রিদ মায়ার প্রেমগাঁথা পর্ব ৪৮

রিদ মায়ার প্রেমগাঁথা পর্ব ৪৮
রিক্তা ইসলাম মায়া

একটা সুন্দর দিনের সূচনা। কাক ডাকা ভোরে মায়া খান বাড়ির বাগানের সামনে দাঁড়িয়ে। অদূরেই আরাফ খান কাজের লোকদের দিয়ে বাড়ির বাগানটা পরিষ্কার করাতে দেখা যাচ্ছে। কাল বাড়িতে মেজবান হওয়াতে বেশ অপরিচ্ছন্ন অবস্থা বাগানের। খান বাড়ির এই বাগানটা বলতে গেলে আরাফ খানের তদারকিতে গড়া। সেজন্য এসব দেখাশুনা তিনিই করে থাকেন। সময় তখন সকাল ০৫:০২। খান বাড়ির সকলেই ঘুমিয়ে। অথচ মায়া জেগে। নতুন পরিবেশ হওয়াতে মায়ার চোখে ঘুম নেই দুই রাত ধরে। আশপাশে দু-চারটে কাজের লোক ছাড়া তেমন কাউকে দেখা যাচ্ছে না। মায়া গায়ের ওড়নাটা টেনে চাদরের মতোন জড়াল। হাল্কা পাতলা শীতের আভাস। কুয়াশার শিশিরকণা দেখা যাচ্ছে গাছের পাতায় পাতায়। মায়া মাথার ঘোমটা ফের টেনে এগোল সামনে। আরাফ খানের পাশে দাঁড়াতেই কারও উপস্থিতি পেয়ে পাশে তাকালেন তিনি। আরাফ খান কিছু বলবে তার আগেই মায়া মিহি স্বরে বলল…

‘ আমি আপনাকে সাহায্য করি দাদাভাই?
মায়া খান প্রসন্ন হাসলেন। মায়াকে বরাবরই উনার ভালো লাগে। বলতে গেলে মায়ার সাথে উনার ভাবমতি সহজে মিলে যায়। কথা বলেও মজা পায় সেজন্য মায়াকে আপাতত নিজের পছন্দের লিস্টেই রেখেছেন তিনি। হাসিমুখেই আরাফ খান বললেন…
‘ আমাকে সাহায্য করতে গেলে তোমার কাপড় নোংরা হয়ে যাবে নাতনী। মেহমানদের দিয়ে কাজ করালে ভালো দেখাবে না। তার থেকে বরং তুমি আমাকে সঙ্গ দিতে পারো। কাজ না-হয় ওরাই(কাজের লোকদের ইশারা করে) করলো। কি বলো? দিবে সঙ্গ?
মায়া সাচ্ছন্দ্যে মাথা কাত করে সম্মতি দিতে দিতে বলল…
‘ আচ্ছা।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মায়ার সাথে আরাফ খানের কথা চলল বেশ। এরমাঝেই কোথা থেকে রিদ এসে সোজা দাঁড়াল মায়ার পাশে। আরাফ খান তখন ঝুঁকে কাজের লোককে কাজের নিদর্শনা দিচ্ছিল। মায়ার মনোযোগ সেইদিকেই ছিল। হঠাৎ রিদ মায়ার কাঁধে হাত রাখতেই মায়া চমকে উঠার মতোন পাশে তাকাল। রিদকে নিজের পাশে দেখে তৎক্ষনাৎ ভয়ার্ত চোখ ঘুরিয়ে তাকাল আরাফ খানের দিকে। আরাফ খান তখনো নিজের কাজে ডুবে আছে রিদকে লক্ষ করেন নি তিনি। মায়া মূহুর্তে আশেপাশে ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে কেউ দেখার আগে নিজের কাঁধ হতে রিদের হাতটা ছাড়িয়ে নিতে চাইলে রিদ শক্ত হাতে মায়ার কাঁধ জড়িয়ে কপাল কুঁচকে তাকাল মায়ার দিকে। মায়া ভয়ে থতমত খেয়ে রিদের হাতটা পুনরায় কাঁধ হতে ছাড়ানোর চেষ্টা করে ভয়ার্ত গলায় কিছু বলবে তার আগেই রিদ বিরক্তি নিয়ে ধমক স্বরে বলল…
‘ কি সমস্যা? এমন করছো কেন? ঠিকঠাক দাঁড়াও।

