রং পর্ব ২৮

রং পর্ব ২৮
তন্নী তনু

ফ্ল‍্যাসব‍্যাক—
করিডোরে লম্বা লম্বা পা ফেলে কাঠের ভারী দরজা ঠেলে কেবিনে প্রবেশ করে ইরফাদ। মিটিং এর জন‍্যে ডাকা হয়েছে পুলিশ সদশ‍‍্যদের। লম্বা আকৃতির টেবিল। দু”সাইডে সারি সারি চেয়ার। বসে আছেন থানার কিছু এসআই, এসিপি।টেবিলের মাথায় রাখা চেয়ারটা এখনো ফাঁকা। ইরফাদ নিজের জায়গায় বসে। প্রভাতরঞ্জন সরকার আসেন ত্রিশ সেকেন্ড পরেই। সকল ফর্মালিটি শেষে শুরু হয় আলোচনা। ইরফাদ দেয়ালে টানানো ডিজিটাল বোর্ডে আনসলভড ক্রাইম গুলো লেখে। তার মধ‍্যে সাম্প্রতিক দুটো মা*র্ডা*র হয়েছে। যার কোনো ক্লু নেই। লাস্ট মা*র্ডা*র হয়েছিলো বিষক্রিয়ার মাধ‍্যেমে। তবে বিষ প্রয়োগের প্রসেস টাও এখনো কেউ ধরতে পারেনি।সুক্ষ ও দক্ষ হাতে করা মা*র্ডা*রের পেছনে সব টাই ধোঁয়াশা। উপরের মা*র্ডা*র ও রাতের আধারে জিসানের উপর এট‍্যাকের বিষয় স্কিপ করে যায় ইরফাদ। পুরোনো একমাত্র বড় কেস হলো রায়হান রাফি। তিনি এখোনো নিরুদ্দেশ। বাকি তরুণগুলো এখনো নি*খোঁ*জ। কেসটির বিষয়ে নিজস্ব বক্তব্যে রাখে ইরফাদ।

— রায়হান রাফির গু*ম আর তরুণগুলো মিসিং। এই দু*টো কোনো না কোনো ভাবে রিলেটেড। আর রায়হান রাফির কি*ড*ন‍্যাপিং হওয়া আর মিস সিনথিয়া ইবনা”র ফেঁসে যাওয়া হয়তো প্রি-প্ল‍্যানড।হয়তো সবকিছুর আড়ালের লুকিয়ে থাকা ডেভিল এটাই চেয়েছে। রাফি কি*ডন‍্যাপ হোক। মেয়েটি ফেঁসে যাক। আর কেসটা ক্রিটিক‍্যাল হয়ে আমার কাছে আসুক। আমার আর ভিক্টিমের একটা সহজ কমিউনিকেশন থাকুক। যাতে তার মাধ‍্যমে আমাকে ট্র‍্যাপে ফেলা যায়।
মাথা নিচু করে পুরো বিষয়টা একবার গেঁথে নেয় জাবির। তারপর সব সাজিয়ে নিয়ে বলে,
— স‍্যার,কোয়েশ্চেন!
যদি আপনাকে ধরাই তাদের মূল উদ‍্যেশ‍্য হয় তারা অন‍্য পথ বেঁছে নিতো!
বাকিরা মাথা ঝাকিয়ে সম্মতি দেয়। ইরফাদ দু’পা এগিয়ে আসে। প্রভাতরঞ্জন সরকার কিছুক্ষণ ভাবেন। তারপর বলেন,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

— ইরফাদের উপর একাধিক বার এট‍্যাক হয়েছে। এটা আমরা জানি। তবে কোনোবার ই প্ল‍্যান সাকসেসফুল হয়নি। হতে পারে এই সুক্ষ, সস্তা প্ল‍্যান দিয়েই তারা উদ্দেশ‍্য হাসিল করতে চায়। যাতে আমরা আঁচও না করতে পারি। অথবা ভেবেও না দেখি।
— একজেক্টলি স‍্যার!
তবে এটাও হতে পারে। এক ঢিলে দুই পাখি। রাফিকেও প্রয়োজন আমাকেও প্রয়োজন। মাঝখানে মেয়েটা কারো চালা গুটি।
প্রভাতরঞ্জন সরকার বলেন,
–তাহলে এক কাজ করা যেতে পারে। ওদের দেয়া গুটিকেই ওদের ধরার চাল বানানো যায় না??
— যায় স‍্যার। তবে এক্ষেত্রে মেয়েটির লাইফ রিস্ক থাকতে পারে। যেহেতু আমরা কেউ জানি না। এর পেছনে কে বা কারা রয়েছে। এবং আসল উদ্দেশ্য কি?
— কি করতে চাচ্ছো!

