সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৫
neelarahman
রাত এগারোটা সবাই যার যার মত খাওয়া-দাওয়া কমপ্লিট করে নিজের রুমে শুতে চলে গেছে । কে সবাই যার যার নিজের ভাবনা চিন্তায় ব্যস্ত নরিন আফরোজ ব্যস্ত নিজের চিন্তায় হুমায়ুন রহমান ব্যস্ত নিজে চিন্তায় ফজলুর রহমান ব্যস্ত ভাই কি কথার ইঙ্গিত দিল সেটা নিয়ে।
সাইমনরিমা ব্যস্ত নিজেদের মধ্যে দ্ব*ন্দ্ব ঝামেলা নিয়ে ।এদিকে নূর ভাবছে সাদাফ ভাই বিয়ে করতে চায় তাহলে ওর সাথে কি ?
এদিকে সাদাফ ভাবছে নূর কবে বড় হবে ?সবাই চুপচাপ খাওয়া-দাওয়া করে যার যার রুমে চলে গেল।সাইমন ও তাই ।সাইমনের আজকে মেজাজ অনেক গরম জানেনা কেন এরকম করছে রিমা । নীলা রহমান
ঠিকমত কথা বলে না ফোন দিলে ফোন ধরে কোনমতে হ্যালো বলে কথা শুনে রেখে দেয় ।
সায়মন আর কোনোভাবেই বুঝে উঠতে পারছে না কি এমন হয়েছে রিমার সাথে রিমা এরকম করছে ।আজকে এর একটা হ্যাস্তন্যস্ত করেই ছাড়বে সাইমন।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এদিকে নুর নিজের রুমে শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলো সাদাফের বলা কথাগুলো ।সকালবেলা স্কুল যাওয়ার সময় যখন বলছিল ,”গভীরভাবে ছুঁয়ে দিতে চায় “বারবার একটি কথা কানে বাজছে নুরের।
ভাবছে আসলেই যদি সাবা আপুকে ভালোবাসে বিয়ে করতে চায় তাহলে কেন শুধু শুধু নূরের সাথে এরকম করে ?নুরের আজকে এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে সাদাফ ভাইকে ।অবশ্যই দিতে হবে যত যাই করুক আজকে নুর কোনভাবে ভয় পাবে না পটবে না।
তাই নূর হাতে তেলের বাটিটা নিয়ে নিল যদি বলে কেন এসেছিস বলবে তেল মালিশ করে দিতে ।
কিন্তু নূরের প্লান অন্য কিছু।নূর জানতে চায় যদি আপুর সাথে ভালোবাসা সম্পর্ক থাকে তাহলে অবশ্যই উনার মোবাইলে কিছু পাওয়া যাবে আজকে তেল দেওয়ার বাহানায় ওনার মোবাইল চেক করবে নুর।
যদি ধরা খেয়ে যায় তাহলে বলবে মাথায় তেল মালিশ করে দিতে এসেছি।
নুর চুপি চুপি ধীর পায়ে চলে এলো সাদাফের রুমের বাইরে ।সাদাফ রুমের দরজা লাগিয়ে ঘুমায়নি দরজা চাপানো ।ভিতরে ড্রিমলাইতে আলো জ্বলছে ।সাদাফ ঠকি টের পেল নুর এসেছে নুরের গায়ের জনসন বেবি পাউডারের গন্ধ শুনে বুঝতে পারে ব*লদি টা এসেছে।
তাই ভাবল নুর যে কাজে এসেছে ওকে করতে দেওয়া যাক ।চোখ বন্ধ বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে রইল সাদাফ।নুর দরজা লাগিয়ে দিলো রুমের ভিতর ঢুকেই ।