রিদের কথায় মায়া চুপসে যাওয়া বেলুনের মতোন চুপ করে গেল মূহুর্তে। আতঙ্কিত ভঙ্গিতে তৎক্ষনাৎ ঘুরে তাকাল আরাফ খানের দিকে। তিনি রিদের কন্ঠস্বর শুনেই ঘাড় বেঁকে তাকাল পিছনে। রিদকে মায়ার কাঁধ জড়িয়ে একত্রে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আশ্চর্য নেয় মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াল। যে রিদকে মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়নি কখনো, সেই রিদ এই মূহুর্তে কারও কাঁধে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে বিষয়টা সত্যি আশ্চর্যের নেয়। আরাফ খান আশ্চর্য সাথে সাথে রিদের প্রতি সন্দিহান দৃষ্টি প্রকাশ করলো। অথচ রিদ আরাফ খানের সেই সন্দিহান দৃষ্টি অপেক্ষা করে তখনো একহাতে মায়ার কাঁধ জড়িয়ে অন্যহাতে ধোঁয়া উড়া কফির মগে চুমুক বসাচ্ছে লা-পাত্তা হয়ে। গায়ে তাঁর কালো রঙ্গা টি-শার্ট আর তাওজার পড়া। মায়াও কালো রঙের সুতির জামা জড়িয়ে। আরাফ খান দুজনকেই পরখ করলো জহরী দৃষ্টিতে। দাদা-নাতির মাঝে মায়া ভয়ে জড়সড় হয়ে সিঁটিয়ে। আরাফ খান নিশ্চয়ই ওদের দুজনকে এখন জিজ্ঞাসাবাদ করবে। রিদ-তো সবটার উত্তর দিতেই বসে আছে। মুখের উপর ঠাস ঠাস করে বলে দিবে দুজনের মধ্যকার থাকা সম্পর্কের কথাটা। আরাফ খান সবটা জেনে হয়তো রেগেমেগে বাসার সবাইকে বলে দিবে। মুক্তা আজ এখানেই আছে। মায়ার পরিবারের কানেও পৌঁছে যাবে সেই খবর। তখন কি হবে সেই ভয়ে ভয়ে মায়ার শরীরে মৃদু কম্পন দেখা দিল আতঙ্কে। রিদ সেটা বুঝতে পেরে মায়াকে আরও শক্ত হাতে জড়িয়ে ধরলো ভরসার হাতে। আরাফ খান রিদ-মায়াকে একত্রে দেখে যে বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবে নিচ্ছে না সেটা উনার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিই বলে দিচ্ছে। আরাফ খান সন্দিহান চোখে রিদকে বলল….

‘ তুই ওর কাঁধে হাত রেখেছিস কেন?
আরাফ খানের কথায় রিদের সোজাসাপটা উত্তর আসলো তক্ষুনি। আগের নেয় মায়ার কাঁধে হাত রেখে কফির মগে চুমুক দিতে দিতে দায়সারা উত্তরে বলল…
‘ হাত রাখার জায়গা খোঁজে পাচ্ছিলাম না তাই।
রিদের কথায় ক্ষেপে যাওয়ার মতোন টেনে মায়াকে নিজের পাশে দাঁড়া করাল আরাফ খান। রিদকে খোঁচা মেরে বলল…
‘ তোর হাত তোর পকেটে রাখ আর নয়তো কেটে ফেলে দে! তারপরও মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়া যাবে না। নিষেধ!
‘ মেয়ে কে? কাকে বলছো?
আরাফ খানের কথায় রিদ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল উনার দিকে। এমন একটা ভাব যেন এখানে মেয়ে বলতে কেউ নেই। আরাফ খান কাকে মেয়ে বলতে বুঝিয়েছে সেটা বুঝতে পারছে না সে। ক্ষিপ্ত আরাফ খান আরও ক্ষেপে গিয়ে বলল…
‘ হেয়ালি করছিস আমার সাথে? তোর মায়াকে মেয়ে মনে হয়না?
রিদের সোজাসাপ্টা উত্তর আসলো তৎক্ষনাৎ…

