অনুভবে তুই পর্ব ১৯

অনুভবে তুই পর্ব ১৯
লেখনীতে-ইসরাত জাহান ফারিয়া

ড্রইংরুমের ভেতর শুনশান নীরবতা। কেউ কোনো কথা বলছে না৷ সারাক্ষণ হাসি-ঠাট্টায় মেতে থাকা পুরো পরিবারটির মানুষজন এভাবে চুপচাপ বসে আছে তা মেনে নেওয়া যেন খুব কঠিন। সুহানা শেখের পাশে বসে থাকা তাঁর মেয়ে ইশা যখন ভ্রু কুঞ্চন করে তার দিকে তাকালো, সুহানা শেখের মুখটা মিইয়ে গেল। থমথমে চেহারায় অপ্রস্তুত হাসলেন তিনি। এতক্ষণ বাড়ির দুই কর্তা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। কেউ-ই কিছু বলছে না দেখে ইমতিয়াজ সাহেব গলা ঝাড়লেন। নিজের ছেলের মুখে বোনের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনতে পেয়ে রেগে গেলেন তিনি। উৎসকে খানিকটা উঁচু স্বরেই ধমক দিলেন, ‘মাথা খারাপ হয়েছে তোর উৎস? কিছু করি না বলে ভাবিস না তোর বাবা শাসন করতে জানে না!’

এতক্ষণে ঘরের ভেতরে থাকা নীরবতা ভেঙ্গে খানখান হয়ে গেল। বাবার রাগ দেখেও দমে গেল না উৎস। শান্ত ভঙ্গিমাতেই সে তার বক্তব্য সবার সামনে উদ্যম নিয়ে বলতে লাগলো, ‘আমি সেটা ভাবিনা আব্বু। আর আমার মাথাও খারাপ হয় নি। আমি যা বলছি সজ্ঞানেই বলছি।’
‘আমার তো মনে হয় না তুই সজ্ঞানে আছিস। তোর ফুফুর নামে এসব বলার মানেটা কী? আর ওর সাথে রোজার চলে যাওয়ারই বা কী কানেকশন?’

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

উৎস বলতে গিয়ে থেমে গেল। আদ্রিশ দরজা দিয়ে ঢুকছে, বোধহয় বাইরে থেকে ফিরেছে। ড্রইংরুমের আলোচনার শেষ কথাগুলো ওর কানে গিয়েছে। আদ্রিশ এসেই সুহানা শেখের মুখোমুখি একটা সোফায় বসে পড়লো। গায়ের কোর্ট-টা খুলে পাশে রেখে শার্টের তিনটে বোতাম খুলে সে চাচার কথার জবাব দিল, ‘সেটা আমাদের প্রিয় ফুপিকেই জিজ্ঞেস করো না ছোটচাচা। তাহলেই তো ব্যাপারটা খোলাসা হয়ে যায়। তাই না?’

সুহানা শেখের রক্তশূণ্য চেহারা। তার মনটা খচখচ করছে। আদ্রিশকে কী মেয়েটা সব জানিয়ে দিয়েছে? সুহানা শেখ থমথমে গলায় বললেন, ‘কোন ব্যাপার খোলাসা করার কথা বলছিস বাবা?’
ফুফুর চেহারা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো আদ্রিশ। বিরক্তিকর একটা নিঃশ্বাস ফেলে পাশে পড়ে থাকা কোর্টটা মুঠোতে চেপে ধরলো সে। ব্যগ্র কন্ঠে বলল, ‘বুঝতে পারছো না? নাকি বুঝতে চাইছো না তুমি?’
‘কিছু না বললে বুঝবো কি করে আমার ভুলটা কোথায়?’

