ মন দিলেন?
— যাকে মন দিয়েছি, তাকে আমার মনে হয় তুই চিনিস।
— কে সে?
— তা সময়মতো বলব। আপাতত তোকে যা বললাম, সেটা কর। ভাইয়াকে নিয়ে আসবি না, একা আসবি। ভাইয়াকে বলবি বিকেলে আসতে।
— ওকে!
ফোন রেখে মেহরিন চুপ চাপ
ভেবে চলে—
মেহের কাকে মন দিলো? আর আমি তাকে চিনি? কে সে?
এইসব ভেবে ভেবেই কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে, সে জানেই না।
রাত প্রায় একটা।
রাজ আসলো রুমে।
দরজা খুলে দেখে, মেহরিন গুটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে।
রাজ হেসে উঠে ফিসফিস করে বলে,
— কে বলবে এই নারী সারাদিন মারামারি করে! এখন তো একদম বাচ্চা লাগছে! অবশ্য এই মহিলা বাচ্চা, শুধু কোলে উঠতে চায়। আল্লাহ জানে, বাবু হওয়ার পর আবার বলে না বসে— ‘বাবুকে রাখুন আর আমাকে কোল নিন, না হলে অন্য কারো কোলে উঠে যাবো!’
নিজের কথায় নিজেই হেসে ফেলে রাজ।
তারপর মেহরিনের পাশে এসে বসে।
মেহরিনের মুখের উপর কয়েকটা বেবি হেয়ার এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে।
রাজ ধীরে ধীরে ওগুলো সরিয়ে দেয়।
কিছুক্ষণ চুপচাপ তাকিয়ে থাকে মেহরিনের দিকে।
জানালাটা খোলা।
চাঁদের রুপালি আলো এসে পড়েছে মেহরিনের মুখে।
রাজ চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলে—
তুমি তো চাঁদ যে অন্যের আলো ধার করে জ্বলে ওঠে রাতের আকাশে।
কিন্তু আমার চাঁদ—
সে নিজের আলোয় আলোকিত এক অপার্থিব সৌন্দর্য।
সে কারো পূর্ণতা ধার করে গড়ে ওঠেনি।
সে নিজের অনুভব, নিজের আত্মবিশ্বাস আর নিজের আলোয় দীপ্তিমান।
সে একা, নিঃশব্দে নিজের পৃথিবী গড়ে তোলে,
নিজের আলোয় নিজেকে চিনে নেয়।
যে দীপ্তি চোখ ধাঁধিয়ে দেয় না, বরং মন জয় করে।
তাই তো বলি—
তুমি তো চাঁদ, কিন্তু আমার চাঁদ—সে নিজের আলোয় জ্বলে।
কারো ধারক, নয় সে—একেবারে নিজস্ব এক আকাশ!
বলতে বলতে রাজ হালকা একটা গান গায়।
নিশি রাতে চাঁন্দের আলো ঘরে ডুকেছে
বন্ধু তোমার ভালোবাসা আমায় ছুঁয়েছে ।
নিশি রাতে চাঁন্দের আলো ঘরে ডুকেছে
বন্ধু তোমার ভালোবাসা আমায় ছুঁয়েছে ।
বন্ধু তুমি কাছে আসো না
আমার পাশে বসো না,
মনের কথা বলবো তোমায় সময় হয়ছে ।
** নিশি রাতে চাঁন্দের আলো **
হো নিশি রাতে চাঁন্দের আলো ঘরে ডুকেছে
বন্ধু তোমার ভালোবাসা আমায় ছুঁয়েছে
নিশি রাতে চাঁন্দের আলো ঘরে ডুকেছে
বন্ধু তোমার ভালোবাসা আমায় ছুঁয়েছে
** নিশি রাতে চাঁন্দের আলো **
** নিশি রাতে চাঁন্দের আলো**
চাঁন্দের আলোয় প্রাণ
ভরে দেখবো তোমার হাঁসি
চোখে তে চোখ রেখে বলবো ভালোবাসি
** নিশি রাতে চাঁন্দের আলো **
হো… চাঁন্দের আলোয় প্রাণ
ভরে দেখবো তোমার হাঁসি
চোখে তে চোখ রেখে বলবো ভালোবাসি
বন্ধু তুমি কাছে আসো না ,আমার পাশে বসো না
মনের কথা বলবো তোমায় সময় হয়ছে ।
