আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৮
ইশিকা ইসলাম ইশা
পিটপিট করে চোখ খুলে নিজেকে রুমে পেয়ে চমকে উঠে বসে রিদি। আশেপাশে সবাইকে দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়ে তাকালো দাদির দিকে,
রিদিতা তুই ঠিক আছিস দিদিভাই??
দাদির কথা কানে পৌঁছাতেই রিদি ঝট করে পাশে ফিরে জরিয়ে ধরে নাজমা চৌধুরী কে।নাজমা চৌধুরী আবাক হয়ে বলল,
কি হয়েছে রিদি!!তুই বাইরে কি করছিলি তাও এতো ভোরে আর বেহুঁশ হলি কিভাবে!!!
ওনি!!ওনি!!
কে?ওনি??(দাদি)
অভি চিন্তিত মুখে তাকিয়ে আছে রিদির দিকে।রিদি ভয়ের কারনে কিছু বলতে পারছে না।ঘাবরে আছে অনেক।
রুপ রিদির ভয়ার্ত মুখটা দেখে পাশে বসে একহাতে জরিয়ে ধরে বলে,
তুই কিভাবে এই পা নিয়ে গার্ডেনের বেঞ্চ এ বেহুঁশ হলি!!তুই গার্ডেন পর্যন্ত এই পা নিয়ে গেলিই বা কিভাবে!!
রিদি চমকে উঠে গার্ডেন!!সে তো করিডরে ছিল!!আর সেই ভয়ংকর রাক্ষস টা এসে তার সামনে দাড়াল!এরপর!!এরপর কি হল কিছু মনে নেই!! কিন্তু সে কিভাবে গার্ডেনে গেল।রিদি ভয়ে আমতা আমতা করে বলল,
ও নি…..আ মার সামনে…… ঐ ভয়ংকর রাক্ষস!!
রিদি কথাটুকু শেষ করতেই ভেসে এলো জোৎস্না খালার ভয়ংকর আর্তনাদ!!
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আল্লাহ!! আল্লাহ!!কি কন বড়ো ভাবি!! ভয়ংকর রাক্ষস!! আমি বহুত আগেই কইছিলাম গো!ভ!আপনাগো এই বিশাল বড় বাড়িতে নিশ্চিত ভুত,জিন থাকে!!সিনিমায় দেখছি আমি!!এমন বড়ো বড়ো বাড়িতে তেনারা নিজের আস্তনা করে।আর সুন্দরী মাইয়া মানুষকে বন্দি করে!!রুপ আপা তোমারে কই হুনো আমার কথা!!তেনাদের হাত থেকে রক্ষা পাইতে তাজিব কইরা নিও!! আমি ভালা কবিরাজ জানি!!ভাবিরে কেমন ধরছে!!আপনারেও ধরবো!!
রুপ বিরক্ত হয়ে বলে,
জোৎস্না আপা থামবেন আপনি!!কিসব বলছেন?রিদি এমনিতেই ভয় পেয়েছে আরও ভয় দেখাচ্ছেন!!
জোৎস্না বিজ্ঞদের মতো করে বলে,
মুই হ্যাচাই কইছি!!তেনারা এই বাসায় আছে!!ছোট বৌ(রাইফা) আপনার ম্যাইয়া আমার কথা হুনলো না।হে বিশ্বাস করল না।দেইখেন এইবার রুপ আপারে ধরবো!!রুপ আপা বড়ভাবির চেয়েও সুন্দরী কিন্তু!!
রাইফা কিছুটা ভয়ার্ত কন্ঠে বলল,
এই এই জোৎস্না!!তুমি কি তবে সত্যি বলছো!! আল্লাহ আমার বিউটিফুল ডটার!!তুমি কালই গিয়ে তাবিজ নিয়ে আসবা!!
অভি এতক্ষন রিদির ভয়ার্ত মুখের দিকে তাকিয়ে ছিল। এসব কথায় মেয়েটা আরো ভয় পাচ্ছে।গ্রামে এসব মানে বেশি তাই হয়তো রিদির মনে এসবের ভয়টা আছে।একেতো মেয়েটা ভয় পেয়েছে তার উপর জোৎস্না আপার কথায় আরো ভয় পাচ্ছে।অভি এবার বিরক্ত হয়ে বলল,
তোমরা থামবে!!কি শুরু করেছো!! এসব কিছু হয় না!!হতে পারে ঘুমে হাটার রোগ আছে রিদির।এটা রোগ হতে পারে!তোমরা একটু বেশিই করছো!!এখন সবাই যাও!! রিদি কে রেস্ট করতে দাও।বাকি কথা পরে হবে!!
