যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ১২
মম সাহা
ঘরোয়া বিয়ের আয়োজনই হয়েছে। তেমন সাজগোছ না থাকলেও একেবারে যে সাদামাটা তেমনটা নয়। বাবার যে টাকা আছে তা বেশ সুকৌশলে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা চলেছে বাড়ির কোনায় কোনায়। এই প্রাচুর্যে ঘেরা বাড়িটায় চিত্রার প্রথম আগমন। অথচ দারোয়ান ঢুকতে দিতে রাজি নন। চিত্রার আকুতি মিনতি যেন গা-ই করছেন না ভদ্র লোকটা। বাহার চিত্রার পেছন পেছনই বাড়িটায় এসেছে। কী জানি কী দেখে মেয়েটা রাস্তা-ঘাট, গাড়ি-ঘোড়া বেমালুম ভুলে ছুটতে শুরু করলো। বাহারও তার পেছন পেছন ছুটলো তাই। কোনো মতে একটা রিকশা ঠিক করে মেয়েটাকে নিয়ে উঠে বসলো। এরপর চিত্রার বলে দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী এখানে আসা।
“আহারে আফা, এমন না কইরা এ বাড়ির কাউকে চিইন্যা থাকলে তারে কল দেন। আমি বাড়ির মানুষের অনুমতি ছাড়া আপনেরে ঢুকতে দিতে পারুম না। আইজ বাড়িতে এমনেতেও অনুষ্ঠান আছে।”
চিত্রাও যেন ভদ্র লোকের কথা শুনতে নারাজ। বার বার কেবল বলছে, “একটু ঢুকতে দেন। আমার নিরু আপুর সাথে কথা আছে। নিরুপমাকে চিনেন না? এই বাড়ির মেয়ে- নিরুপমা? উনি আমার আপু হয়। উনি আমাকে চিনেন। উনাকে গিয়ে বলুন চিত্রা আসছে। দেখবেন উনি ঢুকতে দিতে বলবেন।”
দারোয়ান এক কাঠি উপরে কণ্ঠ নিয়ে বললেন, “বড়ো স্যার কইয়া দিছেন কেউ যেন নিরা আপামনির নাম নিয়া ঢুকতে না পারে।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
চিত্রা এবার খুব অসহায় বোধ করল। রাগ, বিরক্ত সব যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেলো। পৃথিবীতে এরম অসহায় সে কবে হয়েছিল ঠিক মনে নেই। অসহায় চোখে বাহার ভাইয়ের দিকে তাকালো। বাহার বুঝলো সেই চোখের ভাষা। এত বছরে কখনো সে চিত্রার কাঙ্ক্ষিত সময়ে ভরসা হতে না পারলেও আজ হলো। চিত্রার কাঁধে অল্প করে হাত রেখে দারোয়ানের উদ্দেশ্যে বলল,
“আমরা তো এখানে দরকারেই এসেছি, তাই না? ঢুকতে দিন আমাদের।”
দারোয়ান লোকটা এবার যেন মহা বিরক্ত হলেন। সাথে সাথেই খ্যাঁক খ্যাঁক করে উঠলেন, “কইছি না দিমু না। যান এদিক থে।”
“একটু ঢুকতে দেন, চাচা। নয়তো সর্বনাশ যে হয়ে যাবে।” চিত্রা দুই হাত জোর করে বলল। বলতে বলতে চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল।
দারোয়ান দাঁত কিড়মিড় করে সবেই মুখে হয়তো কোনো ধারালো কথা উচ্চারণ করে নিয়ে ছিলেন, তার আগেই বাহার ভাই দারোয়ানের শার্টের কলার চেপে ধরলেন। হুঙ্কার দিয়ে বললেন,
“যা উচ্চারণ করার জন্য মুখ খুলেছিস তা গিলে নে। নয়তো এখানে মেরে পুঁতে দিয়ে যাবো। ভালো মানুষী সহ্য না হলে কতটা খারাপ হওয়া যায় তা কিন্তু আমার জানা আছে।”
পয়তাল্লিশ-পঞ্চাশের আশেপাশে বয়স হয়তো মানুষটার! বাহারের এমন হুঙ্কারে শুকনে, টিনটিনে শরীরটা কি আর স্থির থাকতে পারে!
