তোমার নামে লেখা চিঠি পর্ব ৪০
নওরিন মুনতাহা হিয়া
ইনায়ার কোলে থাকা বাচ্চা তার ছোট ছোট হাত দিয়ে ইনায়ার মুখে আঘাত করছে। এতোখন ইনায়া আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হয়েছে, তাকে কোলে নিয়ে আদর করে নি যার কারণে তার অভিমান বা রাগ হয়েছে। তাদের দুইজনের খুনসুটির মধ্যে রুমে প্রবেশ করে সায়মা, সায়মা কোমড়ে হাত দিয়ে বলে –
“- আয়ান তুমি সকালে ঘুম থেকে উঠে মামির রুমে চলে এসেছো? মামি অফিসে যাবে রেডি হতে দাও সোনা?
সায়মা কথাটা বলে এগিয়ে আসে ইনায়া আর আয়ানের কাছে, এরপর আয়ানকে হাত বাড়িয়ে তার কোলে যাওয়ার জন্য ডাকে। কিন্তু আয়ান আরো শক্ত করে ইনায়াকে জড়িয়ে ধরে, সে তার মাম্মাকে ছেড়ে যাবে না। আয়ানের এমন কাণ্ড দেখে ইনায়া আর সায়মা দুইজনে হেঁসে উঠে। সায়মা বলে –
“- কি সুন্দর মামিকে পেয়ে মা কে ভুলে গেলো। মামি একবার অফিসে যাক তখন দেখব আয়ানকে কে কোলে নেয় “।
অরণ্যর বাড়ির প্রাণ ফিরে এসেছে, সকলে এখন হাসি খুশি। প্রায় এক বছর ছয় আগে সায়মার সন্তান হয়েছে যার নাম আয়ান, আয়ানের বাবা বিদেশ থেকে কয়েকদিন আগেই ফিরে এসেছে। অরণ্য কোমায় চলে যাওয়ার পর থেকে তার কোম্পানির সকল দায়িত্ব ইনায়া পালন করছে। অরণ্যর বাড়িটা এখন আগের মতো মৃত মানুষ দিয়ে ঘেরা নয়, বরং এখন প্রতৈকে হাসি খুশি। তবে সকল সুখ আর পূর্ণতার মধ্যে একজনের অনুপস্থিত সবাইকে পীড়া দেয়। যার নাম অরণ্য, ইনায়ার জীবন এখন যান্ত্রিক হয়ে গেছে সকালে অফিস আর রাতে বাড়ি ফিরে আসা।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
দুইবছরে তার জীবন এমন করে চলছে, প্রতিটা দিন তার কাছে কয়েকশত বছরের সমান। অফিসের দায়িত্ব, সংসারের দায়িত্ব, সবার সাথে হাসি মুখে কথা বলা সব নাটক করে সে আজ বড্ড ক্লান্ত। একটু ভালোবাসার কাঙাল সে, তবে ইনায়ার অন্তের চাওয়া পাওয়া তার অন্তেরই দাফন করে সকলে মিথ্যা ভালো থাকার নাটক করে যাচ্ছে।
রেহানা বেগম এখন সংসারে এক মায়ের সকল দায়িত্ব পালন করে। আগের মতো ঘরে বন্ধী থাকেন না, বাড়িতে থাকা অবস্থায় নাতি আর মেয়ের সাথে সময় কাটান। আর বাকিটা সময় নামাজ পড়ে অরণ্যর সুস্থতার জন্য দোয়া করেন। অরণ্য কোমায় যাওয়ার পর থেকে হাসপাতালে নিয়মিত যান ওনি, কেবিনের কাছে গিয়ে অরণ্যর হাত ধরে কান্না করেন। কিন্তু অরণ্য এখন বড্ড নিষ্ঠুর হয়ে গেছে, সকলের কান্না, কষ্ট তার পাষাণ হৃদয় গলাতে পারে না। সে শান্ত চুপচাপ হয়ে বিছানায় শুয়ে থাকে, যেনো কোন মৌন ব্রত রেখেছে।
