সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬০+৬১

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬০+৬১
neelarahman

সাদাফের মনের ভিতর কেমন যেন আনচান আনচান করছে ।কেন হুমায়ূন রহমান বলল নুর নেই। নূরের চিন্তা করতে হবে না ।
কেমন যেন অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে সাদাফের হৃদয় জুড়ে।শূন্য শূন্য লাগছে হৃদয়ের ভিতরটা ।গতকাল থেকে নূরের সাথে কথা হয়নি নূর তো এক মুহূর্ত ফোন না দিয়ে থাকতে পারে না তাহলে এখনো পর্যন্ত ফোন দেয়নি কেনো? ওর অসুস্থতার কথা শুনেও হসপিটালে আসেনি।
নূরের কি শরীর অসুস্থ ? না বাবার সাথে কথা বলতে
হবে ।

মনে মনে ভাবল সাদাফ।ঠিক এমন সময় রুমে প্রবেশ করলো ফজলুর রহমান হুমায়ূন রহমান সাইমন রিমা নওরিন আফরোজ এবং সামিহা বেগম ।আশেপাশের চোখ বুলিয়ে সাদাফ দেখল কোথাও নূর নেই ।সাদাফ অবাক এর উপর অবাক হয়ে যাচ্ছে নুর কেন নেই ?সবাই আছে পরিবারের অথচ নূর নেই।
রুমে ঢুকার সাথে সাথে সাদাফ সবার প্রথমে জিজ্ঞেস করল নুর কোথায় ?হুমায়ূন রহমান চুপ মেরে গেলেন ।উত্তর দিলেন ফজলুর রহমান ।বললেন ,”নূর তো নেই মামার বাড়িতে গিয়েছে ।ওর নানীর শরীরটা ভালো না কিছুদিন ওখানেই থাকবে।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

পিছনে চুপচাপ রইলেন নওরিন আফরোজ এবং সামিহা বেগম ।আগে থেকেই বলে দেওয়া হয়েছে নূরের বিষয়ে যেন এই দুজন কোন কথা না বলে তাই দুজন বাধ্য হয়ে চুপ থাকতে হচ্ছে।
সাদাফ অধৈর্য হয়ে গেল ।যেন ওর আর কোন কিছুতেই তর সইছে না ।বাবার দিকে এলোমেলো চোখে বারবার তাকালো ।হুমায়ুন রহমান কি উত্তর দিবে তাই চুপচাপ মাথা নিচু করে রইল ।ভাইকে যে কথা দিয়েছে সাদাফের ব্যাপারে আর কোন কিছু বলবে না যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফজলুর রহমান নিজেই নিবে। নীলা রহমান লেখিকা
তখনো উনি জানতো না আসলে ফজলুর রহমান কি ধরনের সিদ্ধান্ত নিবে ।এখন এই পা*গল ছেলেটাকে কি করে সামলাবে হুমায়ুন রহমান তাই ভাবছে। কখন যে লা*গাম খুলে ফেলে মুখের।
সাদাফ ফজলুর রহমানের দিকে তাকিয়ে বলল ,”কেন ছোট আব্বু কেন গিয়েছে ও ?ও গিয়ে কি করবে ?ও নিজেই তো ছোট ও কিভাবে কারো সাহায্য করতে পারবে?”

ফজলুর রহমান বলল ,”সাহায্যের জন্য না ও শুধু ও ছোট মামাতো বোনকে নিয়ে একটু বসে থাকবে খেলাধুলা করবে যা করার ওর মামী করবে ।আর তাছাড়া নানিয অসুস্থ কখন কি হয়ে যায় সামনে ওর পরীক্ষা যেতে পারবেনা তাই ভাবলাম একটু দেখা করে আসুক।”
সাদাফ যেন আর নিজেকে ধরে রাখতে পারছে না ।ধৈর্য হারা হয়ে যাচ্ছে ।মুখ ফসকে বলে ফেলল ,”কার অনুমতি নিয়ে গেছে ?”হুমায়ূন রহমান চোখ বন্ধ করে ফেললেন ।নওরিন আফরোজ এবং সামিহা বেগম একে অপরের চোখ চাওয়াচাওয়ি করছে । নীলা রহমান
এদিকে রিমা আর সাইমন ও চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে সাদাফ ভাইয়ের এরকম রূপ আগে কখনো দেখেনি।
ফজলুর রহমান অবাক হলেন সাদাফের দিকে তাকিয়ে বলল,” আমি বাবা আমি গার্ডিয়ান হিসেবে অনুমতি দিয়েছি আর কারো অনুমতি লাগবে?”

