রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৬৬

রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৬৬
সিমরান মিমি

“কোথায় আছো তুমি? ”
ফোন রিসিভড করতেই ওপাশ থেকে ধমক স্বরুপ প্রশ্ন টা ছুঁড়ে মারলো।অবাক হলো স্পর্শী।পরক্ষণেই অলসতা জড়ানো কন্ঠে উত্তর দিলো।
_”কোথায় থাকবো এই রাতে?বাড়িতে আছি।”
পরশ ক্ষান্ত হলো।পরক্ষণেই গম্ভীর কন্ঠে পুণরায় প্রশ্ন করলো।_”হস্পিটালে গেছিলে কেন?”
_”কিভাবে দেখলেন?আপনিও ছিলেন নাকি সেখানে?থাকলে কথা বললেন না কেন?কই,আমি তো আপনাকে দেখিনি।”

মনযোগ সহকারে কথাগুলো শুনলো পরশ।কিন্তু পুরো বাক্যের মধ্যে কোথাও তার উত্তর নেই।বরং কথাগুলোকে ঘুরিয়ে ঠিক উল্টোভাবে তাকে প্রশ্ন ছুঁড়ছে।
_”আমি জিজ্ঞেস করেছি,তুমি কেন হস্পিটালে গেছিলে?”
_”ওহহ,আসলে আমি মেয়েটাকে দেখতেই গেছিলাম।”
পরশ ক্ষেপলো।কিন্তু সেটাকে প্রকাশ করলো না।নিজেকে সর্বোচ্চ শান্ত রেখে বললো,
_”তোমার কি সেখানে যাওয়ার খুব বেশিই প্রয়োজন ছিলো স্পর্শীয়া?এমনিতেই রাস্তাঘাট ভালো না।এর মধ্যে তুমি এই রাতে কোন সাহসে বাড়ি থেকে বেরিয়েছো?”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

শোয়া থেকে উঠে বসলো স্পর্শী।পা দুটোকে গুছিয়ে আসন দিয়ে বসলো।মাথাটা যন্ত্রণায় ছিঁড়ে যাওয়ার উপক্রম।কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে না।কিন্তু এই মুহুর্তে কল কাঁটতেও মন সায় দিচ্ছে না।একের পর এক বিরক্তিকর প্রশ্ন গুলো তারমধ্যে রাগ টাকে জিইয়ে ক্রমশ বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে।স্বাভাবিক কন্ঠে বললো,
_”এই কথাগুলো বলতে আপনার একটুও লজ্জা লাগছে না এমপিসাহেব?আপনি এই অঞ্চলের এমপি।ক্ষমতায় আপনি আছেন।আর আপনি থাকতেও আপনার’ই মা-বোনেরা রাস্তায় নিরাপদ নয়।এরকম একটা অশ্লীল ঘটনা ঘটলো সেটাও মধ্যরাতে নয়,সন্ধ্যারাতে।আপনার কি উচিত না জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়া।নাকি শুধু ভোট গুলো পাওয়ার জন্যই এতোকিছু?কিভাবে, কোন মুখে আবার আমাকে বলেন রাতে যেন বের না হই,এতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।আপনার তো উচিত ওই কীট গুলোকে জনসম্মুখে জবাই করা;যাতে অন্যরা এই কাজ করার আগে একশো বার ভাবে।”

বেশ কিছুক্ষণ নিরব রইলো পরশ।ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে স্পর্শীও কিচ্ছু বলছে না।হুট করেই যেন দুপাশ টা বিষাদে ছেঁয়ে গেলো।কিন্তু এই নিশ্চুপতা তো বেশিক্ষণ স্থায়ী করা যায় না।প্রতিটা মুহুর্তে, প্রতিটা ক্ষণে তার মনে শঙ্কা বেড়েই যাচ্ছে। এটা হতে দেওয়া উচিত না।পরশ কন্ঠে নমনীয়তা আনলো।বোঝানোর স্বরে বললো,
_”দেখো স্পর্শীয়া,অঞ্চল টা মাত্র চার বর্ণের ক্ষুদ্র একটা শব্দ হলেও বাস্তবিক ভাবে এর বিস্তৃতি অনেক।হুট করে বললেই সবটা সামলানো যায় না।একটা নির্দিষ্ট সময় আর সুযোগের প্রয়োজন হয়।এতো দিনের বিশৃঙ্খলা একদিনে ঠিক করা যায় না।পরিস্থিতি অনুকূলে নিতে পর্যাপ্ত সময়ের প্রয়োজন।বুঝেছো?”
ভ্রুঁ যুগল কুঁচকে ফোনের দিকে তাকিয়ে রইলো স্পর্শী।বললো,

