তুমি অজান্তেই বেঁধেছ হৃদয় পর্ব ৩
মুন্নি আক্তার প্রিয়া
অনুর বড়ো ফুপু পারভীন বেগম। তার তিন ছেলে। সূর্য ইসলাম, সায়েম ইসলাম এবং সিয়াম ইসলাম। সূর্য অনুর চেয়ে বয়সে এক বছরের ছোটো। এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। সায়েম ক্লাস এইটে পড়ে এবং সিয়াম পড়ে ক্লাস ফাইভে। পারভীন বেগমের কোনো মেয়ে নেই বলে ভাইদের মেয়েদের প্রতি তার ভীষণ টান। বিশেষ করে জুঁই এবং অনু চৌধুরী বাড়ির প্রথম কন্যা সন্তান বলে ফুপু ওদের দুজনকে একটু বেশিই ভালোবাসেন।
অনুর কান্নাকাটি বড়ো ফুপুই থামিয়েছেন। দোকান থেকে আইসক্রিম কিনে খাইয়েছেন। অনুর হাতের চুলকানিও কমে গেছে। কান ধরেছে সে, আর কখনো কচুতে হাত দেবে না। বড়ো ফুপু তাকে একসাথে দশটা আইসক্রিম এনে দিয়েছে। এখন সে তিন নাম্বার আইসক্রিম খাচ্ছে ঘরে বসে বসে। সূর্য তখন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল,
“আসব?”
অনু বিছানায় বসে পা দোলাচ্ছিল আর আইসক্রিম খাচ্ছিল। দরজার দিকে তাকিয়ে বলল,
“আয়।”
সূর্য গিয়ে অনুর পড়ার টেবিলটা টেনে বসল। পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে বলল,
“তোমার রুমটা কিন্তু অনেক সুন্দর।”
অনু জবাব দিল না। সূর্য বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখল প্রায় অনুর সমান বড়ো একটা টেডিবিয়ার এবং ছোটো ও মাঝারি সাইজের বেশ অনেকগুলো পুতুল আছে। সূূর্য কৌতুহলী কণ্ঠে বলল,
“তুমি ঘুমাও কোথায়?”
ভ্রু কুঁচকাল অনু। কপালে ভাঁজ ফেলে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“কোথায় ঘুমাই মানে? আমার রুমের এত বড়ো একটা খাট তোর চোখে পড়ছে না? তুই তো রায়ান ভাইয়ের মতো কালো চশমাও পরিসনি। তাহলে সমস্যা কী? চোখে কম দেখিস?”
“চোখে আমি ঠিকই দেখি। ঠিক দেখি বলেই তোমাকে প্রশ্নটা করেছি। সব জায়গা তো পুতু্লগুলোই দখল করে নিয়েছে। তোমার ঘুমাবার জায়গা কোথায়?”
“এখানেই ঘুমাই আমি। তোর এত ভাবতে হবে না।”
“তুমি সবসময় আমার সাথে এমন করো কেন?”
“কেমন করি?”
“কেমন যেন ছ্যাঁত করে ওঠো কিছু বললেই। হেসে কথা বলতে পারো না?”
“না, পারি না।”
সূর্য রাগে বসা থেকে উঠে গেল। চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
“তোমার জন্য রায়ান ভাই-ই একদম ঠিক আছে। তোমাকে আচ্ছামতো জব্দ করতে পারে!”
সূর্য চলে যাচ্ছিল, অনু পেছন থেকে বলল,
“বেয়া’দবের বেয়া’দব! আমার সাথে বেয়া’দবি করিস তুই? তোর বড়ো বোন হই আমি।”
সূর্যও ফের ঘুরে দাঁড়িয়ে বলল,
“এত ভাব নিও না। মাত্র এক বছরের বড়ো! এটাকে কেউ গোণায় ধরে না।”
“কেউ গোণায় ধরুক বা না ধরুক। আমি তোর বড়ো বোন মানে বড়ো বোন!”