সাদাফ বিছানায় শুয়ে আছে ।হাতে ক্যানুলা করা খুব একটা নড়াচড়া করতে পারছে না ।শরীর অনেক দুর্বল ।তারপরেও শুয়ে শুয়ে বলল ,”আমি এখন অনুমতি দেইনি। ও কার কাছে জিজ্ঞেস করে গিয়েছে।”
ফজলুর রহমান বলল ,”কার কাছে জিজ্ঞেস করে যাবে ?বলছি তো আমি অনুমতি দিয়েছি ।”
সাদাফ এবার আরো অধৈর্য হলো ।বাম হাতে ভর দিয়ে একটু উঠে বসে বলল ,”তুমি ছোটবেলা ওর সব দায় দায়িত্ব আমার কাছে বুঝিয়ে দিয়েছিলে ।প্রমিস করেছিলে মনে নেই তোমার ?তাই ওর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার শুধু আমার।”

এমনি জ্বরের ঘোরে সাদাফের মাথা ঠিক নেই তার উপরে যখন শুনছে নুর কিছুদিন সেখানে থাকবে সাদাফের ভিতরে সবকিছু এলোমেলো লাগছে ।মনে হচ্ছে ভিতরে ঘূর্ণিঝড় হয়ে যাচ্ছে তাণ্ডব হয়ে যাচ্ছে কোথাও ।নুরকে দেখতে না পেলে যেন এই মুহূর্তে সব ভেঙেচুরে ফেলবে।
নূর সামিহা বেগমের দিকে তাকিয়ে বললো,”ছোট আম্মু নুরকে ফোন দাও ।সাইমনকে পাঠাও বল এক্ষুনি বাসায় চলে আসতে।অন্য কারো বাসায় গিয়ে আর থাকতে হবে না ।আমার অনুমতি ছাড়া কেন গেল ?ওকি আমার কাছে জিজ্ঞেস করেছিল?”

সামিহা বেগম কিছু বলবে তার আগেই নওরিন আফরোজ বলল ,”কি পাগলামি করছিস বাবা ?থেকে আসুক না দুই তিনটা দিন ।নানুর বাড়িতেই তো গিয়েছে চলে আসবে ।এর মধ্যে তুই ও সুস্থ হয়ে যাবি ।বাসায় আসলে দেখবি নুর চলে এসেছে।”
সাদাফের ভেতরটা কেমন খারাপ খারাপ লাগছে অসুস্থ তা যেন আরো জেকে ধরেছে মাথা ঘুরাচ্ছে তারপরও কষ্ট করে চোখ ঘুরিয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল তুমি বুঝতে পারছ না মা বাসায় যাওয়ার পর না নূরকে এক্ষুনি হসপিটালে আসতে বল আমার সামনে আসতে বল।
হুমায়ূন রহমান সবকিছু জানেন এখন ফজলুর রহমান ও জানে ।কিন্তু বাকি সবাই অবাক হচ্ছে সাদাফের কথা শুনে।সাদাফ নুরের জন্য এই পা*গলামি করবে ভাবতে পারেনি কেও।
সায়মন তাকালো রিমার দিকে ।রিমা কিছুটা জানতো কিন্তু ভাইয়ের অবস্থা এরকম এতো টা সিরিয়াস নুরের প্রতি এক কথায় অবসেশন তা বুঝতে পারেনি রিমা।