— যেহেতু সিনথিয়া ইবনা”র ভাষ‍্যমতে মতে,” ডেভিল তাকে বোন হিসেবে দাবী করে। এটা কতোটুকু সত‍্যি আমরা জানিনা। কিন্তু অজানা লোকটি মেয়েটির সাথে সাথে ফোনে কমিউনিকেট করে। ঐজন‍্য আমি পিবিআই সেক্টরের সাথে কথা বলেছি।তবে আমাদের পিবিআই সেক্টর ট্র‍্যাক করতেও বারবার ব‍্যর্থ হচ্ছে। বিকজ সে এক মিনিট হওয়ার আগেই প্রতিবার কল কেটে দেয়।
–মেয়েটিকে ইনফর্ম করেছিলে-“একমিনিট কথা বলতে হবে?”
— হুম! তবে সে প্রতিবার ই একমিনিট হওয়ার আগেই কল কেটে দেয়। প্রয়োজনে আবার কল করে।
— তাহলে মেয়েটিকে ইনফর্ম করো যেভাবেই হোক একমিনিট কনভারসেশন যেনো কন্টিনিউ করে।
আলোচনার মধ‍্যে পারসোনাল ফোনটি কেঁপে ওঠে ইরফাদের। পকেট থেকে ফোন করে স্ক্রিনে চোখ রাখতেই দেখে,
— “কলিং সিনথিয়া ইবনা”।
অন‍্যসময়ে হলে ইরফাদ কোনো ভাবেই ধরতো না। তবে এই মূহুর্তে তার ফোন কেসের জন‍্যে সবচেয়ে বেশী ইমপর্ট‍্যান্ট। ইরফাদ সকলের উদ্দেশ‍্যে বলে,” সরি।” তারপর ফোন রিসিভ করে লাউড রাখে।তারপর বলে,
–বলো
সিনথিয়া বলে,

— স‍্যার! ভাইয়া আরেকটা মেসেজ দিয়েছে। রাতে একটা নাগাদ কল দিবে। আমি যেনো সজাগ থাকি।
— স্ট্রেঞ্জ!রাত একটা তেই কেনো??
জাবির তড়িঘড়ি করে গলা উঁচিয়ে বলে,
— স‍্যার! আমার মনে হচ্ছে- মুখোশধারী লোকটি কোনো রিস্ক নিতে চাচ্ছে না। হতে পারে ডেভিল এটা চাচ্ছে তাদের প্ল‍্যান সম্পর্কে পুলিশ আঁচ না করতে পারে। কোনো কারণে সিনথিয়া ইবনা”কে যদি সন্দেহের তালিকায় পুলিশ আনে। এবং ট্র‍্যাক করতে চায়। তাই ওতো রাতের কথা বলেছে।এবং রাত ভারী হলে অবশ‍্যেই কেউ মিস সিনথিয়া ইবনার কল ট্র‍্যাক করার জন‍্যে বসে থাকবে না। আ”ম নট সিউর। জাস্ট গেস করলাম।
–রাইট।
ইরফাদ ফোন ধরে বলে,
–ওকে…
–স‍্যার আরেকটা কথা। প্ল‍্যান মনে হয় চেঞ্জ হবে।
–যেমন?
— মানে! দুদিন পরের কথা হলেও। যা করার তারা কালকেই করবে।
ইরফাদের ভ্রুকুটি সংকুচিত হয়। ভাবুক দৃষ্টিতে শূন‍্যে চেয়ে থাকে কিছুক্ষণ। তারপর বলে,

— আই”ল কল ইউ সুন।
তারপর আবার আলোচনায় মন দেয়।
— স‍্যার! সিনথিয়া ইবনাকে দু”টো দিন রিল‍্যাক্সে থাকার কথা বলেও এখন বলা হচ্ছে প্ল‍্যান চেঞ্জ হবে। এবং তা কালকেই এপ্লাই করবে।
জাবির বলে,
— তাহলে আমাদের সকল তথ‍্য আজ রাতের মধ‍্যেই নিতে হবে। তাদের প্ল‍্যান ওয়াইজ যেতে হলে অনেকের লাইফ রিস্ক থাকবে। বিশেষ করে আপনার। সো যা করার আজ রাতের মধ‍্যেই।
ইরফাদ সম্মতি দেয়। তারপর বলে,
— তাহলে আজ রাত একটার অপেক্ষা!
জাবির বলে,

