রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৫৬

রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৫৬
সিমরান মিমি

বিরক্তিকর আধুনিক যন্ত্রটি পরপর দুবার বাজলো।অথচ দরজা খোলার কোনো নাম নেই।কেউই আসছে না সদর দরজা খুলতে।আশ্চর্য! এই ছুটির দিনেও সাত সকালে কে এলো আবার বিরক্ত করতে?নিশ্চয়ই রাজনৈতিক ছেলেপেলে।হতেই পারে।আলগোছে পা গুছিয়ে সোফায় বসলো প্রেমা।রিমোট দিয়ে টিভিটা অফ করে সেখানেই বসে রইলো।নাহ!কারো আসার নাম নেই।হুট করেই শোনা গেল ঝাঁঝালো আওয়াজ।যেটার উৎপত্তিস্থল আপাতত রান্নাঘরে।মা চিৎকার করে তার উদ্দেশ্যে বলছে,
_”এইই বেলের শব্দ কি তোর কানে যাচ্ছে না?দরজা খোল।”

ধ্যাঁত!বিরক্ত হয়ে সোফা থেকে উঠে বসলো।ওড়না টা সুন্দর করে গায়ে জড়িয়ে পা দমাতে দমাতে দরজার দিকে গেল।ছিটকিনি খুলে কপাট টা মেলতেই চোখ দুটো ছানাবড়া হয়ে গেল।মুখে নেই কোনো শব্দ।অবাকের সর্বোচ্চে পৌছে কিছুক্ষণ ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে রইলো।এই মুহুর্তে যে এই মানুষ দুটোকে তাদের বাড়ির আশেপাশেও কখনো দেখবে সেটা ভাবনার অতীত।নিজেকে হুশে ফিরিয়ে ঠোঁট এলিয়ে অনুগ্রহ সূচক হাসলো।মুহুর্তেই গালের মাঝখান টাতে চমৎকার এক টোল পড়লো।হাসিটা নজর এড়ালো না স্পর্শীর।তারাও সামান্য হাসলো।প্রেমা সম্মানের সহিত মাথা হেলিয়ে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

_”আসুন না, ভেতরে আসুন।”
এরপর সোফার কাছে যেতেই পুণরায় ইশারা করে বললো,
_”এখানে বসুন।আমি সবাইকে ডাকছি।”
কিন্তু ডাকার আর সূযোগ পেল না সে।এরমধ্যেই পুণরায় এক প্রশ্ন চলে আসলো তার উদ্দেশ্যে। এবারেও মা ই প্রশ্ন ছুঁড়েছে।পানি পড়ার শব্দ স্পষ্ট পাওয়া যাচ্ছে।নিশ্চয়ই কিছু ধোয়া-মোছা করছে।প্রেমা চিৎকার করলো না।আলতো পায়ে এগিয়ে গেল রান্নাঘরের দিকে।মায়ের কাছাকাছি গিয়ে চাপাস্বরে বললো,
_”আম্মু,সরদার বাড়ি থেকে লোক আসছে।ভাবির মা আর বড় বোন।”

চমকে তাকালো পিয়াশা।নুয়ে নুয়ে কাজ করা বাঁকা মেরুদন্ড টাকে মুহুর্তেই টনটন করে সোজা করে ফেললো।দ্রুত ভেঁজা হাত মুছলো আঁচলে। ওপাশে মাংস ধুতে থাকা কাজের মধ্যবয়স্কা মহিলাকে ডেকে চাপাস্বরে বললো,
_”ভাবি আপাতত এসব রাখেন।আপনি একটু তাড়াতাড়ি নুডুলস আর চা টা চুলায় বসান।প্রেমা তুই ফল কাট।আমি আসছি।”
এরপর ত্রস্ত পায়ে এগিয়ে গেলো ড্রয়িং রুমের দিকে।চমৎকার ভাবে হেসে বললেন,
_”আরে বেয়ান যে।কেমন আছেন?আপনি যে আসবেন সেটা আমাকে আর্শি এখন পর্যন্ত জানায় ওনি।কি একটা অবস্থা বলুন তো।”

