রাজবধূ পর্ব ৪৩
রেহানা পুতুল
রাজকে দেখেই শিখা নিজেকে আর সংবরণ করতে পারেনি। নিরবে কেঁদে ফেলল।
“শিখা প্রজ্বলিত হও। এখন কান্নার সময় নয়। আমি এই মুহূর্তে তোমার লেলিহান শিখা দেখতে চাই।”
বজ্রকণ্ঠে শিখাকে হুকুম করে বলল রাজ।
শিখা ধীর পায়ে হেঁটে গেলো জ্বিন তাড়ানো সেই ফকিরের সামনে। একহাতে একটা নারকেল শলার পুরোনো ঝাড়ু তুলে নেয় সে। জীবনে প্রথম অম্লমধুর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি সে আজ দাঁড়িয়ে। বুকের ভিতর দামামা বাজছে।
সামনে লালচাঁন। পিছনে রাজ বসা। একপাশে দাঁড়িয়ে আছে মতির মা,জোছনা,বরকত,আমেনা ও হারিছা বিবি।
বাকি সবাই ঘরের ভিতরে ইঁদুরের ন্যায় ঘাপটি মেরে আছে। রাজের সম্মুখপানে আসার সাহস কারোই নেই। আদুরী একঝলক এসে পরিস্থিতি অবলোকন করলো। কোমর ঘুরিয়ে আবার মায়ের রুমে চলে গেলো।
শিখাকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রাজ রাশভারী কন্ঠে বলে উঠলো,
“অগ্নিশিখা, জ্বলে উঠো বলছি। স্বামীর আদেশ পালন করো একজন মুসলিম মেয়ে হিসেবে।”
শিখা ঘাড় ঘুরিয়ে রাজের দিকে চাইলো। নিমিষেই লালচাঁনের গায়ের দুপাশে সে ঝাড়ু দিয়ে বাড়ি দিতে লাগলো। পাশ থেকে মতির মা প্রেরণা ও সাহস দিলো শিখাকে। চিবিয়ে চিবিয়ে মতির মা বলল,
“মারো বউ। আরো জোরে এই বাটপাররে মারো। কড়াইস কড়াইস করে মারো।”
শিখা ধপ করে জ্বলে উঠে। সে ক্ষুর চাহনিতে লালচাঁনের সারাগায়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে ঝাড়ু ফেলে দেয়। পুরনো চামড়ার স্যাণ্ডেল নিয়ে মারতে লাগলো।
লালচাঁনের বেহুঁশ হওয়ার পালা এবার। তবুও সে পশুর মতো গোঁগোঁ করতে করতে শিখাকে চোখ রাঙিয়ে বলল,
“এই মাইয়া,খবরদার কইলাম। বহুত হইছে। আমার গায়ে আর হাত তুলবি না। আমার অভিশাপে ধ্বংস হইয়া যাইবি কইলাম। ছারখার হইয়া যাইবো তোর জিন্দেগী। থাম কইলাম।”
শিখা গর্জন করে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“সেদিন আমিও তোর পায়ে পড়ছি। শুনিসনাই। আমার সারাশরীরে মেরে প্রায় রক্তাক্ত করেছিস। কার নির্দেশে তা আমি বেশ জানি। কিন্তু উনি আমার কাছে পরম শ্রদ্ধার। তাই তোকে মেরে উনাকে শিক্ষা দিলাম। অন্যায়ের বদলা নিতে শিখে গিয়েছি এতদিনে।”
