রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৬১
সিমরান মিমি
ক্রোধানলে দগ্ধ হয়ে ফোন টাকে পকেটে ভরলো। হাঁক ছেড়ে পরপর দুবার পাভেল কে ডাকতেই সে ছুটে আসলো।সমস্ত ঘটনা শুনে সে নিজেও ভীষণ আশাহত হলো।ভাইকে সামলানোর প্রয়াস করে বললো,”তোর যেতে হবে না।আমি যাচ্ছি।সামলে আসবো,চিন্তার কারন নেই।”শুনলো না পরশ।কপালের শিঁরা গুলো টনটন করছে।রাগে শরীরের তরল বর্ণ যেন টগবগ করে ফুটছে।বললো,”এক্ষুণি গাড়ি বের কর।আমি যাবো।”আর বাঁধা দিলো না।অবস্থা বেগতিক দেখে পাভেল দ্রুত গ্যারেজের দিকে ছুটলো।
ড্রাইভার কে বলতেই তিনি এক টানে গেটের বাইরে এসে গাড়ি থামালেন।যেতে হবে এক্ষুণি।হাতের ঘড়িটার পিন আটকাতে আটকাতে সিঁড়ি দিয়ে নামলো পরশ।পায়ের গতি তার দীর্ঘ।পাঞ্জাবির হাতা গোছাতে গোছাতে দাম্ভিকতার মুখশ্রী নিয়ে এগিয়ে গেল গাড়ির দিকে।সশব্দে দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে বসলো।ধীরে ধীরে চলতে শুরু করলো চাকা।রাস্তার দু পাশে ধুলো উড়িয়ে প্রচন্ড গতিবেগ নিয়ে চলতে শুরু করলো সদরের দিকে।সরাসরি গিয়ে থামলো সদর হস্পিটালের সামনে।গেটের সামনে প্রচুর মানুষের ভিড়।প্রেস-মিডিয়ার অগনিত কর্মী দাঁড়িয়ে আছে সেখানে।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
বর্তমান সাংসদ সদস্য পরশ শিকদার গাড়ি থেকে নামতেই ছুঁড়ে দিলো অজস্র প্রশ্ন।পরশের মুখশ্রী জুড়ে রাগের আভাস।যেকোনো সময় হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে ভয়ংকর কিছু করে ফেলার আশংকা রয়েছে।পাভেল শঙ্কিত হলো।এরা মিডিয়ার মানুষ।সামান্য ঘটনাকে রঙ চং মাখিয়ে বেশ গাঢ় ভাবে উপস্থাপন করার লুকায়িত শক্তি এবং সামর্থ্য দুটোই আছে।বারকয়েক চারিপাশে তাকিয়ে বডিগার্ড দের ইশারা দিলো।চাহনি দেখতেই ছুটে এলো তিনজন লোক।গায়ে কালো পোশাক।পেশিবহুল হাত দুটো এবং প্রশস্ত শরীর খানি দেখলেই যে কেউ বুঝতে পারবে এরা সুরক্ষা কারী ব্যক্তি।
তিনজন বডিগার্ড এবং বেশ কিছু পুলিশ পরশের চারপাশে ঘিরে দাঁড়ালো।এরপর মিনিট খানেকের মধ্যেই সুরক্ষার সাথে হস্পিটালের ভেতরে ঢুকে গেল।এই পুরো সময়টা জুড়ে এক সেকেন্ডের জন্যেও ভাইয়ের পিছু ছাড়লো না পাভেল।অত্যন্ত সযত্নে ছায়ার মতো দাঁড়িয়ে রইলো তার পেছনে।ধুপধাপ পা ফেলে চার তালার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।নির্দিষ্ট কেবিন টাতে ঢুকতেই আর সময় ব্যয় করলো না।তড়িৎ গতিতে এগিয়ে গেল বেড দুটোর দিকে।সুজন তাকে দেখতেই ব্যান্ডেজ মাথায় উঠে বসলো।মুহুর্তেই সশব্দে থাপ্পড় মারলো গালে।ছিটকে পড়লো কাত হয়ে।হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো নেতার দিকে।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুণরায় গলা টিপে ধরলো।