সে জন সোনা চিনে না পর্ব ১৩

সে জন সোনা চিনে না পর্ব ১৩
সাইয়্যারা খান

ভোরের আলো তখনও ফুটে নি। বাইরে কড়া নাড়ার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। স্বপ্নে দুপুর দেখলো শাহ তাকে ধাক্কা দিচ্ছে। দুপুর হেলে পড়ছে। হঠাৎ শব্দটা বাড়লো, দুপুর ফট করে চোখ খুললো। তার রুমের দরজায় ধাক্কা দিচ্ছে কেউ। দুপুর ভাবলো হয়তো মা এসেছে। দাদীর কিছু হলো কি না, নাকি ফুপি চলে এলো। এসব ভাবনার মাঝেই শব্দটা বন্ধ হয়ে আসে। দুপুর উঠবে তখনই কেউ বাইরে থেকে লকটা খুলে অন্ধকারে ভেতরে ঢুকে। দরজা বন্ধ করে ভেতর থেকে। দুপুর থম ধরে বসে থাকে। অন্ধকারে যদিও দেখা যাচ্ছে না কে এসেছে কিন্তু দুপুর তো চিনে, জানে এটা কে। তামজিদের উপস্থিতি বুঝতেই ওর মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে। দুপুর মূর্তি বনে যায়। মানব মূর্তিটা তখন এগিয়ে আসে বিছানার কাছে। বসে একদম মুখোমুখি। ফোনের ফ্লাশ জ্বালিয়ে তাকায় দুপুরের দিকে। আলো চোখে পড়তেই চোখ কুঁচকায় দুপুর। তামজিদ মনোযোগ দিয়ে দেখে ওকে। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করে পুতুলের মতো দেখতে মেয়েটাকে। ছোট্ট একটা মুখ অথচ মায়া ঢালা তাতে। ঘুম যেন এখনও তাকে ছেড়ে যায় নি। তামজিদ আস্তে করে হাত বাড়ায়। ওর কপাল ছুঁয়ে কুঁচকানো ভাবটা টানটান করে নিজ হাতে। নিজের সেই পরিচিত কণ্ঠ খাদে নামিয়ে বলে,

— ঘুম ভাঙিয়ে দিলাম পাখি?
দুপুর চুপ করে বসা। তামজিদ তো মালোশিয়া ছিলো। কখন ফিরলো, কেন ফিরলো দুপুর বুঝে না। তামজিদ এবার দুপুরে নরম গালটায় হাত রাখে। আদর মিশ্রিত গলায় বলে,
— বাসায় যাই নি এখনও দুপুর। তোমার কথা খুব মনে পরছিলো। সেদিন কথা বললে না তো। কতবার ফোন দিলাম। ভিডিও কলে চোখ তুলো না। আমার বুকে হাত দিয়ে দেখো তো একটাবার দুপুর কেমন উত্তপ্ত হয়ে আছে। তুমি যদি শীতলতা না ছড়াও তাহলে ম রে যাব না আমি বলো?
তামজিদ চায় নরম পুতুলটাকে বুকে জড়াতে। কপালে ছোট্ট উষ্ণ স্পর্শ দিতে। নিজের মাঝে সারাটা জীবন রেখে দিতে অথচ মেয়েটা রাজিই হয় না৷ এবার সেও ছাড়বে না। ত্রিশের কোঠায় বয়স ঠেকেছে। এখন বিয়েটা না করলেই নয় তারমধ্য ছোট ভাই বিয়ে সেড়ে ফেলেছে এখন পালা তামজিদে’র। দুপুরকে বুঝিয়ে, শুনিয়ে রাজি করাতে হবে। তার তো বুঝতে হবে তামজিদ তাকে কতটা ভালোবাসে। নিজের ইচ্ছেটাকে প্রাধান্য দিয়ে তামজিদ ওর কপালে চুমু খেতেই দুপুর বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। চোখ দুটো বড় বড় করে হাঁপাতে লাগলো। এই কপালে তার শাহ চুমু দেয়। শাহ এর হক তো দুপুর নষ্ট হতে দিবে না। না দিবে কাউকে নষ্ট করতে। দুই হাতে কপাল ডলে দুপুর। কাঁদতে কাঁদতে ডাকতে থাকে,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

