বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ৬

বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ৬
ইশরাত জাহান

সকালবেলা দাদাজানের সাথে দেখা করতে হাসপাতালে এসেছে শামীম ও মিতু।মিতুর কোলে মৌলি চুপ করে বসে আছে।শামীম কিছু ফল এনেও মাথা নিচু করে আছে।লজ্জা হচ্ছে খুব।সামর্থে যতটুকু কুলিয়েছে বোনের সংসারে সম্মান ধরে রাখার চেষ্টা করেছে।দাদাজান যখন যায় পাঁচ ছয় কেজির নিচে ফল নেয়না।শামীমের মাসিক আয়ের সাথে এসব যায়না।তাও চেষ্টা কিছু।শামীমকে মাথা নিচু করে থাকতে দেখে দাদাজান কিছুটা উপলব্ধি করলেন ব্যাপারটা।তাই তিনি সবাইকে একটু স্বাভাবিক করতে বলেন,“কাউকে কিছু দিলেই যে ভালোবাসা বাড়বে ব্যাপারটা এমন না।একটা প্রকৃত মন থাকা প্রয়োজন।যেটা তোমাদের আছে।আমি শোভার মাঝে ভালো সংসারী গুনি মেয়ের ধাঁচ পেয়েছি।তাই আমার জন্য অনেক।এগুলো আমার লাগবে না।”

শামীম একটু শান্তি পেলো কিন্তু এখনো ভাবছে দাদাজান কেন ডাকলো ওদেরকে।দুজনের দিকে তাকিয়ে দাদাজান বলেন,“দর্শন যে দেশে ফিরেছে এটা তো জানো কিন্তু কোন পরিস্থিতিতে ফিরেছে এটা কি জানো?”
শামীম চট করে উত্তর দেয়,“না দাদাজান।”
“আমি অসুস্থতার কথা জানিয়ে এনেছি।এবার একটু বেশীই ভয় দেখিয়েছি।এতদিন শান্ত ছিলাম কারণ শোভার বয়স অল্প ছিলো।দর্শনের রাগের কাছে মেয়েটা নেতিয়ে যাবে।এখন একটু ভার বুদ্ধি বেড়েছে।বৈবাহিক জীবন একাকিত্বে কাটিয়ে অনেক কিছু শিখেছে।সমাজ মেয়েদের কোন দৃষ্টিতে দেখে এটা গভীরভাবে জানতে পেরেছে।ওই সময়টায় এগুলো কিছুই উপলব্ধি করতে পারত না।তাই আমিও চাপ দেইনি ওদের সংসারের।আজ চারটে বছর পর মেয়েটা আঠারোতে পা দিয়েছে।দুজনের সংসার জীবন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত।এভাবে আর অপেক্ষা না।আমি একা পারবো না চারদিক সামলাতে।তোমরাও আমাকে একটু সাহায্য করো।ভরসা রাখতে পারো আমরা কেউই মেয়েটার সাথে অন্যায় অত্যাচার করবো না।আগলে রাখব দিজা দাদুমণির মত।”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

শামীম মৃদু হেসে বলে,“এটুকু বিশ্বাস আমাদের আছে দাদাজান কিন্তু ভাইজান তো মানবে না শোভাকে। বোনটা আমার শান্ত কিন্তু অতি আবেগী।মনে অতি সহজে দাগ কেটে যায় কোনো শক্ত কথা শুনলে।”
“মেয়েদের সংসার করতে গেলে অনেক কিছু সহ্য করে নিতে হয়।যুগে যুগে নারী এগিয়ে গেলো খুঁটিনাটি বিষয় হজম করে।শোভাও পারবে দেখে নিও।”

এবার মুখ খুলল মিতু,“বড়দের মাঝে কথা বলা উচিত না।ক্ষমা করবেন তাও একটু বলতে চাই।আমি তো ভাবী কিন্তু আমি মেয়েটার ভালো কিছু চাই।শুনেছিলাম ভাইজানের জীবনে নাকি কোনো নারী আছে।দেখুন ভাইজান আমাদের বোনকে সহ্য করতে না পারলে জোর করে তো সম্পর্ক ধরিয়ে রাখা যায়না।একা আমার ননদ এগিয়ে যাবে কিন্তু উনি অন্য কাউকে নিয়ে ভাববে এটা তো আলাদা মনক্ষুন্ন পরিস্থিতি শোভার জন্য।আশা রাখছি আপনি বুঝবেন বিষয়টি।”
দাদাজান ফুঁসে উঠলেন।কিছুটা রেগে গিয়েই মাথা নাড়িয়ে বলেন,“বুঝতে পেরেছি আমি।আমার ওই কুটনি মেয়ে কানে কুমন্ত্রণা দিয়েছে তাই তো?”

