হ্যালো 2441139 পর্ব ৬১

হ্যালো 2441139 পর্ব ৬১
রাজিয়া রহমান

রাতের ফ্লাইটে তারিন দেশে ফিরলো।বড় ভাবী তাকে বিকেলে সবটা জানিয়েছে।মা’য়ের অবস্থার কথা শুনে তারিন আর অপেক্ষা করতে পারে নি।
তারিনের কান্না থামছেই না।
তারিন যখন হাসপাতালে পৌছায় তখন ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে।
গতকাল বিকেল থেকে তারিনের মনে হচ্ছিলো মা’কে বুঝি শেষবারের মতো জীবিত দেখতে পারবে না।দ্রুত টিকেট কেটে, বাচ্চাদের জন্য, নিজের লাগেজ প্যাক করতে তারিন আধাঘন্টা সময় নিয়েছে।
ফ্লাইটের পুরোটা সময় তারিনের দুই চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিলো।মনে মনে আল্লাহকে ডাকছিলো তারিন।
হাসপাতালের সামনে এসে গাড়ি থেকে নামতেই তারিনের মনে হলো শরীরের সব শক্তি বুঝি ফুরিয়ে গেছে এই মুহূর্তে। তারিন হাত পা বন্ধ হয়ে আসে।

আষাঢ় ঝড়ের বেগে ছুটে এসে ফুফুকে জড়িয়ে ধরে।
তারিনের মনে হচ্ছিলো এক্ষুনি বুঝি আষাঢ় দুঃসংবাদ দিবে।
তারিন ফুঁপিয়ে বললো, “মা কেমন আছে বাবা?”
“দাদী আগের চাইতে ভালো আছে ফুফি।তুমি শক্ত হও,নিজেকে সামলে নাও।”
তারিনের দেহে প্রাণ এলো।ফ্লাইটের পর থেকে আর বাড়ির কারো সাথে যোগাযোগ হয় নি।তাই ভয়ে তারিনের বুক কাঁপছিলো এতোক্ষণ।
আষাঢ় ফুপিকে ধরে আইসিইউর সামনে নিয়ে যায়। সবাই সেখানে দাঁড়িয়ে আছে।
তারিন গিয়ে ভাইদের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পিয়াসা অবাক হয়ে খেয়াল করে তারিনকে।এতোদিনে সে বুঝতে পারে আষাঢ় দেখতে একেবারে ছোট ফুফুর মতো হয়েছে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সিরাজুল ইসলাম আর মিরাজুল ইসলাম দুই ভাই বোনকে জড়িয়ে ধরে বুক উজাড় করে কান্না করে।
দুপুরের দিকে পুলিশ আসে হাসপাতালে। মহুয়া বেগমের জবানবন্দি নেওয়ার জন্য। ডাক্তারের সাথে কথা বললে ডাক্তার জানায় এখন জবানবন্দি নেওয়া যাবে না। এখন রোগী কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। শরীরে ডিহাইড্রেশন, কেটোন লেভেল অনেক বেশি। মস্তিষ্কে বিভ্রান্তি আছে। তবে জ্ঞান ফিরলে আমরা আপনাদের জানাবো।
পুলিশ অফিসার মাথা নাড়ে।
“আমরা মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে যাচ্ছি। রোগী সেরে উঠলেই জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তবে অভিযুক্তকে এখনই থানায় নিতে হচ্ছে। কারণ, একে ইচ্ছাকৃতভাবে চিকিৎসা থেকে বিরত রাখা হয়েছে,এটা একটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
তাছাড়া সিরাজুল ইসলাম যেহেতু একজন সচিব সেক্ষেত্রে তার দায়ের করা মামলাকে পুলিশ একটু বেশি আগ্রহ নিয়ে দেখছে।

