রং পর্ব ৪৩

রং পর্ব ৪৩
তন্নী তনু

অন্ধকার জগতের কালো অধ‍্যায় টেনে ছিড়তে নিজেই সেদিন সেচ্ছায় রাফসানের হাতে ধরা দিতে উদ‍্যত হয়েছিলো ইরফাদ। তাই বিনা বাক‍্যে উঠে গিয়েছিলো জাহাজে। নিরব, নিস্তব্ধতা, নৈঃশব্দে কেটেছে কতোগুলো দিন। তবে ধারালো মস্তিষ্কের প্রজ্জ্বোলনে যে হিসাব ইরফাদ জাহাজে ওঠার আগেই কষে এসেছিলো তা কি কালো জগতের কেউ জানে? জানবে কখনো?

এবার তার ডানে বামে কেউ নয় নিজের বাবার দেখানো পথে পরিকল্পনা মোতাবেক হেঁটেছে সে। সশস্ত্র শক্তিধারী, ক্ষমতাশীল আইজিপি রুস্থান কবীরের সাথে একান্তে, নিরালায়, নিভৃতে যে পরিকল্পনা ছক কষে এসেছিলো, সে গোপন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে হলরুমে হুকুমের গোলাম হওয়া ছেলেগুলোকে দেখার পরেই। তীক্ষ্ম মস্তিষ্ক ধারী ইরফাদ যা করার সে রাতেই করে ফেলেছিলো। যখন অবলোকন করে তারা জাহাজে নেই, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছে গেছে। একদিকে নিরব থেকে প্রতিপক্ষের সামনে হার মেনে নিয়ে নিস্তব্ধ,নিরব অন‍্য দিকে খেলা চালিয়ে যাওয়া ডুয়েল গেমিং পারফর্মার ইরফাদ,সে রাতেই সিগন‍্যাল দিয়েছে আইজিপি রুস্থান কবিরকে। পায়ের ক‍্যাজুয়াল জুতায় গোপন আছে এক আস্ত ডিভাইস, সাথে ব্লুটুথ। উপর থেকে জুতা সারাদিন ধরে ঘাটাঘাটি করেও গোপন ডিভাইসের দাঁড় প্রান্তে যাওয়ার উপায় নেই।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

নিজের ক‍্যাজুয়াল জুতার সোল কেটে বসিয়েছে দু”ইঞ্চি সমান মোবাইল। উপরে বসিয়েছে স্টিলের পাত, যাতে জুতায় চাপ পড়লে ফোনটি নষ্ট না হয়। তার উপর থ্রি ডি পেইন্টিং যা আপাত দৃষ্টিতে জুতার গর্ত মনে হবে। থ্রি কোয়ার্টার প‍্যান্টের কোমরে আগে থেকেই ঢুকানো ছিলো কয়েকটি দেশের সীমকার্ড। প্রতিপক্ষের পরিকল্পনা যাই হোক উদ্দেশ‍্য একমাত্র ইরফাদ, সে উড়োচিঠি তো আগেই পেয়েছিলো সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। চট্টগ্রাম পানি পথ দিয়ে যাওয়া যায় এমন সকল দেশের সীমকার্ড সহ পুরো ইউরোপের সিমকার্ডের ব‍্যবস্থা করা ছিলো। লক্ষ্য তো সে আগেই ঠিক রেখেছে,ডুয়েল গেইমার ইরফাদ আসল কালপ্রিটের চোখের সামনে একসময় টুক করে পড়বে। মৃত‍্যু খেলা শুরু হয়েছে অনেক আগেই।

ইরফাদের তার সকল পরিকল্পনা সুসজ্জিতভাবে ধাপে ধাপে আড়ালে আড়ালে পরিচালনা করছিলো ঘাপটি মেরে। দেশীয় আন্ডার কভার এজেন্ট আর ইন্টারপোলের সাহায্য সকল সত‍্য উদঘাটনের পরিকল্পনা প্রতিফলনের সময় ছিলো আজ রাত বারোটার পরেই। ইন্টারপোলের পুলিশ সহ আন্ডার কভার এজেন্ট এর সদশ‍্য পুরো রিসোর্ট জুড়ে গত দিনেই ক‍্যাজুয়াল গেট আপ এ প্রবেশ করেছে। রাত বারোটায় একটা সিগন‍্যালেই ঝাপিয়ে পড়বে তারা। তার আগেই রাফি অঘটন ঘটিয়ে ফেললো……