এরইমধ্যে এগিয়ে এলো পাভেল।পেছন দিক থেকে ঝাপটে ধরে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো।কিন্তু পারলো না।ব্যর্থ হয়ে বডিগার্ড দের ইশারা দিতেই তারাও এগিয়ে এলো।ক্রোধান্বিত হয়ে চিৎকার মারলো পরশ।অশ্রাব্য গালি দিতে লাগলো সুজন এবং বখতিয়ারের উদ্দেশ্যে। _”শুয়ো*রের বা”’চ্চা!তোর সাহস হয় কি করে আমার অনুমতি ছাড়া কিছু করার।এই কু’ত্তার বা’চ্চার জন্য প্রতিনিয়ত আমার দূর্নাম হয়।ঝামেলা পাকায় জানোয়ার টা, আর দোষ হয় দলের।তোর নেতাগিরি আমি ভ***রে দেব।জন্মের মতো ছুটাইয়া দিবো।আমার থেকে বেশি বুঝিস?একটা মামুলি চা ওয়ালার সাথে মারামারি করছে।এখন যদি ও মরে যায় তখন তোর জন্য যে আমার দলের ওপর চাপ পড়বে ওইটা ঘটিতে ছিলো না।
এরপর কেবিনে দাঁড়িয়ে থাকা দলীয় বাকি সদস্যদের উদ্দেশ্যে বললো,
_”ও কিছু বললেই তোরা ঝাপাইয়া পড়বি?ও কি তোদের বাপ লাগে যে বললেই কুত্তার মতো আরেকটার পেছনে পড়বি।তোমাগো ত**লা নী তে কিচ্ছু নাই আবার রাজনীতি করতে আসছে।সব কটাকে দেখে নেব আমি।ওই চা ওয়ালা যদি মরে আর উপর মহল দেখে আমার উপর কোনো চাপ আসে তাহলে খোদার ক*স*ম।সব গুলাকে গোডাউনে ভরে কু*ত্তা*র মতো পেটাবো আমি।”
পরশ থামলো।রাগ তড়তড় করে ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে।ভয়ংকর দৃষ্টিতে সুজনের দিকে একবার তাকিয়ে হনহন করে বেরিয়ে আসলো।এই হস্পিটালের তিনতালা তেই ভর্তি আছে চা ওয়ালা রহিম।বর্তমানে তিনি লাইফ সাপোর্টে আছে।মাথার উপর ফ্লাক্স দিয়ে বারি মারায় ভেতরের কিছু কাঁচ ঢুকে পড়েছে।এছাড়া দলের প্রায় পাঁচজন মিলে ইচ্ছেমতো পিটিয়েছে লোকটাকে।
_”আরে আপনি?”
ডাক্তারের কথা শ্রবণ হতেই ফিরে তাকালো পরশ।আলতো হেসে গম্ভীর ভঙ্গিতে বললো,_”হ্যালো ডক্টর।রহিম চাচার অবস্থা কেমন এখন?”
ডাক্তারের মুখভঙ্গি পালটে গেল।হাসিমুখ টা নিভে যাওয়ার পর অবস্থা বুঝতে আর বেশিক্ষণ সময় লাগলো না।ত্রস্ত কন্ঠে বললো,_”ওকে ইমিডিয়েটলি বরিশালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।সাথে একজন লোক দিচ্ছি আমি।দ্রুত!”
ডক্টর মাথা নাড়ালো।পাভেল টুল টাকে টেনে আরাম করে বসলো।কন্ঠে তীব্র রাগ নিয়ে বললো,_”কি রে বেশি ব্যথা লাগছে?সুজন ভাই।”
সুজন আড়চোখে তাকালো।পাভেল হাসলো।টিটকারি মেরে বললো,_”কিরে?ব্যথা কোনটাতে বেশি?মাথায়, থাপ্পড়ে নাকি ভাইয়ার গালিতে?”
হেসে দিলো বখতিয়ার।কাত হয়ে পাভেলের দিকে তাকিয়ে বললো,_”যাই বলিস ভাই,আমার হাত-পা কাঁপতেছিলো।নেহাত উলটো সাইটে বেড টা আছিলো।নইলে ভাই’র সব কয়টা থাপ্পড় আমার গালে পড়তো।”রুমে উপস্থিত বাকিরা ও হাহা করে হেসে উঠলো।এ পর্যায়ে গম্ভীর হলো পাভেল।সুজনের দিকে তাকিয়ে বললো,_”ঘটনা টা কি ছিলো?এতোকিছু হলো কিভাবে?”
