রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৬৩
সিমরান মিমি
কক্ষের দুয়ার আলতো খুলে মাথাটা বের করে ড্রয়িংরুমের দিকে উঁকি মারলো।লম্বা চুলের বিনুনি টা হেলে পড়লো সামনের দিকে।প্রণয় পুরুষকে এক দৃষ্টিতে খুটিয়ে দেখতে লাগলো নিরবে।কিন্তু তা আর পারলো কই?এর মধ্যেই তো দেখে নিলো পাভেল।এতোগুলো মানুষের মধ্যে দাঁত গুলোকে মেলে ধরে হাঁক ছেড়ে বললো,
_”ভাবী!আমার দিকেও একটু তাকাও।”
সেকেন্ডের মধ্যে নিজেকে গুটিয়ে নিলো স্পর্শী।তড়িৎ গতিতে মাথাটা কক্ষের মধ্যে নিয়ে গেল।লজ্জায়,অসস্তিতে চোখ খিঁচিয়ে বন্ধ করে জিভে কামড় মারলো।এতক্ষণে পরশ উপরের দিকে চাইলো।কিন্তু ঘটনা টা ঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারলো না।পাভেলের দিকে তাকিয়ে ভ্রুঁ কিঞ্চিৎ কুঁচকে ফেললো।পাভেল ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট টিপে হাসলো।বললো,
_”তোর বউ লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছিলো তোকে।একটু ডিস্টার্ব করলাম আর কি।”
হতবাক হয়ে বারকয়েক দোতলার রুমের দিকে তাকালো পরশ।কিন্তু স্পর্শীর আর পাত্তা নেই।বিষয়টা ভীষণই আশ্চর্যজনক এবং অপ্রত্যাশিত।স্পর্শীয়া সরদার তাকে লুকিয়ে দেখছিলো এটা যেন অবিশ্বাস্য। এইতো আর মিনিট খানেকের মধ্যেই নিচে আসবে।তাহলে?আচ্ছা,সে কি তাকে খুবই মিস করছিলো?অপ্রত্যাশিত এই ঘটনায় অনুভূতি গুলো পুণরায় সঞ্চার হলো।প্রেয়সীকে দেখার প্রবল ইচ্ছা জাগলো হৃদয়ে।এই আশ্চর্যজনক ঘটনা দেখার ইচ্ছেটাও ভেতরটাকে নাড়িয়ে দিচ্ছে ক্রমশ।কিভাবে তাকিয়েছিলো ওই মায়াবিনী মুখ?কতটা মুগ্ধতা নিয়ে দেখছিলো তাকে?আচ্ছা,যদি একবার তাদের চোখাচোখি হতো;তাহলে মুখটা কিভাবে লজ্জায় নুইয়ে যেত?আদৌ লজ্জায় লাল হতো সেই মুখ?নাকি স্পর্শীয়া সরদার তার চিরাচরিত রুপে ফিরে গিয়ে ভেংচি কেঁটে অন্যদিকে তাকাতো।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
_”ওকে নিচে নিয়ে আসো।”
চাচার গলার স্বর পেতেই বুকটা ধক করে উঠলো স্পর্শীর।হাতদুটো কেমন নিশ্চল হয়ে উঠলো।শরীরটা ক্রমশ ঠান্ডা হচ্ছে।পায়ের নিচে অদ্ভুত এক শিরশিরানি অনুভূত হচ্ছে।এক হাত দিয়ে শাড়িটার কুচি আলতো করে উপরে তুললো।এরপর ধীর পায়ে সিঁড়ি বেয়ে নামতে লাগলো।তার একপাশে ছোট চাচি এবং অপর পাশে আর্শি।পরশ সেদিকে তাকিয়ে থমকে গেলো।খয়েরী রঙের জামদানী শাড়িটার উপরে একপাশে বিনুনি টা হাটার তালে তালে দুলছে।এ যেন কোনো মায়াবিনী, অর্ধচন্দ্রনিঃসৃত কৌমুদিবর্ণ।
