সঙ্গীন হৃদয়ানুভুতি ২য় খন্ড পর্ব ৩৪+৩৫

সঙ্গীন হৃদয়ানুভুতি ২য় খন্ড পর্ব ৩৪+৩৫
Jannatul Firdaus Mithila

“ বেয়াই সাব মানে? এখনও বউয়ের সঙ্গে বাসরটাই করতে পারলাম না, সেখানে তুই এখন থেকেই বেয়াই ডাকা শুরু করে দিলি?”
রৌদ্রের কথায় রেহান লাজুক হাসলো।অনিকের দিকে তাকাতেই দেখলো— ছেলেটা কেমন লজ্জালু ভাব নিয়ে দাড়িয়ে আছে। রেহান দুষ্টুমি করে অনিককে বললো,
“ দেখ অনি! তোর দুলাভাই যেভাবে শরীরে লাভ বাইট নিয়ে ঘুড়ে, কোনদিন জানি কানে আসে ব্যাটা আমার আগেই বাপ হতে চলেছে।”

এহেন কথায় নাকেমুখে উঠে যায় অনিকের। বেচারা কাশতে কাশতে শেষ! রেহান দৌড়ে আসলো।একহাতে অনিকের পিঠ চাপড়ে অন্যহাতে মাথায় আলতো করে হাত বুলালো।আর্তনাদ করে বললো,
“ আহারে! বেচারা মামা হবার আনন্দে এখনি কেমন পাগল হয়ে গেছে!”
তড়িৎ বিস্ফোরিত দৃষ্টিতে তাকায় অনিক। নিজেকে কোনমতে সামলে রেহানকে বলে,
“ কি বলো এসব! তারা তো তেমন কিছু…. ”
“ আরে ধূর ব্যাটা! তুই তো আস্ত একটা ঢেড়স রে! আমি কি আর এমনি এমনি বলেছি? প্রমান আছে বিধায় বলেছি।ওয়েট তোকেও দেখাচ্ছি!”
বলেই রেহান ছুটে এলো রৌদ্রের কাছে।তাকে দেখেই রৌদ্র বসা ছেড়ে উঠে দাড়ায়। সর্তক কন্ঠে পিছিয়ে যেতে যেতে বলে,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“ দূরে থাক আমার থেকে! কাছে এলে খবর করে ছাড়বো কিন্তু!”
রেহান শুনলো না সে কথা।সে রৌদ্রের কাছে এগিয়ে আসতে লাগলো।পরক্ষণেই রৌদ্রের টিশার্টের কলার চেপে ধরে শক্ত হাতে।এদিকে অনিক হতবিহ্বল। এই দুজনের এমন হাতাহাতিতে সে বরাবরই নির্বিকার ভঙ্গি পালন করে।আজকেও তাই।রেহান রৌদ্রের সঙ্গে কোনমতেই পেরে উঠছে না।ছেলেটার শক্তির সঙ্গে পেরে উঠা কি আর এতই সহজ? রেহান হাতাহাতির এক পর্যায়ে বাঁকা হেসে বললো,
“ ব্যাটা তোরে তোর বউয়ের কসম! এখন চুপচাপ দেখতে দে!”
সঙ্গে সঙ্গে থেমে গেলো রৌদ্র। রেহানের দিকে তাকিয়ে রইলো কটমট দৃষ্টিতে।দাঁতে দাঁত চিবিয়ে বলে,
“ তোরে খালি একবার হাতে পাই!দেখিস তোর একদিন আর আমি যে কদিন লাগে!”
রেহান ঠোঁট কামড়ে হাসলো। মিনমিনে সুরে বললো,

“ আমাকে দেখার জন্য আমার বউ আছে।সম্বন্ধি মশাই, আপনি বরং আপনার বউকে দেখিয়েন।”
কথাটা শেষ করেই চোখ টিপে রেহান।রৌদ্রের ঘাড়ের কাছে টিশার্টের অংশটা মেলে ধরে অনিককে দেখিয়ে বললো,
“ দেখ ছোটো শালা! ওহ সরি সম্বন্ধি!চোখ খুলে দেখ।বিয়ে গেলো আমার,সব হলো আমার আর এদিকে বাসর করে আমার বেস্টু! কারবার টা দেখছস?”
অনিক মৃদু কেশে অন্যদিকে দৃষ্টি সরায়।ছেলেটা বরাবরই খানিকটা লাজুক স্বভাবের। সে কোনমতে বললো,
“ সবকিছুতে আমার বনুকে টেনো না তো!তোমরা তোমরা যা ইচ্ছে করো বাট বনুকে নিয়ে কিছু বলোনা।”
রেহান তখন রৌদ্রকে ছেড়ে দিয়ে অনিকের পাশে এসে দাড়ায়। ছেলেটার কাঁধে হাত রেখে ভাবুক স্বরে বললো,

“ তো কার ব্যাপারে বলা উচিত অনিক? নিশ্চয়ই ছোট সম্বন্ধির হবু বউকে নিয়ে!”
তড়িৎ দৃষ্টি ঘোরায় অনিক।রেহানের দিকে তাকিয়ে বলে,
“ ক.কি?”
রেহান দুষ্ট হাসলো।মাথা নাড়িয়ে বললো,
“ একটা কথা শুনেছি অনিক!কিন্তু কথাটা এ মুহুর্তে মনে পড়ছে না….কি যেন ছিলো সেটা…”
বলতে বলতেই রেহান গিয়ে বসলো রৌদ্রের কাছে।রৌদ্রের দৃষ্টি তার হাতে থাকা ফোনের দিকে।রেহান সেদিকে একপলক তাকিয়ে ফের দৃষ্টি আনে অনিকের ওপর।দুহাত পেছনে দিয়ে খানিকটা গা এলিয়ে বসে রেহান।বলে,
“ কি যেন ছিলো কথাটা রোদ? আমি ছাড়া পৃথিবীর সব ছেলেই তোমার ভাই…. এই টাইপ কিছুই তো বলেছিল মেবি! তাই-না?”

অনিক আবারও কেশে উঠে।রৌদ্র ফোনে চোখ রেখেই ঠোঁট কামড়ে মুচকি হাসছে।রেহানের ঠোঁটেও বাঁকা হাসির ঝলক।অনিক গাল ফুলিয়ে বলে উঠে,
“ তোমরা এমন!ছোট ভাইয়ের কথাও আড়ি পেতে শোনো!”
রেহান ফট করে দাড়িয়ে পড়ে।অনিককে শুধরে দিয়ে বলে,
“ আরে… বাবু রাগ করসো?কথায় কথায় মেয়েদের মতো গাল ফুলাও কেন বাবু?”
রৌদ্র একপলক রেহানের দিকে তাকিয়ে ফোঁস করে নিশ্বাস ফেলে।তারপর আবারও মনোযোগ টানলো নিজের ফোনের ওপর। হসপিটাল থেকে জরুরি একটা মেইল এসেছে তার।সেটাই দেখছে এতো মনোযোগ সহকারে।এদিকে অনিক মুখ কুচকে রেহানকে বলে,

“ এটা ঠিক না ভাইয়া! তুমি আমার কথা কিভাবে শুনলে?”
রেহান হাসি মুখেই বলে,
“ শোন ভাই! তুই যখন ইকরার সঙ্গে কথা বলছিলি,তখনি আমি রোদকে খুজতে ছাদে গিয়েছিলাম।আর এক্সিডেন্টলি কিছু কথা শুনেও ফেলি! এর জন্য অবশ্য আমি সরি ”
“ আরে না! সমস্যা নেই!”
অনিক আর রেহানের কথার মাঝে রৌদ্র গম্ভীর কণ্ঠে বলে ওঠে,
“ গায়েস! আই নিডা আ গো।”
রেহান ভ্রু কুঁচকায়।রৌদ্রকে বলে,
“ কই যাবি হঠাৎ?”
রৌদ্র ফোঁস করে নিশ্বাস ফেলে। চোখদুটো বন্ধ করে কিছু একটা ভাবলো।পরক্ষণেই রেহান আর অনিকের সাথে কোন এক বিষয় নিয়ে আলোচনা চালালো কিছুক্ষণ!