ধীরে ধীরে সাদাফের দুনিয়াটা যেন ঘুরছে ।শরীর দুর্বল চোখ দুটো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসছে ।তারপরও কোনমতে ঠোঁটে একবার আওড়ালো ,”নূরকে আমার সামনে আনো না হলে খুব খারাপ হয়ে যাবে ছোট আব্বু।”
জ্ঞান হারালো সাদাফ আবার ।সাথে সাথে হুমায়ূন রহমান সাইমন কে বলল ,”ডক্টর ডাকার জন্য ।সাইমন সাথে সাথে বাহিরে গিয়ে ৫ মিনিটের মধ্যে ডক্টরে ডেকে নিয়ে আসলেন ।ডঃ এসে সাদাফকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বললেন ,”আসলে ওনার ব্রেনে চাপ পড়ে যাচ্ছে বেশি। উনি কোন চাপ নিতে পারছেন না ।এমনি শারীরিকভাবে দুর্বল জর উনাকে একেবারে ঘায়েল করে ফেলেছে তার উপরে হাতে আঘাত ব্যথা সহ্য করতে পারছিলেন না।
তাই ওনার নার্ভ সিস্টেম একটু দুর্বল হয়ে গেছে ।আশা করি আপনারা উনাকে একটু চাপ থেকে দূরে রাখবেন আপাতত আমরা ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে দিচ্ছি বেশ কয়েক ঘন্টা ঘুমালে ব্রেন ঠিকঠাক কাজ করবে।
হুমায়ূন রহমান অসহায় দৃষ্টিতে তাকালেন ফজলুর রহমানের দিকে ।ফজলুর রহমান ও চায়না সাদাফের এই অবস্থা হোক বা এতটা চাপ পড়ুক কিন্তু ওকে অনেক কিছুই সহ্য করতে হবে অনেক পরীক্ষা দিতে হবে ।মনে মনে ভাবলেন ফজলুর রহমান।

এদিকে সামিহা বেগম ও নওরিন আফরোজ কান্না শুরু করে দিলেন ।শত হলেও নারী মন মায়ের মমতা ছোটবেলা থেকে দুজনে ছেলের মত মানুষ করেছে সাদাফ কে।তবে ফজলুর রহমানের ভয়ে সামনে এগিয়ে আসতে পারছেন না ।পিছনে দাঁড়িয়ে কাঁদছে দুজন।
ভাইয়ের এ অবস্থা দেখে সহ্য করতে পারছে না রিমা।ঝরঝরে কান্না করে দিল ।সায়মন রিমার হাত ধরে পিছনে দাঁড়িয়ে শান্তনা দেওয়ার ভঙ্গিতে বলল ,”ঠিক হয়ে যাবে চিন্তা করিস না।”
আপনারা ভাবতে পারেন এত কিছু হয়ে যাচ্ছে নুর ম্যাডাম কোথায়? নুর ম্যাডাম আছে আগামী পরে বলব।

সাদাফ: তুমি অন্তত বলো বাবা নুর কোথায়? হসপিটালে জেনে ও নুর আসবে না এটা তো আমি বিশ্বাস করতে পারছি না বাবা।
হুমায়ূন রহমান: শান্ত হও আর নিজেকে স্টেবল কর ।একদিন দুইদিন এই তোমার এই অবস্থা হয়েছে দিনের পর দিন যদি নূরকে ছাড়া থাকতে হয় তাহলে কিভাবে থাকবে ?নিজেকে শক্ত করো।
সাদাফ: পুরো বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দিব যদি আমি নূরকে দেখতে না পাই বাড়িতে।
হুমায়ূন রহমান: এই রাগ এই অবশেশন যে তোমার শত্রু হয়ে গেছে সাদাফ।
ইনজেকশন দেওয়ার আগে বাবার সাথে এই কথাগুলো হয়েছিল সাদাফের ।হুমায়ূণ রহমান ভাবতে লাগলো সাদাফের বলা কথাগুলো।

ইঞ্জেকশনের প্রভাবে লম্বা সময় ধরে ঘুমাচ্ছে সাদাফ।বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে হুমায়ুন রহমান ও ফজলুর রহমান। করিডোরে বারবার হাঁটাচলা করছে সায়মন আর রিমা।অপেক্ষা করছে কখন সাদাফ ভাই আবার উঠে যায় ।
কখন আবার এরকম করবে নুরের জন্য।
রুমের ভিতরেই আরেকটি বেডে চুপচাপ গুটিসুটি মেরে বসে আছে নওরিন আফরোজ ।ছেলেরে অবস্থা উনি দেখতে পারছেন না ।সামিহা বেগম পাশে দাঁড়ানো ছিল ।নওরিন আফরোজ এর কাঁধে হাত দিয়ে বললেন ,”ভাবি আল্লাহ আল্লাহ কর ।মন খারাপ করো না ।সাদাফ দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে।”