যার ঘনকৃষ্ণ চিকুরজালের প্রতিটা দুলুনিতে অন্তরাত্মা হর্ষবিকম্পিত হচ্ছে পরশের।তার দৃষ্টি স্থির,কন্ঠ বধির।এমন চিরচেনা বাঘিনীরুপি মানবীকে হুট করেই পরিপূর্ণ, শান্ত, নারীমুর্তিতে দেখতে অনভ্যস্ত।ইতোমধ্যে কদম থামিয়ে সোফায় বসলো স্পর্শী।পরশ তখনো নিশ্চুপ,যেন সে এক কল্পলোকের প্রেমকুটিরে অবস্থান করছে।মন প্রাণ উজাড় করে চাইছে ওই হরিণী দৃষ্টিতে একবার চোখাচোখি করতে। কিন্তু অপরপাশের নারীরুপি মায়াবিনীর যেন এতে বিশাল অসম্মতি।তার মধ্যে নাই কোনো উত্তেজনা,চোখে নেই কোনো উদ্বেগ।চিরাচরিত শান্ত রুপের ন্যায় সে তাকিয়ে আছে ফ্লোরের দিকে।পিয়াশা হাস্যোজ্জ্বল মুখভঙ্গি নিয়ে স্পর্শীয়ার পাশে গেলেন।তার দেওয়া চুড়ি জোড়া এখনো স্পর্শীয়ার হাতে।এই ছোট্ট বিষয়টা যেন তাকে বিমোহিত করে তুললো।আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলেও সেটা প্রকাশে অসংকোচ করলেন।পিপাসার দিকে তাকিয়ে বললেন।
_”মেয়ে তো আর অচেনা না;যে নানা প্রশ্ন করতে হবে।দেরি না করে আংটি টা পড়ানোই ভালো।কি বলেন বেয়ান?”
ধ্যানভঙ্গ হলো পিপাসার।এতোক্ষণ মেয়ের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়েছিলেন।সম্বিত ফিরে পেতেই আশ্চর্য হয়ে গেলেন।চোখ বন্ধ করে মনে মনে বললেন,
_”আল্লাহ!নজর যেন না লাগে।”
এরপর বেয়ানের দিকে তাকিয়ে হেসে বললেন,_”হ্যাঁ হ্যাঁ।”
আমজাদ শিকদার নড়েচড়ে উঠলেন।পাভেলের দিকে তাকিয়ে বললেন,”আংটি দাও।”সাথে সাথেই বক্স বের করে পরশের হাতে দিলো।বসা থেকে উঠে স্পর্শীর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। বক্স খুলে আংটি বের করে হাতে নিতেই মায়ের ইশারায় স্পর্শীও দাঁড়ালো।সযত্নে হাতটাকে প্রথম বারের মতো ছুলো পরশ।এরপর আংটি’টা পরিয়ে দিলো আঙুলে।
কার্য সম্পন্ন হতেই উঠে দাঁড়ালো প্রেমা।ভেবেছিলো সেদিনের বেয়াদবির বিপরীতে কোনো না কোনো ফিডব্যাক সে পাবে।কিন্তু সোভামের নিশ্চুপতা তাকে অবাক করে দিয়েছিলো।এটা কোনোভাবেই কাম্য ছিলো না।মনে হচ্ছিলো যেন এতে তার কিছু হয়ই নি।ব্যর্থ প্রেমা।প্রতিশোধ নিতে ব্যর্থ।আর হবে নাই বা কেন?অপর পক্ষ থেকে কোনো প্রকার প্রতিক্রিয়া না পেলে কি হয়?এখানে আসার পর বারকয়েক খুঁজলেও দেখা মেলে নি ভদ্রলোকের।কি অদ্ভুত! বোনের এনগেজমেন্ট অনুষ্ঠান।অথচ বড় ভাই হয়ে তিনি অনুপস্থিত।বিষয়টা খুবই বেদনাদায়ক।অথচ দেখো,এখানকার সবাই ই কেমন উৎফুল্ল। কারো মনে কোনো ক্ষোভ বা ব্যথা খুঁজেই পাচ্ছে না সে।
“আ…ম!ভাইয়া-ভাবিকে কি একটু স্পেস দিবে না?না মানে ওদেরকে একটু আলাদাভাবে কথা বলার সময় দেওয়া যায় না?”
