লাল শাড়িতে প্রেয়সী পর্ব ১৮

লাল শাড়িতে প্রেয়সী পর্ব ১৮
Fatima Fariyal

এক ঘন্টা জার্নির পর অবশেষে আহাদ রাজার দল পৌঁছে গেলো চট্টগ্রামে। তখন রাত প্রায় এগারোটার কাছাকাছি। চারদিকে শহরের বাতাস যেন অস্বাভাবিক এক উত্তেজনায় ভরপুর। তারা চট্টগ্রামে এসেছে, এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই পুরো পরিবেশ যেন অন্য রকম হয়ে গেছে। বিমানবন্দর থেকে বের হতেই শত শত মানুষ চারদিক থেকে তাদের ঘিরে ধরলো। জনতার কণ্ঠে স্লোগান, ভিড়ের উত্তেজনা, চারদিকে ক্যামেরার ফ্ল্যাশ, সব মিলিয়ে যেন এক উৎসবমুখর পরিবেশ। সেখানকার কেন্দ্রীয় নেতারা নিজ হাতে তাদের অভ্যর্থনা জানালো। নিরাপত্তার দায়িত্ব নিলো ডিবি পুলিশের বিশেষ দল। অবশেষে কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনী ভেদ করে তারা পৌঁছে গেলো শহরের অভিজাত হোটেল রেডিসন ব্লু-তে।

লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে ক্লান্ত আহাদ নিজের নির্দিষ্ট রুমে ঢুকেই দেহটা ছুড়ে দিলো নরম বিছানায়। নাদিম আর শাওন ব্যস্ত হয়ে ব্যাগপত্র গুছিয়ে রেখে আবার চুপচাপ বেরিয়ে গেলো। রুমে তখন এক ধরনের নীরবতা। শুধু এসির মৃদু শব্দ, আর জানালার বাইরে রাতের হালকা গুঞ্জন। এই নীরবতা ভাঙলো পাশের সোফায় এসে বসা আসফাক মীরের ভারী পদক্ষেপে। সারা পথে তিনি খেয়াল করেছেন, আহাদকে অন্যরকম লাগছে। তার চেহারায় কেমন এক অদ্ভুত উজ্জ্বলতা, ঠোঁটের কোনায় চাপা হাসি লেগেই আছে। তাই দেখে সন্দেহের কাঁটা বিঁধেছে আসফাক মীরের মনে। আসফাক মীর ভ্রু কুঁচকে ভাতিজার দিকে তাকালেন। আহাদ সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে আছে, আসফাক মীর গলা ঝেড়ে সরাসরি প্রশ্ন করলেন,
“তোর কি হয়েছে রে আহাদ? ঢাকা থেকে লক্ষ করছি, এমন একা একা হাসছিস কেনো? তোর গায় কি জ্বীনের বাতাস লাগছে নাকি?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

বিছানায় আধশোয়া আহাদ ধীরে ঘাড় কাত করে তাকালো চাচার দিকে। তার দৃষ্টি তীক্ষ্ণ, কিন্তু ঠোঁটে দুষ্টুমি ভরা হাসি। এক চোখ টিপে দিয়ে হেসে বললো,
“জ্বীনের বাতাস না… বিয়ের বাতাস লাগছে।”
আসফাক মীর বিস্ময়ে হালকা নড়ে উঠলেন। সামান্য সামনে ঝুঁকে বসে, যেন চোখ দিয়ে সত্যটা যাচাই করতে চান। অবিশ্বাসে ভরা কণ্ঠে বললেন,
“কি বললি তুই? তুই… বিয়ে করে ফেলেছিস? আর সেটা আমাদের না জানিয়ে, এই পরিস্থিতিতে?”
“এই থামো তো! বিয়ে করলে কি আর এখানে তোমার সাথে এক রুমে বসে থাকতাম? অবশ্যই বউয়ের কোলে ঘুমিয়ে থাকতাম।।”
আসফাক মীর বিরক্ত গলায় বললেন,

“তাহলে যে বললি বিয়ের বাতাস লাগছে?”
আহাদ দুষ্টুমিভরা ভঙ্গিতে বিছানার বালিশটা বুকের কাছে টেনে নিয়ে বললো,
“বাতাস লাগছে বলছি, বিয়ে করছি সেটা তো বলি নাই। সব সময় এতো অগ্রিম বোঝো কেনো?”
“মানে কি?”
“তোমাকে মানে বুঝতে হবে না, এখানে কি করছো? যাও এখান থেকে।”
আসফাক মীর আরও কৌতূহলী হয়ে চোখ সরু করে তাকালেন আহাদের দিকে। আহাদের ভেতরে কিছু একটা পরিবর্তন তিনি বুঝতে পারছেন, কিন্তু সেটা কি বুঝতে পারছেন না। আহাদ এবার চাচার দিকে তাকিয়ে একটু সুর দিয়ে বলে উঠলো,

