হ্যালো 2441139 পর্ব ২৭

হ্যালো 2441139 পর্ব ২৭
রাজিয়া রহমান

সাত সকালটা ঝুনির শুরু হয় সাজগোজ দিয়ে। দুই ঠোঁট ভর্তি করে ঝুনি লিপস্টিক দিলো।একেবারে হট পিংক কালার লিপস্টিক।
চোখ বন্ধ করে ঝুনি লিপস্টিক এর ঘ্রাণ শুঁকে।লিপস্টিক থেকে কেমন বাটারের স্মেল আসছে।ঝুনির মনটা আনন্দিত হয়ে উঠে। আষাঢ় মামার মনটা বড়।একেবারে বঙ্গোপসাগরের মতো বিশাল। এতো দামী লিপস্টিক সবাই আনতে পারে না।
মিরা আসলো চায়ের কথা বলতে। ঝুনিকে লিপস্টিক দিতে দেখে বললো, “নতুন লিপস্টিক কিনছেন নাকি খালা?”
ঝুনি ঠোঁট বাঁকিয়ে বললো, “ক্যান!কোনো দরকার? ”
মিরা হাত বাড়িয়ে লিপস্টিকটা নেয়।লিপস্টিকের নাম দেখে মিরা শক খায় যেনো।চমকে উঠে বললো, “এই লিপস্টিক আপনি কোথায় পেলেন?”

ঝুনি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় মিরার দিকে।মিরার প্রশ্নের মানে বুঝতে পারছে না ঝুনি।
“যেখানেই পাই,তোর কি?”
মিরা স্তম্ভিত হয়ে বললো, “এইটা ম্যাকের লিপস্টিক খালা।এটার দাম ২০০০ টাকার উপরে।এতো দামী লিপস্টিক তো আপনি কিনেন না।এমনকি আমরা নিজেরাও তো কিনি না।”
দামের কথা শুনে ঝুনি ভিরমি খায়।এতো দামী লিপস্টিক!
মিরা থমথমে মুখে চলে যায়। খবরটা গিয়ে মায়ের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।এই বাড়িতে যেখানে যা ঘটে সবকিছু তিন বোন গুরুত্ব সহকারে মা’য়ের কানে পৌঁছে দেয়।
ঝুনি শুকনো মুখে অপেক্ষা করতে লাগলো আষাঢ়ের জন্য। এতো দামী লিপস্টিক আনার কি দরকার ছিলো!
পিয়াসা,পিংকি,মিনি যখন কোচিং-এর উদ্দেশ্যে বের হলো আষাঢ়কে দেখলো পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকানের সামনে বসা সিগারেট হাতে নিয়ে। তার দুইপাশে উৎসুক জনতা অধীর আগ্রহ নিয়ে তার কথা শুনছে।
মিনি পিংকিকে বললো, “ভাইয়া কি এখানে ভাষণ দিচ্ছে নাকি রে?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

পিয়াসা বিড়বিড় করে বললো, “গরীবের ৭ই মার্চের ভাষণ দিচ্ছে উনি।”
এলোমেলো এক মাথা চুল,গায়ে একটা ধূসর রঙের পাঞ্জাবি পরা এই মানুষটাকে দেখলে কি বুঝতে পারবে এ কতটা ঘাড়ত্যাড়া!
পিয়াসা গতরাতের কথা ভাবে।অদ্ভুত একটা লোক!
কোচিং শুরু হওয়ার বিশ মিনিট আগে পিয়াসারা গিয়ে উপস্থিত হলো।পিয়াসা বসে বসে আড়মোড়া ভাঙছে।সেই মুহূর্তে পিয়াসার চোখ আটকে গেলো দরজা দিয়ে বাহিরে অফিস রুমের দরজায়। ধূসর রঙের পাঞ্জাবি পরা যেনো একটা তালগাছ দাঁড়িয়ে আছে অফিস রুমের বাহিরে।পিয়াসা চোখ কচলায়। এই লোকটাকে সে এখন কি স্বপ্ন ও দেখা শুরু করেছে!

