সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭৬+৭৭

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭৬+৭৭
neelarahman

বসুন্ধরা সিটিতে নেমে লাঞ্চ করতে এলো সায়মন ও রিমা ।মেনু দেখে সায়মন বলছে ,”তুই ইচ্ছা করে আমাকে এখানে এনেছিস না ?দেখ একেকটা সেট মেনু দাম কত করে ?তোকে তো আমি সেট মেনুর বেশি খাওয়াতে পারব না ।এক একটা দেখ ৬০০/৬৭০ টাকা করে ।১৪০০ টাকা তুই এখানে নষ্ট করবি হা*রামজাদি।”
“উফ তুমি থামবে ?আমি তো বলেছি আমার কাছে কিছু টাকা আছে ।এরকম করছ কেন ?সব সময় কি বের হওয়া হবে ?” বললো রিমা।

সায়মন রিমার দিকে তাকিয়ে বলল ,”তুই সবসময় বের হবি ।তুই আমার পকেট কাটার ধান্দা করেছিস ।
তোর ভাইয়ের থেকে কিছু টাকা নিয়েছিলাম বলে সেই টাকা তুই কিভাবে ধ্বংস করবি এটাই তোর মিশন।এই মুহূর্তে দেখিয়ে দিলি তোর মত বউ যার কপালে জুটবে তার আর পকেটে কিছু থাকবে না।”
রিমা বলল ,”বেশি বেশি বলছো কিন্তু ।আর যাদের টাকা এত বড় বড় কথা বলছো আমার বাপ চাচা ভাইয়ের টাকায় মনে রেখো।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সাইমন বলল ,”এক মিনিট তোর বাপ চাচা ভাই হলে আমার কি ?আমার কি সমন্ধি শশুর আর তালই লাগে?
বেয়াদ্দব একে তো ওই চিংড়ি মাছের মত পেট নিয়ে ১৪০০ টাকা এখানে নষ্ট করবি অথচ ২০০ টাকা হলে তোরে আমি বাইরে খাওয়াতে পারতাম ।শুধু শুধু তুই আমার টাকাগুলো নষ্ট করলি।”
“তুই থামবি? কোন কুক্ষনে যে তোর মত একটা ছেচড়ার সাথে প্রেম করতে আসছিলাম ?প্রেমিকা একটু ভালো-মন্দ খাবে না সেটা সহ্য হচ্ছে না ।এখনো তো এটা বলিনি আমাকে শপিং করিয়ে দাও। শপিং করানোর কথা বললে তো তুই ঠাডা পড়ে মরে যাইতে কিপটা কোথাকার ।”
সায়মন বললো,”আমার ঠ্যাকা লেগেছে তোকে শপিং করানোর? তুই এখন আমার বউ হোস নাই তুই কি রাতে কি আমার সাথে ঘুমাবি যে তোকে আমি শপিং করে দিব?
একটু একটু কাজ করস সেজন্য তোকে খাওয়াচ্ছি আর মুভি দেখাচ্ছি যদি এর থেকে বেশি কিছু করিস তাহলে বেশি কিছু দিব।”

রিমা অবাক হয়ে তাকালো সাইমনের দিকে ।বলল ,”কি বললি তুই শ*য়তান ?রাতে তোর সাথে ঘুমাবো ?তোর সাথে এর থেকে বেশি কিছু করব ?তোর মত ফ*কিরের সাথে এখানে খেতে এসেছি এটাই বেশি ফ*কির কথাকার।”
এদিকে হসপিটালে মনমরা হয়ে বসে আছে নুর।সাদাফ এগিয়ে গিয়ে সাবার মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে বলল ,”খালাম্মা এখন কেমন আছেন ?” সাবার মা ধীরে ধীরে চোখ খুলে বলল ,”ভালো আছি বাবা ।তুমি কেমন আছো?”
সাদাফ উত্তরে বলল ,”আমি ভালো আছি খালাম্মা ।দুঃখিত গতকাল মোবাইলটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাই আমি সময় মত আসতে পারিনি ।তবে আপনার যে কোন বিপদ হয়নি এটি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া ।পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।”

