সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২২

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২২
neelarahman

রাতে সিন‘‘ক্রিয়েটের ভয়ে রিমা চুপচাপ যেয়ে শার্ট প্যান্ট আয়রন করে দিয়ে যেই না রুম থেকে বের হবে বের হয়ে দেখল নূর চুপচাপ সাদাফের রুম থেকে বের হলো ।
নূর মাথা তুলে দেখল সাইমনের রুম থেকে বের হল রিমা।দুজনই হকচকিয়ে গেল।
রিমা আমতা আমতা করে বলল ,”আমি ওই আসলে কাল সায়মনের ভাইয়ের প্রেজেন্টেশন তাই কাপড় চোপড় আয়রন করে দিতে এসেছিলাম ।সাইমন ভাই আমার রুমে ওয়েট করছে রুমে কেউ নেই ।”
নূর ভয় পেয়ে গেল ।নুর তো এবাড়ির সবার ছোট বের হল সবচাইতে বড় ছেলের রুম থেকে।
যার সাথে কখনো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল না নূরের ।

রিমা নূরের হাতে তেলের বাটি দেখে জিজ্ঞেস করল তেল কেন নিয়েছিলি ?নূর আমতা আমতা করে বলল ,”সাদাফ ভাইয়ের মাথা ভীষণ ধরেছিল তাই মাথায় বিলি কে*টে দিতে আর তেল দিয়ে চুল মালিশ করে দিতে এসেছিলাম।”
রিমা তাকিয়ে রইল নূরের দিকে ।তারপর একটু সামনে এসে বলল ,”সাদাফ ভাই তোকে বলেছে এসে চুলে তেল মালিশ করে দিতে ?কই আমাকে তো ডাকলো না।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

নূর আমতা আমতা করে বলল ,”সেটার আমি কি জানি সাদাফ ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করো ।হয়তো আমাকে জ্বা*লানোর জন্যই আমাকে ডেকেছে ।উনি তো সারাদিন আমাকে জ্বা*লাতেই চায়।”নীলা রহমান
রিমা চোখ বুলিয়ে তাকালো নূরের সারা শরীরে ।কেমন যেন নূরকে একটু অগোছালো একটু এলোমেলো লাগছে ।তারপর রিমা বলল ,”ঠিক আছে রুমে যা। যেয়ে শুয়ে থাক ।আমি আমার রুমে যাচ্ছি সাইমন ভাই আবার ওয়েট করছে তার শার্ট-প্যান্ট আইরন হয়েছে কিনা এজন্য ।জোর করে পাঠালো আমাকে ।”
নুর অত শত কিছু বোঝেনা এত রাতে সাইমন ভাই বা কেন রিমার রুমে তাও কোন কিছু না বুঝেই বলল ,”ঠিক আছে আমি রুমে যাচ্ছি ।”

বলে আস্তে আস্তে হেঁটে নূর নিজের রুমের দিকে চলে গেল।
আজকে নুরকে কেন যেন একটু অন্যরকম দেখাচ্ছিল রিমার কাছে এই মুহূর্ত ।এত ঘোমটা দিয়ে ওড়না কখনো গায়ে পেঁচিয়ে থাকে না নরমালি কিন্তু আজ এত রাতে আশেপাশে কেউ নেই তাও পুরো ঘোমটা দিয়ে পুরো শরীর পেচিয়ে ওড়না নিয়েছে এই গরমের মধ্যে।
চোখ ঘুরিয়ে তাকালো সাদাফের রুমের দিকে ।দেখলো দরজাটা হালকা চাপানো ।ভিতরে একটু উঁকি দিয়ে দেখল ড্রিমল্যাইটে আলোতে দেখা যাচ্ছে সাদাফ ভাই উপুর শুয়ে আছে।
তারপর কিছু একটা ভাবল ভেবে একটু মুচকি হেসে নিজের রুমের দিকে চলে গেল রিমা।
পরের দিন সকাল ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবাই একসাথে নাস্তা করতে বসেছে ।নূর ঢিলা ঢালা ভাবে হেটে নিচে নাম ছিল।

সাদাফের দিকে চোখ পড়তেই রাতের কথা মনে পড়ে
গেল ।মনে পরে গেল সাদাফের দেয়া প্রতিটি স্পর্শ।শরীরে মনে কেমন একরাশ লজ্জা ভর করল নূরের ।আস্তে আস্তে করে নিচে নেমে এলো।
সাদাফের পাশের চেয়ারে আজকে বসলো না ।বসলো অপজিটে একটি চেয়ারে ।খালি ছিল সেখানে চেয়ার টেনে বসে পড়লো নূর ।সবাই খাওয়া শুরু করল এদিকে নওরিন আফরোজ সামিহা বেগম সবাইকে খাবার সার্ভ করছিল ।
হুমায়ুন রহমান এবং ফজলুর রহমান অফিশিয়াল কিছু কথাবার্তা বলছিল ।সাইমন চুপচাপ বসেছিল রিমা অন্যদিকে ঘুরে চুপচাপ খাওয়ায় মনোযোগী ছিল।