তা না হলে এই মুহূর্তে এখানে এই লোকটা কেনো আসবে?
চোখ কচলাতে কচলাতে দেখতে পায় সেই বন্য লোকটা হেঁটে হেঁটে এই রুমের দিকে আসছে।
মুহূর্তেই ক্লাসরুমের সবাই চিৎকারে ফেটে পড়লো যেনো আষাঢ় ভাইয়া বলে চিৎকার করে।
আষাঢ়ের মাথায় একটা কালো টুপি। পিয়াসা আবছা মনে পড়ে গতরাতে আষাঢ় যখন বাসায় ফেরে তখনও বোধহয় এই টুপিটা মাথায় ছিলো।
দেখে মনে হচ্ছে সদ্যই বুঝি নফল নামাজ পড়ে এসেছে। কেমন শীতল, নরম,কোমলা চাহনি।
আষাঢ় কিছু বলার আগে সবাই চিৎকার করে বলে উঠলো,”হ্যালো এভরিওয়ান,আওয়ার ফেভারেট আষাঢ় ইজ হেয়ার।”
আষাঢ় মুচকি হেসে মাথার টুপিটা খোলে।মুহূর্তেই পিয়াসার মনে হয় এইতো,এবার ঠিক আছে। সেই পুরনো বন্য লুকে।কিন্তু আষাঢ় টুপি খুলে রাখলো না।আবারও টুপি মাথায় পরে মুচকি হেসে বললো, “হ্যালো এভরিওয়ান,ইউর ফেভারেট আষাঢ় ইজ হেয়ার।কেমন আছো সবাই? আমি আষাঢ়, তোমরা আমাকে আষাঢ় ভাইয়া বলে ডাকতে পারো।তোমাদের ইংরেজি ক্লাসটা আমি নিবো।”

কয়েকজন উঠে দাঁড়িয়ে বললো, “ভাইয়া,আমি আপনার অনেক বড় ফ্যান।আপনার সব ভিডিও আমরা দেখি।এতো দারুণভাবে কেউ ইংরেজি শেখাতে পারে না আপনার মতো।”
পিয়াসা কিছুই বুঝতে পারছে না। এই লোকটাকে কেমন বহুরূপী লাগছে এই মুহূর্তে তার কাছে।
পিয়াসা ফিসফিস করে পিংকিকে বললো, “ওনাকে সবাই কিভাবে চেনে?”
পিংকি ফিসফিস করে বললো, “তুই জানিস না?ভাইয়া তো ভীষণ ফেমাস মানুষ। তার ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার প্রায় ২ মিলিয়ন। ফেসবুকে ৪ মিলিয়ন ফলোয়ার ওনার।উনি অনলাইনে ইংরেজি পড়ায়।ভাইয়ার সব ভিডিওর প্রথম কথা এটাই থাকে।এজন্য উনি বলার আগে সবাই বলা শুরু করেছে শুনিস নি?”
পিয়াসা চুপসে যায়।এয়ই লোকটা এখন থেকে এখানে আসবে না-কি!
কেমন বিরক্তিকর লাগছে পিয়াসার কাছে।
আষাঢ় একবার পিয়াসার দিকে তাকালো।পুরোটা সময় পিয়াসা মুখ গম্ভীর করে বসে ছিলো।
পিয়াসার কথা ভেবেই আষাঢ় প্রথমে রাজি হয় নি ক্লাস নিতে এবছর। প্রতি বারই আষাঢ় ক্লাস নেয়।কিন্তু সবাই এমনভাবে ধরলো যে শেষ পর্যন্ত আর না করতে পারে নি। গতরাতে নিয়ে যাওয়া ফুলগুলো এখান থেকে দিয়েছে আষাঢ়কে।

পিয়াসাকে দেখে মনে হচ্ছে তার মুখে কেউ বুঝি জোর করে করলার রস ঢুকিয়ে দিয়েছে।
সন্ধ্যা বেলায় ঝুনি এলো পিয়াসার জন্য চা নিয়ে। এসে দেখে টেবিলের উপর একটা আর্ট প্যাড পড়ে আছে। পিয়াসা জানালার পাশে একটা চেয়ারে বই নিয়ে বসে আছে।
ঝুনি খালা আর্টপ্যাডটা হাতে নিয়ে বললো, “এগুলো কে আঁকছে খালাম্মা?আপনে?”
পিয়াসা লাজুক হেসে বললো, “হ্যাঁ।”
ঝুনি অবাক হয়। থ্রিডি আর্টের সাথে ঝুনির পরিচয় নেই।ভালো করে তাকিয়ে বললো, “খালাম্মা,এগুলো তো বাস্তবের মতো লাগে।কেমনে কি করলেন বলেন তো!”
পিয়াসা হেসে বললো, “আবার যখন আঁকবো আপনি পাশে থেকে দেখবেন।তাহলে বুঝবেন।”
ঝুনি খালা খাটে পা তুলে বসে বললো, “দুনিয়ায় কতো অদ্ভুত জিনিস আছে!আগে তো আমি জানতামও না এরকম ও ছবি আঁকে মানুষ। “