— আমার কিছু বলার আছে স‍্যার! দেখুন আমাদের একটাই চান্স। ঐ একটা ফোন কল। ঐ কল একবার ই আসবে। মানে সুযোগ একটাই। মেয়েটা যদি একমিনিট কথা কোনো ভাবেই কন্টিনিউ না করতে পারে। বা সঠিক সময়ে টেকনিক এপ্লাই না করতে পারে।আর এতো দূরে থেকে আমরা কতোটুকু-ই হ‍্যান্ডেল করতে পারবো। আমার মনে হয় ঐ টাইমে মেয়েটি আমাদের কাছাকাছি বা আমাদের টিম তার কাছাকাছি থাকলে বেটার হতো।
–ওর বাসায় যাওয়া ঠিক হবে না। বিকজ রিসেন্ট একটা মোবাইল ফোন তাকে দেয়া হয়েছে। তাও আবার তার জানালার কাছে। আমার মনে হয় । ওর বাসার কেউ এসবের সাথে জড়িত। এই মূহুর্তে আমরা তার হেল্প নিচ্ছি অথবা সে আমাদের হেল্প করছে। এই দুটো জিনিস কোনো ভাবেই শত্রুকে বুঝতে দেয়া যাবে না। তাহলেই প্ল‍্যান চেঞ্জ হবে। আমাদের সকলের জন‍্যেই বিষয়টি রিস্কি হয়ে যাবে।

–যেহেতু একটা ডিভাইস শত্রুপক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। অবশ‍্যেই এর কোনো কারণ আছে। হতেও পারে তাকে সব সময় ফলো করা হয়। কোথায় যায়। কার সাথে কথা বলে…
— হতে পারে…
–তাহলে তো বাইরে আনাও রিস্ক হয়ে যায়। ট্র‍্যাক করলেই জানতে পারবে মেয়েটি কোথায়।
— ওয়েট…. আমি পিবিআই ডিপার্টমেন্টের তনয়”কে কল করে নিচ্ছি।
একটা কক্ষে নির্দিষ্ট জায়গা ফাঁকা রেখে পর পর রাখা লেটেস্ট মডেলের ডেক্সটপ। স্ক্রিনে চলছে নিউজ, স‍্যাটেলাইট ইমেজ আর কিছু স্ক্রিনে রেকর্ডিং এর তরঙ্গের ঢেউ খেলানো তরঙ্গ। কানে হেডফোন গুজে তরুণ থেকে বয়স্কদের চোখে শুধুই অজানা সত‍্যিকে বাইরে আনার প্রয়াস। সবাই নিজ কাজে ব‍্যস্ত। ইরফাদ ডায়েল করে। ফোন রিসিভ করে তনয়। তারপর,

— জ্বী স‍্যার বলুন!
— সিনথিয়া ইবনা”র সীমে আসা কলগুলো ট্র‍্যাক করা যায়নি। সো আমরা চাচ্ছি তাকে আমাদের কাছাকাছি রেখে প্ল‍্যান সাকসেস করতে।
— ইয়াহ সিউর।
— কিন্তু ডিভাইস টা তো অজ্ঞাত কোনো লোকের দেয়া। ট্র‍্যাকিং সিস্টেম চালু থাকতে পারে।
— ডোন্ট ওরি। মেয়েটিকে আপনাদের লোকেশনে আনুন। বাকিটা দেখছি..
— ওকে! বিফোর ওয়ান এএম।
–ওকে স‍্যার!
বর্তমান……..

মুখোশধারী লোকটি একটানে ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে বসায়। দরজায় লক দিয়ে নিজেও গাড়িতে বসে। তারপর হিসহিসিয়ে সিনথিয়াকে বলে,
— গাঁধা কোথাকার!
গলার স্বরের গাম্ভীর্য আর ধমকের সুরে সিনথিয়া ভ‍্যাবাচ‍্যাকা খায়। পরিচিত গলার স্বরে নড়েচড়ে বসে। তারপর ধীর গলায় বলে,
— তো বলবেন না এটা আপনি?
— বলার সুযোগ পেলাম কই….

সিনথিয়ার ভেতর থেকে হাসি ফেঁটে পড়তে চায়। তারপর একটা চিন্তা মাথায় ভারী পাথরের মতো ঠাস করে লাগে। “এভাবেই কি জিসানের উপর এট‍্যাক হয়েছিলো?” প্রশ্নের উত্তর খোলা চোখে খুঁজে বেরায়। যদি তাই হয়! তাহলে এর সাথে আরোও কিছু প্রশ্ন জুড়ে যায়। কেনো জিসানের উপর এট‍্যাক হলো। এট‍্যাক হওয়া না হয় স্বাভাবিক। তবে ছয়টা কামড় কেনো দিলো। তাহলে কি তার খারাপ সময়টা ইরফাদের মনে দাগ কেটেছিলো। সে কি প্রতিশোধের নেশায় এই কাজ টা করলো?? আর প্রতিশোধ, রাগ, ক্ষোভ তো ভালোবাসা থেকেই আসে। ভালোবাসার মানুষের প্রতি আঘাত অপর পৃষ্ঠের মানুষ কখনোই সহ‍্য করতে পারে না। নাকি সে শুধু তার দায়িত্ব থেকেই এই কাজটা করলো। প্রশ্নেরা মৌমাছির মতো ঝাক বেঁধে তাড়া দেয় তাকে।