তখনই ঝুম বৃষ্টিতে বাড়ির ভেতর থেকে আসতে দেখা গেলো বিয়ের সাজে সজ্জিত নিরু আপুকে। তার পেছন পেছন তার মধ্য বয়স্ক ভদ্রলোক ও ভদ্রমহিলা দু’জনকেও দেখা গেলো। দূর থেকে ঠাহর করা গেলো এই দু’জন নিরু আপুর বাবা-মা হবেন।
নিরু আপু দৌড়েই এলেন কিছুটা। এসেই গেইটের বাহিরে থাকা চিত্রাকে দেখে বিস্মিত স্বরে বললেন,
“এই বৃষ্টিতে বাহিরে দাঁড়িয়ে আছো কেনো? ভিজে এ কী অবস্থা! ভেতরে এসো তাড়াতাড়ি। ভিতরে এসো।”
চিত্রার তখন বুকের অনাকাঙ্খিত ভয়ে নাজুক অবস্থা। কাঁপতে কাঁপতে বলল, “তোমার সাথে আমার কথা আছে, নিরু আপু। আমার সাথে একটু কথা বলবে!”
নিরুর মাথার উপর থাকা ছাতাটা বাতাসের তালে তালে কাঁপছে। তখনই তার বাবা মোফাজ্জল শেখ উপস্থিত হলেন। চিত্রাকে দেখেই তুমুল নাক ছিটকে বললেন,
“এই মেয়েটা এখানে? ঐ রাসকেলের বোন না ও? তোমার নাম কী হ্যাঁ? চিত্রা না তুমি?”
নামটা যেন বেশ ধমকেই শুধালেন। যার ধমকের দাপটে কিছুটা কেঁপে উঠল চিত্রা। বাহার ভাইও প্রতিত্তোরে কিছুটা ধমকে বললেন,
“আপনি কে হ্যাঁ? কোন মন্ত্রী মিনিস্টার? এসেই ধমকাচ্ছেন ওকে? কার সাথে কীভাবে কথা বলতে হয় জানেন না? রাসকেল তো আপনিও কিছু কম নন।”
খ্যাপে গেলেন ভদ্রলোক। রক্তগরম চোখে তাকিয়ে চোয়াল শক্ত করলেন, “ও গুন্ডা নিয়ে এসেছে এই মেয়ে? এই ছেলে তুমি কোন সাহসে আমায় রাসকেল বলো? এখনি তোমাকে বাড়ি এসে হাঙ্গামা করার জন্য চৌদ্দ শিকের ভাত খাওয়াতে পারি। জানো তুমি?”
বাহার ভাই এই ধমকিতে থোড়াই ভয় পেলেন! লোকটা হলেন চরম গা-ছাড়া। তার এসবে আদতে কিছু হবে?
সে উল্টো আরও গা-ছাড়া ভাবে বললেন, “ওসব আমার জন্য কিছু নয়। যান, আপনার কোন বাপকে ডাকবেন, ডাকেন। আমিও বাহার এখানে দাঁড়িয়ে থাকলাম। আমার কোন চুল ছিঁড়তে পারেন, ছিঁড়েন।”
কথা কাটাকাটি বাজে পর্যায়ে যাওয়ার আগেই চিত্রা বাহার ভাইয়ের হাত ধরে থামিয়ে দিলো। আকুতি চোখে মুখে। নিরু আপু থামালো তার বাবাকে,
“আব্বু, তুমি চাও তো আমি যেন ঠান্ডা মাথায় বিয়েটা করি?”