রেহান ফোনে কথা বলতে বলতে ঘরে ঢুকে।আড়চোখে সামনে তাকাতেই দেখতে পায় —রুহি ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে চুল আঁচড়াচ্ছে।গলায় কেমন গুনগুন করে গানের সুরও তুলেছে।রেহান মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় তাকিয়ে রইলো সেদিকে।ওপাশে ফোনে যে কেও কথা বলছে সেদিকে আর হুঁশ নেই বেচারার! এখন যে তার ধ্যান জ্ঞান সবটা জুড়ে রুহির বিচরণ।রেহান ধীর পায়ে এগিয়ে এসে দাড়ায় রুহির ঠিক পেছনে। রুহি বাঁকা চোখে আয়নার দিকে তাকায়।পেছনে রেহানকে মুচকি হাসতে দেখে সে ভ্রু উঁচিয়ে ইশারায় জিজ্ঞেস করে,
“ কি হয়েছে?”
রেহান মুচকি হেসেই মাথা নাড়ায়। রুহির দু কাধে আলতো করে হাত রেখে বলে,
“ সাহায্য লাগবে মেডাম?”
রুহি মাথা নাড়িয়ে না জানায়।মৃদু হেসে বলে,

“ প্রয়োজন নেই জনাব! আপনি বরং গিয়ে বসে থাকুন।”
রেহান মেয়েটার কথা একপ্রকার উপেক্ষা করে তার হাত থেকে চিরুনিটা টেনে নেয়।তারপর সযত্নে রুহির চুলগুলোকে আঁচড়ে দিতে থাকে।রুহি আয়নাতেই নিজের প্রেমিক পুরুষটার যত্নে ভরা কর্মকাণ্ডগুলো মুগ্ধ চোখে দেখতে থাকে।কিয়তক্ষন তাদের মাঝে নিরবতা চললো। তারপর সেই নিরবতা ভাঙলো রেহানের মৃদু গলা খাঁকারিতে। রেহান কিছু একটা ভেবে, রুহিকে জিজ্ঞেস করে,
“ আচ্ছা রুহি…তোমায় একটা প্রশ্ন করি?”
রুহি আলতো হাসলো।বললো,
“ হুম অবশ্যই!”

রেহান মেয়েটার চুলে সুন্দর করে বিনুনি গেথেঁ দিলো।তারপর রুহিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে, নিজে বসে পড়লো রুহির পায়ের সামনে।রুহি হকচকিয়ে ওঠে এহেন কান্ডে।ব্যস্ত গলায় বলে,
“ এই…কি করছোটা কি?… এখানে কেন বসলে? উঠো..উঠো পড়ো বলছি।”
রেহান এবারেও শুনলোনা মেয়েটার কথা।উল্টো রুহির দু’হাত নিজের হাতের মুঠোয় পুরে রুহির চোখের দিকে নিরেট দৃষ্টিতে তাকায়। রুহি রেহানের এমন দৃষ্টিতে কিছুটা শঙ্কিত হয়।থেমে থেমে বলে,
“ কি হয়েছে?”

রেহান এবার খানিকটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।ভরাট কন্ঠে বলে,
“ রুহি! এখন আমি তোমায় যা যা বলবো তুমি মনোযোগ দিয়ে শুনবে সবটা।আর কথা দাও, তুমি ব্যাপারটা নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবে।“
রুহি হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে এখনো।হয়তো ভাবছে — কি এমন কথা, যেটা বলতেও এতো জড়তা হচ্ছে মানুষটার।
রেহান কালবিলম্ব না করে একে একে রৌদ্র আর অরিনের ব্যাপারে সবটাই খুলে বললো রুহির কাছে।প্রতিটি কথা শুনতে গিয়ে রুহির মুখভঙ্গিতে ছিলো একরাশ অবাকের ছাপ।হয়তো কথাগুলো বিশ্বাস করতে খানিকটা সময় লাগছে তাঁর।
প্রায় আধঘন্টা পর রেহান থামলো।রুহির দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো — মেয়েটার কেঁদেকুটে যাচ্ছে তাই অবস্থা! রেহান বিচলিত হয়ে রুহিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।মেয়েটার পিঠে আলতো করে হাত মরিয়ে স্বান্তনার সুরে বললো,

“ কাঁদে না শ্যামবতী! এই বিষয়গুলো আজ নাহয় কাল তোমাকে বলতেই হতো।তাছাড়া তোমার কাছ থেকে কোনো কথা লুকানোর সাধ্য নেই আমার।প্লিজ কেঁদো না।”
রুহি নাক টানে। ফুপিয়ে ফুপিয়ে বলে,
“ ভাইয়া আর অরি এতোটা কষ্ট সহ্য করছে? ভালোবেসেও একে-অপরের কাছ থেকে দুরে দূরে থাকছে।এ যে বড় কষ্টের রেহান…বড্ড তীব্র কষ্ট!”
রেহান আলতো হাসলো।সে জানতো মেয়েটা ঠিক বুঝবে বিষয়টা।সে রুহিকে বুক থেকে উঠায়।মেয়েটার ভেজা চোখের পাতায় পরপর কয়েকটা চুমু খেয়ে নরম গলায় বললো,
“ আল্লাহ চাইলে সবটা ঠিক হয়ে যাবে শ্যামবতী!তুমি প্লিজ আর কেঁদো না। তোমার কান্না যে আমার সহ্য হয়না!”
রুহি ভেজা চোখে হাসলো।নাক টেনে আবারও জড়িয়ে ধরলো রেহানকে।রেহানও তার বুকের মাঝে লুকিয়ে নিলো তার শ্যামবতীকে।

