সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২
neelarahman

নায়িকার নাম নিয়ে অনেকেই সন্তুষ্ট ছিলেন না তাই নায়িকার নাম পরিবর্তন করে দিলাম।আমার নাম দিলাম।
কেও কিছু বলেন না প্লিজ।
নূর সাদাফ কে এক ঝাটকায় দূরে সরিয়ে দিল ।তারপর বলল ,”আপনি এরকম করছেন কেন ?আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন??”
সাদাফ দূরে ছিটকে সরে দাঁড়িয়ে রইল ।জোরে জোরে হাপাচ্ছে সাদাফ।রা‘গে ক্ষোভে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে ।তারপর নুরের দিকে তাকিয়ে বললো ,”তুই ভালোবাসার কি বুঝিস?”
আপনি আমার সাথে এরকম করছেন কেন ? আর আপনি না আমার ………..আর বলে শেষ করতে পারল না নুর ।দরজায় নক করার শব্দ হলো ।

সাথে সাথে সাদাফ নিজেকে ঠিক করে চশমাটা হাত থেকে চোখে দিয়ে বলল ,”নিজেকে ঠিক কর।”
নূর সাথে সাথে নিজেকে ঠিক করে নিল ।চোখে পানি এসেছিল সেটাও মুছে নিল ।সাদাফ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল নূরের দিকে ।তারপর দুই হাত দিয়ে নিজের এলোমেলো চুলগুলো ঠিক করে দরজা খুলতে গেল।
দরজা খুলে দেখল কা*জের মেয়েটা সুমি এসেছে ।বলল ,”ভাইজান আপুকে খালাম্মা ডাকতাছে।
আপনিও চলেন ।সবাই একসাথে ডিনার করবেন ।সবাই টেবিলে বইসা রইছে।”
বলেই চলে গেল সুমি ।সাদাফ দরজা খুলে একবার পিছনে ঘুরে তাকালো নূরের দিকে ।তারপর বলল ,”নিচে আয়।”
নীলা রহমান
নুর চোখের পানি মুছতে মুছতে সাদাফ কে পাশ কাটিয়ে দরজা দিয়ে বের হয়ে দ্রুত পায়ে হেঁটে নিচের দিকে চলে গেল।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সাদাফ ও পিছু পিছু হেটে নিচের দিকে আসলো।
ডিনার টেবিলে বসে আছে সাদাফের বাবা হুমায়ুন রহমান। চাচা ফজলুর রহমান। সাইমন রিমা নওরিন আফরোজ সামিহা বেগম ও নুর।
সাদাফ চুপচাপ হেঁটে এসে নূরের পাশের চেয়ারটি খালি দেখে চেয়ারটি টেনে বসে পড়ল।
নূরের মা সামিহা বেগম নুরের দিকে তাকিয়ে বলল ,”কা*মড় দিয়েছিল পিঁপড়া ঠিক হয়েছে ?”
নুর সাথে সাথে মাথা তুলে বলল ,”হ্যাঁ হ্যাঁ ।ঠিক হয়েছে ।ক্রিম লাগিয়ে নিয়েছি।”
নওরিন আফরোজ বলল ,”ভালো করেছিস তোর তো আবার এলার্জি সমস্যা বেশি ।হালকা কিছু হলেই অনেক দাগ হয়ে যায়।”

হুমায়ূন রহমান বলল ,”আচ্ছা মা ঠিক আছে খাও ।খাবার সময় এতো কেন প্রশ্ন করছো নওরিন?”
“আচ্ছা ঠিক আছে আর কোন কথা ।”বললো নওরিন আফরোজ।
সামিহা বেগম সাথে সাথে উঠে সবাইকে খাবার সার্ভ করতে লাগলো ।সাদাফ এমনভাবে খাচ্ছে যেন আশেপাশে কেউ নেই ।মাথা নিচু করে চুপচাপ খাচ্ছে ।সাইমন সাদাফের দিকে তাকিয়ে বলল ,”ভাইয়া আগামীকাল আমরা একটু বেরোবো তুমি কি সাথে যাবে?”
সাদাফ মাথা না তুলে বলল ,”না ।আমার একটু কাজ আছে ।আমি যেতে পারব না ।”
সায়মন বললো ,”ও আচ্ছা ।ঠিক আছে তাহলে ।আমি নুর আর রিমাই চলে যাব একা।
ভেবেছিলাম তুমি গেলে কার ড্রাইভ করতে পারতে তুমি তো ভালো ড্রাইভ করতে পারো ।না হলে আমাদের আবার ড্রাইভার নিয়ে যেতে হবে।”

শাদাফ খাচ্ছিল এমন সময় নূরের কথা শুনতেই হাত থেমে গেল ।তারপর কিছু একটা ভেবে বলল,” ঠিক আছে কখন যাবি ?ড্রাইভারকে নিয়ে যেতে হবে না আমি সাথে নিয়ে যাব।”
ফজলুর রহমান সাথে সাথে বললেন ,”এ কথাটি ভালো বলেছিস বাবা ।তুই ওদের সাথে গেলে আমি একটু নিশ্চিন্ত হতে পারি নাহলে ওরা বাচ্চাকাচ্চা কয়েকজন যেয়ে পুরা শপিংমল মাথায় করে ফেলবে ।তুই ওদেরকে একটু টেক কেয়ার করে রাখিস ।তুই গেলে আমাদের আর কোন টেনশন নেই।”