তারপর এদিক ওদিক তাকিয়ে খুঁজতে লাগলো কাঙ্খিত জিনিসটি ।তেলের বাটি টা টেবিলে রেখে দেখলো শিওরের পাশে বালিশের কাছে মোবাইলটি আছে ।হঠাৎ একটি নোটিফিকেশন আসলো ।নূরের মন কু গাইলো নিশ্চয় সাবা আপু কোন মেসেজ করেছে।
নূর এগিয়ে গেল ধীরে ধীরে সাদাফের শিয়োরের পাশে ।সাদাফের ঠিক অপজিট পাশে মোবাইলটা ।মাথার কাছে দাঁড়িয়ে নূর ভালো করে খেয়াল করল সাদাফ ঘুমিয়েছে কিনা ।আঙ্গুল নিয়ে নাকের কাছে নিয়ে গেল ।দেখল হ্যাঁ নিঃশ্বাস ভারী তার মানে ঘুমাচ্ছে ।
নুর আস্তে আস্তে সাদাবকে পাশ কাটিয়ে খাটের উপরে এক হাঁটুতে ভর দিয়ে মাথার কাছ থেকে মোবাইলটা চুপচাপ নিয়ে নিল।
নিয়ে ওই ভাবেই শিয়রের পাশে বসে মোবাইল দেখতে লাগলো ।একটু আগে একটা নোটিফিকেশন এসেছিল কিন্তু এখন মোবাইলে পাসওয়ার্ড জানা নেই তাই খুলতে পারছে না ।অনেক চেষ্টা করছে ।
জন্মদিনে তারিখ দিল কাজ হচ্ছে না জন্ম সাল দিল কাজ হচ্ছে না ফোন নাম্বার দিল কাজ হচ্ছে না ।কোন কিছুতেই কোন কাজ হচ্ছে না।
অনেকক্ষণ ধরে টি*পাটি*পি করার পর বি‘‘‘রক্ত হয়ে গেল নুর ।কোনভাবেই কাজ হচ্ছে না মুখ দিয়ে বের হয়ে গেল ধ্যাৎ কি একটা বা*লের পাসওয়ার্ড দিয়েছে খুলতে পারছি না।
নূরের মুখে এইরকম গা‘‘লি শুনে সাদাফ বোকা বনে গেল।
কি ভেবেছিল আর কি বের হল নূর ।একা একা তাহলে এরকম গা*লিগালাজ করে নিজে নিজে আর সবাই আমরা ভাবি তোকে ভদ্র মনে করি।মনে মনে হাসলো সাদাফ।
নূর বাচ্চাদের মত মোবাইলটা ঝাঁকাতে লাগলো ।সাদাফের আর সহ্য হচ্ছিল না ।খাট কাঁ*পছিল নূরের ঝাকিতে।
এদিকে নুরের বারবার ঝাকিতে সাদাফের গা কেঁপে উঠছে ।সাদাফের গায়ের সাথে একবারে মিশে ছিল নুর ।এমনিতে নূরের বেবি পাউডারের গন্ধে সাদাফের যেন নে*শা লেগে গেছে ।তার উপরে মেয়েটা এভাবে কাপছে বাধ্য হয়ে মাথা তুলল সাদাফ।তুলে বললো ,”কি শুরু করেছিস?”
নুরের হাত থেকে সাথে সাথে মোবাইলটা পড়ে গেল বিছানায় সাদাফের পিঠের উপরে ।তারপর সাদাফ কোনমতে মোবাইলটা সরিয়ে উপর হয়ে শুয়ে বলল ,”কি সমস্যা প্রতিদিন রাতে আমার রুমে কি করিস তুই?”
নুর বলল ,”কই কিছু না তো ।আমি তো তেল দিতে এসেছি আপনাকে।”
সাদাফ দুষ্টভ‘‘ঙ্গিতে নুরের দিকে তাকিয়ে বলল ,”তাই আমাকে তেল দিতে এসেছিস ?তা কই তোর তেল ?”
নূর আমতা আমতা করে বলল ,”ঐ তো কোথায় যেন একটা রাখলাম ।”
সাদাফ সাথে সাথে নুরের এক হাত ধরে এক ঝাটকা দিয়ে বিছানায় ফে‘‘লে নূরের উপরে শুয়ে বলল ,”তা কোথায় তেল দিতে এসেছিস আমাকে ?”
নুর ধীরে ধীরে বলল ,”শরীরে না না মাথায়।”
“কিন্তু আজকে তো মাথায় ব্যথা নাই ।ব্যথা তো আজকে অন্য জায়গায়।”
তুই শিওর যেখানে ব্যথা সেখানে তেল লা‘‘গিয়ে দিবি?”