ইরফাদ ফুল স্পিডে গাড়ি চালায় ত্রিশ মিনিটের মধ‍্যে একটা সেইফ জোনে পৌছায়। নিছের মুখের মাস্ক খুলে ফেলে। গাড়িতে হলদেটে আলো জ্বলছে। মুখোশের আড়ালের মানুষটা বাইরে চলে আসে। পেশিবহুল টান টান দেহে আঁটষাট ভাবে লেগে আছে কালো রঙের টি-শার্ট। মেদহীন দীর্ঘদেহী মানুষটার ফোলানো হাতের পেশীর উপর স্লিভ শেষ হয়েছে। শক্ত গোলাকার হাতের কব্জিতে ঢিলেঢালা রুপালী শেকল। এলোমেলো হওয়া চুল গুলো আঙ্গুলি চালায় ইরফাদ।এতোক্ষণের পড়ে থাকা খোলসটা খুলে ছুড়ে মারে পেছনে। তখন-ই এতোক্ষণের খোলসের আড়ালে চাপা পড়া পারফিউমের ভেজা ভেজা নরম,কোমল স্নিগ্ধ সুভাস ধেয়ে আসে সিনথিয়ার দিকে।চোখ বন্ধ হয়ে যায় সিনথিয়ার।

–“ঘুমাচ্ছো কেনো?” কথাটি বলা মাত্রই আতকে ওঠে সিনথিয়া। অন‍্যের বাগানের ফুলের সুভাস নেওয়ার অপরাধে তার গর্দান যায় কিনা! সে তড়িঘড়ি করে বলে,
— না না! কই ঘুমাচ্ছি না তো….
— ভালোই তো জেগে থাকার অভ‍্যাস আছে!
তা সেদিন কি গাড়িতে ঘুমিয়েছিলে নাকি ড্রামা! মিস ড্রামাকুইন!
পর্বঃ২৯
সেদিনের স্মৃতিচারণ করে চুপসে যায় সিনথিয়া। লোকটা ওটাও বুঝে নিলো। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তো সত‍্যিই ঘুমিয়েছিলো। সে তৎক্ষণাৎ বলে,
— আমি যদি না ঘুমাতাম। আপনার সাথে সেদিন কি হয়েছিলো অবশ‍্যেই জানতাম। ঘুমিয়ে ছিলাম এটা সিউর।
— এবসলিটলি রাইট। আই নোউ তুমি ঘুমিয়েছিলে….
কথার আগামাথা বুঝতে পারে না সিনথিয়া। তার মানে কি বুঝাতে চাচ্ছে। “সে ঘুমাইনি তাও বললো আবার ঘুমিয়েছিলো তাও বললো। কাহিনী কি??” সবটা কি তার প্ল‍্যান করা? ইরফাদ দরজা ঠেলে বাইরে বের হয়।মেদহীন পেটের কাছে কুচকে থাকা টি-শার্ট হাত দিয়ে টেনে নামায়। ফোন কানে রেখে বলে,

— কয় মিনিট!
অপর পাশের উত্তর শুনেই ফোন কেটে দেয়। একমিনিটের মধ‍্যে আরেকটা গাড়ি পাশাপাশি থামে। ইরফাদ সিনথিয়ার ফোনটা নিয়ে যায়। ফোনের সকল ট্র‍্যাকিং সিস্টেম প্রথমে অফ করে। এরপর সবাই মিলে বড়সড় গাড়িতে বসে।
কোলের উপর তুলে রাখা ল‍্যাপটপ।কানে হেডফোন। সবকয়টি ডিভাইস সেট করে পূর্ণ মনোযোগে বসে আছে তনয়। অপেক্ষা কলের। পেছনের সিটে বসেছে ইরফাদ,জাবির আর তনয়। সমানের সীটে বসা সিনথিয়া পেছন দিকে ঘুরে ইরফাদের বলা কথা গুলো শুনছে।
— এট এনি কস্ট- কথা একমিনিট চালাতে হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী প্ল‍্যান, প্রয়োজনে কনভারসেশন চেঞ্জ হবে। ট‍্যাকনিক‍্যালি সব হ‍্যান্ডেল করতে হবে। ওকে?
সিনথিয়ার বুকটা ধুকধুক করছে। তবে ভয়ে না। কাজটা ঠিকঠাক করতে পারবে তো। এতোগুলো মানুষ তার মুখ পানে চেয়ে বসে আছে। মনে মনে সাহসের সঞ্চয় করে সে। পারবোনা বলতে কোনো কথা নেই! তাকে পারতে হবে। আর হবেই…..
রাত বারোটা ঊনষাট মিনিট। বুকের মধ‍্যে ধুক ধুক করছে। একটা মিনিট শেষ হওয়া মাত্র ফোন আসে। সিনথিয়ার এই প্রথম এতো নার্ভারস লাগছে। ঠিক ঠাক কথা বলতে পারবে তো? গলা শুকিয়ে আসে। যেনো বিসিএস পরীক্ষা। ইরফাদের চোখের ইশারা– “আমরা আছি।” ফোন ধরেই সালাম দেয় সিনথিয়া। কনভারসেশন লম্বা হতেই হবে। অন্তত এক মিনিট।
ওপাশের গলা গম্ভীর। প্রথম কথা,