পিপাশার অসস্তি লাগছে ভীষণ।ভদ্রতাসূচক হেসে বললো,
_”আরে না।ও নিজেই জানতো না আমি আসবো।”
থেমে,
“আপনারা সবাই ভালো আছেন তো?”
_”জ্বী, এইতো আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ ভালো রাখছে।সামনে নাতি নাতনি আসবে।আমার আর সুখের কমতি কি?”দাঁড়ান আমি আর্শিকে ডেকে দিচ্ছি।”
কথাটুকু শেষ করে একটুও সময় ব্যয় করলো না।বরংচ কন্ঠে জোর এনে দোতলার দিকে তাকিয়ে আর্শিকে ডাকলো।_”এই আর্শি।নিচে আসো তাড়াতাড়ি। দেখে যাও কে আসছে।তোমার বোন আর মা আসছে।”

থমকে গেল আর্শি।কথাগুলো শ্রবণ হতেই শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল।একটু আগেই বমি করেছে।এরপর কোনোমতে বিশ্রাম নিচ্ছিলো।পাভেল নিজেই পাশে বসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো।মা-বোনের কথা শুনতেই বিছানা থেকে লাফিয়ে নামলো।সমস্ত অসুস্থতাকে জলাঞ্জলি দিয়ে ছুটলো একতলার দিকে।পাভেল নিজেও অবাক।হুট করে এ বাড়িতে আসার কোনো গুরুত্বপূর্ণ কারন খূঁজে পাচ্ছে না।জোরপায়ে সেও নেমে গেল পিছু পিছু।
এটা যে শশুরবাড়ি অথবা আর্শি যে প্রেগন্যান্ট এটা যেন মাথা থেকেই গায়েব হয়ে গেছে।উত্তাল গতিতে ছুটে এসে হামলে পড়লো মায়ের বুকে।

চুপটি করে রইলো অনেকক্ষণ।পিপাশা সামলাতে পারলো না।কেঁদে দিলো।বেশ অনেকক্ষণ ওভাবে জড়িয়ে রাখার পর ফোঁপাতে ফোঁপাতে মাথা তুললো। বোনের দিকে তাকিয়েও আবার মাথা নিচু করলো।স্পর্শী এখনো আর্শির পেটের দিকে তাকিয়ে আছে।তার মনে প্রশ্নের পর প্রশ্ন।আর এসব যেইসেই প্রশ্ন না।খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।এই যেমন এই টুকু পেট,এরমধ্যে নাকি আরো একটা মানুষ।কি আশ্চর্য! তাছাড়া বাচ্চা হওয়ার পর এই মেয়ে সামলাবে কি করে?ভাবতেই পুরনো এক মজার কাহিনি মনে পড়লো।ঘটনাটা সাভারে থাকাকালীন।মা বাড়িতে সুজি আর দুধের গুড়োর প্যাকেট রাখতেই পারতো না আর্শির কারনে।কেননা সে লুকিয়ে লুকিয়ে সুজি,দুধের গুড়া আর চিনি মিলিয়ে রান্না করে বাচ্চাদের মতন খেতো।

হাসি পেল স্পর্শীর।এই মেয়ের বাচ্চা কি আদৌ সুজি বা গুড়ো দুধ খেয়ে বাঁচতে পারবে?যদি বাচ্চাকে খাওয়ানোর নাম করে আর্শি নিজেই খেয়ে নেয়।তাহলে?
_”একি, তুমি হাসছো কেন?”
আর্শির কথায় চমকে বাস্তবে ফিরলো স্পর্শী।আশেপাশে পর্যবেক্ষণ করে বললো,
_”তোর জামাইকে ডাক।”
পেটের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠলো পাভেলের।আপনা আপনি ডান হাত টা গালের উপর চলে গেল।চোখ মুখ বিকৃত করে মনে মনে বললো,”একি!আমাকে ডাকছে কেন?আমাকে দিয়ে কি দরকার?যদি থাপ্পড় -টাপ্পড় মারে তাহলে মানসম্মান কি আদৌ থাকবে?”