চৌধুরী বাড়ির সাথে এখন অরণ্যর পরিবারের সুসম্পর্ক হয়েছে, অরুণা বেগম আর মিলন সাহেব প্রায় এই বাড়িতে আসে। রেহানা বেগম আর সায়মা ও ওই বাড়িতে যায়,ইনায়া আর ইভান এখন বন্ধুর মতো থাকে। বিজনেস সহ অন্য বিষয়ে একে অপরের সাহায্য সহযোগিতা করে। ইভান আর প্রভার সম্পর্কে আগের মতো দুরত্ব নেই, একসাথে কাজ করার ফলে তারা এখন বন্ধুর মতো চলাচল করে। কখনো কোনো মানুষের অনুপস্থিততে জীবনে থেমে থাকে না, শুধু সকল কষ্ট লুকিয়ে হাসতে যানলে জীবনে সুন্দর। শহরের সবচেয়ে বড়ো কোম্পানির মধ্যে একটা চৌধুরী কোম্পানি আর অরণ্যর কোম্পানি যার নাম এআরসি “।
চৌধুরী বাড়িতে ইনায়া উপস্থিত হয়, গত কয়েকদিন ধরে অরুণা বেগম অনেক অসুস্থ। অফিসের অতিরিক্ত কাজের চাপের কারণে ইনায়া এতোদিন বিজি ছিলো, কিন্তু আজ সকল কাজ শেষ করে দেখা করতে এসেছে। ইনায়া এখন অরুণা বেগমের রুমে অবস্থান করছে, অরুণা বেগমের হাত ধরে বলে –
~~ মামণি তোমার শরীরের অবস্থা এখন কেমন? ডক্টর কি বলেছে?
অরুণা বেগম বলে –
“- আগের চেয়ে ভালো। ডক্টর ঔষধ দিয়েছে বলেছে নিয়মিন ঔষধ খেলে সুস্থ হয়ে যাব “।
ইনায়া অরুণা বেগমের সাথে অল্প সময় কথা বলে, অরুণা বেগম খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ইনায়ার মুখমণ্ডল, চেহারা সবকিছু
পর্যবেক্ষণ করে এরপর হতাশার নিশ্বাস ছাড়ে। জন্ম থেকে ইনায়া মেয়েটা বড্ড অভাগা, জন্মের পর তার বাবার মৃত্যু হয়। সাত বছর বয়সী তার মায়ের অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয়, ইভানের সাথে জোর করে বিয়ে দেয় অরুণা বেগম কিন্তু সেখানে ও সুঃখ হয় না। আবার অরণ্যর সাথে বাধ্য হয়ে বিয়ে করে, তবে আজ অরণ্য ও এক্সিডেন্ট করে কোমায় চলে গেছে।
অরুণা বেগমের বড্ড কষ্ট হয় ইনায়ার জন্য, মায়ের মন মেয়ে যদি কোনো কথা মুখ দিয়ে না ও বলে তবুও তা বুঝে নেয়। তার ইনায়া ভালো নেই, যা ইনায়ার চোখ মুখ দেখে ওনি বুঝে যান। শুধু সকলের সামনে মিথ্যা নাটক করে যায়, তার বান্ধবীর করা প্রমিজ সে রাখতে পারল না। অরুণা বেগমের হাত ইনায়ার মাথায় চলে যায়, আলতো করে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। ইনায়া শান্ত হয়ে যায়, কতদিন পর আজ তার মামণির আদুরে হাতের ছোঁয়া অনুভব করছে। হৃদয়ের কোণে জমে থাকা কষ্ট যেনো, তার চোখ দিয়ে পানির বিন্দুর ন্যায় ঝরে যাচ্ছে। ইনায়ার চোখে পানি দেখে অরুণা বেগম তার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়, ইনায়া শক্ত করে তার মামণিকে জড়িয়ে ধরে আর বলে –
“- মামণি সুখ কোথায় কিনতে পাওয়া যায়? আমি সমস্ত টাকা দিয়ে সুখ কিনতে চাই? সবসময় কেনো আমাকে সব কষ্ট সয্য করে হয়, কব অন্যায় বা পাপ করেছি আমি মামণি.