রাত ১০ টা বেজে ১৫ মিনিট 🌸
বাড়ির সকলে একসাথে বসেছে ডিনার করতে।সম্পূর্ণ টেবিল জুড়ে হরেকরকম খাবারের বাহার।পুরো বাড়িই যেন খাবারের সুঘ্রাণে মো মো করছে।রেহান, রুহি বসেছে পাশাপাশি।তাদের পাশের চেয়ারেই বসেছেন সাব্বির সাহেব, তায়েফ সাহেব। বিপরীত দিকে বসেছেন তাশরিক সাহেব, অনিক,অরিন,আহি-মাহি।বাদ বাকি খালি চেয়ার জুড়ে বাকি সদস্যরা। কিয়তক্ষন বাদেই ডাইনিং রুমে উপস্থিত হয় রৌদ্র। মুখটা তার গম্ভীর করে রাখা।অরিন একপলক আড়চোখে তাকালো রৌদ্রের দিকে।পরক্ষণেই চটজলদি নিজের দৃষ্টি সরিয়ে নেয় সেখান থেকে। রৌদ্র চেয়ার টেনে বসে।
খাবার পাতে নিয়েই মৃদু গলা খাঁকারি দিয়ে সকলের মনোযোগ নিজের দিকে টানে।সকলে একযোগে রৌদ্রের দিকে তাকায়। রৌদ্র এবার বাবার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বলে,

“ আব্বু! হসপিটাল থেকে কেম্পেইনে যাওয়া হচ্ছে। প্রতন্ত এলাকাগুলোতে ফ্রীতে চিকিৎসা দেওয়ার
জন্য।অনেক জায়গার ডক্টররাও স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করেছে। ইভেন আমিও করেছি।তো আমার ভাগে লোকেশন পরেছে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট। সো যাওয়ার জন্য ডেট চলে আসছে।”
কবির সাহেব নিজের প্লেটটা খানিকটা দূরে ঠেলে সেথায় হাতে হাত রাখলেন। গম্ভীর মুখে শুধালেন,
“ এতো ভালো খবর! তা কবে যাচ্ছো তুমি?”
রৌদ্র একবার আড়চোখে তাকালো অরিনের পানে।মেয়েটার চাঁদ মুখে যেন রাজ্যের আধার নেমেছে!অরিন মাথানিচু করে বসে আছে। হয়তো অশ্রুজল লুকানোর পায়তারা করছে! রৌদ্র নিজের দৃষ্টি সরিয়ে আনে সেখান থেকে। তারপর গম্ভীর কণ্ঠে বলে,

“ আগামীকাল!”
“ কালকেই? তা কদিনের জন্য যাবি রোদ?” — পাশ থেকে তায়েফ সাহেবের কথায় সেদিকে ফিরে রৌদ্র। বলে,
“ সপ্তাহখানেক লাগবে!”
কবির সাহেব এবার গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,
“ ঠিক আছে তবে।তুমি নাহয় খাওয়া দাওয়া শেষে ব্যাগপত্র গুছিয়ে নাও। আর বাড়ির গাড়ি দিয়েই যাবে তো না-কি?”
“ না আব্বু! আমি ফ্লাইটের টিকেট বুক করেছি।আগামীকাল সকাল ৭ টায় ফ্লাইট।”
কবির সাহেব মাথা নাড়ালেন। তারপর সবাইকে
বললেন খাবার খাওয়া শুরু করতে।সকলেও তাই করলো।শুধু দুটো মানুষ বাদে। অরিনের বুঝি খাবার আর নামছেনা গলা দিয়ে। তারওপর চোখদুটোও বাধ মানছে না একেবারেই। কি যে জ্বলুনি হচ্ছে না! রৌদ্র বারেবারে সরু চোখে তাকাচ্ছে অরিনের দিকে। সে যে বেশ বুঝতে পারছে অরিনের মনের দোলাচল।

রাত্রির প্রথম প্রহর! নিস্তব্ধতা যেন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চারপাশে। আকাশে আজ মস্ত বড় চাঁদ উঠেছে। কি সুন্দর চাঁদের আলোয় রাতের সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে। অথচ এতোটা নিস্তব্ধতাতেও ঘুম নেই অরিনের চোখে। মেয়েটা অন্ধকার রুমে বসে আছে আপনমনে। চোখ দিয়ে ঝড়ছে অশ্রুকণা। অরিন একদম মুছলো না সেই অশ্রুসিক্ত লোচন। বুকটায় কেমন তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে তার। যদিও সে জানে, তার ডাক্তার সাহেব তো আর এমনি এমনি যাচ্ছে না। সে তার কর্ম পালনেই যাচ্ছে কিন্তু তবুও বুঝি তার বেহায়া মনটা কিছুতেই সেই বুঝ মানছেনা। অরিনের এখন কেমন হাসফাস লাগছে।ইচ্ছে করছে ছুটে গিয়ে মানুষটার বুকে লেপ্টে যেতে। সেই বুকে মাথা রেখে ইচ্ছেমত কাঁদতে।কিন্তু এমনটা যে আর হবার নয়! বাড়ির কেও যদি ঘুনাক্ষরে কিছু টের পেয়ে যায় তাহলে যে প্রলয় ঘটবে।
অরিন এসব ভাবতে ভাবতেই বিছানায় কাত হয়ে শুয়ে পড়ে।চোখদুটো যেই বন্ধ করবে তখনি তার ফোনে টুং করে মেসেজের শব্দ আসে।অরিন খামখেয়ালি হয়েই মেসেজটা ওপেন করে। তক্ষুনি তার সামনে ভেসে ওঠে রৌদ্রের পাঠানো মেসেজ!

“ দরজাটা খোল সানশাইন!”
তড়িৎ ধড়ফড়িয়ে উঠে বস অরিন।চোখদুটো খানিকটা বুজে আবারও ফোনের দিকে তাকায়। নাহ! এটা সত্যি তার ডাক্তার সাহেবই পাঠিয়েছে। অরিন ছুটে গিয়ে দরজা খুলে দেয়। এতক্ষণের জমানো অভিমানগুলো নিমিষেই উধাও তা খুলতেই দেখা মিলে রৌদ্রের।ছেলেটা আশপাশে নজর বুলিয়ে ধীরেসুস্থে ঘরে ঢুকে।
অরিন খানিকটা সরে আসে দরজার কাছ থেকে।

রৌদ্র দরজাটা ভেতর থেকে লাগিয়ে দেয়।তারপর অরিনের কাছে এগিয়ে এসে তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। অরিনও বুঝি এটারই অপেক্ষায় ছিল। সেও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো রৌদ্রকে।
কিয়তক্ষন বাদেই রৌদ্রের কানে এলো অরিনের ফোঁপানোর শব্দ। সে তৎক্ষনাৎ অরিনকে ছেড়ে দিয়ে মেয়েটার মুখখানা নিজের দুহাতের আজলায় নিয়ে নেয়।ব্যস্ত গলায় বলে,
“ এই…বউ! কাঁদে না জান।তাকাও আমার দিকে! প্লিজ তাকাও!”
অরিন চোখ তুললো না।আগের ন্যায় কেঁদেই যাচ্ছে মেয়েটা।রৌদ্র তৎক্ষনাৎ তাকে কোলে তুলে নেয়।মেয়েটাকে কোলে নিয়ে খাটে বসলো রৌদ্র। অরিনের কান্নারত মুখখানা চিবুকে ধরে উঁচিয়ে তুললো।মেয়েটার সারা মুখে অজস্র ছোট ছোট
ভালোবাসার পরশ একে দিলো পাগলের মতো।ইতোমধ্যেই অরিনের কান্নাও বুঝি থেমে গেলো।সে চোখবুঁজে অনুভব করছে রৌদ্রের দেওয়া প্রতিটি পরশ।রৌদ্র থামলো।অরিনের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। অরিন রৌদ্রের দিকে তাকায় ছলছল চোখে। নাক টেনে টেনে বলে,