রিদি চট করে পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখল পায়ের ব্যান্ডেজ একদম ঠিক আছে। কিন্তু রাতে গ্লাস পড়ে পুরো রক্তে মাখামাখি হয়ে গেছিল।রিদি কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
আমার পায়ে অনেক রক্ত ছিল!!!
রক্ত!!!(অভির অবাক কন্ঠস্বর)
ব্যান্ডেজ তো করাই আছে রক্ত তো ছিলই না।তুমি হয়তো ভুল ভাবছো রিদিতা।
রিদি ভয়ে জড়সর হয়ে বলল,
গ্লাস পায়ে পড়ে আমার পা থেকে রক্ত বের হচ্ছিল।তখন……..
তাৎক্ষণিক জোৎস্না আপার আর্তনাদ শোনা গেল,
রক্ত!!দ্যাখছেন!মুই কইছি! আপনারা আমার কথা হুনেন না!!
অভি বিরক্ত হয়ে আবারো কিছু বলতে যাবে তার আগেই নাজমা চৌধুরী ধমকে বলে,
জোৎস্না!!!যা তোর কাজ কর!!তোমরা সবাই যে যার কাজে যাও!আমি আছি রিদির কাছে!!
নাজমা চৌধুরীর কথায় জোৎস্না আপা বিরবির করতে করতে চলে গেল।এরপর সবাই বের হলো রুম থেকে।নাজমা রিদিকে শুইয়ে রিদির মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
এখন একটু ঘুমা তো রিদি!আমি আছি তোর পাশে!!ঘুম থেকে উঠে তোর সব কথা শুনব এখন রেস্ট কর!আমি এইখানেই আছি!!তোর কাছে!!
রিদি নাজমা চৌধুরীর হাত আকরে ধরে চোখ বুজল।নাজমা চিন্তিত মুখে তাকালো রিদির দিকে।ভোর বেলা নামাজ পড়ে বসতেই মালির চিৎকার শুনে দৌড়ে গার্ডেনে গেলে সেখানে ঙ্গানহীন অবস্থায় রিদিকে বেঞ্চ এ শুয়ে থাকতে দেখেছিল সে।তবে কি অভির কথা সত্য!!রিদির কি ঘুমে হাটার কোন রোগ আছে! কিন্তু বেহুঁশ হবে কেন??নাজমা চৌধুরী ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে রিদির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। আপাতত রিদির সুস্থ হওয়া জরুরি!!
এই রিদু!!আরে এই রিদু দাড়া!!আরে কথা তো শোন!!প্লিজ!!
ওমার ডাকেও রিদির থামাথামির নাম নাই।মেঘ ও দৌড়িয়ে আসছে রিদি কে থামাতে।
এই রিদু!!শোন না!!(মেঘ)
ওমা একপ্রকার ছুটে গিয়ে জরিয়ে ধরলো রিদি কে!রিদি বিরক্ত হয়ে বলল।
ছাড়!!
মেঘ হাঁপিয়ে উঠেছে দৌড়াদৌড়ি করে। হাঁপানি রোগীর মতো এসে বলল,
আরে আগে শুনবি তো!!
রিদি বিরক্ত হয়ে বলল,
ছাড় আমাকে!!
ওমা ঝাপটে ধরে বলল,
শোন তো!! আচ্ছা বল আহাদের মাঝে খারাপ কি আছে!!সেই প্রথম থেকেই ছেলেটা তোকে পছন্দ করে!আমি আর মেঘ তো ওকে একটু হেল্প করেছি ব্যাস!!
রিদি বিরক্ত হয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,
তোদের মতো আমার জীবনে ফ্যান্টাসি নেই ওম!তোরা হয়তো আমার ব্যাপারে কিছু জানিস না!আমি!!!
ওমা,মেঘ অবাক হয়ে বলল,
মানে!!!