“আমাকে আমার মত থাকতে দাও… আমি নিজেকে নিজের মত গুছিয়ে নিয়েছি। এখন এখান থেকে যাও, যাও, যাও… নাকি যাওয়ার জন্য ধরতে হবে তোমার পাও..!”
আসফাক মীরের মুখ গম্ভীর হয়ে উঠলো। তিনি বুঝতে পারলেন, এখন যত প্রশ্নই করুন না কেনে আহাদ কিছুই বলবে না। শুধু এক ঝলক দৃষ্টিতে ভাতিজার চোখে চোখ রাখলেন, অতঃপর নীরবতা গিলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন। দরজাটা শব্দ করে বন্ধ হয়ে যায়। রুমে আবার নিস্তব্ধতা নেমে আসে। আহাদ দরজার দিকে তাকিয়ে এক মুহূর্ত নীরব থাকে। অতঃপর হঠাৎ করেই হো হো করে হেসে উঠলো, যেন নিজের বুকের চাপা আনন্দকে বাইরে ছুঁড়ে দিলো। তার চোখেমুখে তখন এমন এক দীপ্তি ফুটে উঠলো, যেটার কারন শুধু আহাদ আর তার হৃদয়ের গোপন সঙ্গী জানে।

ভোরের আলোটা তখনও পুরোপুরি ছড়িয়ে পড়েনি। কিন্তু ঈশানী উঠেছে আরো অনেক আগেই। ব্যাগপত্র গুছাতে গুছাতে তার কপালে ঘাম জমেছে। ঘরটা এলোমেলো হয়ে আছে জামা-কাপড়ের ছোট ছোট ব্যাগে। এদিকে রিদিতা তখনও বিছানায় গুটিসুটি মেরে পরে আছে, যেন বালিশে মুখ গুঁজে আরো কয়েকটা মুহূর্ত ঘুমটাকে আঁকড়ে ধরতে চায়। সেদিকে তাকিয়ে ঈশানী বিরক্তি কন্ঠে ডেকে উঠে,
“রিদি…! শোন না, কতবার ডাকছি তোকে!”
কোনো সাড়া নেই রিদির, সে আবার জোরে ডেকে উঠলো, “এই রিদি! ওঠবি না নাকি? লন্স আটটায়! সময় নাই কিন্তু।”

এবার ধীরে ধীরে দুলতে দুলতে উঠে বসল রিদি। এলোমেলো চুল কপালের উপর নেমে এসেছে। একটা বড় হাই তুলে পা দুটো মেঝেতে রাখলো। অতঃপর কিছুক্ষণ জানালার বাইরে তাকিয়ে রইলো। যেন তার ভেতরে অদ্ভুত ভারি একটা শূন্যতা ভর করেছে। বুকের ভেতর একটা চাপা অনূভব তাকে ভাবনায় ফেলে দেয়। পা টেনে টেনে ড্রইংরুমে এসে দেখে ঈশানীর গুছগাছ সব শেষ। চারদিকে একবার চোখ বুলিয়ে ঘুম জড়ানো গলায় প্রশ্ন করে রিদি,
“আব্বু কই?”
“আব্বু আর তোর ভাইয়া নিচে গেছে। এখনই চলে আসবে।”
“ভাইয়া যাবে না?”
“না। ও বিয়ের আগের দিন আসবে। ছুটি পায় নাই।”
“ওহহ।”

এই বলে মাথা নাড়তে নাড়তে রিদি আবার নিজের ঘরে ঢুকে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা বেড়িয়ে যায় গ্রামের উদ্দেশ্যে। গ্রামে তার মামার বড় মেয়ে তানিশার বিয়ে। আর তাই রিদির বাবা তাদের নিতে এসেছিলো। যদিও আফরোজা শেখের ডাকে এসেছে, তবে সেটা তিনি কারোর সাথে প্রকাশ করেননি। তারেক রায়ান রাজনীতি মোটেও পছন্দ করেন না। এর একটা যথাযথ কারন ও আছে। তাই রাজনীতির ধামা চাপায় নিজেরে মেয়েকে ফেলতে চান না। আদনান পেশায় একজন ডাক্তার সেটা জানেন। তবুও তার বেড়ে ওঠা তো সে রাজনীতি পরিবারেই। তাই তারেক রায়ান ভরশা পান না নিজের মেয়েকে বিয়ে দিয়ে এমন একটা পরিবারে পাঠানোর। আফরোজা শেখকে বলে এসেছে পরিবারের সাথে কথা বলে জানাবে। কিন্তু সেটা শুধু কথার কথাই ছিলো। মন থেকে সে চায় না রিদিকে সেখানে বিয়ে দিতে।