— পাখি!
— জ্বি!ভাইয়া বলো…
— তোকে অনেক কথা বলা বাকি। তবে সব ফোনে বলা সম্ভব না। কাল যদি প্ল‍্যান সাকসেসফুল হয়। তোকে জানাবো আমাদের সুখী পরিবার কিভাবে জানোয়ারটা নষ্ট করেছে।
— কার কথা বলছো ভাইয়া?
— ইরফাদ সিনহা “এসপি।” সাথে সাথে সিনথিয়ার দুটো চোখ লাইটের মতো দ্বপ করে জ্বলে ওঠে । মাথার প্রতিটা নিউরণে ইরফাদ আর ইরফাদ। কি সত‍্যে লুকিয়ে আছে। কে কাকে গুটি করে খেলছে। তার ভাই নাকি ইরফাদ। নিলয়ের বলা ছোট্ট এই কথাটুকু ভেতরে জ্বালা ধরায়। সত‍্যে মিথ‍্যার যাচাই করতে পারে না মস্তিস্ক। দূরে কোথাও থেকে ছোড়া ভারী পাথরের ঢিলের মতো কথাটা মায়ায় আঘাত করে। ইরফাদের জন‍্যেই কি তার পরিবার ছিন্ন- বিচ্ছিন্ন? গলা ধরে আসে সিনথিয়ার। ভেজা গলায় বলে,
— কি বলছো?
— এ যুদ্ধ শুধু আমার না রে। এই যুদ্ধ তোরও। সর্বোচ্চ ট্রাই করবি…..মনে রাখিস!সবচেয়ে সহজে এই হিংস্র সিংহকে খাঁচায় তুলতে একমাত্র তুই পারিস।

সিনথিয়ার হেলদোল নেই। মাথায় প্রশ্নেরা ঝাঁক বেঁধে আছে। কথা বলতে ভুলে যায় সিনথিয়া। ওপাশ থেকে বলে,
— ওকে! আমি বেশীক্ষণ কথা বলতে পারবো না।প্ল‍্যান আগের মতোই। লোকেশন টেক্সট করবো সময় হলে।
ইরফাদ তনয়ের দিকে তাকায়। সে আঙ্গুলের ইশারায় বোঝায় আর দশ সেকেন্ড।ইরফাদ সিনথিয়ার চোখে চোখ রেখে ইশারা করে,” আর দশ সেকেন্ড কথা বলো।”
এদিকে সিনথিয়া আনমনা হয়ে অন‍্য জগতে চলে যায়। তার বাবা নেই, মা কোথায় জানা নেই।ভাইটাও ঠিকানাহীনদের মতো এখানে ওখানে পড়ে আছে। এর জন‍্যে ইরফাদ দায়ী। আর সে কি না সেই লোকটাকে ভালোবেসে ফেললো। ইরফাদ হাতের ইশারা দেয়। সিনথিয়ার কোনো হেলদোল নেই। ইরফাদ রাগে,ক্রোধে হাতের মুস্টি পাঁকিয়ে লেদারের সিটে শক্ত করে ঘুষি দেয়। সিনথিয়া সহ সবাই কিছুক্ষণের জন‍্যে কেঁপে ওঠে। ইরফাদের চোখ দুটোতে ভেসে ওঠা কথাগুলো তে বাস্তবে ফেরে সিনথিয়া। মনে পড়ে তাকে এক মিনিট কথা বলতেই হবে। সে তড়িঘড়ি করে ডাকে,

— ভাইয়া… ভাইয়া… শোনো… এসপি….
এর মধ‍্যেই টুটটুট শব্দ বেজে যায়। সিনথিয়া ভয়ে সিটিয়ে যায়। এসপি তারে আজ মুরগির মতো ছুলবে। হাত অযথাই কাঁপতে শুরু করে। ইরফাদ মাথা নিচু করে কয়েকবার আঙুলি চালায় মাথায়। রাগটা নিয়ন্ত্রণে আনা দরকার। জাবির পাশে থেকে ইরফাদকে বলে,
— কুল কুল…
আমি এটাই ভেবেছিলাম। এতোগুলো মানুষের মধ‍্যেই মিস সিনথিয়া পেরে উঠলো না। বাসায় থাকলে….
মুখের কথা কেড়ে নিয়ে সিনথিয়া বলে,
–ভাইয়া ফোন ব‍্যাক করবে..
ইরফাদ কোনো কথা বলে না। প্ল‍্যান ভেস্তে গেছে। এতোকিছুর পরও “ফেইল।” সিনথিয়া আবার আশ্বস্ত করে বলে,
— আমার মনে হয় ভাইয়া শুনেছে।ভাইয়া কল ব‍্যাক করতে পারে।
এই কথার কোনো ভিত্তি নেই। ইরফাদ গাড়ি থেকে নামে। এবার ফেরার পালা। ঠিক সে সময়েই সিনথিয়ার ফোন আবার বেজে ওঠে। সিনথিয়া বলে,

