রেড রোজ পর্ব ২২
ফারহানা নিঝুম
নতুন প্রজেক্টের কাজ ঐশ্বর্য রুদ্রের হাতে দিয়েছে। ব্যাপার টা ভাবতেই ভালো লাগছে শহীদের,আর যাই হোক ভাই বোনদের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই ওদের।
শহীদ মাঝে মাঝে মন থেকে ভীষণ রকম আফসোস করেন,যদি উনি ওভাবে মনিকা কে ধোঁ’কা না দিতো। তাহলে হয়তো আজ গল্প টা অন্য রকম,হতো।
রুদ্র সকাল সকাল অফিসে বেরিয়ে গিয়েছে।নিকি আর রুদ্র দু’জনে মিলে ঐশ্বর্যের নতুন ব্রাঞ্চের কাজে হাত দিয়েছে। মূলত ঐশ্বর্য চাইলো পাটোয়ারী ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে ডিল করতে।এর পরেই আফসানা পাটোয়ারী কে মজা দেখাবে।
নিকি মনে মনে ভীষণ খুশি,তার ভাই এখন থেকে অন্তত ওদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে।এই যোগাযোগের কারণে যদি জিসান আর ভাইয়া আবারও হয়তো বাংলাদেশে আসবে।
নিকির জিসানের প্রতি এক অদ্ভুত অনুভূতি তৈরি হয়েছে, এটার নাম ঠিক কি দেওয়া যায় তা জানা নেই।
তবে এটুকু জানে জিসানের প্রতি ভালো লাগা তৈরি হয়েছে।একটা রাগও আছে,লোক টা দু’দিন ধরে তার সঙ্গে কথা বলে নি।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
নাসারন্ধ্রে কড়া পারফিউমের ঘ্রাণ যেতেই অধর কোণে হাসি ফুটে উঠল উৎসার। প্রাণ ভরে আবারও নিঃশ্বাস টেনে নেয়, পিটপিট চোখ খুলে তাকাতেই পিলে চমকে উঠে উৎসার। ঐশ্বর্য দাঁড়িয়ে আছে, একেবারে অফিস গ্রেট আপে।
“গুড মর্নিং সুইটহার্ট।”
ঐশ্বর্য ঝুঁ’কে উৎসার কপালে চুমু খায়, মৃদু কেঁপে উঠলো উৎসা। ঐশ্বর্য উৎসার পাশে বসলো।
“আমি একটু বাইরে যাচ্ছি ওকে?মিস মুনা ব্রেকফাস্ট রেডি করে ফেলেছেন।উইল ইউ ইট ওকে!”
উৎসা কিছুই বললো না,তবে ঐশ্বর্যের এমন হ্যান্ডসাম লাগছে যা উৎসা কে বেশ আশ্চর্য করছে।তার উপর ঐশ্বর্যের মা’তা’ল করা পারফিউমের ঘ্রাণ।
“বা বাই।”
ঐশ্বর্য বের হতেই উৎসা যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচল।
কাভার্ড থেকে ড্রেস নিয়ে ওয়াশ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে। ড্রয়িং রুমে গিয়ে দেখলো টেবিলে অলরেডি খাবার সার্ভ করা আছে।
উৎসা কেমন বিরক্ত বোধ করলো,এই কয়েকদিনে ঐশ্বর্য বেশ জোর করেই উৎসা কে নিজের সঙ্গে বসিয়ে খাইয়েছে। এটা যেনো অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে,উৎসা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে করিডোরের দিকে এগিয়ে গেলো। সুইমিং পুলের স্বচ্ছ পানি চোখে ভাসমান তার। সুইমিং পুল পাড় করে ডান দিকের বেলকনিতে চলে গেল। ফুরফুরে মেজাজে এক কাপ কফি চাইলো মিস মুনার কাছে।তিনি কফি এনে দিয়ে গেলেন,কফি কাপে চুমুকের সাথে সাথে মন প্রাণ জুড়িয়ে গেল তার।
❝আমার একলা আকাশ থমকে গেছে
রাতের স্রোতে ভেসে
শুধু তোমায় ভালবেসে।
আমার দিন গুলো সব রং চিনেছে
তোমার কাছে এসে
শুধু তোমায় ভালবেসে।❞
উৎসা নিজের মত গুনগুন করছে,পিছন থেকে কেউ একজন আলগোছে জড়িয়ে ধরে উৎসা কে। প্রথম দিকে চমকে উঠে উৎসা, আচমকা ঘাড় ঘুরিয়ে ঐশ্বর্য কে দেখে থতমত খেয়ে গেল।
“আপনি?”