নুর অবাক হয়ে তাকালো সাদাফের দিকে ।মোবাইল তো বন্ধ হয়নি নূর ইচ্ছা করে বন্ধ করে রেখেছিল তাহলে মিথ্যা কথা কেন বলল ?নুরকে বাঁচাতে? নাকি প্রেমিকা রাগ করবে তাই রাগ থেকে বাঁচতে?
এসব ভাবনার মধ্যে হঠাৎ সাদাফ বললো ,”নুর এখানে আয় ।”নূর তাকালো সাদাফের দিকে। সাদাফ বলল ,”শুনিস নি ?এখানে আয় ।”
নূর চেয়ার থেকে উঠে কাছে গেল সাদাফের ।সাদাফ বলল ,”খালাম্মা এই যে নুর আমার চাচাতো বোন। নুর উনি হচ্ছে তোমার সাবা আপুর আম্মু ।উনি অসুস্থ ছিলেন গতকাল থেকে এখন মোটামুটি সুস্থ ।কথা বল।”
এর মধ্যে ফল কেটে নিয়ে আসলো সাবা ।নুরের সামনে দিয়ে বলল ,”নূর বস এখানে চুপটি করে ফল খাও ।”নূরের ভিতরে মনে কোথাও একটু অপরাধবোধ ও কাজ করছিল ।নূর ইচ্ছে করে ফোনটা বন্ধ রেখেছে নিশ্চয়ই সাবা আপু তা জানে।তাও কিছু বলছে না কেনো?

নুর বলল ,”আমি এখন ফল খাব না ।”
সাবা বলল ,”একটু খাও ফল খেলে খারাপ না ভালো ফল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। বুদ্ধি বাড়ে।”
নুরের এখন ভীষণ খারাপ লাগছে ।মনে মনে ভাবছে সাবা আপু কেন এত ভালো ব্যবহার করছে ?নূর তো আরো খারাপ করেছে ফোনটা বন্ধ রেখেছিল ।সাবা আপু জেনে শুনে কেন কিছু বলছে না নুরকে।
সাদাফ জানে ছোট্ট নূরের মনের মধ্যে এখন কি চলছে তাই সাদাফ উঠে এসে একটি অ্যাপেল মুখে নিয়ে বলল ,”নুর খাচ্ছিস না কেনো? কি এত ভাবছিস ছোট্ট মাথায় এত জোর দিতে হবে না ।কিছু ভাবতে হবে না চুপচাপ খা ।একটু পরে আমরা বের হব এক জায়গায় যাব।”

নুর মাথা তুলে তাকালো সাদাফের দিকে ।”এক জায়গায় যাবে মানে এখানেই শেষ না ?আবার কোথায় নিয়ে যাবে ?”মনে মনে ভাবতে লাগলো নূর। নীলা রহমান
সাদাফ জানে এখানে আশায় নূর খুব বেশি একটা খুশি হয়নি কিন্তু এখানে আসাটা উচিত ছিল ভদ্রতার খাতিরে হলেও আসা উচিত ছিল ।আর নূরেরও নিজের চোখে দেখা উচিত ছিল সাবার আম্মু যে আসলে অসুস্থ ও যে কাজটা করেছে সেটা ঠিক করেনি।
এখান থেকে বের হয়ে আজ সারাদিন নূরকে নিয়ে ঘুরবে ।এই প্লান অবশ্য এখনো নূর জানে না তাই হয়তো মনমরা হয়ে বসে আছে ।বের হয়ে যখন বলবে ঘুরতে যাওয়ার কথা তখন খুশি হয়ে যাবে ।এটা সারপ্রাইজ থাকুক নূরের জন্য তাই আর কিছু বলল না সাদাফ।
এদিকে নুর ভাবতে লাগলো আবার কোথায় নিয়ে যাবে? সাথে কি সাবা আপুও যাবে? নিশ্চয়ই তারা ডেটিং এ যাবে? সাথে আমাকে কেনো নিবে??

লাঞ্চ করে মুভি দেখার জন্য টিকিট কা*টতে দাঁড়িয়েছে সাইমন ।টিকিট কা*টতে গিয়ে দেখে টিকিটের প্রাইস ৬০০ প্লাস।
দুজনের জন্য টিকেট প্রাইস পড়বে বারোশো টাকা পপকর্ন নিতে হলে দুজনের জন্য কোল্ড কফি এবং পপকর্ন লাগবে প্রায় আরো এক হাজার প্লাস ।সাইমন তাকালো রিমার দিকে ।ইশারা করে বুঝালো টাকা দে।
রিমা পাশে দাঁড়িয়ে ফিসফিস করে বললো কত টাকা লাগবে ?সাইমন ফিসফিস করে বলল ,”আরো বারোশো টাকা দে।”নীলা রহমান
রিমা বলল ,”বারোশো টাকা ?তাহলে তো আমার টাকা দিয়ে আমি ঘুরে ফিরে খেয়ে গেলাম ।তুই আমার পিছনে কি খরচ করলি?”

