বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৫৭ (২)
shanta moni
“রুহি রোমানের কাধে হাত দেয়। রোমান মাথা তুলে তাকায় রুহির দিকে৷ রুহি কোনো কিছু না বলেই জড়িয়ে ধরে রোমানকে। রোমান রুহিকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠে..!
_রুহিও কাঁদছে, রুহি কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠে..!
রুহি: আমাকে মাফ করে দিন গায়ক সাহেব। আমি আপনাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। প্লিজ মাফ করে দিন।
_রোমান এখনো কাঁদছে রুহিকে ধরে। একদম বাচ্চাদের মতো করে। রুহি রোমানকে ছেড়ে, রোমানের চোখে পানি মুছে দিয়ে বলে উঠে..!
রুহি: কিকরে আমি অন্য কারো হবো বলেন তো, আমি যে আমার গায়ক সাহেবকে খুব বেশি ভালোবাসি।
_রোমানের মুখে হাঁসি, চোখে পানি।
রোমান রুহির দুই গালে হাত রেখে বলে উঠে…!
রোমান: সত্যি পরি তুমি আমাকে ভালোবাসো!
রুহি: হুম ভালোবাসি ভালোবাসি! ভালোবাসি আমার গায়ক সাহেব কে।
_রোমান রুহিকে আবার জড়িয়ে ধরে…!
_রুহিও জড়িয়ে ধরে রোমানকে, রুহি মনে মনে বলে…!
রুহি: কি করে আমি এতো নিষ্ঠুর হবো। এই মানুষ’টার প্রতি, যেখানে আমি তাকে ভালোবাসি।
_কি ভয়ংকর তোমার ভালোবাসা_
_রোমান রুহি ছেড়ে রুহির গালে পুনরায় হাত রেখে বলে উঠে…!
রোমান: আমায় কখনো ছেড়ে যাস না রুহি। তুই যদি আমাকে ছেড়ে যাস তো আমি পাগল হয়ে যাবো।
রুহি: আমি কোথাও যাবো না, আপনাকে ছেড়ে। আপনার সাথে ছোট্ট একটা সংসার সাজাতে চাই গায়ক সাহেব।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
_আপনার ভালোবাসা নিয়ে আমি সারা জীবন বাঁচতে চাই! গায়ক সাহেব!
_সকাল ৮:০০টা…!
_অফিসের জন্য রেডি হচ্ছে শুভ্র।
_এমন সময় পিছন থেকে কেউ এসে জড়িয়ে ধরে…!
_শুভ্র পিছন ফিরে তাকায়। রিয়াকে দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।
_রেগে গিয়ে বলে উঠে…!
শুভ্র; হোয়াট দ্যা…?
রিয়া শুভ্রকে আর কিছু না বলতে দিয়ে বলে উঠে…!
রিয়া: উফ বেবি, তুমি কি আমাকে মিস করেছো৷ সরি বেবি কাজের জন্য আটকে ছিলাম। আসতে পারিনি।
_শুভ্রকে কিছু বলতে যাবে এমন সময় মিরোরের আয়না চোখ পড়ে রোদকে।
_রিয়া আসলে রোদকে শুভ্রের রুমে দিকে আসতে দেখেই, শুভ্রের রুমে ডুকে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে…!
রিয়া ন্যাকা স্বরে বলে উঠে…!
রিয়া: বেবি চলো, আজকে আমরা ডেটে যাই।
_ব্যাস আর কিছু বলতে পারেনা রিয়া। শুভ্র ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়।
_গা জেরে, বিরক্ততে সামনে তাকায়, “রোদ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
_রোদ ভোর চারটা বাজে ঘুম থেকে উঠে,
নিজের রুমে গিয়েছিল। তারপর নিচে কাজে ব্যস্ত ছিল। কাজ শেষ করে শুভ্রের খোঁজ করতে রুমে আসে। রুমে এসেই দেখে এই অবস্থা।
_রিয়া না দেখের ভান করে সামনে তাকায। রোদকে দেখে অবাক হওয়ার মতো করে বলে…!
রিয়া: রোদ তুমি এখানে…!
_রোদ মুচকি হেঁসে রুমের ভিতর ডুকতে ডুকতে বলে…!
