ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৪১
মাহিরা ইসলাম মাহী
অনেক অনেক দিনের পুরনো কিছু বন্ধুসহ তাদের বাচ্চা-কাচ্চার মুখশ্রী একত্রে তৃপ্তির মুখের সামনে দৃষ্টিগোচর হতেই চোখ পিটপিট করে চায় সে।
তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানব-মানবীদের মুখশ্রী হাসি হাসি।
ঘোরগ্রস্ত তৃপ্তিকে অবাক করে দিয়ে হাসি হাসি মুখ করে আশা তাকে জরিয়ে ধরলো,
“ কেমন আছেন আপু? সব ঠিকঠাক তো?উলোটপালোট থাকলেও কোনো চিন্তা নেই।একদম টেনশনের ‘ট’ টা ও করবেন বুঝেছেন?এই যে আমরা আপনার সব ভাই-বোন আর ভাতিজা-ভাতিজিদের নিয়ে সব একদম নতুনের মতো ঠিক করে দেব।দেখবেন সব কেমন চকচকা ফকফকা লাগছে বুঝলেন তো।”
“আচ্ছা,আচ্ছা। “
তৃপ্তি বোকা হাসে। অস্ফুট স্বরে জবাব দেয়।মূলত তার সব কিছু বুঝে উঠছে সময় লাগছে।মস্তিষ্ক সব ধারণ করছে সময় নিয়ে। পাত্রের পরিবারের সামনে এমন উল্টা পাল্টা করলে কি করে হবে।কি মুশকিল!
“ এভাবে খাম্বা’র মত দাঁড়িয়ে না থেকে আমাদের ভেতর আসতে বলবি তো অতৃপ্ত আত্মা?
নাকি আমাদের এভাবে দাঁড় করিয়ে রেখেই না খাইয়ে মেরে ফেলে আত্মা বানানেোর পরিকল্পনায় নেমেছিস কোনটা?একা একা ভালো লাগছে না এখন আমাদের পিছে পড়েছিস তাইনা?”
এতগুলো দিন পর সুজনের রাশভারী কন্ঠস্বরে তৃপ্তি চমকে চাইলো।
সুজনের কথায় মেয়েটা ভারী লজ্জা পেল।
ইশশ দেখ চমকের ঠেলায় সে তো সব ভুলেই বসেছে।
তৃপ্তি সকলকে ভেতরে বসতে তাগাদা দেয়।
নিস্তব্ধ ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে সুজনের কানে কানে ফিসফিস করে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“ ওভার এক্টিং করিস নারে সুজন মাঝি।আমরা এখানে এসেছি মেয়ে দেখতে, মেয়ের মা কে দেখতে নিশ্চয়ই নয়।”
সুজন ভ্যাবাচ্যাকা খেল।কি আশ্চর্য! সে কখন ওভার এক্টিং করলো।
মানুষের সংখ্যা পরিমাণে অনেক।বড়’রা সোফায় বসলো।কেউ কেউ ডাইনিংয়ের চেয়ার নিয়ে হাজির হলো। যেন এটা তাদের নিজের বাসা একটুকরো ভেদাভেদ নেই।
বাকিদের জায়গা হলো না। তারা সাচ্ছন্দ্যে মেঝেতে হাটু মুড়ে বসে পড়লো।
“ এমা তোমার এভাবে মেঝেতে বসো না প্লিজ। কষ্ট হবে তোমাদের, আমি চেয়ার বের করে দেই।”
আদ্রিত মিষ্টি করে হাসলো।
“ কোনো দরকার নেই আন্টি আমরা এখানেই ঠিক আছি।আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না।”
আদ্রিত জানে ভেতরে আর কোনো চেয়ার নেই।ওসব মিছে বাহানা মাত্র।
ওদিকে আদ্রিতের হঠাৎ এমন পরিবর্তনে সকলে তার দিকে ড্যাবড্যাব করে চেয়ে।বিশেষ করে মাহরিসা,নিস্তব্ধ এবং তাসফি।
ছেলেকে এত সুন্দর করে হাসতে দেখে তাসফির কলিজা ঠান্ডা হলো।তার চিৎকার করে বলত ইচ্ছা হলো,
“ বাজান গো তুই এভাবেই হেসে খেলে ভালো থাক, সুখে ঠাক আজীবন।তা যে অছিলায় হোক না কেন।আমি নির্দিধায় মেনে নেব। হয়তো না হলাম আমি সে হাসির কারণ। ক্ষতি কি তাতে।উহু কোনো ক্ষতি নেই, একদম নেই।”
সাদাফের জায়গা হয়েছে মেঝেতে।
বেচারা পাত্রী দেখতে এসে মেঝেতে স্থান পেয়েছে।এতবড় অপমান মেনে নেওয়া সম্ভব?