অরুণা বেগম ইনায়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে, ইনায়া অঝরে কান্না করে দেয়। সে আজ বড্ড টায়ার্ড, জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়া সৈনিক। সামান্য সুখের আশায়, দুঃখের সমুদ্র ডুবে যাওয়া এক পরাজিত নারী। প্রতিটা মানুষের জীবনে কিছু সুখের মুহূর্ত থাকে, যা দিয়ে দুঃখের সময়টা সে পার করে দেয়। কিন্তু অভাগী ইনায়ার জীবনে শুধু দুঃখ, সুখ বুঝি সবার ভাগ্যে সয্য হয় না। একাকিত্ব নামক শব্দটা ইনায়ার সমস্ত অস্বস্তি জুড়ে রয়েছে, যা তার জীবনটা বিষিয়ে তুলছে। বড্ড শখ হয় ইনায়ার, সাধারণ নারীর মতো স্বামী সংসার, সন্তান নিয়ে সুখে থাকার। কিন্তু কিছু মানুষের শখ৷ শুধু সপ্ন হয়ে থেকে যায, ভাগ্য আর বাস্তবতার লড়াইয়ে নিয়মিত কাছে হেরে যায়।
মায়ের মৃত্যুর সময় যদি ইনায়া ও মারা যেতো, তবে হয়তো জীবনে এতো কষ্টের সম্মুখী হতে হত না। মৃত্যু কোনো সমাধান না, কিন্তু জীবন যদি মৃত্যু যন্ত্রণা থেকে অধিক বিষাদময় হয়ে যায় তবে মৃত্যুই শ্রেয়। প্রায় এক ঘণ্টা অরুণা বেগমের সাথে সুঃখ দুঃখ সহ সব বিষয় নিয়ে কথা বলে ইনায়া। তারপর রুম থেকে বের হয়ে যায়, অফিসের কাজে ইভানের সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে তার। কম্পিউটারে মুখ গুঁজে বসে আছে ইভান, তার সম্পূর্ণ দৃষ্টি এখন কাজের উপর। হঠাৎ দরজায় নক করার শব্দ শুনে, কম্পিউটার থেকে মুখ না তুলেই বলে –
“- প্রভা রুমে আসার জন্য তোমার অনুমতি নেওয়ার কি দরকার? চলে আসো।
প্রভার নাম শুনে ইনায়া ভ্রু কুঁচকে তাকায় ইভানের দিকে, এরপর মুখে একটা মিষ্টি হাসি বজায় রেখে রুমের ভিতরে প্রবেশ করে। কম্পিউটারে মুখ গুঁজে এখনো কাজ করছে ইভান, ইনায়া গিয়ে পাশে বসে। প্রভা সবসময় ইভানের রুমে আসে, তারা একসাথে গল্প করে, কথা বলে, কাজ করে যার জন্য ইভান মনে করেছে প্রভা এসেছে। ইভান তার পাশে কারো উপস্থিতি বুঝতে পারে, এরপর বলে –
“- প্রভা তুমি এমন চুপচাপ বসে আছে কেনো? কথা বলছ না?
প্রভাকে চুপচাপ থাকতে দেখে ইভান কাজ করা বন্ধ করে ফিরে তাকায়, তবে হঠাৎ করে ইনায়াকে দেখে অবাক হয়ে যায়। ইভান হয়তো ইনায়াকে প্রতাশ্যা করে নাই, ইভানের এমন মুখ করা দেখে ইনায়া হেঁসে উঠে। ইভান অবাক হয়ে বলে –
“- ইনায়া তুমি এখানে? আর প্রভা কোথায় ও আসে নাই?
“- না ইভান ভাই প্রভা আসে নাই। কিন্তু ইভান ভাই মনে হয় আপনি প্রভার জন্য, অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করছেন?