_”বিশৃঙ্খলা মানে?এতোদিন তো আব্বু সামলেছে।তার মানে আপনি বলতে চাইছেন আমার বাবা তার দায়িত্ব পালন করতে পারে নি?একথা বলবো আব্বুকে?তারপর বিয়ে একদম খাইয়ে দেবে।”
আলতো হাসলো পরশ।বললো,
_”হয়েছে,সব দোষ আমার।দয়া করে এখন আপনি ঘুমিয়ে পড়ুন।মাঝখানে কাল একটা দিন।পরশু বিয়ে।আর কোনো ঝামেলা পাকিয়ো না।”
স্পর্শীয়া ভাবুক স্বরে উত্তর দিলো।বললো,”হুম।”পরক্ষণেই আচমকা কিছু মনে পড়ে গেল।তড়িঘড়ি করে বললো,
_”এই আপনি পূজাকে দেখতে গেছিলেন?”
মুহুর্তেই গুরুগম্ভীর হয়ে গেল পরশ।
_”না!কাল যাবো।”

_”তাহলে প্লিজ আমাকেও নিয়ে যাবেন।আপনি আব্বুকে বলুন না।আমি একা বের হলে ওরা রাগ করে।আপনি বললে তেমন কিছু বলবে না।পূজাকে দেখতে আমিও যেতে চাই।”
_দরকার নেই কোনো।আর তাছাড়াও আমাদের এখনো বিয়েটা হয়নি।বিয়েটা হোক,সব জায়গায় নিয়ে যাবো।কিন্তু তার আগে নয়।জনসম্মুখে এটা দৃষ্টিকটু ঠেকবে।”
কপাল উঁচিয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে রইলো স্পর্শী।এই প্রথম বার নিজ থেকে কোনো প্রস্তাব করলো আর সেটাও বেশ অপমানের সাথে রিজেক্টেড হলো।বিষয়টা লজ্জার।কিন্তু তাও তাকে টলানো গেল না।বরাবরের মতো ব্যঙ্গ করে বললো,

_”বাহ!কি দারূন সভ্য এমপি।বিয়ের আগে যেন এই ফোনে কোনো কল ও না আসে।সেটাও দৃষ্টিকটু ঠেকবে।”
বলেই কেঁটে দিলো ফোন।এরপর ফোন টাকে সাইলেন্ট করে দুরে সরিয়ে রাখলো।মাথাটা যেন ছিঁড়ে পড়ে যাবে।ধীর পায়ে বিছানা থেকে উঠলো।লাইট জ্বালাতে ইচ্ছে হলো না মোটেও।পরিচিত রুমটাতে আবছা অন্ধকারের মধ্যে গিয়ে দাঁড়ালো বাথরুমের সামনে।লাইট জ্বালিয়ে ঢুকে গেল সেখানে।মাথায় বেশ কিছুক্ষণ ধরে ঠান্ডা পানি ঢাললো।এরপর সেটা মুছে এগিয়ে এলো বিছানার দিকে।ঘুমানোর প্রয়াস চালালো ঘন্টাখানেক ধরে।কিন্তু ঘুম কিছুতেই ধরা দিলো না।মাথার মধ্যে এক অদ্ভুত সত্তা দুশ্চিন্তা জমা করতে লাগলো বারংবার।ভালো লাগছে না।ঘুম ও আসছে না।এভাবেই ছটফট করতে করতে কেঁটে গেল সারাটা রাত।