চতুর্থ দিন ICU-তে কাটানোর পর মহুয়া বেগমের অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলো।
বয়সের কারণে ঝুঁকি এখনো কাটেনি, তবে ডাক্তাররা জানালেন তিনি আর শঙ্কামুক্ত নন, বরং ধীরে ধীরে সুস্থতার পথে ফিরছেন।
চোখের পাতাগুলো ধীরে ধীরে খুলে আসে। কেবিনের মৃদু আলোয় ছেলেদের মুখটা ঝাপসা দেখা যায়। পাশে বসে আছে রজনী,নার্গিস, যাদের এতকাল নিজের মানুষ ভাবতেই শেখেননি তিনি।
তারিন এগিয়ে এসে মা’য়ের হাত ধরে। তারিনকে দেখে মহুয়া বেগমের দুই চোখ ভিজে উঠে।
তারিন ঝরঝর করে কেঁদে উঠে। মা’কে কতো বুঝিয়েছে ভাবীদের সাথে মিলেমিশে থাকার জন্য। বড় বোনের মনের অন্ধকার তারিন জানতো বলেই কখনো বোনের সাথে তার ভাব ছিলো না যতটা ছিলো বড় ভাবীর সাথে।
মা তখন কন্যাস্নেহে অন্ধ হয়ে ছিলেন।তারিন তখন মায়ের চক্ষুশূল হয়ে যায়।
আজ মা ঠিকই বুঝতে পেরেছে।

মহুয়ার গলা দিয়ে প্রথমে কোনো শব্দ বের হয় না। শুকনো ঠোঁট কাপছে শুধু। একটু পরে ফিসফিস করে বলেন,
“তুই আমাকে অনেক বুঝিয়েছিস মা।আমি বুঝতে পারি নি।আমি অহংকার, দম্ভের জন্য ধরাকে সরা জ্ঞান করতাম।যেই মেয়েকে আপন ভেবে সব অন্যায় করেছি সে-ই আমার পিঠে ছু রি বসিয়েছে।”
রজনী চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে জানালার পাশে। তার মুখেও দীর্ঘশ্বাস জমে থাকে,অভিমানের, যন্ত্রণার, ভালোবাসার।
কয়েক দিন আগেও যিনি নিজের অন্যায়ের বোঝা বুঝতেই পারতেন না, আজ তার চোখে শুধুই অনুশোচনা।
পিয়াসা ফিসফিস করে আষাঢ়কে বললো, “আমি কিন্তু দাদীর সাথে বাড়িতে ফিরে যাবো।একা একা আমার থাকতে ইচ্ছে করছে না। আমি সবসময় একাকী থেকেছি।এখন যখন অনেক মানুষের সাথে থাকার সুযোগ এসেছে সেই সুযোগ আমি আর হারাবো না।আমি বাড়িতে সবার সাথে থাকতে চাই।”

আষাঢ় হেসে বললো, “আমাকে ছাড়া সবার সাথে থাকতেই তোমার ইচ্ছে করে তাই না?”
পিয়াসা অভিমানী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো, “আপনাকে নিয়েই সবার সাথে থাকতে চাই আমি।বাকিটা জীবন আমি সবাইকে সাথে নিয়ে উপভোগ করতে চাই যাতে আমার মনের ভয়টাকে আমি মুখোমুখি হয়ে বলতে পারি যে মানুষের ভয়ে আমি কুঁকড়ে থাকতাম সেই মানুষের সাথেই আমি এখন বেঁচে আছি।”
“আমাদের ছোট্ট লাল নীল সংসারের জন্য তোমার খারাপ লাগবে না?আমাদের দুইদিনের সংসার।”
“তার চাইতে বেশি খারাপ লাগবে যদি আমি সবাইকে ছেড়ে একাকী থাকি।”
শিরিন এখন পুলিশ হেফাজতে।মহুয়া বেগমকে কেবিনে দেওয়ার পর পুলিশ আসে জবানবন্দি নিতে। হাসপাতালের কেবিনের দরজা পর্যন্ত আসে কয়েকজন অফিসার।