“তোমাকে আমি বড়ো বোন মানলে তো? মানি না আমি।”
সূর্য চলে গেল রুম থেকে। পেছন থেকে অনু চিৎকার করে বলছে,
“অ’সভ্য ছোটো জ’ন্তু, জা’নো’য়া’র! ফুপুর কাছে যদি বিচার না দিয়েছি তারপর বলিস!”
এরপর সে জিদ্দে হাতে থাকা আইসক্রিমের কাঠিটা ছুঁড়ে মারল বারান্দায়। এরপরই সে আঁতকে বসা থেকে উঠে দাঁড়াল। এই সময়ে রায়ান ভাই আসলো কোত্থেকে! আর এলো তো এলো এখনই? কাঠিটা গিয়ে তার গায়েই পড়তে হলো? একদম তার হাতের সাথে লেপ্টে লেগে আছে কাঠিটা। রায়ান কাঠিটা তুলে অনুর দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকাল। অনু ফাঁকা ঠোঁক গিলে বলল,
“আমি… আমি ইচ্ছে করে করিনি!”
রায়ান ধমক দিয়ে বলল,
“ম্যানার্সলেস! এভাবে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলছিস কেন? আর অস’ভ্যের মতো একা একা কাকে গালা’গালি করছিলি?”
অনু জবাব না দিয়ে মাথা নত করে দাঁড়িয়ে রইল। রায়ানও আর কিছু বলল না। কাঠিটা অনুর রুমে ছুঁড়ে ফেলে নিজের রুমে চলে গেল। অনু বসে বসে এখন কপাল চাপড়াচ্ছে। রায়ান বাড়িতে আসার পর থেকে একটার পর একটা শুধু উলটা-পালটা কাজ ঘটেই যাচ্ছে। মন তো কোনোভাবে জয় করতে পারছেই না বরং আরো উলটা-পালটা কাজ করে মেজাজ বিগড়ে দিচ্ছে। কবে যে এই নিষ্ঠুর লোকের মনটা সে গলাতে পারবে!
রাতে আজ রায়ানের পছন্দের কচুশাক দিয়ে চিংড়িমাছ রান্না করা হয়েছে। খুশি হওয়ার বদলে রায়ান শঙ্কিত হয়ে জিজ্ঞেস করল,
“অনুর সেই জংলা কচু নাকি?”
মুখটা চুপসে গেল অনুর। জুঁই মুচকি হেসে বলল,
“ভাইয়া! এভাবে কেন বলছ? কচু গাছ তো আর অনু লাগায়নি।”
“ভাগ্যিস ও লাগায়নি গাছ! তাতেই যেই অবস্থা।”
বড়ো চাচি ধমক দিয়ে বললেন,
“সবসময় এমন করিস না তো ওর সাথে। এই কচু শাক তোর ফুপা গিয়ে নিয়ে আসে। রান্না করার পর খেয়ে দেখেছি। গলা চুলকাবে না। নিশ্চিন্তে খা।”
“ফুপা কীভাবে জানল আমি কচুশাক খেতে চেয়েছি?”
ছোটো ফুপি বললেন,
“আমিই ফোন করে বলেছিলাম। তুই খেতে চেয়েছিস বলে কথা!”
“তোমরাও না ফুপু!”
দাদা তখন হেসে বললেন,
“দাদুভাই এখনই ফুপুদের, চাচিদের আদর যা খাওয়ার খেয়ে নে। পরে বউ এলে কিন্তু আর এসব পাবি না। তখন তো বউয়ের আঁচল ধরে ঘুরবি।”
এ কথা শুনে অনু আড়চোখে তাকাল রায়ানের দিকে। রায়ান মুচকি মুচকি হাসছে। গোমড়ামুখো ছেলেটাকে হাসলে কী সুন্দর যে লাগে! তাও মুখটা গোমড়া করে রাখবে। কেন? কী সমস্যা? হাসির জন্য কি তাকে কোনো ট্যাক্স দিতে হয়? হয় না তো। তাহলে হাসতে কী সমস্যা? উলটো অনুর সাথে কথা বললেই খ্যাঁকখ্যাঁক করতে থাকে!
