এমপি তামিম সরকার পর্ব ৬৪

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৬৪
কাফাতুন নেছা কবিতা

” সব বাত্তি বন্ধ কর সাকিব! আজকে আমি ডার্ক রোমান্স করবো! ”
” জীবনে বহুত রোমান্স দেখছি! মাগার ড্রেরাক রোমান্স তো দেখি নাই রে মাহির!!”
” ফেসবুকে পোলাপাইন ড্রেরাক রোমান্স নিয়ে মাতামাতি করে, কিন্তু কেউ খুইল্লা কয় না আসলে জিনিস টা কী?”
মাহির আর সাকিব তামিমের কথা শুনে একটু চিন্তায় পড়ে যায়! তারা বিভিন্ন প্রকারের মা-রামারি, কা’টা কাটি, বো’ম দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া সম্পর্কে তো জানে কিন্তু ডার্ক রোমান্স সম্পর্কে তো জানে না!! মাহির আর সাকিবকে এতো গম্ভীর হতে দেখে কালা মানিক, টাকলা মফিস , পেট মোটা রফিক এসে তাদের সাথে দাড়ায় আর ঘটনা জানতে চাই! কিন্তু তারা বুঝে উঠতে পারে না আসলে ডার্ক রোমান্স টা কী!! তারপর একজন আরেকজনের দিকে তাকায়! আর শয়তানি হাসি দেয়!!

” ভাই!”
” আব্বা ডাক বেডা!”
পঞ্চ পান্ডব একজন আরেকজনের দিকে তাকায়! তামিমকে তারা বাবার মতো ভালোবাসে এটা সত্যি, কিন্তু এতো বছর ধরে ভাই ডেকে আসছে, আজকে আবার আব্বা ডাকতে বললো??
” আব্বা…?”
পাঁচ জনই একসাথে বলে উঠে!!
” তোগো মায়ের জামাই, তোগো কী হইবো?”
” ওহহহহহহহহহ!”
পাঁচ জন বুঝতে পারে এবার তামিম কেন তাদের আব্বা ডাকতে বলে!!
” মাগার ভাই! আপনি বাবা হওয়ার জন্য একটু বেশিই জোয়ান! ”
তামিম এসে সাকিবের মাথায় চাটি মা’রে!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” আমার ১৯ বছরের বউ, তোগো মতো পাঁচ দামড়ার মা হতে পারলে, আমি বাপ কেন হতে পারবো না?”
পঞ্চ পান্ডব একটু গম্ভীর চিন্তায় পড়ে যায়! আসলেই তো তাই! কিন্তু তামিমকে তো তারা ভাই ছাড়া অন্য কিছু ডাকতে পারবে না!!
” ভাবি-মা!”
কালা মানিক সুবহার দিকে তাকিয়ে কথাটি বলে ফেলে! সাথে সাথে সকলের মুখে ও একটা প্রশান্তির হাওয়া বয়ে চলে!!
” আমাগো ভাবি মা!”
” হো, সাকিব, জাতির ভাবি-মা! আমাগো পাঁচ এতিমের ভাবি মা!”
এতিম কথাটি শুনতেই সুবহার রুহ অব্দি কেঁপে উঠে!! কারণ এখন সুবহা নিজে ও এতিম! তার ও বাবা-মা নেই দুনিয়াতে!
সুবহা যেয়ে তামিমের পাশে দাড়ায়! আর তামিমের বাহু জাপ্টে ধরে!

” আমরা কেউ এতিম নয়! কারণ আমাদের শয়তান সরকার আছে!”
পাঁচ জনই একসাথে হাত বাড়িয়ে তামিমকে জড়িয়ে ধরে!! আর সুবহা পাশে দাড়িয়ে থাকে!
” হো, আমরা তো এতিম না! আমাগো ভাই আছে! ”
” নাটক কম কর সাকিব! একটু আগে যে বললি তোরা এতিম!”
” মাফ কইরা দেন, আবেগে কইয়া লাইছি!”
তামিম কিছু না বলে তাদের পাঁচ জনকেই জড়িয়ে ধরে!! ঠিক ১১ বছর আগে সেই ভয়ংকর ২৬শে জানুয়ারি তামিম নিজের ভাইকে হারালে ও আরো পাঁচ জন নতুন ভাই খুঁজে পায়!
তামিম সকলে ঘুমাতে বলে নিজে ও সুবহার হাত ধরে যেয়ে থাকে!!
তামিম সুবহা যখন একসাথে যাচ্ছিল, পঞ্চ পান্ডব ও তাদের পিছু পিছু যেতে থাকে!!
তারা একদম তামিম আর সুবহার সাথে তাদের ঘরের দরজা অব্দি চলে যায়! তামিম ভ্রু কুঁচকে পিছনে তাকায়!!