কথা বললো না সুজন।গম্ভীর হয়ে তাকিয়ে রইলো অন্যদিকে।ভেতরে ভেতরে তীব্র রাগ,জেদ ক্রমশ বাসা বাঁধছে।পুণরায় জিজ্ঞেস করলো পাভেল।এ পর্যায়েও উত্তর না দিয়ে চুপ রইলো।মিনিট খানেক পর শান্ত কন্ঠে বললো,_”ভাই নাকি সরদারের বড় মাইয়া রে বিয়া করবে?আজ নাকি তোরা প্রস্তাব নিয়া গেছিলি?”
ভ্রুঁ কুঁচকে ফেললো পাভেল।বিষয়টা আপাতত গোপন ছিলো।তবে এতো তাড়াতাড়ি যে সেটা বাইরে বের হয়ে যাবে এটা কল্পনাতীত ছিলো।গা ছাড়া ভাব নিয়ে বললো,”তো!ভাই কি বিয়ে করবে না?আর সরদারের মেয়েরে করলে এখানে ক্ষতি কোথায়?”
_”তোরা আমারে ভুইলা যাইস না পাভেল।ভাই রে অন্তত আমার কথা মনে করতে বলিস।দলের জন্য কম মারা*মারি কাটা*কা*টি করি নাই।রক্ত দেখলে এখন আর রক্ত মনে হয় না।সরদার আর শিকদার দুইটা দলই এখন সাপ -নেউলের মতো।এক দলের একটা পিপড়া সমান লোক একা পাইলেও অন্য দল তারে কোপাইয়া গুম করতে সেকেন্ড ও ভাববে না।বাহার আর সুজন দুই জনই নির্বাচন আইলে আজরাইল হইয়া যায় দুই দলের জন্য।ওই বাহারের কোপ এখনো আমার গায়ে।পিঠে তিন তিনটা কোপের চিহ্ন এখনো মেলে নাই।আমি কখনোই এইটা মাইনা নিতে পারমু না।তুই পালাইয়া বিয়া করছোস এইটা আলাদা কথা।
কিন্তু এখন যদি সামাজিক ভাবে ভাই বিয়া করে তাইলে সরদার শিকদার আর বিরোধী থাকবে না, একটা দল হইয়া যাইবে।আর ওই সরদারের পোষা কুত্তা বাহার ও আমাগো সাথে থাকবে।আর এইটা আমি কখনোই মাইনা নিতে পারমু না।ওর কোপ এখনো আমার শরীরে।রাইত হইলে মাথা কাজ করে না,ইচ্ছা করে ওরে একলা পাইলে আটভাগ করি।সেই বাহার রে কখনোই আমি এক দলে দেখতে পারুম না।ওই রহিম যে সরদারের চামচা এইডা কি ভাই জানে না?
ও আমারে দেইখা টিটকারি মারে।ডাইকা ডাইকা বলে,”আপনার নেতার তো এখন আর কোনো মুরোদ নাই।শেষে সরদারের সাথে হাত মিলানোর জন্য তার মেয়েরে বিয়ে করতে চাইতেছে।কিন্তু সরদার তো ঘাড় ধাক্কা দিয়া বাইর কইরা দিছে।”_এইসব কথা শোনার পর আমার মাথা কাজ করে নাই।ও আমারে কয় সরদার শিকদার মিললে আমি যেন বাহারের পা ধইরা ক্ষমা চাই।নাইলে নাকি ওই বাহার আমারে জ্যান্ত রাখবে না।এসব শোনার পর আর মাথা ঠিক রাখতে পারি নাই।ফ্লাক্স উঠাইয়া বারি মারছি মাথায়।”
মন দিয়ে সবটা শুনলো পাভেল।এরপর কোনো উত্তর না দিয়ে বললো,_”সব বুঝলাম কিন্তু তোর মাথা ফাটলো কিভাবে?আর বখতিয়ারের হাত কাঁটলো কে?”