শিখার কথায় ও কাজে রাজ সন্তুষ্ট হয়। চাইলেই সে শাস্তি দিতে পারতো লালচাঁনকে। কিন্তু তার লক্ষ্যই ছিলো আজকের এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শিখাকে সাহসী ও প্রতিবাদী করে তোলা। মা যত বড় অন্যায় করুক না কেন, সন্তান হয়ে মাকে সেভাবে শাস্তি দিতে পারবে না সে। তবে পরোক্ষভাবে এটাই মায়ের উপযুক্ত শাস্তি। বৌকে মেরে ঝি কে বোঝানো’ র মতো।
“শিখা তোমার কাজ শেষ। এবার ভিতরে যাও তুমি।”
পুরু গলায় বলল রাজ।
শিখা চলে যায়। সন্ধ্যা হয়ে গেলো বলে অন্যরাও যার যার কাজে চলে গেলো। রাজ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। লালচাঁন কাত হয়ে পড়ে আছে। রাজ এগিয়ে এসে লালচাঁনের গায়ে কষে লাথি মারে। সে ওমাগো! বাবাগো বলে আর্তনাদ করে উঠে অস্ফুট স্বরে।
রাজ দাঁতে দাঁত পিষে বলে,
“যেই পদ্ম পাপড়ির ন্যায় পেলব অঙ্গে ভালো করে আমার হাতের ছোঁয়া লাগেনি এখনো,সেই শরীরে তুই আঘাত করলি অমানুষ! যন্ত্রণা দিলি। মন চায় তোকে ভূমিতে পুঁতে ফেলি। কিন্তু করুণা করে বাঁচিয়ে রাখলাম। কারণ তোর পরিবার তোর আয়ে বেঁচে থাকে।”
অর্ধমৃত হয়ে মাটিতে পড়ে আছে লালচাঁন। রাজ বরকতকে আদেশ দিয়ে বলল,
“বাজার হতে একটা রিকশা নিয়ে একে তার পরিবারের নিকট দিয়ে আয়।”
“জে ভাইজান। এক্ষুনি আমি বাজারে যাইতাছি।”
রাজ দোতলায় চলে গেলো। শিখার রুমে গেল না। কাউকে আর কিছু বলল না। অপেক্ষা তার পিতা আসার তাবলীগ থেকে। এই ভিতরে সে বাসরটা সেরে ফেলবে। শিখাকে ইজি করতে হবে তার সঙ্গে। রাজের নিরবতায় আদুরী, সুফিয়া ভয়ে আরো তটস্থ হয়ে গেলো।
জুবায়ের রাতে এলে আমেনা তাকে ফকিরের বিষয় জানালো। জুবায়ের বলল,
“একদম ঠিক আছে। বেশ করেছে রাজ। নইলে শিখার কাজ আমিই করতাম!”
পরেরদিন বিকালে আদুরী শিখাকে থিতু গলায় বলল,
“কাল শুক্রবার রাতে তোমার বাসর ঘর উদযাপন হবে। দুপুরে ভালো করে গোসল করে নিও। চুল সাবান দিয়ে ধুয়ে নিও। ভাইয়া বলেছে তোমাকে বিউটিপার্লার থেকে সাজিয়ে আনতে বউর সাজে। বিয়ের গহনা,মেকাপ, স্যান্ডেল, সেই শাড়ি,ওড়না সব আছে না?”
“হ্যাঁ আছে আপা। আচ্ছা তাই হবে। উনি যেমন টা চেয়েছেন।”
আদুরী চলে গেলো। শিখার ভিতরে অচেনা তান্ডব শুরু হলো। দ্রিমদ্রিম করছে বুকের ভিতরে। বিয়ের সময়কাল গড়ালেও রাজের সঙ্গে সে নতুনের মতই। মাত্র অল্প কয়েকবার তাদের দেখা হয়েছে। শরীর ও মনের তেমন কোন ঘনিষ্ঠতাই হয়ে উঠেনি। তুমুল অস্থিরতায় বিনিদ্র রজনী কাটলো শিখার। রাত্রির শেষ প্রহরে নয়নজুড়ে ঘুম নামলো।