নুর মনে মনে ভয় পেয়ে গেল ।কেন এই লোক সাথে যাবে ?এই লোক সাথে গেলে নূর যাবে না ।সাথে সাথে না করে দিবে সাইমন ভাইকে ।মনে মনে ভাবল খাওয়া শেষ করে সাইমন ভাইকে না করে দিবে নুর যাবে না।
এমন সময় নওরিন আফরোজ আবার বলল ,”নূর তুই গেলে আমার জন্য একটা জিনিস নিয়ে আসবি ।অন্য কারো পছন্দে আমার ভরসা নেই ।তুই আমার জন্য পছন্দ করে জিনিসটা কিনে আনবি।”
নুর মুখ খুলে মাত্র বলবে যাবেনা ঠিক তার আগেই সাদাফ টেবিলে নিচ দিয়ে নূরের একটি হাত চে*পে ধরল ।নূর সাথে সাথে তাকালো হাতের দিকে ।দেখলো সাদাফ হাত চে*পে ধরে আছে ।
নূর কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে হাত মো‘‘চড়া মো‘‘চড়ি শুরু করে ছাড়ানোর চেষ্টা করল কিন্তু সাদাফ চুপচাপ খাচ্ছে আর হাত ধরে রেখেছে।

সাদাফের চেহারা দেখে বুঝার উপায় নেই টেবিলের নিচে কি চলছে ।এদিকে নূরের ডান হাত ধরেছে যার জন্য নুর বাঁ হাতে চামচ ধরে খেতে পারছে না।
নূর চুপচাপ ডান হাত অনেক ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু সাদাফ কোনভাবেই ছাড়ছে না ।এদিকে বা হাত দিয়ে খাচ্ছে তাই ফজলুর রহমান বলল ,”কিরে মা তুই বাঁ হাত দিয়ে খাচ্ছিস কেন ?ডান হাতে কি হয়েছে?”
নুর বলল ,”কিছু না তো বাবা ।হাতটা একটু ব্যথা করছিল তাই ভাবলাম একটু বা হাত দিয়ে খাই। কিছু মনে করো না হ্যাঁ ?”

তারপর মাথা নিচু করে চুপচাপ বা হাত দিয়ে খেতে থাকলো ।আর বলা হলো না নূর যাবে না ।একদিকে নওরিন চাচী একদিকে সাদাফ ভাই।
মা ছেলের মধ্যে পড়ে পি‘ষে যাচ্ছে নুর ।মনে মনে ভাবলো কিভাবে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
পরের দিন বিকালের দিকে সবাই রেডি হয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে ।সাদাফ হাতের ঘড়ি পড়তে পড়তে চোখের চশমাটা ঠিক করে গাড়িতে ঢুকেই ড্রাইভিং সিটে এসে বসলো ।কারো দিকে তাকালো না ।এমনকি নূরের দিকেও না ।

॥ শান্তশিষ্ট ভদ্র স্বভাবের ছেলে কারো দিকে চোখ তুলে তাকায় না ॥
নুর আড় চোখে একবার সাদাফ ভাইয়ের দিকে তাকালো ।দেখতে যথেষ্ট সুদর্শন সাদাফ ভাই শুধু নূরের সাথে কেন এমন করে নূর বুঝতে পারে না। টিভিতে দেখে বান্ধবীদের কাছ থেকে শুনে প্রেম করলে ভালবাসলে গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড এরকম কিছু করে ।
কিন্তু সাদাফ ভাই তো ওকে কোনদিন ভালোবাসি ও বলেনি তাহলে শুধু শুধু ওর সাথে এরকম জোর জব*রদস্তি কেন করে?

ভাবতেই মন খারাপ হয়ে গেল নূরের ।তাই গাড়ির পিছনে বসে গ্লাস দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে রইল।
কিন্তু নূর জানে না দুইটি চোখ চাতক পাখির মত লুকিং গ্লাস দিয়ে নূরের দিকে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে।
বসুন্ধরা শপিংমলের সামনে এসেই তিনজনকে ড্রপ করে দিয়ে সাদাফ গেল কার পার্কিংয়ে ।ঠিক পাঁচ মিনিট পর সাদাফ হেঁটে হেঁটে কার পার্কিং থেকে এসে ওদেরকে নিয়ে শপিংমলের ভিতরে ঢুকলো ।সাইমন রিমা ও নূর সামনে হাঁটছে পিছনে পিছনে হাটছে সাদাফ।