** নিশি রাতে চাঁন্দের আলো **
হো … নিশি রাতে চাঁন্দের আলো ঘরে ডুকেছে
বন্ধু তোমার ভালোবাসা আমায় ছুঁয়েছে
নিশি রাতে চাঁন্দের আলো ঘরে ডুকেছে
বন্ধু তোমার ভালোবাসা আমায় ছুঁয়েছে ।
হো,,,হো,,,,আ,,,,,
নানা না নানা না নানা না
নানা না নানা না নানা
দূরে দূরে থেকো না আর আমায় পাগল করে,
না পেলে তোমার দেখা যাব আমি মরে
হো …দূরে দূরে থেকো না আর আমায় পাগল করে
না পেলে তোমার দেখা যাব আমি মরে ।
বন্ধু তুমি কাছে আসো না ,আমার পাশে বসো না
মনের কথা বলবো তোমায় সময় হয়েছে ।
** নিশি রাতে চাঁন্দের আলো **
হো… নিশি রাতে চাঁন্দের আলো ঘরে ডুকেছে
বন্ধু তোমার ভালোবাসা আমায় ছুঁয়েছে
নিশি রাতে চাঁন্দের আলো ঘরে ডুকেছে
বন্ধু তোমার ভালোবাসা আমায় ছুঁয়েছে
** নিশি রাতে চাঁন্দের আলো **
তারপর চুমু খেয়ে চলে যায় ফ্রেশ হতে।
ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে, টেবিলে রাখা খাবার।
হেসে ফেলে।
না খেয়েই, শুয়ে পড়ে। জানে মেহরিনও কিছু খায়নি।
রাজ চুপচাপ গিয়ে শুয়ে পড়ে।
মেহরিনকে বুকে টেনে নেয়।
মেহরিন যেনো স্বাভাবিকভাবেই তার স্বামীর বুকে গুটিসুটি মেরে শুয়ে পড়ে।
রাতটা চুপচাপ…
চাঁদের আলোয়…
দু’জন মানুষ শুধু নিঃশব্দে পাশে…
সকাল ১০টা।
রাজ রেডি হচ্ছে। মেহরিন কাছে আসে।
শার্টের বোতাম লাগাতে লাগাতে বলে,
— আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে!
রাজ কপালে আঙুল ঘষতে ঘুরতে বলে,
— আবার সারপ্রাইজ? তোমার সারপ্রাইজের নাম শুনলেই তো আমার……..
মেহরিন রাগি চোখে তাকায়।
রাজ হেসে বলে,
— না মানে, বলতে চাচ্ছিলাম যে..
একটা ধাক্কা দিয়ে মেহরিন বলে,
— শুনতে হবে না জান!
রাজ হেসে মেহরিনকে জড়িয়ে ধরে ঘারে মুখ গুজে বলে,
— সরি! সরি! বউ বলো কী সারপ্রাইজ?
— বলব না!
রাজ ঘারে চুমু খেয়ে বলে,
—বউ…!
মেহরিন জামা খামচে ধরে বলে,
— আমি বলব না!
রাজ মুচকি হেসে বলে,
—তুমি বলবে না তাই তো? আচ্ছা আমি তাহলে….
শার্ট খুলতে শুরু করে রাজ।
মেহরিন সঙ্গে সঙ্গে রাজের হাত ধরে ফেলে।
—আপনার বোন আসবে আজ।
রাজের শরীর কেঁপে ওঠে।
চোখ দুটো টলমল করে ওঠে।
অসহায় চোখে তাকায় মেহরিনের দিকে।
মেহরিন রাজের মুখে দুই হাত দিয়ে বলে,
— বলেছিলাম না, আমি সব ঠিক করে দেব। আল্লাহ আমাদের পাশে আছেন। আর এই দুনিয়ায় আপনার বউ মেহরিন শিকদার, আপনার জীবনে একে একে সব সুখ ফিরিয়ে দেবে।
রাজ মেহরিনকে জড়িয়ে ধরে।
মেহরিন বলে,
— ওর সামনে দুর্বল হবেন না। ও এমনিতেই আপনাকে মাফিয়া টাইপ মনে করে!
রাজ কিছু বলতে চায়,
মেহরিন ঠোঁটে আঙুল দিয়ে বলে,
— ইশশ… আমি আছি তো। সব সামলে নেব।
রাজ চোখের জল লুকিয়ে হাসে।
মেহরিন রাজের কপালে চুমু খেয়ে বলে,
— আমি সামলে নেব সব।
রাজ ফিসফিসিয়ে বলে,
— এত কেন ভালোবাসো আমাকে বউ?
