হামিংবার্ড পর্ব ২৭

হামিংবার্ড পর্ব ২৭
তাসমিয়া তাসনিন প্রিয়া

“ কী রে সাবিহা? তুই তো বললি, ভাবি আমাকে ডেকেছিল। কিন্তু ভাবির তো শরীর খারাপ, তাছাড়া আমার সাথে কথা বলতেও আগ্রহী ছিলো না। “
সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে নামতে কথাগুলো বলল তালহা। সাবিহা ড্রইংরুমের সোফায় পা তুলে বসে টিভি দেখছিল। ডাইনিংরুমে দাঁড়িয়ে থাকা তামান্না সব শুনে যা বোঝার বুঝে গেল। ইচ্ছে করেই সাবিহা আরিশের সামনে অরা আর তালহাকে উপস্থাপন করেছে।

“ আমি যে শুনলাম, ভাবি ডাকল তখন?”
“ তোর মাথা শুনেছিস পেত্নী। “
তালহা সাবিহার মাথায় একটা গাট্টা মেরে, হাত থেকে রিমোট কেড়ে নিলো। সাবিহা বিশেষ কিছু বলল না। অন্য সময় হলে ভাইয়ের সাথে রিমোট নিয়ে ঝামেলা বাঁধাত নিশ্চিত । কিন্তু এখন সাবিহার মনটা ভীষণ ভালো ।
“ সব সময় আমার সাথে এমন করো। মা’কে বলব, তুমি আমাকে মেরেছ। “
“ যা গিয়ে বল। পেত্নী কোথাকার। “
সাবিহা শান্ত ভঙ্গিতে হেঁটে নিজের রুমের দিকে এগোল। নিজের কাজকর্ম সেরে তামান্না ডাইনিংরুম থেকে ড্রইংরুমে এসে তালহার কাছে দাঁড়াল।
“ কী খবর, তামান্না ভাটিয়া?”
“ আপনার বোন আসলেই একটা পেত্নী। “
“ ওমা! কেনো? “
“ কিছু না। “
“ ওকে শাঁকচুন্নি। “
নিজের ব্যাপারে এমন কথা শুনে চোখ বড়ো বড়ো করে ফেলল তামান্না।
“ আমি শাঁকচুন্নি? ভালো, ভালো। “

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

তামান্না এ কথা বলে রাগে গজগজ করতে করতে রান্নাঘরের দিকে এগোল। তালহা জিহ্বায় কামড় বসাল। কী ভুলটাই না করলো সে!
“ এই তামু… তামান্না ভাটিয়া? ওই তামু…. শোনো না!”
“ তোমাকে বলেছিলাম, তালহার সাথে অপ্রয়োজনে কথা বলবে না। আমার সহ্য হয় না। তবুও কেনো বললে, হামিংবার্ড?”
অরার একটি হাত শক্ত করে পিছন থেকে ধরে রেখেছে আরিশ। সে ঠিক অরার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে, রাগে যেন পাগল হয়ে গেছে। অরা তখন থেকেই বোঝানোর চেষ্টা করছে—তালহা নিজে থেকেই রুমে এসেছিল। কিন্তু আরিশ তার কথায় কান দিচ্ছে না; পাগলের মতো একা একা বকেই যাচ্ছে।
“ আরিশ! কতবার বলব? আমি উনাকে রুমে আসতে বলিনি৷ হয়তল পিকনিকের বিষয় কথা বলতে এসেছিল। “
“ বেডরুমে বসে কেনো কথা বলতে হবে, বলো? “
আরিশের কুরুচিপূর্ণ কথায় অরার চোখ-মুখ বিরূপ হয়ে উঠল। রাগে বলল,
“ আপনি একটা অসুস্থ মনের মানুষ। আপনার ভাই হয় সে। আমিও ভাই ডাকি। আপনি সেখানে এসব বলছেন কীভাবে? “

আরিশ অরাকে ধাক্কা দিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে। অরার গাল ঠেকেছে ঠান্ডা দেয়ালের গায়ে। আরিশ তার দু’হাত পিছন দিকে মুচড়ে ধরে রেখেছে, শক্ত করে। অরা শত চেষ্টা করেও নিজের হাত ছাড়াতে পারছে না। এরই মধ্যে আরিশ অরার ঘাড়ে হিংস্রভাবে কামড়ে ধরল। অরার ব্যথায় বেরিয়ে আসা চিৎকারে তার কামড় ধীরে ধীরে নরম হয়ে চুমুতে রূপ নিল। কামড়ের জায়গা থেকে ক্ষীণভাবে রক্ত ঝরছে। আরিশ ধীরভাবে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিল সেই ক্ষতস্থানে।
“ আমি খারাপ, অসুস্থ মস্তিষ্ক আমার। সেখানে সুস্থ মনের বসবাস কীভাবে হবে, বলো? “
“ আপনি যদি কখনো হারিয়ে ফেলেন, বুঝবেন তার জন্য আপনি নিজেই দায়ী। আপনার আচরণের কারণেই আমি……. “
অরার কথা শেষ হওয়ার আগেই আরিশ তাকে এক ঝটকায় নিজের দিকে ফিরিয়ে, শক্ত করে থুতনিতে হাত রাখে।