একজন ভেতরে এসে জিজ্ঞেস করেন,
“আপনার অভিযোগ আছে কি?”
মহুয়া চোখ বন্ধ করে বলেন, “অনেক অভিযোগ আছে আমার।”
মহুয়া বেগম জানালেন শিরিনদের বাড়িতে যাওয়ার পর থেকে কী কী হয়েছিলো তার সাথে। সিরাজুল ইসলাম আর মিরাজুল ইসলাম দুই ভাইয়ের চোখে জল।
যেখানে তারা মায়ের জন্য নিজেদের কলিজা কেটে খাওয়াতে ও এক পায়ে খাঁড়া সেখানে কি-না শিরিন মাকে দিনের পর দিন না খাইয়ে রেখেছে।
সব শুনে পুলিশ চলে যায়।

সিরাজুল ইসলাম মা’য়ের পা ধরে বললো,”মা তুমি কেনো এতো যন্ত্রণা সহ্য করলা?লিখে দিতা বাড়ি ওর নামে।তবুও তুমি সুস্থ থাকতে।তুমি না থাকলে ওই বাড়ি মূল্যহীন।”
“তোদের উপর অনেক অন্যায় করেছি,তার চাইতেও বেশি অন্যায় করেছি আমার দুই বউয়ের উপর। তারিন অনেক বুঝিয়েছে ওকে পাত্তা দিই নি।নিজের সব কৃতকর্ম চোখের উপর ভাসছিলো।তাই আরেকটা অন্যায় করার সাহস পাই নি।তুই দলিল তৈরি করে আন।আমি বাড়িটা আমার দুই বউয়ের নামে লিখে দিবো।তাতে যদি আমার অন্তরে একটু প্রশান্তি আসে।”
কেবিনে যখন সূর্যের আলো এসে পড়ে, মহুয়া বেগম জানালার দিকে তাকিয়ে একবার দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলেন।
রজনী বলে, “আপনার বাড়ি আপনার নামেই থাকুক মা।আপনি যে আমাদের কাছে ফিরে এসেছেন তাতেই আমাদের শান্তি মা।বাড়িঘর আমাদের লাগবে না।”

ছেলে, বউ, আর নাতিরা তাঁর পাশে এসে বসে।
তিনি হাত তুলে বলেন,”আমি ভেবেছিলাম আমি হয়তো মরেই যাবো।কতো দিন খাবার একটু খারাপ হয়েছে বলে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছি।এই কয়দিন খেতে না পেয়ে বারবার মনে হচ্ছিলো আমার অহংকারের শাস্তি আল্লাহ আমাকে দিচ্ছেন।আমি আল্লাহর কাছে আমার হায়াত ভিক্ষা চেয়েছি যাতে নিজের ভুল শুধরে তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইতে পারি।আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেছেন।তোমরা সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিও।”
পিয়াসা এগিয়ে এসে মহুয়া বেগমের হাত ধরে।
“আমাকে মাফ করে দিয়েন দাদী।আমার জন্যই এতো কিছু হয়ে গেলো।”
বহুদিন পরে মহুয়া বেগম মন থেকে ভালোবেসে কারো সাথে কথা বলে। পিয়াসার হাত ধরে বললো, “তুমি এই কাজটা না করলে আমি হয়তো আজও অন্ধ হয়ে থাকতাম।তোমার কাছে আমি কৃতজ্ঞ পিয়াসা।একদিন তোমাকে নাতবউ করতে ফন্দি করেছে যাতে তোমার উপর ছড়ি ঘোরাতে পারি।আমার জীবনে সেটাই একমাত্র ভুল করে নেওয়া ভালো সিদ্ধান্ত ছিলো।”

