হ্যালো 2441139 পর্ব ৩৮

হ্যালো 2441139 পর্ব ৩৮
রাজিয়া রহমান

মহুয়া বেগম যাওয়ার পর পিয়াসা উঠে তৈরি হয়ে নিলো।তাকে এখন হাসপাতালে যেতে হবে আষাঢ়কে দেখতে।বাবা তাকে বলেছে এক বার গিয়ে দেখে আসতে।তা না হলে খারাপ দেখাবে।রজনী আন্টি,সিরাজ আংকেল ও কষ্ট পাবেন জানলে যে কেউ-ই তাদের ছেলেকে দেখতে যায় নি।
একটা আকাশি আর সাদা রঙের স্কার্ট আর টপস পরে পিয়াসা তৈরি হয়ে নিলো।মাঝেমাঝে কিছু কাজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে করা লাগে।মানুষ হয়ে জন্ম নেওয়া সহজ কিন্তু মানুষ হয়ে জীবন কাটানো কঠিন এটা আজ আবারও টের পেলো পিয়াসা। তা না হলে তো পিয়াসাকে আজকে আষাঢ়কে দেখতে যেতে হতো না।
আষাঢ়ের কথা ভাবলেই পিয়াসার কেমন অস্বস্তি হয়।

রজনীর মন কেমন করছে আজকে সকাল থেকে। ছেলে মেয়েদের জন্য ভীষণ চিন্তা হচ্ছে। তার উপর পিয়াসা ও আছে।মেয়েটাকে একা রেখে এসেছে ওদের মধ্যে। এই বয়সে এসব আলগা পিরিতি রজনীর ভালো লাগছে না।সবকিছুতেই অতীতের স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে তার। বুকের যন্ত্রণার ভারটা তাতে আরো ভারী হয়ে উঠছে যেনো।
বিকেলে বিচে বসে সিরাজুল ইসলাম গুণগুণ করে গান গাইছেন।রজনীকে নিয়ে বসেছেন বালুর মধ্যে।
আকাশে একদল মেঘ চঞ্চল হরিণীর মতো ছুটোছুটি করছে।
সমুদ্রের ঢেউ এসে থেমে থেমে দুজনের পা ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।
সিরাজুল ইসলামের গান থামছে না।রজনী অধৈর্য্য হয়ে উঠেছে। মন বসছে না তার কিছুতেই।
সদ্য উড়তে শেখা পাখিকে সারাজীবন খাঁচায় বন্দী রেখে শেষ বয়সে যদি মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেওয়া হয়,সে কি তখন আগের মতো উড়তে পারে! না-কি আগের আনন্দ পায়!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ততদিনে সে খাঁচাতেই অভ্যস্ত হয়ে যায়। খাঁচাকেই নিজের সুখের ঠিকানা বানিয়ে নেয়।
রজনীর ও আজ তেমন হাল।
এই যে সমুদ্রের নোনাজল এসে পা ছুঁয়ে যাচ্ছে, রজনীর কেমন অস্বস্তি লাগছে।
একদল যুকব যুবতীর মধ্যে তারাই যেনো বেমানান।
রজনীর মনে হচ্ছে যেনো এই সময়টা যদি সে বাড়িতে থেকে ছেলেমেয়েদের জন্য রান্না করতো, মহুয়া বেগমের সেবা করতো তাতেই শান্তি পেতো।
আসলে জীবনে শান্তি কোথায়?
কেউ কি জীবনের আসল শান্তি পায়?
শখের বয়সে শখ পূর্ণ করতে পারে কয়জন?
সিরাজুল ইসলাম তখনও গাইছেন, “আমি তোমার জন্যে সয়ে যাব শত নিন্দারই দংশন…..”