ইনায়ার কথায় ইভান থতমত খেয়ে যায়, ইভান বলে –
“- না এমন কোনো বিষয় না। আসলে প্রভা বিকালে আমার রুমে আসে, কাজের বিষয়ে জানার জন্য এইজন্য মানে “।
“- আসলে মামণির অসুস্থতার জন্য কয়েকদিন ধরে আসতে চাই। কিন্তু কাজের প্রেসারে আসা হয় নাই, যার জন্য আজ চলে আসলাম। আর অফিসে কাল মিটিং রয়েছে, যার জন্য এসেছি “।
“- ওকে “।
ইনায়া আর ইভান অফিসের মিটিং বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা বলছে। প্রায় দশ মিনিট পর কথা বলা শেষ হয়, ইনাযা আর ইভানের মধ্যে এখন কোনো ধরনের ভালোবাসার সম্পর্ক নাই। ইভান এখন তার কাজ আর বক্তিগত জীবন নিয়ে বিজি, ইভান যানে ইনায়া কখনো অরণ্যর জায়গায় অন্য কোনো পুরুষকে দিতে পারবে না। অসম্ভবের প্রতি অসম্ভব টান রেখে লাভ। যে মানুষ তোমার ভাগ্যে নাই, তার জন্য বৃথা চেষ্টা করার কোনো প্রয়োজন নাই। ইনায়া ইভানের থেকে বিদায় নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
চৌধুরী বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে যাচ্ছে ইনায়া, উদ্দেশ্য তার এখন হাসপাতালে যাওয়া। ইনায়া যখন সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামবে তার আগেই একজন পিছন থেকে বলে উঠে –
“- বিবাহিত মেয়ে মানুষ হয়ে ও অন্য ছেলের রুমে এতোখন থাকা কোন ভদ্র নারীর কাজ? জামাই হাসপাতালে ভর্তি মরে তো যায় নাই?
হঠাৎ এমন কথা শুনে ইনায়া দাঁড়িয়ে যায়, চৌধুরী বাড়িতে এমন কথা তাকে কে বলতে পারে সেটা সে যানে। প্রতিটা কথায় ইনায়ার চরিত্র নিয়ে কথা বলেছে, যা কারণে ইনায়ার আত্মসম্মানে লেগে যায়। যত তুমি চুপ করে সব সয্য করবে, ততই মানুষ তোমাকে দুবর্ল ভেবে তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করবে। ইনায়াকে এতোখন কথা শুনানো মহিলা আর অন্য কেউ না প্রভার মা, বিদেশে এতোদিন থাকার পর ও যে একটা মানুষের মন মানসিকতা এতোটা নিচুঁ হতে পারে সেটা ওনাকে না দেখে যানত না ইনায়া। চৌধুরী বাড়িতে না আসার অন্যতম একটা কারণ হলেন ওনি। মহিলা অতিরিক্ত ফাজিল, আর অভদ্র।
প্রায় একমাত্র আগেই ওনি বিদেশ থেকে চৌধুরী বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়েছেন। প্রভা যতটা ভদ্র আর শান্ত। তার মা ঠিক ততটাই অভদ্র আর বেয়াদব। এতো বয়স হয়ে যাওয়ার পর ও কোথায় কোন কথা বলতে হবে, এর নূন্যতম জ্ঞান বা বুদ্ধি ওনার নেই। প্রভার মা শায়লা বেগম ইনায়াকে একদম সয্য করতে পারে না। যার কারণ হয়তো ইভান আর ইনায়ার বিয়ের ঘটনা, নিজের মেয়ের সাথে ইভানের বিয়ে দিতে চান ওনি। ইনায়া পিছনে ফিরে শায়লা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলে –
