অবশেষে তোমাকে পাওয়া পর্ব ১৬

অবশেষে তোমাকে পাওয়া পর্ব ১৬
লেখিকা:- তারা ইসলাম

সূর্যটা মাথার উপর ‘চিকচিক’করছে।গরমে ঘেমে একাকার আমি!ঘামের কারণে শরীরে লেপ্টে থাকা জামাটা ঠিক করে আশে-পাশে তাকিয়ে দেখলাম অনেক গুলা ‘অচেনা’ মুখ!যাদের এই জীবনে আগে কখনো দেখেছি বলে মনে হচ্ছে না।আমি আব্বুর দেওয়া সে এলাকার ঠিকানায় এসে পোঁছালাম মাত্র।তবে এত গুলা ‘অচেনা মানুষ দেখে ভয়ে আমার গা ছম ছম করে উঠলো।আগে কখনো আমি বাসা থেকে একা বের হয়’নি তা’না।আগেও বহুবার আমি একা একা এখানে-সেখানে ঘুরে-বেড়িয়েছি।তবুও আজ আমার হটাৎ ভয় লাগছে!

কিন্তু ভয় পেলে যে চলবে না এখন আমাকে অনেক ‘শ’ক্ত’ হতে হবে ভেবেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাড়ি খুঁজায় মন দিলাম।কারণ আব্বুর থেকে যতটুক শুনেছি একদিনে তো আর আমার আসল মা’কে খুঁজে পাবো না।
“জায়গা’টা শহরের একটু বাহিরে হলেও পুরোপুরি গ্রাম নই!অনেকটা শহরের ছুঁয়া আছে।সাধারণত দেখা যায় গ্রাম সবুজ ঘাস দিয়ে ভরপুর!মাঠে বা’চ্ছা’দের ছুটাছুটি,আশে-পাশে মানুষের গিজগিজ,টিনের ঘর-বাড়ি।কিন্তু এখানে তেমন কিছু নেই!আছে শুধু বড় বড় কয়েক’টা বিল্ডিং”স্কুল,কলেজ,মার্দারাসা,ভালো জামা কাপড় পরিধান করা ছেলে-মেয়ে,অনেকটাই বড় বড় রেস্টুরেন্ট,তবে বেশ সুন্দর জায়গাটা।আমি এবার আশে-পাশে দেখতে লাগলাম কোথাও বাড়িভাড়া পাওয়া যায়’কি’না।কারণ হোটেল পাওয়া গেলেও সেখানে একা থাকার মতো সাহস করলাম না।তার চাইতে ভালো একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করা!যে-ভাবা সে-কাজ।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“আমি হাটতে হাটতে একটা দুতলা বাড়ির সামনে দাড়ালাম।বাড়িটা মাঝারি সাইজের পুরো বাউন্ডারি করা দরজায় দারোয়ান বসে আছে।
“তবে সাইনবোর্ডে লেখা আছে~~~ বাড়ির নাম- বুলবুলি,নামটা পড়ে অবশ্য আমি হেসে উঠেছিলাম! এমন অদ্ভুত নামও যে কেউ রাখতে পারে আগে জানা ছিলো না।তারপর বাড়ির মালিকের নাম- মিশা সওদাগর’নামটা পড়তেই আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো আর মনে মনে ভাবলাম-এটা সাকিব খানের জানে-দুষমান মিশা সওদাগরের বাড়ি নইতো।কিন্তু আবার নিজের কপালে চা’প’ড় দিয়ে বললাম- উনার কেন এই বাড়ি হবে?নূর তুই যেমন আজাইরা তোর ভাবলা গুলাও তেমন আজাইরা।আর নিচে লেখা ছিলো বাড়ি ভাড়া দেওয়া হবে।বাড়িরটার নাম আমার এত পছন্দ হয়েছিলো যে ঠিক করলাম এখানেই রুম ভাড়া নিবো।

“আমি অল্প হেটে দারোয়ানের কাছে গিয়ে বললাম- আনকেল আপনাদের মালিক কি বাসায় আছেন?আসলে আমি বাড়ি ভাড়া নেওয়ার জন্যই এসেছি।
“দারোয়ান আনকেল আমাকে নিচ থেকে উপর পযর্ন্ত স্কেন করে বললেন- আমি ভেতরে গিয়া জিজ্ঞাই আসি আপনে খাড়ান।
~ দারোয়ন আনকেল গেটের ভেতরে চলে গেলেন।তার কয়েক’মিনিট পর ফিরে এসে আমাকে বললেন- স্যার আপনারে ভেতরে ডাহে.