নূরের হাত বিছানায় চে‘‘পে ধরে কানে কানে ফিসফিস করে কথাগুলো বলল সাদাফ।
নূর সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেলল ।নূরের নাকের কাছে সাদাফের পুরু‘‘ষালি একটা গন্ধ আসছে ।পুরো রুমে বিছানা সেই গন্ধ পাচ্ছে নূর ।যেন নিজেকে মা*তাল মা*তাল লাগছে ।কোনভাবে সহ্য করতে পারছে না ।দুই হাত দিয়ে খা*মচে ধরার চেষ্টা করছে বিছানা চাদর কিন্তু সাদাফ নুরের হাত চে‘‘পে ধরে আছে।
সাদাফ নূরের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল ,”সত্যি করে বল আমার রুমে কেন এসেছিস না হলে আজকে বের হতে দিব না।
এইভাবেই রাতভর আমার কোলবালিশ হয়ে আমার নিচে শুয়ে থাকবি।”
নুর কোন মতে আমতা আমতা করে কান্না কান্না কন্ঠে বলল ,”সত্যি করে বলছি তেল তেল মালিশ করে দিতে এসেছি ।ওই তো সামনে টেবিলে রেখেছি মাথা ঘুরিয়ে দেখুন প্লিজ আমাকে যেতে দিন ।আমি তেল মালিশ করে দিয়েই চলে যাব সত্যি করে বলছি।”
সাদাফ নূরের কান্না মাখা কথা শুনে মনে মনে হাসলো ।তারপর বলল ,”বিশ্বাস আর তোকে ?গভীর রাতে তুই আমার রুমে এসেছিস না জানি তোর উদ্দেশ্য কি ছিল ?এখন হাতেনাতে ধরা খেয়ে গেছিস আর ১ মিনিট আমার মোবাইল দিয়ে তুই কি করছিলি?
এত রাতে তুই আমার মোবাইল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলি কেন ?আমি ঘুমিয়ে গেলে নিশ্চয় আমার মোবাইল দিয়ে কিছু একটা করতি তুই সত্যি করে বল কি করতি ?”
বলেই নূরের আরো কাছে ঝুঁকে এসে কানের লতিতে নাক ঘষতে লাগলো।
নুর যেনো আর শ্বাস নিতে পারছিল না ।সাদাফের এই আচরণে নুরের চোখ আবেশে বুঝে আসছিল ।
কোনমতে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলল ,”আমাকে ছেড়ে দিন প্লিজ ।আমি তেল মালিশ করে দিতে এসেছিলাম সত্যি করে বলছি।
আর না বলে রুমে আসবো না ।সত্যি সত্যি এবারের মত মাফ করে দিন ।”
সাদাফ বলল ,”তুই এর আগের বার আমার কাছে এভাবে মাফ চেয়েছিলি ।বলেছিলি অনুমতি ছাড়া রুমে আসবি না আজকেও এসেছিস এর শা‘‘স্তি তো তোকে পেতে হবে।
কিন্তু ভাবছি তোকে আজকে কি শাস্তি দেওয়া যায় ?একটু অভিনব শাস্তি দেওয়া দরকার কি বলিস?”
নূর ভয়ের সাথে সাথে চোখ খুলে ফেলল ।নূর চোখ খোলার সাথে সাথে সাদাফ নুরের ঠোঁটে আলতো করে একটু চু*মু খেয়ে বসলো।
নূর যেন জমে গেল বরফের ন্যায় ।শরীরের র*ক্ত গুলো জমাট বেঁধে গেল ।আর নড়াচড়া করছে না ।নূরের দুই হাত চে*পে রেখে আরেক হাত নুরের কোমরে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ।আর বলছে কি শা‘‘স্তি দেবো তোকে আজ বল।”
নুর কিছু বলবে তার আগেই সাদাফ নুরকে ছেড়ে দিয়ে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ালো ।তারপর নূর চোখ খুলতেই নূরকে সাথে সাথে কোলে তুলে নিল ।নূর বলল ,”কি হলো কোলে তুলে নিলেন কেন কি করবেন আমাকে কি ফেলে দিবেন কোল থেকে ?”