অবশেষে দীর্ঘ ছয়-সাত ঘণ্টার ক্লান্তিকর যাত্রা শেষে তারা ভোলায় এসে পৌঁছায়। রিদিদের গন্তব্য সোজা তার মামার বাড়ি। কারণ কাল বিকালেই তানিশার গায়ে হলুদ। এতদূর থেকে নিজেদের বাড়ি গিয়ে আবার মামার বাড়ি আসা সম্ভব নয়। তাছাড়া সবাই এখন এখানে আগে থেকে চলে এসেছে। রিদির মামা বাড়িটা বিশাল বড় বাড়ি, একই বাড়িতে অনেকগুলো ঘর। তার উপর বিয়ে বাড়ি, আত্নীয় স্বজনরা সব গমগম করছে। লাইটিংয়ের আলোক সজ্জায় সব মিলিয়ে পুরো বাড়িটা যেন উৎসবের মেলায় পরিণত হয়েছে। রিদির নানা নাই, শুধু নানু আছে। আর তার মামা একজনই আর মা খালারা দুই জন। রিদির মা সবার ছোট। রিদিরা বাসায় ঢুকতেই এক রকম সোরগোল পরে গেছে। তানিশা ছুটে আসে, তার মুখে অভিমান ঝরে পড়ছে। অভিমানী কন্ঠে ঈশানী আর রিদিকে বললো,
“আমি কতবার বলেছি আমার বিয়েতে তোরা এক মাস আগে আসবি। অথচ তোরা এলি সময়ের একদম কাটায় কাটায়। এখন কি শুধু আমাকে বিদায় দিতে আসলি?”

ক্লান্ত শরীর সোফায় এলিয়ে দিয়ে রিদি মুচকি হেসে বললো,
“তানিশাপু, তুমি যদি বিদায় না হও তাহলে তো আমরা জায়গা পাবো না। তাই দেরি করে আসলাম। তোমার রুমটা দখল করতে পারবো।”
তানিশা কথাটা শুনে গাল ফুলিয়ে নিলো। এমন সময় রিদির মা আর খালামনি, মামিরা এসে ড্রইংরুমে ভিড় করলো। সবাই একে একে কথা বলছে। এদিকে মাহি দৌড়ে গিয়ে রিদির নানুর কোলে বসে পড়লো। নানু তাকে পরম স্নেহে আদর করছে আর এটা দেখে রিদির ভেতরটা হালকা হিংসায় ভরে গেল। সে ঝট করে মাহিকে টেনে নামিয়ে নিজের নানুর গলা জড়িয়ে ধরে মাহিকে উদ্দেশ্য করে বললো,
“যা সর এখান থেকে। এটা আমার নানু। তুই তোর নানুর কোলে যা। উড়ে এসে জুড়ে বসছিস আমার নানুর কোলে!”

মাহি কোমরে হাত রেখে রাগী গলায় বলে উঠলো,
“আমি মোটেও উড়ে আসিনি। আমি নদীতে ভেসে ভেসে এসেছি!”
মাহির এই শিশুসুলভ কথায় উপস্থিত সবাই হেসে উঠলো। ঘর জুড়ে খিলখিল শব্দ ছড়িয়ে পড়লো। তখনই রিদির খালামনি রিদির দিকে তাকিয়ে বললেন,
“কিরে রিদি, তুই এত শুকিয়ে যাচ্ছিস কেন রে দিনদিন?”
ঈশানী পাশ থেকে মুখ বাঁকিয়ে কটাক্ষ করে বলে উটলো,
“ও মোটা কবে ছিলো? সারাজীবনই তো আগাগোড়া এমন শুঁটকি।”
এবার রিদির মা সেদিকে তাকিয়ে শুরু করে তার সেই চীরচেনা বানী। কপাল চাপড়ানো ভঙ্গিতে হাত দিয়ে দেখিয়ে দেখিয়ে রিদির নামে অভিযোগ করেতে শুরু করেন,

“কি বলবো আর আপা! লবনের এক বাটি ভাত খায়, মাঝেমাঝে তো খায়ও না। আর মাছ তো ছুঁয়েও দেখবে না। মাংস হলে কয়টা খাবে, আর শুধুু চিনে ডিম আর আলু। কি যে যন্ত্রণা ওরে নিয়া।”
রিদি বুঝতে পারে এখন তার মা তার নামে বদনাম গাইতে শুরু করছে মানে আর থামাথামি নাই। তাই সেটা এড়াতে রিদি ধীরে ধীরে উঠে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে গেলো। উপরে এসে ত্বোহার রুমে ঢুকলো। তার মামার তিন সন্তান, সবার বড় তানিশা, এরপর তানভীর আর সবার ছোট ত্বোহা। ত্বোহার রুমে সব বোনেরা মেহেদী লাগাতে ব্যাস্ত। হঠাৎ রিদিকে দেখে তার ছোট বোন রাইসা লাফিয়ে উঠে। রাইসা এবার ক্লাস নাইনে পরে বয়স তার ১৪, তার সমবয়সী আরো দুজন খালাতো বোন আছে। এক জনের নাম হাসনা, আরেকজনের নাম ইতি। সবাই এক রকম হই হোল্লড় করে উঠে রিদিকে দেখে, রাইসা এসে বোনকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলো,