পিয়াসা চায়ের কাপ হাতে নিয়ে কাপ থেকে কিছুটা চা পিরিচে ঢালে।তারপর কাপটা ঝুনির দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো, “নেন খালা,আপনি ও চা খান।চা খেতে হয় দুজন মিলা।একা চা খেয়ে আনন্দ নেই।আমার বাবাকে দেখতাম সবসময় চেম্বার থেকে ফিরে রাতে ঘুমানোর আগে নিজের হাতে চা বানাতো।ঘন দুধের সে চায়ে থাকতো এলাচ, আদা আর শুকনো গোলাপের পাপড়ি।মিষ্টি ঘ্রাণে চারদিক কেমন ভরে যেতো। বাবা তিন কাপ চা বানাতেন।তারপর আমার রুমে এসে বাবা মা দুজনে বসতেন।আমাকে মাঝখানে নিয়ে দুজন আমার সাথে গল্প করতেন।বাবা চুলে বিলি কেটে দিতো।আমি ঘুমানোর পর বাবা রুমে যেতেন।

কখনো আমার বাবাকে আমি বাসায় একা চা খেতে দেখি নি।আমি ও একা খেতাম না।আপনাদের বাড়ি আসার পর থেকে এই ব্যাপারটায় আমার কষ্ট হয়।কেউ পাশে না থাকলে মনে হয় চায়ের তৃপ্তি পাচ্ছি না।”
ঝুনির দুই চোখ ভিজে উঠে। এই বাড়িতে রজনী আর আষাঢ়ের পর এই প্রথম কেউ একজন ঝুনিকে এতো আপন ভেবে কথা বলছে।ঝুনি চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে পিয়াসার সাথে চা খেলো।
ঝুনি খালা চলে যাওয়ার পর পিয়াসা বই রেখে উঠে বসে। বাবা মা’য়ের কথা ভীষণ মনে পড়ে পিয়াসার।এক একটা দিন যেনো এক একটা যুগের মতো দীর্ঘ।
বিকেলে বৈশাখী এলো বাবার বাড়ি। বৈশাখীকে দেখে পিয়াসার পারভীনের কথা মনে পড়ে যায়। বৈশাখীর বিয়েতেই তো পিয়াসা দেখেছিলো সে মানুষটাকে।
বৈশাখী আসার পর বাড়িতে কেমন যেনো হুড়োহুড়ি পড়ে গেলো। রজনী রান্নাঘরে ছুটলো।বৈশাখী এসেছে দুই দিনের জন্য। গতকাল থাকবে,পরশু সকালে চলে যাবে।এটুকু সময়ের জন্য মেয়েটা এসেছে, রজনী কি রান্নাবান্না করবে নাকি মেয়ের সাথে গল্প করবে ভেবে পাচ্ছে না।
ঝুনি বললো, “ভাবী,কি করা লাগবো আমারে কন,আমি করতেছি।আপনে যান খালাম্মার লগে গিয়ে কথা কন।”
রজনী হেসে বলে, “তুই পারবি না এসব।”

ঝুনি রান্নাঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকে। তার কেমন যেনো আফসোস হয় এই মানুষটার জন্য। বাহিরে সোফায় বসে মেয়েরা সবাই গল্প করছে,সেখানে শিরিন আর নার্গিস ও আছে কিন্তু কেউ এদিকে উঁকি দিয়ে দেখছে না।
কিছু মানুষের জন্ম হয় বটগাছ হওয়ার জন্য বুঝি।সব ঝড় নিজের মাথায় রেখে সবাইকে স্বস্তি দেয় তারা।
এই পরিবারের বটগাছ রজনী।
গল্প করতে করতে বৈশাখী দেখলো পিয়াসাকে। পিয়াসাকে দেখে বৈশাখী ডেকে বললো, “জানো পিয়াসা,আমার শ্বশুর বাড়ির এক রিলেটিভ আছেন দেখতে একেবারে তোমার মতো। তুমি যেনো ওনার কিশোরী ভার্সন। এমনই ধবধবে ফর্সা উনি তোমার মতো, মাথাভর্তি চুল এমনকি তোমাদের দুজনের গলার সেইম জায়গায় তিল।”
পিয়াসার গলা শুকিয়ে আসে।নার্গিস বলে উঠে, “হ্যাঁ রে,তোদের বিয়ের দিন আমি ও দেখেছিলাম। আমি তো দেখে একেবারে হতবাক হয়ে যাই।অথচ দেখ,পিয়াসার মায়ের সাথে ওর চেহারার কোনো মিল নেই।”