রিদি চুপচাপ বসল একটা বেঞ্চে।অতীত মনে হতেই চোখ ভিজে উঠলো!! শুরু থেকে সবটায় বলল রিদি!!এরপর চাইলো দূর আকাশের দিকে।
ওমা,মেঘ রিদির অতীত শুনে কষ্ট পেল।শত মায়ের অত্যাচার নির্যাতন এর কথা শুনে বেশ খারাপ লাগছে তার। আবার নাকি বিয়ে হয়েছে কোন জল্লাদ এর সাথে!!
তোকে ওভাবে জোর করে বিয়ে করল শুধুমাত্র তার দাদির কথা রাখতে।লোকটা কি কোন গুন্ডা রে রিদু!!
ওমার কথায় রিদি তাকাল ওমার দিকে।সে নিজেও জানে না তার স্বামী কি করে? কোথায় থাকে?কেমন দেখতে!সেদিনের পর আজ ৫ মাস প্রায় পার হয়েছে!! সেদিন রাতের ঘটনা ,পায়ের আঘাত আর জোৎস্না আপার জিন ভূতের কারবার মিলিয়ে অনেকদিন অসুস্থ ছিল রিদি। যদিও এতোদিনে জানে না সেদিন রাতে আসলে কি হয়েছিলো! কিভাবে সে গার্ডেনে গেল! সত্যি কোন জিন ছিল নাকি তীব্র নামক রাক্ষস ছিল!! এরপর ধীরে ধীরে ভয় কাটিয়ে স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে রিদি।আর এই ৫ মাসে তীব্র নামক মানুষটিরও কোনো খোঁজ ও পাওয়া যায় নি। দাদি যদিও অনেকবার খোঁজ করার চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি।এটা নাকি সে প্রায় করে হুট করে একদিন এসে মাসের পর মাস গায়েব থাকে!
এই রিদু!!কি ভাবছিস?
মেঘের কথায় রিদির ধ্যান ভাঙল।মেঘ আবারো বলল,
এই রিদু তোর বরের নাম কি??কি করে?? কোথায় থাকে??
রিদি স্বাভাবিক ভাবেই বলে,
আমি জানি না!দেখি নি!তবে নাম জানি!!
কি নাম রে!!(ওমা)
তীব্র চৌধুরী!!!
এদিকে ওমা, মেঘ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। তীব্র চৌধুরী!! তীব্র চৌধুরী!!লাইক সিরিয়াসলি!!এটা কিভাবে সম্ভব!! দেশে নামকরা বিজনেসম্যান তীব্র চৌধুরী!!যার পিছে মেয়ের লাইন লেগে থাকে!! যার চোখ জোড়া হাজারো মেয়ের ঘুম কেড়ে নেয় সেই তীব্র চৌধুরী!!যাকে শুধু টিভি, ম্যাগাজিন আর নিউজপেপারে দেখা যায় সেই তীব্র চৌধুরী!ওমা একপ্রকার চেঁচিয়ে উঠলো,
এটা কিভাবে সম্ভব!!!তুই কি সত্যিই বলছিস??তুই তীব্র চৌধুরীর ওয়াইফ!
রিদি ওমার চেঁচানো দেখে ভয় পেয়ে হচকচিয়ে বলে,
কি হয়ছে??তোরা চিনিস ওনাকে??
মেঘ হতবাক হয়ে বলল,
চিনি মানে আরে কে তাকে চিনে না!! তীব্র চৌধুরীকে কে না চেনে না!!তুই কি সত্যি??
রিদি বিরক্ত হয়ে বলল,
আমি চিনি না ওনাকে । দেখিনি।তাছাড়া আমার আঠারো বছর হলেই আমাদের আমাদের ডিভোর্স!ওনি নিজে বলেছে!
আর বাড়ির সবাই বলে আমার মতো মেয়ে তীব্র চৌধুরীর সাথে যাই না!!আমি যেতেও চাই না ওনার সাথে। আমার শুধু আমার মায়ের ইচ্ছে পূরন করতে হবে।আমাকে পড়াশুনা শিখে ডাক্তার হতে হবে!!তাই প্লিজ তোরা ওকে (আহাদ)কে বলে দিস আমি বিবাহিত!!কে আমার হাজবেন্ড সেটা বলার দরকার নাই। আর একটা কথা আমার বন্ধু হয়ে থাকলে এই কথা আর কাউকে বলিস না যে আমার হাজবেন্ড কে? প্লিজ!!
