রাজবধূ পর্ব ৩৭

রাজবধূ পর্ব ৩৭
রেহানা পুতুল

আমাদের সবার প্রাণপ্রিয় ও বিশ্বস্ত বাদশাকে নিয়ে। কোচার ধারালো ছুরি দিয়ে পেট কিভাবে কাটা যায় আজ টের পেলাম।” বলল জুবায়ের।
তক্ষুনি রাজ ও জুবায়েরের চোখ দু’জোড়া একসঙ্গে দপ করে জ্বলে উঠলো একশো চুল্লীর ন্যায়।
“কি করেছে বাদশা?”
কঠিন গলায় জানতে চাইলো রাজ।
“সকালে কাকা আমাকে বলল,আব্বা নাকি মীর বাড়ির হারুনের কাছে জমি বিক্রি করেছে। বাদশা গিয়ে তার সত্যতা নিয়ে আসলো।”

” হারুন কে?”
“ওই যে কাশেম আলীর বড় ছেলে।”
“ওহ। তারপর?”
” আব্বার জমি আব্বা বিক্রি করেছে,ভালো কথা। কিন্তু সেটা সবার অগোচরে কেন? কি করলো এত টাকা আব্বায়? দোকান বন্ধ করে আসার সময় বাইক নিয়ে সোজা তাদের বাড়িতে যাই। প্রমাণস্বরূপ দলিল দেখতে চাইলে তারা গড়িমসি শুরু করে। আমার সন্দেহ ঘনীভূত হয়। কৌশলে চাপ প্রয়োগ করি। বেরিয়ে আসে আসল সত্য ও তথ্য। বাদশা বিক্রি করেছে তাদের কাছে। আব্বা বাদশাকে নাকি দান করেছে সেই জমি। এখন প্রশ্ন হলো আব্বা কেন বাদশাকে জমি দান করলো? আব্বার কোন দুর্বলতা ঢাকার জন্য? তা জানতে হবে বাদশার থেকে। আর বাদশাই বা কেন সত্য আড়াল করে মিথ্যা বলল। কি সেই গূঢ় রহস্য। জানা অপরিহার্য!”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রাজ স্থাণুবৎ হয়ে গেলো। জমে গেলো বরফখন্ডের ন্যায়। তার মুখ দিয়ে কোন রা সরছে না। নাক মুখ দিয়ে উষ্ণ ধোঁয়া নির্গত হতে লাগলো। একই অবস্থা বিরাজ করছে জুবায়েরের মাঝেও। যেন কেউ ওদের দুজনের কর্ণকুহরে উত্তপ্ত সীসা ঢেলে দিয়েছে।
রাজ দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলল,
“সকালে সেই আসুক। তারপর এমন রিমান্ড দিব, হুড়হুড় করে সব স্বীকার করবে। এজন্যই ত বিয়ে করে মৌজে আছে সে। পকেট গরম যে। এখন চিল্লাপাল্লার দরকার নেই। ঘুমিয়ে পড় তুই। আমিও ভরপুর খেয়ে এলাম। তাই অস্বস্তি লাগছে। বিশ্রাম নিব।”

সেদিন সকালে যখন রাজ শ্বশুরবাড়ি চলে গেলো। এবং জুবায়ের মার্কেটে চলে গেলো। বাদশা তখনই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলে। আজই হবে এই বাড়িতে তার জীবনের শেষদিন। রাজ বাড়িতে। তার রক্ষা নেই। মনে মনে ফন্দী এঁটে নেয় নিজেকে নিয়ে। কি করবে,কোথায় যাবে। তারপর সারাদিন বাদশা তারকাজগুলো তড়িঘড়ি করে শেষ করে। সুযোগ মেললেই কাজের ফাঁকে ফাঁকে তালুকদার পরিবারের সবার সঙ্গে কথা বলে নিলো। ফুলও যতটুকু যা পারলো সবার সঙ্গে একই কাজ করলো। কিন্তু কেউই ধরতে পারল না। বাদশা, মতির মা এবং বরকতের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লো। তার গলা ধরে আসলো। চোখদুটো জলে ভরে গেলো। দুপুরে ঠিকভাবে খেতেও পারল না। বোকা বরকত বুঝে পারেনি বাদশার মতিগতি। তবে অভিজ্ঞ মতির মা অনেকটাই আঁচ করতে পেরেছে। তাই সেও বাদশা ও ফুলের জন্য চোখের পানি ছেড়েছে। সন্তানতুল্য তাদের মাথায় মাতৃস্নেহের পরশ বুলিয়ে দোয়া করেছে।