হঠাৎ যেন বো*মা ফাটালো সাদাফ।নওরিন আফরোজের দিকে তাকিয়ে বলে বসলো ,”আম্মু আমি বিয়ে করবো।”
সাথে সাথে নূরের হাত থেমে গেল ।মনে হলো ভুল কিছু শুনলো।নওরিন আফরোজ সাদাফের দিকে চোখ তুলে তাকালেন । হুমায়ূন রহমান সাদাফের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকালো ।ফজলুর রহমান ও অবাক হয়ে গেল কথা শুনে।
“যে ছেলে ক্ষুধা লেগেছে ঠিক মতো বলতে পারেনা সেই ছেলে টেবিলে বসে বলছে বিয়ে করবে সবার সামনে যেন মাথার উপর দিয়ে গেল সব কিছু ।”মনে মনে ভাবলো ফজলুর রহমান।

সবার নজর এখন সাদাফের দিকে ।নূর একমাত্র মাথা নিচু করে বসে রয়েছে কোন কথা বলছে না।
নূরের এখন ভীষণ রাগ হচ্ছে ভীষণ মানে ভীষণ ।গতকাল তো কত করে বুঝিয়ে বলল ,”বিয়ে যেন না করে তারপরও লোকটা আজকে সকালে বিয়ের কথা বলছে ।এত নি*র্লজ্জ লোক টা বিয়ের কথা বলতে মানুষের সামনে ল*জ্জা করেনা ।

আর নুরের কথা কি কোন মূল্য নেই লোকের কাছে?আর বিয়ে যদি করবি তাহলে কাল এসব কেনো করলো।শুরু থেকেই কেনো নুর কে বার বার ছুয়ে দেয় লোকটা।নুর কি এতোটাই ফেলনা?”
হুমায়ুন রহমান একবার আড় চোখে তাকালেন নূরের দিকে ।দেখল নূর চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে ।কোন প্রতিক্রিয়া নেই কোন কিছু বোঝা যাচ্ছে না ।
তারপর চোখ ঘুরিয়ে তাকালো সাদাফের দিকে ।বুঝতে পারছে না ছেলে কি করতে চাইছে ।অন্যদিকে সবাই খুশির সংবাদ শুনে খুশিতে আপ্লুত হয়ে বলছে মেয়ে কোথায় বাড়ি কোথায় পাত্রী কে ?নাকি আমরা পাত্রী দেখবো ?অনেক ধরনের প্রশ্ন করছে সাদাফ কে।”

সাদাফ কিছুক্ষণ নূরের দিকে তাকিয়ে রইল ।তারপর বলল ,”মেয়েকে তোমরা সবাই চিনো ছোটবেলা থেকেই চিনো ।আর চিন্তা করতে হবে না তোমাদের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যেতে হবে না মেয়ে নিজে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসবে।”
হুমায়ূন রহমান দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো। বুঝতে পারলো সাদাফ কি করতে চাইছে। কিন্ত নুর যে এসবের জন্য ছোট অনেক।বয়সের তুলনায় ম্যাচুরিটি অনেক কম।
নূরের আর এসব কথা সহ্য হচ্ছিল না ।নি*র্লজ্জের মত কিভাবে বলছে মেয়েকে সবাই চিনে আর মেয়ে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসবে ।সাবা আপুকে দেখলে তো মনে হয় না ঠিক এতটাই নি*র্লজ্জ ।
আবার হতেও পারে এই নি*র্লজ্জ লোকে প্রেমিকা তো নির্ল‘‘জ্জই হবে মনে মনে ভাবলো নুর ।তারপর প্লেট টেবিলে জোরে সরিয়ে রেখে দাঁড়িয়ে গেল নুর।

নওরিন আফরোজ বলল ,”কিরে তুই কোথায় যাচ্ছিস ?কিছুই তো খেলি না ।”
নূর বলল ,”খুদা নেই ।আমি উপরে যাচ্ছি ।”
সাদাফ নুরের দিকে তাকিয়ে বলল ,”বড় ভাইয়ের বিয়ের কথা শুনে খুশিতে প্রিপারেশন নিতে যাচ্ছে।কোন গানে ডান্স করবে এখন থেকেই ঠিক করতে হবে তো।”

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২১

নূর সাদাফের কথা শুনলো ঠিকই কিন্তু পিছনে ঘুরে তাকালো না ।মনে মনে বলল ,”আজকে দেখাচ্ছি তাকে ।বিয়ে করার স্বাদ যদি মিটিয়ে না দেই তাহলে আমার নামও নূর না।”
রিমা নুরের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে তাকালো সাদাফের দিকে ।দেখলো সাদাফের মুখের মধ্যে কেমন দুষ্টামিষ্ট হাসি এমন কেন মনে হচ্ছে সাদাফ ভাই শুধু নূরকে রা*গানোর জন্য এই কথাগুলো বলছে ।রিমা চুপচাপ দেখতে লাগলো দুজনের কাণ্ডকারখানা।

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here