‘ না।
‘ তাহলে কি মনে হয়?
‘ আমার বউ
রিদের সোজাসাপ্টা কথায় মায়া থমথমে খেয়ে বসলো। ভয়ে জড়সড় হয়ে আরাফ খানের মুখের দিকে তাকাল আতঙ্কে। রিদ যে ঠাস ঠাস উত্তর করতে মুখিয়ে আছে সেটা মায়া আগেই বুঝতে পেরেছিল। কিন্তু এইভাবে যে বলে দিবে সেটা বুঝতে পারেনি। এখন কি হবে সেই ভয়ে মায়ার কলিজা ঢিপঢিপ করছে। অথচ রিদের বলা সত্যিটা আরাফ খান বিশ্বাস করলো না বরং উনার মনে হলো রিদ উনার সঙ্গে হেয়ালি করছে উনাকে বিরক্ত করার জন্য। রিদ পরিবারকে না জানিয়ে একা একা বিয়ে করে নিবে তারও নারীবিদ্বেষী ছেলে হয়ে সেটা মূলত আরাফ খানের ধারণাতে ছিল না। তাই তিনিও রিদকে হেয়ালি করেই বলল….

‘ তোর কপালে এতো সুন্দর বউ জুটবে না। তোর কপালে জুটবে লাল কালারের বউ। লাল বউ না পেলেও সমস্যা নেই নীল কালারের বউ অর্ডার দিব তারপরও তুই এতো সুন্দরী বউ পাবি না কনফার্ম।
আরাফ খানকে রিদের কথায় বিশ্বাস করতে না দেখে মায়ার মনে সাহস পেল। ভয় থেকে বাঁচতে পেরে স্বাভাবিকও হলো। কিন্তু আরাফ খানের বলা রিদের জন্য লাল বউ অর্ডার করার বিষয়টি বুঝতে পারলো না। তাই রিদ কিছু বলবে তার আগেই আরাফ খানকে প্রশ্ন করল মায়া। জানতে চেয়ে বলল…
‘ লাল বউ কি দাদাভাই?
‘ তুমি লাল বউ চিনো না?
মায়া মাথা নাড়িয়ে অসম্মতি দিয়ে বলল…
‘ না।
‘ এসব লাল বউ না চেনায় ভালো। তুমি ভালো মেয়ে এজন্য চিনো না। এইগুলা হচ্ছে টপ সিক্রেট বুঝেছো? কাউকে বলতে নেই। এসব লাল বউ অর্ডার করা হয় ওর মতোন বুড়া মানুষের জন্য। ওহ এই বুড়া বয়সে বউ পাবে কই বলো? এজন্য ওর জন্য লাল বউ ঠিক আছে।

আরাফ খানের কথায় মায়া বড় বড় চোখ করে তাকাল রিদের দিকে। মায়া স্বামী আর বুড়ো? অসম্ভব! মায়ার স্বামী কতো সুন্দর মাশাল্লাহ! একবার দেখলে বারবার দেখতে ইচ্ছা হয়। বিশেষ একটা আর্কষণ কাজ করে তাঁর মাঝে। কোনো দিক থেকেই যেন তার কমতি নেই, যেমন লম্বা তেমন ফিটনেস। কথাবার্তা, অ্যাটিটিউ, দৃষ্টি, বাচনভঙ্গি সবকিছুই অদ্ভুত অসাধারণ মায়ার স্বামীর। সেখানে মায়ার জামাইকে বুড়া বলা মানে হাস্যকর কিছু শুনা। রিদ আরাফ খানের কথায় তেমন পাত্তা না দিয়ে বলল…
‘ তোমার চশমার পাওয়ার বাড়াতে হবে দাদাভাই। মনে হয় এক্সপায়ার হয়ে গেছে।
রিদের খোঁচা মারা কথায় মূহুর্তে রেগে যায় আরাফ খান। ক্ষিপ্ত গলায় বলল…
‘ তুই কি আমাকে ইন্ডাইরেক্টলি বুড়া বললি রিদ?
‘ না! ডাইরেক্টলি বললাম।
রিদের কথায় তেলেবেগুনে জ্বলে উঠার মতোন চেতে উঠলো আরাফ খান। রেগেমেগে বলল…
‘ বুড়া হবে তোর বাপ। আমি এখনো জুয়ান আছি।