_”ওর মাথায় ফ্লাক্স দিয়া বারি মারার পর ওর ভাই পেছন দিয়ে আইসা আমার মাথায় ইট দিয়ে বারি মারছে।এরপর ওরা আমার কথামতো ইচ্ছামতো পিটাইছে।ওইসময় কোনোভাবে বখতিয়ারের হাত কাটছে।”
_”কেন?ওরা চুড়ি নিয়ে যায় নি?”
বাবার কথায় শান্ত চাহনিতে তাকালো স্পর্শী।মলিন কন্ঠে বললো,_”নাহ!হয়তো মনে ছিলো না।নাহয় ইচ্ছে করেই রেখে গেছে।”
_”আমার কাছে দাও।কাল দলের লোক দিয়ে ফেরত দিয়ে দেওয়াবো।”
এরপর হাত বাড়াতেই চুড়ি দুটোকে মুঠোবন্দি করে নিলো স্পর্শী।অবাক হলেন শামসুল।মেয়ের দিকে তাকাতেই দেখলেন স্নিগ্ধ দৃষ্টিতে স্পর্শী তার দিকে তাকিয়ে আছে।বললো,_”ফেরত দেওয়া কি খুব বেশি দরকার আব্বু?রেখে দেই না আমার কাছে।ভীষণ সুন্দর না?”বলেই হাতে পড়লো পুণরায়।হাত দুটোকে বাবার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,_”দেখো?এটা খুব মানাচ্ছে তাই না?”
গম্ভীর হয়ে গেলেন শামসুল।রাগত দৃষ্টিতে অন্যদিকে তাকালেন।বললেন,_”তুমি আমার কাছে এইসব তামাশা করার জন্য এসেছো?উদ্দেশ্য এটা থাকলে এক্ষুণি চলে যাও।আমি বিশ্রাম নেব।”
_”উহু!তামাশা টুকু পরিপূর্ণ করি।মাত্র তো শুরু করলাম।শেষ অবধি বলি।বেশিক্ষণ লাগবে না।মাত্র পাঁচ মিনিট।বলবো?”
উত্তর দিলো না শামসুল।তার সন্দেহ প্রবল গতিতে বাড়ছে।মেয়ের দিকে তাকাচ্ছেন না পর্যন্ত।অন্যদিকে তাকিয়ে নাক ফুলিয়ে বসে রইলেন।স্পর্শী বিছানায় হেলান দিয়ে বসলো।এরপর বাবার দৃষ্টি ধরে নিজেও বেলকুনির দিকে তাকালেন।দরজা বন্ধ থাকলেও জানালা খোলা। সেখান থেকে স্পষ্ট চাঁদ দেখা যাচ্ছে।সেদিকে তাকিয়ে মলিন কন্ঠে বললো,
_”আব্বু জানো?সেই ছোটবেলা থেকে প্রতিটা ক্ষণে, প্রতিটা কাজে তোমাকে মিস করতাম।টিউশনি থেকে যখন লোকাল বাসে রাত দশটার পর ক্লান্ত হয়ে ফিরতাম।তখন কখনো সিটে মাথা হেলিয়ে অথবা পাইপ ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবতাম, “ইশশ!আমার যদি বাবা থাকতো তাহলে আমি রাজকন্যার মতো থাকতাম।নিজে থেকে এত কষ্ট করে উপার্জন করার কোনো প্রয়োজন’ই পড়তো না।সারাক্ষণ বসে বসে রাজকন্যার মতো বাস করতাম আর পড়তাম।ব্যাস!আর কিচ্ছু না।কিন্তু বাস্তবতা কি জানো?