মেহরিন হেসে বলে,
তুমি জানো না তুমি বোঝ না
তুমি জানো নারে প্রিয়
তুমি মোর জীবনের সাধনা
তুমি জানো না তুমি বোঝ না
তুমি জানো নারে প্রিয়
তুমি মোর জীবনের সাধনা
তোমায় প্রথম যেদিন দেখেছি
মনে আপন জেনেছি
প্রথম যেদিন দেখেছি
মনে আপন জেনেছি
তুমি বন্ধু আমার মন মানো না
তুমি জানো না
তুমি জানো না তুমি বোঝ না
তুমি জানো নারে প্রিয়
তুমি মোর জীবনের সাধনা
রাজ জড়িয়ে ধরে শক্ত করে।
হঠাৎ দরজায় কড়াকড়ি।
কলসুম এসে বলে,
—ভাবি, একটা মেয়ে এসেছে, নাম বললো রাহি।
রাজ আর মেহরিন পরস্পরের দিকে তাকায়।
মেহরিন হেসে বলে,
— আমি যাচ্ছি। আপনি বসুন।
রাজ ঘরজোড়া হাঁটাহাঁটি করতে করতে বলে,
— আমি… আমি… আমি খুব খুশি, বউ।
মেহরিন হেসে বলে,
—আপনি খুশিতে নাচুন, আমি আসছি!
বেরিয়ে যায় মেহরিন।
রাহি বসে আছে, পাশে লামিয়া।
গল্প চলছে ওদের।
মেহরিন যেতেই রাহি ছুটে এসে জড়িয়ে ধরে।
— মেহু আপু!
মেহরিন হেসে বলে,
— কেমন আছিস?
রাহি বলে,
— প্রথমে একটু ভালো ছিলাম, এখন তোকে দেখে একেবারে অনেক অনেক ভালো আছি।
দুই হাত মেলে মেহরিনকে টেনে নেয়।
তারপর ফিসফিস করে বলে,
— এখানে সবাই তো অনেক ভালো… তুই ভালো আছিস তো?
মেহরিন হেসে বলে,
— খুব!
রাহি হেসে বলে,
—আমার বরের সাথে দেখা করবি না?
রাহির চোখ বড় বড় করে বলে,
—ভাইয়া কি বাসায়? আমার তো ভয় করবে!
মেহরিন হেসে বলে,
—যা! কি বলিস! ভয় কেন করবে?ও বাঘ না ভাল্লুক ওকে ভয় পেতে হবে।
রাহি নাটক শুরু করে দেয়,
— যদি গুলি মেরে আমার খুলি উড়িয়ে দিই… আমার তো বিয়ে ও হয়নি, বিয়ের আগেই আমার জামাইটা বিধবা হয়ে যাবে!
মেহরিন আর লামিয়া হেসে কুটিকুটি।
দূর থেকে রাজা আর লাবিব দেখছে।
তারা একে অপরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।
আড্ডা চলছে।
হঠাৎ লাবিব নিচে নামে, চুপচাপ রাহির দিকে তাকিয়ে থাকে।
মেহরিন বুঝে ব্যাপারটা।
তাই লাবিবকে ডেকে বলে,
— লাবিব, এদিকে আসো!
লাবিব যায়।
চোখ রাহির দিকেই।
মেহরিন বলে,
— রাহি, আর রাহি এটা আমার দেবর লাবিব।
রাহি বলল,
— হাই, লাবিব ভাইয়া!
সরাসরি গিয়ে লাবিবের বুকে ধাক্কা লাগে,
ভাইয়া।
লাবিবের চোখ ভিজে ওঠে সে চলে যায়।
মেহরিন বুঝে লাবিবের অনুভূতি।
রাহি বলে,
—ভাইয়া টা আমাকে দেখে রাগ করলো নাকি?
মেহরিন হেসে বলে,
— না রে, হয়ত দরকারে গেছে।
ঠিক তখনি রাজ নামে।
রাজের হাত-পা কাঁপছে।
একটা অস্থিরতা কাজ করছে রাজের ভেতর।
রাজ রাহির দিকে তাকিয়ে থাকে।
রাহি এগিয়ে এসে বলে,
—হাই ভাইয়া… আমি রাহি। ভাইয়া, এই ডাকটা শোনার জন্য কত অপেক্ষা করতো রাজ। আর আজ যখন এই ডাকটা শুনছে নিজেকে আর সামলে রাখতে পারছে না।
রাজ ভিতরে ভিতরে ভেঙে পড়ে।
মেহরিন মাথা নাড়ে যাতে — দুর্বল না হয়।
রাজ নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,
— কেমন আছো, বোন?