আদ্রিশ কপালে ভাঁজ ফেলে বলল, ‘ওয়েল। সরাসরি কথা বলতে আমি পছন্দ করি। সো বলেই ফেলি, আমাদের ছোট মা’র একমাত্র আদরের বোনের মেয়ে যাকে তোমরা রোজা বলো৷ সে বিগত কয়েক মাস যাবৎ আমাদের বাড়িতে থাকছে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে। মেয়েটা যথেষ্ট নম্র, ভদ্র, মার্জিত ব্যবহার এবং ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট। আমাদের বাড়ির সকলেই ওকে ভালোবাসে। কিন্তু হুট করেই তুমি যেদিন এলে সেদিন থেকে ওর ব্যবহারে পরিবর্তন দেখা গেল। একপর্যায়ে আমাদের বাড়ি ছেড়েও চলে গেলো। কাউকে কিছু না বলেই। অবশ্য সবাই জানে, রোজা ওর বাড়িতে বেড়াতে গেছে। কিন্তু এটা সত্য নয়৷ সে বরাবরের মতো আমাদের বাড়ি ছেড়ে গেছে।’
নিশিতা হতভম্ব হয়ে বললেন, ‘মানে? রোজা আর আসবে না? ও তো আমাকে কিছু বললো না?’

চাচীর কথার পিঠে আদ্রিশ হেসে বলল, ‘তাহলে বুঝো, তোমার বোনের মেয়েটা কেমন? তোমাকেই যখন কিছু বলে নি বাড়ির অন্যদের সে কেন বলবে? বোধহয় দয়া হয়েছিল, তাই উৎসকে জানিয়ে দিয়েছে।’
নেহা-ফিহা একসাথে ভাইয়ের দিকে তাকালো। উৎস মাথা নেড়ে আদ্রিশের কথায় সায় জানাতেই নিশিতা রাগী স্বরে বললেন, ‘ও বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে আর তুই আমাকে কিছুই জানাস নি? উলটো বলেছিস, বাড়ির জন্য মন কেমন করছিল বলে তুই ওকে গ্রামে বেড়াতে নিয়ে গেছিস!’

মায়ের কথার জবাবে উৎস মুখ কালো করে বলল, ‘তোমার বোনের মেয়েটা তো ব্ল্যাকমেইল করে আমাকে চুপ করিয়ে দিয়েছে। নেহাৎ কাজের আন্টি আমাকে সবটা জানিয়েছে। নয়তো জানতেই পারতাম না ওর চলে যাওয়ার পেছনে কারণ কী!’
আদ্রিশের মা মিতালি রুক্ষ স্বরে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কারণটা ঠিক কী? আমাদের বাড়িতে কী ওর কোনো সমস্যা হচ্ছিলো?’
আদ্রিশ জবাবে বলল, ‘হ্যাঁ। প্রথম সমস্যা ফুপি, দ্বিতীয় সমস্যা আমি।’
ঘরভর্তি উৎসুক সদস্যরা হতবাক হয়ে গেলো ওর কথায়। ইনায়েত সাহেব শক্ত কন্ঠে বললেন, ‘এত ভনিতা না করে আমাদের বলবে তো হয়েছেটা কী?’

আদ্রিশ চোখ সরিয়ে বাবার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘একটু অপেক্ষা করো, সব জানতে পারবে।’
‘বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছো কেন?’
‘বিভ্রান্তি নয় বাবা। আমি ব্যাপারটা ধীরে-সুস্থে বোঝাতে চাইছি। ফুপির ভুলটা ধরিয়ে দিতে চাইছি। রোজার সঙ্গে আমাদের নেহা-ফিহা-ইশা-উৎস সবার সাথেই ভালো সম্পর্ক ছিল। শুধু ওদের না, বাড়ির প্রতিটি মানুষের সাথে ওর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমার সঙ্গে ছিল না।