সে যে পাত্র তাতে কারো কোনো তোয়াক্কাই নেই কি আশ্চর্য।
সাদাফ ভেবে রেখেছে।পালানোর সকল পরিকল্পনা সে করে ফেলেছে।
হ্যাঁ পালাবে সে।
আজ যদি সত্যি সত্যিই আশা তাকে বিয়ের জন্য অতিরিক্ত চাপ দেয় যেই মুহুর্তে কাজী সাহেব এসে হাজির হবে সাদাফ টুক করে বাথরুমের বাহানা দিয়ে চট করে এক দৌড়ে মেইনডোর খুলে পগারপার।
তার বন্ধুরা তার জন্য সিলেটের টিকিট ওও কেটে রেখেছে।
এখান থেকে সোজা যাবে সে পাহাড়ে।
ঘাম ঝরিয়ে পাহাড় বেয়ে উঠবে।ঠিক যখন সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠে দম নেমে হাত পা ছড়িয়ে চিৎকার করে নিজের মনের অতি অতি গোপন কথাটা সে বলবে।
সপ্তাহে আর সে বাড়ি মুখো হবে না।গোল্লায় যাক বিয়ে সাদি।
সাদাফ বসেছে আশা’ মায়ের ঠিক পায়ের নিকট।
“ শোন রে পান্ডা একদম শান্ত হয়ে বসে থাকবি।একদম উলোটপালোট কিছু করতে চেষ্টা করবি তো তোর বাপ সহ তোকে বুড়িগঙ্গায় ছুৃড়ে ফেলে দিয়ে আসবো।”
সাদাফ ফিসফিস করে বলল,
“ তাই দাও গো মা।তাই দাও। তোমার দুটো পায়ে পরি। অন্তত এই জ্বালা থেকে আমায় মুক্তি তো দাও।”
মেয়ের বিয়ের পাত্রপক্ষ হিসাবে এভাবে চমৎকৃত ভাবে নিজ এত পুরোনো বন্ধুদের পাবে তা যেন তৃপ্তির নিকট অকল্পনীয়। খুশিতো চোখ ভিজে আসছে তার।
হেল্পিং হ্যান্ড রহিমা খালা ফিসফিস করে বলল,
“ আপাজান গো এই ভাবে কাঁদতাছেন কেন আপনি? দেখদিনি কি কান্ড বাসা ভর্তি মেহমান এমনে মালকিনে কাঁনলে হয়?
আমি মুরুক্ষ, সুরক্ষ মানুষ আপনাগো এত বড়লোকি কারবার,সারবার বুঝি নাকি বলেন?”
তৃপ্তি আনন্দে চোখ মুছে বলল,
“ রহিমা খালা আমি কি আপনাকে একবার জরিয়ে ধরবো?”
রহিমা খালার চোখ চকচক করে উঠলো।
আনন্দে এবার তার চোখ ভিঁজে উঠলো।
আহাঃ দেখদিনি কি আশ্চাইর্য কান্ড সে কেন কাঁদতাছে এহন।
“ কি যে কন না আপাজান আমাগো মতন হলুদ, মশলাযুক্ত গন্ধ ওয়ালা মানুষদের কি আপনাদের মত বড় বড় পেশার মানুষ জনের জরিয়ে ধরা সাজে।”
তৃপ্তি রহিমা খালাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।বলল,
“ খালা আপনি ভীষণ খারাপ একটা মানুষ জানেন তো।সবসময় এতদিকে আপনার কেন খেয়াল রাখতে হবে বলুন তো?”