সকালের নির্মল বাতাস এবং গা-স্পর্শী রোদ টাকে গায়ে মাখিয়ে নেমে গেলো গাড়ি থেকে।হস্পিটালের সামনে প্রচুর ভিড়।বিশেষ করে আজকে প্রেস মিডিয়ার,সাংবাদিক দের উপস্থিতি খুব বেশী ঠেকছে।বিষয়টা বোধগম্য হতে বেশিক্ষণ লাগলো না যখন দলীয় কিছু লোকের উপস্থিতি দৃষ্টিসীমানায় ধরা দিলো।স্পর্শী এদিক টা গায়ে মাখলো না।পরশ শিকদার হয় ইতোমধ্যে এসে গেছে না হয় কিছুক্ষণের মধ্যেই আসবে।যেহেতু সভ্য ব্যক্তি তাকে আনতে অনীহা দেখিয়েছে সেহেতু তার সামনে পড়া অথবা তার সাথে দেখা করার প্রশ্নই আসেনা।গটগটে পায়ে হেঁটে এলো লিফটের দিকে।বাড়ির কাউকে বলে আসে নি সে।বললে নিশ্চয়ই বেঁকে বসতো।কিন্তু তার মানে এটা নয় যে সে লুকিয়ে এসেছে।মা-কাকি তাকে দেখেছে।এমনকি কোথায় যাচ্ছে সেটাও জিজ্ঞেস করেছে।কিন্তু তাদেরকে কোনোরকম পাত্তা দেয় নি স্পর্শী।বরংচ চলন্ত পায়েই সদর দরজার দিকে এগিয়ে যেতে যেতে উত্তর ছুঁড়ে মেরেছে।বলেছে,

_”আসছি।”
এরপর আর থামে নি।পায়ের গতিকে দ্রুততর করে এগিয়ে এসেছে গ্যারেজের দিকে।লিফট থেকে নামতেই নির্দিষ্ট কেবিনটার দিকে এগিয়ে গেল।কেবিনের মধ্যে কিছু ওষুধ পত্র সহ জামাকাপড় গোছাচ্ছেন এক বয়বৃদ্ধা নারী।মাথায় সিঁদুর দেখে মনে হলো ইনি পূজার আত্মীয় অথবা খুব সম্ভবত মা।পাশেই আরো দুজন লোক।একজন গতকালকের মহিলা এবং অন্যজন পুরুষ।স্পর্শী এগিয়ে গেল।পূজার উদ্দেশ্যে বললো,
_”একি?তোমরা ব্যাগ গোছাচ্ছো কেন?কোথায় যাচ্ছো?”
অশ্রুসিক্ত লোচন খানি স্পর্শীর দিকে মেলে ধরলো কিয়ৎক্ষণ।কিন্তু মুখ তার স্থবির।এপাশের মহিলা টি এগিয়ে এসে বললো,

_”তুমি কাইল রাইতে আইছিলা না?
_”জ্বী!আপনিও তো ওর সাথেই ছিলেন কাল।ওকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আনটি?”
মহিলাটির মুখ হাস্যোজ্জ্বল। বললেন,
_”এমপি আইছিলো।উনি কইলেন মাইয়াডারে ভালো চিকিৎসা দেবেন।উনিই সব খরচ দেবেন।কি ভালো মানুষ!ডাক্তার ও কইছে বরিশাল নিয়া যাইতে।ওই জায়গায় বড় এক ডাক্তারের খোঁজ দিছে।ওইখানেই নিয়া যাইবে এখন।আমি যামু না।এই যে ওর মায় আর কাহা’য় আছে।ওরাই নিয়া যাইবে।”
স্পর্শী নিরব দৃষ্টিতে লোকটির দিকে তাকালো।এরপর প্রশ্নবোধক চাহনিতে বললেন,
_”আর ওর বাবা আসে নি?”
মহিলাটি ক্ষেপে উঠলেন।ব্যঙ্গ করে বললেন,

_”হেয় কি আর আইবো?পাষাণ কোনহান কার।মাইয়া ডা যদি মইরা যাইতো?নাক ভরা সরম।যেন মাইয়াডা ইচ্ছা কইরা সম্মান খুয়াইছে।আমি পর হইয়া আইজ একদিন লগে আছি। আর হে জন্ম দিয়াও আয় নায়।”
পূজার মার দৃষ্টি এখনো নিরব।তিনি যেন স্তব্ধ।নিস্তব্ধ হয়ে আনমনে কাপড় গোছাচ্ছেন।স্পর্শী তার সাথে কথা বললো না।আলগোছে গিয়ে পূজার পাশে বসলো।নমনীয় কন্ঠে বললো,
_”কারা ছিলো মনে করতে পেরেছো কিছু?”
মাথা নাড়ালো পূজা।অস্ফুটস্বরে বললো,_”জাকির কাকা সকালে আসছিলো।উনি নিজেই আমারে কইলো পুলিশরে যেন সবার নাম কই।”

