সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১৩

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১৩
neelarahman

লাঞ্চ শেষ করে ওরা সবাই চলে আসলো গাজীপুর চন্দ্রা সালনা নামক একটি জায়গায় একটি সুন্দর নিরিবিলি পরিবেশে রিসোর্ট আছে সেখানে ।সারাদিন আজ এখানেই পার করবে সন্ধ্যা নাগাদ ফিরে যাবে।
হুমায়ূন রহমান ফজলুর রহমান সামিহা বেগম ও নওরিন আফরোজ চলে গেলেন রিসোর্ট এর মালিক যে কিনা হুমায়ূন রহমানের বন্ধু তার সাথে গল্প করতে । নীলা রহমান লেখিকা।বাচ্চাদের রেখে গেলেন তোমরা তোমাদের মত ঘোরাফেরা করো মজা করো ।
সন্ধ্যা নাগাদ আমরা সবাই ফিরে যাব বলেই তারা চারজন চলে গেলেন রিসোর্ট এর উপরের দিকে পার্সোনাল একটি কামরায়।

এদিকে সায়মন রিমা নূর ও সাদাফ দাঁড়িয়ে রইল ।সাইমন বলল ,”ভাইয়া চলো আমরা আশেপাশে কোথাও ঘুরতে বের হই রিসোর্টের বাইরে প্রাকৃতিক পরিবেশ খুব সুন্দর।
ছবি তুললে খুব সুন্দর ছবি আসবে আর তাছাড়া আজকে ওরা শাড়ি পড়েছে ওদের ছবি তো অনেক সুন্দর আসবে দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে নুরের জন্য।”
সাথে সাথে রিমা বলল ,”হ্যাঁ হ্যাঁ ভাইয়া চলো প্লিজ আজকে আমরা শাড়ি পড়েছি আজকে আমরা খুব সুন্দর করে ছবি তুলব ।সাথে সাথেই সাদাফ তাকালো নুরের দিকে ।নুর কোন কথা বলছে না চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে আছে ।সাদাফ বুঝতে পারল নুরেরও ইচ্ছা আছে যাওয়ার তাই বলল ,”ঠিক আছে চল।”
বলেই গাড়ির চাবিটি সাইমনের দিকে দিয়ে বলল ,”গাড়ির মধ্যে ক্যামেরা আছে নিয়ে আয়।”
বলেই সাদাফ সামনে দিকে হাঁটতে শুরু করলো ।রিমা আর নূর পিছনে পিছনে যাচ্ছে।সায়মন গেল ক্যামেরা আনতে গাড়ির কাছে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

তবে চারজন হাটতে হাটতে একটু সামনে গিয়ে পৌঁছতেই দেখতে পেল একটি ঘাট বাধানো পুকুর যেখানে একটি নৌকো বাধা আছে । নীলা রহমান লেখিকা।নুর সাথে সাথে বলে উঠলো ,”আমি নৌকায় গিয়ে ছবি তুলব ।”
রিমা ও বললো ,”হ্যাঁ হ্যাঁ চল চল দুজন নৌকা বসে ছবি তুলব।”
সাইমন ক্যামেরাটা সাদাফের দিকে দিয়ে বলল ,” ভাইয়া ছবি তোলার জন্য তুমি বেস্ট ।সুন্দর করে ওদেরকে ছবি তুলে দাও আমি একটু এদিক ওদিক দেখি আরো কি কি সুন্দর জায়গা আছে।”
এটা হচ্ছে বাহানা জায়গা দেখার নাম করে দূরে গিয়ে একটু সিগারেট খাবে ওর সিগারেট খাওয়ার অনেক নেশা উঠে গিয়েছে।

একটু দূরে গিয়েই সিগারেট ধরালো সাইমন এখান থেকে ওদেরকে দেখা গেল নূর বা রিমাদের ওইখান থেকে বা সাদাত ভাইয়ের এখান থেকে সাইমনকে দেখা যাবে না তাই নিচু হয়ে সিগারেট খেতে লাগলো।
এদিকে সাদাফ ক্যামেরার লেন্স দিয়ে বারবার নুরকে দেখছে ।নূর বিভিন্নভাবে ছবি তুলছে রিমা আর নুরের।নুর একটু একটু লজ্জা পাচ্ছে সাদাফ বুঝতে পারছে।
ক্যামেরা দিয়ে যখন নূর কে দেখছিল সাদাফ এর মুখ আপনা আপনি একটু হাসির মৃদু রেখা খেলে গেলো।কেমন যেন লাগছে নুরকে কখনো এইরূপে নূরকে
দেখেনি ।
যখন নূরের জন্য শাড়ি চুরি পায়েল গহনা কিনেছিল তখন কল্পনা করেছিল কিন্তু আজ নূরের যে রূপ দেখতে পেল তা যেন কল্পনারও অতীত।