“ আপনাকে ছাড়া কিভাবে থাকবো এ কয়দিন? আপনাকে একটুখানি না দেখলে যে দমবন্ধ লাগে আমার।আপনার….. ”
থামলো অরিন।চোখদুটো তার নিচু হয়ে আসে আবারও। রৌদ্র ফের তার মুখটা উপরে তুলে।নরম গলায় বলে,
“ আমার?”
অরিন বুঝি খানিকটা লজ্জা পেলো।কিন্তু কি এমন কথা বলতে চাইছিলো মেয়েটা যার জন্য সে এতটা লজ্জা পাচ্ছে? রৌদ্র আবারও জিজ্ঞেস করে,
“ আমার কি বউ?”
অরিন নিচু গলায় মিনমিনিয়ে বলে,
“ আপনার… স্পর্শ না পেলে খারাপ লাগে আমার!”

কথাটা বলেই নিজের লজ্জা রাঙা মুখটা তড়িৎ দু’হাতের মাঝে লুকিয়ে ফেললো মেয়েটা। তা দেখে রৌদ্র বিজয়ী হাসলো।অরিনের হাতদুটো জোর করে সরিয়ে দিলো মুখের সামনে থেকে। তারপর মেয়েটার ললাটে একে দিলো এক গাঢ় চুম্বন।অরিন আবেশে চোখ বন্ধ করে নেয়।রৌদ্র সময় নিয়ে তার ঠোঁট সরালো। অরিনের বন্ধ রাখা চোখদুটোর পিঠে আলতো করে চুমু খেলো।তারপর মেয়েটার কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বললো,
“ একবার তুমি বলো না বউ!একবার আমার নামটা ধরে ডাকো প্লিজ! বেশি না জাস্ট একবার!”

অরিনের ঘাড়ের ওপর আছড়ে পড়ছে রৌদ্রের গরম নিশ্বাস। তারওপর রৌদ্রের এহেন আবদারে সর্বাঙ্গে এক নাম না জানা শিহরণ বয়ে যাচ্ছে অরিনের। অরিন দুরুদুরু বুকে আঁকড়ে ধরলো রৌদ্রের বুকের কাছের শার্টের অংশ।রৌদ্র মেয়েটার ঘাড়ের কাছে নাক ঘষতে থাকে।অরিনের শরীর থেকে আসা মেয়েলি সুবাস ভেতর থেকে টানছে তাকে।মনে জাগিয়ে তুলছে মেয়েটাকে গভীরভাবে কাছে টেনে আনার অনুভুতি। রৌদ্র শব্দ করে চুমু খায় অরিনের ঘাড়ে। তারপর অরিনকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে, নেশালো চোখে পরোখ করে মেয়েটার সমগ্র মুখমণ্ডল। আজও অরিনের ঐ গোলাপের পাপড়ির ন্যায় ঠোঁটগুলি বড্ড বেসামাল করছে তাকে।রৌদ্র ধীরে ধীরে নিজের ঠোঁট নিয়ে আসে অরিনের ঠোঁটের কাছে। দু’জনার ঠোঁট যখন প্রায় ছুঁই ছুঁই তখনি রৌদ্রের হুঁশ ফিরে।। তড়িৎ মনে পড়ে যায় তাদের অবস্থানের কথা।অরিনের রুমে বেশিক্ষণ থাকাটা যে রিস্ক হয়ে যায়। কখন না কখন না জানি কি থেকে কি ঘটে যায় তাতো আর বলা যায় না। রৌদ্র ঘনঘন নিশ্বাস ফেলে নিজেকে কোনমতে স্বাভাবিক করে নেয়।অরিনের ঠোঁটের ওপর আলতো করে চুমু খেয়ে নমনীয় কন্ঠে বলে,

“ সানশাইন!”
অরিন চোখ মেলে তাকায়।রৌদ্র মৃদু হেসে বলতে থাকে,
“ আমি যে কদিন থাকবো না, সে কদিন নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে নিজের খেয়াল রাখবে ঠিক আছে? টাইম টু টাইম খাবার খাবে।গোসলের পর ঠিকমতো চুল মুছবে। আগামী পরশু ভার্সিটির নবীন বরন।সেদিন বোরখা পরে ভার্সিটিতে যাবে।আমার জিনিসে যেন কারও কুনজর না পরে সেদিকে সর্বোচ্চ খেয়াল রাখবে।ভার্সিটিতে যাবেও অনিকের সাথে, আসবেও অনিকের সাথে। যখন যেটা প্রয়োজন, এই ধরো কিছু খাওয়ার ক্রেভিংস হলো,কিংবা কোথাও যেতে ইচ্ছে করলো, সেক্ষেত্রে আমায় জাস্ট একটা মেসেজ দিয়ে বলবে কেমন? ঘন্টা খানেকের মধ্যেই সবটা পেয়ে যাবে বউ! আর শোনো!”
অরিনের চোখের কার্নিশ ইতোমধ্যেই জলে টইটুম্বুর। রৌদ্র আলতো হাতে মেয়েটার চোখদুটো মুছে দিলো।ফের বললো,

“ যখনি আমার কথা মনে পড়বে তখনি আমায় কল দিবে কেমন? দেখতে ইচ্ছে করলে ভিডিও কল দিবে।ব্যস্ততায় আমি কথা বলতে না পারলেও এটলিস্ট তুমি তো আমায় দেখতে পারবে।”
অরিনের চোখ এবার আর বাঁধ মানলোনা।সে ফট করে জড়িয়ে ধরে রৌদ্রকে।তারপর হু হু করে কেঁদে ওঠে।রৌদ্র আবারও অস্থির হলো। মেয়েটা কেনো বোঝেনা তার চোখের পানি ওর সহ্য হয়না।রৌদ্র আলতো হাত মেয়েটার মাথায় রাখে।অস্থির গলায় বলে,

“ বউজান! প্লিজ কাঁদিস না। তোর কান্না আমার সহ্য হয়না রে।তোর কান্না যে বড় দামি সানশাইন।কেনো যখন তখন কান্না করিস? তুই কেনো বুঝিস না,তোর কান্না গুলো তীরের মতো বুকে বিঁধে আমার।প্লিজ আমায় আর কষ্ট দিস না। থেমে যা জানবাচ্চা! তাছাড়া আমিতো আর বেশিদিনের জন্য যাচ্ছিনা বউ।মাত্র সপ্তাহ খানেকের ব্যাপার। ”
অরিন ধীরেসুস্থে কান্না থামায়।নাক টেনে টেনে বলে,
“ আমাকেও নিয়ে চলুন আপনার সাথে!”
রৌদ্র মুচকি হাসলো তার প্রেয়সীর বোকা কথায়। অরিনের মাথার ওপর আলতো করে চুমু দিয়ে বললো,
“ যদি পরিবারের তথাকথিত নিষেধাজ্ঞা না থাকতো,তাহলে তোর বলতে হতোনা সানশাইন। আমার বউকে আমি নিজের বুকে করে নিয়ে যেতাম!”
অরিন কি বুঝলো কে জানে।সে মৃদু নাক টেনে রৌদ্রের বুক থেকে মাথা উঠায়।রৌদ্রের গায়ের টিশার্ট টেনেটুনে ঠিকঠাক করে দিয়ে বলে,

