যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ১০
মম সাহা
রাস্তার ধারের কৃষ্ণচূড়া গাছের ডাল গুলো ছেয়ে গেছে লাল লাল ফুলে। কাকের কর্কশ ধ্বনি গরমকে করে তুলেছে অসহনীয়। এই পাষণ্ড গরমেও চিত্রা দাঁড়িয়ে আছে তাদের লোহার গেইটটা ধরে। দারোয়ান চাচা বার কয়েক নিষেধ করলেন এভাবে গরমে এখনটায় দাঁড়িয়ে থাকতে অথচ চিত্রা শুনলে তো! শেষমেশ তিনি ছাতা মেলে দাঁড়ালেন চিত্রার পাশে। চিত্রা মিহি স্বরে বলল,
“চাচা, ছাতা মেলে দাঁড়াতে হবে না। আপনি গিয়ে বসুন আপনার জায়গায়।”
আবদুল চাচা নড়লেন না। দাঁড়িয়ে হাসলেন আলগোছে, “আপনে তো অসুস্থ, আম্মা। রইদে আরও অসুস্থ হইবেন।”
এই বয়স্ক মানুষটার স্নেহের দাপুটে হাসলো চিত্রা। ছাতাটা নিজের হাতে নিয়ে বলল,
“ঠিক আছে, ছাতাটা আমি রাখছি। আপনি গিয়ে বসেন, চাচা।”
আবদুল চাচা তাও নড়তে চাইলেন না। গাঁইগুঁই করে নড়লেন। গিয়ে বসলেন নিজের জায়গায়। যেতে যেতে সাবধান করে বললেন, “কিছু লাগলে আমারে কইয়েন, আম্মা।”
“আচ্ছা, বলবো।” কথা শেষ করেই আনমনে হাসলো চিত্রা। যেই মানুষ গুলো রক্তের না সেই মানুষ গুলোও ওর কত খেয়াল রাখে! কতটা ভালোবাসে! ও অসুস্থ হবে বলে মাথায় ছাতা ধরে। অথচ যে মানুষটাকে ও আত্মায় ঠাঁই দিলো সেই মানুষটা কি-না ওকে তিলে তিলে মেরেছে। এতটা বাজে ভাবে ভেঙেছে যে ও নিজেকে আর খুঁজে পাইনি। এজন্যই মানুষ বলে, আমরা যার হাতে নিজেকে তুলে দিই সে-ই আমাদের সবচেয়ে বাজে ভাবে ভেঙেচুরে দেয়। কারণ আমরাই তো তাদের ভাঙার অধিকার দিয়ে দিই। বুঝিয়ে দিই আমাদের গড়া, ভাঙা সবটুকু আমরা তাদের পায়ে সমর্থন করলাম।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
চিত্রা সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতেই বাহার ভাইদের বাড়ি থেকে মেয়েটা বের হলো। পেছন পেছন এলো বাহার ভাইও। মেয়েটা অল্প বয়সী। ষোলো কিংবা বড়োজোর সতেরো হবে! চোখে-মুখে কী এক টান মেয়েটার! তার তাকানো, তার হাসি কেমন যেন ঘোর লাগানো। সে সামনের মানুষটাকে পুরোদমে হাসি আর তাকানো, কথার ভঙ্গি দিয়ে যেন মাত দিতে চাচ্ছে। কিন্তু বাহার ভাই ঠিক তেমন ভাবে তাকাচ্ছে না। তার জন্য এত তোরজোর করে হাসি দেওয়ার ব্যাপারটাকে যেন সে গায়েই লাগাচ্ছে না। কী যেন ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলে আবার ভেতরেও চলে গেলো।