থেমে থেমে পাভেল পুরো কথাটা সম্পন্ন করতেই পিছু ফিরলো পরশ।মন সায় দিলেও মস্তিষ্ক বিরোধিতা করছে।চোখ রাঙিয়ে ভাইকে চুপ করতে বললো ইশারায়।কিন্তু পাভেল নিরুত্তর।বরাবরের মতো আবারো বলে উঠলো,
_”হ্যাঁ, ওদের রুমে বা ছাদেই তো কথা বলতে পারে।”
আলতাফ শিকদার খুক করে কেশে উঠলেন।আয়েশ করে সোফায় বসে বললেন,
_”এখনো কি আলাদা করে কিছু বলার প্রয়োজন আছে?আর বললেও বা কি? ”
তাল মেলালেন খলিলুর সরদার। বললেন,
_”আরে সমস্যা কিসের।বিয়ের আগে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করা ভালো।”
“ওভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখার কি কোনো প্রয়োজন ছিলো?তুমি দেখবে বললেই তো রুমে চলে আসতাম। ”
থতমত খেয়ে গেল স্পর্শী।দ্রুত পরশের থেকে চোখ সরিয়ে অন্যদিকে তাকালো।এরপর ঝাঁঝ নিয়ে উত্তর দিলো।
_”হ্যাঁ ভাই দেখছিলাম যে আপনি আজকেও সেই নিত্যদিনের মতো সাদাকালো পাঞ্জাবি পড়ে এসেছেন কিনা।কিন্তু আপনার মনে আমার জন্য একটুও করুনা নেই।বরাবরের মতো আমাকে আশাহত করে সেইম গেট আপেই এসেছেন।সাদা পাঞ্জাবি,পায়জামা আর ঘড়ি।ব্যাস!”
পরশ দুকদম এগিয়ে স্পর্শীর গায়ের সাথে ঘেঁষলো।স্পর্শীর কাঁধ এখন পরশের হাতের সাথে ছুঁইছুঁই। ভাবলেশহীন ভাবে দুরের জঙ্গলের দিকে তাকালো।বললো,
_”তো তুমি কি আমাকে বিয়ের শেরওয়ানিতে আশা করেছিলে?নাকি ছুট-বুটে?”
এরকম গা জ্বালানো কথাবার্তা মোটেই পছন্দ নয় স্পর্শীর। কেউ কেন তাকে এধরণের ত্যাঁড়া কথা বলবে?সে নিজে বললে সেটা আলাদা ব্যাপার।কিন্তু অন্যকেউ পারবে না।গা ছাড়া জবাব দিয়ে বললো,
_”আমি কোনো পোশাকেই আশা করি নি আপনাকে।আপনার যা ইচ্ছা তাই পড়বেন আমার কি?”
_”ছিহঃ!স্পর্শীয়া।কোনো পোশাকেই না মানে কি?তুমি কি আমাকে পোশাক ছাড়া আশা করেছিলে?আমাদের মাত্র এনগেজমেন্ট হলো।বিয়ের নাম গন্ধ ও নেই।এরমধ্যেই এসব কি?এতোটা ক্লোজ হওয়া কিন্তু মোটেই উত্তম কিছু না।”
_”এই আপনি চুপ করুন তো।এসব অসভ্য মার্কা কথাবার্তা বলে কি ভাব জমাতে চাইছেন?শুনুন,আমি এসবে মোটেও ইন্টারেস্টেড না।”
_”তুমি কি বলতে চাইছো আমরা ভাব ছাড়া বিয়ে করছি?আজগুবি যুক্তি।ভাব ছাড়া বিয়ে হয় নাকি?”
_”হ্যাঁ হয়।আমাদের মধ্যে কোনো ভাবের সম্পর্ক ছিলো না।মোটকথা কিছুই ছিলো না।”
_কিছুই ছিলো না মানে?কিছু থাকার কথা ছিলো নাকি?”