পিয়াসা যেনো জমে গেলো। জীবনের এই অধ্যায়টা কি আর সমাপ্ত হবে না?
সবচেয়ে যন্ত্রণা দেওয়া ব্যাপারটা কেনো বারবার সামনে চলে আসে!
শিরিন বললো, “তাই নাকি! পিয়াসা,তোমার কোনো আত্মীয় হয় না-কি উনি?”
পিয়াসার ভীষণ দুর্বল লাগছে নিজেকে।মাথা নাড়িয়ে বললো, “না,আমি চিনি না।”
পিয়াসা আর দাঁড়ালো না।রুমে চলে গেলো।
চিনি না বললেই কি অচেনা হয়ে যায়!
যার পেটে দশমাস ছিলো, যার কোলে জন্ম তাকে কি কখনো অস্বীকার করতে পারে মানুষ!
তবুও সেই মানুষটা জীবনের সবচেয়ে ঘৃণিত মানুষ।
পিয়াসার বুকের ভেতর কেমন মোচড়াতে থাকে।এই মুহুর্তে তার মা’কে দরকার। মা’কে এখন কোথায় পাবে পিয়াসা?
নিজের ফোনটা নিয়ে মা’কে ভিডিও কল করে পিয়াসা।
শারমিন কল রিসিভ করতেই পিয়াসা মা মা করে ডাকতে থাকে।তার বুক ফেটে যায় যন্ত্রণায় অতজচ কাঁদতে পারছে না।সে যে কবে নিজেকে নিযে বলেছিলো আর কখনো কাঁদবে না এরপর আর পিয়াসা কাঁদতে পারে না। কেনো পারে না জানে না।

শারমিন মেয়েকে বুঝিয়ে সান্ত্বনা দিলেন।
রাত দুটোর সময় আষাঢ় বাড়িতে ফিরলো। মাত্রাতিরিক্ত মন খারাপ।
আষাঢ় মলিন মুখের দিকে তাকিয়ে বললো, “এরকম প্যাঁচামুখী কিন্ত তোমাকে মানায় না কইতর।”
আনমনা পিয়াসা বুঝতে না পেরে বললো, “কি বললেন?”
“মন খারাপ তোমার? ভয় পেও না,আমাকে আজকে খাবার বেড়ে দিতে হবে না।আমি নিজে করে নিবো কষ্ট হলেও।”
পিয়াসা বিরক্ত হয়ে আষাঢ়ের দিকে তাকায়। এই অদ্ভুত বন্য লোকটা না-কি মেয়েদের ক্রাশ!
কোচিং থেকে ফেরার পথে পিংকি পিয়াসাকে তার গুণধর ভাই সম্পর্কে ডিটেইলস বলতে বলতে এসেছে।পিয়াসার ফেসবুক আইডি থেকে আষাঢ়ের পেইজে লাইক, ফলো ও দিয়ে দিয়েছে।
কিছুক্ষণ আগে পিয়াসা বসে বসে এই লোকটার পেইজের পোস্ট, কমেন্ট দেখছিলো।তখনই দেখলো কতো মেয়ে তাকে কেমন ন্যাকা ন্যাকা কমেন্ট করছে।
মেয়েরা এতো অদ্ভুত ও হতে পারে!
পিয়াসার জানা ছিলো না।