রাহি হতবাক।
রাজের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
তার মনে হচ্ছে, সামনে যে মানুষটা দাঁড়িয়ে, সে তার কত আপন! আর এই বোন ডাকটা কেমন যেনো ধাক্কা লাগে হৃদয়ে। কেমন যেনো একটা অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে।
চোখ ভিজে ওঠে রাহির।
রাজ ছুটে গিয়ে ধরে,
— কী হয়েছে পুঁচকি? কাঁদছো কেন? কী হয়েছে বলো ভাইয়াকে!
রাহি শুধু তাকিয়ে থাকে রাজের দিকে।
এই মানুষটা তাকে চিনে না, তবু এমন আপন কেন লাগছে?
মেহরিন এসে রাহিকে ধরে।
রাজকে ইশারায় শান্ত হতে বলে।
রাহিকে জিজ্ঞেস করে,
— কাঁদছিস কেন রে? ওনি তোকে ‘বোন’ বলেছে বলে কষ্ট পেয়েছিস?
রাহি রাজের দিকে আঙুল তুলে বলে,
— তোর বর আমাকে ‘বোন’ বলল, পুঁচকি বলল, আমার এত কষ্ট হচ্ছে কেন? মেহু আপু, আমার কেমন যেনো কান্না পাচ্ছে!
মেহরিন জড়িয়ে ধরে রাহিকে,
— তোর খারাপ লাগছে তোকে বোন বলায়? তুই তো লামিয়ার মতোই, তাই বোন বলেছে!আচ্ছা তোর খারাপ লাগবে আর বলবে না।
রাজ অসহায় চোখে তাকাই মেহরিনের দিকে মেহরিন চোখের ইশারায় শান্ত হতে বলে।
রাহি মাথা নাড়িয়ে বলে,
— “না… না… খারাপ লাগেনি।
আমার কেমন যেনো কষ্ট হচ্ছে শুধু…!মনে হচ্ছে ভাইয়াটা আমার খুব আপন খুব কাছের কেউ।
রাজের চোখে এক অদ্ভুত কোমল দৃষ্টি। সে তাকিয়ে আছে তার বোনটার দিকে। ইচ্ছে করছে ঝাঁপিয়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে, কিন্তু সাহস পাচ্ছে না।
রাহি হঠাৎ উঠে আসে রাজের দিকে, গম্ভীর মুখে বলে,
— “ভাইয়া…”
রাজের বুকের ভেতর কেঁপে ওঠে কিছু।
— ইসস… কী একটা ডাক! ভাইয়া..বোনটার মুখে এই ডাকটা শোনার জন্য কথা অপেক্ষায় না করেছে, কত ছটফট করেছে বোনটাকে কাছে পাওয়ার একটু আদর করার।
রাজ কাঁপা কণ্ঠে বলে,
— “পুঁচকি…”
রাহির চোখে আনন্দ, তৃপ্তি।
—আমার দাদা ভাই আছে, তুমি আমার ভাইয়া হবে?
রাজ কিছু বলতে চায়, কিন্তু গলায় আটকে যায় শব্দগুলো।
রাহি চোখের কোণে জল নিয়ে বলে,
—হও না প্লিজ… আমি কিছু চাইব না প্রমিস, শুধু আমায় ‘পুঁচকি’ বলে ডাকবে। এই নামে কখনো কেউ আমায় ডাকেনি। কেন জানি না, তোমার মুখে এই ডাকটা খুব ভালো লাগছে, খুব আপন লাগছে…”
রাজ আর দেরি করে না, সে জড়িয়ে ধরে রাহিকে। তার আদরের বোন, পুঁচকিকে।
রাহিও শক্ত করে ধরে রাখে রাজকে। রাজের বুক জুড়ে এক অদ্ভুত প্রশান্তি।
আর রাহি তার মন বলছে,
এই ভাইয়া টা কে কেনো যেনো আমার মনে হচ্ছে…… আমার নিজের… আমার একদম নিজের কেউ।
মেহরিন দাঁড়িয়ে আছে পাশে। চোখে জল, কিন্তু ঠোঁটে হাসি। মনে মনে বলে,
এই তো রক্তের সম্পর্ক। নিজের রক্তকে ঠিক চিনে নিয়েছে রাহি।
মেহরিনের এগিয়ে আসে।
— কী রে, কিছুক্ষণ আগে না বললি আমার বর নাকি মাফিয়া, তোর ভয় লাগে?