রোদ: জ্বি আপু আমি…!
“রোদ রিয়ার সামনে এসে পর পর চার টা থাপ্পড় মারে। শুভ্র দুই হাতে বুক বেঁধে বউয়ের কাজ কর্ম দেখছে। রিয়ার ঠোঁট কেঁটে রক্ত পড়ছে।
_রিয়া রাগে তেতে উঠে বলে…!
রিয়া: তোমার সাহস কি করে হয় আমাকে মা
আর কিছু বলতে পারে না। তার আগেই পাঁচ নম্বর থাপ্পড় পড়ে রিয়ার আগে।
রোদের চোখ দিয়ে যেনো আগুন বেড় হবে। এমন উপক্রম। রোদ দাঁতে দাঁত চেঁপে বলে…!
রোদ: এই ভাবে… বলে ঠাসস ঠাসসস
আড়ো দুটো থাপ্পড় মারে রিযার গালে।
রিয়ার থাপ্পড় খেয়ে ফ্লোরে পড়ে যায়।
রোদ রিয়ার কাধ অবধি ছোট ছোট চুল গুলো হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে।
দাঁত কিড়মিড় করে বলে…!
রোদ: তোর মতো একটা গায়ে পড়া মেয়েকে থাপ্পড় মারার জন্য সাহস প্রয়োজন হবেনা। আর শোন আজকের পর যদি তোকে! আমি আমার জামাইয়ের আসে পাশে দেখি । তাহলে থেকেও তোর ভয়ংকর অবস্থা হবে।
_এইবার তো তোকে থাপ্পড় মেরেছি।
এরপর আমার জামাইয়ের কাছে আসলে।
যায়গা মতো মরিচ লাগিয়ে দিব।
_রোদ কথা গুলো বলে…!
_রিয়ার চুল ধরে টেনে তুলে ফ্লোর থেকে, দরজার কাছে নিয়ে গিয়ে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দরজা বন্ধ করে দেয়।
_রোদ দরজা বন্ধ করে রাগী চোখে তাকায় শুভ্রের দিকে…!
_শুভ্রের কেনো জানি রোদকে দেখে ভয় লাগছে। শুভ্র হাঁসার চেষ্টা করে বলে উঠে…!
শুভ্র: ব….ব বউ আ… আমি তো ওই মাইয়ারে ডাকি নায়..!
রোদ রেগে গিয়ে বলে উঠে..!
রোদ: শালা তুই ডাকিস নায়, তো আসলো কেমনে রুমে…!
“শুভ্র ভয়ে ভয়ে আমতা আমতা করে বলে উঠে…!
শুভ্র: আ…আ…আমি জানি না বউ…!
রোদ: আহারে শোনা জানে না। একটা মেয়ে রুমে এসে ব্যাঙ্গের মতো ওর গলায় এসে জুলে থাকবে। আর ওই কিছুই জানবে না।
_শুভ্র ভয়ে ভয়ে রোদের দিকে তাকায়,
রোদ শুভ্র সামনে এসে বলে উঠে..!
রোদ: আমাকে কি বাংলা সিনেমার শাবানা পাইছো হ্যা। যে রুমে বসে এই রং ডং করবি। আর আমি দেখবো।
একবারে ঠ্যাং ভেঙে চার রাস্তার মোড়ে থাল নিয়ে বসিয়ে দিব।
_শুভ্র ভয়ে দুই কদম পিছিয়ে যায়..!
_বাবা যায়, যেই শুভ্র চৌধুরী কথা শুনলে সবার ভয়ে গলা শুকিয়ে যায়। আর সেই শুভ্র চৌধুরী কিনা তার বউকে ভয় পাচ্ছে।
শুভ্র কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে…!
শুভ্র: বউ আমি কিছু করিনি।
আমাকে মাফ করে দাও, ঠ্যাং ভেঙে দিওনা বউ।
রোদ শুভ্রের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলে…!
রোদ: চলুন…!
শুভ্র: কোথায়….?
রোদ: ওয়াশরুমে….!
শুভ্র: ওয়াশরুমে কেনো বউ…?
রোদ: নাচতে যাবো চলুন…!
শুভ্র: ওয়াশরুমে বসে ভালো নাচতে পারবো না বউ। রুমে বসেই নাচি চলো…!