“দরজার সামনে কি আজ সারারাত এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকবে না-কি? “
পিয়াসা সরে আসে।কোনো বাক্যব্যয় না করে নিজেই গিয়ে আষাঢ়কে খাবার এনে দেয়।অনেকক্ষণ ভেবে ও আষাঢ় খুঁজে পেলো না পিয়াসাকে আজকে এমন বিধস্ত দেখাচ্ছে কেনো!
পিয়াসা জানে না তার মলিন মুখ কারো মনে মেঘ জমার কারণ হতে পারে। যদি জানতো তাহলে বুঝতে পারতো বহু বছর আগে,কোনো এক মধ্যাহ্নে এক জোড়া ছলছল নয়নে আষাঢ় জীবনে প্রথম বারের মতো নিজেকে ডুবে যেতে দেখেছে।
প্রথম বারের মতো কাউকে দেখে জীবনানন্দের মতো বলতে ইচ্ছে করেছে, এতো দিন কোথায় ছিলেন?
মনের অনুভূতি মনে চাপা দিয়ে আষাঢ় খাবার খেয়ে নেয়।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ঝুনি সাজতে বসলো।সাজগোজের বক্স খুলে ঝুনি চমকে উঠে। আষাঢ় এনে দেওয়া লিপস্টিকটা নেই।

ঝুনির কলিজা মোচড় দিয়ে উঠে। এতো সুন্দর লিপস্টিক কোথায় গেলো!
রাতে ও তো ঠোঁটে দিয়েছে ঝুনি।কে নিলো!
ঝুনি পুরো বাড়িতে তল্লাশি চালানো শুরু করে দিলো।ঝুনির চিল্লাচিল্লি, হাউকাউ শুনে পুরো বাড়ির সবাই উঠে গেলো। আষাঢ় বললো, “খালা আমি আরেকটা লিপস্টিক এনে দিবো তুমি কেঁদো না।”
“না মামা,আমার এটাই লাগবে।আমি জানি লিপস্টিক এই বাড়িত কে নিছে।আপনে আমার লগে আসেন শুধু। আপনে সবাইরে কন যে আমি সবার রুমে খুঁজমু।”
আষাঢ়কে সাথে নিয়ে ঝুনি চিরুনি তল্লাশি চালায় তার লিপস্টিক খোঁজার জন্য।
মিরার রুমে ঢুকতে যেতেই মিরা চিৎকার শুরু করে। কিছুতেই সে তার রুম চেক করতে দিবে না।ঝুনির ভীষণ সন্দেহ হয়।

আষাঢ় গম্ভীর হয়ে বললো, “চুপ করে দাঁড়িয়ে থাক।সবার রুম চেক করবে উনি।”
মিরার রুমটা ভালো করে খোঁজে ঝুনি।গতকাল মিরা কেমন করে তাকিয়েছিলো তার লিপস্টিকের দিকে।
নিরা,মিরা,মিনি কারো রুমেই লিপস্টিক পেলো না।
মিরা ক্রুদ্ধ হয়ে বললো, “আমার রুমে চেক করছেন যখন তিখন বর্ষা,পিংকি,রিংকি সবার রুম চেক করতে হবে।”
ঝুনি কাঁদোকাঁদো গলায় বললো,”সবার রুম চেক করছি আমি।”
মিনি বললো, “পিয়াসা?”
আষাঢ় রাগ্বত সুরে বললো, “চুপ। ফালতু বকিস না।”
শিরিন বললো, “ফালতু বকা কি?আমার মাইয়ারা কি চোর?ওদের রুম যখন খোঁজা হইছে,পিয়াসার রুমেও খুঁজতে হইবো।ঝুনি,চল আমার লগে।”

হ্যালো 2441139 পর্ব ২৬

আজ শুক্রবার। কোচিং নেই।পিয়াসা জানালার পাশে বসে ছবি আঁকছে।হুট করে ঝুনি খালা,শিরিন ফুফু,নিরা,মিরা,মিনি,আষাঢ়কে তার রুমে দেখে পিয়াসা অবাক হয়।
পিয়াসা কিছু বুঝে উঠার আগেই নিরা,মিরা,মিনি খুঁজতে শুরু করে।
সবাইকে অবাক করে দিয়ে পিয়াসার বইয়ের ফাঁক থেকে ঝুনির লিপস্টিক উদ্ধার হয়।
পিয়াসা তখনও কিছু বুঝতে পারলো না। বুঝলো তখন যখন মিরা বললো,”আসল চোর এখানে,অথচ আমাদের সবাইকে চোর ভাবছে এতোক্ষণ। ”
চোর!
পিয়াসার চোখ বড় বড় হয়ে যায় এরকম কথা শুনে।

হ্যালো 2441139 পর্ব ২৮