“আমি ঠিক আছে”বলে ভেতরে প্রবেশ করলাম।বাহির থেকে যতটুক সুন্দর লেগেছিলো’ভেতর থেকে তার চাইতেও দিগুণ সুন্দর লাগছে।আমার মনে হলো আমি কোনো ফুলের বাগানে চলে আসছি।মনোমুগ্ধকর ঘ্রাণ,মনোমুগ্ধকর পরিবেশ আহা মনে হলো এখানেই থেকে যায়।তবে নিজের অতীতের কথা মনে পরতেই আমার ঠোঁটের হাসি গায়েব হয়ে গেলো।আমি চেহেরা গম্ভীর করে দরজার কাছে এসে কলিংবেল দিলাম!কলিংবেল দেওয়ার কয়েক-সেকেন্ড পর দরজা খুলে দিলো একজন মধ্যেবয়সী মহিলা।দুই-পাশে দুটো বেণী করা।ঠোঁঠে গাঢ় লাল লিপস্টিক,চোখে গাঢ় কাজল,মুখে গাঢ় পাউডার,আর শাড়িটা কেমন জানি করে পরা মহিলাটাকে আমার কাছে এক্কিবারে ক্রিম আপার মতো লাগলো।দেখতেও ছিলো অনেকটা তেমন।

“মহিলাটা হটাৎ আমাকে দেখে কোমড় থেকে একটা কালো চশমা চোখে দিতে দিতে বললেন- আই’ এম হলাম চম্পা জ্বা’লা’নি।আমি সবাইরে জ্বা’লা’ইয়া পু’ড়া’ইয়া যায়।কিন্তু নিবা’ইয়া যায় না!হাউ আর ইউ কে তুমি?
“উনার কথা শুনে মনে মনে ধম-ফাটানো হাসি দিলাম। তবে চেহেরা স্বাভাবিক রেখে বললাম- আমি এলিজা আহমেদ(মিথ্যা বললাম কারণ আব্বু বলেছেন এখানে এসে যেনো কাউকে নিজের আসল পরিচয় না দি)আসলে আমি এখানে একটা কলেজে ভর্তি হয়েছি নতুন”আর এখানে আমার পরিচিত কেউ নেই!আমি একটা রুম ভাড়া নিতে এসেছি।

“আমার কথা শুনে চম্পা জ্বা’লা’নি আন্টি বললেন- ও আইচ্ছা আসো আসো আমার মালিক বাসায় আছেন!তুমি গিয়া সোফায় বসো।
“আমি ভেতরে প্রবেশ করতেই মুগ্ধতা যেনো আমাকে ছুঁয়ে গেলো!এত সুন্দর গুছানো প্রত্যেকটা জায়গা।আমি ভালোভাবে দেখে বুঝলামব ফ্ল্যাটটা ৪-৫ রুমের হয়তো! আমি বসার রুমে গিয়ে সোফায় বসলাম।তারপর ভালো ভাবে সব জায়গা দেখতে লাগলাম।আমার দেখার মাঝে চম্পা আন্টি বললেন- এই অলিজা তুমি কি কিছু খাইবা?

“আমি ঠোঁট চেপে হেসে বললাম- আমার নাম এলিজা!অলিজা নই”কিছু খাবো না তবে এক গ্লাস পানি হলে ভালো হতো।আর বাড়িওয়ালা আনকেল কই?
“চম্পা জ্বা’লা’নি আন্টি খিলখিল করে হেসে উঠে বললেন- আরে আর কইও না আমি ঠিক ভাবে সাধু ভাষা উচ্চারণ করতে পারি না।একটু আটটু পারি যা আমারে ছোট সাহেব শিখিয়েছেন।আর বড় মালিক এহন আইয়া পরবো।আর আমি পানি আনতে যায় কেমন।
“আমি শুধু মুচকি হাসলাম তবে কিছু বললাম না।

~~ কিছুক্ষনের মাঝে এক ভদ্র লোক পাশের রুম থেকে বের হলেন!তেমন একটা বৃদ্ধ নন তবে আমার আব্বুর থেকে খানেক’টা বড় হবেন হয়তো।উনাকে দেখেই আমি দাঁড়িয়ে সালাম দিলাম।উনি আমার সালামের জবাব দিয়ে বসতে বললেন।আমি বসতেই উনি বললেন- আমি মিশা সওদাগর এই বাড়ির মালিক।তুমি নিশ্চয় বাড়ি-ভাড়ার জন্য এসেছো?
“আমি হালকা হেসে বললেন- জ্বী স্যার আমি বাড়িভাড়ার জন্যই এসেছি।
“উনি বললেন- একা নাকি?পরিবার কই?