_”তুমি কি বলে দিছো?”
মেয়েটা মাথা নাঁড়ালো।স্পর্শী ক্ষোভের দৃষ্টি নিয়ে তাকালো।বললো,
_”কাল রাতে তাহলে বলো নি কেন?”
_”ভয় লাগছিলো।আর কাকা বারণ করছিলো।”
স্পর্শী নিজেকে সংযত করলো। শান্ত কন্ঠে বললো,
_”পুলিশ কি গ্রেফতার করেছে তাদের?আর তোমাদের এমপি বিচারের বিষয়ে কিছু কি বলেছে?”
মেয়েটা কিছুটা আহত হলো।বিষন্ন গলায় বললো,

_”পুলিশ বলেছে তারা বিষয়টা দেখবে।আর যিনি এমপি, তিনি এ ব্যাপারে কিছু বলে নি।শুধুমাত্র আমার চিকিৎসা আর পড়ালেখা যেন ঠিকঠাক ভাবে চলে সে ব্যাপারে সাহায্য করবে বলেছে।আর কিছু না।”
অবাক হলো স্পর্শী।আশ্চর্যের রেশ ধরে বললো,
_”কিছুই বলেনি?”মেয়েটা মাথা দুপাশে নাড়িয়ে না সূচক জবাব দিলো।থমথমে মুখে উঠে দাঁড়ালো স্পর্শী।এতটা দায়িত্বহীনতা সে মোটেও আশা করেনি পরশ শিকদারের কাছ থেকে।তিনি যেন ভবলেশহীন,একটা অসহায় মেয়েকে সাহায্য করছেন।অথচ এই অসহায়ত্বের পেছনে যারা দায়ী তাদের দিকে ফিরেও তাকাচ্ছেন না।নাহ!তাকে বলে লাভ হবে না।তিনি তো আর আইনের কেউ নন।মাত্র একজন জনপ্রতিনিধি।যা করার আইনের শাসকরা করবে।গমগমে কন্ঠে পূজার উদ্দেশ্যে বললো,

_”নাম গুলো বলো।এক্ষুণি।”
আঁতকে উঠলো পূজা।জড়ানো কন্ঠে বললো,
_”কেন?”
_”কেন মানে পুলিশ কে তো বলে দিয়েছো।আমাকে বলতে এতো সমস্যা কোথায়?”
মেয়েটি নুইয়ে গেল।এই অভিশপ্ত ঘটনার বিবরণের প্রত্যেকটা শব্দ যেন তাকে পুণরায় ধর্ষিত করছে।সে চাইছে না মনে করতে।তাও কেন সবাই মনে করিয়ে দেয়।কেন?কান্নাজড়ানো কন্ঠে থেমে থেমে নাম গুলো আওড়ালো।_”সুজন মির্জা,সাকিব জমাদ্দার,রাসেল শেখ।”

_”ভুক্তভোগী পূজা ঘটনায় আসামী তিনজনকে গ্রেফতার করেছেন?”
নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে সামনে তাকালো ইনস্পেকটর। তিনি এই থানায় নতুন।হুট করেই কেউ এভাবে এসে তার সামনে তদারকি করবে এটা যেন বিশাল অপমানের।চোখ ঘুরিয়ে স্পর্শীকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নিলো।সামান্য একটা মেয়েমানুষ গলা উঁচিয়ে কথা বলছে তার সামনে ভাবতেই হাসি পাচ্ছে।কিন্তু ডিউটিরত অবস্থায় এই অনুভূতি প্রকাশ করলেন না।বরং বরাবরের মতো নির্লিপ্ত কন্ঠে প্রশ্ন করলেন।
_”আপনি ভুক্তভোগীর কে হন?”