“ কি যে কন না আপাজান আমি খারাপ মানুষই ভালো আছি।অতি ভক্ত হইলো গিয়া চোরের লক্ষণ।আমি মোটেও চোর হইবার চাইনা।
চোর অপবাদ মোর দুই চক্ষু’র বিষ বুঝলেন আপাজান।”
তৃপ্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে রহিমা খালা নিজেও সকলকে হালকা নাস্তা পরিবেশন করে।
নিজের আনা লাল জমিনের কালো পাড়ের শাড়িটা অবশেষে অদিতিকে পরিয়ে খান্ত হয় নাওমী।
বাহ ভারী মিষ্টি লাগছে মেয়েটাকে।
ফর্সা গায়ে একদম জ্বলজ্বল করছে শাড়িখানা।
সাজ কম্পিলিট করে অদিতির কপালে টিপ দিতে গিয়েও সে থেমে গেল।
ছোট বেলায় মুরুব্বি গন বলতেন কপালে টিপ, হাতে নেইলপালিশ নিয়ে বাহিরে ঘুরলে নাকি মৃত্যুর পর বিষাক্ত সাপগুলো এসে একটার পর একটা তোমার কপালে, নখে ছোবল মারবে।
ক্ষতবিক্ষত করবে সে স্থান।
আবার অনেক আলেম বলেন টিপ অন্য ধর্মের অনুকরণ।তাই মুসলিম মেয়েদের এটা না ব্যবহার করাই ভালো।ঘরের ভেতর একান্ত ভাবে স্বামীকে দোখানোর জন্য সাজসজ্জা করা গ্রহনযোগ্য।
নাওমী মুচকি হেসে ওটা রেখেদিলো।বাসরের সময় সে ঠিক ওটা তার অতিথি পাখির কপালে বসিয়ে টেবে।
আদরের সময় তাহার সোয়ামীই তাহা চুমু দিয়া খুলে নেবে।তার তাতে কি।
অদিতি লজ্জা পায়।এই নাওমী টা ইদানীং ভীষণ দুষ্টু হয়েছে।কই আগে তো এমন ছিল না। ওই যে কথায় আছেনা ‘সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে।’
তার বান্ধবীর হয়েছে সেই দশা।
মাহীন তাড়া দেয়,
“ কিরে তৃপ্তি, তৃপ্তি করে শুধু খাইয়েই বসিয়ে রাখবি নাকি? মেয়ে কে আন।আর কতকাল লুকিয়ে রাখবি।এবারে আমরাও একটু দেখি। “
তৃপ্তি লজ্জা পায়।ইশশ সে তো সব ভুলেই বসেছে। দিন দিম এত ভুলো মনা হচ্ছে না সে।
রহিমা খালা ঠিকই বলে,
“ আপাজান আপনার হইলো গিয়া প্রতিদিন এক গ্লাস করে বাদামের জুস খাওনের দরকার। তাইলে আপনার ডাক্তারী ব্রেন ভালো থাকবো।”
তৃপ্তির এবার থেকে তাই করতে হবে দেখছি।
নাওমী অদিতি কে নিয়ে হাসি মুখে ড্রয়িংরুমে হাজির হয়।
অদিতির ভীষণ লজ্জা লাগে।
এমন পরিস্থিতিতে পরবে সে আগে জানলে কবেই পালাতো।সাধ করে বিয়ে বসতে চাইতো না।মোটেও না।
শেষমেশ কিনা সাদাফ ভাইয়া।উফফ।দুঃখের চাইতে লজ্জাটাই এখন সে বেশি পাচ্ছে।
নাওমীর সঙ্গে অদিতিকে দেখে সাদাফের চক্ষু চড়কগাছ।
শেষমেশ কিনা মা এই পুচকে মেয়েকে তার জন্য ঠিক করেছে। কি আশ্চর্য। কি আশ্চর্য। সাদাফের ইচ্ছে হচ্ছে সিলিংয়ে থাকা ফ্যানের সঙ্গে অদিতির একটা ওড়না বেঁধে ঝুঁলে পরে।
নাওমী নীবিড় কে চোখ টিপ দেয়।
নীবিড় থতমত খায়।
কি আশ্চর্য নাউডুবা চশমিশের তো তাকে দেখে ভরকে যাওয়া উচিত অথচ মেয়েটা উলটো তাকেই ভরকে দিচ্ছে।
নিস্তব্ধতা সাদাফকে চিমটি কেটে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“ তবে এই ছিলো তোর মনে মনে রে সজনেডাঁটা’র বাচ্চা? তলে তলে টেম্পু নয় বাস চালাও উপরে বলো আমি রিক্সা ওও চালাই না তাইনা?”