সাদাফ বুঝতে পারিনি নূরকে কখনো শাড়ি পরায় এতটা মোহনীয় লাগবে সাদা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল ক্যামেরার দিকে ।ওই দিক থেকে রিমা আর নুর চিৎকার করে যাচ্ছে ছবি তোলা হয়েছে ?
আমরা কি পোজ চেঞ্জ করব ?কিন্তু সাদাফের যেন সেদিকে কোন খেয়াল নেই সাদা জুম করে করে নুরকে দেখায় ব্যস্ত ।হঠাৎ সাদাফের ভ্রু জোড়া কুচকে গেল কিছু একটা দেখে।
সাদাফ আরও একটু জুম করে দেখল ।দেখেই নূরের দিকে তাকালো তারপর দ্রুত পায়ে হেঁটে গিয়ে রিমাকে বলল যা তো সাইমনকে একটু ডেকে নিয়ে আয় ।রিমা সাথে সাথে সাইমনকে ডাকার জন্য গেলে সাদাফ চলে আসলো নূরের কাছে নৌকায়।

নূর সাদাফ কে এরকম দেখে কিছু বলছে না । এমনকি লজ্জায় সাদাফের দিকে তাকাতেও পারছে না ।সাদা কিছুক্ষণ ভাবলো কিভাবে বলবে তারপর নুরের দিকে তাকিয়ে বলল ,”নূর কাছে আয়।”
নুর অবাক হয়ে গেল ।এরকম একটা জায়গায় কাছে কেন ডাকছে ?নূর শুকনো ঢোক গিলতে লাগলো ।হাতের আঙ্গুল দিয়ে আরেক হাতের আঙ্গুল খুঁটতে লাগলো ।সাদাফ বললো ,”সময় নেই নূর ।কাছে আয় জলদি।ওরা চলে আসবে তাড়াতাড়ি কাছে আয়।”
নুর আমতা আমতা করে মাত্র মুখ খুলবে জিজ্ঞেস করার জন্য কেন তার আগে সাদাফ নিজেই কাছে চলে আসলো নুরের কাছে।তারপর সাথে সাথে হাত দিয়ে দিল নুরের ব্লাউজের নিচের অংশে যেখানে ইনারের একটা অংশ দেখা যাচ্ছে।

সাথে সাথে ব্লাউজ টান দিয়ে একটু নামিয়ে দিল এবং ইনার টা একটু ভিতরে দিয়ে দিল।
সাদাফের এমন স্পর্শকাতস্থানে স্পর্শে নূর কেঁপে উঠল ।চোখ বন্ধ করে ফেলল সাথে সাথে ।সাদাফ একটু ঝুঁকে এসে বলল ,”এই কালার ব্লাউজের সাথে কেউ এই কালার ইনার পরে?
পরে কিছু একটা ভেবে বলল ও এর আগে তো তুই কখনো শাড়ি পরিস নি তাই হয়তো এর সাথে ম্যাচিং করে তোর কিছু কিনা নেই ।এখন থেকে তাহলে আমি যখনই তোকে শাড়ি গিফট করবো সাথে সাথে সব কিছু ম্যাচিং করে কিনে দেব।

আর সেফটিপিন কোথায় সেফটিপিন দে। এটা ব্লাউজের সাথে সেট করে দিতে হবে না হলে বারবার বের হয়ে থাকবে ।আমার একদম পছন্দ না নুর আমার জিনিস অন্য কেউ দেখবে।”
সাদাফের হাত এখনো ব্লাউজের নিচের অংশে থাকায় নূর চোখ বন্ধ করে রইল কোন কথা বলতে পারছে না ।থর থর করে শরীর হাত পা কাপছে ।সাদাফ খুব সুন্দরভাবেই অনুভব করতে পারছে নূরের প্রতিটি কম্পন এবং মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে ।
কিছুক্ষণ পরে ভাবল ওরা চলে আসবে তাই নূর কে বলল ,”নূর তাড়াতাড়ি সেফটিপিন দে লাগিয়ে দিচ্ছি ওরা চলে আসবে ।”