“ এই পাখি! শশশশ….. চুপ! আমি তোমাকে কখনো হারাবো না। হারাতে দেবোনা। “
তাচ্ছিল্যের হাসি হাসল অরা। আরিশ হুট করে কোলে তুলে নিলো তাকে। অরা বুঝতে পারছে না কিছু। কী করতে চলেছে আরিশ?
“ কোথায় যাচ্ছেন? “
“ ওয়াশরুমে। “
“ কেনো? “
জবাবে শুধু এক রহস্যময় হাসি হাসল আরিশ; কোনো কথা বলল না। ধীরপায়ে অরাকে নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে এগোল। খান বাড়ির ওয়াশরুমগুলো এতটাই বড়ো যে, মনে হয় সেখানে হাডুডু খেলাও সম্ভব।
“ কী করবেন আপনি? বাথটবে চোবাবেন? “

অরার সরাসরি প্রশ্নের কোনো জবাব দিল না আরিশ। চুপচাপ তাকে কোল থেকে নামিয়ে ওয়াশরুমের দরজা ভেতর থেকে আটকে দিল। তারপর অরার হাত ধরে নিয়ে গিয়ে শাওয়ারের নিচে দাঁড় করাল। অরার চোখে ভয়, বিরক্তি, আর সেই সাথে কৌতূহলও ভেসে উঠল। আরিশ ধীরে হাত বাড়িয়ে শাওয়ার ছেড়ে দিল। ওপরে থেকে টলটলে জল পড়তে শুরু করল। আরিশ আর অরা দু’জনেই সেই পানির নিচে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে।
আজকের আরিশ অরার কাছে অচেনা লাগছে। অন্যদিন হলে এতক্ষণে সে হয়তো জোর করে বিছানায় নিয়ে যেত। কিন্তু আজ… ওয়াশরুমে?
শাওয়ারের জলে অরার শরীর ভিজে একাকার। আরিশেরও একই অবস্থা। দু’জনেই একদৃষ্টে পরস্পরের দিকে তাকিয়ে আছে, শব্দহীন।
অরার কপাল বেয়ে জল গড়িয়ে নাকের ডগায় জমছে, সেখান থেকে ঠোঁট ছুঁয়ে থুতনি বেয়ে নিচে পড়ছে। এই দৃশ্য আরিশকে ক্রমশ বেপরোয়া করে তুলছে। সে অরার কোমরে শক্ত করে হাত রেখে তাকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে ফেলল।

কপালে কপাল ঠেকিয়ে এক মুহূর্তের নিঃশ্বাসহীনতায় আটকে গেল দু’জন।
“ অরা!”
চমকাল অরা। আজকে প্রথম আরিশ তার নাম নিয়ে ডাকল!
“ বলুন। “
“ আমি খুব কষ্ট দেই তোমাকে? “
“ হ্যাঁ। “
“ আমি যদি ভালো হয়ে যাই। মানে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করি, তুমি আমাকে ভালোবাসবে? আমাকে কি ভালোবাসা যায়? আমি.. আমি কি ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য? “

আরিশের কণ্ঠস্বর আজ অন্য রকম শোনাচ্ছে। কেমন গলা ধরে এসেছে তার। মনে হচ্ছে শাওয়ারের জলের সাথে আরিশের চোখের জলও মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। অরার বুকটা কেমন হুহু করে উঠলো আরিশের কথায়। লোকটা ভালোবাসার কাঙ্গাল। মায়া হলো তার। আরিশের পিঠে হাত রাখল অরা। শান্ত গলায় বলল,
“ আপনি তো খারাপ নন। কিছু কিছু সময় অস্বাভাবিক আচরণ করেন শুধু। ভালো কিংবা খারাপের ওপর নির্ভর করে কেউ কাউকে ভালোবাসে না। দেখেন না? নেশাখোর, ব্যাড বয় টাইপের ছেলেদেরকেও মেয়েরা ভালোবেসে ফেলে? এটা একটা অনুভূতি। কখন কীভাবে হয়ে যাবে – বলা যায় না। “
অরা একটু থামল। আরিশ অরাকে নিজের শরীরের সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে আছে। যেনো একটু নড়লেই হাতছাড়া হয়ে যাবে সে।