“ খুব তো আমায় বললেন। এবার নাহয় আমিও কিছু বলি।শুনুন! সময় মতো খাবার খাবেন।যত্ন নিবেন নিজের শরীরের। আর…. ”
“ আর?”
“ আর মেয়েদের থেকে দশহাত দূরে থাকবেন। মনে রাখবেন দশহাত দূরে! ”
এপর্যায়ে মৃদু শব্দে হাসতে থাকে রৌদ্র। বহুকষ্টে নিজের মুখের ওপর চেপে ধরে হাসির শব্দ কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছে ছেলেটা তবুও কাজের কাজ তো হলোই না। বরঞ্চ তার হাসি যেন আরও বাড়ছে।রৌদ্র হাসতে হাসতে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়। অরিনের একহাত টেনে তাকে নিজের বুকের ওপর আছড়ে ফেলে। তারপর মেয়েটার কোমর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চোখ ছোট ছোট করে বলে,

“ এত্তো জেলাসি ম্যামের? মানুষটা তো এইটুকুন অথচ জেলাসির পরিমাণ দেখছি বেশ বড়!”
অরিন মুখ ভেংচায়। রৌদ্র আবারও খিলখিল করে হেসে ওঠে তা দেখে। অরিন মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইলো রৌদ্রের হাসির দিকে।ছেলেটা হাসলে তার চোখদুটোও হাসে।উজ্জ্বল শ্যামবর্ণের মানুষটার মুখে এহেন হাসি যে বড্ড মনোমুগ্ধকর। রৌদ্র হাসি থামিয়ে অরিনের দিকে তাকায়। তারপর হুট করেই মেয়েটাকে পাশে শুইয়ে নিজে তার ওপর ঝুঁকে আসে। হঠাৎ কান্ডে অরিন হতবিহ্বল হয়ে তাকিয়ে রইলো শুধু। চোখের পলকেই বুঝি ঘটে গেলো ঘটনাটা।রৌদ্র আলতো করে মেয়েটার মুখের ওপর এসে আছড়ে পড়া চুলগুলো সরিয়ে দিলো।অরিন আজ আর দৃষ্টি সরায়নি।সে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে রৌদ্রের পানে।রৌদ্র একটু একটু করে এগিয়ে আসে মেয়েটার ঠোঁটের দিকে।তারপর ধীরে ধীরে মেয়েটার ওষ্ঠপুট টেনে নেয় নিজের ওষ্ঠপুটের মাঝে।আজকে তার প্রতিটি স্পর্শই যেন আদুরে। রৌদ্র সময় নিয়ে মত্ত হলো অধরসুধাপানে।অরিন কাঁপা কাঁপা হাতে রৌদ্রের চুল আঁকড়ে ধরে।

প্রায় মিনিট পাঁচেক পর অরিনের নিশ্বাস আটকে আসলে রৌদ্র তার ওষ্ঠপুট ছেড়ে দেয়।দুজনেই অনবরত ঘনঘন নিশ্বাস ফেলতে থাকে। রৌদ্র চোখবুঁজে কিছু একটা ভাবলো।পরক্ষণেই শোয়া ছেড়ে উঠে দাড়ায় ছেলেটা।অরিনের দিকে না তাকিয়েই বলে উঠে,
“ ঘুমিয়ে পড় সানশাইন!”
কথাটা শেষ করে রৌদ্র দরজার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো।তখনি পেছন থেকে তার পিঠের কাছের টিশার্টের অংশ চেপে ধরে অরিন। রৌদ্র কিছু একটা বলার জন্য উদ্যত হতেই পেছন থেকে ভেসে আসে অরিনের কন্ঠ!
“ রৌদ্র!”
থমকায় রৌদ্র। বুকের ভেতরটা কেমন ধ্বক করে উঠলো তার।হৃৎপিণ্ডের কয়েকটা বিট বুঝি মিস করলো ছেলেটা।সে ধীরে ধীরে পেছনে ঘুরে। শান্ত কন্ঠে বলে,
“ কি বললি?”
অরিন চোখে হাসলো।আবারও মুগ্ধ কন্ঠে বললো,
“ আমার রৌদ্র!”

ব্যস!এটুকু কথাই বুঝি যথেষ্ট ছিলো ছেলেটাকে পাগল করতে।রৌদ্র আর সামলাতে পারলোনা নিজেকে।সে একপ্রকার ঝাপিয়ে পড়ে অরিনের নরম সিক্ত অধরযুগলের ওপর।আজ কেমন ডেস্পারেটলি অরিনের ওষ্ঠপুটে দখলদারি চালাচ্ছে ছেলেটা। সে মেয়েটার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়েই ধীরে ধীরে তাকে দেয়ালের সঙ্গে ঠেসে ধরে। রৌদ্র অরিনের ঠোঁট পুরোপুরি শুষে নিতে থাকে, যেন সে এতদিন ধরে এই স্বাদটাই খুঁজে
ফিরেছে।ছেলেটা ব্যাকুল হয়ে অরিনের নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে।তারপর আবারও সেখানটা শুষতে থাকে একটানা…কিয়তক্ষন বাদে ঠোঁটটা ছেড়ে দিয়ে আবারও জিভ চালিয়ে দেয় ঠোঁটের সীমানা জুড়ে। আজ বুঝি উম্মাদ বনে গিয়েছে ছেলেটা।

আজ অরিনও বিন্দুমাত্র ঠেলে দেয়নি তার ডাক্তার সাহেবকে।বরং সে নিজেই তার অবশ হয়ে আসা শরীরটা রৌদ্রের বুকের সঙ্গে জড়িয়ে রেখেছে।তার সারা শরীরজুড়ে বইছে মৃদু শিহরণ। ছেলেটার এহেন বেপরোয়া স্পর্শ সইতে না পেরে তার হাত উঠে যায় রৌদ্রের ঘাড়ে, আঙুল চেপে ধরে চুলের গোঁড়া।রৌদ্র প্রায় অনেক্ক্ষণ পর ছাড়লো অরিনের ওষ্ঠপুট। মেয়েটাকে নিজের দু’হাতের মাঝে দেয়ালের সঙ্গে আঁটকে রাখে সে।অতপর অরিনের কপালে কপাল ঠেকিয়ে ঘনঘন নিশ্বাস ফেলে বলতে থাকে,

“ থামিয়ে দে আমায় সানশাইন! প্লিজ থামিয়ে দে।নইলে….নইলে যে আজকে আমি সব বাঁধ ভেঙে ফেলবো।”
অরিন বুকে হাত চেপে ধরে হাঁপাচ্ছে।ওদিকে রৌদ্র অধৈর্য্য। সে মেয়েটার কন্ঠদেশে মুখ গুঁজে দেয়। সেথায় একেরপর এক মৃদু কামড়ে ভরিয়ে তোলে। রৌদ্র আবারও অস্থির গলায় বলে,
“ আর সহ্য হচ্ছে না সানশাইন! আর পারছিনা নিজেকে আটকাতে… আমি…আমি!”
অরিন ধীরে ধীরে রৌদ্রের ঘাড়ে হাত রাখে।কিছুক্ষণ ঘাড়ে হাত বুলাতেই রৌদ্র নিজেকে সরিয়ে আনে অরিনের থেকে।কদম পেছাতে পেছাতে নিজের চুলগুলো চেপে ধরে শক্ত হাতে।ঘনঘন নিশ্বাস ফেলে বলতে থাকে,
“ শিট!শিট!শিট! আম..আ’ম সরি বউ..তুই..”