নওরিন আফরোজ ফুপিয়ে কান্না করে দিলেন। কাঁধে হাত রাখা সামিহা বেগমের হাতে হাত রেখে সামিহার দিকে তাকিয়ে বললেন ,”আমার সাদাফের অসুখ তো নূর আর তো কোন অসুখ নেই। নীলা রহমান লেখিকা
ফজলুর এমন করছে কেন ?সবকিছু দেখেও বুঝেও না দেখার না বুঝার ভান কেন করছে ?ওরও তো ছেলে হয় সাদাফ।ওর কি মায়া লাগছে না ?বুকটা কাঁপছে না সাদাফের জন্য?
হঠাৎ করে শুধু নূরের বাবা হয়ে গেল ?ও তো আগে সাদাফের বাবা হয়েছে সাদাফ ওকে আগে বাবা বলে ডাক দিয়েছে।

সাদাস কি শুধু আমার আর উনার সন্তান ?তোদের নয় ?বুকে হাত দিয়ে বলতো তোকে যখন মা বলে ডেকেছে তোর কি কলিজা ঠান্ডা হয়নি ?তাহলে এখন আমার ছেলেকে এই অবস্থায় দেখে কিভাবে দাঁড়িয়ে আছিস?”
কেন বোঝাচ্ছিস না ফজলুর কে ?আমার সাদাফের অবস্থা কি হয়েছে দুই দিনে ?দেখ কি অবস্থা হয়েছে ?কিভাবে থাকবে ও নুর কে ছাড়া?”
সামিহা বেগম এক দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। চোখের পানি মুছতে মুছতে নওরিন আফরোজ এর পাশে বসে বললেন ,”আমার কি বুকটা ফাটছে না ভাবি? উনি তো আমার সাথে কিছুই শেয়ার করছেন না ।হঠাৎ করে এরকম করছে করা নির্দেশ দিয়েছে আমরা যেন উনাদের দুই ভাইয়ের সামনে কিছু না বলি।
আমি সত্যি করে বলছি ভাবি আমি কিছুই জানিনা ।কি থেকে কি হয়ে গেল ?সাদাব কে কি আমরা কম ভালোবাসি ?নিঃসন্দেহে বলতে পারব সাদাফ যতটুকু তোমাদের ঠিক ততটুকু আমাদের সন্তান।”

এদিকে বোকা নুর মোবাইল নিয়ে বসে আছে ।মোবাইলে যে নাম্বারটা ব্লক করে দিয়েছে ফজলুর রহমান তা ভুলেও বুঝতে পারেনি নুর । বোঝার কথা ও নয়।মনে মনে ভাবছে মোবাইল থেকে ফোন যাচ্ছে না হয়তো নেটওয়ার্ক খারাপ কিন্তু সাদাফ ভাই কেন ফোন দিচ্ছে না ?ফোন হাতে নিয়ে শুধু ফোনের অপেক্ষায় করে যাচ্ছে। নীলা রহমান
সাদাফের শরীর অসুস্থ হসপিটালে ভর্তি এসব কিছুই জানেনা নুর ।নুরকে মামার বাড়িতে রেখে গিয়েছে নানীর অসুস্থতার কথা বলে দুই দিনের জন্য।
বাসায় মামা মামিকে খবর দিয়ে রেখে গিয়েছে বলেছে পারিবারিক একটি প্রয়োজনে সবাইকে যেতে হচ্ছে ।নুর যেহেতু অনেকদিন মামা বাড়িতে বেড়ায় না তাই দুই দিনের জন্য নুর তাদের সাথেই থাকবে ।তাই মামা-মামী ও আর সন্দেহ করেনি।

এদিকে নুর না আসার জন্য কোন বাহানা ও খুঁজে পায়নি ।আর যেহেতু সাদা ভাই বাড়িতে নেই আরো তিন থেকে চার দিন পরে আসবে তাই নূর ভেবেছে মোবাইলটা তো দিয়েছে কথা তো এখান থেকেও বলা যাবে ।তাই চুপচাপ মামা বাড়িতে চলে এসেছে।
তবে আজ থেকে থেকে মন খারাপ হচ্ছে নুরের। বারবার সাদাফের কথা মনে পড়ছে খুব।সাদাফ ভাই কেন ফোন দিচ্ছে না ?বারবার মোবাইলে দিকে তাকাচ্ছে ।মামাতো ছোট বোনকে নিয়ে বসে আছে ওর দিকেও খেয়াল দিতে পারছে না ।বারবার শুধু মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখছে ফোন কেন আসছে না এমন তো হবার কথা নয়? তাহলে কি যেই ভয় পেয়েছিল সেটাই হয়েছে ?ওইখানে গিয়ে কি কাউকে পেয়েছে সাদাফ ভাই ?নাকি সাবা আপু ওখানে গিয়েছে যার জন্য নূরকে মনে করার বা ফোন দেওয়ার সময় পাচ্ছে না ?খুব অভিমান হচ্ছে নূরের।