জুবায়েরের নেতৃত্বে তিনজন ছেলে রাজের পুরো রুমকে পুষ্পশোভিত করে দিলো। বাসর ঘর প্রস্তুত। সন্ধ্যার পর রাজ জুবায়েরকে ধন্যবাদ দিলো। এবং বলল,
“রাতে তোকে ডাকবো। আমার ক্যামেরা দিয়ে তুই আমাদের কিছু যুগলবন্দী ছবি তুলে দিস।”
“অভিনন্দন রাজ। মধুময় হোক তোদের ফুলসজ্জার রাত্রি।”
বলে জুবায়ের নিচে চলে এলো। শহরের পার্লার থেকে শিখাকে সাজিয়ে এনে তার রুমে বসিয়ে রাখা হয়েছে। রানী,সুমনা,ডলি শিখার সাথে এটা ওটা বলে তামাসা করছে। শিখা মিটমিটিয়ে হাসছে।
রাত নয়টার দিকে ডলি ও জুবায়েরের নানী বউ সজ্জিত শিখাকে নিয়ে দোতলায় গেলো। চাপানো দরজায় রঙিন ফিতে দেওয়া ছিলো। ডলি বলল,
“ফিতা টান দিয়া ভিতরে যাও। পালংকের মাঝখানে উইঠা বইসা থাকবা। আমি আর নানী চইলা যাই।”
শিখা তাদের অনুরোধ করলো ভিতরে যাওয়ার জন্য।
“তোমার জামাইর নিষেধ আছে। সে কইছে তাররুমে আজ শুধু তোমার পা পড়ব। অন্য কারো পা যেনো রুমের ভিতরে না যায়। কারণ এই রুম আইজ তোমার লাইগাই সে সাজাইছে।”
বলল নানী হারিছা খাতুন। পরে সে ও ডলি সিঁড়ি ডিঙিয়ে নিচে চলে গেলো।
রাজ রুমের বাইরে একপাশে দাঁড়িয়ে শিখাকে দেখছে। তার গায়ে অফ হোয়াইট কালারের পাঞ্জাবি। পরনে কালো প্যান্ট। হাতে গোল্ডেন কালারের ব্র্যান্ডের ঘড়ি।
শিখা ফিতা টান দিয়ে রুমের ভিতরে ঢুকলো। কেউ নেই ভিতরে। খালি রুমে ক্যাসেট প্লেয়ারে মাঝারি ভলিউমে কুমার শানুর চমৎকার একটি গান বেজে চলছে। প্রিয় শিল্পীর কণ্ঠের গানে সে বিভোর হয়ে গেলো।
“সানাই টা আজ বলছে কি/আমি জানি সেই কথা।
রাত জেগে কেউ শুনছে কি/আমি শুধু শুনছি তাই।
কি করে বলি এই প্রাণ যায় যায়/আজ মধু রাত আমার ফুলসজ্জা…
আজ মধু রাত আমার ফুলসজ্জা।
এই বাসর ঘর ফুলে সাজানো/আর জ্বলছে ধূপ- প্রীতির সুগন্ধে।
ওই পালঙ্কে বসেছো যে তুমি/এক প্রতিমার ভঙ্গি আর ছন্দে।
ওই ঘোমটা ফেলে দাও এই হাতটা ধরো না/
রাত বাকি নেই আর,কিছু গল্প করো না,
এই রাত ভোর হলে ফিরে পাবে না।
আজ মধু রাত আমার ফুলসজ্জা…
এই একটি রাত জাগবো বলে/হায় কত রাত করেছি প্রতিক্ষা।
আজ সব কিছু দিলাম তোমায়/
দাও আমাকে ভালবাসায় দিক্ষা।
কোন সাত পাকে তো নয়/কোন মন্ত্র বুঝি না,
যদি মনটা পাই তোমার /কিছু আর তো খুঁজি না।
প্রাণে প্রাণে বাধা রাখি, খোলা যাবে না।
আজ মধু রাত আমার ফুলসজ্জা…
সানাই টা আজ বলছে কি/আমি জানি সেই কথা….