বন্দি অবস্থায় রাফসান যখন বলে ওঠে,”রুম বাইরে থেকে বন্ধ।”ডাকাডাকি আর চেচামেচি তে যখন ফেটে যাচ্ছিলো দ্বিতীয় তলা ঠিক সেই মূহুর্তে দূনির্বার, অগ্নিমূর্তি ধারণকারী ইরফাদ শক্ত ক্ল‍্যাসিক ডিজাইনের এলুমিনিয়ামের রকিং চেয়ার ছুড়ে ভাঙে জানালার থাই গ্লাস। তার শীতল চোখ মূহুর্ত্তেই হয়ে উঠছিলো অগ্নিশিখা। তার তীক্ষ্ণ চোখের প্রজ্জ্বলনে, বলিষ্ট হাতের ধ্বংসলীলা যেনো লিখে দিচ্ছিলো সিনথিয়ার যদি ফুলের টোকা লাগে সব ভেঙ্গেচুড়ে দুমরে মুচরে একাকার করে দিবে নিমিষেই।মোটা রশি দিয়ে দড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেছে ইরফাদ,এরপর রাফসান, জাবির। বোন কে রক্ষায় রাফসান নিজেই প্রতিপক্ষ জাবির, ইরফাদের হাতে তুলে দিয়েছিলো রাইফেল, রিভলবার। অতঃপর……..
এই মূহুর্তে সিনথিয়াকে কাঁধে ঝুলিয়ে সিঁড়ি দিয়ে অগ্নীমূর্তি হয়ে নামছে ইরফাদ। জাবিরের রিভলবারের দাপটে দু”হাত উঁচু করে সিঁড়ি ভেঙে আন্ডারগ্রাউন্ডের দিকে হাঁটছে পিচাশদল। কানের ব্লুটুথখানা দপদপ করে জ্বলে ওঠে,সেই সিগন‍্যালে ইরফাদ নিজেও জ্বলে উঠে বলে,
— ফোর্স! রেডি?

সিঁড়ি যতো নিচের দিকে নেমে গেছে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে চার পাশ। ভ‍্যাপসা গন্ধটা গাঢ় হচ্ছে ক্রমেই। ইরফাদসহ পুরো একটা পুলিশ টিম নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। যাদের শরীরে বুলেটপ্রুফ জ‍্যাকেট, পায়ে বুট, হাতে রাইফেলসহ আরও প্রয়োজনীয় ব‍্যাগপত্র। বাকিদের তোলা হয়েছে জীপে। হাত পিছনে পিছমোড়া করে বাঁধা রাফি।রাফসান এখন কাঠের পুতুল। আন্ডারগ্রাউন্ডের ভারি পাল্লায় কড়া নাড়ে ইরফাদ। রাফসান কাতর গলায় বলে,
— ট্রাস্ট মি! এই মূহুর্তে আমি কোনো মিথ‍্যা বলছি না। আমার বোন কে আমার কাছে দিয়ে যা খুশি করা হোক। আন্ডারগ্রাউন্ডের লিডার সত‍্যিই ভয়ংকর। ছোটপাখিকে নিয়ে যাওয়া রিস্কি।

ইরফাদ এই মূহুর্তে দোটানায়। নিস্তেজ সিনথিয়াকে কাঁধে রেখে কতোক্ষণ লড়বে প্রতিপক্ষের সাথে। রাফসানকে বিশ্বাস করার অবকাশ নেই। একজন সাইকো যেকোনো সময় বিগড়ে যেতে পারে। পুলিশ টিমের অধিকাংশ ইরফাদের সাথেই। বাকি বাইরের একটা জীপে সাথে শত্রুপক্ষ। সেখানে কোনোভাবেই সিনথিয়াকে একা ছাড়া যায় না। আন্ডারগ্রাউন্ডের অন্ধকারাচ্ছন্ন দরজার দাড়প্রান্তে দাঁড়ানো রাফি আর রাফসান। পেছনে জাবির আর ইরফাদ। এর পেছনে আছে এন এস আই এর বিশ্বস্ত কর্মকর্তা সালমান সারাফি। যার নজরদারীতে ছিলো তরুন সমাজের কীর্তিকলাপ। ক্রিকেট বেটিং এর সমস্ত তথ‍্য সংগ্রহ তার উপরেই ন‍্যস্ত ছিলো। তিনি এখন স্বশরীরে উপস্থিত। ইরফাদ রাফির পেছনে রিভলবার ঠেকিয়ে তেজস্বী স্বরে বলে,