সন্ধ্যা মিলিয়ে গেলে বাদশা কাচারিঘরের চৌকিতে বসে চিঠি লিখলো তালুকদারদের উদ্দেশ্যে। লিখার সময় বরকত দেখেছে। কিন্তু সে নিরক্ষর বলে কি লিখলো বুঝতে পারেনি। পরে তার অলক্ষ্যে বাদশা চিঠিটি তার বালিশের নিচে রেখে দেয়। টুকটাক যা জিনিসপত্র ছিলো, সেগুলো ব্যাগে ভরে নেয়। প্রলম্ভিত স্বাস ছেড়ে স্ত্রীকে নিয়ে রাতে উজানপুর গ্রামের তালুকদার বাড়ির বেষ্টনী অতিক্রম করে। বাড়িতে যেতে বড় একটি তালা কিনে নেয়। সারারাত জেগে বাদশা ও ফুল মিলে ঘরের জিনিসপত্র ঠিকঠাক করে রাখে। তাদের জন্য পুরোনো একটি ব্রিফকেস ও একটি সাইডব্যাগ নিলো। সেগুলোর মধ্যে কাপড়চোপড় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কিছু সরঞ্জামাদি ভরে নিলো।
ভোর পাঁচটায় দুজন বেরিয়ে পড়ে। বেবিট্যাক্সি নিয়ে চলে যায় বাস স্ট্যান্ডে। কাউন্টার থেকে ঢাকাগামী বাসের দুটো টিকেট কেটে নেয় বাদশা। ফুলকে নিয়ে বসে থাকে পাশাপাশি চেয়ারে। অপেক্ষা বাসের জন্য।

এক অজানা আশংকায় ফুলের জান বেরিয়ে যাচ্ছে। কথাও বলতে পারছে না। ঠোঁটদুটো ফ্যাকাসে বর্ণ হয়ে গিয়েছে। সে বুঝতেই পারছে না আসলে কি হয়েছে? কেন বাদশা তাকে নিয়ে সব ছেড়েছুড়ে নিরুদ্দেশ হতে যাচ্ছে? কেন পাড়ি জমাচ্ছে গন্তব্যহীন গন্তুব্যর দিকে? কেন এত পরিশ্রম করে করা শখের নতুন ঘরটার মায়া ত্যাগ করলো সে? সে ঘুরেফিরে এসব জানতে চেয়েছে বাদশার কাছে। কিন্তু বাদশা কোন সদুত্তর দিতে পারেনি তাকে। বলছে পরে তাকে সব বলবে। কিন্তু তার মন বলছে বিশাল কোন কেলেংকারি ঘটছে তালুকদারদের সঙ্গে বাদশার। মনে হয় বাদশা তাদের সব গহনা ও ক্যাশটাকা চুরি করেছে। তালুকদার তাকে জমি দান করেছে,এটা মিথ্যা কথা। এমন বিক্ষিপ্ত ভাবনায় ফুলের অন্তরটা চূর্নবিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে৷ নিদিষ্ট সময়ের কিছু পরে বাস চলে আসে। বাদশা ও ফুল উঠে পড়লো বাসে। বাস ছেড়ে দিলো শহরের উদ্দেশ্যে।