আর কিছু বলতে পারলোনা রৌদ্র। হয়তো গলা ধরে আসছে তার।কিছুক্ষণ আগে কি করতে যাচ্ছিলো সে? সে তো অরিনকে কথা দিয়েছিল — যতদিন অরিন মন থেকে তাকে না চাইবে ততদিন সে এগোবে না।তাহলে এখন?…এখন কেনো কন্ট্রোল হারাতে যাচ্ছিলো সে? রৌদ্র পেছাতে থাকে।কয়েক কদম পেছাতেই অরিন আবারও তার হাত চেপে ধরে। রৌদ্র থমকায়।ভীত চোখে তাকায় মেয়েটার পানে।থেমে থেমে বলে
“ আমি..ইচ্ছে করে করিনি সানশাইন.. আমি…”
তার কথার মাঝেই তার ঠোঁটে আঙুল ঠেকিয়ে আটকে দেয় অরিন।রৌদ্র থামলো কিন্তু তার ভেতরকার কৌতুহল যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো।সে কৌতুহলী চোখে তাকিয়ে রইলো অরিনের দিকে। অরিনের মুখাবয়বে নেই কোনো রাগ,অভিমান কিংবা ভয়।সেখানে আজ কেমন গভীর কিছু পাওয়ার আকাংখা লেপ্টে আছে।রৌদ্র ফাঁকা ঢোক গিললো।অরিন বললো,

“ রৌদ্র! আজ আমায় একটু গভীরভাবে নিজের সাথে মিশিয়ে নিবে প্লিজ! আমি..আমি চাই আজকে রাতের প্রতিটি মুহূর্ত যেন এভাবে কাটে,যার বদৌলতে আগামী সাতটা দিনের অপেক্ষা যেন নিতান্তই তুচ্ছ মনে হয়।”
কি বললো অরিন? এতো সহজে সবটা কিভাবে ব্যক্ত করে দিলো মেয়েটা? রৌদ্র এখনও অবিশ্বাসের চোখে তাকিয়ে আছে। হয়তো তার কানদুটো মাত্র শোনা কথাগুলো বিশ্বাস করতে সময় নিচ্ছে বেশ।রৌদ্র পরপর ঢোক গিললো। সন্দিহান কন্ঠে বললো,
“ আর ইউ শিওর?”
অরিন চোখ নামিয়ে নিলো নিজের। সম্মতিসূচক লাজুক হাসলো খানিকটা। রৌদ্র বুঝি পেয়ে গেলো তার উত্তর।সে ধীর পায়ে এগিয়ে এসে ফট করে কোলে তুলে নিলো অরিনকে।অরিনও চেপে ধরে রৌদ্রের ঘাড়।রৌদ্র যত্ন সহকারে মেয়েটাকে শুইয়ে দিলো বিছানায়। মেয়েটার ওপরে খানিকটা ঝুঁকে নিচু কন্ঠে বললো,
“ ভয় পাবে না তো সানশাইন?”

অরিন প্রতিত্তোরে মৌন রইলো। নিজ থেকে রৌদ্রের দিকে একহাত বাড়িয়ে দিলো। রৌদ্র আলতো করে ধরে নিলো সেই হাত।হাতের উল্টো পিঠে চুমু একে দিলো সযত্নে। রৌদ্র হাতটা নামিয়ে দেয়।তারপর নিজের গায়ের টিশার্টটা খুলে ছুড়ে ফেলে ফ্লোরে। অতপর চোখের সামনে উম্মুক্ত হয় রৌদ্রের পেটানো দেহখানা। অরিন সঙ্গে সঙ্গে চোখদুটো বন্ধ করে নেয়।রৌদ্র ধীরে ধীরে মেয়েটার মুখের ওপর ঝুঁকে আসে। আলতো করে অরিনের গালের ওপর হাত রেখে ভরাট কন্ঠে বলে,

“ চোখ খোল সানশাইন!আজ আমি তোর চোখে আমার জন্য ভালোবাসা দেখতে চাই। তোর লজ্জাগুলো নিজে থেকে ভেঙে দিতে চাই সানশাইন! প্লিজ তাকা আমার দিকে!”
অরিন পিটপিট করে চোখ মেলে।রৌদ্রকে এতোটা কাছে দেখে, তার নিশ্বাস বুঝি আঁটকে আসার যোগাড়! মেয়েটা দম খিঁচে তাকিয়ে রইলো। রৌদ্র অরিনের ঠোঁটের দিকে মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় তাকিয়ে থেকে বললো,
“ নিশ্বাস ফেল সানশাইন!”

অরিন নিশ্বাস ফেললো এতক্ষণে।তার সর্বাঙ্গ জুড়ে কেমন কাঁপন ধরেছে! মেয়েটা ঘনঘন নিশ্বাস ফেলে। রৌদ্র নেশালো চোখে তাকিয়ে দেখলো সেই বক্ষবন্ধনীর উঠানামা।ছেলেটা শুষ্ক ফাঁকা ঢোক গিলে।যাহ! গলাটা আবারও শুকিয়ে গেলো?রৌদ্র অস্থির হয়ে অরিনের সিক্ত অধরজোড়া আবারও দখল করে নেয়। প্রথমে ধীরে ধীরে, পরবর্তীতে সেই চুম্বন হয় দৃঢ়, উম্মাদিত! অরিনও আজকে পাগল করে ছাড়ছে ছেলেটাকে।তার নরম ওষ্ঠপুটের স্পর্শ, রৌদ্রের সমগ্র পিঠ জুড়ে তার হাতের বিচরণ সবটাই কেমন পাগল করে দিচ্ছে রৌদ্রকে।
রৌদ্র ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে গলার কাছে নামে।সেখানে মৃদু চুমুতে ভরিয়ে তোলে। তারপর ধীরে ধীরে তার হাত নামে অরিনের পেটের কাছে।অরিন তৎক্ষনাৎ কেঁপে ওঠে খানিকটা। রৌদ্র আজ থামলোনা।কিভাবে থামবে সে? যেখানে তার সানশাইন নিজে থেকে তাকে অনুমতি দিয়েছে আজ! রৌদ্র ধীরে ধীরে অরিনের পেটের ওপর থেকে টপসটা খানিকটা উপরে তুলে। অতঃপর তার সামনে উম্মুক্ত হয় অরিনের মসৃণ উদর।রৌদ্র আলতো করে আঙুল ছোঁয়ায় সেখানে। অরিন কেঁপে ওঠে। খপ করে চেপে ধরে রৌদ্রের হাত। রৌদ্র তার হাতে চুমু দিয়ে চেপে ধরে রাখে সে হাত।তারপর আর কালবিলম্ব না করে মুখ গুঁজে দেয় অরিনের উদরে। অরিন মৃদু শিৎকার দিয়ে ওঠে। রৌদ্র অরিনের উদরে একের পর এক চুমু দেয়।তারপর নিজের মুখ তুলে অরিনের দিকে তাকায়। একহাতে অরিনের মুখ চেপে ধরে ফিসফিস করে বলে,