“এখন মান-সম্মানের ফালুদা করিস বইন আমার না ভালো।তাড়াতাড়ি টাকা বের কর ।মানুষজন চেয়ে আছে সামনের জন গেলে আমার সিরিয়াল ।টাকা দিতে না পারলে মান সম্মান শেষ হয়ে যাবে এক্ষুনি টাকা দে।” বললো সায়মন।
রিমা কোন কথা না বলে চুপচাপ টাকা বের করে পাশে গিয়ে দাঁড়ালো সাইমন চুপচাপ টিকিট কাটার জন্য সিরিয়ালে দাঁড়ালো ।
এদিকে হসপিটালে বসে আছে নূর এবং সাদাফ।
সাবা ওর আম্মুর জন্য কিছু ফল ফ্রুটস কেটে সামনে দিয়ে এসে সাদাফ এবং নুরের সাথে বসল ।সাদাফ সাবার দিকে তাকিয়ে বলল ,”কিছু মনে করিস না প্লিজ ।ফোনটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল নুর আমাকে যখন বলেছে তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে ।আমি আসলে ফোনের কাছে ছিলাম না।”

সাবা যদিও বাচ্চা না বুঝতে পেরেছে সমস্যাটা কি ।তবে এই সমস্যাটার জন্য তো সাদাফ এবং ও নিজেই দায়ী ।ছোট বাচ্চা নূরের ব্রেন নিয়ে যে খেলছিল দুজন ।ওর কাছে যা ভাল মনে হয়েছে তাই করেছে ।সাবা তাই বলল ,”সমস্যা নেই ।সমস্যা তো মিটমাট হয়ে গিয়েছে এটা নিয়ে এত টেনশন করতে হবে না।
নুর তুমিও মন খারাপ করো না ।বুঝতে পেরেছি তুমি ইচ্ছা করে এই কা*জ করোনি ।হয়তো সাদাফ ছিল না আশেপাশে তাই তুমি বলতে ভুলে গিয়েছো ।কোন সমস্যা নেই বিপদ যেহেতু হয়নি তাই এটা নিয়ে আমাদের আর কথা না বলাই ভালো।”

নুর সাবার দিকে তাকাল ।মুচকি হাসলো ।কিন্তু আসলে ভিতরে অনেক অপরাধবোধ কাজ করছে নুরের।যত কিছুই হোক সাবা আপুর আম্মু অসুস্থ ছিল তার ব্লা*ডের প্রয়োজন ছিল আল্লাহ না করুক যদি নূরের এই গাফিলতির জন্য আজ সাবা আপুর আম্মুর কিছু হয়ে যেত তাহলে নূর কখনো নিজেকে ক্ষমা করতে পারত না।
যত কিছুই হোক ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য একজন মানুষকে কষ্ট দিবে নুর এরকম মন মানসিকতার মেয়ে না ।তাই চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে রইল নূর।
এদিকে সাদাফ সাবার দিকে তাকিয়ে বলল ,”তাহলে আমরা এখন উঠি ।আমাদের এক জায়গায় যেতে হবে ।দেরি হয়ে যাচ্ছে ।”

সাবা বলল ,”আর কিছুক্ষণ বসতি না হয় ?”
সাদাফ বললো ,” না আরেকদিন আসবো ।আজকে উঠি ।”
বলেই নূর কে বলল ,”চল খালাম্মার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসি।”
সাবার আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সাদাফ এবং নূর বের হয়ে গেল ।গাড়িতে বসে নূর জিজ্ঞেস করল ,”আমরা কোথায় যাচ্ছি ?”
সাদাফ বললো ,”সারপ্রাইজ গেলেই বুঝতে পারবি ।চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাক চোখ খুলে দেখবি আমরা চলে এসেছি।”

