অদ্ভুত প্রেমানুভূতি পর্ব ৬ || Suraiya Aayat || SA Alhaj

অদ্ভুত প্রেমানুভূতি পর্ব ৬
Suraiya Aayat

দুইদিন পর,,,,,,
আরূশির কোমরের ব্যাথা টা এখনো কমেনি বরং যেন আরও বেড়ে গেছে , বুঝতে পারছে না যে আসলে কোমরের হাড়ে চিড় ধরেছে নাকি আরো কিছু ৷ কারণ কোন মেডিকেল চেকআপ ও করেনি, শরীরটাও খুব একটা ভালো লাগছে না ৷ এদিকে অফিসের চাপ তার ওপর আসাদের সমস্ত পাগলামো টর্চার ওকে সহ্য করতে হয় ৷ যতই চেষ্টা করছে সমস্ত কিছু ভালোবাসা দিয়ে ঠিক করার কোনো কিছুই যেন ঠিক হচ্ছে না৷ শরীরটা আর কোন ভাবেই পেরে উঠছে না….
সবে অফিস থেকে বেরিয়ে এসেছে আসাদ আর আর আরোশী ৷ প্রথম প্রথম দুজনে আলাদা আলাদা গেলেও এখন বাড়ির লোকের জোরাজুরিতে দুজনকে একসাথেই যেতে হয়….

আরোশী সবে ফ্রেশ হয়ে সোফাতে একটু বসেছে, সেখানে বসে যেন কোনভাবে শান্তি পাচ্ছেনা তাই না পেরে গেল একটু ছাদে গিয়ে ফ্রেশ হাওয়া খেয়ে আসবে তাই ৷ যদিও জানে ছাদের সিঁড়ি বেয়ে গেলে কোমরে ব্যথা আরো বাড়বে ৷ বন্ধ ঘরের মধ্যে যেন জীবনটা থেমে গেছে ৷ না পেরে ছাদের দিকে গেল….
আসাদ ঘরে এসে দেখল আরোশী ঘরে নেই যদিওবা ও জানার ইচ্ছা নেই যে আরোশী কোথায় ৷ মেয়েটার থেকে যত দূরে দূরে পারুক ও থাকতে চাই তার কারণ এভাবে যদি সবসময় আরুশির সাথে থাকে তাহলে নির্ঘাত কোন না কোন একদিন মেয়েটার মায়ায় জড়িয়ে যাবে ৷ আর ও নতুন করে কোনো মেয়ের ছলনাযর শিকার হতে চায় না….
অনেকক্ষণ ধরে আসছেনা দেখে ব্যাপারটা নিয়ে একটু আস1দ নড়েচড়ে বসল ৷
প্রথমে ব্যালকনিতে গিয়ে দেখল আরুশি সেখানে আছে কি? না পেয়ে ছাদের দিকে গেল কারণ আসার সময় ও দেখেছে ওর মায়ের ড্রয়িংরুমে একা …..

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আরুশি দাঁড়িয়ে নীরবে চোখের জল ফেলে যাচ্ছে তার কারণ এই বাড়িতে আসাদের মা ছাড়া ওর দেখার মত কেউ নেই যে ওকে ঠিকমত কেয়ার করবে ৷ আসাদের থেকে এসমস্ত কোন কিছুই আশা করে না ও কারণ ও জানে আসাদের থেকে এগুলো আশা করা বেকার৷ আজ নিজেকে বড্ড অসহায় লাগছে আরুশির ৷ মায়ের ভালোবাসার কমতি অনুভূতি করছে আজ ৷ এই প্রথম এতদিন ওর বাবার ভালোবাসা পেয়ে কখনো এমন অনুভূতি টা হয়নি এখনো মনে হচ্ছে ওর মা যদি বেঁচে থাকতো তাহলে কোনদিন হয়ত ওকেকে কষ্ট পেতে দিতো না ৷ মায়ের ভালোবাসা সত্যিই আলাদা যেটা সকলে পায় না আবার যারা পায় অনেক সময় তারা ও তার সম্মান দিতে জানে না….
নীরবে কাঁদতে কাঁদতে আর না পেরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো , হাটু গেড়ে বসে পড়ল ছাদের মেঝেতে৷ কোমরের ব্যথা,আর একটু জ্বর জ্বর লাগছে ওর৷