রাহি হেসে রাজকে ছেড়ে মেহরিনের দিকে তাকায়।
— আমার দাদা ভাই তো ভদ্র আর বদমেজাজি! একজন মাফিয়া যদি আমার ভাইয়া হয়, তাতে ক্ষতি কী?
দুই দুইটা ভয়ংকর প্রাণী একজন আমার দাদাভাই বদমেজাজি, আরেকজন ভাইয়া মাফিয়া। ভাবতেই তো গর্ব হচ্ছে।এখন থেকে কেউ আমার সাথে আর লাগতে আসবে না। লাগতে আসলে আমি বলবো জানিস আমি কে? বদমেজাজি ও মাফিয়ার বোন।
মেহরিন হেসে বলে,
— বাহ! তোর তো সেই বুদ্ধি!
রাহি সামনে দাঁ থাকা চুলগুলো ফুঁ দিয়ে সরিয়ে বলে,
— তা আর বলতে…।
তারপর রাজের দিকে ফিরে গিয়ে বলে,
— আজ থেকে তুমি আমার ভাইয়া, আর আমি তোমার পুঁচকি। মনে থাকবে তো?
রাজ মাথা নাড়ে,
— অবশ্যই।
রাহি হেসে আবার বলে,
— মেহু আপু, মনে আছে আমি তোকে বলেছিলাম—তুই আমার ভাইয়ের বউ হবি?
মেহরিন হেসে মাথা নাড়ে।
রাহি দাঁত বের করে বলে,
—দেখ, সেটাই হয়েছে। তুই আমার ভাইয়ার বউ!
রাজ এক দৃষ্টিতে তার পুঁচকির হাসির দিকে তাকিয়ে থাকে। তাতে একরাশ ভালোবাসা আর প্রশান্তি মিশে আছে।
ঠিক তখনই রুপা বেগম আসেন। রাহিকে দেখে থমকে যান। রাহি এগিয়ে গিয়ে বলে,
—হাই আন্টি, আমি রাহি।কিছু মনে করার চেষ্টা করে বলে ? ওহ হ্যাঁ,তুমি তো রুপা আন্টি তাই না…
রুপা বেগম মাথা নাড়েন। তিনি জানেন, এটা তার প্রাণপ্রিয় বান্ধবীর শেষ চিহ্ন।
তিনি রাহির চিবুকে হাত রেখে আদর করে কপালে চুমু খেয়ে বলেন,
— তুমি খুব মিষ্টি একটা মেয়ে।
রাহিও রুপা আন্টির গালে চুমু খেয়ে বলে,
— তুমিও খুব মিষ্টি, রুপা আন্টি।
ওদের দুজনের এই মায়াভরা মুহূর্তে লাবিব এসে পড়ে। রাহি লাবিবের দিকে তেড়ে গিয়ে কোমরে একটা হাত রেখে, অন্য হাত সামনের দিকে বাড়িয়ে বলে,
—তুমি আমায় দেখে ওভাবে চলে গেলে কেন, হ্যাঁ?
লাবিব মুচকি হেসে রাহির চুল এলোমেলো করে দিয়ে বলে,
— সরি পুঁচকি।
রাহি হেসে বলে,
— তুমিও পুঁচকি বলছো!
লাবিব তাকিয়ে থাকে রাজের দিকে। রাজ হাসে।
লাবিব বলে,
— হ্যাঁ, কারণ তোমাকে দেখতে ছোট বাবুদের মতো, তাই তোমার নাম পুঁচকি।
কেউ তাকে ছোট বললে রাহি সাধারণত রেগে যায়, কিন্তু আজ এই পুঁচকি ডাক তাকে রাগাচ্ছে না।
রাহি হেসে বলে,
—আচ্ছা, যাও মেনে নিলাম।
লাবিব একটা চকোলেট বের করে দিয়ে বলে,
—এইটা পুঁচকির জন্য।
রাহি চকোলেটটা নিয়ে বলে,
— থ্যাঙ্ক ইউ, ছোট ভাইয়া!
লাবিব একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে পুঁচকির দিকে। তার চোখে যেনো আনন্দের ছটা, ভালোবাসার রঙ।
তখন লামিয়া তেড়ে এসে বলে,
আমার চকলেট কই?