সাদাফ নিস্তব্ধতা’র শাড়ি’র আঁচল চেপে ধরে।
“ বিশ্বাস কর নীরু।তোর কসম এসবের কিচ্ছুটি আমি জানি না।”
“ আমাকে তোর ফিডার খাওয়া বাবু মনে হয়? মনে হলেও ভুলে যা।কারণ আমি চোখে যা দেখি সেটাই বিশ্বাস করি।”
সাদাফ বিরবির করে।
“ নীরুরেএএ এই জন্যই বুঝি আমার অদৃশ্য মনটা তুই আজ পর্যন্ত দেখতে পেলি না।”
মেইনডোর খোলা।রহিমা খালা মনের ভুলে আটকাতে ভুলে গেছে।
ঠিক সেই মুহুর্তে দরজার সামনে থেকে পুরুষালী বাজখাঁই কন্ঠস্বর ভেসে আসে।
“কি ব্যাপার রে সুজন মাঝি পাত্র রেখেই মেয়ে দেখা হয়ে যাচ্ছে বুঝি? দিস ইজ নট ফেয়ার।”
নিস্তব্ধ মুচকি হেসে বলল,
“ একদম নয় বিয়ের আসরে বর না এলে বিয়ে টা হবে কেমন করে বলতো সৃজন।”
সকলে চমকিত চোখে নিস্তব্ধ কে অবলোকন দরজার পানে দৃষ্টি রাখে।
সেথায় সৃজনের সঙ্গে তার একমাত্র গুনধর পুত্র জাওয়াদ পাটোয়ারী কে দেখে ছোটদের চোখে মুখে বিস্ময়।
বড়’রা একদম স্বাভাবিক যেন কিছুই হয়নি।
মাহরিসা ফিসফিস করে আদ্রিতকে বলল,
“ আপনার বন্ধু এখানে কি করছে আদ্রিত ভাই?”
আদ্রিত জবাব না দিয়ে রহস্যময় হাসলো।
নীবিড় সাদাফের কাঁধে ধাক্কা দেয়।
সাদাফের চোখ জ্বলে উঠে।
জাওরাটা এখানে কি করছে।
প্রফেসর জাওয়াদকে দেখে সব চেয়ে বেশি চমকিত হয়েছে অদিতি নিজে।
এই মুহুর্তে জাওয়াদকে সে মোটেও আশা করেনি।
ওনার তো তার মাই লাভের নিকট যাওয়া উচিত এই মুহুর্তে এখানে কি করছেন তিনি?
অদিতি নাওমীর পানে তাকায় চোখ গোলগোল করে।
নাওমী দুষ্টু হাসে।
সৃজন আর জাওয়াদ অবলীলায় ভেতরে ঢুকে যায়।
জাওয়াদ তৃপ্তি কে বড় করে সালাম দেয়,
“ আসসালামু আলাইকুম আন্টি ভালো আছেন?”