মিতু অবাক হয়ে বলে,“আপনি কিভাবে জানলেন?”
“চুল আমার এমনি এমনি পাকেনি।কে কতদূর এগোতে পারে আমিও জানি।ওই একটাই তো ঝামেলা জন্ম দিয়েছি।সব এত ভালো মনের ওটা কিভাবে কুচুটে হলো আল্লাহ জানে!”
মিতুর হাসি পেলো।বোরকার আড়ালে হেসেও দিলো।দাদাজান তার মেয়েকে নিয়েই এসব বলছেন।তাও একটু পরিপূর্ণ জানতে বলে,“তাহলে কি তিনি মিথ্যা বলেছেন?”

“আলবাত মিথ্যা বলেছে।আসল ঘটনা হলো ওর নাচঙ্গি মেয়ে আছে ওটার সাথে দাদুভাইয়ের বিয়ে দিতে চায়।আমি হলফ করে বলতে পারি শোভা যতটা যত্ন নিয়ে দাদুভাইকে পরিবর্তন করতে পারবে ওই মেয়ে ততটাই অশান্তি তৈরি করতে পারবে।ও আমার নাতি হলেও বলতে বাধ্য সংসারী না।বাঙালি মেয়ে বিয়ে করে স্বামীর সেবা করবে স্বামী বাজার করে আনলে রান্না করবে একটু যত্ন নিবে তাইলেই না স্বামীও বউকে আগলে রাখবে।এমন ধাঁচ ওর নেই।ওর মধ্যে আছে ব্র্যান্ডের জিনিস কখন কিনবে,ফোন হাতে নিয়ে বাইরে ঘুরে কখন লাইভ করবে এসব।ও মেয়ে নিয়ে দাদুভাই জীবনেও সংসার করবে না।”
শামীম গ্লাসে পানি ঢেলে দাদাজানের কাছে এসে বলে,“আপনি উতলা হবেন না দাদাজান।আপনার শরীর ভালো নেই।”

“শরীর আর কিভাবে ভালো থাকে বলো তো?আপন মানুষ বলেই তোমাদের বলছি।মন যদি ভালো না থাকে তাহলে বৃদ্ধ বয়সে আমাকে সুস্থ দেখার আশা রাখো কিভাবে?নাতি একটা মা হারিয়ে যাবার পর একঘরে এমনভাবে থাকে যে কেউই তাকে বুঝে উঠতে পারেনা।মেয়েটা হয়েছে আরেক কুচুটে! নাতিকে ছোটবেলায় লুকিয়ে লুকিয়ে মেয়েদের নিয়ে এমন বাজে কথা বলতো যে এখন মেয়ে দেখলেই নাতির মনে হয় এ প্রতারক।মেয়েটার লাক হলো কি?সেই তো নিজের মেয়েকেও জুটাতে পারল না নাতির কপালে।দুর্নীতি করলে জীবনেও সফলতা আসেনা।সফলতা আনতে হলে সবার ভালো মন্দ দেখতে হয়।শিখে রাখো এগুলো।তোমরাও সন্তানদের দুর্নীতির ধারে কাছে যেতে দিবেনা।আমার মত ভুগবে তাহলে।বৃদ্ধ বয়সেও পরিবারের জন্য দুশ্চিন্তা বাড়বে। নাতি নাতনির জন্য দুশ্চিন্তা হলো আরেক ভয়ানক দৃশ্য।যারা নাতি নাতনির জন্য চিন্তায় ভোগে তারাই জানে এগুলো।”