“ ভালোবাসার জন্য কোনো যোগ্যতার দরকার হয় না, আরিশ। এসব ভাববেন না। আপনার চিকিৎসা দরকার। প্লিজ একবার ডাক্তার দেখাবেন? আমি আপনার সাথে সুন্দর একটা জীবন কাটাতে চাই ভাইয়া। “
অরার কথা শেষ হতেই তার গালে একটি থাপ্পড় পড়ল। আকস্মিক এই ঘটনায় অরা হতবাক হয়ে গেল, আরিশের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। থাপ্পড়টা যদিও খুব জোরালো ছিল না, তবুও অরা ভয়ে কিছুটা চমকে উঠল।
“ সব সময় তো আরিশই বলো, আজ আবার ভাইয়া ডাকতে গেলে কেন?”
অরা থতমত খেয়ে তাকিয়ে রইলো কেবল। আরিশ টুক করে তার ঠোঁটে চুমু খেলো একটা। মুচকি হেসে বলল,
“ ওভাবে তাকিয়ে থাকতে হবে না। তেমন জোর মারিনি। তবে ভবিষ্যতে আবারও ভাইয়া বললে, গাল আর আস্ত থাকবে না। “

খিলখিল করে হেসে উঠল অরা। আরিশ মুগ্ধ নয়নে অরার প্রাণবন্ত হাসি দেখছে। আজ পর্যন্ত অরাকে কখনো এভাবে হাসতে দেখেনি আরিশ। মেয়েটা হাসলে কী দারুণ লাগে!
“ আপনি আসলেই একটা আধপাগল, সাইকো টাইপের মানুষ। কখন কী হয় আপনার, বোঝা মুশকিল। “
ভ্রু কুঁচকে ফেলল আরিশ। সে সাইকো? মেহরাবও আজ সেটাই বলল। তাহলে কি কথাটা সত্যি? আজকে মেহরাবের সাথে কথা না বললে নিজের মনের কথা বুঝতে পারতোনা আরিশ। অরার প্রতি টুকরো, টুকরো অনুভূতিগুলোর নাম যে ভালোবাসা সেটাও বুঝতে পারতো না। আরিশের ভালোবাসা পাওয়ার পথটা ভুল– মেহরাব সেটা খুব ভালো করে বুঝিয়েছে তাকে। জোর করে, শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে কখনো ভালোবাসা পাওয়া যায় না। বরং এসব করলে সম্পর্কে আরো দূরত্ব বাড়ে, এক সময় ভেঙে যায়। আরিশের পাগলামিগুলো মেহরাব ভালো করেই জানে। তাই আজকে মেহরাব একজন প্রকৃত বন্ধুর মতোই আরিশকে সঠিক পথে চলার পরামর্শ দিয়েছিল।

“ আমি আধপাগল, মানলাম। কিন্তু সাইকো নই। “
অরা কিছু বলতে যাওয়ার আগেই পরপর দু’টো হাঁচি দিলো। এতক্ষণ জলের নিচে দাঁড়িয়ে থাকাতে হয়তো ঠান্ডা লেগে গেছে । আরিশ ব্যাপারটা বুঝতে পেরে শাওয়ার বন্ধ করে দিলো। অরা নিজেকে আরিশের থেকে ছাড়িয়ে পেছন দিকে ফিরে বলল,
“ তাহলে আমার ঘাড়ে র ক্ত কেনো? আমার সাড়া শরীরে আপনার সাইকোগিড়ির প্রমাণ আছে। “
“ তোমার শরীরজুড়ে কেবল আমার ভালোবাসার চিহ্ন থাকবে, হামিংবার্ড। আমি যতই স্বাভাবিক হই না কেনো, আমার ভালোবাসার ধরণ বদলাবে না। আমার ছোঁয়া এমনই– যেমন উষ্ণ তেমনই বিধ্বংসী। “
দরজা খুলে, অরাকে কোলে তুলে নিলো আরিশ। ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে রুমের দিকে এগোল।