“- মিসেন শায়লা বেগম আপনি এই বাড়ির অতিথি, আর আমার মামণির বান্ধবী যার জন্য আপনাকে আমি সম্মান করি। কিন্তু ইনায়ার চরিত্র নিয়ে যদি কেউ কথা বলে, তবে ইনায়া তাকে ছেড়ে দেয় না। যথেষ্ট বয়স হয়েছে আপনার কোথায় কোন কথা বলতে হবে, সেটা আপনার নিশ্চয়ই জানা রয়েছে “।
ইনায়ার কথায় শায়েলা বেগম হাসে, এর মেয়ের সাথে তার শএুতা নেই। কিন্তু ইভান আর প্রভার বিয়ের সবচেয়ে বড়ো বাধা ইনায়া, স্বামীর অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে অন্য পুরুষের সাথে সময় কাটায় সে। প্রভা খুব সহজ সরল মেয়ে, যার কারণে ইনায়ার এইসব জঘন্য খেলার বিষয়ে সে ধারণা করতে পারে না। কিন্তু শায়েলা বেগম ইনায়াকে ছেড়ে দিবেন না, অসম্ভব। শায়েলা বেগম বলে –
“- যার চরিত্র ঠিক নাই, সে আবার চরিত্র নিয়ে কথা বলছে। প্রায় দশ মিনিট আগেই ইভানের রুমে গেলে, জামাই হাসপাতালে ভর্তি এইজন্য অন্য পুরুষের সাথে “।
শায়েলা বেগম কথাটা শেষ করার আগেই, ইনায়া তার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখে। এরপর তেজ দীপ্ত কণ্ঠে বলে –
“- ভদ্র ভাষায় কথা বলেন আন্টি। আমার স্বামী অসুস্থ কিন্তু মারা যায় নাই কথাটা আমার মনে আছে৷ আর ইভান চৌধুরী আমার ভাসুন হন, স্বামী অসুস্থ থাকার কারণে ব্যবসা ঘর সংসার সব সামলাতে আমার একটু সমস্যা হয়। যার জন্য ভাসুর হিসাবে ইভান চৌধুরী আমাকে সাহায্য করছেন। সো ভদ্র ভাষায় কথা বলেন।
শায়েলা বেগম ইনায়ার এমন রাগ দেখে ভয় পান, তবুও ওনি বলেন –
“- ইনায়া তুমি শুধু টাকার জন্য ইভানের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়াতে চাও?
ইনায়ার ইচ্ছা করছে মহিলাকে থাপ্পড় দিতে, কিন্তু সে বয়স্ক মহিলার গায়ে হাত তুলতে পারবে না। ইনায়া বলে –
“- শুনুন আন্টি টাকার দরকার তার রয়েছে যে আপনার মতো এমন ছোটলোক। এই ইনায়া রাজ চৌধুরী টাকার প্রয়োজন নাই। শহরের সবচেয়ে বড়ো বিজনেস ম্যান আমার স্বামী, আর সে যা টাকা রেখে গেছে সেটা দিয়ে আপনার মতো এমন দশটা নষ্ট মহিলাকে কিনা যাবে। আর আমি এই বাড়ির বউ, যদি এখুনি মামণিকে আপনার বলা ব্যবহারের কথা বলি তাহলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবে বাড়ি। সো নেক্সট টাইম ভদ্রতা আর অসভ্যতা শিখে আমার সাথে কথা বলবেন, না হলে থাপ্পড় দিয়ে শিখিয়ে দিব মনে রাখবেন “।
তোমার নামে লেখা চিঠি পর্ব ৩৯
শায়েলা বেগম কিছু বলতে যাবে, এর আগেই ইনায়া সিঁড়ি দিয়ে নিচে চলে যায়। হাসপাতাল এখন সময় সাতটা বাহিরে মাগরিবের আযান শুনা যাচ্ছে, কেবিনের মধ্যে হঠাৎ অরণ্যর হাত সামান্য নড়ে উঠে। প্রায় দুইবছর পর অরণ্যর চোখ খুলে যায়, পিটপিট করে চোখ খুলে দেখে। নিজেকে হাসপাতালে বেডে আবিস্কার করে, অরণ্য মাথায় ব্যাথা করছে। সামনে থাকা দেয়ালঘড়ির মধ্যে রাত সাতটা বাজার বেল বেজে উঠছে, ঘড়ির নিচে তারিখ আর সাল রয়েছে। অরণ্য সালটা দেখে অবাক হয়ে বলে –
‘- হোয়াট দ্যা হেল।