দাদাজান খুঁক খুঁক করে কাশছেন।শামীম দ্রুত পানি পান করিয়ে দেয়।সব শুনে মিতু ধারণা করে নেয় শোভাকে তিনি ফরাজি বাড়ি থেকে বিদায় করবেন না।একদিক থেকে ভালো লাগলেও আরেকিদকে থেকে দুশ্চিন্তা।ভাবছে,“মেয়েটার আসল সম্মান তো স্বামীর থেকে প্রাপ্য।সেই সম্মান পাবে তো!”
দাদাজানকে শান্ত করে শামীম।দাদাজান শামীমের হাত ধরে বলেন,“শোভা যদি তোমাদের দুয়ারে যায় ওরে জব্দ করে বলবা স্বামীর সংসার করতে।আমিও দাদুভাইকে শাসিয়ে যাবো।দেখি একটা মাস ওদের একসাথে।তারপর নাহয় নতুন কিছু ভাবা যাবে কিন্তু যে সম্পর্ক হয়েছে এটা নষ্ট করে দেওয়া বোকামি হবে।জন্ম বিয়ে মৃত্যু এগুলো আমরা বললেই হয়না এগুলো সৃষ্টিকর্তার চাওয়া পাওয়ার মাধ্যমে হয়।নাহলে যে ছেলে বিয়ে করবে না বলে মনস্থির রাখে তার হুট করে বিয়ে হবে কেন?”

মিতু একটু ভেবে বলে,“কথা আপনি ভুল বলেননি কিন্তু অতিরিক্ত জোর করে কি ঠিক হবে?”
“আমরা তো ওদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছি না।দুজনে একসাথে সংসার করুক।দুজনের মতামত নাহয় মাস কয়েক পর দেখা যাবে।কিন্তু এখন একটু কঠোর হতে হবে।”
শামীম ও নিতু রাজি হলো।ওরা দুজনেই বিদায় নিলো দাদাজানের সাথে আলাপ করে।রিক্সায় উঠে মিতু বলে,“একটা মোবাইল কিনবে শোভার জন্য।ওর কাছে এখন আমার মোবাইল আছে।এতদিন ও আমার মোবাইল নিয়ে চলেছে কিন্তু ও চলে গেলে তো আমারও মোবাইল লাগবে।তুমি ওকে একটা নতুন মোবাইল কিনে দিও।”
শামীম ভাবান্তুর হয়ে বলে,“ওর শশুর বাড়ি থেকে কি মেনে নিবে?”

“কেন নেবে না মেনে?ননদ কি ফেলনা নাকি?ওর সুখ দুঃখের কথা আমি জানবো কিভাবে?কেউ কারো দুঃখের কথা জানায় না বরং উপরের সুখটাই দেখাবে। দুঃখ দেখতে গেলে দুঃখীর সাথে যোগাযোগ রাখতে হয়।”
রিক্সা চালক রিক্সা চালাতে চালাতে জানান,“মা একদম ঠিক কথা বলছো।আজকাল অন্যের দুঃখের কথা একটু এসে জানানোর কেউই নেই।সবাই নিজেরে নিয়েই পড়ে থাকে।তাই তো নিজে বাদে সবাইকে সুখী লাগে।”
মিতু মুখ টিপে হেসে বলে,“আমারে সবাই বুঝলো চাচা শুধু স্বামীটাই বুঝলো না।”
শামীম মুখ ফুলিয়ে বলে,“এই চাচা চুপচাপ রিক্সা চালাও।আমার বউয়ের সাথে তোমার কিসের এত কথা?”
মিটমিট করে হাসে মিতু।শামীম হিংসেমি করছে।মিতু মাঝেমাঝেই তার রসকষহীন স্বামীকে রাগিয়ে দেয়। এতে রাগের মধ্যে লুকিয়ে থাকা স্বামীর ভালোবাসা দেখতে পায় সে।

ঘুম থেকে উঠে গোসল করে নেয়।এখন গামছা দিয়ে চুলগুলো মুছতে মুছতে আয়নার সামনে এসে দাঁড়ায় দর্শন।গামছাটা ব্যালকনির দড়িতে মেলে দিয়ে ভিতরে আসে।দর্শন শার্টের হাতা গোটাতেই শোভার পদধ্বনি শোনা গেলো।শোভা বড় সুতি কাপড়ের হিজাব পরে আছে।ভিতরে এসে কোনদিক না তাকিয়ে দি জার জামা নিয়ে গোসলখানায় ঢুকলো।ঢুকেই অবাক হলো।দর্শনের শার্ট প্যান্ট কিছুই নেই।দর্শন আয়নায় নিজেকে দেখে নিচে নামলো।ঘরে যে তার বউ আছে এতে তার কোনো হদিস নেই।দর্শন যেতেই দিজা এসে শোভাকে আলতো ধাক্কা দিয়ে বলে,“কি হয়েছে?”
“তোমার ভাই গোসল করলো জামা কাপড় কই?”
“ভাইয়া তো নিজের জামা কাপড় নিজে ধোয়।ওই যে ব্যালকনিতে নাহলে ছাদে আছে কাপড়।কেন?”
“না এমনিতেই।”