“ সরি সানশাইন!”
পরক্ষণেই কোনরূপ কালবিলম্ব না করে জোরালোভাবে দাতঁ বসিয়ে দেয় অরিনের পেটে।হঠাৎ আক্রমণে অরিন চিৎকার দিয়ে ওঠে। কিন্তু মুখের ওপর রৌদ্রের হাত চেপে রাখায় সে আওয়াজ খুব একটা বেরুলো না। অরিনের চোখ বেয়ে টুপ করে দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। রৌদ্র অপরাধীর স্বরে বলে,
“ মাফ করে দে সানশাইন! কিন্তু আমি ইচ্ছে করেই এমনটা করলাম। যাতে আমি দূরে থাকলেও আমার দেওয়া এই চিহ্নটা দেখে তুই কিছুটা হলেও স্বস্তি পাস। যতবার দাগটা দেখবি,ততবার মনে করবি, আমি স্ব শরিরে তোর খুব কাছাকাছি না থাকলেও এর মাধ্যমে তোর অঙ্গে জুড়ে থাকবো।”

অরিন কান্না থামায়।রৌদ্রকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে। রৌদ্র অস্থির হলো।বললো,
“ প্লিজ নিজেকে কন্ট্রোল কর সানশাইন! তুই যদি এমন করিস,তাহলে আমি কিভাবে নিজেকে সামলাই বলতো?”
অরিন শুনলো না সে কথা।সে একপ্রকার গো ধরে বসে রইলো। রৌদ্র এবার অরিনকে বুক থেকে উঠিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়।তারপর নিজেও তার পাশে শুইয়ে মেয়েটাকে নিজের বুকে টেনে নেয়। অরিনের মাথায় আদুরে হাত বুলিয়ে বলতে থাকে,
“ আমার সানশাইন! আমার বউজান! একটু বুঝো পাখি! এখন কিছু একটা করে ফেললে সমস্যা হতে পারে।তাছাড়া তোমার রুমে আমি আছি,এটা কেও ঘুনাক্ষরেও টের পেলে কেলেংকারী হয়ে যাবে।তুমি একটু ধৈর্য্য ধরো বউজান! আমি কথা দিচ্ছি, একবার সবটা ঠিকঠাক হয়ে গেলে — রোজ রাতে তোমায় কাঁদাবো আমি। তোমার সর্বাঙ্গ জুড়ে থাকবে আমার, শুধু আমারই বিচরণ!”

অরিন হয়তো বুঝলো সবগুলো কথা।সে আদুরে বিড়ালছানার মতো পড়ে রইলো রৌদ্রের বুকে।রৌদ্র একা একা অনেক কথা বলে গেলো।কথা শুনতে শুনতে একটা সময় অরিনেরও নিশ্বাস ভারি হয়ে এলো।রৌদ্র বুঝলো — মেয়েটা ঘুমিয়ে গিয়েছে। সে আরও কিছুক্ষণ মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।মেয়েটা যখন ঘুমে কুপোকাত তখন তাকে বালিশে শুইয়ে দিয়ে উঠে বসে রৌদ্র।ধীরে ধীরে অরিনের পেটের কাছে এসে নিজের দেওয়া ক্ষতটার দিকে তাকিয়ে রইলো কিয়তক্ষন। হঠাৎ করেই রৌদ্র টের পেলো তার চোখদুটো কেমন ভিজে উঠছে।রৌদ্র মুখের সামনে হাত রেখে বসলো।পেটের দাগটার দিকে তাকিয়ে কাঁদতে লাগলো নিঃশব্দে।মনে মনে নিজেকে অপরাধী সাব্যস্ত করতে লাগলো সে।রৌদ্র বিছানা ছেড়ে উঠে যায় কাভার্ডের সামনে।সেখান থেকে ফার্স্ট এইড বক্সটা নিয়ে এসে অরিনের পাশে বসে।বক্স থেকে তুলো আর এন্টিসেপ্টিক নিয়ে দাঁত বসে যাওয়া জায়গাটা খানিকটা মুছে দিলো।মেয়েটার জ্বলুনি হবে বিধায় মুখ দিয়ে আলতো করে ফু দিতে থাকে।

প্রায় কিছুক্ষণ পর হাতের কাজ শেষ করে রৌদ্র উঠে দাড়ায়। ফার্স্ট এইড বক্সটা নিয়ে দাঁড়ায় ড্রেসিং টেবিলের সামনে। বক্স থেকে একটা কাটার নিয়ে নেয় হাতে।তারপর সেটি দিয়ে নিজের ঘাড়ে — যেখানটিতে অরিনের দেওয়া কামড়ের চিহ্ন বসে আছে সেখানটায় পরপর কিছুক্ষণ আঁচড় দিতে থাকে।প্রায় কয়েকবার এমন করায় জায়গাটার ক্ষত প্রায় অনেকটাই গভীর হয়ে যায়। ক্ষতটা থেকে কেমন রক্তও গড়িয়ে পড়ছে খানিকটা। অথচ সেদিকে বিন্দুমাত্র মাথা ব্যাথা নেই রৌদ্রের।সে অরিনের কাছে আসে।অরিনের মাথায় কয়েকটা চুমু খেয়ে বলে,
“ তোর দেওয়া প্রতিটি স্পর্শ সারাজীবন আমার সর্বাঙ্গ জুড়ে থাকবে সানশাইন।তারা মিটতে চাইলেও, আমি মিটতে দিবোনা তাদের।”
রৌদ্র অরিনের মাথার কাছ ছেড়ে পায়ের কাছে এসে বসে।তারপর মেয়েটার পাদু’টো নিজের উরুর ওপর নিয়ে তাকিয়ে রইলো নিরেট দৃষ্টিতে। আলতো হাতে পাদু’টো মালিশ করতে করতে কয়বার যে চুমু খেলো,তার আর ইয়ত্তা নেই!