— ভাইয়া কল দিয়েছে। বললাম না দিবে…
ইরফাদ এইবার সিনথিয়ার পাশে গিয়ে বসে। সিনথিয়া ফোন আগের মতো লাউডে রেখে কথা বলে,
— কিছু বলছিলি?
— ভাইয়া! এসপির সাথে কিসের দন্দ আমাদের?
— বললাম তো বলবো…
— আমার যে ঘুম আসবে না। বাবাকে আমি দেখতে চাই। মা”কে দেখতে চাই। ওরা কি বেঁচে নেই?
— জানিনা।
— আমাদের সাথে এসপির কিসের দন্দ?
— এতো কিউরিসিটি ভালো না। বলছি তো বলবো…
— একটু বলো ভাইয়া।
ইরফাদ আঙ্গুলের ইশারায় দেখায় সেভেন মিনিটস। সিনথিয়া চোখের ইশারায় আশ্বস্ত করে।
–তোমাকে তো একটা কথা বলা হয়নি ভাইয়া। ইরফাদ স‍্যার! গতকাল বাসায় এসেছিলেন।
— কখন?
— গতকাল সকালে
–কেনো?
— আমাকে দেখতে…

— মোটেও না। ওর ফাঁদে পা” দিবি না ভুলেও। ও যে কি জিনিস তা ওর ফাঁদে যে পড়ে সেই জানে। ও কিছু মানুষের কাছে যেমন ফেরেশতা কিছু মানুষের জীবন ধ্বংসকারী।
ওপাশ থেকে বৃদ্ধাঙ্গুলে ইশারায় দেখানো হয়। প্ল‍্যান সাকসেস। লোকেশন ট্র‍্যাক করা গেছে। সিনথিয়া কথা বলার ঘোরে হঠাৎ গাড়ির একটা সুইচ টিপে দেয়। সাথে সাথে জোরালো শব্দে বেজে ওঠে গাড়ির সাইরেন। ওপাশ থেকে ভেসে আসে নিলয়ের উদ্বিগ্ন গলা,
— কিসের শব্দ হচ্ছে?
— কিছু না ভাইয়া! নিচ দিয়ে পুলিশের গাড়ি যাচ্ছে মনে হয়।
নিলয়ের সন্দেহ কাটেনা।তার উপর ফোন চেক করে দেখে টাইম ওয়ান মিনিট ওভার। সাথে সাথে ফোন কেটে দেয়। হঠাৎ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে ইরফাদ যদি বাসায় এসে থাকে তাহলে আগে কেনো বললো না সিনথিয়া? আজকেই কেনো? আবার হঠাৎ করে সাইরেন কেনো বেজে উঠলো? অজানা এক শঙ্কা মায়ায় বারবার বারি খায়।নিলয় অন‍্য একটা নাম্বারে কল দেয়,

— দেখতো সিনথিয়ার লোকেশন কোথায় সো করে?
— ওয়েট….

তনয় ল‍্যাপটপে চোখ রেখে বলে,
— লোকেশন ট্র‍্যাক করা গেছে। স্টেপ নিলে আজকেই ধরা যাবে।
ইরফাদ ভেবে বলে,– সময় খুব কম।
আমি সিনথিয়াকে ব‍্যাক দিয়ে আসছি। জাবির ফোর্স রেডি করুন।
বলেই সিনথিয়াকে নিয়ে বেরিয়ে যায় ইরফাদ। দ্রুত গতিতে গাড়ি চালায়।

নিলয় ফোনের অপেক্ষায় থাকে। তার সাহায্যকারীর ফোন ঢুকতেই বলে,
— লোকেশন পেয়েছিস??
— “না স‍্যার। মিস সিনথিয়াকে ট্র‍্যাক করা যাচ্ছে না।” ফোন রাখে নিলয়। সাথে সাথে অন‍্য জায়গায় ফোন দেয়।
— সিনথিয়া কোথায়??
— আমি কি করে বলবো।
— দেখ কোথায়?
–এতো রাতে সম্ভব না।
— দেখতেই হবে এ‍্যট এনি কস্ট।
আচ্ছা দেখছি। জিসান সরাসরি মুগ্ধকে কল দেয়। পরপর পাঁচটা কলের পর মুগ্ধ ফোন ধরে। তারপর বলে,
–শোন একটা বিপদে পড়েছি। আমাদের বাসায় গেস্ট আসছে। আজকের রাতটা তোর সাথে থাকতে চাই।
— তো আগে বলবা না?এখন তো অনেক রাত।
— আমি একটু আগে বাসায় ফিরলাম। আমি তো জানতাম না।
–আসো!
চুপিচুপি দরজা খুলে দেয় মুগ্ধ। জিসান বাসায় ঢুকে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকে। ওয়াশরুমের নাম করে সিনথিয়ার রুমে উঁকি দেয়।রুম ফাঁকা।নিউজ পৌঁছে দেয় নিলয় অবধি। ওপাশের ধমকের সুর,