— ডাক!
সহসাই রাফি কাঠের পুতুলের মত দরজায় নক করে। গলায় ফুটে ওঠে গুপ্ত পাসওয়ার্ড। এরপরে
সহসাই স্বয়ংক্রিয় ভাবে দু”দিকে সরে যায় ভারি পাল্লার প্রবেশ দ্বার। সামনে দাঁড়ানো সাদা চামড়ার বলিষ্ঠ লম্বা দির্ঘদেহী লোকের গায়ে লেদার জ‍্যাকেট, পায়ে কালো বুট কাঁধে রাইফেল। প্রথম পলকে আকস্মিক, অপ্রত‍্যাশিতভাবে ইরফাদকে দরজায় দাঁড়িয়ে দেখে মুখে অমবস‍্যার আধার নামে প্রতিপক্ষের, সহসাই মস্তিষ্কের বিপদ সংকেতে শক্ত হাতে রাইফেল ইরফাদের দিকে তাক করে দির্ঘদেহী লোকটি।তামার ভারী ধাতুতে তৈরী বুলেট সালমান সারাফির হ‍্যান্ড গান থেকে নিঃশব্দে বেড়িয়ে চোখের পলক ফেলার আগেই ছোট্ট ছিদ্র হয়ে বেড়িয়ে যায় দির্ঘদেহী লোকটির চওড়া কপাল। চোখগুলো ঢ‍্যাপ ঢ‍্যাপ করে খোলা, যেনো নিজেও টের পায়নি তার জীবনের অন্তিম পর্ব ঘনিয়ে আসার। ধাপ করে শব্দ করে পড়ে যায় মসৃণ মেঝেতে। র*ক্ত ছিটকে পড়ে সাদা ধবধবে টাইলসে।

আপাদত রাস্তা ফাঁকা। রাফি, রাফসানকে সামনে রেখে পেছনে দাপিয়ে চলে ইরফাদ, জাবির, সারাফি। বাকিরা দরজায় দাঁড়িয়ে থাকে। আন্ডারগ্রাউন্ড বিশালাকার খোলা জায়গা নিয়ে নির্মিত। যেনো খেলার মাঠটিতে মেঘের আধারে ডুবুডুবু,ধূ ধূ মরুভূমির মতো শূন‍্য, মৃদু হলদে আলোয় ফাঁপা। অনেকটা দূরে একটা খোলা দরজা। সেদিকে নিঃশব্দে পা ফেলে পুলিশফোর্স,ধূ ধূ করা শূন‍্য জায়গা গা ছম ছমে ভাব।একই সাথে নিঃশব্দে ফেলা পায়ের শব্দের প্রতিধ্বনি, শ্বাসের শব্দ ফনা তোলা সাপের মতো হিসহিস করে উঠছে। পায়ের সাথে কান খাড়া,চোখ ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে সাবধানে পা ফেলছে ইরফাদ।

আকষ্মিক দরজা থেকে পাগলা ঘোড়ার মতো তীব্র বেগে ছুটে আসে একদল পিচাশ, যাদের চোখ মুখ কালো মুখোশে ঢাকা, হাতে আগ্নেয়াস্ত্র । যেনো পূর্ব প্রস্তুতি নেয়াই ছিলো। সারাফি আর জাবির সামনে, ইরফাদ পিছিয়ে দাঁড়ায়। অস্ত্রধারী পিচাস জানোয়ার গুলো হুমড়ি খেয়ে এগিয়ে আসে দলে দলে। পুলিশ সদশ‍্য রাইফেল, হ‍্যান্ডগান নিয়ে প্রস্তুতি নেয়। প্রতিপক্ষের আক্রমনে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। বিশালাকার আন্ডার গ্রাউন্ড এখন যুদ্ধ ক্ষেত্র। প্রতিপক্ষ কখনো তেড়ে আসছে। তাদের আগ্নায়াস্তের বুলেটের ঝড়ে পিছিয়ে যাচ্ছে পুলিশ সদস্য। প্রতিপক্ষ হিংস্র বাঘের ন‍্যয় লাফিয়ে মাংস খুবলে নিতে হানা দিচ্ছে।ইরফাদের কাঁধে নিস্তেজ সিনথিয়া ক্রমেই ভারি হচ্ছে, ট্রেইনিং এ ভারী বস্তা কাঁধে নিয়ে অস্ত্র চালানো তার পূর্ব অভিজ্ঞতা, একহাতে ইরফাদ চালাচ্ছে ভারি অস্ত্র।

পুলিশ সদশ‍্য মাথায় হেলমেট,স্নাইপার রাইফেল নিয়ে মাটিতে শায়িত কেউ কেউ। আগ্নেয়াস্ত্রের আগ্নেগিরির উত্তাপে ঝাঝড়া করে দিচ্ছে প্রতিপক্ষের বুক। তবে প্রতিপক্ষ থেমে নেই। পাগলা ঘোরার মতো হ্রেসা ধ্বনিতে ছুটে আসছে তারা। ইরফাদ এর সামনে মুখোশধারী হিংস্র জানোয়ারের ন‍্যায় হিসহিস করে দাঁড়ায় প্রতিপক্ষের একজন, যার রাইফেল এই মূহুর্তে বুলেট শূণ‍্য, সে চোখের পলকে বাতাসের গতিতে হিংস্র থাবায় ফেলে দেয় ইরফাদের আগ্নেয়াস্ত্র। অগ্নী, ধ্বংস রূপে ঝংকার তুলে এগিয়ে যায় ইরফাদ। প্রতিপক্ষের হাতের আঘাত গুলো এক হাতে ঠেকিয়ে যায়। প্রথমে বাম, পরে ডান এভাবেই ঐকহাতে প্রতিপক্ষের হাতের আঘাত গুলো শক্ত হাতে ঠেকায়। এরপর লৌহ শক্ত ইস্পাতের ন‍্যায় পা শূন‍্য তুলে কঠিন আঘাত করে প্রতিপক্ষের চোয়ালে। চোয়ালের হাড় যেনো মুচড়ে ভেঙে যায়। হিংস্র জানোয়ার কাত হয়ে পড়ে নিচে। রাফসান দূর থেকে দৌড়ে আসে ইরফাদের দিকে। তারপর চিন্তিত স্বরে বলে,

