রাগে অনুরাগে তুই আমার পর্ব ১৯

রাগে অনুরাগে তুই আমার পর্ব ১৯
আশু

সকাল সকাল সবাই টেবিলে বসে নাস্তা করছে। এদিকে ইযান সবার পড়ে টলতে টলতে আসে৷ সবার নজর ওর দিকে। যেই ছেলে সবসময় সবার আগে খাবার টেবিলে থাকে। সব বিষয়ে পারফেক্ট তার আজকে কি হলো?ইযান সবার নজর এড়িয়ে রুমি আর ইশার মাঝে বসে বলে,,”ভাবীরা এভাবে না তাকিয়ে খেতে দিন। ”
ইয়াসির পাশ থেকে ব্রেড নিতে নিতে বলে,,”নিজের বউ এনে নে পরের বউ দিয়ে কতদিন?”
ইযান কটমট করে বলে,,”দাও এনে আমি তোহ্ রাজি আছি” বলতে বলতে বাড়ির সবার দিকে নজর যায় দুভাইয়ের। ইশা বিরবির করে বলে,,”এ জন্মে সরম লজ্জা আর হবে না।।”

সবার খাওয়ায় মনযোগ দেখে ইযান রুমির কানের কাছে ফিসফিস করে বলে,,”,ভাবী তোমার বোনের আইডির নাম কি?”
ইযানের কথায় রুমি থতমত খেয়ে বলে,,”কেন?”
ইযান বলে,,”আরে বলো না ??”
রুমি বলে,,”রিমিই তোহ্”
ইযান বলে,,”জানো ভাবী কাল সারারাত তোমার চাশমিশ বোনের আইডি খুঁজে আমার এই হাল।
সে আসার সময় বলেছে তার আইডি পেলে ট্রিট দিবে,একটু হেল্প করবে?”
ইযানের কথায় রুমি কিছু বলবে কি?আয়ান বলে,,”বড় মা তোমার ছোট ছেলেও কিন্তু বড় হয়ে গিয়েছে। ”
ইযান ঘাবড়ে যায় আয়ান কি শুনে ফেলল নাকি। তাই তাড়াতাড়ি উঠে বলে,,”শেষ আমার”।
আয়ান বলে উঠে,,”দাঁড়া ভাই, এত তাড়াতাড়ি শেষ?”
ইযান তড়িঘড়ি বলে,,”না না হয়ে গেছে হয়ে গেছে।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ইযান যাওয়ামাত্র আয়ান হাসতে হাসতে বলে,,”তোমাদের ছেলে আমার শালির প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে কিন্তু!! ‘
ইয়াসির বলে,,”বাহ্ বাহ্ একজনের পর একজন ”
ইশা খাওয়া বাদ দিয়ে বলে,,”সত্যি ভাইয়া তুমি সিওর?”
আয়ান বলে,,”তোর ভাবীকে জিজ্ঞেস কর !!”
রুমি মুচকি হেসে বলে,,”হয়ত !!”

সন্ধ্যার দিকে ইয়াসির এসে দেখে ইশা সাজছে। ইয়াসির হুট করে ইশাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে,,,,”তা বউ কোথাও কি যাবেন নাকি?”
ইশা ঘুরে বলে,,,,”না না একটামাত্র জামাই রেখে কোথায় যাবো!!”
ইয়াসির বলে,,”তাহলে এবার তোহ্ আমার হানিমুন পাক্কা কালকেই যাবো আমি আর আয়ান তোহ্ সব রেডি করেই আসলাম।”

ইশা ইয়াসিরকে ছাড়িয়ে বলে,,”এটা ঠিক না!!”
ইয়াসরি দাঁতে দাঁত চেপে বলে,,”এবার বাহানা দিলে ইশার বাচ্চা!!!”
ইশা চোখ রাঙিয়ে বলে,,”কি করবে, কি করবে”?মি.ইয়াসির চৌধুরী?”
ইয়াসির মিনমিন করে বলে,,,,”কিছুই করবো না কারণ আমি তোহ্ জানি আমার বউ না করবে না”
ইশা চুল বাঁধতে বাঁধতে বলে,,”তুমি ভুল জানো। ইযান ভাইয়ার বিয়ে না হলে কোথায় যাবো না। সবাই একসাথে যাবো ডিসিশন ফাইনাল”

ইয়াসির চিল্লিয়ে বলে,,,”কিহহহহহহহ্!!!!!”
ঐপাশের রুম থেকে আয়ানও চেঁচাতে চেঁচাতে চলে এসে ইশাদের দরজায় নক করে। ইয়াসির বেরিয়ে বলে,,”কি ভাই তোর বোন আমার বুকে ছুড়ি মারলো তুই কোথায় মারবি এবার?”
আয়ান বলে,,”আমি ছুরির আঘাত খেয়েই আসলাম।”
ইয়াসির ভ্রুকুচকে বলে,,”তোর আবার কি হলো”
আয়ান আফসোসের সুরে বলে,,”বউ বলেছে তিন ভাই,তিন বউ হবে দুই বউ নিয়ে জমবে না। তাই হানিমুন ক্যান্সেল। ”
ইয়াসির কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে,,”জানিস এগুলোর পিছনে কার হাত??”
আয়ান আর ইয়াসির বেরিয়ে যায়।

