রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৬৪
সিমরান মিমি
_”দিদি?”
চমকে দুপাশে তাকালো স্পর্শী।সেরকম পরিচিত কাউকে না দেখে আবারো মনযোগ দিলো সামনের জ্যামের দিকে। পরক্ষণেই আবারো পরিচিত স্বর পেলো।এ পর্যায়ে ডান দিকে তাকালো।পাশেই জ্যামে আটকে থাকা বাসটির জানালা দিয়ে উৎফুল্ল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে একটি পরিচিত হাস্যোজ্জ্বল মুখ।মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে চেহারায় তার বেশ পরিবর্তন এসেছে।মুখশ্রীতে এসেছে পরিপূর্ণ নারীসুলভ গঠন। স্পর্শী হাসলো।এরপর মেয়েটার দিকে তাকাতেই দেখলো সিট শূণ্য।অবাকের রেশ ধরে পাশে তাকাতেই দেখলো এগিয়ে আসছে সে।বাস থেকে নেমে এক ছুটে গাড়ির সারির মধ্যে থাকা কিঞ্চিৎ ফাঁকা স্থান গলিয়ে স্পর্শীদের গাড়ির কাছে এলো।দ্রুতই দরজা খুলে দিলো স্পর্শী।পাশে বসিয়ে আদুরে কন্ঠে বললো,
_”বাহ!শ্রাবণ তো দেখি বেশ সুন্দরী হয়ে গেছে।তা এই রুপের রহস্য কি?”
ভ্রুঁ নাঁচানো দুষ্টুমি ভরা কন্ঠে কথাটুকু বলতেই লজ্জায় নুইয়ে পড়লো শ্রাবণী।বুক ফুলিয়ে নিঃশ্বাস নিয়ে বললো,
_”আপু আমি চান্স পেয়েছি পাবলিকে।”
_”আরে দারুণ। তা কোন ইউনিভার্সিটিতে?আর এডমিশন টেস্ট শেষ হয়ে তো ভর্তির ডেট শেষ হতে চলেছে।আপুকে বুঝি এখন জানানোর সময় হয়েছে?”
হাস্যোজ্জ্বল মুখটুকু অন্ধকারে ছেয়ে গেল শ্রাবণীর।অনবরত করুন কন্ঠে বলতে লাগলো,
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
_”দিদি সরি সরি।আসলে আমি খুব ভেঙে পড়েছিলাম।ঢাবি,জাবি কোনোটাতেই হয়নি।চবিতে সিট পেয়েছি সেটাও অনেক দূরে।সাবজেক্ট ভালো আসবে না।মেরিট দূরে।এজন্য লজ্জায় আগে বলেনি।এরপর রাবিতে পরিক্ষা দিলাম।ইশ্বরের কৃপায় খুবই ভালো হয়েছে পরিক্ষা।ইংরেজি এসেছে।এইতো ভর্তির আর মাত্র ছ-দিন আছে।এরমধ্যে হয়ে যাবো।কিন্তু আমি রেজাল্ট পাওয়ার পর থেকেই তোমাকে ফোন করেছি।কিন্তু বন্ধ পেয়েছিলাম।”
শুনতেই হেসে দিলো স্পর্শীয়া।শ্রাবণীর মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,_”আমার ফোন টা ভেঙে গেছিলো শ্রাবণ।যাই হোক,বাদ দাও।আমি তোমার রেজাল্টে খুবই খুশি হয়েছি।তা এখন বুঝি বাড়ি এসেছো মা-বাবার সাথে দেখা করতে?”