মুখ ঝামটা দিয়ে কোনো উত্তর না দিয়েই ছাদের অন্যপাশে চলে গেল স্পর্শী।লোকটা ইচ্ছে করে তাকে ক্ষ্যাপাতে চাইছে।কিন্তু সে মোটেই এই ফাঁদে পা দেবে না।গরম লাগছে ভীষণ।শাড়িটা অত্যন্ত ভারী ঠেকছে।পিছু ফিরে পরশের দিকে তাকালো।এরপর চঞ্চল কন্ঠে বললো,
_”আপনি কি কিছু বলবেন?নাকি আমি চলে যাবো।গরম লাগছে।শাড়ি চেঞ্জ করবো।”
পরশ আলতো পায়ে স্পর্শীর দিকে এগিয়ে গেল।দৃষ্টিকে অবিচল করে চেয়ে রইলো। বেশ কিছুক্ষণ পর শান্ত কন্ঠে বললো,
_”কিছু বলাটা কি খুব বেশি প্রয়োজন স্পর্শীয়া?তার চেয়ে আমি বরং কিছুক্ষণ দেখি।একটু নিশ্চুপ হয়ে তোমায় গাঁথি।এরকম সুযোগ তো কখনো দাও নি।আজ নাহয় নিয়ে নিই।”
চোখ সরিয়ে নিলো স্পর্শী।লজ্জাও পেল।আর কতক্ষণ এভাবে?একজনের দিকে কিভাবে এমন নির্লজ্জের মতো তাকিয়ে থাকা যায়?কই সে তো পারে না।তাকানোর সাথে সাথেই শরীর অচল হয়ে আসে।শ্বাস রোধ হয়।বক্ষ থমকে যায়।
_”আপনার এই পাঞ্জাবি টা খুব সুন্দর।……এটাকে আর পড়বেন না।…..রেখে দেবেন সযত্নে। ”
চমকে স্পর্শীর দিকে তাকালো পরশ।ভ্রুঁ খানি কিঞ্চিৎ কুঁচকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো।বললো,
_”কেন?সুন্দর পোশাক না পড়ে তুলে রাখবো কেন?”
_”না পড়বেন না।কারন আমি বারণ করেছি।”
ক্ষেপে গিয়েও নিজেকে সামলে নিলো স্পর্শী।এরপর পাঞ্জবির বুকের দিকের একটা বোতাম আঙুল দিয়ে ধরলো।বোতাম টাকে ছাড়িয়ে আঙুল টা বুকের বাম পাশ বরাবর স্থান নিলো।কিঞ্চিৎ জায়গা দখল করে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বললো,
_”কারন এটা পড়লে আপনাকে বেশি সুন্দর লাগে।অন্যকারো নজর লেগে যাবে যেকোনো সময় । আর স্পর্শীয়া সরদার নিজের জিনিস কিঞ্চিৎ পরিমাণ ও অন্যকে দিতে শেখে নি।বুঝলেন?”
শ্বাস যেন আটকে গেছে পরশের।বুকের বাম পাশ টা অসার হয়ে গেছে।হৃদপিন্ড দুর্দান্ত গতিতে ধ্বনিত হচ্ছে।নিষিদ্ধ প্রত্যাশাগুলো প্রতিক্ষণে সচল হচ্ছে মনের মধ্যে।কিন্তু মস্তিষ্ক তার বিরোধিতা করছে।দ্রুত সরে গেল কয়েক কদম পিছিয়ে। এরপর সিঁড়ির দিকে যেতে যেতে বললো,
_”তুমি বড্ড জ্বালাচ্ছো স্পর্শীয়া।এগুলো সময়মতো ফেরত পাবে।নিচে আসো।অনেকটা সময় পেরিয়েছে।”
_”এটা ভাবীর রুম?ভীষণ সুন্দর।”
আর্শি হাসলো।প্রেমার হাত ধরে ভেতরে আসলো। সে পুরো বাড়ি ঘুরিয়ে দেখাচ্ছে ননদকে।বোনের রুম ঘোরা শেষ হতেই সেখান থেকে বেরিয়ে এলো।সিঁড়ির বাঁ পাশের রুমটা দেখতেই প্রেমা সেদিকে এগিয়ে গেল।তড়িৎ বেগে হাত চেপে ধরলো আর্শি।বললো,
_”আরে ওদিকে চলো।এ রুম টা ঘোরা যাবে না।এটা সোভাম ভাইয়ার।”
অবাক হলো প্রেমা।বললো,
_”কেন?উনিও কি পরশ ভাইয়ের মতো রাগ করেন রুমে গেলে?”