রাত পোহালো। প্রভাত হলো। প্রভাত পেরিয়ে ভোর হলো। চারদিকে আলো ফুটিলো। বেলা গড়ালো। কিন্তু বাদশা ও ফুল এলোনা তালুকদার বাড়ির কাজে। তাদের না আসা দেখে জুবায়ের বিষয়টা ঘরের সবাইকে জানায়। ঘরের ভিতরে বাহিরে হুলুস্থুল কাণ্ড বেঁধে গেলো। রাজ ও জুবায়ের দুজনেই প্যান্ট শার্ট পরে তৈরি হয়ে নিলো বাদশার বাড়ি যাওয়ার নিমিত্তে।
জয়নুল তালুকদার বলল,
“বরকত যাক। তোরা যাওয়ার কি দরকার।”
বরকতকে না দেখে জুবায়ের গেলো কাচারিঘরে। দেখলো বরকত নাই। বাদশা ব্যবহারের কিছু নিয়ে গেলো কিনা,দেখতে লাগলো সে নজর বুলিয়ে। ক্ষিপ্র গতিতে বাদশার শোয়ার বালিশ উল্টে ছুঁড়ে মারলো। তখনই বালিশের নিচ হতে ভাঁজ করা দুই পৃষ্ঠার একটি চিঠি উদ্ধার হলো। মেলে দেখলো বাদশার হাতের লেখা। জুবায়ের চিঠিটি হাতে নিয়ে বেরিয়ে গেলো দ্রুততার সঙ্গে। ঘরে গিয়ে সবাইকে তার মায়ের রুমে ডেকে নিলো। যেন কাজের লোকেরা শুনতে না পায়। কি না কি লিখেছে আল্লায় জানে। সবাই জড়ো হয়ে আছে। রাজও উপস্থিত রয়েছে।
জুবায়ের চিঠির ভাঁজ খুলে শব্দ করে পড়তে লাগল,

“আসসালামু আলাইকুম,
শুরুতেই করজোড়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আপনাদের সবার কাছে। আমি কায়মনোবাক্যে স্বীকার করছি ছোট তালুকদার চাচায় আমারে দুইটা ধানি জমি দান কইরা দিছে। তার একটা আমি হারুনের কাছে বেইচা দিছি। সেই টাকা দিয়া বিয়া করছি। বাড়িতে নতুন ঘর করছি। মায়ের চিকিৎসার সময় করা সব দেনা শোধ করছি। জমি কেন দিয়েছে? উনি আমার জন্মদাতা। এই নিষ্ঠুর সত্য উন্মোচিত হওয়ার পর আমার মুখ বন্ধ রাখার জন্যই জমি দিছে। হয়তো ভাববেন, আমি যেহেতু চিঠিতে স্বীকার করলাম,তাহলে সামনে বলিনাই কেন?
হঠাৎ বজ্রধ্বনির মতন যখন আপনারা শুনতেন, বাড়ির খেটে খাওয়া সামান্য এক চাকরের পরিচয়। এবং সেও তালুকদার বাড়ির সন্তান। এই নিষ্ঠুর সত্য কোনদিন আপনারা মেনে নিতেন না। যদিও আমি নিরপরাধ শতভাগ। তবুও সবসময় সকল সত্য মেনে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই
উপস্থিত আক্রোশে জুবায়ের ভাই আমার গর্দান নিতো। হয়তো রাজ ভাইও৷ এতে কোন ভুল হতো না। কারণ আপনাগো মানসম্মানে চরম আঘাত আসতো। পায়ের নীচের মাটি সইরা যেতো। অথচ এখানে আমিই ভুক্তভোগী। আমিই অসহায়।