আজ মধুরাত আমার ফুলসজ্জা। ”
শিখা তাদের কথামতো কাতান শাড়ির কুচি আগলে ধরে পালংকের মাঝখান বরাবর উঠে বসলো। সে দেখলো পালংকেও গোলাপ পাপড়ির বিছানা। শিখা ঘোমটার ফাঁক দিয়ে সম্মোহনী চোখে পুরো রুম দেখছে দৃষ্টি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে। অজস্র রক্তিম গোলাপের সমারোহ। পালংকের প্রতিটি খুঁটি গোলাপে ঢেকে আছে। গোটারুমজুড়ে মাধকতায়ময় পরিবেশ। শিখার নাকে তাজা ফুলের সোঁদা গন্ধ ভেসে আছে।
কিন্তু উনি কই? কল্পনার রেশ না কাটতেই খোলা দরজা দখল করে দাঁড়ালো রাজ। শিখা রাজের অস্তিত্ব টের পেতেই কেঁপে উঠলো। রাজ রুমের ভিতরে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দিলো ভিতর থেকে। পালংকের সামনে এসে দাঁড়ালো। শিখা নেমে রাজের দুই পা ছুঁয়ে সালাম দিলো। এটা মা নূরী তাকে শিখিয়ে দিয়েছে। রাজ শিখার দুবাহু ধরে দাঁড় করালো। বলল,
“তুমি আমার নেশার পেয়ালা, যত পান করবো তৃষ্ণা মিটবে না।”
রাজ শিখাকে পালংকের কিনারায় বসালো। শিখা দুই পা ঝুলিয়ে বসে আছে।
রাজ পর্দার পিছন থেকে একটি গোলাপের তোড়া নিলো। শিখার সামনে মেঝেতে হাঁটু গেঁড়ে বসলো। দুহাত প্রসারিত করে শিখার দিকে গোলাপগুলো এগিয়ে দিলো। প্রেমিক চাহনিতে চেয়ে রোমাঞ্চকর স্বরে বলল,
“পৃথিবীর সব বাগান হতে একশো সাতকোটি লাল গোলাপ তোমায় উপহার দিলাম। ভালোবেসে গ্রহণ করো।”
শিখা লজ্জাবনত চোখে কম্পিত হাতে গোলাপের তোড়াটি ধরলো। রাজ বলল,
“এই পুরো রুমে একশো সাতকোটি গোলাপের স্থান হয়নি। কয়েক হাজার গোলাপেই রুম ভরে গিয়েছে।”
শিখা টলছে অনবরত। গানটা অনবরত বেজে যাচ্ছে। সে গানের প্রতিটি কথায় শিহরিত হয়ে যাচ্ছে গোপনে। রাজ গানের সঙ্গে সঙ্গে চাপা স্বরে নিজেও ঠোঁট মেলালো এবং শিখার ঘোমটা সরিয়ে নিয়ে একটু অভিনয়ও করলো এক্সপ্রেশন দিয়ে। শিখা বিমুগ্ধ হয়ে গেলো।
পরক্ষণেই রাজ শিখার ধবধবে দুটো পায়ের পাতাকে নিজের দুহাত দিয়ে মিলিয়ে ধরলো পাশাপাশি করে। মুখ ঝুঁকিয়ে দু’ঠোঁট চেপে ধরে গাঢ় চুম্বন করতে লাগলো। শিখা প্রায় বেহুঁশ। একি! এ দেখি সত্যি হিরোর মতো। গাইতে পারে। অভিনয় পারে। নায়কদের মতো রোমান্সও করতে পারে।
শিখার দম বন্ধ হয়ে আসছে। গলা শুকিয়ে চৈত্রের মাঠ। বারবার শুকনো ঢোক গিলছে। রাজ নেশাতুর চোখে একটু মুখ তুলে শিখার দিকে চাইলো। শিখা রাজের দিকে এখনো চোখ ফেলতে পারছে না। সে পালংকের খুঁটি ধরে ফেলল শক্ত করে একহাত দিয়ে। নয়তো পড়ে যাওয়ার উপক্রম।
রাজ উঠে গিয়ে একগ্লাস পানি এনে দিলো শিখাকে। মৃদু হেসে বলল,
“পানি খাও রাজবধূ। নিজের তেষ্টা না মেটালে আমার তেষ্টা মেটাবে কি করে?”
শিখা দু’হাত বাড়িয়ে পানির গ্লাস নিলো। পুরো গ্লাসের পানি সবটুকু খেয়ে নিলো।
“আর দিবো জল?”