মেঘ,ওমা রিদির কথায় তখনো হতভম্ব হয়ে আছে।এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না তীব্র চৌধুরী রিদির বর!
রিদি মেঘ আর ওমার অবিশ্বাস্য মুখটা দেখে ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ছাড়লো! হয়তো তার কথা বিশ্বাস হয়নি!তাতে কি!! সত্যি তো সত্যিই!!রিদি আর কিছু না বলে ওখানে থেকে চলে গেল।
কলেজের রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে রিদি ভাবলো তখনকার কথা। আজ সকালে রিদি কলেজে ঢুকতেই কোথা থেকে ওমা ছুটে এসে বলে,
এই রিদু!চল চল!মেঘের কি যেন হয়েছে??
রিদি অবাক হয়ে বলল,
কেন কি হয়েছে?
মেঘ হঠাৎ ঙ্গান হারিয়ে ফেলেছে জলদি চল!!
রিদি মেঘের কথা শুনে চটজলদি ওমার সাথে একটা ক্লাস রুমের সামনে এসে দাঁড়ায়।রিদি চটপট ভেরানো দরজা খুলতেই মাথার উপর গোলাপের পাপড়ি এসে পড়ে!! রিদি হতবাক হয়ে সামনে তাকাতেই আহাদ কে দেখে ।হাতে গোলাপ ফুল নিয়ে নিচে বসে থাকতে দেখে আবাক হয়ে চেয়ে রইলো।রিদির অবাক হওয়ার মাঝেই আহাদ রিদির দিকে ফুল বাড়িয়ে দেয়!এরপর বলে,
আমি আগে কখনো কাউকে প্রপোজ করি নি!!কিভাবে করতে হয় জানি না!আসলে প্রথম দিনই তোমার আমাকে অনেক ভালো লেগেছে! তোমার মিষ্টি হাসি আমাকে মুগ্ধ করেছে!চোখের চাহনিতে ঘায়েল হয়েছি শতবার!এই ৬মাসে তোমার প্রতি অদ্ভুত এক অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে।যা আগে কখনো হয়নি।আমি চেষ্টা করেও এই অনূভুতি দাবিয়ে রাখতে পারি নি।তাই আজ বাধ্য হয়েই তোমাকে আমার মনের কথা জানিয়েছি।
“আমি তোমাকে ভালোবাসি রিদিতা”
রিদিতা হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শরীর মৃদু কাঁপছে।হয়তো এমন কিছু আশা করে নি।রিদি কয়েকপা পিছিয়ে রুম থেকে বের হতেই মেঘ আর ওমা কে দাঁড়াতে দেখে ওদের ফেলেই তখন ছুটছে শুরু করেছিল।আহাদের ভালবাসার প্রতি কোন অনূভুতি নেই রিদির।তবে যতটুকু বুঝেছে আহাদ ভালো, ট্যালেন্টেড ছেলে সারাক্ষণ বই নিয়ে থাকে।সব সময় ক্লাসে টপ করে।ওমার ভালো বন্ধু সেই সুবিধার্থে রিদি আর মেঘ ও বন্ধুর মতো মিশেছে। যদিও রিদির সাথে পড়াশোনা ব্যাতিত তেমন কোন কথা হতো না।তাই আহাদের অনূভুতি বুঝতে পারে নি। বুঝলে হয়তো আগেই মানা করা যেত!তার জীবনটাই তো এখন একটা ধোঁয়াশা!
রিদি হাঁটার মাঝেই ধ্যান ভাঙল উচ্চ স্বরে হন বাজানোর কারনে!রিদি আশেপাশে তাকিয়ে দেখে অভিক এর গাড়ি।রিদি গাড়ির কাছে যেতেই দরজা খুলে দেয় অভি। গম্ভীর মুখে বলল,
এসো।বসো!!
রিদি কিছুটা অবাক হয়ে বলল,
ভাইয়া আপনার ক্লাস নেই!!
ক্লাস তো তোমার ও আছে!! কিন্তু তুমি রাস্তায় ঘুরছো!