মোফাজ্জল শেখ তখন রাগে কাঁপছিলেন। তবুও স্ত্রীর চোখের ইশারায় মাথাটা ঠান্ডা করে বললেন, “হ্যাঁ, চাই।”
“ব্যস্, তাহলে আর একটাও কথা না। তোমরা ভেতরে যাও, আমি আসছি। ওরা আমার কাছের মানুষ। ওদের সাথে খারাপ ব্যবহার করো না।”
ব্যস্, মেয়ের কথার উপর আর কথা বললেন না উনি। যতই হোক আজ মেয়েটার শুভ দিন। তাই চাইলেন না কোনো বিঘ্ন ঘটাতে। কিন্তু কয়েকবার ঠিক ঘুরে ঘুরে চিত্রা ও বাহার ভাইয়ের দিকে রক্তচক্ষু ফেলে গেলেন।
চিত্রা তখন দিক হারানোর অতিথি পাখির মতনই। ছটফট করে কাছে এলো নিরুর। বৃষ্টির ছাঁটে নিরুর পরনের শাড়িটা কিছু কিছু জায়গায় হালকা ভিজেও গিয়েছে। নিরু আপু ঠান্ডা কণ্ঠে বললো,
“ঘরে আসো, চিত্রা। ভিজে যা-তা অবস্থা করেছো। অসুস্থ হয়ে যাবে।”
চিত্রা মাথা নাড়ালো অনবরত। কান্নার দাপটে কেঁপে কেঁপে উঠছে শরীর। তবুও কোনো রকমে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল, “আপু, তুমি বিয়ে করে নিচ্ছো! আমাদের কিছু জানালে না কেনো? ভাইজান, ভাইজান জানে?”
চিত্রার এই হারিয়ে ফেলার আতঙ্কিত মুখ দেখে নিরু এগিয়ে এলো। চিত্রার ভেজা মুখটাতেই হাত বুলিয়ে দিল,
“জানে না। জেনে নিবে পরে। সময় হলে।”
বেশ স্বাভাবিক কণ্ঠস্বর মেয়েটার। মনে হয় যেন কিছুই অস্বাভাবিক হচ্ছে না এখানে। সবই যেন স্বাভাবিক!
চিত্রা নিরু আপুর দুই হাত নিজের দু-হাতের মুঠোয় নিলো। ক্রন্দনরত স্বরে বলল, “ভাইজানকে তুমি ছেড়ে দিলে, আপু? ভাইজান খুব কষ্ট পাবে। ছেড়ো না, আপু। আমার ভাইজান তোমায় ছাড়া কীভাবে থাকবে! আপু, তুমি না ভাইজানের মন বুঝতে পারো? তাহলে আজ ভাইজানকে ছেড়ে কেন দিচ্ছো?”
নিরু চিত্রার দিকে তাকালো। মেয়েটা উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপছে। বাহার ভাই এতক্ষণ কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকলেও এখন এসে মেয়েটার পাশে দাঁড়ালো। দু’হাতে আগলে ধরলো বাহু। চিত্রা ভরসা পেয়ে বাহার ভাইয়ের পেটের দিকের শার্টটা খামচে ধরলো। নিরু নীরবে সেই দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে গোপনে হাসলো। অতঃপর জবাব দিলো,
“তোমার কথাতেই তোমার উত্তর আছে, চিত্রা। আমি তোমার ভাইজানের মন বুঝতে পারি বলেই আজ অন্য কারো সাথে ঘর বাঁধতে যাচ্ছি। দোয়া করো আমার জন্য।”
নিরু আপুর হেয়ালি কথায় ভারি আশ্চর্যিত হলো চিত্রা। হতভম্ব কণ্ঠে বলল, “ভাইয়ার মন বুঝে বিয়েতে বসছো?”