মহুয়া বেগমকে রিলিজ দেয়া হয় এক সপ্তাহ পরে।সকাল বেলা সবাই সব গুছিয়ে নিচ্ছিলো।মহুয়া বেগম ছেলে আর ছেলে বউদের ডাকলেন।তারিনকে ও ডাকলেন।
তার গলার স্বর যথেষ্ট শীতল।
“আমি এতো দিন অনেক অন্যায় করেছি।আজ আমার নিজেকে নিজের শাস্তি দেওয়ার সময় এসে গেছে। তোরা আমাকে একটা বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আয়।আজীবন যেই অন্যায় আমি বউদের সাথে করে এসেছি এটাই হবে আমার শাস্তি। সবসময় নিজের ছেলেমেয়েদের সবাইকে নিয়ে একসাথে থাকার লোভে অনেক অপরাধ করেছি।তাই ছেলেমেয়ে আত্মীয় পরিজনহীন থাকাটাই আমার জন্য সবচেয়ে বড় শাস্তি।”

নার্গিস এগিয়ে এসে শাশুড়ীর হাত ধরে বলে, “এটা তো আমাদের জন্য ও শাস্তি হয়ে যাবে মা।এতোদিন যা হয়েছে সবকিছু ভুলে আমরা আবার সবাই মিলে একসাথে থাকতে চাই।বড় ভাবী তো আপনার অনেক সেবাযত্ন করেছে,আমি তো কখনো করি নি।আমার ও অনেক ভুল ছিলো। বিশেষ করে বড় ভাবীর সাথে অনেক অন্যায় করেছি। নিজের স্বার্থ ছাড়া কখনো কাউকে নিয়ে ভাবি নি।আজ আপনি চলে গেলে আমি যে নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে পারবো না।”
রজনী শাশুড়ীর আরেকটা হাত ধরে বললো, “আপনার উপর অনেক অভিমান ছিলো হয়তো। কিন্তু যখন আপনি বাড়ি থেকে চলে গেলেন আপার সাথে তখন থেকে বুঝতে পারছি আপনাকে ছাড়া ওই বিশাল জমিদার বাড়িটা মরুভূমি যেনো।আপনি তো ওই বাড়ির প্রাণ মা।মিথ্যা বলবো না,নিজের একটা আলাদা সংসার একটা সময় আমি ও খুব চেয়েছি,নিজের প্রাইভেসি চেয়েছি,নিজের স্বাধীনতা চেয়েছি।

এটা আমার কনফেশন বলতে পারেন। যেদিন আমার ছেলে বউকে নিয়ে আলাদা থাকতে শুরু করলো আমার মনে হলো কিছু একটা মিসিং। ওর জন্য এখন আর রাতের ১২/১ টা পর্যন্ত আমার বসে থাকা লাগে না।ও কোথায় গেছে কি করছে সেসব নিয়ে ভাবা লাগে না।আমার খুশি হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তবুও আমার কেমন শূন্য শূন্য লাগে।সন্তানের প্রতি মায়া কী আমি রিয়েলাইজ করি তখন।তখন গিয়ে আপনার উপর থেকে আমার সব অভিমান উবে যায়।আমি বুঝতে পারি সন্তানের প্রতি ভালোবাসা, সন্তানকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাওয়ার আকুতি থেকে আপনি সব করেছেন।ভালোবাসা অনেক রকম হয়।কেউ ভালোবাসলে বন্দী করে রাখে আবার কেউ উড়ে যেতে দেয়।
আপনার করা ভুল থেকে আমি শিক্ষা নিয়ে ওদেরকে উড়ে যেতে দিয়েছি।আমি মন থেকে চাই ওরা দুজন সুন্দর একটা সময় কাটাক একাকী। আমি যেসব কষ্ট মনে নিয়ে দিন কাটিয়েছি,আপনার উপর অভিমান পুষে রেখেছি আমাকে নিয়ে তেমন মনোভাব রাখার সুযোগ না পাক আমার বউমা।”