“আমি জিব্বা দিয়ে শুকনো ঠোঁঠ ভিজিয়ে বললাম- আমি এলিজা আহমেদ”আমার বাবা নেই”আমার আম্মু কাপড়ের ব্যবসা করেন।আমার পড়া-লেখার জন্য এখানে আসা।আম্মু আমার অন্য জায়গায় তাকে বলে একটা (মিথ্যা জায়গায়ার নাম বলে)বললাম- এখানে আমি নতুন থাকার ও কোনো জায়গা নেই!তাই একটা বাড়িভাড়া নেওয়ার জন্যই এখানে আসা।আমার ছোট বেলা থেকেই একা একা থাকার অভ্যাস আছে!তাই আম্মু সব সময় আমার সাথে থাকেন না আর থাকতেও পারেন না!উনার ব্যবসা সামলাতে হয় নাহলে আমাদের পেট চলবে কি-করে?আমি রুম ভাড়া পেলেই আম্মু আসবেন।অনেকটা ইমোশনাল নিয়েই বললাম।

“উনি আমার দিকে মায়াবি চোখে তাকালেন।বুঝতেই পারলাম আমার ইমোশলান ড্রামা কাজে দিয়েছে।আমি কখনো কারোর ফিলিংস নিয়ে খেলতে চাইনা কিন্তু আজ আমি নিরুপায়।ইস রুদ্র যদি আমার সাথে থাকতো!তাহলে এত কষ্ট করতে হতো না।
~ তারপর উনি অনেক কিছু জানতে চাইলেন।আমি ও স্মার্ট ভাবে জবাব দিলাম সব প্রশ্নের এক-প্রকার উনি আমার ইমোশনাল ড্রামায় ফেঁসে গেলেন।তারপর বললেন- দুতলায় একটা রুম খালি আছে সেখানে থাকতে পারো মাসে কিন্তু চার-হাজার করে দিতে হবে।

আর আমার এখানে অনেক ভাড়াটে আছে”কারোর সাথে জামেলা করবে না!আর আমার দুই ছেলে আহনাফ সওদাগর”আর আরাফ সওদাগর!ও আমার ছোট ছেলে তবে আরাফ ভীষণ দুষ্টু এবার ক্লাস ফাইভে উঠেছে কিন্তু এখনো বা*চ্চা*মো করে!আর আহনাফ আমার বড় ছেলে সে আমার ব্যবসা সামলায় আর সে অবিবাহিত”তাই আমি আমাদের এই বাড়িতে কোনো ইয়াং মেয়ে থাকতে দিই’না।কিন্তু তোমার অবস্থা ভালো না তাই থাকতে দিলাম।বুঝেছো আর আমার মিসেস বুলবুলি সওদাগর।উনি একটু খিটখিট টাইপের তাই কিছু বললে চুপ করে থাকবা।

“উনার কথা শুনে খুশি হলাম।বাহ লোক’টা আসলেই আমার চাইতেও বোকা।রুদ্র যদি এইগুলা শুনতেন তাহলে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলতেন- বাহ নূর বাহ বেশ ভালোই ড্রামা করতে জানো।ভাবতেই মনে মনে হাসলাম।তবে রুদ্রর কথা মনে পরতেই মন খারাপ হয়ে গেলো।কিন্তু বাড়ির নাম যে উনার ওয়াইফের নামে রেখেছেন সেটা ভেবেই উনার চোখের আড়ালে হাসলাম।
“আমার ভাবনার মাঝে আনকেল বললেন- আমাদের কাজের মেয়ে চম্পার সাথে যাও তুমি!সে তোমাকে রুম দেখিয়ে দিবে।
“আমি হেসে চম্পা জ্বা*লা*নি আন্টির সাথে দুতলায় উঠতে লাগলাম।

রুদ্ররা একটা হোটেলে থাকছে তাও মিথ্যা পরিচয় দিয়ে।তারা নিজের আসল পরিচয় লুকিয়ে রেখেছে কারণ তাদের এখানে আসার খবর যদি বাইরের কেউ জানতে পারে তাহলে অপরাধীরা সাবধান হয়ে যাবে।তখন কেসটা জটিল থেকে জটিল হয়ে যাবে।রুদ্র নিজের একটা আলাদা রুম নিয়েছে তার সুবিধার জন্য।আর পাশের রুমটা আমানের।এবার তারা মিলেই কেসটা সামলাবে।
“রুদ্ররা সবাই ফ্রেশ হয়ে অল্প খেয়ে-দেয়ে মাঠে নেমে পরলো রাসেল আর শায়লা খাতুনের খুঁজে।আশে-পাশে যাকে দেখছে সবাইকে কৌশলে জিজ্ঞাস করছে তাদের ঠিকানা।কিন্তু কেউ আসল ঠিকানা বলতে পারছে না।অনেকে তাদের চিনতেছেও না।