পরক্ষণেই নিজেকে বুঝ দিলো।মাথা নাড়িয়ে বিরবির করে বললো , “না না।আমি যথেষ্ট দুরত্ব নিয়ে দাঁড়াবো।এই মেয়ের হাতের নাগালে দাঁড়ানো মানে বারো নাম্বার সতর্ক সংকেত।”
পাভেল এগিয়ে গিয়ে মায়ের পেছনে দাঁড়ালো।মিনমিনে কন্ঠে শাশুড়ীর দিকে তাকিয়ে বললো,
_”আসসালামু আলাইকুম!”
সালামের জবার দিলো পিপাশা।সাথে সাথেই গলা পরিস্কার করে নিলো স্পর্শী।কন্ঠে গম্ভীরতা এনে বললো,
_”আমরা আর্শিকে নিয়ে যাচ্ছি।”
পিলে চমকে উঠলো পাভেলের।চোখ দুটো ছানাবড়া হয়ে গেল মুহুর্তেই। আর্শির দিকে তাকিয়ে স্পর্শীর কথাটুকু আর সম্পুর্ন করতে দিলো না।বললো,

_”আরে আজব!আমার বউ আপনি কেন নিয়ে যাবেন?”
ভ্রুঁ কুঁচকে একদৃষ্টে তাকালো আর্শি।পাভেল এক কদম পিছু হটে দাঁড়ালো।একমুহূর্তে সে একদম বিপদসীমানার বাইরে।স্পর্শী কন্ঠে কাঠিন্যতা এনে প্রশ্ন ছুঁড়ে মারলো।বললো,
“কেন?তোমার সাথে বিয়ে হয়েছে দেখে আমার বোন বাড়ি যেতে পারবে না?ও ওর মা-বোনের কাছে কিছুদিন থাকতে পারবে না?”
সামান্য ঘাবড়ালো পিয়াশা।এই মেয়ের রাগ গতবারই আন্দাজ করে ফেলেছে সে।সবকিছু সামলাতে আলতো হেসে বললো,

_”আরে না না।যেতে পারবে না কেন?অবশ্যই যাবে।”
এ পর্যায়ে পিয়াশার দিকে তাকালো স্পর্শী।শান্ত কন্ঠে বিনয়ের সাথে বললো,
_”দেখুন আন্টি।ওর বয়স কম।আবেগের বশে তখন পালিয়ে আসলেও প্রতিনিয়ত আমাদের কাছে থাকার জন্য ছটফট করছে।এরমধ্যে আবার অসুস্থ হলো।খেতে পারছে না,ঘুমাতে পারছে না,বমি করছে,পেটে ব্যথা হচ্ছে। ও ভীষণ ই অবুঝ।সবটা সামলাতে পারবে না।কিছুদিন আমাদের কাছে থাকুক।রিসেন্ট সে সমস্যা গুলো এগুলো তো আর পুরো সময় থাকবে না।এখন কটা দিন মায়ের কাছে থাকুক।একটু সুস্থ হলে আবার না হয় আসবে।”
মাথা চুলকালো পাভেল।কি একটা অবস্থা!তাকে কেউ দামই দিচ্ছে না।একা মেয়েকে নিয়ে যাবে আদর আপ্যায়নের জন্য।অথচ জামাই যেন নর্দমার কিট।তাকে একবার সাধলোও না।মুখ ফসকে বলেই ফেললো,

_”শুধু কি মেয়ে নিবেন?মেয়ে জামাই নিবেন না?”
চোখ দুটো ছোট ছোট করে তাকালো স্পর্শী।গম্ভীর কন্ঠে বললো,
_”মেয়ে জামাই হিসেবে জামাই আদর পাওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি কি রেখেছেন আপনারা?অবস্থা স্বাভাবিক হলে পরেও যাওয়া যাবে।”

এরইমধ্যে নাস্তা চলে এলো।প্রেমা, পিয়াশা আর মহিলা মিলে স্পর্শীদের নাস্তা দিচ্ছে।লজ্জায় হাঁসফাঁস করতে লাগলেন পিপাসা।গতবার সেধে সেধে তাদের কাছে যাওয়ার পর আদর আপ্যায়ন তো দূর বরং অপমান করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।সেখানে কোন মুখে এই নাস্তা মুখে দিবেন তিনি?কিন্তু প্রকাশ করলেন না।সামান্য একটু মিষ্টি মুখে নিয়ে তাদের সাথে কথা বলার আড্ডায় মেতে উঠলেন।
_”এইই দরজা খোল।তাড়াতাড়ি! ”