আসাদের মা কে কখনো এই সমস্ত কিছু বুঝতে দেইনি ও ……
হঠাৎ কারোর পায়ের শব্দে আরোশী চোখটা মুছে নিয়ে উঠে দাঁড়ালো, উল্টো দিকে বাইরের দিকে ফিরে তাকাল ৷ নিজের কষ্ট কাউকে দেখাতে চায় না ও ৷
মেয়েদেরকে চেনা বড় কঠিন, কষ্টের সময়েও নিজের মুখে হাসি টুকু ধরে রাখতে তারা জানে , এটাই হয়তো তাদের সবথেকে বড় ক্ষমতা….
আসাদ দেখল আরোশী পিছনে ঘুরে দাঁড়িয়ে রয়েছে আর কান্নার কোন শব্দ না হলেও আরশির শরীরটা যে কাপছে তা দেখে আসাদ বুঝতে পারছে, হয়তো কান্না থামালেও কাঁপাটা এখনো থামেনি….
বেশ গম্ভীর স্বরে জিজ্ঞাসা করল :এত রাতে কি করছো এখানে?
কন্ঠ টাকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে :এমনি এলাম৷
আসাদ কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারছিল তখন ওর সমস্ত ভাবনাকে চুরমার করে দিয়ে আরুশির ফোনে সাদাফের ফোন এলো , ফোনটা আসতেই আসাদের চোখে পড়ল তখন ও ভাবল হয়তো সাদাফ এর সাথে কোন ঝামেলা হয়েছে বলে আরুশি কাদছে৷

আসাদ রেগে গিয়ে বলল : প্রেমিকের সঙ্গে ঝামেলা করে এখন ঢং কর এখানে কাঁদছ, ভারি নির্লজ্জ মেয়ে তুমি ৷ আসলে তুমি কেন! আমার এখন তো মনে হচ্ছে পৃথিবীর সকল মেয়েই তোমার মত ৷ এতই যখন ছেলেটাকে ভালোবাসো তাহলে চলে যাও আমার জীবন থেকে ,আমিও মুক্তি পাই….
আসাদের দিকে ঘুরে :6 মাস কিন্তু এখনো হয়নি, সবে তো আজ দশ দিন বলে সেখান থেকে চলে গেল কারণ আসাদের কথা গুলো বড্ড গায়ে লাগছিল ওর৷ নিজেকে নিয়ে একটা নোংরা বিষয় বানানো কেউ কখনোই পছন্দ করবে না , তেমনি আরোশি ও নয়……
পরের দিন সকাল বেলা…..

অদ্ভুত প্রেমানুভূতি পর্ব ৫

সেদিন রাত্রে আরুশির আসাদের উপর প্রচন্ড রাগ হয়ে গিয়েছিলে আর আসাদ এর ও পাল্টা রাগ করার কারণে অন্য ঘরে ঘুমিয়েছিলে, তাই রাত্রে দুজন দুজনের অবস্থাটা কেউ জানতে পারেনি ৷
সকালে আসাদ যখন ওর রুমে আসলো দেখল আরুশি একটা প্লাজো আর একটা অফ শোল্ডার টপ এর উপর কোট পড়েছে, আর লাগেজ প্য1ক করছে৷
আসাদ ভাবল আরোশী হয়তো কালকের ঘটনার জন্য চলে যাচ্ছে….
আসাদের একটু খারাপ লাগছে তার কারণ কথাগুলো আসলে ও না জেনে শুনেই বলেছে সেই কারণে হয়তো৷
কোথায় যাচ্ছ তুমি লাগেজ প্য1ক করে?
আমার বাড়ি যাচ্ছি৷
কেন? (বাঁকা চোখে দেখে)
ইচ্ছা হল তাই৷

কালকের কথা তাহলে বেশ ভালোই গায়ে লেগেছে!
শুধু আমি একা না , আপনিও যাচ্ছেন আমার সঙ্গে৷
তোমার মাথা খারাপ যে আমি তোমার কথা শুনবো আর তোমার সাথে নাচতে নাচতে তোমার বাড়িতে চলে যাব…
তা নয় তো কী?আমি যেমন আপনার কথা শুনি তখন আপনার ও আমার কথা শোনা উচিত…..
কখনোই না! তুমি যা বলবে আমি কখনোই তা শুনবো না, আর যাচ্ছো চলে যাও ৷
আপনার লাগেজটা গাড়িতে রয়েছে , তাই চলে আসবেন তাড়াতাড়া, বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল ওর লাগেজ নিয়ে ৷
এই মেয়েকে আচ্ছা করে পিটালে তবে আমার শান্তি হয় ৷

অদ্ভুত প্রেমানুভূতি পর্ব ৭