লাবিব হেসে বলে,
আমি জানতাম তুইও লাফিয়ে ঠিক চলে আসবি চকলেট নিতে এই নে।
তারপর মেহরিন এর সামনে গিয়ে বলে,
এই নাও ভাবি এটা তোমার। মেহরিন হেসে চকলেট টা নিয়ে নেয়।
মেহরিন রুপা বেগমকে বলে,
—মামনি, আমি একটু রাহি আর লামিয়াকে নিয়ে আমাদের বাড়ি যাবো।
রুপা বেগম হেসে মাথা নাড়েন।
— আচ্ছা।
মেহরিন রাজ আর লাবিবকে বলে,
— আপনারা অফিস থেকে ওখানেই চলে যাবেন।
রাজ আর লাবিব সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে যায়। তাদের মুখে তৃপ্তির ছাপ। আজ তারা খুব, খুব খুশি।
খাওয়া দাওয়া শেষে মেহরিন, রাহি আর লামিয়া চলে যায় মির্জা বাড়ির পথে।
মেহরিন কলিংবেল চাপে দরজা খুলে দেয় মেহের।
দরজা খুলতেই মেহের মেহরিনকে জড়িয়ে ধরে বলল,
— কেমন আছিস?
মেহরিন হেসে বলল,
— ভালো। তুই?
মেহর হেসে বলল,
— একদম জাক্কাস!
ওদিকে রাহি আর লামিয়া একবার মেহরের দিকে, একবার মেহরিনের দিকে তাকিয়ে, অবাক হয়ে বলল,
— জোড়া মেহরিন!
তাদের চমকে যাওয়া দেখে মেহরিন হেসে বলল,
— হ্যাঁ রে, আমরা দুইজনে জমজ।
মেহর হেসে বলল,
— ওরা কারা?
মেহরিন বলে,
— ভেতরে চল,সবাইকে চিনিয়ে দিচ্ছি।
সবাই ঘরে ঢুকল। মেহবুবা এসে রাহিকে জড়িয়ে ধরে বলল,
— কেমন আছিস রাহি?
রাহি বলল,
— ভালো। তুই
— ভালো।
লামিয়াকে জিজ্ঞেস করল,
— কেমন আছো লামিয়া?
লামিয়া একটু আস্তে বলে,
— ভালো আছি, ছোটো ভাবি।
মেহবুবা লজ্জা পেয়ে বলল,
— আরে এগুলো বলো না, কেমন জানি লাগে।
লামিয়া হেসে ফেলল।
রাহি একবার মেহরিনের কাছে যাচ্ছে, আবার একবার মেহেরের কাছে। কিছুক্ষণ পর বলে,
— তোমরা একদম এক না। চোখের রঙ আর তিল—আলাদা।
লামিয়া বলল,
— ভাইয়া তোমাদের একসাথে দেখলে তো কনফিউজড হয়ে যাবে।
মেহর হেসে বলল,
— আজ সেটাই করবো।
রাহি বলল,
—কিন্তু ধরে ফেলবে তো, তিল আর চোখের ব্যাপার টা তো?
মেহের হেসে বলল,
— মেকআপ আর লেন্স!কাজে লাগবে কবে?
রাহি চোখ বড় করে বলল,
— মানে! তোমরা?
লামিয়া বলল,
— আল্লাহ! আমার ভাইটারে তো আজ তোমরা ধোঁকা দিয়ে বুকা বানাবে।
রাহি আস্তে বলল,
—আমি ভাবছি, দাদা ভাই এখানে থাকলে তো তোমাদের দেখে নিঃশব্দে অজ্ঞান হয়ে যেত!
সবাই হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে।
মেহের ভ্রু কুঁচকে বলল,
— এই দাদা ভাই আবার কে?
মেহরিন হেসে বলল,
— রিদ ভাইয়ার কথা বলছে।
‘রিদ’ নামটা শুনেই মেহের চমকে উঠে রাহির দিকে তাকিয়ে বলল,
—তুমি সেই গোমরা মুখোর বোন?
রাহি সহ সবাই একসাথে মেহেরের দিকে তাকাল।
মেহের বুঝে ভুল সময় ভুল জায়গায় ভুল কথা বলে ফেলেছে। তারপর নিজেই হেসে বলল,
— না মানে…
রাহি হেসে বলল,
— তুমি দাদা ভাইকে এই নামে ডাকো, গোমরা মুখো interesting!
সবাই হেসে উঠল। মেহের মনে মনে বলল,
— যাক বাবা, বাঁচা গেল!