ঐশ্বর্য চোখ বুজে উৎসার শরীরের ঘ্রাণ টেনে নিচ্ছে।
উৎসা কিছুই বুঝলো না, কিছুক্ষণ আগেই তো ঐশ্বর্য বললো সে বাইরে যাচ্ছে। তাহলে এখন এখানে কী করছে?
“এহহ আপনি আবার অনুমতি ছাড়া ছুঁয়েছেন আমাকে?”
ঐশ্বর্য বাঁ’কা হাসলো,ভারী স্বরে আওড়ালো।
“ফোন ফেলে গেছিলাম। সুইটহার্ট তুমি তো দেখছি ভালোই গান গাইতে পারো!”
উৎসা বেশ ভাব নিয়ে বলল।
“অবশ্যই। অন্তত আপনাদের মতো ইয়া হুঁ লা লা তো আর করি না!”
ঐশ্বর্য শব্দ করে হেসে উঠলো।উৎসা কিছুই বললো না, ঐশ্বর্যের হাত ছাড়িয়ে ছুটে বেলকনিতে চলে গেল। ঐশ্বর্য উৎসার পিছু পিছু গেল,বাইরে তুষারপাত হচ্ছে। উফ্ কী মনোমুগ্ধকর দৃশ্য!
“ইশ্ একটা ক্যামেরা থাকলে ভালো হতো। এগুলো ক্যামেরায় বন্দি করে রাখতাম।”
ঐশ্বর্য কিছু একটা ভেবে বেড রুমে গিয়ে নিজের ক্যামেরা নিয়ে এলো।
“এই নাও।”
ঐশ্বর্যের হাতে ক্যামেরা দেখে অবাক হয়।
“ক্যামেরা!”
ঐশ্বর্য মৃদু হাসলো।
“হুঁ।”
“কিন্তু আমি কেন আপনার টা নেব শুনি?”
ঐশ্বর্য কিছু বললো না, জোরপূর্বক উৎসার হাতে ক্যামেরা ধরিয়ে দেয়।
“যা ইচ্ছে করো, চললাম অফিসে।”
ঐশ্বর্য বের হতেই উৎসা খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো।এত দিন ঐশ্বর্য উৎসা কে বিরক্ত করেছে।আজ থেকে উৎসা ঐশ্বর্য কে বিরক্ত করবে। অস’ভ্য লোক একটা।
উৎসার ভীষণ ভাবে জিজ্ঞাস করতে ইচ্ছে করলো।
“আমাকে ভালোবাসেন আপনি?”
কিন্তু উৎসা জানে, ঐশ্বর্য বরাবরের মতই বলবে।
“না, আমি কাউকে ভালোবাসি না। ভালোবাসায় বিশ্বাস নেই।”
দীর্ঘ শ্বাস ফেললো উৎসা।
ঐশ্বর্য হনহনিয়ে বেরিয়ে গেল, জন্য থমকে গিয়েছে। ঐশ্বর্য নিজেকে দেখে বেশ অবাক হচ্ছে। ইদানিং উৎসার কাছাকাছি আসাতে সে যেনো সম্পূর্ণ বদলে যাচ্ছে!কিন্তু সে নিজের ফিলিংস নিয়ে কনফিউজড। আচ্ছা সে কী সত্যি উৎসা কে ভালোবাসে!
ঐশ্বর্য নিজের প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায় না।
উৎসা ব্রেক ফাস্ট করতে বসলো, তৎক্ষণাৎ কলিং বেল বেজে উঠল।মিস মুনা গিয়ে দরজা খুলে দেয়, ঐশ্বর্য ফিরে এলো।আজ সে অন্য মনস্ক হয়ে আছে, একের পর এক জিনিস ফেলে চলে যাচ্ছে।এই যে ওয়ালেট প্রয়োজনীয় ফাইল ফেলে গিয়েছে।
উৎসা সবে চামচ মুখে তুলেছে, ঐশ্বর্য কে দেখে ফের থতমত খেয়ে গেল।
“আপনি!”
ঐশ্বর্য উৎসার দিকে তাকিয়ে আছে, মূলতঃ দৃষ্টি তার উৎসার ঠোঁটের দিকে।নিচে কাস্টার্ডের কিছু অংশ লেগে আছে। ঐশ্বর্য শুকনো ঢোক গিললো,উৎসা উঠে দাঁড়ালো। ঐশ্বর্য এভাবে তাকিয়ে আছে কেন হঠাৎ?