তালুকদার বংশের ছেলে বইলা মা আমার নাম রাখলো বাদশা। কিন্তু সামাজিক স্বীকৃতি আমরা মা ছেলে পাইনাই। তালুকদার আমাদের মা ছেলেরে ঠকাইছে। বারবার আমারে ও মায়েরে মারতে চাইছে। পারেনাই। যদি পারতাম নিজের নাম বাদশা পাল্টায়া ফকির রাখতাম।
এই পৃথিবীতে বাঁচার সাধ একটা পতঙ্গরও আছে। আর আমি বাদশা ত জলজ্যান্ত একজন মানুষ। আমারো কমবেশী বুদ্ধি, বিবেক আছে। আজ যখন আমার প্রাণ সংশয় দেখা দিলো আপনাদের হাতে। তখন আমি চিরতরে আপনাদের বাড়ির কাজ হতে ইস্তফা দিতে বাধ্য হলাম। আমার মন আর সায় দিল না আপনাদের বাড়ি যেতে। আমি চাইলে লোকসমাজে আমার পিতৃ পরিচয় প্রকাশ করতে পারতাম। এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার হাতে এখনো আছে। কিন্তু আমি চাইনাই আপনারা হেয় হয়ে যান সমাজে। তাই নিজের সব আশা,আকাঙ্খা বিসর্জন দিয়া বিদায় নিলাম। নতুন ঘরে ফুলেরে নিয়া সংসার করা হলো না আমার। ফেরারী জীবন বেছে নিলাম ফুলসহ। কোথায় যাবো তাও জানি না। আমাকে খুঁজতে এসে পাবেন না। আমি শুধু আপনাদের বাড়ি, আপনাদের গ্রাম নয়,আমার গ্রাম, আমার বাড়ি,এই জেলাও ছেড়ে চলে যাচ্ছি। অন্তরটা খানখান হয়ে যাইতাছে সব ছেড়ে যেতে। কিন্তু কিছুই করার নাই। আমি বড় নিরুপায় হয়ে পড়ছি।

দেশান্তরী হয়ে যাচ্ছি দুটো কারণে। এক নিজের ও ফুলের জীবন বাঁচানোর জন্য। দুই আপনাগো মানসম্মানের কথা ভেবে। আপনাদের কথা আমার জনমভর মনে থাকবে। ফুল এখন আমার স্ত্রী। তার যদি কোন ভুল হয়ে থাকে সবাই নিজগুণে ক্ষমা করে দিবেন তারে। জগতে কারো জন্য কোনকিছু থেমে থাকে না। রাজ, জুবায়ের ভাই চালাক ও সাহসী। আমার বিকল্প ঠিক কাউরে না কাউরে বাড়ির জন্য ঠিক করে নিবো। সে সকল কাজ চালায়া নিতে পারবো। পরিশেষে আবারও ক্ষমা চাচ্ছি।
ইতি…অভাগা বাদশা।”

ঘোলাটে পরিস্থিতি মারাত্মক বিদঘুটে হয়ে গিয়েছে মিনিট দশেকের ব্যবধানে। সবার হৃদকম্পন তীব্রভাবে বেড়ে গিয়েছে। বাদশার দুর্দমনীয় সাহসের কীর্তি দেখে সবাই স্তম্ভিত! নির্বাক!
তারা সমস্বরে আতংকিত গলায় কিহহ! ওমাগো! আল্লাগো! বলে আর্তনাদ করার মতো কুঁকিয়ে উঠলো। বাদশার চিঠি পড়ে তারজন্য কারো মনে তেমন কোন খেদ উপচে পড়ল না। বরং যে নির্মম সত্য আবিষ্কার হলো তা নিয়ে প্রত্যেকের মাঝে বিশেষ ভাবান্তরের সৃষ্টি হলো।
আমেনা বেগমের মুখশ্রীতে একরাশ কালো মেঘের ঘন ছায়া নেমে এলো। তিনি ব্যথিত ও তেতো গলায় বললেন,
“এভাবে সে আমাগো মা পোলারে ঠকাইলো? সেতো দেখি সাধুরূপী ভণ্ড! শুকরিয়া আমার জুবায়ের মায়ের চরিত্র পাইছে। বাপের বদ খাসলতগুলান পায়নাই।”