— ফুপি….ফুপি?
সবসময় ফুপিকে ডাকা মেয়েটা ভুলেই গেলো ফুপি তো নেই। তামজিদ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আগে কি কপালে সে চুমু দেয় নি? দিয়েছে তো? তখন তো ভয়ে গুটিয়ে থাকতো তাহলে আজ কেন কাঁদলো? তামজিদ উঠে কাছে আসতে চায়। দুপুর সরে দাঁড়ায়। মেয়েটা এখন জোরে কাঁদছে। তামজিদ একটু পিছু হটলো। শান্ত করতে বললো,
— ইটস ফাইন দুপুর। আমি আগাচ্ছি না। তোমাকে দেখতে এলাম৷ ভেবেছিলাম সকালে বাসায় যাব। তুমি ঘুমাও এখন। কাম পাখি। বিছানায় এসো।
দুপুর এদিক ওদিক তাকালো। আরেকটু চেষ্টা করলো। ডাকলো বাবাকে কিন্তু লাভ তো হলো না৷ অত আস্তে ডাক দুই রুম পরে কি শোনা যায়? বাড়ির লকগুলো থেকে শুরু করে সব তালার চাবি তামজিদের কাছে আছে। যখন তখন ঢুকে যায়। শব্দহীনা সে সোজা হাজির হয়। তামজিদ দেখলো দুপুর দাঁড়িয়ে ঠাই। নিজেকে ঠান্ডা করে পুণরায় মুখ খুললো তবে এবার কিছুটা আদেশের স্বরে বললো,

— কাম ফাস্ট জান।
দুপুরে’র আত্মাটা গলায় আটকে এলো তখন। এগিয়ে এসে বিছানায় উঠে চুপ করে শুয়ে পরে ও। মাথায় হাত রাখে তামজিদ। আস্তে করে বলে,
— চোখ বন্ধ করো তো পাখি। ঘুমটা আমি ভাঙালাম তাহলে দায়িত্ব নিয়ে ঘুম পাড়িয়ে যাই।
দুপুর ঘুমালো মিনিট পাঁচে। তামজিদ তাকে দেখলো আরো দশ মিনিট। চোখের দেখায় মন ভরে না৷ এই সৌন্দর্য এই মোহ দেখে কাটানো যায় না৷ ছুঁয়ে দেখার শখ কাছে আসলে বাড়ে শতগুণ। তামজিদ যখন নিজেকে সামলাতে ব্যর্থ তখন উঠে বেড়িয়ে যায়। আরেকটু সময় থাকলে অঘটন ঘটিয়ে ফেলতো সে। তামজিদ রুম থেকে বের হতেই চোখ খুলে দুপুর। ফোনট হাতে তুলে কাঁপা কাঁপা হাতে ডায়াল করল শাহজেব’কে। ওপাশ থেকে রিসিভ হলো দ্বিতীয় বারে। দুপুর কেঁদে উঠে ডাকলো,

— শাহ!
— দুপুর কাঁদছো কেন সোনা?
— আমাকে নিয়ে চলুন৷ আমি থাকব না তো এখানে। আমি কিন্তু কিছু করে ফেলব শাহ। আমার মন খারাপ। ভালো লাগছে না কিছু।
— মনটা কি খুব খারাপ আমার দুপুরের?
— হু, খুব।
— তাহলে তো কাজ ফেলে আসতেই হয়।
— আমার সত্যি খারাপ লাগছে শাহ। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। আপনার ঘ্রাণ বুক ভরে না নিলে খারাপ লাগাটুকু কাটবে না৷

— আমার ঘ্রাণও চিনে ফেলেছো দেখছি?
— তো চিনব না?
— তা তো চিনবেই। আর কি চিনলে বলো তো?
— কি চিনব৷ পুরো শাহটাকেই তো চিনি।
— মানুষ চেনা বুঝি এত সহজ? হাতে গুনে কয় রাত ছিলে আমার বুকে দুপুর? তাতেই চিনে ফেললে?
— আমি চিনেছি তো আপনাকে শাহ।
শাহ কিছুক্ষণ চুপ রইলো। দুপুর তখন শান্ত কিছুটা। আস্তে ধীরে দুপুর বললো,
— আপনার ঘুম ভাঙিয়ে দিলাম।
— বউ তো এমনই হওয়া দরকার উচিত দুপুর। রোজ সকালে কর্কশ এলার্মের বদলে তোমার মোহনীয় গলায় শাহ ডাক শোনা তো আমার ভাগ্য।

— আমি খুব জ্বালাই আপনাকে শাহ।
— খুব না তো।
— একটু একটু?
— উউহু।
— তাহলে?
— আপনি আমাকে অনেক জ্বালান দুপুর। খুব করে জ্বালান৷ এই যে আমি কালো চাঁদ বলে আমার কয়লা হওয়া বুকটা দেখা যায় না নাহয় তো আপনি দেখতে পেতেন আপনার বিরহে আমি কতটা ঝলসে আছি।
— তাহলে কাছে নিন।
— নিব।
— কখন?
— এখন।