“ভাবছিলে ভালোবাসা পেতে হলে একটু সেবাযত্ন করবে তাই তো?”
শোভা মৃদু হাসলো।দিজা জানায়,“তোমার স্বামী আর চার পাঁচটা অলস স্বামীদের মত না।এনার নিজের কাজ নিজেই করে।কাউকে করতে হয়না।বরং আমরা পোশাক ধুয়ে দিলে বলবে ভালোভাবে ধুতে শিখিনি।সুচিপাই আছে কিন্তু।পড়ার টেবিল তাই এক ঘণ্টায় চার পাঁচবার পরিষ্কার করে।”
“কি বলো, এতবার?”
“হুমমম।তুমি এক কাজ করবে।যেটা দেখবে ভাইয়া করেনি বা করতে দেরি হবে ওটাই ঝটপট করে দিবে।তাহলে একটু একটু করে এগোতে পারবে।”
“ওনার মন জয় হবে তো?”
দিজা মুখটা শুকনো করে বলে,“যদি শাহ রুখ খানের কথা বলা হয়,উনি স্বামী হিসেবে কেমন?ব্যাটা ইন্ডিয়ান হলেও আমি বলতে পারি রোমান্টিক কেয়ারিং স্বামী কিন্তু আমার ভাইয়ের কথা বলতে পারিনা।কারণ আমি তাকে রাগ ছাড়া অন্য কোনো ভাব প্রকাশ করতে দেখিনি।”

দাদাজান আসলেন হাসপাতাল থেকে।নিজের কক্ষের বিছানায় আছেন হেলান দিয়ে।দর্শন ও দিদার আছে এখন।বাকিরা চলে গেছে।দর্শন একটু দিদারকে দেখে নিয়ে বলে,“তুই এই ঘর থেকে যা।আমি দাদাজানের সাথে কথা বলতে চাই।”
দিদার ভয়ে ভয়ে উঠতে নিলে দাদাজান বলেন,“ও থাকবে।তুমি যেটা বলার বলো।”
“দাদাজান বড়দের কথার মাঝে ছোটরা কেন থাকবে?”
“আহামরি ছোট ও না।যথেষ্ঠ বড় এবং বিয়ের উপযোগী।আমার বাবা তো ওর থেকেও অল্প বয়সে বিয়ে করেছিল।”
“এসব কথা উঠছে কেন?”
“উদাহরণ হিসেবে উঠতেই পারে।তুমি আসল কথাতে আসো।”
“তোমার সুস্থতার জন্য আমি ওই মেয়েটাকে বাড়িতে এনেছি।”

“কোন মেয়েকে?”
“ওই যে শোভা।”
“বউ বলে ডাকো।”
বিষম খেলো দিদার।খুঁক খুঁক করে কাশতে শুরু করলে দর্শন দাদাজানের দিকে অশ্চর্য চাহনি দেয়।দাদাজান আবারও বলেন,“বউ হলো স্বামীর কাছে সর্বোচ্চ সম্মান পাপ্তির স্থান।স্বামীর দায়িত্ব বউকে মাথায় করে রাখা।বউয়ের মর্যাদা ধীরে ধীরে নিজের মধ্যে ধরে রাখা।”
“এসব কথা বলে এই ছেলেটাকে উস্কে দিচ্ছ দাদাজান?এমনিতেই এই ছেলেটা বিগড়ে গেছে।”
“তুমি কেন নিজের ব্যাপারটা বুঝছো না?”
“আমি নিজের ব্যাপারে বুঝি।তাই বলছি মেয়েটাকে আমার জন্য সাফার করতে হচ্ছে।যেটা আমার মানবিকতায় লাগছে।আমি চাইনা আমার রাগী স্বভাবের কাছে মেয়েটা নিজেকে নত করে রাখুক। কাল সারারাত ব্যালকনিতে ছিল।আজ কোথায়…