মাথা নাড়িয়ে উত্তর দিতেই হর্ণের শব্দ বেজে উঠলো।স্থির হয়ে থাকা গাড়ি গুলো ধীরে ধীরে গতি বাড়াচ্ছে।শ্রাবণী তড়িঘড়ি করে গাড়ি থেকে নেমে গেল।বললো,
_”আপু আমি আসি।গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে।ব্যাগ আছে গাড়িতে।দেখা হবে।”
_”,এইই,তুমি আমার সাথে চলো শ্রাবণ।আমি পৌছে দেব।”
কথাগুলো শ্রাবণীর কান স্পর্শ করেছে কি না তা বোঝা গেল না।শুধুমাত্র দেখা গেল ধীরে ধীরে সে উঠে গিয়েছে বাসের মধ্যে।এরপর এগিয়ে গেল বাস দ্রুততার সাথে।পেছনের সারি থেকে গাড়ি হর্ণ দিচ্ছে অনবরত।আর দাঁড়িয়ে থাকা গেল না।ড্রাইভার কে বলতেই তিনি গতি বাড়িয়ে দিলেন।
জনমানব হীন ক্লাবঘরটাতে বসে নেশা করছে সুজন।সে একা নয়,সাথে আছে এরো চারজন।টেবিলের উপর সাজিয়ে রাখা কাঁচের গ্লাসগুলোতে বিদেশী মানের চড়া দামের এলকোহল।যাবতীয় রাগ,জেদ,ঘৃণা সব একাকার করে মিশিয়ে সেটা পান করছে মদের সাথে।রাগে মস্ত শরীরখানা রি রি করছে সূজনের।মদ শেষ করে শূণ্য গ্লাস টাকে আঁচড়ে ফেলে দিলো ফ্লোরের উপর।
_”আমারে এতদিন কুত্তার মতো খাটাইলো।অথচ দিন পাইয়া এখন আর পাত্তাই দেয় না।আরে আমি না থাকলে শিকদারের কোনো অস্তিত্ব ই থাকতো নাকি?শালার নেমকহারাম।কুত্তারবাচ্চা আমার গায়ে হাত দেয়।আমারে গালি দেয়।মাইয়া মানষের ছোয়া পাইয়া সব ভুইলা গেছে।লুইচ্চা। আরে মাইয়া মানষের অভাব আছে নাকি?ওই মাইয়াই ক্যান?ইচ্ছা তো করতেছে ছিঁইড়া খুঁইড়া খাই।”
রায়হান মদের গ্লাসটাকে হাতে নিলো।এরপর এক ঢোক গিলে বিচ্ছিরি রকমের হাসলো।ব্যঙ্গ করে বললো,
_”এখন তো কথার তোঁড়ে বিল্ডিং ভাঙে।অথচ পরশ শিকদারের সামনে গেলেই তো সব হাওয়া ফুঁস!”
ক্ষেপে গেল সুজন।কিছু বলার প্রয়াস করতেই আবারো নিভে গেল।রাকিব কিছু বলতে হিমশিম খাচ্ছে।কিন্তু না বলেও পারছে না।পরিশেষে আমতা আমতা করে বললো,
_”তোরা খালি খালি এতো ঝামেলা বাড়াস।আরে ভাই তো কইছেই বাহারের সাথে মিলেমিশে থাকতে।তুই ভাব সরদার শিকদার যদি মিইল্লা এক দল হয় তাহলে তো পুরা পিরোজপুর আমাদের দখলে।রাজত্ব আমরাই করবো।শামসুল সরদার বুড়ো হইছে।তাছাড়া জামাই এর বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই আর দাঁড়াইবে না।ক্ষমতা থাকবে শুধুমাত্র পরশ ভাইয়ের হাতে।আর আমরা পরশ ভাই’র পুরোনো খাসা লোক।আমাদের দাপট ই থাকবে আলাদা।বাহার রে আর ওর দলের সব কয়টারে রাখমু পায়ের তলায়।”
সুজন ক্ষোভের দৃষ্টি নিয়ে তাকালো রাকিবের দিকে।এরপর অশ্রাব্য গালি দিয়ে বললো,
_”ক্ষমতা তোরে ঠিকঠাক ভাবে দেবে।একবার এক হউক না পরে এই সুজনের কথা মিলাইয়া দেখিস।পায়ের তলায় রাখবে।আর ওই যে তোদের ভাই,ও কিচ্ছু বলবে না।সারাজীবন টা আমি কোপ খাইলাম,কোপাইলাম,মামলা খাইলাম,জেল খাটলাম অথচ আমার কোনো মূল্যই নাই?ওই বাহার আমারে এই কয়টা মাস আগেও কোপাইছে।সেলাই এর দাগ এখনো ঘুঁচে নাই।কিভাবে ওর লগে মিল্লা দলে থাকমু আমি?”