— আই রিকুয়েস্ট …. ছোট পাখিকে সেইফ জোনে রাখা হোক। আই সয়ার…. আমার বোনের কোনো ক্ষতি করবো না। ওকে পাশের রুমে রাখা হোক। লক দিয়ে চাবি চাইলেও দিবো,সব চাবি দিবো সব, চাইলে দরজায় পুলিশদের কেউ থাকুক।
ইরফাদ ভেবে দেখে বিষয়টা। এই হট্টোগোলে সিনথিয়ার রিস্ক আছে। তাই পাশের রুমে সিনথিয়াকে রাখা হয়। পুলিশের দুজন সদশ‍্য পাহারায় থাকে। ইরফাদ ফেরে আগের জায়গায়। পুলিশের গুলিতে ঝাঝড়া হয়ে যায় জানোয়ারদের বুক। পুলিশ সদশ‍্যেদের কেউ কেউ আহত হয়। তাদের একদল পুলিশ বাইরে নিয়ে জিপে রেখে আসে।

কিছু সময়ের ব‍্যবধানে আন্ডারগ্রাউন্ড উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রক্তে রঞ্জিত পাতাল যেনো মৃত‍্যুপুরি। প্রতিপক্ষ যেনো কম যায় না হিংস্র থেকে হিংস্র হয়ে তেড়ে আসে তারা। ইরফাদের বিধ্বংসী দাপট, অস্ত্রধারী তীক্ষ্ণ চোখে অবলোকন করে প্রতিপক্ষের প্রতিটা পদক্ষেপ। ঘূর্ণি ঝড়ের মতে ধেঁয়ে ধেঁয়ে এগিয়ে যায় বাতাসের গতিতে,এই ধারালো মস্তিষ্কের খেলোয়ারের হাতের রাইফেলের সীসার তৈরী বুলেট নিশানা বরাবর লাগে,র*ক্ত ফিনকি মেরে যেনো বৃষ্টির মতো ঝরে,চোখে মুখে র*ক্তে ছিটকে এসে লাগে। রক্তের তেতো স্বাদ জ্বিব্বায় লেগে থু ফেলছে ইরফাদ। হাতে মুখ মুছে এভাবেই এগিয়ে গিয়ে ইরফাদ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে। দরজা পেয়িয়ে রুমে যায় ইরফাদ, জাবির, সারাফি। সামনে রাফিকে আর রাফসানকে রেখে সত‍্য উদঘাটনে যায় তারা।

রুম শূন‍্য কেউ নেই। তাহলে ঐ ছেলেগুলো কোথায়। চিন্তা মাথায় নিয়ে পিছু হটে ইরফাদ। চোখের কার্ণিসে ধরা দেয় একটি জানালা। আন্ডার গ্রাউন্ডে জানালার কি প্রয়োজন। জানালার থাই গ্লাস সরিয়ে থমকে দাঁড়ায় ইরফাদ। একটি আস্ত অন্ধকারাচ্ছন্ন রুম। আন্দাজে সুইচ টিপে আলো জালায় ইরফাদ। নিচু হয়ে প্রবেশ করে সে রুমে। রুম ভর্তী শ খানেক ছেলে। যাদের হাত পিছমোড়া করে বাঁধা, মুখে স্কচটেপ লাগানো। নিরুপায় ছেলেগুলোর চোখ যেনো কোটর থেকে বেড়িয়া আসার উপক্রম। রক্তভেজা শরীরে এগিয়ে যায় ইরফাদ। ছেলেদের জায়গায় মেয়ে হলে আকাশ বাতাশ কাঁপিয়ে তুলতো র*ক্ত দেখে। ইরফাদ হাতের ইশারায় ভরসা দেয়। এরপর একে একে সবাইকে বের করে। পুলিশ ফোর্সের সাহায‍্য জীপে তোলা হয় তাদের।