ঐশ্বর্য পরণের স্যুট খুলে কাউচের উপর ছুড়ে ফেলল।বড় বড় পা ফেলে উৎসার কাছাকাছি এসে কোলে তুলে নেয় তাকে।
উৎসা চমকে উঠে, ঘনঘন নিশ্বাস নিচ্ছে।
“আরে কী করছেন? নামান নিচে!”
ঐশ্বর্য কোনো কথা বললো না,বেড রুমে নিয়ে গিয়ে ভেতরে থেকে লক করে দিল।
উৎসা কে ডিভানের উপর বসিয়ে দেয়,উৎসার বুক দ্রুত গতিতে উঠানামা করছে।
“দেখুন অস’ভ্য রিক চৌধুরী আমি কিন্তু…
ঐশ্বর্য উৎসা কে থামিয়ে দিলো, আচমকা থুতনিতে কা’ম’ড় দেয়। মৃদু কেঁপে উঠলো উৎসা,ব্যথাও পেয়েছে সে।
ঐশ্বর্য কে ধাক্কা দিতে গিয়েও পারলো না, ঐশ্বর্য তার হাত দুটো শক্ত করে চেপে ধরেছে।
“ছাড়ুন আমায়।”
“সুইটহার্ট আমি যেখানে শান্তি পাবো সেখানেই যাবো। আপাতত এই রিক তোমাতে বিভোর,আটকালে ফলাফল খারাপ হবে।”
উৎসা ঐশ্বর্যের কথায় ভয় পেলো। ঐশ্বর্য নাছোড়বান্দা, আচমকা উৎসার পেটে কা’ম’ড়ে দেয়,উৎসা শিউরে উঠে। ভ’য়ং’কর ঐশ্বর্যের কান্ড তাকে ভয় দেখাতে সক্ষম। ঐশ্বর্য উৎসা কে ডিভানেই শুয়ে ওর উপর সম্পূর্ণ ভর ছেড়ে দিলো।
“আমি কিন্তু পারমিশন দেয়নি।”
ঐশ্বর্য ঠোঁট কা’ম’ড়ে হাসলো,তার পারমিশন লাগে? ষ্টুপিড রেড রোজ।
“আই ডোন্ট কেয়ার।”
উৎসা ফট করে শুধোয়।
“ভালোবাসেন আমায়?”
ঐশ্বর্য চমকালো,সরে গেল। উৎসা কপাল কুঁচকে নেয়। ভালোবাসার কথা বললেই ঐশ্বর্য হাঁসফাঁস করে। ঐশ্বর্য দরজা খুলে বেরিয়ে গেল,উৎসা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। বেঁচে গেছে!
অফিসে নিজের কেবিনে বসে স্মো’ক করছে ঐশ্বর্য। বারংবার মস্তিষ্ক একটা কথাই মনে করাচ্ছে, ভালোবাসা!
ঐশ্বর্য অবশ্যই উৎসার প্রতি অ্যাডিকশন তৈরি হয়েছে। কিন্তু ভালোবাসা নয়? কাউকেই ভালোবাসেন না ঐশ্বর্য রিক চৌধুরী।
নিজেকে কে সামলাতে পারছে না ঐশ্বর্য।আর না পারছে কাজে মন দিতে,সব কিছু বিরক্তের কারণ হচ্ছে তার।
“আরে বা কিসের এত চিন্তা রিক চৌধুরী এত গুলো মিটিং ক্যান্সেল করে দিয়েছে?”
কেবিনে প্রবেশ করতেই দেখলো ঐশ্বর্য টেবিলের উপর রাখা পানির গ্লাস তুলে ঢকঢক করে খেয়ে নেয়।যেদিন ঐশ্বর্য বেশি চিন্তায় থাকে সেদিনেই কাজ কর্ম সব লাটে উঠে যায়।
জিসান কে দেখে মৃদু হাসলো ঐশ্বর্য।
“আহ্ জিসান, কাম কাম।”
জিসান ভেতরে গিয়ে বসলো।
” ব্রো কী হয়েছে?এত এত কিসের টেনশন?”
ঐশ্বর্য আনমনে বললো।
“রেড রোজ কে নিয়ে চিন্তায় আছি।”
জিসান ফিক করে হেসে উঠলো।
“ওয়াও,দ্যা গ্রেট ঐশ্বর্য রিক চৌধুরী প্রেমে পড়েছে।”
ঐশ্বর্য বিরক্ত নিয়ে বলে।
“শাট আপ জিসান।এই বিষয়েই টেনশনে আছি।”
“ওকে ফাইন,বল তো কী হয়েছে?”