_”সেতো তুমিও কোপাইছো।”
_”হ কোপাইছি।তো?আরে আমি তো ঐটাই কই।ও আমারে কোপাইছে, আমি ওরে কোপাইছে।আমাদের মধ্যে সম্পর্ক টা খালি কোপাকুপি-চাপাতির।এই জায়গায় কোনো বন্ধুত্ব নাই।একসাথে কাজ করার প্রশ্নই আসে না।”
_”আমরাও তো কত ঝামেলা করছি।তাইলে এবার কি করবো?ভাই রে কে বুঝাইবে?সেতো আমাদের মুখে তার বিয়ের নাম শুনলেই ক্ষেপে যাবে।”
হাসলো সুজন।হতাশার সেই হাসির সাথে বললো,
_”বাহারের সাথে কি আমার কোনো শত্রুতা ছিলো?ওর দলের সাথে কি তোগো কোনো শত্রুতা ছিলো?এই শত্রুটার সম্পর্ক টা তো তোর ভাইয়ের জন্যই হইছে।তার জন্য আমরা মারামারি করলাম,খুনাখুনি করলাম এখন সেই মিইশা যাইতেছে।আমাগো কথা শোনার প্রয়োজনই নাই তার।ক্ষমতা পাইয়া গেলে সব শালা এক।”
রাকিব উঠে দাঁড়ালো।বললো,
_”এর জন্য যে আবার লাখ লাখ টাকা নিছো হাতাইয়া।তার বেলায়?আমরা কোপাকুপি করছি টাকার বিনিময়ে।ভালোবাইসা না।যদি একটা নির্বাচনে আমাগো টাকা না দিতো তাইলে এই পোলাপানের মধ্যে একজন ও থাকতি না তোরা।নিজেদের ইচ্ছায় করছোস।এখন শেষে তারে দোষ দিলে তো আর হবে না। ”
কথাটা শুনতেই সুজন ক্ষেপে উঠলো।চট করে উঠতে গিয়েও গা গুলিয়ে আবার পড়ে গেল চেয়ারে।অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে গেছে তার। রাকিব আর দাঁড়ালো না সেখানে।হনহন পায়ে চলে গেল ক্লাবঘর ত্যাগ করে।উদ্দেশ্য পাভেলের সঙ্গ পাওয়া।তাদেরকে দ্রুতই সবটা জানাতে হবে।নিত্যনতুন ভাবে সুজন যে দলের মানুষদের মধ্যেই বিষ ঢেলে আলাদা হতে চাইছে এটা জানানো খুবই দরকার।নইলে খুব শীঘ্রই বিশাল বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
রাত তখন সাড়ে সাতটা।সন্ধ্যার পরবর্তী এই সময়টা খুব বেশী নিস্তেজ না হলেও জনবহুল নয়।সদর পেরিয়ে গিয়ে ব্রিজ পার হওয়ার পর থেকেই পুরো রাস্তাটা একদম নিস্তব্ধ।একধার দিয়ে কচুরিপানায় ঠাসা খাল, অন্যধার দিয়ে কতক্ষণ পর পর জঙ্গল এবং বাকিটা ধানক্ষেত।বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে আমগাছ গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে স্পর্শী।শ্রাবণীর সাথে দেখা হয়েছে বরিশাল বসে।এইতো বিয়ের কেনাকাটা করার জন্যই ছোট চাচিকে নিয়ে ঢাকায় গেছিলো সে।আর্শি অসুস্থা থাকায় নিয়ে আসা হয়নি।মাগরিবের ঠিক মিনিট পনেরো আগে দেখা হয়েছে শ্রাবণীর সাথে।বরিশাল থেকে বাসে আসতে আসতে নিশ্চয়ই রাত হয়ে যাবে।মেয়েটা কি পারবে?ভাবতেই দুশ্চিন্তারা চেপে ধরলো স্পর্শী কে।কাজ টা মোটেও উচিত হয় নি।গাড়িতে জায়গা ছিলো।ওকে সাথে নিয়ে আসাটাই উচিত ছিলো তার।এতোটা রাত হয়েছে।এরপর সদরে নেমে আবার সিএনজি বা ভ্যান ধরতে হবে।ও কি পারবে একা?পরক্ষণেই দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেললো।নিশ্চয়ই ওর বাবা নিতে আসবে মেয়েকে।