” আমাদের হুকুম পালন করা দাস বাদশা আমার সৎ ভাই? এই নিকৃষ্ট সত্য শোনার আগে আমি বধির হয়ে গেলাম না কেন আম্মা?”
নাকমুখ বিকৃত করে বিষিয়ে আসা কন্ঠে বলল জুবায়ের।
তালুকদার থমথমে মুখে বলল,
” এর লাইগাই ত বাদশারে সে বাড়িতে আইনা আশ্রয় দিছে। পিতৃঋণ কিছুটা শোধ করণের লাইগা সবার চাইতে বেশি খোঁজ খবর রাখছে বাদশার। মাঝে মাঝে শুনতাম বাদশার মায়েরে দেখতে যাইতো আর টাকাকড়ি দিয়া আসতো। আইজ ফাঁস হইলো আসল সত্য।”
“বাদশার কথা পুরা সত্য নাও হইতে পারে। অন্যকোন কাহিনী আছে মনে হয়।”
দুঃখিত গলায় বলল সুফিয়া বিবি।

” আর যাই হোক, বাদশা মিছা কওনের পোলা না। চিঠির সকল কথাই সত্য।”
জুবায়েরের হাত থেকে রাজ চিঠিটা নিয়ে নিলো। পূর্ণ মনোযোগে নিঃশব্দে সে চিঠিটা পড়লো। চোয়াল শক্ত করে ঘাতক কন্ঠে সে বলল,
“এখন বড় কথা হলো, বাদশা যদি বেঁচে থাকে এই সত্য প্রকাশ হবেই একদিন না একদিন। আমাদের বাদশাকে খুঁজে বের করতে হবে। বাকি জমি কোনটা জানতে হবে। আমি ঢাকায় গিয়েই সব জাতীয় পত্রিকায় তার ছবি দিয়ে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করবো। আদুরীর বিয়ের সময় সেও ছবি তুলেছে। সে ছবিগুলো কার কাছে?”
ডলি গিয়ে তার আলমারি থেকে এলব্যাম বের করে আনলো। রাজ কয়েকটি ছবি নিয়ে নিলো বাদশার।
জুবায়ের বলল,

“তার নামে চুরির মামলা দিয়ে দিই। জেলে পঁচে মরুক। কি বলিস? আমার মনে হচ্ছে আমাদের পরিবারের সব রহস্যজনক মৃত্যুগুলোর পিছনে দুর্ধর্ষ বাদশার হাত রয়েছে। অথচ কয়দিন আগেই তাকে ছাড়ানোর জন্য তোকে অনুরোধ করলাম। থানায় গিয়ে হুজুর হুজুর করে এসপির টেলিফোন নাম্বার যোগাড় করলাম। কি অদ্ভুত!”
“তোর কথায় লজিক আছে। এতে আমাদের কারোই খু* নী হতে হচ্ছে না। তবে আমার ধারণা বাদশাকে ধরতে পারলে আরো কোন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বা রহস্য জানা যাবে। ছোট্ট একটা ভূখন্ড। পালিয়ে যাবে কই। নওশাদ তালুকদারের হাত কত লম্বা তা বাদশার অজানা। মাটির নিচে লুকালেও ধরা তাকে পড়তেই হবে। পুলিশের চোখকে ফাঁকি দেওয়ার ক্ষমতা তার নেই।”

“আগে বাদশার বাড়িতে চল যাই। নিজচোখে দেখি সে আছে তা ভাগছে।”
জীবনে এত বড় দুর্দিন নেমে আসবে, এ কখনো ক্ষুনাক্ষরে কল্পনাও করেনি জয়নুল তালুকদার। চিন্তা করতেই তার মাথা ঝিমঝিম শুরু করলো। কোনরকমে দেয়াল ধরে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেন তিনি। ক্ষীণ স্বরে বললেন,
“শরীরটা খুব কাহিল লাগতাছে ক্যান জানি। আমারে পালংকে দিয়া আসো।”

রাজবধূ পর্ব ৩৬

সবাই তাকে ধরে নিয়ে গেলো রুমের দিকে। রাজ রক্তচক্ষু নিয়ে বলল,
“আমার বাবার যদি কিছু হয়ে যায়, বাদশাকে মাটির সঙ্গে পিষে ফেলব আমি।”
“মারতে হলে আগে ধরতে হবে। সেই মিশন যত দ্রুত সম্ভব শুরু করতে হবে।”
রোষপূর্ণ স্বরে বলল জুবায়ের।

রাজবধূ পর্ব ৩৮