তৃপ্তি মাথা নাড়ায়।
রহিমা খালা ফিসফিস করে বলল,
“ আপাজান গো।কাম কিন্তু সুবিধার লাগতাছে না। এই যে কোন জন বর আর কোন জন পাত্র সেইটা কিন্তু চিহ্নিত করণ যাইতাছে না আপাজান।”
তৃপ্তি সকলে দিকে চেয়ে লজ্জামিশ্রিত কন্ঠে বলল,
“ আসলে কি হচ্ছে কেউ কি আমায় একটু বুঝিয়ে বলবে প্লিজ? আমি অংকে খুব ভালো ছিলাম বিশ্বাস না হলে তোমরা সুজন,মাহীন, নিস্তব্ধ কে জিজ্ঞেস করো।কিন্তু আজকের সমীরণ টা না ঠিক মিলাতে পারছি না কিছুতেই।”
নিস্তব্ধতা বিরবির করে বলল,
“ অংকে তো আমিও খুব ভালো আন্টি কিন্তু আজকের সমীরণ যে আমিও ঠিক মেলাতে পারছি না।একদমই পারছি না।”
সৃজন আর জাওয়াদ কে সোফায় বসার জায়গা করে দেওয়া হয়েছে।কিন্তু তাদের পেছন পেছন যে হাতে খাতা, মাথায় সাদা টুপি পরিহিত এক ভদ্রলোক ভেতরে প্রবেশ করেছেন তা কি কেউ লক্ষ করেনি?
তখন থেকে যে সে বেচারা দাঁড়িয়েই আছে ব্যাপারটা কি কেউ খেয়াল করছে না।
ভদ্রলোকের ভীষণ লজ্জা লাগছে। সে কি এখন নিজে থেকে নিজের পরিচয় দেবে?
“ এই যে আপনারা একটু শুনুন না।আমি ভদ্রলোক। বলতে পারেন মূলত একজন ভদ্র কাজী।আমাকে বসতে দিলে বসি, দাঁড়িয়ে থাকতে বললে দাঁড়িয়ে থাকি।কিন্তু আমি যতই ভদ্র হই আপনাদেরও তো উচিত একটু ভদ্রতা রক্ষা করে আমায় বসতে বলা।
বিশ্বাস করুণ আমি মোটেও এভাবে দাঁড়িয়ে থেকে পা ব্যথা করতে চাইনা।নেহাৎ ভদ্রলোক বলে দাঁড়িয়ে আছি।মন্দলোক হলে তো দাঁড়িয়ে থাকতাম না বলুন।”
রহিমা খালা কাজী কে লক্ষ করলো,
“ এই যে মিয়া সাব আপনি কেডায়? এই হানে ক্যান?”
কাজীর চোখ ভিজে এলো যাক অবশেষে কেউ তো তাকে খেয়াল করেছে।
“ আমি আসলে ভদ্রলোক।না মানে কাজী।”
“ কাজী ক্যান এইহানে বিয়া হইবো কেডায় কইলো? এইহানে তো পাত্র-পাত্রী দেখন হইতাছে।”
ভদ্রলোক কাজী চোখ পিটপিট করে চাইলো।
তবে যে সুটবুট পরিহিত ভদ্রলোক দুজন তাকে বিয়ে পরাতে হবে বলে নিয়ে এলো?তবে?
“নিস্তব্ধ, সুজন আমি কিন্তু আমার জবাব পাইনি।”
তৃপ্তির কথার জবাব দিলো তাসফি নিজে এগিয়ে এসে।
অনুরোধ করে বলল কাজী সাহেব আপনি বসুন।
কাজী সাহেব ভীষণ আনন্দিত বোধ করলেন। তবে আরেকজন তাকে বসার সুযোগ করে দিলো।বিয়ে হোক বা না হোক বসে বসে সে মিষ্টি তো খেতে অবশ্যই পরবে।টেবিলে সাজানো সারি সারি রংবেরঙের মিষ্টি তার নজরে ঠিকই এসেছে।
আর যাই হোক দাঁড়িয়ে থেকে তো মিষ্টি খাওয়া যায় না।
ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৪০
“ আমি সবটা খুলে বলছি আপনাকে আপু।
আসলে আজ এখানে আমরা কোনো পাত্রী দেখতে আসিনি। এসেছি ছেলে মেয়ের বিয়ে দিতে।”
“ অদিতি আর জাওয়াদের বিয়ে..”
অদিতি ফট করে বলল,
“ অসম্ভব ওই জাওরা ব্যাডাকে আমি কিছুতেই বিয়ে করবো না।”
সকলে বিস্ফোরিত দৃষ্টিতে অদিতির পানে চায়।
তাসফি মুচকি হেসে বলল,
“ আমার কথা কিন্তু পুটোরা এখনো শেষ হয়নি মামনী।পুরো বাক্যটা আগে শেষ করি কেমন?”