“আপু! তুমি চলে আসছো!”
“না, আমি এখনো লন্ডনে আছি।”
তার কথায় সবাই হো হো করে হেসে ফেললো। ত্বোহা আর রিদি সমবয়সী বলে তাদের বন্ধুত্বও দারুণ। রিদি এসে ত্বোহার পাশে বসলো। ঠিক তখনই ঘরে ঢুকলো তানভীর।
এসেই রিদির মাথায় একটা গাট্টি মেরে বলে,
“কিরে শুঁটকি! কখন আসলি?”
রিদি কটমট করে তাকালো তানভীরের দিকে। তানভীর আবার রিদির থেকে চার বছরের বড়। শৈশব থেকে তানভীরের সবচেয়ে প্রিয় কাজই হলো রিদিকে জ্বালানো। আর তাই রিদি তানভীরকে দু চোখে দেখতে পারে না। তানভীরের দিকে তাকিয়ে ত্বোহা বিরক্ত হয়ে বললো,

“ভাইয়া! তোর এখানে কি?”
“কি মানে? তোরা এখানে কি করছিস?”
“তুই কানা? মেহেদি লাগাচ্ছি দেখছিস না?”
“তো, আমিও লাগাবো!”
এই বলে ধপাস করে বসে পড়লো বোনেদের ভিড়ের মাঝে। রিদি রেগে গজরাতে লাগলো,
“তুই কি মেয়ে মানুষ? মেহেদি পরবি? মেয়েদের মাঝে কি হে! বাইরে যা!”
“যা বো না। কি করবি!”

রিদি এবার ত্বোহার দিকে এক ঝলক তাকালো। এরপর বাকিদের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলো। সেই হাসিতেই সবাই বুঝে গেলো রিদির প্ল্যান। রাইসা গিয়ে দৌড়ে দরজাটা বন্ধ করে দিলো। অতঃপর সব বোনেরা মিলে এক সাথে ঝাপিয়ে পরলো তানভীরের উপর। প্রায় আধ ঘন্টা সময় নিয়ে সব বোনেরা মিলে তানভীরকে দিলো মেয়ে সাজিয়ে। বেচারা তানভীর তো নরতেও পারলো না। এতোগুলো বোনের মাঝখান থেকে নিজেকে ছাড়ানো মুশকিল। শাড়ি চুড়ি পরিয়ে তাকে সাজিয়ে মেয়ে বানিয়ে রুম থেকে বের করে দিলো। রিদি তার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে বললো,

“খুব শখ না তোর? এখন দেখ, মেয়ে সেজে কেমন লাগছে তোকে।”
ঠিক তখনই সামনে এসে পড়লো রিদির ভাই ইব্রাহিম আর কাজিন ফাহিম। দুজনেই তানভীরকে দেখে চোখ বড় করে তাকিয়ে আছে। ইব্রাহিম অবাক হয়ে গম্ভীর ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করলো,
“আপনি কে? আপনাকে তো চিনলাম না।”
রিদি হেসে বলে উঠলো,
“এটা আপনাদের ভাই ওরফে বোন, তা ন ভী রা!”

ইব্রাহিম আর ফাহিম দুজনেই চোখ বড় করে তাকায় তানভীরের দিকে। তাকে চেনার উপায় নাই, শুধুু চুলগুলো ছোট বলে বোঝা যাচ্ছে। তানভীরকে এ অবস্থায় দেখে ফাহিম আর ইব্রাহিম হাসতে হাসতে ফ্লোরে গড়াগড়ি খেতে লাগলো। আর তানভীরের যেনো এতে কিছু যায় আসে না। নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে একটা ভংচি মেরে কোমর দুলিয়ে মেয়েদের মতো হেঁটে চলে গেলো। আর এটা দেখে তো সবাই হাসতে হাসতে পেট ফেটে যাবে এমন অবস্থা। মুহূর্তেই পুরো বাড়িটায় হাসির রোল পরে তানভীরের এমন কান্ডে।