“আমরা বাড়ি যাবো কবে?”
রজনীর এই প্রশ্নে সিরাজুল ইসলাম কিছুটা কষ্ট পান।আসার পর থেকে রজনীকে এক মুহুর্তের জন্য আনন্দিত মনে হয় নি। এতো কিসের অভিমান তার এখনো!
কেনো এখনো এতো জেদ ধরে আছে?
“আমরা বেশকিছু দিনের জন্য বের হয়েছি রজনী। খুব শীঘ্রই ফেরার সম্ভাবনা নেই।”
“আমার এক মুহূর্ত ও মন টিকছে না।আমার ছেলে মেয়েদের রেখে আমি এখানে কিছুতেই স্বস্তি পাচ্ছি না।”
“আমি কি তোমার কেউ না রজনী?”

প্রশ্নটা করে সিরাজুল ইসলামের মনে হলো একটা ভুল প্রশ্ন করে ফেলেছেন তিনি।এটা কোনো প্রশ্ন হতে পারে না। ছেলে মেয়ের সাথে তিনি নিজের হাস্যকর তুলনা করে ফেলেছেন।
রজনী শান্ত সুরে বললো, “আপনি আমার কেউ না হলে আমি এতো বছর ধরে নিজেকে এভাবে পোড়াতাম না সচিব সাহেব।আপনি সচিব হতে পারেন,আমি রজনীগন্ধা ও কোনো কালে কম ছিলাম না কোনো দিক থেকে।আপনার জন্যই তো দুই পায়ে শিকল বেড়ি পরলাম।
তবুও যদি জিজ্ঞেস করেন আপনি আমার কেউ কি-না, তাহলে আমি বলবো না আপনি আমার কেউ না।কখনো কেউ ছিলেন না।”

সিরাজুল ইসলামের দুই চোখ জ্বলতে শুরু করে। বুকের ভেতর প্রথম প্রেমের মতো অনুভূতি জন্মায় হুট করে।অবহেলায় শুকিয়ে যাওয়া এই রজনীগন্ধাকে কি তিনি আবার আগের মতো সজীব করতে পারবেন কখনো?
রজনীর হাত ধরে বললেন, “আমি জানি আমাদের এখন আর সেই দিন নেই।তবুও আমি তোমার সাথে এই পৃথিবী ঘুরে দেখতে চাই। তুমি কি আমাকে সেই সুযোগটা দিবে রজনী?”
রজনী হাসে। আজকাল সিরাজুল ইসলামের এসব কথা তার ভীষণ হাস্যকর লাগে। বাড়িতে দুই ছেলে মেয়ে,বৃদ্ধা শাশুড়িকে রেখে সে এখন পৃথিবী ঘুরে বেড়াবে!
পুরুষ মানুষ এত অদ্ভুত কেন!
নারী যখন আকাশে উড়ে বেড়াতে চায়,সে তখন তাকে খাঁচায় বন্দি করে। যখন সে খাঁচায় অভ্যস্ত হয়ে যায় তখন তাকে মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেয়।

রজনী সিরাজুল ইসলামের হাত ধরে বললো, “আমি জানি আপনি অনুশোচনায় এরকম করছেন।আমি মন থেকে বলছি আপনার উপর আমার কোন ক্ষোভ নেই। আমি আমার ভাগ্যকে বরণ করে নিয়েছি। প্লিজ আমাকে বাড়িতে নিয়ে চলুন। আমি আমার সংসারে নিজের সুখ খুঁজে নিয়েছি, দৈনন্দিন কাজের মধ্যেই নিয়েছি বরং এখন আমার এই খোলা আকাশ,এই বিশাল সমুদ্রের মধ্যে নিজেকে অসহায় এবং অযাচিত মনে হয়। আমি আপনার জমিদার বাড়ির রান্নাঘরে শান্তি খুঁজে পাই।আমার ছেলে মেয়ে সংসার বৃদ্ধা মা সবাইকে ভীষণভাবে মিস করছি। আপনার মায়ের প্রতি আমার রাগ অভিমান জমে আছে হয়তো, কিন্তু বিশ্বাস করুন আজ মনে হচ্ছে উনার হয়তো ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে আমাকে ছাড়া। উনি আমার উপর একপ্রকার নির্ভরশীল।”
সিরাজুল ইসলাম সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে রইলেন কোন কথা না বলে। বেশ কিছুক্ষণ পর বললেন, “ ঠিক আছে আমরা এক সপ্তাহ এখানে থাকবো। তারপর চলে যাব।”