এমন সময় মেহরিন ভ্রু কুঁচকে বলল,
— রিদ ভাইয়াকে তুই চিনিস?
মেহের কিছু একটা বলতে যাবে, তার আগেই মেহরিন বলল,
— একদম মিথ্যা বলবি না!
সবাই চুপচাপ তাকিয়ে আছে মেহের আর মেহরিনের দিকে।
মেহের বলল,
— সিঙ্গাপুরে দেখা হয়েছিল।
রাহি বলল,
— তাহলে তুমি দাদা ভাইকে চেনো!
মেহের মাথা নাড়ে।
মেহরিন কিছু একটা বুঝে হাসতে হাসতে বলে,
— “Good choice!”
এই কথাটা হয়তো সবাই না বুঝলেও, মেহের ঠিক বুঝে যায়। তাই হাসে, মাথা নাড়ে।
তাদের আড্ডা জমে উঠে। কিছুক্ষণ পর চুমকি এসে যোগ দেয়।
অনেকদিন পর সবাই একসাথে হওয়ায় সবাই খুব খুশি।
মালিহা, মির্জা, রান্না নিয়ে ব্যস্ত, আর মাহির বাইরে আড্ডা দিচ্ছে।
মেহের বলে,রিদের সাথে প্রথম সাক্ষাতের কথা যা শুনে সবাই হাসতে হাসতে শেষ!
মেহরিন বলে,নৌকা উল্টানোর ব্যাপারটা—
সবাই হেসে গড়িয়ে পড়ে।
রাহি বলে,
— শেষমেশ নৌকা উল্টেই গেল!
চুমকি বলে,
— রাজ ভাইয়ার মুখটা নিশ্চয়ই দেখার মতো ছিল!
সবাই হাসতে হাসতে বিহ্বল।
বিকেল ৫টা।
মেহের বসে মেকআপ করছে। ৬টা বাজতেই তার মেকআপ শেষ হয়।চিবুকে থাকা তিলটা মেকআপ দিয়ে ঢেকে দেয় আর নতুন একটা তিল বসায় ঠোঁটের নিচে। চোখে লেন্স, চুল সাজানো। একদম মেহরিনের মতোই দেখাচ্ছে।
লামিয়া বলে,
— আজ আমার ভাই খাবে একটা ধোঁকা!
রাহি বলে,
— আহারে, তবে মজা হবে বেশ!
সবাই প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করছে।
৬:৪০-এ রাজ আর লাবিব আসে।
রাজ এসেই মেহবুবাকে জিজ্ঞেস করে,
—মেহরিন কোথায়?
মেহবুবা বলে,
— ছাদে।আপনাকে যেতে বলেছে।
রাজ ছাদে গিয়ে দেখে কেউ দোলনায় বসে আছে।
হেসে মৃদু পায়ে এগিয়ে যায়।
রাজ এলেই সবাই বেরিয়ে আসে দরজার আড়াল থেকে তাকিয়ে থাকে।
মেহরিন, রাহি, লামিয়া, মেহবুবা, চুমকি—সবাই চুপচাপ দেখছে।
রাজ ডাকে,
— “Moonbeam…”
মেহের ভেতরে ভেতরে হাসছে, কিন্তু মুখে কিছু প্রকাশ করছে না।
ও হেসে উত্তর দেয়,
— হুম?
রাজ ভ্রু কুঁচকে বলে,
— কি ব্যাপার! এই সময় ছাদে?
রুমে চলো—ফ্রেশ হবো!
সবাই মেহরিনের দিকে তাকিয়ে হাসে।
চুমকি ফিসফিস করে বলে,
— ফ্রেশ হতে গেলে ও বুঝি তোকে লাগে?
মেহরিন কপালে হাত দিয়ে বলে,
— এই লোকটা আমাকে সব জায়গায় ফাঁসিয়ে দেয়!
মেহবুবা বলে,
— চুপ কর! দেখ তো কী হয়!
রাজ বলে,
— চলো!
মেহের বলে,
— না, আজ আকাশটা সুন্দর লাগছে… একটু সময় কাটাই এখানে।
রাজ ভ্রু কুঁচকে বলে,
— আজ খুব রোমান্টিক মুডে আছো মনে হচ্ছে।
মেহের এগিয়ে এসে রাজের হাত ধরে বলল,
— আপনি আমার পাশে থাকলে রোমান্টিক না হয়ে থাকা যায়?