ঐদিকে রুমি এসে বলে,,”তোর ভাই এমন পাগলামি করছে কেন?হানিমুন না করলে মনে হয় মরেই যাবে।”
ইশা বলে,,,”আমিও জানি না আমার জামাইকে আজকে পাবনায়ও এডমিট করতে পারি। বাদ দে তোহ্ আগে ইযান আর রিমির সেটিং কতদূর জানা। ”
রুমি বলে,,,,”ফোন নাম্বার দিলাম তোর কথায়, বুঝতে পারছি না কি হবে?”
ইশা বলে,,,,”টেনশন নিস না রিমিও হ্যাপি থাকবে ইযান ভাই কেমন তুই তোহ্ জানিস। কালকে ওদের ডেইট ফিক্সড এমনভাবে করবো সোজা কাজী অফিস।” এই বলে দুজন হাইফাইব করে। একজন নিজের ভাইকে আরেকজন নিজের বোনকে কট খাওয়ানোর ধান্দায় আছে।

ইযানের রুমে দরজায় আড়িপেতে ইয়াসির আয়ান দাঁড়িয়ে। এদিকে ইযান রিমির নাম্বারে কল লাগিয়ে কতক্ষণ যাবৎ পটানোর জন্য লেগেছে কে জানে!!
ইয়াসির বলে,,,,”কি ফিসফিস করছে বল তোহ্??”
আয়ান বলে,,,”জানি না নিজের বউ নেই আরেকজনের বউকে যত্তসব বদবুদ্ধি মেরে বসে আছে”।
তখন ইশা আর রিমি ওদের পেছনে দাঁড়িয়ে বলে,,”কি করছো তোমরা?? ”
ওরা দুজন তোহ্ ঘাবরে গিয়ে রুমি আর ইশার মুখ চেপে দূরে নিয়ে এসে বলে,,”এখনই ধরা পড়তাম ”
ইশা বলে,,”তোমাদের একটা খাসা প্লান দিতে এলাম’
ইয়াসির বলে,,”কাজ হবে তোহ্!!”
ইশা বলে,,,,”বিশ্বাস হয় না ঠিক আছে বললাম না”
ইয়াসির ইশার হাত ধরে আটকিয়ে বলে,,,”আরে না না বউ তুই বল।”
ইশা তারপর বলা শুরু করে। এরপর চারজন মিলে ইয়াহু বলে চেঁচিয়ে উঠে।

এদিকে ইযান,,,
“বিয়াইন সাহেবা আপনি কি ঝাল খান?”
“হুম কেন বলুন তো!!”
“তাই তোহ্ আপনার চোখ দুটো এতো ঝাল সেই কালকে তাকালাম ঝালে এখনো আমার বুক জ্বালাপালা করছে।”
“””বিয়াই ফ্লাটিং স্কিল কোন ইউনিভার্সিটি থেকে শিখেছেন? ”
“আরে কি যে বলো না। তোমাকে দেখলে ফ্লাটিং না সোজা বিয়ে করতে মন চায়”।
“তাই বুঝি?”
“হুম বিয়াইন সাহেবা। আচ্ছা বিয়াইন একটা প্রশ্ন করি?”
“করুন”
“আপনি এমন কিউট কেন?”
রিমি হাসতে হাসতে বলে,,,”মোম পাননি গলে যাবো!!”
ইযান বলে,,”গলবেন কেন বিয়াইন??আপনি তোহ্ আগুন তার উপর আপনার রূপের যা গরম আমিই গলে যাচ্ছি কেমন!!!!”

“ডক্টরা এমন শায়েরি জানে জানা ছিলো না”
“ডক্টরা সবই জানে বিয়াইন শুধু আপনার মনটা দিয়ে দেখুন একেবারে সার্জারি করে নিজের নাম বসিয়ে দিবো।”
“এতই সহজ রিমির মন পাওয়া”
“সহজ তোহ্ আমার মেডিকেলের কোনো সাবজেক্টই না তবুও কেমন কেমন পাশ করি। আপনার মন ও কেমন কেমন করে পেয়ে যেতে পারি।”
“মি.ইযান চৌধুরী অতি ভক্তি চুরের লক্ষ্মণ”
“চুরি বিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না পরো ধরা'”
“আপনি তোহ্ ধরা পড়ছেন”
“তার মানে আপনার মনটা চুরি করে নিয়েছি”
“তা কখন বললাম”
“চুরের আখ্যায় দিলেন তাই ধরে নিলাম”

“আপনিিিিিিি”
“কি আমি কি? ”
“আপনার ভালো না”
“বাট তুমি তোহ্ সেই ভালো'”
“ফোন রাখুন”
“কালকে দেখা করবে আগে বলো”
“হুম করলাম’
“কোথায়? ”
“টেক্সটে জানাবো বিকালে রেডি থাকবেন”
“ওকেই জানেমান””
“”কিহহহ্??”
“মানে বিয়াইন সাহেবাাা”
“হুম বাই”
“আচ্ছা”।

রাগে অনুরাগে তুই আমার পর্ব ১৮

____তারপর ফোন রেখে ইযান খুশির ঠেলায় দেব দার গান অন করে লাফানো শুরু করে।
গান ছিল:
“এই বুকের মাঝে আগুন জ্বলে
নিভে নারে জ্বল ছিটালে
কবে দিমু গলায় মালারে
আরে কবে কবে কবে আইবে পালারে
আরে দিমু গলায় মালারে মালারে মালারে
কবে আইবে আমার পালারে
কবে দিমু গলায় মালারে মালারে মালারে”

রাগে অনুরাগে তুই আমার শেষ পর্ব