চট্টগ্রামের বিশাল সমাবেশ শেষ করে পরের দিন আহাদ রাজা এসে পৌঁছালো সিলেটে। শহরের গাঢ় সবুজ পাহাড়, নদী, চা-বাগানের সৌন্দর্য হয়তো অন্য সবার মনে প্রশান্তি আনে। কিন্তু আহাদের কাছে এগুলো কেবল সাময়িক বিরতি। আগামিকালই আবার জাফলংয়ের দিকে আরেকটা বড় সমাবেশ। কেন্দ্রীয় নেতারা থাকবেন, স্থানীয় ছাত্রদলকে সংগঠিত করতে হবে, আবার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবিলার প্রস্তুতিও নিতে হবে। গত দুই দিন ধরে একের পর এক সভা, বৈঠক, সমাবেশ সব কিছু মিলিয়ে আহাদ রাজার শারীরিক ও মানসিক চাপের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ক্লান্ত শরীরটা কিছুটা সময় চায়, একটু নিঃশ্বাস চায়। অথচ রাজনীতির অস্থির জগতে তার সেই বিলাসিতা নেই।

গাড়ির পাশে এসে হেলে দাঁড়ালো আহাদ রাজা। ঠান্ডা ধাতবে শরীর ঠেকিয়ে দূরের দিকে তাকালো। এক গাছের ডালে বসে আছে এক জোড়া পাখি। একে অপরের কাছাকাছি গা ঘেঁষে বসে আছে তারা। কত সুখ তাদের মনে! ইচ্ছে করলেই ডানা মেলে আকাশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে চলে যেতে পারে। হিংসে হলো আহাদের, সে তো বন্দি। শেকল নেই, তবুও যেনো কোন অদৃশ্য শেকলে বাঁধা। এমন উল্টোপাল্টা ভাবনায় ডুবে থাকা অবস্থায় হঠাৎ তার বুকের ভেতর অন্যরকম দোলা খেলো। হঠাৎ করে মনে পড়লো নিজের প্রেয়সীর কথা। ব্যস্ততার ফাঁকে একটু কথা বললে হয়তো সব ক্লান্তি ঝরে যাবে। সে পকেট থেকে ফোন বের করে রিদির নাম্বারে কল দিলো, কিন্তু রিসিভ করলো না রিদি। আহাদের ভ্রু কুচঁকে যায়, সে আরো একবার কল করে কিন্তু এবারও রিসিভ হলো না। সামন্য এতোটুকতেই আহাদের মাথায় রাগ চড়ে যায়। এই আল্লাহর বান্দিরে সে কতবার বলেছে, যে দুবারের বেশি যেনো কল দেয়া না লাগে। কিন্তু আবারও সেই একই ভূল করলো তার প্রেয়সী। এখন যদি সামনে থাকতো তাহলে নিশ্চিত আস্ত চিবিয়ে খেতো। দাঁতে দাঁত চেপে ফোনের দিকে তাকিয়ে ফোঁস করে উঠলো,

“বজ্জাত বেডি! সাহস বেড়ে গেছে, না? আমি যে তোকে কি করবো জানু! তোর কোন আইডিয়া নেই। শুধুু সেই কাঙ্ক্ষিত দিনটা আসার অপেক্ষায় আমি! জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।”
একটু থেমে আবার দাঁত কড়মড় করে বিড়বিড় করে বললো,
“তখন দেখবি এবং হাড়ে হাড়ে টের পাবে, আহাদ রাজার সাজা কত প্রকার আর কি কি.!”
চোখ বন্ধ করলো কিছুক্ষণ। রিদির এই অবহেলা যেন বুকের ভেতর কাঁটার মতো বিঁধে আছে তার। নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। এমন একটা পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আছে চাইলেও এখন কিছু করতে পারছে না। ঠিক তখনই পায়ের শব্দে চমকে তাকালো। শাহীন হন্তদন্ত পায়ে এগিয়ে আসে। মুখে উৎকণ্ঠা স্পষ্ট, আহাদ ভ্রু কুঁচকে তাকালো। শাহীন কিছুক্ষণ চুপ থেকে আহাদের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করলো। অতঃপর একটু দ্বীধা নিয়ে সাবধানে বললো,

“ভাইই…”
“কি বল?”
এক রকম ঝাঁঝিয়ে উঠে আহাদ,যেনো রাগের আগুন ঝরে পড়ছে। তার সমস্ত রাগ শাহীনের উপর ঝাড়বে এখন। শাহীন বুঝতে পারে সেটা, আহাদ কোনো কারনে রেগে আছে তবুও তার কথা বলা জরুরি। তাই সে একটু নিচু গলায় আবার বললো,
“ভাই, খলিল মাতব্বর এখানেও আমাদের পেছনে লোক লাগিয়েছে। নাদিম খবর দিলো, ঢাকার ছাত্র সংগঠনের মধ্যে ঝামেলা পাকিয়েছে। এখন এদিকেও কিছু একটা করার প্ল্যান করছে।”
“শালার মাতব্বর একটু বেশিই উড়ছে দেখছি। সময় এসেছে ওর ডানা কেটে দেয়ার। আমার কোনো বান্দার গায়ে যদি হাত পড়ে না? আমি ওর বংশ ধ্বংস করে নির্বংশ করে ফেলবো।”
শাহীন ঠোঁট কামড়ে কিছু ভাবলো। অতঃপর সতর্ক স্বরে প্রশ্ন করলো,