আমি তোমাকে পাওয়ার পর যেন স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলছি।কি একটা দমবন্ধ কর পরিস্থিতি দেখো?আমি সাভারে থাকতে যা ইচ্ছে হতো তাই করতাম।কিন্তু এখানে বসে পারছি না।তোমার মুখের দিকে তাকালে আমি সেটা পারি না।আমার করূনা হয়,আমার কষ্ট হয়।বারবার মনে হয় গত উনিশ বছর ধরে একাকী কষ্টে থাকা বাবা টাকে কিভাবে আবার আহত করবো?কিভাবে?আর্শি পালিয়ে যাওয়ার পর ওই যে করুন চেহারা টা ওটা বার বার চোখের সামনে ভেসে ওঠে।আমি চাইলেও পারি না নিজের খুশিমতো কাজ করতে।
কেন জানো?ওই যে টান?ওই যে মায়া?ওটা প্রখর ভাবে আমার মাঝে মিশে আছে।কিন্তু আসল কথাটা জানো তো আব্বু।আমার তোমার জন্য মায়া হলেও তোমার মনে হয় আমার জন্য করুনা ও হয় না।তা না হলে অন্তত পক্ষে একবার হলেও আমার সিদ্ধান্ত জানতে চাইতে।একটা মজার ব্যাপার দেখেছো?আমজাদ শিকদার তার ছেলের জন্য,আলতাফ শিকদার তার ভাতিজার জন্য নিজের আত্মসম্মান কে ভাসিয়ে দিয়ে সরদার বাড়িতে উপস্থিত হয়েছে নির্লজ্জের মতো।
এমন না তারা তোমার থেকে কম ক্ষমতাবান।এমন ও না যে তাদের ছেলের জন্য আর কোনো মেয়ে পাবে না বা তাদের ছেলে খারাপ।শুধুমাত্র ছেলের পছন্দ কে প্রাধান্য দিয়ে যুগের পর যুগ ধরে চলা রাজনৈতিক শত্রুতাকে ভুলে যে চে এসেছে প্রস্তাব নিয়ে।কত অপমান সয়েছে ভাবিতে পারছো?সেখানে তুমি এমন প্রস্তাব তো দূর আমার সিদ্ধান্ত আদৌ প্রয়োজন কি না সেটা নিয়ে ভাবো ও নি পর্যন্ত।কতটা বিচিত্র ভালোবাসা দেখো?ব্যক্তিভেদে বুঝি বাবাদের ভালোবাসা ও বিচিত্র হয়।”
শামসুল সরদার নিরব হয়ে তাকিয়ে রইলেন জানালার দিকে।স্পর্শী কোনো উত্তর পেল না।মলিন হেসে আবারো বাবার মুখপানে তাকালো।কৌতূহল নিয়ে কাতর কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
_”আব্বু,আমি যদি তোমার সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে পরশ শিকদারকে বিয়ে করি;তাহলে কি তুমি খুব বেশিই কষ্ট পাবে?আমার সাথে কি আর কখনো কথা বলবে না?মায়ের সাথেও কি সম্পর্ক নষ্ট করে দেবে?আবারো কি সেই গত উনিশ বছরের শামসুল সরদারের রুপ নেবে।যখন মানুষ জানতোই না শামসুল সরদারের ছেলের সাথে সাথে এরো দুটো মেয়েও আছে।”
শামসুল এবারেরও নিরব।শক্ত চোখে তাকিয়ে রইলো জানালার দিকে।স্পর্শী বেশ কিছুক্ষণ মুখপানে তাকিয়ে রইলো উত্তরের আশায়।কিন্তু এ পর্যায়েও ব্যর্থ হলো।আলগোছে পা গুছিয়ে বিছানা থেকে নামলো।এরপর রুম ত্যাগ করার প্রয়াস করে দু-কদম পিছিয়েও আবারো থামলো।পিছু ফিরে শান্ত কন্ঠে বললো,
রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৬০
_”ঠিক আছে।তুমি সারারাত ভেবে আমাকে কাল সকালে উত্তর জানিয়ো।আসলে আমি তো কারো কাছ থেকে কখনো কিছু আশা করে বসে থাকি নি।যেহেতু তুমি একটু বেশিই স্পেশাল।তাই আশা করে বসে থাকতেও পারি।দেখা গেল বিয়ের পর ভাবলাম যে দু-চারমাস গেলে বাবা এমনিতেও তার স্পর্শীয়ার সাথে কথা না বলে থাকতে পারবে না।কিন্তু বাস্তবে দেখলাম তুমি কথা বললে না।তখন একটু বেশিই হতাশ হবো কি না তাই বলছিলাম।আগে ভাগে জানিয়ে দিলে এই আশাটা আর করতাম না।আসছি।”