যার কোন হেলদোল নেই ।এমন একটা গা ছাড়া ভাব যেন নিয়ে এসেছে তাই বাধ্য হয়ে আসতে হয়েছে ।
কিন্তু কেউ জানে না শুধুমাত্র নূরের জন্যই বাধ্য হয়ে এসেছে সাদাফ।
বসুন্ধরা শপিং মলের ভিতরে এসে লেডিস কর্নারে ড্রেসের কালেকশন দেখতে লাগলো রিমা এবং নুর ।সায়মন দাঁড়িয়ে মোবাইলে কথা বলছে।আরেক পাশে একা একা মিররের সামনে দাঁড়িয়ে আছে সাদাফ।
চোখ দুটো মিররের দিকে ।বাহির থেকে যে কেউ দেখলে বুঝতে পারবে সাদাফ অন্যদিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু শুধু সাদাফ জানে মিরর দিয়ে নূরকে দেখা যাচ্ছে ।
নূর একটার পর একটা ড্রেস গায়ে ধরছে এবং দেখছে কেমন লাগছে ।সেটা এক দৃষ্টিতে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে সাদাফ। ভ্রু কুঁচকে দেখছে সব।

এর ভিতর থেকে নূরের তিনটা ড্রেস খুব পছন্দ হলো ।তাই রিমা কে সাথে করে নিয়ে চেঞ্জিং রুমের কাছে গিয়ে দরজা না লাগিয়ে রিমাকে দাঁড় করিয়ে রাখল নুর।ও চেঞ্জ করবে এবং রিমাকে একটি একটি করে পড়ে দেখাবে।
রিমা দাঁড়িয়ে মোবাইল টিপ ছিল এমন সময় রিমার মোবাইলে একটি জরুরী ফোন আসলো ।রিমা ফোন ধরে ২ কদম সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলতে বলতে ভুলেই গেল যে নুর চেঞ্জিং রুমে আছে এবং দরজা খোলা ।ও কথা বলায় ব্যস্ত হয়ে গেল।
নীলা রহমান

নূরের জামা চেঞ্জ করা শেষ ।পিছনে শুধু চেইন লাগানো বাকি ।এমন সময় দরজা খুলে রিমাকে ডাকবে ঠিক তার আগেই হুর মুড়িয়ে ভিতরে প্রবেশ করল সাদাফ ।ঢুকেই দরজা লাগিয়ে দিল চেঞ্জিং রুমের।
চেঞ্জিং রুমটা খুব বেশি একটা ছোট নয় আবার বড়ও নয় ।সাদাফ দুই কদম এগিয়ে আসলে নুর পিছাতে পিছাতে চেঞ্জিং রুমের দেয়ালের সাথে বাড়ি খেলো।
মাথায় জোরে বাড়ি খাওয়ার আগেই সাদাফ নূরের মাথার পিছনে হাত দিল এবং আরেক হাত দিয়ে জামার চেইন ধরলো।

কিন্তু চেহারার চোখের চাহনির কোন পরিবর্তন হলো না ।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল নূরের দিকে।
কি আছে চশমার আড়ালে লুকিয়ে থাকা ওই দুটি চোখে নুর জানেনা ।নুর এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল সাদাফের চোখের দিকে।ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে নুর ।
কেমন ভিতরে যেনো স*র্বাঙ্গ কেঁপে উঠছে নুর এর। কিছু বলতেও পারছে না ।এদিকে ধীরে ধীরে সাদাফ নূরের জামার চেইন লাগাচ্ছে আর সাদাফের উষ্ণ নিঃশ্বাস নূরের গায়ে আছড়ে পড়ছে।
তারপর সাদাফ হালকা একটু ঝুঁকে নূরের কানের কাছে এসে নূরের কানে একটি কা*মড় দিয়ে নাক ঘ*ষতে ঘ*ষতে বলল ,”এই ড্রেসগুলো আমার একটুও পছন্দ হয়নি। এই ড্রেসগুলোতে তোকে একটু সুন্দর লাগছে না অনেক পচা লাগছে।”

তারপর নূরের কাধের দিকে জামা নামিয়ে দেখলো গতকাল রাতে সাদাফের দেওয়া ক্ষ*তচিহ্ন স্পষ্ট হয়ে আছে ।সাদাফ ঘাড় বাকা করে নুরের দিকে তাকালো ।হঠাৎ একটু মুচকি হাসলো ।
নূর তার কিছুই দেখতে পেল না ।সাদাফ সেই ক্ষ*তস্থানে আরও একটি ছোট্ট কা*মড় দিলো।নুর লজ্জায় ভয়ে চিৎকার করতে পারলো না।নিজের হাত দিয়ে মুখ চে*পে রাখলো।সাদাফ ছোট ছোট চু*মু খেতে লাগলো ।উষ্ণ নরম স্প*র্শ দিতে লাগলো।

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১

এদিকে নুর বদ্ধ চেঞ্জিং রুমের ভিতর ছ‘‘টফট করতে লাগলো ।আর মনে অজানা আশঙ্কা এবং ভয় কখন কে দেখে ফেলে ।বাহিরে তো রিমা ছিল রিমা যদি দেখে ফেলে তাহলে কি হবে।
ব্য*থায় এবং ভয়ে শিহ*রনে কুকড়ে রইলো নূর।
সাদাফ থামলো না।

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here