মেয়েটা দাঁড়িয়ে রইলো উদাস চোখে, আশাহত হয়ে। একটা গাঢ় সবুজ রঙের জামা পরনে মেয়েটির। চোখ ভর্তি কাজল, কপালে সবুজ টিপ আর বিরাট কোমড় ছাড়ানো চুলগুলো দেখে খুব অনায়াসেই আঁচ করা যায় যে মেয়েটি এরকম সাজগোজ করেছিলো এই পুরুষ মানুষটার একটু দৃষ্টি পাওয়ার জন্য। একটু প্রশংসা পাওয়ার জন্য কিন্তু সেটা মেয়েটি পায়নি। চিত্রার তো রাগ হওয়ার কথা, তার বাহার ভাইয়ের দিকে কেউ এরকম মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়েছে সেটা ভেবে ঈর্ষায় জ্বলে যাওয়ার কথা অথচ তেমন কিছুই হলো না। বরং করুণা জন্মালো বেশ। মায়া হলো মেয়েটার কথা ভেবে। মেয়েটার ভেতরে কোথাও একটা সে যেন নিজেকে দেখতে পেলো। বহু গুলো বছর, মাস কিংবা দিন আগে সে-ও তো এরকম করতো। বাহার ভাই যেন একটু তার দিকে তাকান, একটউ মুগ্ধ হোন সেই ভেবে কত আয়োজন ছিলো তার! কী না করেছে একটু মুগ্ধ দৃষ্টির জন্য। আজ যেন মেয়েটার এই ভগ্ন মোহের আদলটা সেই পুরোনো চিত্রাকে মনে করিয়ে দিলো।
চিত্রা নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারলো না। হেঁটে চলে গেলো ঐ পাশটায়। বাহার ভাইদের বাসার সামনে। ঠিক মেয়েটার এক হাত পাশে গিয়েই দাঁড়ালো। খুব নরম, কোমল স্বরে শুধালো,
“তুমি কে?”
মেয়েটি অন্য এক ঘোরে ছিলো। কোনো এক ভাবনায় খুব গভীর ভাবে ডুবে ছিলো। তাই চিত্রার আচমকা প্রশ্নে কিছুটা কেঁপে উঠলো। ঘোর লাগানো স্বরে বলল, “হু, হু?”
চিত্রা এবার মেয়েটার বাহুতে হাত দিলো। আশ্বস্ত করল ছোঁয়ায়,
“নাম কী তোমার? বাহার ভাইদের আত্মীয় হও তুমি?”
মেয়েটা ডানে-বামে মাথা নাড়ালো। অর্থাৎ সে বাহার ভাইদের আত্মীয় নয়। অতঃপর বলল,
“আমি তমসা। তমু ডাকে সবাই। আর আপনার বাহার ভাই আমার টিচার হন। এই কিছুদিন আগেই পড়ানো শুরু করেছেন।”
গরম এক অদৃশ্য বাতাস যেন ছুঁয়ে গেলো চিত্রার শরীর। তমসার ভেতরে যে সে পুরোনো চিত্রাকেই দেখেছিল সেটা এক ফোঁটাও ভুল দেখা ছিলো না।
চিত্রা কৌতূহল থেকে আবার জিজ্ঞেস করল, “কীসের জন্য এসেছিলে? কোনো কাজ ছিলো?”