রজনী আষাঢ়ের দিকে তাকিয়ে বললো, “আমি আষাঢ়কে ছাড়া কষ্ট হয় বলে যে আমি চাই আমার ছেলে বউ বাড়িতে ফিরে আসুক আমার খুশির জন্য তা না কিন্তু। সন্তান দূরে থাকলে বাবা মা’য়ের কষ্ট হবেই।কষ্ট হচ্ছে বলে যদি সন্তানকে কোলে নিয়ে বসে থাকি তাহলে তো সন্তানের আর বড় হওয়া হবে না,সংসার করা হবে না।তাহলে আমি আমার আষাঢ়কে নিয়ে বসে থাকবো,পিয়াসার মা পিয়াসাকে নিয়ে বসে থাকবে।আমি চাই ওরা সুখী হোক।একে অন্যকে নিয়ে সুখে থাকুক।”
পিয়াসার মুখ শুকিয়ে গেলো।সে সবার সাথে থাকতে চায়।

এগিয়ে গিয়ে শাশুড়ির হাত ধরে বললো, “আপনি যেমন চান আমরা সুখে থাকি।আমরা ও চাই সুখে থাকতে মা।কিন্তু সুখে থাকতে হলে যে আপনাকে কাছে চাই আমার। তাহলে আপনি আমার কাছে চলে আসুন।আমি প্রথমে আমার জন্মদাত্রীকে হারিয়েছি,বিয়ের পর আমার মা’কে হারিয়েছি।এখন যখন আপনাকে পেয়েছি,আপনাকে আমি আর হারাতে চাই না।হয় আপনি আমাদের সাথে থাকবেন তা না হলে আমি আপনাদের সাথে থাকবো।
রজনী পিয়াসার মাথায় হাত রেখে বললো, “আমি সবসময় তোমার খুশি চাই মা।কখনো যাতে তোমার মনে বিন্দুমাত্র কষ্ট না আসে।তুমি যেখানে থাকলে খুশি হবে সেখানেই থাকবে।আমাদের সাথে বাড়িতে থাকলেও বাসাটা কিন্তু ভাড়া চলবেই।যাতে যখন ইচ্ছে করবে তখন তুমি আষাঢ়ের সাথে একা থাকার তা থাকতে পারো।”

আষাঢ় গম্ভীর হয়ে বললো, “তাহলে তো হয়েই গেলো।তুমি তোমার শ্বশুর শাশুড়ীকে নিয়ে থাকো,আমি মেসেই থাকবো।বিয়ে করেও যদি বউ আমার সাথে না থাকতে চেয়ে আমার বাবা মা’য়ের সাথে থাকতে চায় তাহলে বিয়ে করে লাভ কী আমার।লাভ সব তোমার। বিয়ে করে তুমি শ্বশুর শাশুড়ী পেয়েছো।আর আমি দিল্লির লাড্ডু।”
পিয়াসা লাজুক হাসে।সিরাজুল ইসলাম, মিরাজুল ইসলাম, রজনী, নার্গিস, তারিন সবাই বের হয়ে যায় কেবিন থেকে।
মহুয়া বেগম পিয়াসার হাত ধরে বললো, “এর আগেরবার যখন হাসপাতালে ছিলাম তখন হুট করেই তোদের বিয়ে দিয়ে দিয়েছি।এবার ও আমার ইচ্ছে করছে তোদের বিয়ে দিতে।
তখন বিয়ে করাতে চেয়েছি তোকে কষ্ট দিতে,এখন আবারও বিয়ে দিয়ে তোকে নাতবউ এর মর্যাদা দিয়ে আমার মনের মতো করে তোকে আমার নাতির বউ সাজিয়ে নিয়ে যাবো।”
আষাঢ় দাদীর হাত ধরে বলে, “এবার তুমি আমার ভরসা দাদী।আবার বিয়ের ব্যবস্থা কর,এবার যদি আমি আমার বউকে আমার করে পাই।”

হ্যালো 2441139 পর্ব ৬০

নির্জন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে গলা খাঁকারি দিয়ে বললো, “দাদী,একচোখা বিচার করবে না।বিয়ে হলে একই দিনে দুইটা হবে।আমি ও বিয়ে করবো।আমার জন্য মেয়ে দেখো।”
মহুয়া বেগম হাসেন।আজ মনে হয় এরপর মরে গেলেও আফসোস থাকবে না।

হ্যালো 2441139 পর্ব ৬২