বিরক্ত হলো পরশ।দাঁতে দাঁত চেপে বিছানা থেকে উঠে বসলো।ঘুম কাঁটেনি এখনো।রাগ নিয়ে দরজা খুলতেই পাভেল হুড়মুড় করে ভেতরে ঢুকলো।সোজা এগিয়ে বিছানায় বসে পড়লো।গিজগিজ করতে করতে বললো,
_”ঘুমা।তুই জন্মের মতো ঘুমা।ওদিকে যে তোর বউ আমার বউকে নিয়ে যাচ্ছে সেদিকে খেয়াল রাখার দরকার নেই।”

_”হোয়াট দ্যা হেল!সকাল সকাল কি খেয়েছিস।বিরক্ত করিস না ঘুমাতে দে।”
বলেই পুণরায় বিছানায় উঠলো।পাভেল জোর হাতে টেনে উঠালো।বললো,
_”তুই পড়ে ঘুমা।আগে তোর ওই স্পর্শীয়াকে বল আর্শিকে নিলে আমাকেও নিতে হবে।”
এপর্যায়ে হুশ ফিরলো পরশের।ভ্রুঁ কুঁচকে বললো,
_”আর্শিকে নিয়ে যাচ্ছে মানে?কোথা থেকে নিচ্ছে?আর স্পর্শীয়া ই বা কোথায়?”
মাথা নাড়িয়ে নিচের দিকে ইশারা করলো পাভেল।চমকে উঠলো পরশ।অবিশ্বাসের জের ধরে বললো,
_”হোয়াট!!ও নিচে মানে?কখন এসেছে?”
_”অনেকক্ষণ আগে।এক্ষুণি যাবে আর্শিকে নিয়ে।”
রাগে সারা শরীর গিজগিজ করে উঠলো পরশের।পাভেলের গলা টিপে ধরে বিছানায় নুইয়ে ধরলো।এরপর দ্রুত রুম থেকে নিচে উঁকি মারলো।দাঁতে দাঁত চেপে ওয়াশরুমে যেতে যেতে বললো,
_”হারামির বা’চ্চা।তুই মাত্র জানাচ্ছিস আমাকে।তাও যাওয়ার সময়।তোকে তো পরে দেখছি আমি।”

আর্শির ব্যাগপত্র গোছানো শেষ হয়েছে ইতোমধ্যে।পিয়াশা বেগম ভীষণ রাগ করেছেন।তার ইচ্ছা কম হলেও দুপুরের খাবার টা খেয়ে যেতে হবে।কিন্তু স্পর্শীর সাথে পেরে ওঠেন নি।আর্শি চারদিকে তাকাচ্ছে আর পাভেল কে খুঁজছে।কিন্তু তার টিকিটাও দেখা যাচ্ছে না।একে একে ব্যাগ পত্র নিয়ে ড্রয়িং রুমে হাজির হলো সবাই।এরই মধ্যে দোতলা থেকে গম্ভীর কন্ঠে আওয়াজ এলো।

_”আর্শিকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো তুমি?”
চমকে পেছনে তাকালো স্পর্শী।এরইমধ্যে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসছে দুভাই।স্পর্শী অগোচরে হাসলো।এরপর পরশের উদ্দেশ্যে বললো,
_”নতুন করে বিয়ে দিতে নিয়ে যাচ্ছি।আপনার ভাইকে পছন্দ হয়নি।”
চোখ দুটো বড় বড় করে তাকালো পাভেল।আর্শি নিজেও খানিকটা চমকে গেছে।উপস্থিত সকলের এমন থমথমে অবস্থা দেখে হেসে দিলো স্পর্শী।ভ্রুঁ উঁচিয়ে বললো,
_”ওহহো!বেয়াই সাহেব।আপনার বয়স টাই শুধু চল্লিশ পেরিয়েছে কিন্তু বুদ্ধিসুদ্ধি বাড়ে নি।আমি মশকরা করছিলাম।
চোখ দুটো কটমট করে তাকালো পরশ। কিছু বলতে গিয়ে চুপ করে গেলো।পিয়াশা অভিমান জড়িত গলায় বললো,
_”দেখনা।এই প্রথম আত্মীয় বাড়িতে এলো।অথচ দুপুরের খাবার টা পর্যন্ত খাওয়াতে পারলাম না।এর আগেই চলে যাচ্ছে।”