চারিদিক থেকে ভেসে আসছে ফজরের আজান ধ্বনি। রৌদ্র এখনও বসে বসে তার সানশাইনের মাথায় হাত বুলিয়ে যাচ্ছে। ছেলেটার চোখদুটো কেমন লাল রক্তবর্ণ ধারণ করেছে। সারারাত জেগে থাকার ক্লান্তি আর সারারাত জেগে থেকে তার বউজানকে অনিমেষ চোখে পরোখ করার তৃপ্তি স্পষ্ট ফুটে উঠেছে তার চোখে।রৌদ্র ধীরে ধীরে বসা ছেড়ে উঠে দাড়ায়। অরিনের পড়ার টেবিলে গিয়ে খাতা কলম বের করে একটা চিঠি লিখলো।তারপর সেটা অরিনের বালিশের তলায় রেখে আবারও মেয়েটার ঠোঁট বরাবর আলতো করে চুমু বসিয়ে দিলো।অতঃপর একটা ক্ষুদ্র নিশ্বাস ফেলে সে চলে গেলো নিজের রুমে।

সকাল ৬ টা🌸
সবকিছু রেডি করে মাত্রই বের হলো রৌদ্র। এতক্ষণ মা-চাচীদের এই-সেই সর্তকবার্তা,বাবা-চাচাদের আদর্শবানী সবটা শোনা শেষে মাত্রই বের হতে পারলো সে।যদিও কবির সাহেব বলেছিলেন তার সঙ্গে যাবে কিন্তু রৌদ্রই আগ বাড়িয়ে না করলো।শুধু শুধু এ বয়সে শরীরে জোর দেবার কি আর কোনো দরকার আছে?
রৌদ্র গাড়িতে এসে বসে।তার পাশেি বসে আছে অনিক।রৌদ্র সিটবেল্ট লাগিয়ে অনিকের দিকে তাকায়। গম্ভীর এবং নিরেট কন্ঠে সর্তক বার্তা ছুড়ে,

“ অনিক! আমি না আসা অবধি আমার বউজানের আশেপাশে সামান্য একটা মাছিও যেন ভনভন না করে।একটা মুহুর্তের জন্যও যেন ওর মন খারাপ না থাকে।ওর কিছু লাগলে আমায় কল দিবি।ওকে নিজ হাতে খাইয়ে দিবি।মোটকথা, তোর ভাইয়ের প্রানের যেন বিন্দুমাত্র সমস্যা নাহয় সেদিকে চোখকান খোলা রাখবি।গট ইট?”
অনিক মাথা ঝাকায়। নিচু গলায় বলে,
“ সবই বুঝলাম। কিন্তু তুমি বনুর সঙ্গে দেখা না করেই চলে যাচ্ছো? আই মিন,বনু উঠলে তো মন খারাপ করবে তাই-না?”

রৌদ্র ফোঁস করে নিশ্বাস ফেললো।সিটে মাথা এলিয়ে দিয়ে চোখবুঁজে রইলো।ভরাট কন্ঠে বললো,
“ ওর মন খারাপ আমার সহ্য হয়না অনিক।ওর চাঁদ মুখটায় আধার নামলে ইচ্ছে করে সব ধ্বংস করে দেই।আর ওর চোখের পানি…ওগুলো দেখলে ইচ্ছে করে নিজেকেই শেষ করে দেই।”
অনিক অনিমেষ চোখে তাকিয়ে রইলো রৌদ্রের দিকে। আজ কেন যেন ভিষণ গর্ববোধ হচ্ছে তার।সে তাহলে ভুল করেনি!

অরিন ঘুম ছেড়ে উঠলো সাড়ে ৮ টায়।চোখ দুটো পিটপিট করে খুলতেই ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে মেয়েটা।আজ না তার ডাক্তার সাহেবের চলে যাওয়ার কথা? সেকি ওর সাথে দেখা না করেই চলে গিয়েছে? অরিন একছুটে বেরিয়ে আসে ঘর ছেড়ে। কিছুটা এগোতেই রাইসা বেগমের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তার।রাইসা বেগম খানিকটা হকচকিয়ে ওঠেন।অরিনের দিকে তাকিয়ে মমতাময়ী কন্ঠে বলেন,
“ অরি! ব্যাথা পেয়েছিস মা?”
অরিন মাথা নাড়ায়। ব্যস্ত গলায় বলে উঠে,
“ ছোট মা! রোদ ভাই কি চলে গেছে?”
“ হ্যা! সে-তো সেই সকালেই বেরুলো! এতক্ষণে তো পৌঁছেও যাওয়ার কথা।”
অরিন থমকায়।ধীরস্বরে বলে,
“ চলে গেছে? কিন্তু তোমরা কেও আমায় ডাকলে না কেন?”
“ আর বলিস না মা! আমিতো কয়েকবারই তোকে ডাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু রোদই তাে না করলো তোকে ডাকতে । বলেছিল,

“ ওকে ডেকো না।ও ঘুমাক!”
অরিনের মনটা সহসাই খারাপ হয়ে গেলো। সে আর কিছু না বলে ঘরে চলে গেল।ঘরের দোর দিয়েই কাঁদতে লাগলো মেয়েটা।তাকে একটু দেখা দিয়ে গেলে কি এমন হতো! অরিন ধীরে ধীরে বিছানায় এসে বসে।বালিশের পাশ হাতড়ে মোবাইলটা খুঁজতেই তার হাতে এলো চিঠিটা।অরিন অবাক হয়।সে তড়িঘড়ি করে চিঠিটা খুলে পড়তে শুরু করে,

সঙ্গীন হৃদয়ানুভুতি ২য় খন্ড পর্ব ৩৩

“ প্রিয় বউজান!
প্রথমেই আপনার কাছে লক্ষ কোটি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আপনাকে দেখা না দিয়ে আসার জন্য! জানি আপনি ভিষণ রেগে আছেন আমার ওপর। কিন্তু আমি আর কি’বা করবো বলুন? আপনার ঐ ছলছল চোখজোড়া দেখলেই নিজেকে পাগল পাগল লাগে আমার।ইচ্ছে করে আপনাকে সামনে বসিয়ে আপনার মন খারাপের কারণগুলো শুনতে। আপনার মুখে হাসি না ফোঁটা অবধি আপনার সঙ্গে পাগলামি করতে। কিন্তু বউজান! আমার হাতে তো এতো সময় নেই! আমার যে নিজের প্রফেশনটাকেও সম্মান করা উচিত তাই-না বলুন? আমি জানি বউজান,আমার আপনি বেশ বুদ্ধিমতি।দেইখেন আবার, এই বুদ্ধিমতি যেন আমার জন্য পাগলামি না করে আবার! নিজের যত্নটা যেন ঠিকঠাক মতো নেয়।কেননা একটা কথা মাথায় রাখবে সানশাইন! তুমি যতটুকু ভালো থাকবে,তোমার ডাক্তার সাহেবও ততটাই ভালো থাকবে।তাই এবার নাহয় একটু হাসো বউজান।এই.. এই তুমি হাসলে তো? দেখলে আমি না থাকলেও আমার কথাগুলো তোমায় কি সুন্দর হাসাতে পারে!
এই শোনো বউজান! নিজের খেয়াল রেখো কেমন?
ইতি,
তোমার ডাক্তার সাহেব!

সঙ্গীন হৃদয়ানুভুতি ২য় খন্ড পর্ব ৩৬

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here