“হ্যাঁ, চিত্রা। যা শুনেছো, সেটাই বললাম। জানো, তোমার ভাইকে কাল থেকে এ অব্দি আটবার কল দিয়েছিলাম। প্রতিবার এই ভেবেই দিয়ে ছিলাম যে সে কল ধরবে এবং আমি তাকে বলবো আমি সত্যি সত্যি বিয়ে করে নিচ্ছি। আর তখন যদি তোমার ভাইজান একবার বলে যে, ‘না, নিরুপমা, তুমি আমায় ছেড়ে যেও না’ আমি ঠিক সেই মুহূর্তে বিয়েটা ভেঙে দিতাম। কিন্তু এই আট বারই তোমার ভাই কলটা রিসিভ করেনি। কারণ আজকাল নিরুর কল রিসিভ করার মতন সময় তোমার ভাইজানের নেই। তাই বিয়েই করতে হবে! তবে একটা কথা কী জানো চিত্রা?”
সবগুলো কথা যন্ত্রের মতনই শুনলো চিত্রা। ঘাড় নাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো, “কী কথা?”
“মানুষ যখন কোনো সম্পর্ক থেকে বের হতে চায় তখন তারা প্রতি মিনিটে মিনিটে তোমাকে বুঝিয়ে দিবে তোমার সাথে সে কতটা অসুখী আছে। সম্পর্ক পুরোনো হয়ে গেলে তখন তাদের আর তোমার জন্য সময় হবে না। তোমার আবদারকে মনে হবে নেহাৎ ন্যাকামি। তোমার কান্না, তোমার অভিমান, তোমার ভেতর ভেতর ভেঙে যাওয়া তারা কখনো দেখতে পায় না আর। কারণ তারা যে মনে মনে অনেক দূরে চলে যায় ততদিনে। তোমার ভাইয়েরও সেই অবস্থা। তাই তাকে একটু স্বস্তি দিতেই এই আয়োজন। সে হয়তো এতটা কঠোর হতে পারবে না, মুখ ফুটে বলতে পারবে না— নিরু, তোমার সাথে আর থাকা যায় না। আমায় ছেড়ে দাও। তাই আমিই তার মনের কথা বুঝে নিলাম। সারাটা জীবন তো তার স্বস্তির জন্যই সব করলাম। এবারও না-হয় এতটুকু করে ফেলি।”
চিত্রা জানতো ভাইজানের এই সম্পর্কে কিছুটা দূরত্ব এসেছিলো। কিন্তু সেই দূরত্ব যে একবারের দূরে সরে যাওয়ার নামতা সে ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি। তাই আকুল গলায় বলল, “আরেকটু অপেক্ষা করা যেতো না, আপু? ভাইজান ঠিক আগের মতন হয়ে যাবে দেখো। একটু অপেক্ষা করবে না?”
নিরু থরথর করে কাঁপতে থাকা চিত্রার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। ওর যে ভেতর ভেতর বুকের জমিন ভেঙে যাচ্ছে। সবাই কি আর সব ভাঙন দেখাতে পারে? কেউ কেউ সেই ভাঙন লুকিয়ে রেখে বাঁচে। বাঁচার অভিনয় করে। নিরু সেই অভিনয়ে পাকা অভিনেত্রী যে!