সায়রা’র ঘুমন্ত মুখটার মায়া টুকু খুব গভীর ভাবে দেখছে তাসরিফ। মুখটা বাড়িয়ে উষ্ণ এক আদর দেয় স্ত্রী’কে। নিজের মাথাটা রাখে তার বুকে। আবেশে চোখ বুজে আসে তার। দুই হাতে জড়িয়ে রাখে নিজেকে সায়রা’র সাথে। গলার দিকে চোখটা যেতেই বুকটা আঁতকে উঠে। দাগটা দেখলেই গা শিউড়ে উঠে তার। নিজের সবটুকু আদর সায়রা’কে দিয়ে টেনে নেয় বুকে। আস্তে করে বলে,
— আপনাকে যে আমি কতটা চাই য়রা তা যদি বুঝতেন তাহলে কখনো নিজেকে শেষ করার কথা ভাবতেন না৷ আমি এখনও ভুলতে পারছি না য়রা। কখনোই ভুলব না।
সায়রা কথা বলে না। আস্তে করে ওকে ছাড়িয়ে উঠতে চায়। তাসরিফ ওর হাত ধরে বলে,
— কোথায় যাচ্ছেন য়রা?
শান্ত একটা চাহনি দিতেই হাতটা ছাড়ে তাসরিফ। বাথরুমে গিয়ে মুখ ধুয়ে বেরিয়ে আসে সায়রা। দরজা জানালা সব খুলে বারান্দায় যেতেই তাসরিফ বিছানা থেকে বলে,

— চা খাবেন য়রা?
সায়রা কথা বলে না। তাসরিফে’র খুব মন খারাপ হলো। বিয়ের দুটো রাত পার হলো অথচ সায়রা’র মুখ থেকে তেমন কিছু ই বের হচ্ছে না। ভালো মন্দ কোন কথাই বলছে না৷ তাসরিফে’র খারাপ লাগা আরেকটু বাড়ে যখন সায়রা কোন প্রশ্নেরও উত্তর দেয় না। নিজেই উঠে বিছানা পরিপাটি করে গোছায় তাসরিফ।
সোফা থেকে টিশার্ট নিয়ে গায়ে দিয়ে বেরিয়ে যায়। রান্নাঘর তখন নীরব। চা কখনো তেমন করা হয় নি। খুব রাগ হলো নিজের উপর। বউকে চা অফার করার আগে ভাবা উচিত ছিলো। কফি অফার করা যেতো। দুধে ঢাললেই মামলা খতম কিন্তু চা জিনিসটা ঝামেলার। এই মূহুর্তে পৃথিবীর সবচাইতে জটিল প্রসেস চা ই মনে হচ্ছে তাসরিফে’র। তবুও চেষ্টা কিন্তু সে করলো কিন্তু চা পাতা পেলো না। অগত্যা ইজ্জত বাঁচাতে দুই কাপ কফিই করা হলো। সাথে নিলো বিস্কুট। বউটা খায় না ঠিক মতো। তাসরিফ চাইছে খুব খেয়াল রাখতে। য়রাটাকে যদি সারাটাক্ষন পালা যেতো তাহলে কাজ কাম ছেড়ে তাসরিফ তাই করতো।

পেলে নিলো। তার যে কত শখ, আহ্লাদ, ইচ্ছে য়রা’কে ঘিরে তা তাসরিফ কাউকে বলতে পারে না৷ য়রাটাকেও না। তার ইচ্ছে বউটার চুল আঁচড়ে দেয়া, খোঁপায় ফুল গুজার থেকেও অদম্য ইচ্ছে খোঁপা পেঁচিয়ে দেয়া। আঁচলটা নিজ হাতে গুছিয়ে দেয়া। মাঝেমধ্যে তার হাটুতে ভর দেয়া। এই য়রাটার মাঝে কি যে দেখলো তাসরিফ, দেখেই আটকে গেলো। তিনটা বছর লাগলো অসাধ্য সাধন করতে। উপায়টা যদিও ঠিক ছিলো না কিন্তু কেউ তো বলেছিলো, ভালোবাসায় সব জায়েজ। তাসরিফ নাহয় অজানা ব্যক্তির কথাই মানলো।
তামজিদকে বাসায় ঢুকতে দেখে তাসরিফ অবাক হয়ে ছুটে এলো। দুই হাতে ভাইকে ঝাপ্টে ধরে তামজিদ। তাসরিফ অবাক হয়ে বলে,