রজনী অস্থির হয়ে বললো, “আপনি বুঝতে পারছেন না কেন, বাড়িতে নার্গিস নেই।আম্মাকে দেখাশোনা করার জন্য কেউ নেই। আপনার বোন তো ওভাবে আম্মাকে দেখাশোনা করবে না সেটা আপনি বেশ ভালো জানেন। বাড়িতে নির্জন,নিরব,রিংকি, পিংকি,আষাঢ়, পিয়াসা আছে।ওদের সবার একজন অভিভাবক নেই। যদি নার্গিস থাকতো তাহলে আমি এতটা চিন্তিত হতাম না। কিন্তু এখন নার্গিস না থাকায় আমার চিন্তা বেড়ে যাচ্ছে এজন্যই আমার বেশি অস্থির লাগছে।”

সিরাজুল ইসলাম বললেন, “ এত অস্থির হয়ো না তুমি। দেখো নার্গিস জানে যে তুমি বাড়িতে নেই।এখন ও নিজের গরজেই ফরে যাবে।কিন্তু ওর আগে যদি তুমি বাড়িতে যাও তাহলে ও নিশ্চিত থাকবে যে ওর ছেলেমেয়েদের আর কোনো অযত্ন হবে না।ও তখন রাগ করে আরো বেশি ধরে রাখবে।আর মিরাজ ও এখন ভাববে বাড়িতে কেউ নেই,ছেলেমেয়েদের জন্য হলেও নার্গিস্কে ফিরিয়ে আনতে যাবে।তুমি ফিরে গেলে মিরাজ ও পিছুটান দেখাবে নার্গিস্কে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে।”
সিরাজুল ইসলামের যুক্তি রজনীর কাছে যৌক্তিক মনে হলো।
পিয়াসা ভয়ে ভয়ে হাসপাতালের ভেতর ঢুকলো।বাবা তাকে আগেই জানিয়ে দিয়েছে আষাঢ় কতো নাম্বার বেডে কেবিনে আছে।

পিয়াসা কেবিনে ঢুকতেই টের পেলো সিগারেটের গন্ধে তার নিশ্বাস আটকে আসছে।
কেবিনের ভেতর পাঁচ/ছয়টা ছেলে এলোপাথাড়ি বসে আছে।
পিয়াসাকে দেখে সবাই লাফিয়ে উঠে।
পিয়াসাকে দেখে আষাঢ় ভীষণ অবাক হয়।
ছেলেগুলো সবাই ছোটাছুটি করে বের হয়ে যায়।
বের হতে হতে পিয়াসা অস্পষ্ট শুনতে পায় কেউ একজন কাউকে ভাবী বলে সম্বোধন করছে।
ব্যাপারটা তেমন একটা পাত্তা দিলো না পিয়াসা।
আষাঢ় পিয়াসাকে আশা করে নি এখানে।কিন্তু পিয়াসা এসেছে। কেনো এসেছে!
পিয়াসা জানে না,আষাঢ়ের জীবনে পিয়াসার গুরুত্ব কতখানি!
সে কখনো জানতে ও দিবে না পিয়াসাকে।

যার কাছে অনুভূতির মূল্য তুচ্ছ তার কাছে আষাঢ় কখনোই নিজের অনুভূতিকে প্রকাশ করবে না।
পিয়াসাকে দেখে আষাঢ় হাসলো না।বরং কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বললো, “কেনো এসেছো এখানে?”
পিয়াসা থতমত খায়।সে যে নিজ থেকে এসেছে তা তো না।তবুও এখানে আসার সময় ভেবেছে আষাঢ় তাকে দেখে হয়তো কিছুটা খুশি হবে।কিন্তু আষাঢ় এরকম বিরক্ত হবে তা কখনো ভাবে নি।
আষাঢ় রুক্ষ স্বরে বললো, “আমি ঠিক আছি।যাও বাসায় যাও।এখানে আমাকে দেখার কিছু নেই।আমাকে দেখার জন্য মানুষের অভাব নেই।”