বাড়িতে পৌছেছে মাত্র চল্লিশ মিনিটের মতো হবে।এসেই ব্যাগপত্র নিচে রেখে সোজা বাথরুমে ঢুকেছে।সারা দিনের জার্নির ক্লান্তি,অবসাদ পুরোটা গোসলের পানির সাথে মিলিয়ে দিয়ে শরীর হালকা করে বেরিয়েছে।এরপরই নিজেকে আরেকটু নির্মল হাওয়া দিতে বারান্দায় দাঁড়িয়েছিলো।তোয়ালে টা পেঁচিয়ে চুলগুলো মুছে নিলো আলগোছে।এরপর সেটাকে মেলে দিয়ে ত্রস্ত পায়ে ঢুকলো রুমের মধ্যে।খাটের উপর বসে ফোনটাকে হাতে নিতেই ঠোঁটে হাসি ফুটলো।
_”আজ সারাদিনে একবার ও কথা বলো নি তুমি।ফোন টাও রিসিভড করো নি।বেশ!গুণে রাখলাম।এর ডাবল কল না দেওয়া পর্যন্ত আমিও ফোন ধরছি না স্পর্শীয়া সরদার।”
পুরো সাতাশ টা ফোন কলের পর একটা মেসেজ দিয়ে ক্ষান্ত হয়েছে পরশ শিকদার।সংখ্যার দিকে তাকাতে আরো হাসি পেল।এই লোক ধীরে ধীরে যেন বাচ্চাতে রুপান্তর হচ্ছে।একবার ফোন না তুললে দশবার দিবে।দিতেই থাকবে।স্পর্শী অবশ্য ইচ্ছে করেই ধরেনি।এতো এতো ক্লান্তির মাঝখানে শরীর সায় জানাচ্ছিলো না।বালিশ টাকে খাটের সাথে হেলিয়ে দিয়ে সেটাতে ঠেস দিয়ে আধশোয়া হয়ে বসলো স্পর্শী।কল লাগালো পরিচিত নম্বর টাতে।কিন্তু ওপাশ থেকে রিসিভড হলো না।স্পর্শী আবারো হাসলো।নিশ্চয়ই এই লোক তার থেকে ৫৪ টা কল পাওয়ার জন্য জেদ ধরে অপেক্ষা করে আছে।কিন্তু এটা কি আদৌ সম্ভব?ইহুম!মোটেই না।মেসেজ অপশনে গিয়ে গুটি গুটি অক্ষরে লিখলো,
_” শরীর ভালো নেই এমপিসাহেব।আমি অসুস্থ।”
মেসেজ টা সেন্ড করে সেকেন্ড দশেক অপেক্ষা করতে হলো স্পর্শীর।এর মধ্যে অপর প্রান্ত থেকে কল লাগালো পরিচিত পুরুষ টা।রিসিভড করে কানে নিয়ে ক্লান্ত স্বরে সালাম দিলো। ওপাশ থেকে উত্তর আসলো।সাথে সাথেই তড়িঘড়ি করে আরো দু তিনটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো।
_”কি হয়েছে তোমার?কই গত রাতে তো কিছু জানাও নি?ডাক্তার দেখিয়েছো?”
ঠোঁট কাঁমড়ে নিজের হাসিটা আটকালো স্পর্শী।কন্ঠস্বরকে নিচুতে নিয়ে বললো,
_”ডাক্তার দেখানোর মতো তো আর অসুস্থ হইনি।যতটা রোগ আছে সেটা আপনি এলেই সেরে যাবে।”
ভ্রুঁ কুঁচকে ফেললো পরশ। এপাশ থেকে স্পষ্ট চাপা হাসির শব্দ পেয়েছে সে।নাকের পাটাতন ফুলিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বললো,
_”তুমি কি আমার সাথে ফ্লার্ট করতে চাইছো?সরি টু সে আমি মোটেও ইন্টারেস্টেড নই।কল কেন ধরো নি?কোথায় গেছিলে?”
_”উঁহু!রাগ কেন করছেন?বিয়ের বাজার করতে গেছিলাম।ঢাকায়।আরে বাবা,আপনাকেই তো বিয়ে করছি।মোটকথা লাভ তো আপনার’ই।এতো সুন্দর একটা বউ পাচ্ছেন যে।সারাটা দিন কতটা কষ্ট করেছি জানেন?সে হিসেবে আপনাকে যদি একটু না জ্বালাই তাহলে তো শান্তি পাবো না।ইনফ্যাক্ট পাচ্ছিলাম ও না।তাই কল ধরি নি।ইচ্ছে করেই।বুঝলেন?”