কেন জানো? প্রথমত আমি একটু রাগী, হুটহাট যে কাউকে ধমকে ওঠি। তবে গুরুত্বপূর্ণ কারণটা হলো ওকে আমার ভালো লাগতো। মানে পছন্দ করতাম। এজন্য ওর পিছু নিতাম, জ্বালাতাম যা আমার কাছে ঠিক মনে হতো সেটাই করতাম যেটা রোজা পছন্দ করতো না। সেজন্য আমাকে এড়িয়ে যেতো সবসময়। প্রয়োজন ছাড়া কোনো শব্দ ওর মুখ থেকে বের হতো না। আমি ওর প্রতি আরও এট্রাক্টিভ হয়ে পড়ি, একসময় বুঝতে পারি ওর জন্য আমার অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে। আর তাঁর নাম ভালোবাসা। আমি ওই চুপচাপ, রাগী, ইগোওয়ালী, অহংকারী রোজানুকে যখনই বুঝতে শুরু করলাম তখনই আমার প্রিয় ফুপি আমার অনুভূতির অপব্যাখ্যা দেন ওর কাছে। ফলশ্রুতিতে ওর মনে তৈরি হয় রাগ, ঘৃণা। রোজা আমায় ভুল বুঝে, নিজের আত্মসম্মান বজায় রাখতে চলে গেছে একমাত্র ফুপির কটুক্তি সহ্য করতে না পেরে। আচ্ছা ফুপি, আমিতো তোমাকে এসব বলি নি, তুমি কোথা থেকে জানতে পারলে যে আমি রোজাকে পছন্দ করি?’

সুহানা শেখ কিছু বললেন না। তা দেখে ইশা কপাল কুঁচকে বলল, ‘আমি বলেছিলাম মা’কে। তুমি রোজার প্রতি কেয়ারিং ছিলে, যেটা ফিহা আপু আর আমার চোখে পড়েছে। মাঝেমধ্যে গল্পের খাতিরে মায়ের সাথে শেয়ার করতাম। মা হয়তো সেখান থেকেই কিছু একটা আন্দাজ করে নিয়েছে।’
আদ্রিশ রোজাকে পছন্দ করে কথাটি জানতে পেরে উপস্থিত মুরুব্বি আর নেহা সবাই-ই চমকে ওঠলো। ফিহা আগেই তা অনুমান করেছিল। আর উৎস নির্বিকার, সে পুরো ব্যাপারটাই ভাইয়ের কাছ থেকে জেনেছে। এদিকে সুহানা শেখ নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য মুখভঙ্গি পালটে কড়া স্বরে বললেন, ‘আমি তো কিছুই জানি না। ও- মেয়েকে আমি কি বলব? তাছাড়া ও হয়তো দেখতে রুপসী, এছাড়া আর কিছু আছে নাকি?’

ফুফুর ভড়কে যাওয়ার ব্যাপারটা চোখে পড়লো উৎসের। সে চুপচাপ বসে সুহানা শেখের কান্ডকীর্তি দেখছিল। বাড়ির এসব অশান্তিতে উৎস নিজেকে জড়াতে চায় না কোনোদিনই। কিন্তু যেখানে রোজাকে এতটা অপদস্ত হতে হয়েছে সেখানে দরকার পড়লে অবশ্যই প্রতিবাদ করবে। হোক সে নিজের ফুফু বা অন্য কোনো ব্যক্তি। এবার কঠোর গলায় সে বলল, ‘কথাটা দু’রকম হয়ে গেল না ফুপি? তুমি কিছুই জানো না, আবার ওর রূপ-গুণ নিয়ে কথা বলছো৷ এতেই বোঝা যায় তোমার ওকে পছন্দ নয়।’

ফ্যাসাদে পড়ে গেলেন সুহানা শেখ। আমতাআমতা করতে লাগলেন। ভাইদের সামনে এখন কীভাবে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করবে? ইশা তো তার সাথে কথা বলাই বন্ধ করে দেবে। ভাবিদের সামনেই বা কোনমুখে কীভাবে দাঁড়াবে? চিন্তায় অস্থির হয়ে গাইগুই শুরু করে দিতেই ইশা তিক্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করল, ‘রোজাকে তুমি কেন অপছন্দ করো মা?’
সুহানা শেখ অবাক হওয়ার ভান করে বললেন, ‘সেটা কখন বললাম?’