“এভাবে রিয়্যাক্ট করছেন কেনো আপনি? আমি বাবা মা’য়ের কথাতেই এসেছি এখানে।আপনি ভাববেন না প্লিজ যে আপনার জন্য আমার কোনো রকম সহানুভূতি অথবা আন্তরিকতা আছে।শুধু মাত্র ফর্মালিটি মেইনটেইন করতে আমাকে আসতে হয়েছে। আমার বাবা মা এখানে থাকলে ওনারা নিশ্চয় আপনাকে দেখতে আসতো।ওনারা যেহেতু নেই,তাই আমাকে আসতে হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে।আপনি আমার যতোই অপছন্দের হোন,আমার বাবা মা’য়ের কথার দাম আমার কাছে আমার জীবনের চাইতে ও বেশি।”
পিয়াসার ভীষণ রাগ হচ্ছে। ভেতরে ভেতরে সে ভীষণ যন্ত্রণা অনুভব করছে।আষাঢ় কখনো তার সাথে এরকম রুড বিহেভ করে নি।সে আষাঢ়কে অপছন্দ করে, কিন্তু তাই বলে এরকম রুক্ষ স্বরের কথা ও সহ্য করতে পারছে না।
তার উপর শিরিন ফুফু যে-সব কথা বলেছে মা’কে তারপর পিয়াসার মনে এমনিতেই কষ্ট জমে ছিলো। সব যেনো উদগীরণ করে দিলো আষাঢ়ের কথার প্রত্যুত্তরে।

আষাঢ় আর কথা বাড়ালো না।অন্যদিকে তাকিয়ে বললো, “আংকেল আন্টিকে বলে দিও আমি ভালো আছি।আংকেলের পাঠানো নার্স আমার ভীষণ খেয়াল রাখছে।ওনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে দিও।আমার এই এক্সিডেন্টের কথা যাতে কিছুতেই বাবা মা না জানে।যাও তুমি এবার।”
পিয়াসা আষাঢ়ের দিকে তাকিয়ে রইলো। আশ্চর্য তো!
এই লোক তার সাথে এমন নাটক করছে কেনো!
অন্য দিকে তাকিয়ে কথা বলছে যেনো পিয়াসার দিকে তাকানো মহাপাপ।
হুট করে পিয়াসার মনে হলো আষাঢ় বুঝি তাকে ইগনোর করতে চাইছে।
মনে মনে হাসে পিয়াসা।তারপর আল্লাহ হাফেজ বলে চলে যায়।
পিয়াসা চলে যেতেই আষাঢ়ের মনে হলো পুরো পৃথিবী যেনো নীল রঙের বিষাদে মোড়ানো।অদ্ভুত সেই বিষাদে আষাঢ়ের প্রতিটি শিরায় শিরায় তীক্ষ্ণ সূঁচ ফোঁটায়।
অথচ এই মেয়েটা জানে না,তাকে পাবার জন্য আষাঢ় তার পুরো পৃথিবী বাজি ধরতে পারে।
অথচ পাষাণী চলে গেলো।

পেছনে পড়ে থাকা ক্ষত-বিক্ষত প্রেমিক হৃদয়কে অবহেলা আর ঘৃণায় দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে চলে গেলো সে।
পিয়াসা বের হয়ে যেতেই বন্ধুরা সবাই আবার আসে ভেতরে। আষাঢ়ের চারপাশে বসে সবাই।
রাব্বি বললো, “দোস্ত,ভাবী তো একেবারে সে….”
বলার আগেই আষাঢ় জনিকে বললো, “একটা লাথি মার তো ওর পেছনে। যতটা উচ্চারণ করেছিস ওর ব্যাপারে, ওখানেই সীমাবদ্ধ থাক।আর একটা শব্দ ও বলবি না।আমার কইতরকে নিয়ে তোদের একটা মন্তব্য ও আমি শুনতে চাই না।ভাবীর নজরে না বোনের নজরে দেখবি ওদের।মায়ের পেটের বোন।”
শাকিল বললো, “শ্লা,নিজের বেলায় ষোল আনা না!”
“না,নিজের বেলায় এক আনা ও না আমার। কিন্তু যদি হয় আমার কইতরের ব্যাপার, তাহলে ষোল আনা কেনো শুধু পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত সবটাই আমার।”