বাকিটা বলার আগে দাদাজান অবাকের সাথে বলে,“ব্যালকনিতে ছিল মানে?তোমার ঘরে কি জায়গা নেই?ভিটে বাড়ি করার সময় তো আমি কঞ্জুসি করিনি।বরং বড় বড় ঘর ফার্নিচার সব করে রেখেছি।ওখানে কি তোমার বউকে জায়গা দিতে খুব সমস্যা!তাইলে বলো আরো বড় একটা ঘর সাথে খাট বানিয়ে দেই তোমাদের।”
দিদার মিটিমিটি করে হাসছে।দর্শন ধমক দিয়ে বলে,“কানের গোড়ায় এমন জোরে দিবো যে বড়দের মাঝে হাসাহাসি বন্ধ হয়ে যাবে চিরতরে।”

দাদাজান তেড়ে আসতে নিয়ে ব্যর্থ হয়ে হেলান দেওয়া অবস্থায় বলেন,“খবরদার হুমকি দিবেনা।ওকে শাসন করার আগে আমাকে সংসার করে দেখাও।ওকে নিয়ে আমি আছি।”
“হ্যাঁ তা তো দেখতেই পাচ্ছি।কেমন উচ্ছন্নে নিয়ে গেছো ওকে।”
“সময় থাকতে একটা বিয়ে করে সংসার করুক।তোমার মত মস্তিষ্ক ওর নেই এই একটা দিক থেকে আমি বেঁচেছি।বাকিটা প্রশিক্ষণ দিয়ে দিবো।”
“কিসের প্রশিক্ষণ?”
“সংসারের।আমি দাদা যদি না বুঝিয়ে দেই কিভাবে সংসার সামলাবে তাহলে বউ ধরে রাখবে কিভাবে?আজকাল বউ তো স্লিপ কেটেই চলে যায়।”

দাদাজান সহজ সরল মনে বললেন কথাটা কিন্তু দর্শনের মাথা ঘুরছে।আগের কথা মনে পড়ে।মায়ের চলে যাওয়া বাবাকে অবজ্ঞা করা,তার কান্নাকে গ্রাহ্য না করা সবকিছু মস্তিষ্কে ঘুরপাক দিচ্ছে।আপন মনে পুরোনো স্মৃতি স্মরণ করে বেখেয়ালে হাঁটছে।দাদাজানের কথাটাও ভাবছে সেই সাথে।তখনই নিচ দিকে তাকিয়ে হেঁটে দাদাজানের কাছে আসতে নেয় শোভা।আচমকা দর্শনের বুকে এসে বারি খায় তার মাথা।দর্শনের মস্তিষ্কে তখন হঠাৎ চার বছর আগের কথা ঘুরতে শুরু হলো।শোভা তার বুকে ছিলো।লোকে বলেছিলো তারা জড়াজড়ি করেছিলো।তারা যেখানে সেখানে নোংরা কাজে লিপ্ত থাকে।

এমন কথার সাথে দর্শন যুক্ত হয়েছিল ভাবতেই আজকের আবারও বুকেতে ঢলে পড়া শোভার দিকে টাকায়।দোষ যে দুজনের এটা বিচার না করেই দর্শন রাগ মস্তিষ্কে শোভাকে সরিয়ে দিয়ে ঠাস করে বসিয়ে দিলো শোভার গালে।শোভা গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে রইলো।ব্যাপারটা হুট করে ঘটে গেলো যে শোভা কিছু বুঝতেই পারল না।গালে হাত দিয়ে যেই দর্শনের দিকে চোখ রাখতে নিবে আবারও পেলো দর্শনের ধমক আর চোখ নিচে নেমে গেলো শোভার।চোখ দিয়ে পানি পড়ছে আর শুনছে,“আবারও বদনাম করতে এসেছো নিজের জীবনকে সাথে শিকার বানাতে চাও আমাকে?যখন তখন গায়ে ঢলে পড়া একটা স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে তাই না?বাজে মেয়ে একটা।”

বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ৫

শোভার কান ঝলসে গেলো।আশেপাশে তাকালো।কেউ নেই দেখে নিজের সম্মানের জন্য শুকরিয়া জানালো আল্লাহর কাছে।ওখানেই রাগ দেখিয়ে বলে,“আপনার সাথে সংসার আমি করবই না।রাগী বদমেজাজি লোকের আবার গন্ডারের হাত।”

বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ৭

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here