সাদাফ হাসতে হাসতে নুরকে নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে গেল।
ওয়াশরুমের ভিতরে ঢুকেই নূর কোল থেকে নামার জন্য ছুটাছুটি করতে লাগলে নুরকে শক্ত করে ধরে পানির ট্যাপ ছেড়ে দিল।
নূর ঠান্ডায় জমে গেল সাথে সাথে সাদাফকে জড়িয়ে ধরল ।সাদাফ নুর কে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় নূরে কানে কানে বলল ,”যে আ*গুন আমার ভিতরে জ্বা*লিয়েছিস আমি পু*ড়ছি আমার মাথা এখন ঠান্ডা করতে হবে ।তাহলে তোকেউ এখন ভিজিয়ে ঠান্ডা করব আমি।
এত রাতে ঠান্ডায় একা আমি কষ্ট করবো কেন তুইও কষ্ট করবি কারণ তুই এসেছিস আমার ঘরে।”
বলেই নূরকে কোল থেকে নামিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে দুজনে ভিজতে লাগলো।
নূরের সারা শরীর ভিজে জুবু থুবু অবস্থা ।সাদাফের চুল নাক গাল চুইয়ে চুইয়ে পানি পড়ছে নূরের কপালে গালে সারা শরীরে ।নুর উপরে তাকাতে পারছে না ।হঠাৎ করে একরাশ লজ্জা জেগে ধরেছে নূরকে।
সাদাব নেশা ধরা চোখে তাকালো নুরের দিকে ।সাদা জামা পড়ে থাকায় ভেতরের মোটামুটি সব কিছু দৃশ্যমান ভিজে যাওয়ার জন্য। তাড়াহুড়া করে বিছানা থেকে জোর পূর্বক কোলে করে নূরকে ওয়াশরুম পর্যন্ত টেনে আনায় কোথাও হয়তো গায়ের ওড়নাটা পড়ে গিয়েছে। সাদাফের চোখ দুটো গিয়ে ঠেকলো নূরের ব*ক্ষপানে যা খুব জোরে জোরে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার দরুন উঠানামা করছে।সাদাফ দুই হাত দেয়ালে চে*পে ধরে কোনমতে নিজেকে সংযত রাখার চেষ্টা করছে। কোথায় মাথায় পানি ঢেলে একটু মাথা ঠান্ডা করতে এসেছিল সাদাফ কিন্তু এই মেয়ে ঠান্ডা পানির মধ্যেও সাদাফ এর ভিতরে আ*গুন জ্বা*লিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সাদাফের ভিতরের জলন। নুরকে বোঝাতে পারছে না নিজেকে সংযত রাখতে পারছে না।
এর মধ্যেই ঠান্ডায় কাপাকাপি শুরু হয়ে গেল নূরের ।তারপরও কোনমতে চোখ খুলে দুই হাত বুকে আড়াআড়ি করে রেখে বললো,” আপনি কি আমাকে ভালো বাসেনা??”
সাদাফ এমনি জলছে।তারউপর নুরের এই প্রশ্ন।সাদাফ ধীরে ধীরে কিন্তু স্পষ্ট আওয়াজে এ নূরের কানে কানে ফিসফিস করে বলল ,”ভালবাসলে কি করবি আর না বাসলে কি করবি?”
এদিকে সাইমন অপেক্ষা করছে কখন রিমার কাছে জিজ্ঞেস করবে তাই রিমা কে ফোন দিল ।রিমা ফোন ধরছেনা আরো বিরক্ত হচ্ছে সাইমন। বাধ্য হয়ে রিমা রুমের দিকে হননিয়ে হেঁটে গেল সাইমন।
রিমা দরজা লাগিয়ে শুয়েছে আজ ।সায়মন বারবার নক করছে ।সাইমন বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু দরজা খুলছে না রিমা।সাইমন বাধ্য হয়ে বলল ,”তুই যদি এবার দরজা না খুলিস আমি আরো জোরে জোরে নক করব ।”
রিমা বাধ্য হয়ে দরজা খুলে দিল।
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৪
সাইমন সাথে সাথে রুমের ভিতরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল ।রিমা বলল ,”দরজা লাগালে কেন সবাই কি মনে করবে ?খোলো এক্ষুনি ।”
বলে যেইনা রিমা দরজা খুলতে যাবে তার আগে সাইমন রিমার হাত দুটো ধরে দেয়ালের সাথে চে*পে ধরল।
এই দুজনের রোমান্স দেখতে পরের পর্ব অবশ্যই দেখবেন এবং পর্ব 25 উরাধুরা লাইক কমেন্ট শেয়ার করবেন।