হসপিটালে বাহিরে চেয়ারে পাশাপাশি বসে বসে আছে হুমায়ুন রহমান ও ফজলুর রহমান । হুমায়ূন রহমান যেনো পাথর হয়ে গেছে।চোখ তুলে তাকালেন ফজলুর রহমানের দিকে ।ফজলুর রহমান জানে ভাই কি বলতে চায় ।তাই নিজে থেকে শুরু করলেন ।বললেন,”ভাই আমি কিছু বলতে চাই আপনাকে সাদাফের সম্পর্কে।”
হুমায়ূন রহমান মুখে কিছু বললেন না শুধু তাকিয়ে রইলেন ফজলুর রহমানের দিকে।
ফজলুর রহমান বলল ,”ভাইজান আপনার কি অবাক লাগে না নুর যখন জন্ম হয়েছে ঠিক সেইদিন থেকেই নুরকে নিজের বলে দাবি করা নূরের প্রতি এতটা অবসেশন যে কারো গায়ে হাত তুলতে দ্বিধাবোধ করে না ।এমনকি নিজের র*ক্ত ঝরাতে দ্বিধাবোধ করে না।

সেটা সময়ের সাথে সাথে বেড়েছে ভাইজান কমেনি ।নিঃসন্দেহে সাদাফ নুরকে অনেক ভালোবাসে কিন্তু ওর ভালোবাসা ওর অবসেশন এতটাই বেড়ে গিয়েছে ও নিঃসন্দেহে নূরের জন্য মানুষ খু*ন করতে পারবে এমনকি ভাইজান নিজেকেও মে*রে ফেলতে পারবে।
আমি সাদাফের শত্রু না ভাইজান বিশ্বাস করেন ।আপনার যতটুকু ছেলে সাদাফ আমার ততটুকুই ছেলে ।আমি ওর ভালো চাই আমি চাই ও নিজের রা*গ কন্ট্রোল করুক ।অ*বশেশন কন্ট্রোল করুক ।নুরের প্রতি ওর যে একটা অবসেশান সেটা থেকে ও বের হয়ে আসুক।

আজ যদি সাদাফ কোন ড্রা*গসের এডিক্টেড হতো আপনি কি করতেন ?ওকে কোন রিহ্যাবিলিটেশনে দিয়ে দিতেন যাতে ও অ্যাডিকশন থেকে বের হয়ে আসতে পারে সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে পারে ।নুরু একটা অবসেশন হয়ে গিয়েছে ভাইয়া ওর অ্যাডিকশন হয়ে গেছে ।ওর একটা সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে হবে।
কাউকে ভালবাসলে দূর থেকেও ভালোবাসা যায় উ*গ্রতা না দেখিয়ে ভয় না দেখিয়ে এমনিও ভালোবাসা যায় এটা সাদাফকে শিখতে হবে ।সময়ের প্রয়োজন ।আমরা সবাই মিলে সময় দিব আমার উপরে বিশ্বাস রাখেন ভাইজান আমি ওর শত্রু নই।

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫৮+৫৯

হুমায়ূন রহমান জানে সাদাফের রাগ সাদাফের অবসেশান সম্পর্কে ।তারপরও ফজলুর রহমানের দিকে তাকিয়ে বললেন ,”তারপর কি হবে ?ধর ও সব কিছুই শিখে নিল সবকিছুই হলো তারপর ?নুর কিন্তু সাদাফের ই থাকবে। এটা তুই কোনোভাবে অস্বীকার করতে পারবি না।”
ফজলুর রহমান তাকিয়ে রইলেন ভাইয়ের দিকে ।অসহায় নেত্রে কিভাবে হুমায়ূন রহমান তার দিকে তাকিয়ে আছে ! ফজলুর রহমান ভাইয়ের দুই হাত ধরে বললেন ,”আমার উপরে বিশ্বাস রাখেন ভাইজান সাদাফ সুস্থ হয়ে যাবে ।ওর একটু সময় প্রয়োজন।”

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬২+৬৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here