ইরফাদ গোলকধাধার ঐ রুমে দাঁড়িয়ে চিন্তায় মশগুল। দু”টো বাংলাদেশী ছেলে এই রিসোর্ট পরিচালনা করে এটা মোটেও যুক্তিসংগত নয়। এসবের পেছনে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কারো হাত থাকবেই। চারকোণা ঘরটিতে ঘুরে ঘুরে দেখে ইরফাদ। রাফির পেছনে রিভলভার ঠেকিয়ে ধাক্কায় ইরফাদ। রাফসান নিজ থেকে তখন জানা সবটুকু বলে দেয়। দিয়ে দেয় চাবিও। এরপর অনুরোধ করে ফিরে যায়।সিনথিয়ার দরজার সামনে মূর্তির ন‍্যায় বসে, যেনো ধ‍্যান জ্ঞান শুধুই সিনথিয়া। রাফি রিভলবারের নলের ধাক্কায় এগিয়ে যায়। দেখিয়ে দেয় সেই গুপ্ত পথ। যে সুরঙ্গ গিয়ে ঠেকেছে গুপ্ত রুমে। সেখানে আছে রাত কাটানোর ব‍্যবস্থা।কেউ যদি কখনো আন্ডারগ্রাউন্ডে চলেও আসে রিসোর্টের লিডারকে ধরা সহজ হবে না। আর যদি গুপ্ত ঘরের নাগাল পেয়েও যায় সেক্ষেত্রে প্ল‍্যান বি রেডি।

সে রুমের সাথে আছে গুপ্ত সিঁড়ি। যে সিঁড়ি ধরে তৈরী হয়েছে সুউচ্চ ভবনের ছাদে ওঠার রাস্তা।কেউ আনডারগ্রাউন্ডে ডুকে পড়লে প্রাণ রক্ষার্তে এই সুড়ঙ্গ দিয়ে গুপ্ত সিঁড়ি দিয়ে উঠে যাবে ছাদে। সেখান থেকে সংকেত দিলেই হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধার করার ববস্থা করা আছে। তাই এই রিসোর্ট চালানোর লিডার সবর্দাই নাগালের বাইরে। ইরফাদ সুরঙ্গে প্রবেশ করে। টিপে টিপে চলে যায় সে গুপ্ত রুমে। বন্ধ দরজার ওপারের মানুষ ব‍্যাগপ‍্যাগ গুছিয়ে সিঁড়ির পথ ধরছে। সিসি ক‍্যামেরার ফুটেজ দেখছিলো এতোক্ষণ। বিপদ সংকেত দেখে হুরমুরিয়ে সিঁড়ির পথ ধরে।
ইরফাদ চাবি দিয়ে লক খোলে। এরপর ঢুকে যায় ঘরে।বাকি পুলিশরাও সে পথ-ই ধরে। কালপ্রিট তপ্তশ্বাস ফেলে দ্রুত পায়ে উপরে উঠছে। পিছু নিয়েছে ইরফাদ। তার চেয়ে বড় বড় লম্বা পা ফেলে সিঁড়ি ডিঙিয়ে চলছে ইরফাদ।
রাফসান পায়চারী করছে বোনের দরজায়। আর একটু পর পর দরজায় কোল ঘেঁষে সিনথিয়াকে বলছে — ছোটপাখি ঠিক আছিস?

ওপর দিক থেকে দূর্বল শরীরে সিনথিয়া বলছে –হুম। এর মধ‍্যেই ঘটে দূর্ঘটনা। কোথা থেকে হঠাৎ করে কয়েকটি মুখোশ ধারী লোক ঝাপিয়ে পড়ে রাফসানের উপর। রাফসান সহ বাকি দুজন পেরে ওঠেনা প্রতিপক্ষের সাথে। রাফসানের বিশ্বাসঘাতকতার জন‍্য তাকে মারতে মারতে আধমরা করে ফেলে। বাকি পুলিশ দুটোকেও বেধড়ক মার মেরে। সিনথিয়ার রুমের দরজার লক খুলে সিনথিয়া সহ রাফসানকে তুলে নিয়ে যায়।

ইরফাদ ধাওয়া করে এগিয়ে যাচ্ছে মুখোশধারী লোকটির দিকে। সিঁড়ি যেনো শেষ হচ্ছে না।রাফির পেছনে রিভলবার ঠেকিয়ে ছুটছে জাবির, সারাফিও। পাগলা ঘোরার মতো ছুটে ধাওয়া করছে মুখোশের আড়ালের লোকটিকে। অতঃপর মাথার উপর ভারী তক্তা তুলে ছাদে ‍যায় লোকটি। তারপর একটুকরো তক্তা ফেলে উপরে বসে থাকে।
বাকিরা ছাদে যেতে পারে না। শক্ত তক্তা নিচ থেকে ধাক্কায় বাকিরা। অনেকটা সময় পর একাই খুলে যায় ছাদের পথ।