“তখন রুদ্র আমানকে বললো- আমান আমার মনে হয় তারা ছদ্দবেশে আছে।না-হলে এত-সময়ে তাদের খুঁজ পেয়ে যেতাম।অনেক পাক্কা-খেলোয়াড় এরা।
“আমান রুদ্রর দিকে তাকিয়ে বললো- ঠিক বলেছিস কোথায় যে ঘা’বটি মে’রে বসে আছে কে জানে?
“রুদ্র বাঁকা হেসে বললো- যেখানেই ঘা’বটি মে’রে বসে থাক।আমি খুঁজে বের করবোই করবো বলেই চোখ মুখ শক্ত করে ফেললো।
~ তারপর তারা আবার কাজে লেগে পরলো।

বাবাই উনারা খুঁজছেন মামনি আর আর ফায়জা কে।
“আহান চৌধুরি রেয়ানের দিকে তাকিয়ে বললেন- এতগুলা দিন হয়ে গেলো এখনো পর্যন্ত তাদের খুঁজ বের করতে পারে’নি?
“রেয়ান বললো- না বাবাই তবে উনাদের মনে হয় ওই এলাকাতে নাকি মামনিরা নেই।
“আহান চৌধুরি রেগে মনে মনে ফুঁসছেন আর বলছেন- শায়ু(শায়লা)তুমি আমার থেকে আমার মেয়েকে আর দূরে রাখতে পারবে না।এবার আমি ঠিক তোমাকে খুঁজে বের করবোই!যদি পাতালে থাকো সেখান থেকে হলেও তোমাকে আমি খুঁজে বের করবোই করবো।আমি জানি আমি অপরাধী,আমি জানি আমি খারাপ ছিলাম!তাই বলে তুমি আমার মেয়ে’কে অন্য কারোর হাতে তুলে দিবে
এবার আর তা হবে না।প্রথমে তোমাকে খুঁজে পাওয়া দরকার-তারপর জানতে পারবো আমার মেয়ে ফায়জা কোথায়।আমার মেয়েকে নিয়ে আমি অনেক দূর চলে যাবো ওকে আমার কাছেই রাখবো।আমার মেয়েকে আমার থেকে দূরে রেখে আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছো কিন্তু আর না।বলেই চোখ বন্ধ করে ফায়জার ছোট বেলার চেহেরা মনে করে চেষ্টা করলেন।

~~~ নূর যখন তার মায়ের পেটে তখন থেকেই আহান চৌধুরি মেয়ের নাম ঠিক করে রেখেছিলেন ফায়জা চৌধুরি।উনি অবশ্য জানতেন না ছেলে হবে কিনা মেয়ে তবু উনি চাইতেন যেনো উনার শায়ুর মতো একটা মেয়ে হোক।

ম্যাডাম তারা তো আমাগো পিছনে হাত ধুইয়া পইরা আছে।ব্যাটা গুলা এহানে পর্যন্ত চইল্লা আইছে।ভয়ে ভয়ে কথা গুলা বললো রাসেল শায়লা খাতুন কে।
“শায়লা খাতুন রুটি দিয়ে মাংসের ঝোল খাচ্ছিলেন।কিন্তু রাসেলের কথা শুনে খাওয়া থামিয়ে বাঁকা হেসে রাসেলের দিকে তাকিয়ে বললেন- রাসেল তোর কি মনে হয় শায়লা খাতুন গুঁ খায়?বলেই অট্টহাসিতে ফেটে পরলেন।তারপর হুট করে হাসি থামিয়ে বললেন- লোক আমারও আছে তারা আসার খবরটা আমি অনেক আগেই পেয়েছি।তবে এই শায়লা খাতুনের সাথে পেরে উঠা এত সহজ না।এই মাঠে আমি পুরনো খেলোয়াড়।আজ পর্যন্ত কেউ আমার একটা চুলও ছিঁড়তে পারে নাই।সেখানে ওই ইয়াং পুলিশ গুলা কি করবে বলেই আবার খাওয়ায় মন দিলেন।

“রাসেল মনে মনে কিছুটা স্বস্তি পেলো।তার ম্যাডাম কেমন সে জানে।আর তার ম্যাডামের একটা মাত্র দূর্বলতা আর সেটা উনার মেয়ে।এছাড়া উনি আর কিছুতেই ভয় পান’না।ভীষণ চালাক চতুর একজন মহিলা উনি।