জি!! আসলে আমার শরীর!!
বসো বাসায় দিয়ে আসবো!!
না ভাইয়া তার দরকার নেই।আমি রিকশা করে চলে যাবো।আপনি বরং ক্লাসে যান।ক্লাস জরুরি…..
তোমার কাছে এডভাইস চায় নি।বসতে বলেছি।
অভিকের ধমকে রিদি চুপচাপ বসতেই গাড়ি চলতে শুরু করল। দুইজনেই নিরব বসে আছে।রিদি একবার অভিকের দিকে তাকিয়ে আবারো চোখ সরিয়ে নিল। কিছুক্ষণ পর বাসায় আসতেই রিদি নেমে যেতে চাইলে অভিক গম্ভীর মুখে বলে,
আহাদ নামের ছেলেটাকে কি তুমি পছন্দ করো??
রিদি চমকে উঠে অভিকের কথায়।ভয়ে চুপসে গিয়ে মিনমিন করে বলে,
তেমন কিছু না ভাইয়া!!আসলে আমি বুঝতে পারি নি ও এমন কিছু করবে।
অভিক এবার কিছুটা নরম হয়ে বলল,
আহাদ ভালো ছেলে।তুমি ওর সাথে বসে সবটা ক্লিয়ার করে নিও।
রিদি মাথা নিচু করে বলল,
আমি ওম কে সবটা বলেছি!ও আহাদ কে সবটা বুঝিয়ে বলতে পারবে।
অভিক ভু কুঁচকে তাকাল রিদির দিক আবারো গম্ভীর গলায় বলল,
কি বলেছ??
আমি বিবাহিত!!!
“আমি বিবাহিত” কথাটা অভিকের কানে বাজতে লাগলো! অদ্ভুত এক ভীত অনুভূতি সৃষ্টি হল তার হৃদয়ে।পুরো শরীর ঝিম মেরে গেল।গলা শুকিয়ে এলো।বহু কষ্টে উচ্চারণ করল,
তু মি কি এই বিয়ে মানো!!!
দাদি বলেছে আমার আঠারো হলেই ডিভোর্স দিয়ে দিবেন ওনি! তাছাড়া এটা শুধু কথা রাখতে করেছেন ওনি।তাই বিয়েটা শুধু একটা…….
একি রিদি তুই এখন এখানে!!কি হয়ছে??
হঠাৎ দাদির কথায় রিদি তাকাল নাজমা চৌধুরীর দিকে।রিদি কিছু বলার আগেই অভিক নেমে এসে বলল,
দাদি ওর শরীর খারাপ করছিল তাই বাসায় আসল।
নাজমা চৌধুরী ব্যস্ত কন্ঠে বলল,
কি হয়ছে তোর!!
অভিক স্বাভাবিক হয়ে বলল,
দাদি ব্যাস্ত হবার দরকার নেই।শরীর দূর্বল। প্রেসার লো। খাওয়া দাওয়া করলে ঠিক হয়ে যাবে।
নাজমা চৌধুরী কিছুট রেগে বলল,
আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৭
তোকে বলি খাওয়া দাওয়া করবি!তুই আমার কথায় শুনিস না।চল এখনি দুটো ডিম সিদ্ধ খাবি।এই জোৎস্না!!!
নাজমা চৌধুরী রিদিকে নিয়ে যেতেই অভিক দীর্ঘশ্বাস ফেলল। কি এক অনুভুতির দহনে পুড়ছে সে।২৮ বছরের জীবনে এই মেয়েটার প্রতিই কেন দূর্বল হতে হলো তাকে!!মাঝে মাঝে সে ভুলে যায় রিদিতা তীব্রর চৌধুরীর বৌ। তিক্ত হলেও তো এটাই সত্যি। কিন্তু মন!!মন তো মানতে চায় না।মন তো কোন বারন মানে না!কোন সমাজ মানে না।কোন রুলস মানে না!!
মেয়েটার ভুবন ভোলানো মায়াবী মুখটা দেখলে কোন বাঁধা যে মানতে চাই না।এতে দোষ কোথায়!!
অভিক রাগে গাড়িতে দুবার লাথি মেরে আবার গাড়িতে বসে চলে গেল।