একে একে ছাদে যায় ইরফাদ, জাবির সারাফি, বাকিরাও। ছাদের একপাশে দাঁড়ায় মুখোশধারী আর একপাশে ইরফাদসহ পুলিশ ফোর্স। সহসাই পৈশাচিক হাসিতে ফেটে পড়ে লোকটি। দেখতে শক্তিশালী, বিশালদেহী দানবের মতো,কালো কুচকুচে গায়ের রঙ, পরনে ঘুমের পূর্ব মূহুর্ত্তের প্রস্তুতি সাদা ধবধবে লুঙ্গি আর ফতুয়া, মুখে মাস্ক।তার পৈচাশিক হাসিতে ফেটে পড়ছে আকাশ বাতাস। রিভলভার তাক করে ইরফাদ। বাকিরাও নিজ নিজ জায়গা থেকে তাক করে রাইফেল। ঠিক ঐ মূহুর্তে পৈশাচিক হাসিতে ফেটে পড়ে দানবীয় লোকটি,
— কুল কুল!
তারপর আবার হো হো করে হাসে। এরপর বলে,

–আমি তো ভেবেছিলাম এসপি তীক্ষ্ম বুদ্ধি সম্পন্ন তুই যে এততো বোকা জানা ছিলো না। আমাকে ধরা এতো সহজ?
পৈচাশিক হাসির তালে তালে হাতের ইশারা করে লোকটি। ইরফাদ হাতের ইশারার দিকে তাকায়। সিনথিয়ার প্রতিপক্ষের হাতে বন্দি অতঃপর স্তব্ধতা, নৈঃশব্দতা…….
সিনথিয়ার নিস্তেজ শরীর, আধ খোলা চোখ, যে চোখে নেই কোনো শক্তি। মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে টেনে হিচড়ে ছ‍্যাচড়ে নিয়ে আসছে কয়েকজন পিচাশ। ইরফাদের রক্ত উঠে যায় মাথায়, চোয়াল শক্ত হয়, ফুলে ওঠে হাতের পেশী। মুখোশধারী বিশালদেহী লোকটি ইশারায় একটি ছেলে রিভলবার ছুড়ে । রিভলভার হাতে ধরে লোকটি তেরছা হেসে বলে,
— কখনো হার না মানা এসপি আজ তোকে হারতেই হবে। হ‍্যান্ডস আপ এভরিওয়ান। না হলে বুলেট মেরে শেষ করে দিবো সব।
ল‍্যাপটপের স্ক্রিনে গ্রাউন্ডফ্লোরের সব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চোখ বসিয়ে আজ সব দেখেছে রিসোর্টের লিডার। এরপরেই ছক কষে নিয়েছিলো। কোথায় হাত দিলে এসপি দূর্বল হবে সে জায়গাতেই হাত দিয়েছেন লিডার। মুখোশধারী বিশালদেহী লোকটি গলায় হুংকার দিয়ে বলে,

–হ‍্যান্ডস আপ!
এসপির নির্দেশে সকলেই তাদের অস্ত্র নিচে রাখে। প্রতিপক্ষ দলের পিচাশ গুলো ছুটে এসে তুলে নেয় অস্ত্র। তারপর ঠেকায় পুলিশ ফোর্সদের মাথায়। টেনে হিচড়ে ইরফাদকে নেয়া হয় পেছনের সারিতে। এরপর সিনথিয়াকে টেনে হিচড়ে দাঁড় করানো হয় ছাদের কোণায়। সিনথিয়াকে কেন্দ্র করে বৃত্তাকার অংশতে গোল করে লাগানো হয় আগুন। শরীরে ভর রাখতে না পাড়া সিনথিয়া বসে পড়ে আগুনের মাঝে। নিজের জন‍্য পুরো টিম সহ ইরফাদকে দূর্বল
হতে দেখে মনে গহীনে এক অদৃশ‍্য যন্ত্রণা ভিষণ জ্বালা ধরায়। এই মূহুর্তে তার হাতে, পায়ে বিন্দু পরিমাণ শক্তি নেই। তারজন‍্য পুরো টিম বিপদে। চোখ দুটো জ্বলছে। আগুনের উত্তাপে পুড়ছে শরীর। বিশালদেহী লোকটি নিজের মুখের কালো মাস্ক টেনে খোলে। আর উচ্ছাসে বলে,

–তোর জীবনের প্রথম হার আমার কাছে। মরেই তো জাবি সো মুখটা দেখে রাখ…..
আবার হো হো শব্দ তুলে হাসে। সহসাই সামনে থেকে সারাফি নিজের মুখের মাস্ক খোলে। তারপর তেরছা গলায় বলে,
— আমার সন্দেহ বৃথা যায়নি। চিনতে পেরছেন আমায়? মিস্টার তপন চোধুরি???
নিজের নাম অপরিচিত ছেলের মুখে শুনে চোখ গোল গোল করে তাকায় তপন চৌধুরি। সারাফি ওষ্ঠধর প্রসস্ত করে বলে,
— আমি সারাফি। সালমান সারাফি!!! পুরো নামটা বলতে হবে?