ইশার মুখখানা অপমানে থমথম করছে। মা যখন মিথ্যে বলেছে তখন তখন তার চোখমুখ দেখেই যা বুঝার বুঝে নিয়েছে সে। ছলছল করছে দু’টি চোখ। থমথমে গলায় সে মা’কে জিজ্ঞেস করে, ‘তাহলে ওকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বাধ্য করেছো কেন?’
সুহানা শেখ মেয়ের প্রশ্নে সাজানো কথাগুলোতে তালগোল পাকিয়ে ফেলতে লাগলেন৷ বড় ভাই-ভাবিদের সামনে নিজের দোষ স্বীকার করতে নারাজ তিনি। একপর্যায়ে নিজের ইমেজটা বজায় রাখতে গর্জে ওঠে বললেন, ‘তুই চুপ থাক। বড়দের মাঝে এত কথা বলছিস কেন? আর যে মেয়েটা চলে গেছে তাকে নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন তোর? ওই মেয়ে রুপের যাদুতে আদ্রিশকে বশ করে ফেলেছে, সেটা দেখছিস না!’

আদ্রিশ বিরক্ত মাখা কন্ঠে বলল, ‘ফুপি প্লিজ চুপ করো। তোমাকে কে বলেছে রোজা আমাকে বশ করেছে?’
সুহানা শেখ বিদ্রুপাত্মক কন্ঠে বললেন, ‘নয়তো এসব কথা তোকে জানালো কেন? এতেই বুঝা যায় কে ধোঁয়া তুলসী পাতা আর কে বিচুটি পাতা।’

আদ্রিশ শান্ত থাকার চেষ্টা করে বলল, ‘তোমার সমীকরণে ভুল আছে। এসব রোজা আমাকে বলবে কেন? সে আমার সাথে নিজে থেকে কোনোদিন কথাই তো বলেনি। সেখানে তোমার নামে বিচার দিবে? সে তাঁর আত্মসম্মানবোধ নিয়ে বসে আছে। ও- মেয়ে এসব আমাকে বলবে? ছোট হয়ে যাবে না? আসলে তুমি যখন এসব ওকে বলছিলে তখন কাজের খালা সেখানেই ছিল, তিনি সব শুনতে পেয়ে উৎসকে জানিয়েছে। আর মানতে না পারলেও এটাই সত্য, আমি রোজানুকে ভালোবাসি।’

সুহানা শেখের গায়ে কেউ যেন আগুন ধরিয়ে দিলো। তিনি কর্কশ স্বরে বলতে লাগলেন, ‘কেন ভালোবাসবি? ও কোন দিক থেকে তোর যোগ্য? ও-ইতো দেখতে সুন্দর। এসব মেয়ের চরিত্র কেমন হয় ঢের জানা আছে। সারাক্ষণ রোজা রোজা করে একেকজন অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিস! আমার ইশা কোনদিক থেকে কম? ওর দিকে তো ফিরেও তাকাস না।’
আদ্রিশ হতভম্ব। ফুফুর কথার মানে বুঝতে কষ্ট হলো না ওর। ইশাকে কেন অন্য নজরে দেখতে যাবে? ওকে তো সারাজীবন বোনের মতো ভালোবেসে এসেছে। ফুপি কি তাহলে ওর থেকে এসব আশা করে বসে ছিল? আর হিংসার বশেই রোজাকে অপমান করেছে? এসব শুনে ইশা ঘৃণাভরে ওর মা’কে দেখলো। মা এখনো ওই একটা স্বপ্ন নিয়েই পড়ে আছে? যেখানে ও নিজেই রাজি না। ইশা এবার আর চুপ থাকতে পারলো না৷ বলে ওঠল, ‘তুমি যে আমার মা, ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে। ছিঃ!’