— তোকে না বলছি খেয়াল রাখতে…
— আরে দিনের বেলা তো চোখে চোখেই রাখি। সুস্থ হওয়ার পর আমি একদিনও অফিস যাইনি। কে জানে ও রাতে বের হয়!
— বাইরে যা এখন। ও কখন ফেরে জানাবি। আর অবশ‍্যেই দেখবি সাথে কেউ আছে কি না। যদি থাকে তাহলে সাথে সাথে এট‍্যাক। কিডন‍্যাপ করবি….. এটাই হবে মাছের তেলে মাছ ভাজা।
— সিনথিয়া”কে চেনেন?আমি করবো কিডন‍্যাপ? আমার মতো পাঁচ ছয়জনকে একাই কুকোপাত করে দিবে।
— ডোন্ট প‍্যানিক। প্রফেশনাল লোক পাঠাচ্ছি।তবে প্ল‍্যান মিস করা যাবে না।

ইরফাদ নিস্তব্ধ, নিরবে গাড়ি চালায়। সিনথিয়াও নিরব। মনে অসংখ্য প্রশ্ন কিলবিল করছে। তবে প্রশ্ন করার সাহস তার নেই। ইরফাদ সব বুঝে নেয়। শুধু ধীর শান্ত গলায় বলে,
— গল্পের অপর পৃষ্ঠ না শুনে কখনো কাউকে জাজ করতে নেই।
সিনথিয়া পাশ ফিরে তাকায়। মনের মধ‍্যে প্রশ্ন,” কি বুঝাতে চাইছে ইরফাদ।”ঠিক তখন ই গাড়ি থামায় ইরফাদ। তারপর বলে,
— নামো!
সিনথিয়া রাস্তার মোরে নেমে যায়।এক মিনিটের রাস্তা সে একাই যেতে পারবে। ইরফাদ তারপরও বলে,
— পারবে?
সিনথিয়া মাথা নাড়ায়। মনমড়া সিনথিয়াকে দেখে কেনো যেনো মায়া লাগে ইরফাদের। সে পেছন ফিরে তাকায়। তারপর দু” আঙ্গুল ওষ্ঠাধরের সামনে ছড়িয়ে ইশারা করে বলে,”স্মাইল।”
সিনথিয়া হালকা ঠোঁট ছড়ায়।
মুখোশধারীদের মধ‍্যে একজন নিলয়কে কল দেয়,

–বস! একটা গাড়ি থেমেছে মোরে। মেয়েটি বোরখা পড়া।
— আর কেউ আছে?
— হুম! তবে গাড়িতে।
— ছেলে নাকি মেয়ে।
–ছেলে হবে। ভালোই উঁচু। তবে মাথায় হুডি দেয়া।
— আর ভাবতে হবে না। এট‍্যাক…
–ছেলেটিকেও?
— নাহ। শুধু সিনথিয়া….

পাগলা ঘোড়ার মতো ইরফাদ ছুটে যায় কাঙ্ক্ষিত লোকেশনের দিকে। সাথে আছে জাবির। আছে পুলিশ সদশ‍্য। হোটেলের পাঁচতলায় দুইশত একুশ নং কেবিন। হাতে রিভলবার, নিঃশব্দে পা ফেলে সবাই। প্রায় গুণে গুণে দশটা সিঁড়ি পার হয়। দরজার এপাশে ওপাশে চুপচাপ দাঁড়ায় সবাই। একজন দরজায় টোকা দেয়। কিন্তু ভিতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ পায় না। দরজার নব ধরতেই দরজা আপনাআপনি খুলে যায়। হাতে রিভলবার তাক করেই সাবধানে পা ফেলে সবাই। বিশাল আকার কক্ষে একটা বিছানা, একটা সোফা। তবে রুমটা শূন‍্য। বিছানার উপর একটা অডিও রেকোর্ডার। প্লে করতেই হাসির শব্দ।
নিস্তব্ধ নিঝুম রাত। নেই যান্ত্রিক কোনো শব্দ। গাছের পোকা গুলো কুটকুট করে শব্দ করছে। সিনথিয়া সোজা হাটতে থাকে।