তপন চৌধুরী কিছুক্ষণের জন‍্যে থমকে যায়। অপরিচিত মুখটির পরিচিত নাম–প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকায় ভেতরে বিদ‍্যুৎ খেলে যায়। সিনথিয়া নিভু নিভু চোখে তাকায়। নিজের চোখে পরিচিত অবয়ব দেখে কৌতুহল বাড়ে। কিন্তু বলহীন শরীরে গলা থেকে একটি শব্দও বের হয় না। তপন চৌধুরী দূর্বলতা লুকিয়ে হেসে ওঠে। তারপর বলে,
–এই পৃথিবীর কাউকে চিনি না। এই মূহুর্তে তোরা হেরে গেছিস। হার মেনে নে।ছাদে টাইম বোম সেট করা আছে। দশ মিনিটের মধ‍্যে ব্লাস্ট। এর আগেই আমি আকাশে উড়াল দিবো। বাকি পাঁচ মিনিটে আমার সকল হাতিয়ার ছেলেগুলোও ফুরুৎ করে চলে যাবে। রিসোর্টের সকলকে ফায়ার এলার্ট দিয়ে বাইরে বের করা হয়েছে। নিচের প্রবেশদ্বার বন্ধ। বাকি সময়ে যদি লোহার দরজা ভেঙে সকলে বের হতে পারিস তাহলে মুক্তি যাহ….. নিজেদের মৃত‍্যুর খবর জেনে রাখ। আমার হাতেই হয়েছে তোদের প্রথম হার। আর কোনো ধারালো মস্তিষ্কের এসপি জন্মাবে না। কোনোদিন এই অন্ধকার জগতের আধার কাটাতে পারবে না।আর এই জু**য়া কে কেন্দ্র করে জমজমাট থাকবে দেশ। আসল খেলোয়ারের নাগাল কেউ পাবে না,কেউ না। যা তোর বাপ পারেনি তা তুই ও পারবি না।
এতোটুকু বলেই কানের ব্লুটুথ চেপে ধরে তপন চৌধুরী। এরপর আদেশ সূচক গলায় বলে,

— তিন মিটিটের মধ‍্যে রিসোর্টের ছাদ থেকে আমাকে রেসকিউ করবেন।
সিনথিয়া ঝিম ধরা মস্তিষ্ক, কাঁপা কাঁপা হাত ইশারা দেয়। তার যা হবে হোক। তার চিন্তা করতে হবে না। তবে সে অপ্রকাশিত কথা পৌছায় না।রাফসান হাঁটু ভেঙ্গে রক্তাক্ত শরীরে বসা। রাফিরও মাথায় ঠেকানো রিভলভার। পুরো পুলিশ টিম নিরব নিস্তব্ধ। গেইম পুরো উল্টে গেছে। এই মূহুর্ত্তে বোনের বিপদ, ইরফাদ বন্দি। অল্প সময়ের জন‍্যে মুক্তি পেলেও এই মরণ ফাঁদ থেকে তারা কোনো ভাবেই বের হতে পারবে না। নিজের পাপের জগতে বোনকে জড়িয়ে যে ভুল রাফসান করেছে তার লৌহশক্ত হৃদয় তাকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। রঙিন দুনিয়ার রঙে ভেসে কখন যে রং ( wrong) পথে পা বাড়িয়েছে নিজেও জানে না। রাফসান চোখ বন্ধ করে চিৎকার দিয়ে ইরফাদকে বলে,

–পৃথিবীতে আপন বলতে একটুকরো সুতোও নেই আমার। আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও আমার বোনকে বাঁচান! স‍্যার। আমার জানের বদৌলতে আমি ওকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই। ও সুন্দর পৃথিবীটা দেখুক…প্লিজ রিকুয়েস্ট…
ইরফাদ নিরুপায়, এই মূহুর্তে সত‍্যিই নিরুপায়। আকাশ কাঁপিয়ে বাতাসের ঝড় তুলে মূহুর্ত্তেই ছাদের উপরে দেখা যায় হেলিকপ্টার। প্রস্তুতি নেয় তপন চৌধূরি পালিয়ে যাওয়ার। মুখে তার রাজ‍্যজয়ী হাসি,শয়তানিতে যেনো নোবেলজয়ী সে। হেলিকপ্টার ক্রমেই নিচের দিকে নামছে। ফেলে দিচ্ছে দড়ি। এই মূহুর্তে তপন চৌধুরী চলে গেলে সব শেষ। এতো পরিকল্পনা সব জলে যাবে। ছাদের উপর আগুনে জ্বলসে মরতে হবে নতুবা ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়তে হবে। পুলিশটিম একে ওপরের দিকে আড় চোখে তাকাচ্ছে। তপন চৌধুরী সিনথিয়ার থেকে ক্ষাণিকটা দূরে সরে যায়। ঠিক ঐ সময় ইরফাদ কাঁধ দিয়ে ব্লুটুথ চেপে ধরে। স্বল্প সময়ে একটা খেলা খেলে দেয়। মুখে বলে,
–রেডি!