কথাটা বলেই আরাফ খান রেগেমেগে সামনের দিকে হাঁটা ধরলো। মূলত কথায় না পারলে চলে যাওয়ার স্বভাব উনার। স্বভাবগতই কাজটা করলেন তিনি। রিদ জানে সেটা। অজ্ঞাত মায়া আরাফ খানের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে সেও চুপচাপ পালাতে চাইল রিদের থেকে। মায়া কদম বাড়াতে চাইলে রিদ মায়ার বাহু চেপে কাছে টানল। ভ্রু উঁচিয়ে জানতে চাইল…
‘ কি ম্যাডাম? পালাচ্ছেন মনে হয়? রাতে ডাকলাম আসলেন না কেন?
রিদের কথায় তৎক্ষনাৎ লজ্জায় নত মস্তিষ্কের হয়ে আসল মায়ার। উত্তর না করে রিদের পায়ের দিকে তাকিয়ে রইল। মন্ত মায়ার ভাবময় বুঝতে রিদ মায়ার থুঁতনি চেপে মুখটা উপরে তুলল। মায়ার মুখশ্রীতে দৃষ্টি বুলাতে চোখ পড়লো মায়া কাটা ঠোঁটের দিকে। রিদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আরও তীক্ষ্ণ হলো। থুঁতনি ছেড়ে মায়ার কাটা ঠোঁটে বৃদ্ধা আঙ্গুলে চেপে ধরতেই মায়া চোখ মুখ খিঁচে নিলো ব্যাথায় তারপরও উফফ শব্দ করলো না। বরং রাতের দৃশ্য গুলো পুনরায় মনে হতেই লজ্জায় সিঁটিয়ে গেল নত মস্তিষ্কে হয়ে।
রিদ মায়াকে কিছু বলতে গিয়ে পাশে তাকাল। অল্প দূরে একজন মালিকে দেখা গেল বাগানে কাজ করতে। আরাফ খান বাড়ির ভিতরের দিকটায় যাচ্ছেন। আপাতত আশেপাশে আর তেমন কেউ নেই রিদের প্রাইভেসি নষ্ট করার মতোন। রিদ হাতের কফির মগটা বাগানের মালিকে ডেকে দিতে দিতে গম্ভীর গলায় বলল…

‘ আপনি ভিতরে যান।
‘ জ্বি সাহেব।
রিদের বলতে বলতে লোকটা হাতে কফির মগটা নিয়ে বাড়ির ভিতরে দিকে চলল। আশেপাশে পরিবেশটা বেশ শান্ত আর প্রেমময়। রিদ হাত বাড়িয়ে পুনরায় মায়ার মুখটা উপরে তুলে ঠোঁটের কাটা জায়গা গুলো তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখতে দেখতে বলল…
‘এসব দাগ রোজ হবে। অভ্যাস করে নাও। রাতে রুমে আসো নি কেন? ডেকেছিলাম না?
মায়া লজ্জায় চুপ করে যেতে দেখে রিদ পুনরায় একই গলায় বলল…
‘ কিছু প্রশ্ন করছি আমি উত্তর কই?
মন্ত মায়া মিনমিন স্বরে বলল…
‘ এমনি।

‘ কোনটা এমনি ম্যাডাম? বলেন শুনি, আমার সিস্টেম নিয়ে প্রশ্ন করেন? অথচ আমার রুমে আসতে চান না। তো আসতেন রাতে আমার রুমে, তখন আমিও না-হয় মনোযোগ দিয়ে চেক করাতাম আপনাকে মেশিন চলে নাকি অচল।
রিদের ইঙ্গিত মূলক কথাটা মায়া বুঝল না। যেহেতু মায়া রিদকে মেসেজ করেনি তাই মেসেজ লেখা রাফার শব্দ গুলো সম্পর্কেও মায়ার ধারণা নেই। রিদের কথা প্যাঁচে পরে মায়ার মনে হলো রিদ কোনো যান্ত্রিক মেশিন দেখাতে মায়াকে ডেকেছিল রাতে তাই মায়া স্বাভাবিক নেয় রিদকে বোকার মতোন প্রশ্ন করে বলল…
‘ আপনি কি রাতে আমাকে মেশিন দেখাতে ডেকেছিলেন?
‘ জ্বি!
‘ ওহ! কিসের মেশিন?
মায়ার কথায় রিদ বুঝতে পারলো মায়া রিদের কথার যথাযথ অর্থ বুঝেনি। আগের নেয় রিদ বলল…
‘ রুমে চলেন! দেখায় কিসের মেশিন।
মায়া নাহুচ করে বলল…
‘ না আমি যাব না। আপনি যান। বাসায় অনেক মানুষ আছে। আমাকে আপনার রুমে দেখলে খারাপ ভাববে সবাই।
মায়া কথায় রিদ মায়ার থুঁতনি চেপে কাছে টেনে বলল…