এদিকে দুষ্টের দল ওত পেতে আছে রাস্তার দুধারে। সাথে জিসান। কালো বোরকার আড়ালের মানুষটাকে তারা চিনতে পারে না। তবে সামনের বাড়িটির পথ ধরতেই তারা বুঝে নেয় এটাই সিনথিয়া। সিনথিয়া পেছন ফেরে। ইরফাদ চলে গেছে। ফোনের স্ক্রিনে সময় দেখে নায়। দুইটা বাজে। এই রাতের আলো আধারির খেলার মাঝে মনের মধ‍্যে প্রশ্নের দানা। মনটা হাসফাস করছে। আবার পেছন থেকে অজানা ভয় হঠাৎ ই যেনো তাকে গিলে খাচ্ছে। দ্রুত পা চালায় সিনথিয়া। পেছন থেকে দ্রুত গতিতে ছুটে আসে কয়েকজোরা পায়ের শব্দে। বুক সাইরেন বাজিয়ে কেঁপে ওঠে। চোখ এদিক ওদিক দিশেহারা হয়ে ছুটাছুটি করে। পায়ের আওয়াজ কানে যেতেই পেছন ঘুরে সিনথিয়া। তার কিঞ্চিত দূরত্বে চারজন পুরুষ। শূন‍্য হাতে কাকে রেখে কাকে আঘাত করবে সে।

তৎক্ষণাৎ শূন‍্য পা তুলে একসারির ছয়জনকেই আঘাত করে। চারজন পিছিয়ে গেলে সে বাসার ভেতরে যাওয়ার জন‍্য দৌড় দেয়। হঠাৎ মনে পড়ে বাসার গেইট তালা দেয়া। সে চাইলেও এতো দ্রুত খুলতে পারবে না। জোড়ালো শব্দে চিৎকার দেয় সে। তবে সে চিৎকার মুখ থেকে বের হয় না। কারো বলিষ্ট হাতের আড়ালে চাপা পড়ে। হাতের কনুই দিয়ে বুকে আঘাত করে পেছনের মানুষটির। পা দিয়ে হাটুতে। তবে বলিষ্ঠ হাতের কাছে পেরে ওঠে না। চোখ ফেটে জল বের হতে চায়। না কথা বলতে পারে। না ছুটতে পারে। তবুও নিজের সর্বশক্তি দিয়ে কামড় দেয় হাতে। পেছন ঘুড়ে বসে। হাত মাটিতে রেখে মূহুর্তেই পা ঘুড়িয়ে সামনের লোকটিকে ফেলে দেয়। উঠে দাঁড়াতেই পেছন থেকে একজন শক্ত হাতে মুখে রুমাল চেপে ধরে। রুমালে থাকা মেডিসিনে চোখ বন্ধ হয়ে যায় আপনা আপনি।শরীর অসাড় হয়ে আসে। জ্ঞান হারানোর পূর্ব মূহুর্তে সিনথিয়ার বন্ধ চোখে বলিষ্ঠ,দীর্ঘদেহী সুদর্শন পুরুষের স্নিগ্ধ মুখটা ভেসে ওঠে। ,” সে কি কখনো জানবে সিনথিয়া নেই।”
অডিও ক্লিপ অন করে ইরফাদ,

— হিংস্র টাইগার। নিজেকে খুব চালাক মনে করিস?
কি ভেবেছিলি আমার পাতা জালে আমাকে ফাঁসাবি। কিন্তু তুই তো নিজেই ফেঁসে গেলি। ভেবে দেখ এখন মেয়েটিকে বাঁচাবি নাকি তুই নিজে বাঁচবি–
ইরফাদের তখন ই মাথায় আসে সিনথিয়াকে রাস্তার মোরে নামিয়ে দিয়ে এসেছে সে। একবার ফোন দিয়ে শোনা হয়নি। দূরে থেকে অজানা আশঙ্কা বাতাসের চেয়ে তীব্র গতিতে ছুটে আসে। মাথা ঝনঝন করে ওঠে। সহজ ভেবে সে তো কঠিন জালে ফেঁসে গেলো। ভেবেই তো দেখা হয়নি। ঐ সামান‍্য ছদ্মবেশ আজ কি সিনথিয়াকে রক্ষা করতে পারবে? পাথর শক্ত মন দুলে ওঠে। তার জন‍্যে মেয়েটিকে না জানি কোন বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। তাড়াতাড়ি করে ফোন বের করে ইরফাদ। তারপর কল দেয়। পরপর পাঁচটা কল তাকে এটাই বলে,

রং পর্ব ২৭

— নাম্বারটি বন্ধ আছে…….
রাতের আধারে জানালা দিয়ে আসা দমকা বাতাসে দোল খায় ইরফাদের চুল।যেনো কোনো এক ঝড়ের আভাস। সবার মধ‍্যে দাঁড়িয়ে হঠাৎ খুব শূন‍্য লাগে ইরফাদের…

রং পর্ব ২৯