“তাহলে এখন কি করবো, ভাই?”
আহাদের চোখ জ্বলন্ত অঙ্গারের মতো। সে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে শাহীনের দিকে তাকিয়ে গর্জে উঠলো,
“কি করবি সেটা কি এখন আমার বলে দিতে হবে?”
শাহীন ভয়ে ভয়ে মাথা নুইয়ে বললো, “হ… ভাই।”
“শাহীননন!”
“জ্বি ভাই!”
“থাপ্পড়ায়া তোর চেহারার নকশা পাল্টায়া দিবো। এখনই আমার চোখের সামনে থেকে চলে যা, কুইক।”
আহাদের রাগ এবার চরম পর্যায় পৌঁছে যায়। ক্রোধে যেনো শরীর ফেটে যাচ্ছে তার। শাহীন আর দেরি না করে চলে যেতে উদ্যত হয়। ঘুড়ে দাঁড়িয়ে কয়েক কদম এগোতেই আহাদের গর্জন আবার শোনালো,

“আমি বলেছি বলেই তুই চলে যাবি?”
শাহীন আবার থমকে দাঁড়িয়ে যায়, ধীরে শরীরটা ঘুরিয়ে নেয় আহাদের দিকে। আতঙ্কে বুক কাঁপছে তার। কি এক মহা ঝামেলা, থাকলেও বিপদ চলে গেলোও বিপদ। শাহীন আবার দু কদম এগিয়ে আসতেই আহাদ হাতের ইশারায় তাকে থামিয়ে দেয়। এরপর আঙুল নেড়ে ঠান্ডা কিন্তু হিংস্র কণ্ঠে বললো,
“দুই ঘন্টা আমার চোখের সামনে আসবি না। না হলে তোরে মেরে তক্তা বানিয়ে ফেলবো। যা এখন কুইক!”
শাহীন তবুও থম মেরে বোকার মতো দাঁড়িয়ে থাকে। যাবে নাকি থাকবে বুঝতে পারছে না। এক রকম দ্বিধায় পরে।আহাদের গর্জনে আবার কাঁপালো চারপাশ,

“কী হলো? যেতে বলেছি তো তোকে!”
শাহীন এবার ধড়ফড় করে দৌড়ে চলে গেলো। আহাদ কিছুক্ষণ স্থির দাঁড়িয়ে রইলো। বুকের ভেতর তীব্র ক্রোধের ঢেউ। বাম হাত দিয়ে নাকটা ঘষে নিয়ে যেনো নিজেকে সামলাতে চাইলো। কিন্তু ফোনের স্ক্রিনে আবার রিদির নাম ভেসে উঠতেই তার রাগ নতুন করে জ্বলে উঠলো। সজোরে একটা লাথি মারলো গাড়ির গায়ে। ধাতব শব্দ চারপাশে প্রতিধ্বনি হলো। বুকের ভেতর জমে থাকা আগুনটা যেন কিছুটা কমলো, কিন্তু পুরোপুরি নয়।

এদিকে সন্ধ্যার পর তানিশার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান প্রায় শেষের দিকে। উঠোনজুড়ে রঙিন আলো, ফুলের সাজ আর হুল্লোড়ে ভরে আছে চারপাশ। সবাই একরকমের পোশাকে, মেয়েরা হলুদ আর সবুজ রঙের শাড়ি, ছেলেরা একই রঙের পাঞ্জাবি পরে। যেনো একেবারে মিলেমিশে গেছে উৎসবের আবহে। অথচ এই ভিড়ের মাঝে একেবারেই আলাদা দেখাচ্ছিলো রিদিকে। রিদিকে হাতে পায় ধরেও কেউ শাড়ি পরাতে পারলো না। রিদি যেনো প্রতিজ্ঞা করেছে সে শাড়ি পরবে না তো পরবেই না। সবার মাঝখানে তাকে কেমন খাপছাড়া লাগছিলো। বটল গ্রীন রঙের গাউন পরে বসে আছে এক কোণের চেয়ারে। ঠিক তখনই ত্বোহা এসে আরেকটা চেয়ার টেনে বসলো তার পাশে। একটু মন খারাপ করার ভঙ্গিতে রিদির দিকে এক ঝলক তাকিয়ে বললো,