স্পর্শী আলতো হেসে পিয়াশার হাত ধরলো।মুঠোতে নিয়ে বললো,
_”দেখুন আন্টি।আপনি অবশ্যই পরিস্থিতিটা বুঝবেন।আংকেল বলুন বা আব্বুকে বলুন এরা প্রত্যেকেই এখনো সম্পর্ক টা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে।সবটা ঠিক হোক,তারপর না হয় বেড়ানো যাবে।”
অতিথিদের এগিয়ে দিতে একদম গেট পর্যন্ত গেল সবাই।পাভেল আর্শির হাত দুটো ধরে আদুরে কন্ঠে বললো,
_”সাবধানে থাকবে।আস্তে আস্তে হাঁটবে।সময় মতো খাবে।বেশী খারাপ লাগলে আমাকে ফোন করবে।আমি গিয়ে নিয়ে আসবো।আর তোমার আপুর থেকে একশো হাত দূরে থাকবে।ওর ছোঁয়াও যেন আমার বাচ্চার গায়ে না লাগে।আমি চাই আমার বাচ্চা আমার মতোই শান্তশিষ্ট হোক।”
স্পষ্টই শুনলো স্পর্শী।অবশ্য তাকে শোনানোর জন্যই জোরে জোরে বলেছে।আর্শিকে গাড়িতে উঠিয়ে বসাতে বসাতে বললো,

_”আমিও চাই আপনার বাচ্চা যেন আপনার মতোই হয়।আর আপনার মতোই যেন বাপের নাক ডুবিয়ে অন্য আরেকজনের হাত ধরে পালিয়ে বিয়ে করে।”
গাড়ি স্টার্ট করলো ড্রাইভার।স্পর্শী বসতে বসতেই এক ঝলক পরশের দিকে তাকালো।মলিন দৃষ্টি ছুড়ে দিয়ে পুনরায় চোখ সরিয়ে নিলো।পরশ চোখ বন্ধ করে নিলো।মনে মনে আওড়ালো,”আর দেরি নয়।এইতো আরেকটু।আরেকটু সময় অতিবাহিত হলেই তোমায় দলিল করে নিবো।আরেকটু অপেক্ষা।”
_”কিরে চল।”
মায়ের কথা শ্রবণ হতেই থতমত খেয়ে গেল পরশ।আচমকাই আলতো করে কাঁধে মাথা রাখলো।ইনিয়েবিনিয়ে বললো,

_”মেয়েটাকে কেমন লাগে?”
_”কোন মেয়ে?”
_”ধুর!স্পর্শীয়ার কথা বলছিলাম।কেমন লাগে ওকে?”
থমকে গেলো পিয়াশা।চিৎকার করে উঠে বললো,
_”আল্লাহ!এই মেয়ে কেন?আর কোনো মেয়ে নেই নাকি দেশে?”
বিরক্ত হলো পরশ।বললো,

_”উঁহু!কেমন লাগে সেটা বলো।কেন মেয়েটা কি তোমার অপছন্দের?আমার সাথে মানাবে না?”
_”না খারাপ নয়।চেহারা টা ভীষণ মিষ্টি।সব দিক দিয়েই ভালো।দুই ছেলের বউ বোন হলে সংসারে অশান্তি হবে না।কিন্তু ওতো ভীষণ ঝগড়ুটে,রাগী।আমি কি ওর সাথে ঝগড়ায় পারবো?”
_”ওহহো!তুমি এই চিন্তা কেন করছো?আমি আছি তো।নিজেকে কেন একা ভাবছো?ঝগড়া হলে আমি তোমার পক্ষই নিবো।ও একা পারবে না।নো টেনশন!আমাদের দলে প্রেমা আছে,পাভেল ও আছে।এমনকি আমি বললে আর্শিও আমাদের দলেই থাকবে।স্পর্শীয়া সরদার একা কিছুতেই জিতবে না।”
থেমে,

রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৫৫

_”একটু আব্বুর কানে কথাটা তুলে দিও।আর এটাও বলবা যে ‘মেয়ে এটাই ফাইনাল।সিলেক্ট করলেই পরশ বিয়ে করবে।না হলে আজীবনে বড় ছেলের বউ দেখা থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে।’

রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৫৭