কপাল কুঁচকে তাকালো স্পর্শী। এই লোক অপরিচিত।হঠাৎই বাম দিকে তাকিয়ে দেখলেন পরিচিত সাব ইনস্পেকটরকে।যিনি আর্শির লোকেশন ট্র্যাকিং করতে সাহায্য করেছিলেন।স্পর্শীকে দেখতেই তিনি এগিয়ে এলেন।আলতো হেসে বললেন,_”আরে ম্যাডাম। আপনি?”সাথে সাথেই মাথা নুইয়ে নতুন ইনস্পেকটর এর উদ্দেশ্যে বললেন,_”স্যার,আপনি ওনার সাথে এভাবে কথা বলছেন কেন?চাকরির ভয় নাই?উনি এখানকার সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল সর্দারের মেয়ে।ভীষণই চিজ।একটু সামলে কথা বলুন।আর সবথেকে বড় কথা বর্তমান এমপি পরশ শিকদারের হবু বউ।”

ইনস্পেকটর খানিকটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেন।এরপর সামনের দিকে তাকিয়ে বললেন,_”দেখুন ম্যাডাম।পুলিশদের দায়িত্ব শেখাতে আসবেন না।আমরা নিজেদের ডিউটি যথাযথ ভাবে পালন করতে জানি।আর পূজা ধর্ষণের বিষয়ে মাত্রই সকালে সাধারণ ডাইরি করা হয়েছে।বললেই তো আর গ্রেফতার করা হলো না।সময়ের প্রয়োজন।”
সূচালো নজরে ইনস্পেকটর এর দিকে তাকালো স্পর্শী।বললো,_”আসামী মাত্র তিনজন।সাকিব জমাদ্দার এবং রাসেল শেখ দুজনেই পিরোজপুরের, আর বাকি রইলো সুজন মির্জা;তিনি ভান্ডারিয়ার।এদের বাস স্থান খুব বেশি দূরে নয় ইনস্পেকটর সাহেব।পুরো একটা রাত, একটা সকাল বয়ে দুপুরে পড়েছে।এখনো আসামীদের একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেন নি।আর আপনি আমাকে দায়িত্বের কথা বলছেন।তাহলে আমার কি উচিত কমিশনারের সাথে কথা বলা?”

একটুও ঘাবড়ালেন না ইনস্পেকটর। বরং তেজ নিয়ে বললো,_”সে আপনি কমিশনারের কাছে যান আর ডিসির কাছে।মোদ্দাকথায় আমার উত্তর ই পাবেন।যাই হোক, ঘটনাটা খুবই সেন্সিটিভ।আর ভুক্তভোগীর পিতামাতাও চাইছে না এটা খুব বেশি জানাজানি হোক।তাই বিষয়টা নিয়ে আমাদের ঘাঁটাঘাঁটির প্রশ্ন আসে না।আর যেখানে এমপিসাহেব নিজেই কমিশনারকে বলেছেন তার এলাকার ঘটনা তিনি সামলে নেবেন এখানে পুলিশের কোনো প্রয়োজন নেই সেখানে আমি সামান্য এক ইনস্পেকটর কিইবা করতে পারি।আসামী বাদী,বাদীর বাবা-মা,এমপি, কমিশনার যেখানে এক;সেখানে আপনি আর আমি মামুলি এক ইনস্পেকটর হয়ে এইসব বিষয়ে না জড়ানোই ভালো।কি বলেন ম্যাডাম?”

রাগে তরতর করে দাঁড়িয়ে পড়লো স্পর্শী।ইনস্পেকটরের উদ্দেশ্যে বললো,_”আইন অনুযায়ী বিচার করা কি এমপির কাজ?নাকি পুলিশের?এমপি কি বললো না বললো সেটা মেনে আপনারা বসে থাকবেন কেন?আমি মাত্রই ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে এসেছি।ও কখনোই এই জানোয়ার গুলোকে ক্ষমা করার কথা বলবে না।বাকিটা জানাজানি?আর কি বাকি আছে?প্রেস মিডিয়া থেকে শুরু করে পুরো পিরোজপুর ছেঁয়ে গেছে এখন কেন শেষ পর্যায়ে ধামাচাপা দেবে ঘটনা?আপনারা কেন গ্রেফতার করছেন না?”

রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৬৫

_”ম্যাডাম চুপ করুন।গলাবাজি কেন দেখাচ্ছেন এখানে বসে।এই কথাগুলো এখানে না বলে আপনার হবু স্বামীকে বলে আসুন।তিনি এখন ক্ষমতায়।তার কথায় কমিশনার চলবে,কমিশনারের কথায় থানা।নইলে চাকরি মানা।বুঝেছেন?এবার আসুন প্লিজ!

রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৬৬(২)