রোদ রাগে তেতে উঠে বলে
রোদ: আপনি যাবেন নাকি, আমি আপনার পা ভেঙে নিয়ে যাবো।
শুভ্র কোনো কথা না বলেই ওয়াশরুমের দিকে যায়। রোদও শুভ্রের পিছু পিছু যায়। ওয়াশরুমে ডুকে রোদ বলে উঠে…!
রোদ: খুলুন…!
শুভ্র না বুঝে বলে উঠে…!
শুভ্র: কি….?
রোদ: জামা কাপড় খুলুন…!
শুভ্র লজ্জা পাওয়ার মতো করে বলে উঠে…!
শুভ্র: আমার লজ্জা লাগে বউ….!
রোদ রেগে বলে উঠে…!
রোদ: অন্য মেয়েকে গলায় ঝুঁলাতে লজ্জা লাগে না। আসছে জামা কাপড় খুলতে লজ্জা লাগে…!
শুভ্র মুখ চুপসে যায়। কেনো জানে না, তার এই ৪০০ গ্রাম বউকে আজ ভীষন ভয় লাগছে। শুভ্র গায়ে পড়ে থাকা টি-শার্ট খুলে ফেলে। বলে উঠে….!
শুভ্র: বউ অফিস টাইমে তোমার আদর লাগবে বললে হতো। আদর লাগবে তো রুমে চলো বউ। ওয়াশরুমে বসে ভালো ভাবে আদর করতে পারবো না।
_কথা গুলো বলেই রোদকে শুভ্র ধরতে যায়। কিন্তু রোদ পিছিয়ে গিয়ে বলে উঠে..!
রোদ: ছুবেন না আমায় অসভ্য লোক..!
আমি আপনাকে আদর দিতে ওয়াশরুমে নিয়ে আসি নায়।
শুভ্র অবাক হয়ে বলে উঠে…!
শুভ্র: কিসের জন্য এনেছো তাহলে?
রোদ: আপনাকে ওয়াশ করতে আনছি।
শুভ্র: মা….মানে কিসের ওয়াশ…?
রোদ: আপনাকে অন্য মেয়ে জড়িয়ে ধরেছে। এই জন্য ওয়াশ করতে হবে আপনাকে।
কোনো কথা বলবেন না।
শুভ্র: বউ সকালে একবার গোসল করছি। খুব শীত পড়েছে বউ!
অনেক ঠান্ডা…!
রোদ চোখ গরম করে তাকায় শুভ্রের দিকে…!
শুভ্র সাথে সাথে চুপ হয়ে যায়।
“রোদ শুভ্রের কাছে এসে ঠান্ডা পানি মগ দিয়ে গায়ে ঢেলে দেয়। আর শুভ্র তার বউয়ের কর্ম কান্ড গুলো দেখছে।
_প্রায় তিন ঘন্টা ধরে শুভ্রের গায়ে সাবান শ্যাম্পু লাগাচ্ছে রোদ।
_আর নাক টেনে টেনে কাঁদছে, শুভ্র ওয়াশরুমে ছোট একটা টুলে বসে আছে।
খালি গায়ে সাবান দিচ্ছে আর ধুচ্ছে।
শুভ্র প্রথমে ভেবেছিল।
দুই মিনিটে গোসল করে বেড় হয়ে যাবে।
কিন্তু তার বউ তাকে দীর্ঘ ৩ ঘন্টা দিয়ে সাবান শ্যাম্পু দিয়ে ওয়াশ করতে আছে।
শুভ্রের ইচ্ছে করছে, হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাঁদতে…!
_কিন্তু বউ তার কাঁদছে আর গায়ে সাবান দিচ্ছে, শুভ্রের ঠান্ডা লেগে ১২ টা বেজে গেছে। শুভ্র রোদের দিকে তাকিয়ে কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে উঠে…!
বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৫৭
শুভ্র: বউ মাফ করে দে। জীবনে কোনো দিন আর কোনো মাইয়ারে আমার চার পাশেও আইতে দিমু না। মাইয়া গো কাছ থেকে একশো হাত দূরে থাকমু বউ।
মাফ কইরা দে বউ….!
_আমার যৌবনের কছম বউ…!