নুর পিট পিট করে চোখ খুলল ।হঠাৎ মনে পড়ল সেফটিপিন চাচ্ছে সেফটি পিন দিতে হবে ।আমতা আমতা করে বলল ,”আমার কাছে তো এক্সট্রা কোন সেফটিপিন নেই ।”
সাদাফ কিছু একটা ভাবলো। ভেবে বলল ,”শাড়ীর কুচি তে লাগিয়েছিস কুচি থেকে খোল।”
নূর কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল ,”আমি একা কি করে খুলবো আমাকে তো রিমা লাগিয়ে দিয়েছিল?”
“আচ্ছা তুই সুন্দর করে দাঁড়া আমি খুলে দিচ্ছি ।একা একা খুলতে পারবি না ।”বললো সাদাফ।নুরকে সুন্দর করে দাঁড় করিয়ে দিয়ে হাঁটু ভেঙ্গে নুরের শাড়ির কাছে বসে কাঁপাকাঁপা হাতে নুরের শাড়ির কুচি তে হাত রাখলো।নুর সাথে সাথেই চোখ বন্ধ করে ফেললো।সাদাফ কুঁচি থেকে সেফটিপিন খুলতে লাগলো।
সাদাফের এমন কান্ডে এবং স্পর্শে নূর বার বার শিহরিত হচ্ছে ।মনের মধ্যে অজানা ভয় এবং আশঙ্কা জেকে ধরেছে নুরকে । নীলা রহমান।কেনো এমন হয় এরকম বারবার অন্য কেউ আসলে তো নূরের ভিতরে এরকম তোলপাড় শুরু হয়ে যায় না।

বারবার শাদাফ ভাইয়ের স্পর্শে কেন নূরের ভিতর সবকিছু জ্বলে পু‘ড়ে নিঃশেষ হয়ে যায় ?মনে হচ্ছে কোথাও কেউ আ‘গুন জ্বা‘লিয়ে দিয়েছে নূর সেই আ‘গুনের দহনে প্রতিনিয়তই জ্ব‘লছে।
এদিকে সাদাফের অবস্থাও নাজেহাল ।এমন একটি জায়গায় হাত দিয়ে সেফটিপিন খুলতে হচ্ছে সাদাফের হাতও কাঁপছে ।কখনো এমন হয়নি সাদাফ এর।নূরকে অনেক ভালোবাসে ভীষণ ভালোবাসে কিন্তু এমন ভাবে কখনো স্পর্শ করা হয়নি নুরকে ।
চু*মু খেয়েছে কিন্তু কখনো স্পর্শ ধরতে গিয়ে হাত পা কেঁপে উঠেনি সাদাফের ।আজ কাপছে ভীষণ কাঁপছে ।সাদাফ কোনমতে উঠে দাঁড়ালো ।দাঁড়িয়ে সেফটিপেনটি হাতে নিয়ে আবার ব্লাউজের সেই নিচের অংশে ধরে ইনারের সাথে সেট করে দিল।

তারপর নূরের কাছাকাছি কানের কাছে ঝুঁকে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে সাদাফ বলল ,”এখন থেকে নিজে এসব খেয়াল রাখবি অন্য কাউকে যেন খেয়াল করতে না হয় ।বড় হয়েছিস সবকিছু দেখে খেয়াল করে তারপর বের হবি।
যা আমার তা শুধু আমি দেখব নুর।অন্য কেউ এদিকে নজর দিবে দেখবে তা আমি একদম সহ্য করব না নূর।”
নূর চোখ বন্ধ রাখা অবস্থায় দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরল ।কি সব বলছে সাদাফ ভাই ।এসব শুনে নূরের ভিতরে সবকিছু কেঁপে কেঁপে উঠছে ।
কেন বারবার এরকম হয় সাদাফ ভাইয়ের প্রত্যেকটি কথায় নূরের কেন শিহরিত হয়? কেন মনে হয় শিরদাঁড়া বেয়ে শীতল কোন ঝর্ণার স্রোত নেমে যাচ্ছে।

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১২

এ এক ভিশন যন্ত্রণা সুখময় যন্ত্রনা নুর অনুভব করতে পারছে ।সাদাফ ভাইকে ভাবতে গিয়ে যে যন্ত্রনা অনুভব হয় সে যন্ত্রণার মধ্যেও সুখ খুঁজে পায় নুর ।ভাবতে ভালো লাগে ।ভীষণ ভালো লাগে।
সাদাফ আরও একটু ঝুঁকে এসে নূরের কানে কানে বলল ,”আর শোন এরপর থেকে শাড়ি পরলে শুধুমাত্র আমার সামনে পড়বি ।
এরপর যখন শাড়ি পরবি সেই শাড়ি আমি নিজের হাতে খুলবো।মনে যেন থাকে। তাই তার আগ পর্যন্ত শাড়ি পরা নিষিদ্ধ তোর জন্য।”

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১৪

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here