রায়ান হেসে বলে,
“এরকম মনে হলে বিয়েই করব না কখনো। রিয়াদ ভাইয়ার মতো আইবুড়ো হয়ে থাকব।”
অনু চোখ পিটপিট করে তাকাল। মনে মনে বলতে লাগল,
“হ্যাঁ, খেয়ে তো কাজ নেই আর! পরে আপনার জন্য আমাকেও আইবুড়ো হয়ে থাকতে হবে।”
বড়ো ফুপি বললেন,
“তোর রিয়াদ ভাই আইবুড়ো থাকবে কে বলল? ওকে এবার আমরা বিয়ে করিয়েই ছাড়ব।”
রায়ান রিয়াদের দিকে তাকিয়ে ভাত মাখতে মাখতে বলল,
“তাই নাকি? ভাইয়া বিয়ে করবে?”
তারপর বাবার দিকে তাকিয়ে বলল,
“আব্বু? ভাইয়া তাহলে বিয়ে করবে?”
রমিজ চৌধুরী দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললেন,
“আমি জানিনা রে বাপ! তোদের বিয়ে দেখে মনে হয় না আমি ম’র’তে পারব!”
রিয়াদ কিছুটা বিরক্ত কিন্তু শান্তকন্ঠে বলল,
“আহা আব্বু! এসব কী ধরনের কথাবার্তা? আমি বিয়ে না করলাম তাতে কী হলো? রায়ান তো আছে। ওর তো এখন পড়াশোনাও শেষ। ওর জন্য মেয়ে দেখো তোমরা।”
রায়ান বাঁধা দিয়ে বলল,
“আমাকে ব’লির পাঠা করিস না ভাইয়া!”
দাদু এবার বিরক্ত হয়ে বললেন,
“তোদের কাউকেই বিয়ে করতে হবে না। বিয়ে দেবো আগে জুঁইকে।”
জুঁই ন্যাকাসুরে বলল,
“না, দাদু!”
“নানুভাই, তুমি বরং আগে অনু আপুর বিয়ের ব্যবস্থা করো।” অনুর দিকে তাকিয়ে বলল সূর্য।
অনু চোখ পাকিয়ে বলল,
“একটা থা’প্প’ড় দেবো! ফুপি, তুমি সূর্যকে কিছু বলবে? ও কিন্তু খুব বাড় বেড়েছে।”
বড়ো ফুপি অনুকে শান্ত করে বললেন,
“ওর কথা বাদ দে।”
খেয়ে-দেয়ে সবাই যে যার ঘরে চলে গেছে। অনু পড়তে বসেছিল। পানি পিপাসা পাওয়ায় দেখল বোতল খালি। বোতল নিয়ে আবার নিচে নামল রান্নাঘরে যাওয়ার জন্য। বড়ো চাচি তখন কফি বানাচ্ছিলেন। ফিল্টার থেকে পানি ভরে চলে আসার সময় বড়ো চাচি বললেন,
“অনু কি ওপরে যাচ্ছিস?”
“হ্যাঁ।”
“কফি দুইটা নিয়ে যাবি মা? রিয়াদ আর রায়ানকে দিয়ে দিবি। পারবি?”
“হ্যাঁ, পারব। দাও আমাকে।”
“লিলিকে চা দিয়ে তোর ফুপুদের রুমে পাঠিয়েছি। এখনো আসার নাম নেই। দেখ গিয়ে গল্প জুড়ে দিয়েছে মনে হয়। ওকে নিচে আসতে বলবি।”
“আচ্ছা ঠিক আছে।”
“পানির বোতল রেখে যা। আমি লিলিকে দিয়ে পাঠিয়ে দেবো। একসাথে এতকিছু নিতে পারবি না।”
“আচ্ছা।”
“সাবধানে সিঁড়ি দিয়ে উঠিস। হাতে পড়ে না যে আবার।”
“আচ্ছা বাবা আচ্ছা! এত ভয় পেও না তো তুমি।”
কফি নিয়ে অনু আগে রিয়াদের রুমে গেল। দরজায় নক করে বলল,
“আসব ভাইয়া?”