তমসার ভেতরে আড়ষ্টতা। মিথ্যে বলবে না-কি সত্যি বলবে তা ভেবে ভেবে হয়তো হয়রান। চিত্রা সেই হয়রান হওয়া মুখ চোখকে চিনতে পারলো। কিন্তু কিছু বললো না। তার মনে হলো মেয়েটা তাকে সত্যিই বলবে। তাই আগে একটু ভেবেচিন্তে নিচ্ছে। এবং চিত্রার মনের কথা মিলেও গেলো। তমসা কতক্ষণ ভাবুক থেকে অতঃপর মিনমিন করে বলল,
“কাজ না অকাজ ঠিক বুঝতে পারছি না, আপু।”
“আমায় বলো কী করতে এসেছিলে, এরপর আমি বুঝে নিবো কাজ ছিলো না অকাজ।”
তমসা এবার চিত্রার কাছাকাছি এলো। ছাতার নিচে এঁটে গেলো দু’জনের শরীর। তমসা ফিসফিসিয়ে বলল,
“আগে বলুন আপনি কাউকে বলবেন না কিছু। স্যারকেও না।”
চিত্রা ভরসা দিয়ে বলল, “বলবো না।”
এবার তমসা মেয়েটা তুমুল উৎসাহ নিয়ে বলল,
“আসলে আমার আজ জন্মদিন ছিলো। স্যারকে আমি অনেক দিন যাবত বলে রেখেছিলাম জুলাইয়ের দুই তারিখ আমার জন্মদিন। কিন্তু স্যার একটু কল করে উইশও করেননি। আজ যেহেতু শুক্রবার স্যার পড়াতে যাবেন না তাই ভাবলাম আমিই আসি। আমাকে সামনে দেখলে উইশ না করে তো থাকতে পারবেন না। তাই বই কেনার উছিলায় স্যারের কাছে এসেছিলাম। স্যারকে জিজ্ঞেস করতে এসেছিলাম ম্যাথম্যাটিকসের সলিউশনের জন্য কোন বইটা কিনবো। কিন্তু আমার মূলত উদ্দেশ্য তো ছিলো অন্য। কিন্তু স্যার বুঝলে তো! উনি বুঝলেনই না! উইশ করবেন তো দূরের কথা।”
চিত্রা এক মুহূর্ত স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। মেয়েটা কত্ত বোকা হলে এরকম অবলীলায় মনের সবটুকু কথা বলে দিলো! নিশ্চয় মনে মনে ভীষণ কষ্ট পেয়েছে। তাই চিত্রার সাথে সেটা ভাগ করে নিয়েছে। মানুষ যে এমনই। কষ্ট পেলে কিংবা দুঃখ পেলে তারা আশ্রয় খোঁজে, একটা কোল খোঁজে যেন দুঃখের ভারটা কমানো যায়। যেমন করে উত্তপ্ত রোদে পুড়ে পথিক একটি বিশাল বটগাছের সন্ধান করে। এই মুহূর্তে তমসার বটগাছটা যেন চিত্রাই হয়ে উঠলো। তার বাহার ভাইকে দেখানোর জন্য মেয়েটা এত আশা নিয়ে ছিলো এটা ভেবে একটু রাগও হলো না তার। বরং মেয়েটার প্রতি মায়া থেকেই পুরো ব্যাপারটাকে হালকা করতে বলল,
“শুভ জন্মদিন, তমসা। হ্যাপি বার্থডে সুইটি। সবুজ জামাটাতে তোমায় পুরো রাজকন্যা লাগছে।”
তমসা নামের মেয়েটি এতটুকুতেই খুশি হয়ে গেলো। ব্যাগ থেকে একটি চকলেটের প্যাকেট বের করে ধরিয়ে দিলো চিত্রার হাতে। চঞ্চল স্বরে ভীষণ আপ্লুত হয়ে বলল, “থ্যাংক ইউ, আপু। আপনি তো আমার মনটাই ভালো করে দিলেন। নয়তো আমি ভেবেছিলাম আজ মন খারাপ করেই কাটাতে হবে।”
চিত্রা মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। সস্নেহে বলল, “এইতো আমাদের বাড়ি, চলো ভেতরে এসো। দেখবে আমাদের বাড়ির সবার সাথে কথা বললে মন আরও ভালো হয়ে যাবে।”
চিত্রার প্রস্তাবে নাকচ করল মেয়েটি। বেশ ইনিয়েবিনিয়ে বলল, “পরের বার আসবো, আপু। আসলে আজ তো বাবা-মা বাসায় তাই বেশি লেট হলে ওরা বকবে। শুক্রবার না হয়ে অন্যান্য যেকোনো দিন হলেও হতো।”
চিত্রা ভ্রু কুঞ্চিত করে জিজ্ঞেস করল, “কেন? অন্যান্য দিন তোমার বাবা-মা কোথায় থাকে?”