রাজ গভীরভাবে তাকায়… হঠাৎ বলে,
— আজ তোমাকে কেমন যেনো অন্যরকম লাগছে…
মেহের রেগে বলে,
— লাগবেই তো! এখন তো ‘পুরাতন’ হয়ে গেছি!
এই বলে উল্টে ফিরে যায়। আর হাসতে থাকে।
রাজ হাসে,
— এটা কেমন কথা? নতুন-পুরাতন আবার কী… তুমি আমার কাছে এখন যেমন বৃদ্ধ বয়সে যখন তোমার চুল পেকে যাবে কুজো হয়ে যাবে বয়সের ভারে তখনও এমনই থাকবে!
এই বলে মেহেরের হাত ধরে।
সবাই বলে,
— Ohhhhhh!
মেহরিনের বুক ধক করে ওঠে। ও বুঝতে পারছে—রাজ ওকে ঠিকই চিনবে।
রাজ মেহরকে জড়িয়ে ধরতে চায়, কিন্তু থেমে যায়…
মনে হয় কিছু একটা খটকা লাগছে।
রাজ বলে,
—একটু জড়িয়ে ধরো তো আমাকে!
মেহের হতচকিত হয়।
রাজ নিজেই কিছুটা এগিয়ে আসে…
হঠাৎ মেহেরকে দূরে ঠেলে দিয়ে নিজেও পিছিয়ে গিয়ে বলে,
— কে তুমি?
মেহের বলে,
— মানে?
রাজ রেগে যায়,
— নাটক করো না, বল কে তুমি?
— আমি মেহরিন আপনার আরিওনা, Moonbem দেখতেই পাচ্ছেন না?
সবাই তাকিয়ে…
মেহরিন হেসে ভাবে,
আমি জানতাম, উনি আমাকে চিনতে ভুল করবেন না।
রাজ বলে,
— তুমি আমার Moonbem বা আরিওনা না!
মেহের বলে,
— কি বলছেন!
রাজ পিছিয়ে যায়,
— আমার কাছে আসার চেষ্টা করবে না। তুমি দেখতে যতই মেহরিনের মতো হও, তুমি আমার Moonbeam না। আমি আমার Moonbeam-এর শরীরের গন্ধ, নিশ্বাসের শব্দ—সব চিনি।
— তুমি সে নও।
মেহের একটু ন্যাকামি করে বলে,
— কবি সাহেব…
রাজ আঙুল তুলে বলে,
— এই নামে ডাকবে না! এটা কেবল একজনের জন্য বরাদ্দ। আমি জানি না তুমি কে, তবে শুনে রাখো মেয়ে—তাকে চিনতে আমার কোনোদিন ভুল হবে না।
মেহের মুগ্ধ চোখে বোনের জীবনের সঙ্গীকে দেখে মনে মনে বলে,
তুই একেবারে খাঠি মানুষকে পেয়েছিস, মেহু!
তারপরও ওর নাটক চালিয়ে যায়,
— তাহলে নিশ্বাসের শব্দ শুনে দেখুন!
রাজ চিৎকার করে বলে,
— আমার মাথা গরম করো না মেয়ে! চলে যাও এখান থেকে!
মেহের বলে,
— আপনি আমাকে চিনতে পারলেন না, কবি সাহেব?
রাজ চিৎকার করে বলে,
— তুমি হতে পারো না আমার Moonbeam!
ঠিক তখনই মেহরিন সামনে এসে দাঁড়ায়।
রাজ একবার মেহেরের দিকে, আবার মেহরিনের দিকে তাকায়।
তারপর কিছু না বলে হন হন করে চলে যায়।
দরজার সামনে সবাই সরে দাঁড়ায় রাজ একবার সবার দিকে তাকায় তারপর রাগে গজ গজ করতে করতে চলে যায়।
মেহরিন দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
সে বুঝতে পারে—রাজ রেগে গেছে।
মেহর মেহরিনকে জড়িয়ে ধরে বলে,
মেহরিনের সপ্নরঙ পর্ব ৪২
— মানুষের মতো একটা মানুষ পেয়েছিস জীবনে, সত্যি আই এম ইম্প্রেস। উফফ কি ভালোবাসা।
মেহরিন হাসে।
তারপর বলে, তোদের এসবের চক্করে আমার ভোলাবেলা জামাইটা গেল চেইত্তা।যাই গিয়ে সোয়ামির রাগ ভাঙ্গাই। খুব রেগে গেছে আল্লাহ মালুম কত কাঠ খড় পোড়াতে হয় তার রাগ ভাঙ্গাতে।