তাই তো আহ্লাদী স্বরে বলল, “অপেক্ষা তার জন্যই করা যায় যে ফিলে আসার সম্ভাবনা থাকে। অথচ যে ফিরবে না জানি, তার জন্য অপেক্ষা করা মানেই নিজের প্রতি করা সবচেয়ে বড়ো অন্যায়টির একটি। তুমি বাহার ভাইয়ের চলে যাওয়ার পর অপেক্ষা করে গেছো। বিভিন্ন ভাবে নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েও আবার বেঁচেছো। অপেক্ষায় ছিলে মানুষটা ফিরবে। কারণ তুমি জানতে কোনো একদিন মানুষটা ঠিকই আসতো। এবং তোমার অপেক্ষা পরিপূর্ণ করে মানুষটা এসেছে। কিন্তু আমাকে যার জন্য অপেক্ষা করতে বলছো সে কখনো আবার আগের মতন আমার কাছে ফিরতে পারবে না যে! সে হারিয়ে গেছে। ঐ মানুষটার জন্য অপেক্ষা করা মানে ধুঁকে ধুঁকে মরা। ঐ মানুষটা কখনোই বুঝতো না, নিরু নামের মেয়েটি তার জন্য অপেক্ষায় আছে। বরং যেই ভালোবাসাটুকু দু’জনের মনে বাকি আছে সেটাও নিঃশেষ হয়ে যেতো! একটা ভালোবাসা-বাসির সম্পর্কে যদি ভালোবাসাটা নিঃশেষ হয়ে যায় চিত্রা, তাহলে সেই সম্পর্কের প্রতি ঘৃণা জন্মে যায়। তাই আমি শেষ ভালোবাসাটুকু বাঁচিয়ে রাখার জন্যই দূরে চলে যাচ্ছি। আমরা দু’জন দু’জনের থাকি বা না থাকি, ভালোবাসাটুকু থেকে যাক। অন্তত কোনো এক মধ্য রাতে কিংবা কুয়াশার ভোরে দু’জন দুজনকে মনে করবো! এতটুকু আফসোস থাকুক। এতটুকু অনুভূতি থাকুক এই মায়ার সম্পর্ক গুলোতে। আর দু’বার তোমার ভাইকে কল দিবো। মনের শান্তির জন্য। যদি ধরে তা-ও আমি বিয়েটা ভেঙে দিবো। কিন্তু আমি জানি ও ধরবে না। তবুও নিজেকে মনে মনে তো বলতে পারবো, আমি শেষ চেষ্টাটুকু করেছি! যাই হোক, তোমার তো ভেতরে যাবে না। আমিই যাই। আমার বর আসার সময় হয়ে গেছে। ভালো থেকো, চিত্রা। তোমার ভালোবাসা বেঁচে থাকুক।”
চিত্রার চোখে জলে টলমল। বিধ্বস্ত কণ্ঠে বলল, “অভিশাপ দিবে না আমায়? কোথাও একটা আমিই দায়ী যে!”
নিরু উত্তর দিলো না। কেবল ডানে-বামে মাথা নাড়িয়ে ছুটতে লাগলো। হয়তো চোখের জল লুকিয়ে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা! চিত্রা ঠোঁট চেপে খামচে ধরলো বাহার ভাইয়ের শার্ট। বাহার ভাইয়ের বুকে মুখ গুঁজে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। অস্ফুটস্বরে বলতে লাগল,
“আমি সব শেষ করে দিলাম, বাহার ভাই। সব শেষ করে দিলাম। আপনাকে না পাওয়ার দুঃখে আমি সব জ্বালিয়ে দিলাম। এই অভিশাপ আমি মাথা থেকে কীভাবে নামাবো? এই কলঙ্ক কীভাবে ঘুচাবো?”
যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ১১
বাহার ভাই চিত্রার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন। চোখ গুলো তার হলদেটে লাগছে। চোখের সামনে ভেসে উঠছে বনফুলের মুখটা। মেয়েটা কি আজ এই চরম দুঃখের কথাটা শুনতে পেলে পরম আনন্দে হাসতো? আজ কী মেয়েটা খুব সাজতো? নেশার দুনিয়ায় ডুবে যাওয়া মেয়েটা কি আবার নতুন করে বাঁচতে পারতো? বনফুলকে আজ বড়ো জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে, কাউকে না পেয়ে ও কেন এমন পাগল পাগল হলো? ও কি নিরুর মতন এত দারুণ হতে পারলো না? এত দারুণ ভাবতে পারলো না? কেন ভালোবাসা না পেলে বনফুলরা হারিয়ে যায়? চিত্রারা হারিয়ে যেতে চায়? ওরা কি নিরুপমার মতন হতে পারে না? নিজেকে বাঁচানোর একটা চেষ্টা করতে পারে না?