রিয়াদ শুয়ে শুয়ে একটা বই পড়ছিল। অনুকে দেখে উঠে বসে বলল,
“আয়।”
অনু একটা মগ এগিয়ে দিয়ে বলল,
“আপনার কফি।”
রিয়াদ মগটা তড়িঘড়ি করে অনুর হাত থেকে নিয়ে বলল,
“তুই কেন এনেছিস? লিলি খালা কোথায়?”
“লিলি খালা মনে হয় ফুপুদের সাথে গল্প করছে।”
“ওহ। তাহলে আমাকে বলতি আমিই গিয়ে নিয়ে আসতাম।”
“উম! সমস্যা নেই ভাইয়া।”
“সমস্যা আছে। যদি হাতে পড়ে যেত?”
“পড়েনি তো।”
“তবুও! গরম জিনিস থেকে সাবধান।”
“আচ্ছা। এখন যাই? রায়ান ভাইয়ার কফিটা দিয়ে আসি।”
“ঠিক আছে যা।”
অনু রায়ানের রুমের সামনে গিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে পড়ল। বুকের ভেতর ঢিপঢিপ করছে হঠাৎ। অথচ এতক্ষণ কিন্তু তার এরকম কোনো অনুভূতিই হয়নি। নিজেকে ধাতস্থ করে অনু দরজায় নক করে বলল,
“আসব?”
চাপানো দরজার ঐপাশ থেকে রায়ান ভারিক্কি কণ্ঠে বলল,
“আয়।”
অনু দরজা ঠেলে ভেতরে গেল। বিছানায় বসে ল্যাপটপে মনোযোগ দিয়ে যেন কী করছে রায়ান। এতটাই ব্যস্ত যে একটাবার অনুর দিকে তাকানোরও প্রয়োজন মনে করল না।
অনু নিস্তেজ কণ্ঠে বলল,
“আপনার কফি। বড়ো চাচি পাঠিয়েছে।”
“টেবিলের ওপর রাখ।”
টেবিলের ওপর কফির মগ রেখেও অনু ঠায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল। প্রায় মিনিট খানেক পর কফির মগ নিতে গিয়ে রায়ান দেখল, অনু এখনো যায়নি। সে কফিতে চুমুক দিয়ে বলল,
“যাসনি এখনো? কিছু বলবি?”
“মনোযোগ দিয়ে এত কী করছেন ল্যাপটপে?” অনুর কণ্ঠে অভিমান ঝড়ে পরছে।
“অফিসের ডেকোরেশনের থিম আইডিয়া দেখছিলাম। তোর গোবর মাথায় এসব ঢুকবে না।”
অনু থমথমে মুখে বলল,
“গোবরেও কিন্তু পদ্মফুল ফোটে। আবার গোবর দিয়ে সারও তৈরি হয়। তাই এতটা অবহেলা করবেন না আমায়।”
ভ্রু কুঁচকাল রায়ান। ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলল,
“ফালতু কথা না বলে রুমে গিয়ে পড়তে বোস।”
“পড়েছি।”
“তাই? কী পড়েছিস শুনি? যা বই নিয়ে আয়। পড়া ধরব তোকে।”
“আপনার কাছে তো আমার পড়া হবে না।”
“কেন হবে না?”