“শায়লা খাতুন খেতে খেতে বললেন- ‘আটারো’ বছরের নিচে দশটা মেয়ের ব্যবস্তা কর।বড় স্যাররা চেয়েছেন?
“রাসেল দাঁত খেলিয়ে বললেন- কাজ হইয়া যাইবো ম্যাডাম।

যে ফ্ল্যাট’টাই আমাকে থাকতে দিয়েছেন সেটা দুই রুমের মধ্যে সীমাবদ্ধ।একটা রান্না ঘর আরেকটা বেডরুম+ ওয়াশরুম।বেশ ভালোই লেগেছে রুমটা!আমি ফ্রেশ হয়ে আব্বুকে কল দিয়ে সব বললাম।(ও বলে রাখা ভালো এখানে আসার আগেই আমি আমার পুরণো সিমটা বদলিয়ে ফেলেছি আব্বুর থেকেই একটা নতুন সিম নিয়ে ফোনে ডুকিয়েছিলাম।যে নাম্বারটা শুধু আব্বুর কাছেই আছে)আব্বুকে মিথ্যা বললাম যে আমি রুদ্রর সাথে উঠেছি একটা হোটেলে।

“আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে মনে মনে ভাবলাম- জীবনটা আমার হুট করেই বদলে গেলো।কোথায় ছিলাম কোথায় আছি?আর একদিনের ব্যবধানে আমি অনেকটাই বদলে গেছি!হয়তো এটাকেই বলে সব পরিস্থির স্বীকার।আজ আমিও পরিস্থির স্বীকার হয়েছি।আমার আসল আম্মুর কাছে আসার একটাই উদ্দেশ্য উনাকে সঠিক পথ দেখানো।হয়তো উনার কাজটা উনার রক্তে মিশে গেছে কিন্তু উনি নিশ্চয় আমার কথা শুনবেন।আম্মুকে অন্ধকার জগত থেকে বের করে উনাকে নিয়ে আমি বহুদূরে চলে যাবো।

নতুন একটা জীবন শুরু করবো”যেখানে কেউ চেনা-জানা থাকবে না।ভেবেই আমি চোখ বন্ধ করলাম আর ভাবতে লাগলাম- রুদ্র কখনো আমার কাজকে সাপোর্ট করবে না।কারণ সে একজন সৎ পুলিশ!সে আম্মু তো ভাবতেই কেঁপে উঠলাম”রুদ্র আপনি আমাকে কখনো আর মেনে নিবেন না।আমি যে কাজ করতে যাচ্ছি সেটা জানতে পারলে আপনি জাস্ট আমাকে খু*ন করে ফেলবেন।তবুও আমি নিরুপায়”উনি আমার গর্ভ’ধারি’ণী মা।উনাকে সঠিক পথ দেখানো আমার কর্তব্য!আপনি আমায় ক্ষ’মা করে দিয়েন!আমি আপনার বিশ্বাস,ভালোবাসার যোগ্য নই।আর সেদিন করা আপনার ব্যবহার গুলা আমি জীবনেও ভুলবো না।আপনাকে পাশে চেয়েছিলাম কিন্তু পাই’নি আর বাকি জীবনেও চাইবো না।এই অভিমান আপনি কখনো ভাঙ্গতে পারবেন না মিস্টার রুদ্র মির্জা।সে সুযোগ টাও আপনি পাবেন না!আমি আর কখনো আপনার কাছে ফিরবো না…….

অবশেষে তোমাকে পাওয়া পর্ব ১৫

(ভাবছি শাশুড়ি জামাই মুখোমুখি হলে কেমন হবে।আর সামনে অনেক সারপ্রাইজ আছে আপনাদের জন্য)
(আমি সাহিত্যিক ভাবে লিখতে পারি’না বললেই চলবে।তবে ইনশা-আল্লাহ সেভাবে লেখার জন্যও আমি চেষ্টা করবো।আমি নিজ ভাষায় লিখতে অবশ্য বেশি স্বস্তিবোধ করি।তাও আপনাদের জন্য চেষ্টা করবো সুন্দর থেকে সুন্দর ভাবে লেখার)

অবশেষে তোমাকে পাওয়া পর্ব ১৭