“তুই শাড়ি পরলে কী এমন হতো? আমরা সবাই কত প্ল্যান করছি শাড়ি পরে একসাথে ছবি তুলবো।”
“শাড়ি না পরলে বুঝি ছবি তোলা যাবে না? তাহলে ঠিক আছে তুললাম না। আমারও শখ নাই ছবি তোলার।”
ত্বোহা হালকা বিরক্ত হয়ে মাথা নাড়লো, “আরে..! আমি সেটা বলছি?”
“তাহলে এত কথা বলিস ক্যান?”
ত্বোহা হাঁ করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো রিদির দিকে, অতঃপর হালকা হতাশ হওয়ার ভঙ্গীতে বললো,
“আজব! তোরে দেখি কিছুই বলা যায় না। সারাক্ষণ নাকের ডগায় রাগ নিয়ে বসে থাকিস।”
রিদি আর উত্তর দিলো না। শুধু ঠোঁট চেপে, চোখ কুঁচকে তাকিয়ে রইলো ত্বোহার দিকে। ঠিক তখনই পিছন থেকে হঠাৎ কেউ তার চুল ধরে টান মেরে দিলো। চুল টান খাওয়ার সাথে সাথে রিদি হালকা চিৎকার করে আর্তনাদ করে উঠলো,

“আহহহ!”
ঝট করে ঘুরে তাকিয়ে দেখে তানভীর দাঁড়িয়ে আছে। বএিশটা পাটি বের করে দুষ্টু হাসছে। রিদি রাগে ফেটে পড়লো। চেয়ার থেকে ঝটকা মেরে উঠে দাঁড়িয়ে তার দিকে এগিয়ে গেলো। দাঁত কিড়মিড় করে চেঁচিয়ে উঠলো,
“তোর শিক্ষা হয়নি না? আবার আসছিস আমার মাইর খাওয়ার জন্য?”
তানভীর একচোট হেসে বাঁকা গলায় বললো,
“কথায় আছে না? শিক্ষার কোনো বয়স নাই। তাই আবার চেষ্টা করলাম।”
“ও, ও তাহলে তোকে আবারও শিক্ষা দিতে হবে মনে হচ্ছে। ত্বোহাআআআ..!”

তানভীরের এতে হেলদেল নেই, সে বিন্দুমাত্রও ভয় পেলো না। বরং দুষ্টু চোখে তাকিয়ে আরও কাছে এলো রিদির। রিদি ভালোকরেই বুঝতে পারলো, কিছু একটা করবে এই বদমাশটা। তাই সে মাথা নাড়িয়ে ঘুরে চলে যেতে নিলেই তানভীর হঠাৎ পিছন থেকে এক টান দেয়। রিদি ভারসাম্য রাখতে না পেরে ধপ করে মাটিতে পরে যায়। তানভীর একটু ঝুঁকে রিদির সামনে বসে, একহাত পিছন থেকে এনে রিদির পুরো মুখে হলুদ লাগিয়ে ভুত বানিয়ে দেয়। এবার তানভীর হেসে হেসে বললো,
“কাল আমাকে মেয়ে বানাইছিস না? আজ তোকে ভুত বানালাম। অবশ্য তুই তো আগে থেকেই ভুতের লিডার। তুই আসলেই এই পাড়ায় আর ভুত পাওয়া যায় না।”

রিদি কটমট করে তাকালো তানভীরের দিকে। গলা ভেঙে চিৎকার করতে যাবে, ঠিক তখনই ইব্রাহিমকে দেখতে পায়। ইব্রাহিমকে দেখে একরকম হাউমাউ করে ডাক দিলো রিদি।
“ভাইয়াআআ!”
ইব্রাহিম ঘুরে সেদিকে তাকাতেই তানভীর উঠে সেখান থেকে ভো দৌঁড় দিয়ে পালিয়ে যায়। ত্বোহা রিদিকে টেনে তোলে। ইব্রাহিম এগিয়ে এসে দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে গেলো। ভ্রু তুলে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“কিরে রে? একি অবস্থা তোর?”
রিদি কেঁদে ফেলার ভঙ্গিতে হাত কচলাতে কচলাতে বললো,