এক মিনিটে ছাদের উপর সৃষ্টি হয় ঘূর্ণিঝড়। পর পর দুটো অপরিচিত হেলিকপ্টার ঝড়ের গতিতে উড়ে, প্রতিপক্ষ হেলিকপ্টারকে যেনে ধাওয়া করে আসে। প্রতিপক্ষ হেলিকপ্টার পিছিয়ে যায়। তপন চৌধূরি বিস্ময়ে, চিন্তায় শক্ত ঢোক গেলে। ধারালো মস্তিষ্কের খেলোয়ারের দিকে না তাকিয়েই বুঝে নেয় তার মৃত‍্যুবান। অগ্নী, বিধ্বংসী, প্রলয় ঝড় তুলে ইরফাদ কেড়ে নেয় নিজের মাথায় ঠেকানো রিভলবার। হুংকার ছেড়ে বলে,
— জাবির রেডি!
ঝড়ের বেগে রিভলবার কেড়ে নিয়ে দৌঁড়ে মাঝ ছাদে এসে হামাগুড়ি দেয় জাবির। অগ্নিমমূর্তি হয়ে বাতাসের বেগে উরে আসা ইরফাদ জাবিরের পিঠে পা রেখে উড়ন্ত ঈগলের মতো উড়ে যায় আর চিৎকার দিয়ে বলে,
” স্ট‍্যান্ড আপ সিনথি।”

সিনথি সর্বশক্তি দিয়ে আধভাঙ্গা হয়ে দাঁড়ায়। আগুনের তপ্ত বলয়ের মাঝ থেকে উড়ন্ত চিলের মতো ছো মেরে কোমর জড়িয়ে সিনথিয়াকে শূন‍্য তুলে লাফিয়ে উঠে দাঁড়ায় ছাদের রেলিঙে। তপন চৌধুরী রিভলবার তাক করতেই নির্দয়, পাষান তর্জনিতে পর পর ট্রিগার চেপে দেয় ইরফাদ।তপন চোধূরী রিভলবার রাখা হাতে রক্ত ছলকে উঠে। ফেলে দেয় রিভলবার। অতঃপর থমথমে পরিবেশ….
এরপর বাকি খেলা জাবির, সারাফির উপর দিয়ে দূর্বলতার আসল কেন্দ্রবিন্দু সিনথিয়াকে নিয়ে সুউচ্চ বিল্ডিং থেকে রূপকথার মতো রাজকন‍্যাকে নিয়ে উড়াল দিয়ে ধরে হেলিকপ্টারের ফেলা দড়ি। তারপর আকাশ বাতাসের মধ‍্য শূন‍্যে দুলতে থাকে দুজন।

জাবির উঠে এসে তপন চৌধুরীর মাথায় রিভলবার ঠেকায়। বাকিরাও ঘুরে দাঁড়ায় লেগে যায় ক্ষুদ্র যুদ্ধ।এর পরেই বাকিরা তপন চৌধুরীর ইশারায় অস্ত্র ফেলে। আরেকটি হেলিকপ্টার নেমে আসে ছাদে। সকল অপরাধিদের তোলা হয় হেলিকপ্টারে।
আকাশে তখন গভীর রাত্রির ছায়া নেমে এসেছে, চাঁদের পাশে ছুটে চলেছে খন্ড খন্ড মেঘেরা, নিচে সাদা বালুর সৈকত, নীল পানির উচ্ছাস, দমকা হাওয়া বইছে।

রং পর্ব ৪২

আলো আধারির খেলায় মাতোয়ারা হৃদয়স্পর্সী শীতল পরিবেশে নিচে বিশাল নীলচে বালুঝড়া সৈকত, বিশাল বিশাল গাছপালাকে উপেক্ষা করে,উপরে তারায় সাজানো আকাশের মাঝামাঝিতে, বিশ্বাস, ভরসা আর ভালোবাসার ভেলায় চড়ে, বলিষ্ঠ হাতের বাঁধনে রূপকথার রাজকন‍্যার বেশে সিনথিয়া ইরফাদের উষ্ণ ওমে ভেসে বেড়াচ্ছে সীমাহীন আকাশ জুরে।

রং পর্ব ৪৪