“ হুহ্, হুহ্। ডাক্তারের কাছে যাবেন তো? “
“ আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। তবুও যদি তুমি চাও, আমি যাবো। তবে ডাক্তার যেন বেশি ঔষধ না দেন। “
মুচকি হাসল অরা। লোকটা তো এখনও বাচ্চাদের মতোই কথা বলছে। আরিশ কোল থেকে নামিয়ে দিলো অরাকে।
“ ওকে। জামাকাপড় চেঞ্জ করে আসছি। আপনিও করে নিন। ঠান্ডা লাগবে। “
“ এখানেই চেঞ্জ করো। “
“ কী?”
“ বাংলায় বললাম। “
“ বেডরুমে বসে জামাকাপড় চেঞ্জ করলে, অতবড় ওয়াশরুমটা আছে কী করতে? “
মুচকি হাসল আরিশ। অরার গাল টিপে দিলো কয়েকবার।
“ তা-ও কথা। “
“ যাচ্ছি, আমি। “

মুচকি হেসে ওয়াশরুমের দিকে এগোল অরা। আজকে ভীষণ খুশি লাগছে তার। আরিশের এমন পরিবর্তন কখনো আশা করেনি সে৷ সবকিছু যেন জাদুর মতো লাগছে ! তবে আজকে তালহা ভাই রুমে এসে ভালোই করেছে। মনে মনে তালহাকে ধন্যবাদ দিলো অরা।
“ কী ব্যাপার? ভাবি, ভাইয়া তো খেতে এলোনা! “
রাতের খাবার খাচ্ছে সকলে। ঘড়িতে সময় রাত সাড়ে দশটা। তামান্না সাবিহার দিকে তাকিয়ে ফুঁসছে কেবল।
‘ আজকে নিশ্চিত ভাবির সাথে খারাপ আচরণ করেছে আরিশ ভাইয়া৷ আর সবকিছুর জন্য সাবিহা ডাইনী দ্বায়ী। ’
মনে মনে এরকম আরো অনেক কথাই ভাবছে তামান্না।

“ নতুন বিয়ে হয়েছে ওদের। নিজেদের সময় মতো খেয়ে নিবে তালহা। তুইও বিয়েটা করে নে এবার। “
তাসলিমা বললেন। সাবিহা মুচকি মুচকি হাসছে। কিছুক্ষণ আগেই মায়ের কাছে গিয়ে সবটা খুলে বলেছে সে। সেজন্য মা-মেয়ে দু’জন বেশ খুশি। মায়ের কথায় চুপ করে গেল তালহা। আড়চোখে কেবল তামান্নার দিকে তাকাল একবার।
“ কার বিয়ে নিয়ে কথা হচ্ছে? তালহার না-কি? “
আরিশের কণ্ঠস্বর শুনে সবাই সিঁড়ির দিকে দৃষ্টিপাত করলো। সাবিনা, তাসলিমা যেনো চারশো বিশ ভোল্টের একটা শক খেলো। অরা ও আরিশ একসাথে আসছে। দু’জনকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে, সদ্য গোসল সেরে এসেছে। অরার চুল এখনো ভেজা! রাগে শরীর হিড়হিড় করে উঠল সাবিহার৷
“ আরে মায়ের কথা বাদ দাও। বিয়ে-শাদি আরো পরে করবো ভাইয়া। আগে বিজনেসটা বুঝি, একটা অবস্থান তৈরি করি, তারপর। “
অরাকে হাসিখুশি দেখে তামান্না স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। আরিশ ও অরার বসার জন্য চেয়ার টেনে দিলো সে। দু’জনে পাশাপাশি বসলো৷ তামান্না খাবার সাজিয়ে দিচ্ছে।

“ গুড। এটাই ভালো হবে। “
তালহা মুচকি হেসে খাবারের দিকে মনোযোগ দিলো৷ অরা খেতে খেতে তালহাকে উদ্দেশ্য করে শুধালো,
“ ভাইয়া একটু আগে যে বললেন, আমি আপনাকে ডেকেছি– কে বলেছিল সেটা? “
আরিশ আড়চোখে অরার দিকে তাকাল একবার। অরা আরিশের হাতে হাত রাখল। ইশারায় বোঝাতে চাইল, দরকারি কথা। আরিশ চুপ করে রইল।
“ সাবিহাই তো বলল তখন। “
আরিশ ও অরা দু’জনেই সাবিহার দিকে তাকাল। মেয়েটা ভাবতেও পারেনি, অরা এভাবে তার পর্দা ফাঁস করে ফেলবে। বোকার মতো হেসে বলল সাবিহা,

হামিংবার্ড পর্ব ২৬

“ আসলে আমি ভুল শুনেছিলাম। “
“ ব্যাপার না আপু। আপনাকে ধন্যবাদ। “
মুচকি হেসে বলল অরা। আরিশও মৃদু হাসল। সাবিহা কিছুই বুঝতে পারছে না৷ কী হওয়ার কথা ছিলো, আর কী হলো?

হামিংবার্ড পর্ব ২৮