“ভাইয়া, তানভীরকে কিছু বলেন। ও বেশি বেশি করতেছে এবার। আমি কিন্তু চলে যাবো এমন করলে।”
ইব্রাহিম শান্ত গলায় তার মাথায় হাত রেখে বললো,
“আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে শান্ত হ। তুই ঘরে যা। আমি দেখি ওই বান্দরটা কই পালালো।”
রিদি গটগট করে চলে গেলো ভেতরে। মুখ ধুয়ে একটু শান্ত হতে চাইলো, কিন্তু ঘরের ভেতর কোনো রুমই ফাঁকা পেলো না। সব জায়গায় মানুষে ভরা। শেষমেশ বিরক্ত হয়ে ছাদে চলে গেলো। ছাদের এক কোনায় ছোট্ট একটা সোফা ফাঁকা ছিলো। গিয়ে সেখানে ধপ করে বসে পড়লো। পা তুলে আরাম করে বসে মাথা এলিয়ে দিলো আকাশের দিকে। উপরে কয়েকটা তারা জ্বলজ্বল করছে। ঠাণ্ডা বাতাস বয়ে আসছে। তখনই হঠাৎ মনে পড়লো আহাদের কথা। বুকের ভেতরটা কেমন যেনো নড়ে উঠলো। মনে মনে ভাবলো, সে তো আসার আগে আহাদের সাথে দেখা করেনি, একটু কথাও বলেনি। আর আহাদ? সেও তো আর কল করেনি! আর তাছাড়া কেনই বা কল করবে। তারও তো একটা কারন থাকা চাই!

এই বলে মন খারাপ করে পাশে রাখা ফোনটা হাতে নিলো। স্ক্রিন জ্বলে উঠতেই চোখ কপালে উঠে গেলো রিদির। আহাদ তাকে দু’বার ফোন করেছিলো!
“কখন করলো? আমি টেরই পেলাম না! এখন কি করবো, আমি কি কল ব্যাক করবো?”
নিজের সাথে নিজেই বিড়বিড় করে উঠলো রিদি। একটু ভেবে আবার মাথা ঝাঁকালো,
“না না, আমি কিছুতেই ওই আহাদ রাজাকে কল ব্যাক করবো না। কিছুতেই না।”
কিন্তু মন যেনো কিছুতেই মানলো না। দ্বিধায় পড়ে অবশেষে ফেসবুকে ঢুকে রিদি। আহাদের প্রোফাইলে গিয়ে দেখলো, গতকালকের একটা ছবি। সাদা পায়জামা পাঞ্জাবি পরে স্টেজে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিচ্ছে আহাদ। আর তখনই হয়তো তোলা হয়েছে ছবিটা। হঠাৎ রিদির চোখে পরলো সাহারা নামের একটা মেয়ে সেই ছবিতে কমেন্ট করেছে,
“মাই হ্যান্ডসাম ❤️”

মুহূর্তেই আগুনের মত জ্বলে উঠলো রিদি। দাঁতে দাঁত চেপে ফুঁসতে ফুঁসতে কমেন্টে একটা রাগি ইমোজি দিয়ে দিলো। ঠোঁট বাঁকিয়ে ব্যাঙ্গ করে বললো,
“এহহ! মাই হ্যানতাম! বজ্জাত মহিলা, লাজলজ্জা কিছু নাই। অন্যের প্রপার্টির দিকে নজর দেয়! সামনে পেলে তোর মাথায় একটা চুলও থাকতো না।”

রাগে ফুঁসতে থাকে রিদি, দাঁত কিড়মিড় করছে তার। সে ফোন টা কোলের উপর রেখে কুসন শক্ত করে চেপে ধরলো। তবে দুই মিনিটের ব্যবধানে তার ফোনটা আবার জ্বলে উঠলো। ভ্রুু কুচঁকে রিদি আবার ফোন হাতে তুলে নেয়। নোটিফিকেশন দেখে চোখ বড় হয়ে গেলো রিদির। সেই মেয়ের কমেন্টে রিপ্লাই করেছে আহাদ রাজা, একটা স্মাইলি ইমোজি দিয়ে। রিদির চোখ বিস্ফারিত হয়ে গেলো। রাগ যেনো শরীর পুড়িয়ে দিচ্ছে। দাঁতে দাঁত চেপে সেই রিপ্লাইতেও রাগি ইমোজি দিলো। এরপর আর সহ্য করতে পারলো না। ফোনটা সোফার এক কোনায় ছুড়ে ফেলে গটগট করে ছাদ থেকে নেমে গেলো।

লাল শাড়িতে প্রেয়সী পর্ব ১৭

কিন্তু ফোনের অপরপ্রান্তে বসে আহাদ রাজা সবকিছু লক্ষ্য করছিলো। রিদির প্রতিটি প্রতিক্রিয়া তার নজরে এসেছে। ফোনের স্ক্রিনে রিদির রাগি ইমোজি দেখে ঠোঁটের কোণে ধীরে ধীরে এক রহস্যময় হাসি ফুটে উঠলো। ঠোঁটে ঠোঁট চেপে সেই হাসিটা দমিয়ে রাখার ব্যার্থ চেষ্টা করলো।

লাল শাড়িতে প্রেয়সী পর্ব ১৯

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here