“না।”
অস্ফুট স্বরে বলল শিখা।
শিখা ওভাবেই বসে রইলো দুপা ঝুলিয়ে। রাজ তার টেবিলের ড্রয়ার থেকে একটি ফাইল বের করলো। ফের এসে শিখার পায়ের কাছে হাঁটু গেঁড়ে বসলো। শিখার হাতে ফাইলটি এগিয়ে বলল,
“বাসরঘর উপলক্ষে আমার হৃদয় হতে তোমার জন্য প্রীতি উপহার। খুলে দেখো।”
শিখা চমক খেলো। নমনীয় কণ্ঠে বলল,
“দেখতে হবে না। আপনিই বলেন?”
“ঢাকায় আমার একটি ফ্ল্যাট তোমার নামে দিলাম।”
শিখার অনুভূতি আশ্চর্যের সপ্তাকাশে পৌঁছে গেলো। তার নয়নকোণে বিন্দু বিন্দু অশ্রুকণা জমাট হচ্ছে। রাজ তা দেখলো। উঠে দাঁড়ালো। ক্যাসেট অফ করে দিলো। পিছনে গিয়ে দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়ালো বুকের উপর দুহাত গুঁজে।
পুরু অথচ মধুর স্বরে জিজ্ঞেস করলো,
“প্রজাপতি ফুলসজ্জা পছন্দ হয়েছে?”
“খুব।”
“আমার রুম পছন্দ হয়েছে?”
“অনেক।”
“বাসররাত কিভাবে উদযাপন করতে চাও?”
“এমন কিছু ভাবিনি।”
“ঘুমাতে চাও?”
“নাহ।”
“গল্প করতে চাও?”
“আপনার ইচ্ছা।”
“তোমার কোন ইচ্ছা নেই?”
“নাহ।”
“আমি যদি নিবিড় করে পেতে চাই তোমাকে?”
“আজ গল্প হোক।”
” কাঙ্ক্ষিত এই রাতকে স্মরণীয় করতে চাও না?”
“এই রাতে স্বামী স্ত্রী যা করবে তাইতো স্মরণীয় হয়ে রবে।”
মোলায়েম স্বরে জবাব দিলো শিখা।
“চমৎকার। বুদ্ধিদীপ্ত আনসার দিয়েছো। আমার কাছে আসো নেমে।”
শিখা আস্তে করে নেমে রাজের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
“তোমার ত এখন অনেক সাহস। এই মুহূর্তে আমি তোমার সাহসের মিনিমাম নিশানা দেখতে চাই।”
শিখা ভিরমি খাওয়া চোখে রাজের দিকে তাকালো।
“আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরবে। এবং মুখে চুমু খাবে।”
তোমার জড়তা কাটানোর এটা প্রথম ধাপ। নাউ স্ট্রাট করো। প্রয়োজনে আমি চোখ বন্ধ রাখবো।
শিখা থরথর কাঁপছে। তার ভিতরে মহাপ্রলয় শুরু হয়েছে। এটা যে তারজন্য অসম্ভব বিষয়। সে মিনমিনে স্বরে মিনতি করে বলল,
রাজবধূ পর্ব ৪২
“আমাকে কিছুক্ষণ সময় দিন।”
” আচ্ছা। আবেদন মঞ্জুর হলো। ওহ হো! তুমি দাঁড়াও। জুবায়েরকে ডেকে আনি। তোমার আমার ছবি তুলে দিবে। আমি রিল ভরে এনেছি।”
রাজ নিচে গিয়ে দেখলো জুবায়ের রুমে নেই। আমেনার রুমে গিয়ে জানতে চাইলো,
“চাচী জুবায়ের কই? সে কিছু ছবি তুলে দেয়ার কথা আমাদের।”
“জুবায়ের ত আরো আগেই মোটরসাইকেল নিয়া বাইর হইয়া গ্যাছে বাবা। কইলো রাইতে আইব না। কি জরুরি কাম আছে নাকি বাইরে।”
রাতে বাইরে ওর কি কাজ বুঝলাম না?
ভেবেই বিস্মিত মনে রাজ দোতলায় চলে গেলো।