সুহানা তেড়ে ওঠলেন, ‘বড় বড় কথা মুখে? এক চড়ে দাঁত ফালাবো তোর। মায়ের কথার অবাধ্য হয়ে অন্যের মেয়ের গুণগান গাইতে লজ্জা করে না? শেষমেশ আদ্রিশকে নিলো তো পটিয়ে? তুই কী করেছিস আজ পর্যন্ত? রুপ-যৌবন কিছুই তো কাজে লাগাতে পারলি না। বেহায়া মেয়ে!’

ইনায়েত সাহেব বোনের লাগামহীন কথাবার্তায় বেশ চটে গেলেন। তাঁর বাড়ি থেকে সুহানা শেখ রোজাকে অপমান, অপদস্ত করেছে আর তিনি জানতেই পারলেন না? আবার ইশার সাথেও কি বিশ্রি ভাষায় কথা বলছে! আদ্রিশকে মেয়ে জামাই কর‍তে চায়? কখনো তো মুখফুটে বলেন নি সুহানা শেখ। যেখানে মেয়েই রাজি না সেখানে এত কথার মানে কী? ইনায়েত সাহেবের মুখ রাগে থমথম করছে। তিনি সটান ওঠে দাঁড়িয়ে বললেন,’তুই আমার বোন হয়ে এরকম একটা কাজ করলি? রোজা তো আমাদের ইশার চেয়েও বয়সে ছোট। আর তুই ইশার সাথে কীভাবে কথা বলছিস? তোর মনে যা ছিল কখনো তো আলোচনা করিস নি আমাদের সাথে? তাহলে?
আমাদের বাড়ির মান-সম্মানের কথাটাও একবার ভাবলি না? খুব তো বলিস তুই আমাদের ভালো চাস। এসবই তার নমুনা?’
সুহানা শেখ মাথা নিচু করে বললেন, ‘ওই মেয়ের জন্য আমাকে কথা শুনাবেন বড় ভাই?’

ইনায়েত সাহেব স্পষ্ট গলায় বললেন, ‘তুই আর কখনো আমদের বাড়িতে আসবি না। ইশা আমাদের বাড়িতেই থাকবে৷ তোর মতো মায়ের দরকার নেই ওর, যে নিজের মেয়েকে অবধি কটু কথা বলতে ছাড়ে না। তুই মা? আমার তো ভাবতেও ঘৃণা হচ্ছে। এসব মহিলার জায়গা আমার বাড়িতে হবে না। বেরিয়ে যা আমার বাড়ি থেকে।’

সুহানা শেখ ব্যথিত চোখে তাকিয়ে রইল। বড় ভাইয়ের কাছ থেকে এমন কথা আশা করেন নি তিনি। ছোট ভাইয়ের দিকে তাকালেও আশানুরূপ কোনো ফল পাওয়া গেল না। কেউই তার হয়ে সুপারিশ করলো না। ইশা মায়ের থেকে এই ব্যবহার আশা করে নি। সবার চোখে ওকে নিচু করিয়ে দিয়েছে। ছলছল করা চোখ থেকে বেরিয়ে এলো পানি। একপর্যায়ে মাথা নিচু করে চুপচাপ দোতলায় চলে গেল নেহার সঙ্গে। উৎস বসে মোবাইল স্ক্রল করছে। আদ্রিশ নিষ্পলক দৃষ্টিতে ফুফুর চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।

অনুভবে তুই পর্ব ১৮

সুহানা শেখ সবার মুখেই তার জন্য ঘৃণা দেখতে পেয়ে দমে গেলেন। কথা বলার সাহস হলো না তার। লজ্জায়, অপমানে গাঁট হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন কেবল। বুঝতে পারলেন, এ বাড়িতে তার উপস্থিতি কেউই কাম্য করছে না৷ নিজের সন্তানও না। বুকের ভেতর চিনচিনে ব্যথা হচ্ছে তার। ভুলটা বুঝতে তার বড্ড দেরি হয়ে গেল সুহানা শেখের। একরাশ ঘৃণাযুক্ত চোখ আর অপমান নিয়ে সেভাবেই তিনি বেরিয়ে এলেন ভাইয়ের বাড়ি থেকে।

অনুভবে তুই পর্ব ২০