” তোরা পিছনে পিছনে কী করিস?? ”
” কেন ভাই? ড্রেরাক রোমান্স দেখমু!”
কালা মানিকের কথা শুনে সুবহা হেঁসে উঠে! আর তামিম চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাস ফেলে!! তারপর পায়ের জুতো খুলতে যায়! তামিমকে জুতো খুলতে দেখে পাচঁ জনই যে যার মতো পেরেছে দৌড় লাগায়!! আর সুবহা হাসতে থাকে!!
তামিম সুবহার হাত ধরে রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়!!
দরজা লাগিয়ে তামিম সোজা সুবহাকে জড়িয়ে ধরে!! সুবহা ও তামিমকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে!!

” বউ! আমার রানি! আমার মনের রানি! আমার ঘরের রানি!”
” আপনি আমাকে রানি কেন ডাকেন এমপি সাহেব?”
” চাকরানি অনেক লম্বা তো, তাই শর্ট করে রানি ডাকি!”
” ওহহহ! আর আমি আপনাকে জান কেন ডাকি জানেন? ”
” কেন?”
” জানো’য়ার অনেক লম্বা তো, তাই শর্ট করে জান ডাকি!”
” শা’লার জিন্দেগী!!!!! ”
তামিম কখনো চিন্তা ও করতে পারেনি তার বউ যে তার ফিমেল ভার্সন!! সুবহা তামিমকে ধরেই হাসতে থাকে!!
” তোমারে আমি ভালো ভাবছিলাম সুবহা! ”
” আপনাকে ও আমি খারাপ ভেবেছিলাম তামিম!”
তামিম শুধু চোখ বন্ধ করে ফেলে! না আজকে তার বউ তাকে একদম কপোকাত করে দিলো! সুবহার সাথে তামিম কথায় পেরে উঠে না! সুবহা ও বুঝতে পারে বিষয়টি!!
তামিম সুবহাকে ছেড়ে দিয়ে সোজা জানালা দরজা বন্ধ করে দেয় ভালো মতো! তারপর সব লাইট ও অফ করে দেয়!!

” ড্রিম লাইটটা থাকুক!”
” না বেইবি! আজকে আমি ডার্ক রোমান্স করবো! ”
তামিম ড্রিম লাইট বন্ধ করতে যাবে, এমন সময় সুবহা খেয়াল করে পাশের একটি ইউডো একটু খোলা! সুবহা উঠে গিয়ে সেই ইউডো লাগায়, আর তামিম ও এদিকে এক এক করে তিনটা ড্রিম লাইটই বন্ধ করে দেয়!
সমস্ত লাইট বন্ধ করতেই ঘর এতোটাই অন্ধকার হয় যে তামিম সুবহাকে আর দেখতে পায় না! আর না সুবহা তামিমকে! তার উপরে দু_জনই কালো ড্রেস পড়া!

” আমার বউ কইইই!”
” আমি এদিকে!”
” কোন দিকে?”
” আরে এইদিকে!”
” কোন দিকে!! ‘
” আপনি দাড়ায়! আমি আসছি!”
” অন্ধকারে পড়ে যাবা না বউ?”
” আপনি শুধু ৩২ পাটি বের করে রাখেন তাহলেই হবে!”
” কেন?”
” আপনার দাঁত যেই সাদা, মনে হয় টুথপেষ্টের জায়গায় নাইট ক্রিম দিয়ে ব্রাশ করেন!”
” শা’লার জিন্দেগীহহহহহহ!”
সুবহা খুব জোড়ে জোড়ে হাসতে থাকে! না এবার ও তামিম সুবহার সাথে পারলো না!! তামিম একটা ড্রিম লাইট অন করে সুবহার কাছে চলে যায়!! আর সুবহাকে কোলে তুলে নেই!!

” কী করছে তামিম?”
” তোমাকে তিন দিন না হাঁটানোর অবস্থা! ”
” মানে?”
” ডার্ক রোমান্স বেইবি!”
” ১৯/২০ ই তো ভালো ছিলো তামিম! আবার এসব কেন?”
তামিম কিছু না বলে শুধু একটু হাসি দেয়! শুকনো ঢোক গিলে সুবহা!! তামিমের এই হাসিটার অর্থ সুবহা ভালোমতোই জানে!
তামিম সুবহাকে বিছানায় ফেলে দিয়ে তার হাত দু’টো হ্যান্ডকাফ দিয়ে আটকে দেয়!

” কী করছেন তামিম? ”
” তোমাকে শা’স্তি দেওয়ার ব্যবস্থা!”
” তামিম প্লিজ! চা-পাতি সরকার থেকে ডার্ক রোমান্স সরকার হয়ে যাবেন? পাবলিক কী মানবে?”
” আমি তামিম সরকার! আমি যা করি তাই পাবলিক মানে! ”
” তা..”
” ইসস! ফিল মাই লাভ বেবি!”

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৬৩

তামিম একটু একটু করে মত্ত হতে থাকে সুবহার মাঝে! কিন্তু সুবহার প্রাণ যায় যায় অবস্থা! তামিমকে এতো পাগলামি সে কখনোই করতে দেখেনি! সুবহা হাজার বার বারণ করে ও তামিমকে আটকাতে পারে না!!
ডার্ক রোমান্স নামের এতো ভয়ংকর ভালোবাসা তামিম দেখাবে সেটা সুবহা কল্পনা ও করতে পারেনি!!

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৬৫