_”না তেমন কোনো বিষয় না।কিন্তু ভাইয়াকে আমার ভয় লাগে।ওনার সাথে তেমন একটা কথা হয় না।তাই ওই রুমে যাই না আমি।আর তাছাডাও,উনি এখন রুমেই আছে।তুমি আসো না,জিহানের রুম দেখবো।ওই গাধা টার রুম দেখলে তোমার গোয়াল ঘর মনে হবে।”
গেল না প্রেমা।বরবর’ই নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি ঝোঁক তার।কৌতূহল বাড়ে প্রতিনিয়ত।বললো,
_”আরে ভেতরে দেখবো না তো।জাস্ট উঁকি মেরে বাইরে থেকে দেখবো রুমটা।”
আর্শি বারণ করলেও প্রেমার সাথে পারলো না।বাধ্য হয়ে সোভামের রুমের সামনে গেল।আলতো হাতে ধাক্কা দিয়ে দরজা খানিকটা মেললো।উঁকি মেরে ভেতরে তাকিয়ে গোল গোল চোখে দেখে নিলো।মনে মনে বললো,
_”বাহ!ব্যাটা গোছালো আছে।”
মুহুর্তেই আর্শি টেনে নিয়ে বাইরে আসলো।বললো,
_”অনেক দেখা হয়েছে।এবার চলো।”
শব্দটা একটু জোরেই হয়ে গেছে।বিছানায় নির্ঘুম শুয়ে থাকা সোভাম টের পেয়ে গেলো।গম্ভীর কন্ঠে বললো,
_”কে ওখানে? ”
ঘাবড়ে গেল আর্শি।আঙুল উঠিয়ে প্রেমাকে চুপ করার ইশারা দেওয়ার সাথে সাথেই উত্তর দিলো প্রেমা।বললো,
_”আমি।”
হুট করেই রুমের বাইরে অচেনা মেয়েলি কন্ঠ শুনে উঠে বসলো সোভাম।দরজার সামনে এসে প্রেমাকে দেখতেই ভ্রুঁ কুঁচকালো।এরপর আর্শির দিকে তাকিয়ে বললো,
_”কি সমস্যা?এখানে কি? ”
ঘাবড়ালো আর্শি।ভাইয়ের যে মন মেজাজ ভালো নেই সেটা আগেই বুঝতে পেরেছে সে।গতরাতে বাবা এবং ভাইয়ের মধ্যে যে কথা-কাটাকাটি হয়েছে সেটা স্পষ্ট শুনেছে।পেটে ব্যাথা এবং অস্থিরতার কারনে সারারাতে ঘুম হয়নি।হয়তো বিগত রাতের ঘটনার কারনেই সে আজ উপস্থিত ছিলো না।বললো,
_”কিছু না ভাইয়া।এমনিই।”
কথাটা বলে শেষ করার আগেই প্রেমা বললো,
_”আমাকে রুম ঘুরে দেখাচ্ছিলো ভাবী।শুধু আপনার রুম টা বাকি ছিলো।আচ্ছা,আপনার রুমে ঢোকার অনুমতি নেই কেন?”
গম্ভীর দৃষ্টিতে সামনের পুঁচকে মেয়েটাকে একবার পরোখ করে নিলো সোভাম।ভ্রুযুগল কুঁচকে আর্শির দিকে তাকিয়ে বললো,
রাজনীতির রংমহল সিজন ২ বোনাস পর্ব
_”এটা কোনো চিড়িয়াখানা না যে ঘুরে ঘুরে দেখাতে হবে।রুমের সামনে থেকে যাও।বিরক্ত করো না।”
এরপর সশব্দে দরজা বন্ধ করে দিলো ভেতর থেকে।কিন্তু সরলো না।কান পেতে দাঁড়িয়ে রইলো সেখানেই।প্রেমা বিরক্ত হলো।গিজগিজ করে আর্শিকে বললো,
_”এটা চিড়িয়াখানাই।আর তোমার ভাই নিজেকে দুর্লভ কোনো প্রাণী মনে করে।এইজন্যই দরজা বন্ধ করে বসে থাকে।যেন টিকিট ছাড়া দেখার কারো অনুমতি নেই।আজব প্রাণী!”