“অফিসে। দু’জনই চাকরিজীবী তো!”
“ওহ্। কেক নিয়ে এসেছিলে বুঝি বাহার ভাইয়ের জন্য?”
চিত্রার প্রশ্নাত্মক দৃষ্টির বিপরীতে মেয়েটা লাজুক হাসলো। মাথা নামিয়ে বললো, “হ্যাঁ। মানুষটার তো কেউ নেই তাই ভেবেছিলাম যদি একটু কেকই দিতে পারি! কিন্তু নিলেন না।”
এরপর কথা খুব সীমিতই হলো। কথা শেষ করেই বিদায় নিয়ে চলে গেলো মেয়েটা। যাওয়ার আগে কত অবলীলায় চিত্রাকে আলিঙ্গনও করে গেলো। যেন কত বছরের চেনাজানা ওদের! চিত্রা মেয়েটার যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো। মেয়েটার হাঁটা-চলায় যেন চঞ্চলতা উপচে পড়ছে। চিত্রার বড়ো ইচ্ছে হলো বাহার ভাইকে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে কেনো এত অবহেলা, অনাদর সব অষ্টাদশীদের জন্য কিন্তু জিজ্ঞেস করলো না। এমন বেমানান প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা যায় আদৌ? সে সহ্য করতে পারতো বাহার ভাই যদি মেয়েটিকে অনাদর না করতো? পারতো বাহার ভাইয়ের মুগ্ধতা অন্য কারো নামের হলে সেটা দেখতে? এসব ভাবনা ছাপিয়েও চিত্রার কানে কেবল প্রতিধ্বনিত হলে তমসার বলা এই বাক্যটাই যে— মানুষটার কেউ নেই।
মেয়েটা কেন ওরকম বললো? বাহারের ভাইয়ের কেউ নেই সেটা মেয়েটাকে কে বলেছে? বাহার ভাই বলেছেন? কিন্তু কেনো? বাহার ভাইয়ের তো সবাই আছে। তবুও কেন এরকমটা বললেন?
হলদিয়া রেঁস্তোরায় মুখোমুখি বসে আছে তুহিন আর নিরু। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় চুপচাপ দু’জনে। তেমন মানুষ নেই বলেই একদম নিস্তব্ধ চারপাশটা।
সময় যায় নিজের মতন। টিকটিক করে চলতে থাকে ঘড়ির কাঁটা। বেশ অনেকটা সময় নিরিবিলির পর তুহিন অধৈর্য হয়ে বলল,
“কী বলার জন্য এত আর্জেন্ট ডাকলে? বলছো না যে!”
নিরু তখনও চুপ। মেয়েটার চোখ-মুখ ফুলে আছে। চোখের কোণা গুলো কেমন লাল! যেন এখনই ফেটে রক্ত বেরিয়ে আসবে। তুহিন কি তা খেয়াল করেনি? একটুও তো জিজ্ঞেস করলো না! জানতে চাইলো না কেঁদেছে কি-না মেয়েটা? তবে কি তুহিন ধীরে ধীরে সবই অদেখা করে ফেলেছে?
নিরুর ধ্যান ভাঙে তুহিনের কথার ধ্বনিতে, “বলবে তো, হয়েছেটা কী?”
নিরু নিজেকে ধাতস্থ করে। রয়েসয়ে বসে। চোখ-মুখ শুকনো। কণ্ঠটা বসে গেছে। ভারি স্বরে শুধাল, “বিয়ের কথা কী ভাবলে?”