জনি আষাঢ়ের দিকে তাকিয়ে বললো, “তুই শ্লা একটা জিনিস। প্রায় ৫/৬ বছর ধরে একজনকে পছন্দ করে এখনো অপেক্ষাই করে আছিস।আর কতো অপেক্ষা করবি?বুড়ো হয়ে যাচ্ছিস তো।”
আষাঢ়ের দৃষ্টিতে বিষাদ নামে।বুকে বাজে বিষাদের সুর।
ঘোলাটে দৃষ্টিতে বাহিরে তাকিয়ে বললো, “সবার ভালোবাসা পূর্ণতা পেতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই।আমি ভালোবাসি বলে ওকে ও আমাকে ভালোবাসতে হবে কেনো!
আমি ওকে যতটা ভালোবাসি,ঠিক ততটাই ও আমাকে ঘৃণা করে।
ওকে নিয়ে দেখা আমার স্বপ্নগুলো আমি আজন্মের মতো আমার অন্তরে দাফন করে দিলাম।”
বন্ধুরা সবাই চুপ হয়ে গেলো।

সেই প্রথম যেদিন পিয়াসাকে দেখেছিলো আষাঢ়, সেদিন থেকেই বলেন বন্ধুমহলে সবাই জানে আষাঢ় একজনকে ভালোবাসে।তার নাম কইতর।
পিয়াসা এই বাড়িতে আসার পর আষাঢ়ই একদিন দূর থেকে বন্ধুদের দেখিয়ে বলেছে, রাস্তাঘাটে কখনো পিয়াসাকে দেখলে যাতে পিয়াসার খেয়াল রাখে সবাই।
বন্ধুদের মধ্যে সবাই মিঙ্গেল।একমাত্র এই বান্দাই এখনো সিঙ্গেল। অথচ মেয়েরা সবাই সবসময় তার উপর ক্রাশ খায়।
মিনি নিজের রুমে শুয়ে আছে। প্ল্যান মোতাবেক গায়ের উপর একটা কাঁথা দিয়ে রেখেছে মিনি।
তার বুক কাঁপছে দুরুদুরু।

এরপর কি হবে মিনি জানে না।শুধু জানে সে নির্জনকে ভালোবাসে।
ভালোবাসে বলেই সে নির্জনের জন্য আগুনে ঝাঁপ দিয়ে পু ড় তে ও রাজি।
ঘড়িতে রাত এগারোটা।
মিনি নির্জনকে কল দিলো।
নির্জন রুমে বসে ভীষণ বিরক্ত হচ্ছে। নিজেকে তার আজকাল কেমন বন্দী মনে হয়। এতো বড় হয়ে ও সে এখনো মা’য়ের আঁচলের নিচে বন্দী যেনো।
মা’য়ের ছত্রছায়ায় থাকতে থাকতে আজকাল আর কিছুই করতে ইচ্ছে করে না তার।
আষাঢ় যেমন সোশ্যাল ওয়ার্ক করে, রাজনীতি করে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়,বাড়ির যাবতীয় কাজ করে,সোশ্যাল মিডিয়ায় ও এক্টিভ অথচ একই বয়সী হয়েও নির্জনের জীবন তার রুমের মধ্যে বন্দী।

হ্যালো 2441139 পর্ব ৩৭

সারাদিন শুয়ে-বসে থেকে খেয়ে শুধু ভুড়িটাই হয়েছে।
অথচ ডায়েট করতে ও পারে না সে,জিমে যেতে ও ইচ্ছে করে না।
জবের জন্য ট্রাই ও করে না।
একই বাড়ির দুই ছেলে,দুজন দুই মেরুর।
নির্জনের ভাবনার মধ্যেই মিনির কল আসে।

হ্যালো 2441139 পর্ব ৩৯