— এত তারাতাড়ি? সকাল এগারোটায় না ল্যান্ড করবে বললে ভাই? আমি তো তাই ভোরে উঠলাম তোমায় আনতে যাব।
— রাতেই ল্যান্ড করেছিলাম।
— কোথায় ছিলে?
— তোর ভাবীর কাছে।
তাসরিফ ভাইকে ছাড়লো। তার মুখে দারুণ উচ্ছাস। দুপুরের কথা শুনে বুকটা হালকা হলো। এ-র মানে যেখানেই গিয়েছিলো ফিরে এসেছে। তাসরিফ খুব ভয়ে ছিলো বিষয়টা নিয়ে। তামজিদ জিজ্ঞেস করে,
— সায়রা ভালো আছে এখন?
নত মস্তিষ্কে উত্তর করে,
— জ্বি ভাই।
— বউ হয় খুব প্রিসিয়াস বুঝলি। তাদের খুব যত্নে রাখা দরকার। এদিক ওদিক হলেই মুশকিল। তোর উচিত ছিলো খতিয়ে দেখা, এমন কি হলো যে সায়রা’র মতো শক্ত মেয়ে এহেন সিদ্ধান্ত নেয়?
— ভাই আসলে…..

— বাহানা না তাসরিফ৷ বউয়ের অসম্মান হবে এমন বাসায় তো বউ ই রাখা উচিত না৷ পুরুষ না তুই? সামঞ্জস্য করা শিখ। তার আগে রুমে যা। সায়রা নিশ্চিত অপেক্ষা করছে। পরে কথা হবে। আ’ম টায়ার্ড।
তামজিদ যেতেই তাসরিফও রুমে ঢুকে। বারান্দায় যেতেই দেখে সায়রা এক মনে একটা কুকুর দেখছে যেটা গেটের দিকে শুয়ে আছে। তাসরিফ গলা খেঁকালো৷ দৃষ্টি সরালো না সায়রা। তাসরিফ রাউন্ড টেবিলে ট্রে রেখে সায়রা’র হাতটা ধরে বসালো। এক কাপ কফি দিয়ে বললো,
— চা করতে পারলাম না য়রা। চা-পাতা পাই না বুঝলে? কি লজ্জার বিষয় চা অফার করে কফি আনলাম৷
— তোমার লজ্জাও আছে?
— নেই বলছো?
সায়রা হেলা করলো। তাসরিফ বসলো হাঁটু ভেঙে সায়রার পায়ের কাছে। সায়রার কোলে রাখলো বিস্কুটের প্লেট। অপূর্ব, অপরূপ এক দৃশ্য। ক’জন স্বামী এমন হয় সায়রা জানে না অথচ তার স্বামী নামক তিন বছরের ছোট তাসরিফ তার হাঁটুতে হেলান দিয়ে কফি খাচ্ছে। সায়রা উদাস ভঙ্গিতে বাইরে তাকায়। গলা দিয়ে গরম কফিটা যাওয়াতে ভালো লাগছে তার। প্রচুর ব্যথা ছিলো।

তামজিদ শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে রইলো ঘন্টা খানিক। তার তীক্ষ্ণ চোখ জোরা ভুল দেখে নি। দুপুরের মাঝে বিরাট পরিবর্তন এসেছে। তার চোখের ভাষা, বাচনভঙ্গি, অঙ্গ প্রত্যাঙ্গ সবটায় আমুল পরিবর্তন এসেছে। এসব দেখা লাগে না তামজিদে’র। এক ঝলকে বুঝে যায় সে কিন্তু ঘরে বসে থেকে এই পরিবর্তন কি করে আসবে? তামজিদ আজ বিকেলে আরেকবার যাবে। দুপুরের সাথে বিয়ের বিষয়টা নিয়ে সরাসরি আলাপ দরকার। মিরাজ সাহেব’কে ততটা চাপ দেয়া যাবে না৷ অসুস্থ মানুষ, কিছু হয়ে গেলে সমস্যা।
তামজিদ কোমড়ে টাওয়াল পেঁচিয়ে বেরিয়ে আসে। খাটের উপর বিশাল বড় দুপুরের ছবি টানানো। তামজিদ লজ্জা পেলো না বরং বললো,

সে জন সোনা চিনে না পর্ব ১২

— এভাবে দেখো না জান। খু ন হয়ে যাব আমি। তোমার এই সৌন্দর্য আমাকে মে রে দিবে একদিন। ম রার আগে হলেও তোমাকে আমার চাই দুপুর। একদিনের জন্য হলেও আমার বউ তোমাকে হতেই হবে। এত ভালোবাসা এভাবে পায়ে ঠেলো না। পৃথিবীর ভর্তি ঠক প্রতারক। তোমাকে খুব আগলে নিজের কাছে রাখতে চাই আমি। আমার এত ভালোবাসা অবহেলা করো না জান। তোমার চোখের পানি দেখতে পারি না বলে আজও চলে এলাম৷ এভাবে আর কত? কত দুপুর আমি একা রইব বলো তো?

সে জন সোনা চিনে না পর্ব ১৪