ঐশ্বর্য বসা থেকে উঠে কাঁচের তৈরি দেয়ালের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। স্পষ্ট বাইরে টা দেখা যাচ্ছে,তার উপর সাত তলা বিল্ডিং।নিচে মেইন রোড, কত গাড়ি চলাচল করছে! ঐশ্বর্য সেদিকে দৃষ্টি ফেলে বললো।
“রেড রোজের কাছাকাছি থাকলে প্রশান্তি পাই জানিস!ওর কথা বলা, রাগারাগী,সব কিছুতে শান্তি লাগে। কিন্তু এখন আমি কেন এমন করছি তা সত্যি জানি না।”
জিসান তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো।
“সিরিয়াসলি ব্রো?রিক তুই ভালোবাসিস মিস বাংলাদেশী। বাট তুই নিজের ফিলিংস নিয়ে কনফিউজড ইয়ার। কেনো বুঝতে চাইছিস না?”
ঐশ্বর্য গর্জে ওঠে।
“শাট আপ, আমি কাউকে ভালোবাসি না। কখনও বাসতে পারি না।”
ঐশ্বর্য কে রেগে যেতে জিসান বললো।
“কাম ডাউন রিক,হোয়াটস গোয়িং অন?তুই কেনো এমন করছিস? প্রবলেম কী ভালোবাসলে?”
“নো নো নো। কেনো ভালোবাসবো?তুই দেখিস নি আমার মাম্মার অবস্থা!মাম্মা ভালোবেসে ঠকেছে, আমি ভালোবাসায় বিশ্বাস করতে পারি না। কিন্তু আমি চাই না রেড রোজ আমার থেকে দূরে থাকুক।”
ঐশ্বর্য দ্রুত কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো। জিসান হতাশ হলো,কী করে ঐশ্বর্য কে বুঝাবে সে ভালোবেসে ফেলেছে?
ঐশ্বর্য কমন রুমে গিয়ে ডিভানের উপর শুয়ে পড়লো। লাইফে কী চেয়েছিল আর কী হলো? উৎসা কে ছাড়তে পারবে না। কেনো জানি ঐশ্বর্যের ভীষণ ভাবে কষ্ট হয় উৎসার থেকে দূরে থাকতে,উৎসা যখনই বলে চলে যাবে।তখন যেনো প্রচন্ড রাগ হয় ঐশ্বর্যের।সে নিজের রাগ সামলাতে পারে না।
এত কিছু ভেবে বিরক্ত হচ্ছে ঐশ্বর্য, তৎক্ষণাৎ মনে পড়ল উৎসা তো বাড়িতে একা!চোখ গেল ঘড়ির দিকে সাড়ে পাঁচ টা বেজে গিয়েছে। ঐশ্বর্য আই প্যাড নিয়ে বাড়ির সিসি টিভি ফুটেজ দেখতে লাগলো।
না উৎসা আশেপাশে কোথাও নেই, ঐশ্বর্য ড্রয়িং রুমে লাগানো ক্যামেরা অন করতেই লক্ষ্য করলো উৎসা কে। মূহুর্তে রেগে গেল সে, মস্তিষ্ক তীব্র ভাবে জ্ব’লে উঠেছে।
উৎসা আর একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে, ছেলেটি উৎসার অনেক খানি কাছাকাছি আছে।এতটাই কাছাকাছি মনেই হচ্ছে ওরা স্পর্শ করছে একে অপরকে
ঐশ্বর্য ছুঁ’ড়ে আই প্যাড ফ্লোরে ফেলে দিলো, টেবিলের উপর থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে হনহনিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে গেল।
দু তিন দিন ধরে কলেজে যেতে পায়নি উৎসা,সেই জন্য সিরাত অনেক গুলো নোট ম্যাকি কে দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে।রুমে প্রবেশ করতেই উৎসা মৃদু হাসলো,ম্যাকি নোট গুলা বুঝিয়ে দিচ্ছে উৎসা কে,কলম হাতে বসে ছিল উৎসা। আচমকাই কলম নাড়াতে গিয়ে চোখে লেগে গিয়েছে তার।ম্যাকি ব্যস্ত কন্ঠে বলে উঠে।
“উঠসা আর ইউ ওকে?”
“ইয়া অ্যাম ফাইন।”
রেড রোজ পর্ব ২১
ম্যাকি উৎসার কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়ালো,চোখে ফু দিয়ে দিচ্ছে।উৎসা চোখ খুলতেই পারছে না, চোখের কার্নিশ লাল হয়ে উঠেছে তার।
ওদিকে ঐশ্বর্য স্পিডে ড্রাইভ করে আসছে বাড়ির উদ্দেশ্যে।
“উৎসাহ,,,,আই উইল কি’ল ইউ ড্যা’মেড।”