“ভয়ে সব গুলিয়ে যাবে।”
“ভয় পাওয়ার কী আছে? আমি বাঘ নাকি ভাল্লুক? এগুলো সব আজগুবি অজুহাত। যাই হোক, যা তুই এখন। তোর সিরিয়াসনেস না থাকলেও আমার কাজ নিয়ে সিরিয়াসনেস আছে।”
অনুর ভীষণ মন খারাপ হলো। এভাবে রুম থেকে বের করে দেওয়ার মানে কী? সে বিষণ্ণ কণ্ঠে বলল,
“আপনি কাজ করুন। আমি চুপ করে এখানে বসে থাকি? কোনো কথা বলব না।”
রায়ান চোখ রাঙিয়ে বলল,
“একদম না। এক্ষুনী চলে যা।”
অনুর এবার কান্না-ই পেয়ে গেল। আর কোনো আবদার, অনুরোধ না করে চলে গেল নিজের রুমে। রুমে এসে দেখে ইয়ামিন অনুর টেডিবিয়ার জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। অনু ওর পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
“কী হয়েছে?”
“আম্মু বকেছে।”
“কেন?”
“ঘুমাতে বলেছিল। ঘুমাইনি তাই।”
“কেন ঘুমাসনি?”
“ঘুম আসছে না। তুমি কি আমাকে একটা গল্প শোনাবে আপা?”
“আমি তো গল্প পারি না, সোনা। তবে হ্যাঁ, তুই চাইলে গান শোনাতে পারি। শুনবি?”
ইয়ামিন খুশি হয়ে বলল,
“হ্যাঁ।”
“দাঁড়া গিটারটা নিয়ে আসি।”
অনু ওয়ারড্রবের ওপর থেকে ওর গিটারটা নিয়ে এলো। এটা একটা সময়ে রায়ানের ছিল। এরপর অনুকে দিয়ে সে নতুন একটা কিনেছে। তখন থেকে এটা অনুর গিটার। খুব যত্ন করে রেখে দিয়েছে। রায়ানের মতো অত ভালো গিটার বাজাতে না পারলেও মোটামুটি ভালোই পারে। অনু গিটার নিয়ে কোন গান গাইবে ভাবতে লাগল। এরপর রায়ানের কথা ভেবে গান শুরু করল সে,
“এ প্রণয়ে অন্ধ হলাম
প্রাণের আলো তুমি,
দুঃখ এলে ভুলে যেও না
বাঁচব না তো আমি।
এ প্রণয়ে কথা দিলাম
র্সূয চন্দ্র তাঁরা,
স্বাক্ষী থেকো মরণ যেন হয়,
হয় না তোমায় ছাড়া।
আমি তোমার মনের ভিতর
একবার ঘুরে আসতে চাই,
আমাকে কতটা ভালোবাসো
সেই কথাটা জানতে চাই।
ভালোবাসার যত কথা
হৃদয় দিয়ে শুনতে চাই
তুমি শুধু আমার হবে,
পৃথিবীকে বলতে চাই।”
রায়ান এবং অনুর রুমটা পাশাপাশি পড়েছে। তাই অনুর গান সবথেকে ভালো সে শুনতে পেয়েছে। অন্যরাও তার গান শুনেছে। কিন্তু রায়ানের কাজে মনোযোগ নষ্ট হচ্ছিল। সে অনুকে ধমকানোর উদ্দেশে রুমে আসতেই জানালা দিয়ে দেখতে পেল কতটা আবেগ দিয়ে গান গাইছে অনু। অন্যদিকে দুই গালে হাত রেখে মুগ্ধ হয়ে অনুর দিকে তাকিয়ে আছে ইয়ামিন। এই দৃশ্য দেখার পর আর ধমকাতে পারল না রায়ান। উলটো জানালার পাশে দাঁড়িয়ে চুপচাপ অনুর গান শুনছিল।
তুমি অজান্তেই বেঁধেছ হৃদয় পর্ব ২
হঠাৎ কাঁধে কারো হাতের স্পর্শ পেতেই হকচকিয়ে পেছনে তাকাল। দেখল রিয়াদ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রায়ানের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে রিয়াদ বলল,
“অনু কিন্তু খুব ভালো গান গায়। তাই না?”
রায়ান মুখে কোনো জবাব দিল না। হালকা মাথা দোলাল শুধু।