তুহিন এরকম প্রশ্ন হয়তো আশা করেনি তাই কিছুটা মৌন থাকে। চোখের সাথে চোখ মেলায় না। তাকিয়ে থাকে অন্যদিকে। নিজের আঙুলে আঙুল ঘঁষে। হয়তো উত্তর ভাবে। কিন্তু হাতড়ে সঠিক উত্তর পায় না। আবার হয়তো পায় উত্তর কিন্তু চক্ষুলজ্জায় বলতে পারে না।
নিরু বুঝে নেয় কি সেই উত্তর? মেয়েটা যে বড়োই প্রেমিক প্রিয় নারী। প্রেমিকের কুঁচকানো কপাল, এলানো হাসির পেছনের কারণ ধরে ফেলতে পারে চট করে। এটাও বুঝি ধরে ফেলল। তাই তো বুকের ভেতর হলো ভাঙন। তোলপাড় করে খসে খসে পড়তে লাগলো প্রেমের সকল জমি। ক্ষয়ে গেলো হৃদয়ের সবটুকু আবেগ। হা-হুতাশ করে উঠল বুকটা। ওমা, কে যেন কাছের একটা মরে গেছে মনে হলো। মনে হলো কেউ একটা শুয়ে পড়েছে চিতায়। কই, কেউ তো মরেনি। তবে এমন লাগছে কেন বুকটা? প্রিয় মানুষ বদলে যাওয়ার ছন্দেই কি বুকের এমন কাঁপন? এমন ভাঙন? এমন হা-হুতাশ?
ভেতর ভেতর চুরমার হয়ে যাওয়ার পরেও কণ্ঠে এক বিন্দু কাঁপন আনতে দেয়নি সে। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“আমায় আজ একটু সময় দিবে, তুহিন? একটু চারপাশটা হেঁটে দেখতাম!”
তুহিনের ইচ্ছে হলো না ঘোরার। ভেতর ভেতর কীসের যেন অশান্তিতে তড়পাচ্ছে আত্মাটা। তাই অকপটেই বলল, “আজ নয়, আরেকদিন?”
“বেশি সময় লাগবে না, তুহিন। আধাঘন্টা দিবে?”
তুহিন বিরক্ত হলো, “এমন করছো যেন কখনো জায়গাটা আর দেখবে না!”
নিরু জবাব দিল না। মুচকি হেসে উঠে দাঁড়ালো। তুহিনের হাতের মুঠোয় নিজের হাতটা রাখলো। তুহিনের অনিচ্ছাতেই রাখলো। চোখের কোণের জলটা খুব গোপনে মুছে নিয়ে মনে মনে হাসলো। বিড়বিড় করে বলল,
“আহ্ প্রেম, বদলে যাওয়া তোমার রূপ বড্ড ভয়ঙ্কর।”
তুহিন বুঝলোও না, তার হাতের মুঠোয় থাকা হাতটার অধিকারীনি ভেতর ভেতর নিঃস্ব হয়ে গেছে। তুহিন হয়তো অনুভব করলো না এই হাতের মুঠোয় হাতে আজ আর কোনো ভালোবাসার অনুভূতিটুকু বেঁচে নেই। তুহিন অনুভব করলো না, টিএসসির মোড়ে জন্মানো প্রেমটা হারিয়ে গেলো সেই মোড়েই। কবে, কখন তার ভালোবাসার রঙ ফিঁকে হয়ে গেছে সে টের পায়নি হয়তো। অথচ ওদিকে আরেকজন মানুষ ধ্বসে গেছে।
যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ৯
আসলে যে বেশি ভালোবাসে জ্বালাটা যে তারই। শেষ বেলাতেও সে আশায় বেঁধে রাখে নিজেকে। ভাবে, এই বুঝি সবটা ঠিক হয়ে যাবে। ভালোবাসা-বাসির খেলায় যে বেশি ভালোবাসবে হারটা তারই হবে। কারণ অবজ্ঞার মতন বড়ো গুটি তারা চালতে পারবে না কখনোই তাই বিপরীত পক্ষ বুঝবেই না তারা কী পেয়েছিল আর কী হারিয়েছে।
নিরু চারপাশটা ঘুরে ঘুরে দেখলো। মনে মনে বলল, “তুহিন, তুমি ভালো মানুষ। আফসোস! প্রেমিক হিসেবে পুরো জিরো।”