‘ লোক দেখানো নাটক আমার পছন্দ না ম্যাডাম।আর না আপনি এসব মানুষের দোহাই দিয়ে নিজেকে আমার থেকে বাঁচাতে পারবেন। আপনাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আসি নাই। সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছি। এবার থেকে আপনি আমার সাথে থাকবেন ঢাকায়। দুই পরিবারের আজকে জানাজানির পাঠ
শেষ করব। তারপর কে মানল, না মানল সেসব আমার দেখার বিষয় না। কারও খেয়ে-পড়ে বাঁচি না আমি। আর না কারও ধার-ধারি। বিয়ে করেছি আমি, মানে আমার বউ আমার সাথেই থাকবে এটাই শেষ। আর যদি দুই পরিবারের কেউ নাটক করে আমাদের মানতে তাহলে সেটা সেই ব্যক্তির ব্যক্তিগত সমস্যা হবে আমি কাউকে তেল মারতে যাব না। আর না বউ ছাড়া থাকতে পারব।
রিদের কথায় মায়া আতঙ্কিত গলায় বলল…
‘ প্লিজ এখন জানাবেন না কাউকে। আরও কয়েকটা দিন যাক না তারপর না-হয় সবাই জানলো আ…
মায়ার কথা শেষ করার আগেই রিদ রাগে মেজাজ দেখিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল….
‘ শ্যাটআপ!
‘ প্লিজ!
‘ রিত

রিদের রাগে ধমকে মায়া চুপ করে গেল। চুপ থেকে নিরবে সবকিছু রিদের হাতে ছেড়ে দিল। রিদ যা করবে দুজনের ভালোর জন্যই করবে এখানে মায়ার কথায় না বলাই উচিত। এরপর যা হবার হবে দেখা যাবে। রিদ যেহেতু মায়ার পাশে আছে এখানে মায়ার ভয় নেই। আল্লাহ ভরসা করে সবকিছু জন্য মায়া মনে মনে প্রস্তুত হলো। দীর্ঘ শ্বাস ফেলে মায়ার মুখোমুখি ঝুকে থাকা রিদের রাগান্বিত মুখটার দিকে তাকিয়ে উদাস গলায় বলল…
‘ আচ্ছা ঠিক আছে, আপনি যা বলবেন তাই হবে। আপনার কথায় মেনে চলব এরপর থেকে, তারপরও এই বয়সে আপনি এইভাবে দাঁতে দাঁত পিষবেন না প্লিজ। এই শেষ বয়সে এসে দাঁত গুলো পড়ে গেলে নকল দাঁতে ভালো দেখাবে না আপনাকে৷

রিদ মায়ার প্রেমগাঁথা পর্ব ৪৭

মায়ার কথায় তেলবেগুনে জ্বলে উঠলো রিদ। আরাফ খান বুড়ো বলায় এতক্ষণ গায়ে লাগেনি রিদের। কিন্তু সেই একই কথাটা যখন মায়া বলল ইঙ্গিতে তখনই ফুঁসে ওঠে রিদ। মৃদু স্বরে চেঁচিয়ে বলল….
‘ কিহ?
‘ আরে হাইপার হবেন না প্লিজ। এই বয়সে প্রেশার হাই হয়ে গেলে সমস্যা হবে তো। কুল কুল!

রিদ মায়ার প্রেমগাঁথা পর্ব ৪৮ (২)