পরশ নিশ্চুপ রইলো।দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
_”স্টুপিড!পাগল!ফোন দেবে না আমায়।”
স্পর্শী শুনলো,হাসলোকিছু বলার প্রয়াসও করলো।কিন্তু এরমধ্যেই ফোনের মধ্যে শুনলো পরশের কথা।অন্যকারো সাথে কথা বলছে নিশ্চয়ই।হ্যাঁ এটা পাভেলের কন্ঠস্বর।দু ভাই মিলে কি বলছে শোনার জন্য কান পাততেই শ্রবণ হলো কিছু অশ্রাব্য গালি।স্পর্শী হতবাক হলো।লজ্জায় শ্রবণশক্তি রা যেন নুয়ে পড়েছে।পরশের চিৎকার শোনা যাচ্ছে।কিন্তু কেন?এইতো সুন্দর করেই কথা বলছিলো।হুট করে কি এমন ঘটলো যে এতটা রাগ?
বারকয়েক ‘হ্যালো-হ্যালো’ বলেও লাভ হলো না।ওপাশ থেকে ফোন কেঁটে দিয়েছে।এখন আর ফোন দেওয়া যাবে না।লোক টা রেগে আছে।পরবর্তীতে মাথা ঠান্ডা হলে নিশ্চয়ই জানা যাবে।নিজেকে বুঝ দিয়ে ত্রস্ত পায়ে নিচে নামলো।উদ্দেশ্য শপিং করা যাবতীয় কিছু অন্যদের খুলে দেখানো।নিচতলায় নামতেই পুণরায় অবাক হলো।দ্রুতপায়ে সদর দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকছে সোভাম।ঢোকার পথে আর্শিকে সোফায় দেখতেই সাবধান করলো।বললো,
_”রাতে বাইরে বের হবে না।রাস্তাঘাট ভালো না এখানকার।এটা শহর নয় যে কোনায় কোনায় লোকজন থাকবে।”
অবাক হয়ে ভাইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো আর্শি।হুট করে এমন কথা কেন বললো সেটা বোধগম্য হলো না।স্পর্শী এগিয়ে গেল ভাইয়ের দিকে।ভ্রুঁ যুগল কিঞ্চিৎ কুঁচকে বললো,
_”কেন?রাতে বের হলে কি হবে?আর কি হয়েছে?তোমাদের লালন-পালন করা গেস্টরুমের কিছু বান্দাকে দেখলাম দৌড়ের উপর গেট পেরিয়েছে।কেন?”
কথাটা মোটেও পছন্দ হলো না সোভামের।অন্যদিকে তাকিয়ে গম্ভীর হয়ে বললো,
_”নিজের বাহাদুরি প্রত্যেকটা জায়গায় খাটাতে যেও না।বিপদে পড়তে সময় লাগে না।তোমার বড় হওয়া ভিন্ন পরিবেশে,তাই বলে পরিস্থিতিকে ছোট করে দেখো না।আগামী উপজেলা নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি এমনই থাকবে।ভুলেও রাতে গেটের বাইরে বের হবে না।”
চিন্তিত হলো স্পর্শী।বললো,
_”বুঝলাম কিন্তু ঘটেছে টা কি?”
বলতে গিয়েও কিছুটা হিমশিম খেল সোভাম।অসস্তিও হলো।পরক্ষণেই ঝেড়ে ফেললো জড়তা।গমগমে কন্ঠে বললো,
_”রায়বাড়ি যাওয়ার রাস্তায় গ্যাং-রেপ হয়েছে।মেয়েটার অবস্থা শোচনীয়।সদরে নিয়ে গেছে।”
স্তব্ধ হয়ে গেল স্পর্শী।হাত-পা কাঁপছে তার।কম্পনরত কন্ঠে বললো,
_”মেয়েটা গায়ে কি বেগুনি রঙের টপস ছিলো?”
রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৬৩
_”আমি দেখি নি।মেয়েটা নাকি রায় বাড়িতেই যাচ্ছিলো।ড্রাইভার বললো বাস থেকে নেমেছে।”
সেকেন্ড খানেক ও আর অপেক্ষা করলো না স্পর্শী।হাতের ফোন টা নিয়ে সোজা সদর দরজার দিকে এগিয়ে গেল।সোভাম অবাক হয়ে তাকালো।ধমক দিয়ে বললো,
_”তুমি যাচ্ছো কোথাও?স্পর্শী দাঁড়াও।একা কেন যাচ্ছো?আমি নিয়ে যাচ্ছি।এইই বেয়াদব!!