নূর বলল ,”কেন শুয়ে থাকব কেন ?”
সাদাফ নুরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল ,”ছোট বেলা কোথাও গেলে তো রাস্তায় আমার কোলেই শুয়ে পড়তি ।এখন সিটে বসে আছিস তাই ভাবলাম তুই তো ঘুমিয়েই যাবি।”
নুর বলল ,”মোটেও না এখন আমি বড় হয়েছি ।এখন কোথাও গেলে আমি ঘুমিয়ে যাই না ।”
সাথে সাথেই সাদাফ নুরের দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালাতে চালাতে বলল ,”হ্যাঁ বড় তো হয়েছিস।আগে তো আমার কোলে বসে যেতি ।এখন তো আমার কোলে বসে যাস না আলাদা সিট লাগে তোর।”

নুর চোখ দুটো সরু করে তাকালো সাদাফের দিকে ।তারপর অন্যদিকে ঘুরে চেয়ে থাকলো ।লোকটা কথায় কথায় ওকে শুধু ল*জ্জা দেয় ।কি দরকার এসব বলার যে আগে কোলে করে যেত ?নূরের বুঝি এসব শুনে লজ্জা লাগে না?
কিছুক্ষণ ড্রাইভ করার পরই ওরা চলে আসলো একটি ছোট ফার্ম হাউসের মধ্যে ।এই ফার্ম হাউসটা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশের তৈরি সন দিয়ে ছোট ছোট কুটির ঘর করা পুকুর বাঁধানো সেখানে মাছ পালা হয় ।সেই মাছ ধরবে বড়শি দিয়ে এবং সেই মাছ রান্না করে ওরা দুপুরে লাঞ্চ করবে ।নৌকায় ঘুরবে খালিপায়ে ঘাসের উপরে হাটবে। আশেপাশে শুধু গাছপালা আর ছোট ছোট পুকুর তৈরি করা।
সব থেকে মজার ব্যাপার হচ্ছে বড়শি দিয়ে সাদাফ মাছ ধরবে সেই মাছ ওরা নিজেরা রান্না করে নিজেরাই খাবে যেন চড়ুই ভাতি হচ্ছে।

নুরের কাছে ভীষণ ভালো লাগলো এই চড়ুইভাতী প্রোগ্রামটি ।সাদাফের কাছে এসে বলল ,”চলুন তাহলে তাড়াতাড়ি মাছ ধরবেন আর আমরা মাছ রান্না করবো ।”
সাদাফ নুরের দিকে তাকিয়ে বলল ,”তুই মাছ কা*টতে পারিস ?”
নুর বললো,”আপনি কা*টবেন আমি রান্না করবো।”
সাদাফ বলল ,”মাটি চুলা রান্না করতে হয় তুই আগুন জ্বালাতে পারবি ?”
নুর বলল ,”আপনি আগুন জ্বালিয়ে দিবেন আমি রান্না করবো ।”
সাদাফ বললো,”সবকিছু আমি করে দিব তাহলে তুই কি চুলার পাশে বসে থেকে বলবি আমি রান্না করছি?”
বলতে বলতেই কেয়ারটেকার বড়শি নিয়ে চলে আসলো ।বলল ,”ভাই এই যে বড়শি আপনি রেডি করতে বলেছিলেন এই নেন বসে বসে মাছ ধরুন ।একটু পর আরো রোদ উঠবে তখন আর বসে মাছ ধরতে পারবেন না।”
সাথে সাথে সাদাফ বড়শি নিয়ে নূরের এক হাত ধরে পুকুর পাড়ে চলে গেল ।ঘাটলায় বসে সুন্দর করে মাছ ধরার জন্য বরশি ফেলল পানিতে।

নুর বারবার মাথায় এদিক ওদিক করে দেখার চেষ্টা করছে মাছ উঠছে না কেন ।বলল ,”কি ব্যাপার মাছ ধরছেন না কেন ?কতক্ষণ আগে বড়শি ফেলেছেন ?”
সাদাফ বললো ,”মাছ ধরা পড়লে বড়শি নড়বে। চুপ করে বসে থাক।”
নুর বলল ,”মনে হয় কোন সমস্যা হয়েছে আপনি মনে হয় পারছেন না ।দাঁড়ান আমি দেখে আসছি ।”
বলেই সাদাফের বলার জন্য অপেক্ষা না করে সাথে সাথে দুই সিড়ি নিচে নামতে ধপাস করে পড়ে গেল পানিতে ।নূরের আইডিয়া ছিল না দুই শিড়ি পর আর সিঁড়ি নেই পানিতে পড়ে যাবে।
সাদাফ তড়িঘড়ি করে বরশি ফেলে নূরকে তুলল ।তুলে বলল ,”কোথাও ব্যাথা পেয়েছিস নুর ?”
নুর বলল ,”না নিচে মাটি কিন্তু আমার কাপড় চোপড় সব ভিজে গিয়েছে।”
সাদাফ হাফ ছেড়ে বাঁচল ।বেশি গভীরতা নেই সিঁড়ি নেই কিন্তু মাটি দিয়ে উঁচু করা ছিল সেখানেই নুর পিছলে পড়েছে ।তারপর আশে পাশে তাকালো তাকিয়ে দেখল ওয়াশরুম সব বাইরে তাও একটু খোলামেলা।

আর সবচাইতে বড় ব্যাপার এখানে কাপড়-চোপড় নিয়ে আসেনি এখন কি পড়বে নূর ?সম্পূর্ণ শরীর ভিজে গিয়েছে ।নুরের শরীরের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভাবলো সাদাফ।তারপর সাদাফ ওর গায়ের শার্টটা খুলে সাথে সাথে নূরের গায়ে পরিয়ে দিয়ে বলল ,”এটি এভাবে সুন্দর করে ধরে রাখবি শার্ট যেন শরীর থেকে না সরে।”
আসলে পানিতে ভিজার কারণে নূরের শরীরের কায়া গুলো মোটামুটি দৃশ্যমান তাই সাদাফ শার্ট দিয়ে ওকে ঢেকে দিল ।এদিকে সাদাফ খালি গায়ে নুর সাদাফের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ।নিজের শরীরে এভাবে নুর কে চেয়ে থাকতে দেখে সাদাফ বলল ,”এই মুহূর্তে এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন ?তোর জন্যই তো খুললাম।
তুই খারাপ দৃষ্টি দিয়ে আমার শরীরটাকে গিলে খাচ্ছিস চোখ সরা।”

নুর বলল ,”কখন আমি চোখ দিয়ে গিলে খেলাম ।আমি শুধু দেখলাম আপনার গায়ে কাপড়-চোপড় নেই ।তারপর কাঁপতে কাঁপতে বলল ,”কোথায় গিয়ে চেঞ্জ করবো আমার তো শীত লেগে যাচ্ছে।
আচ্ছা আমি তো কোন কাপড় নিয়ে আসিনি তাহলে পড়বো কি।”
সাদাফ কেয়ার টেকার এর সাথে কথা বলে এখানে যে ফিমেল কেয়ার টেকার আছে তার কাছ থেকে একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নতুন ড্রেস নিল ।বিনিময় এক হাজার টাকার একটি নোট দিল ড্রেস নিয়ে।
একটি ছোট্ট রুমে প্রবেশ করল নূরকে নিয়ে ।নুর পুরো রুমে এদিক-ওদিক তাকিয়ে বলল ,”এখানে তো ওয়াশরুম নেই কোথায় চেঞ্জ করব ?”

সাদাফ ও জানে এই রুমের ভিতরে কোন ওয়াশরুম নেই তাই বলল ,”এখানে চেঞ্জ কর আমি বাহিরে যাচ্ছি ।”
নূর বলল ,”নানা আপনি বাহিরে গেলে আমার ভয় লাগে । সিটকিনি নেই ।”
সাদাফ বলল ,”তাহলে আমার সামনে চেঞ্জ করবি ভয় পাবি না?”
নুর সাথে সাথে মাথা নিচু করে ফেলল ।তারপর বলল ,”না ভয় পাবো না তবে লজ্জা পাবো ।”
সাদাফ নুরের দিকে তাকালো ।তাকিয়ে বলল ,”ঠিক আছে আমি চোখ বন্ধ করছি তাড়াতাড়ি চেঞ্জ কর।”

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭৪+৭৫

বলেই সাথে সাথে সাদাফ চোখ বন্ধ করলো ।নুর সাদাফের দিকে তাকিয়ে দেখলো সত্যি সত্যি সাদাফ চোখ বন্ধ করে আছে ।তাই ধীরে ধীরে শার্ট টি খুলতে লাগলো ।ওমনি সাদাফ বলে উঠলো ,”দুই মিনিটের মধ্যে যদি চেঞ্জ করতে না পারিস দুই মিনিট পরে আমি চোখ খুলে ফেলব।
এরপর যা হবে এর জন্য আমাকে দোষ দিতে পারবি না।”

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭৮+৭৯

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here