কহিনুর পর্ব ৩

কহিনুর পর্ব ৩
লাবণ্য ইয়াসমিন

নিস্তব্ধ বাড়িতে চিৎকার চেচামেচির আওয়াজ প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসছে। কয়েক জনের দৃষ্টি একজন লোকের দিকে। সেটা হলো জুবায়ের ফারুকী। লোকটা নিজের বাবাকে চিৎকার করে বলছে,
>ওই মেয়েটাকে স্পর্শ করতে আমার ঘৃণা লাগে ড‍্যাড। তুমি বুঝবে না এই একটা বছর আমি কিভাবে ওর সঙ্গে আছি। তোমাদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে আমার ভালোবাসাকে আমি ত‍্যাগ করেছি। মাকে হারিয়েছি। আমি এসব আর পারবো না। জুহিকে আমার এখুনি চাই। ওর ড‍্যাড ওর বিয়ে ঠিক করেছে। আমি মানতে পারছি না।

জুবায়ের একদমে কথাগুলো বলে হাতে থাকা গ্লাসটা ফ্লরে ছুড়ে দিতেই বিকট শব্দে কাচের টুকরো গুলো চারদিকে ছড়িয়ে গেলো। অধরা দোতালায় দাঁড়িয়ে আছে। গতকাল রাতে জ্ঞান হারানোর পরে সকালে জ্ঞান ফিরছে। রাতে দেখা ওটা স্বপ্ন কি বাস্তব এখন আর মনে পড়ছে না। পুরোপুরি রহস্য। এই বাড়িতে এই প্রথমবার উচ্চকণ্ঠে আওয়াজ হচ্ছে। কি নিয়ে ঝগড়া বিষয়টা জানার জন্য ও বাইরে এসেছে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আজ দুদিন ধরে যা হচ্ছে তাঁতে এরকম কিছু হবে অস্বাভাবিক কিছু না তবুও কষ্ট হচ্ছে। প্রচণ্ড কষ্ট। লোকটা কত সুন্দর করে এতদিন ওর সঙ্গে অভিনয় করলো। আধরা বুঝতেই পারছে না এদের এই ঝামেলার মধ্যে ও কিভাবে জড়িয়ে পড়লো। জুবায়ের জুহি নামের মেয়েটাকে পছন্দ করে তাহলে ওকে বিয়ে না করে অধরাকে বিয়ে করেছিল কেনো? কহিনুরের জন্য কিন্তু সেতো জুহিকে বিয়ে করলেও হতো। কি এমন দরকার ছিল যার জন্য ওকে টোপ হিসেবে ব‍্যবহার করা হলো?

একদিকে রহস্যের মায়াজাল অন‍্যদিকে জুবায়েরের দেওয়া আঘাত। বিবাহিত স্ত্রীকে স্পর্শ করতে ওর ঘৃণা লাগে। এতদিন যা কিছু হয়েছে লোকটার নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে ভাবতেই অধরার শরীর শিউরে উঠলো। নিজেকে ছোট লাগছে। শাশুড়ি মায়ের মুখটা এই মুহূর্তে খুব মনে পড়ছে। উনি থাকলে এসব কিছুই হতো না। জুবায়েরর বাবা আরমান ফারুকীর কথা শুনে ওর ধ‍্যান ভাঙলো। লোকটা চাপা কন্ঠে বলল,

> উচ্চ শব্দে কথা বলতে মানা করেছিলাম। আজ পযর্ন্ত তোমার কোনো ইচ্ছা আমি অপূর্ণ রেখেছি? রাখিনি তো। আমি জুহির ড‍্যাডের সঙ্গে কথা বলবো। মাত্র দশটা মাস অপেক্ষা করো। ওই বাচ্চাটাকে পেয়ে গেলে সব আগের মতো হয়ে যাবে। তুমি জুহিকে নিয়ে হ‍্যাপি থাকবে। আর আমিও হ‍্যাপি।
জুবায়ের কিছু বললো না। ওর ছোট মা এগিয়ে এসে ছেলেটার হাত ধরে নরম সুরে বললেন,

> বাবা শান্ত রাখো নিজেকে। মম আছে তো সবটা ঠিকঠাক করে দিবে। বিশ্বাস করোনা নিজের মমকে?
জুবায়ের এই মহিলাকে জড়িয়ে ধরে চোখ মুছলো। দৃশ্যটা অধরার হজম হলো না। নিজের মা মারা গেছে তাঁতে লোকটার সামান্যতম দুঃখের ছিটেফোঁটা নেই অথচ গার্লফ্রেন্ডের জন্য সৎ মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। কিন্তু কেনো? মেয়েরা সৎ মাকে সহজে মেনে নিতে পারলেও ছেলেরা নিতে পারেনা।

মনে হচ্ছে এই মহিলাটাই জুবায়েরের আসল মা। বিষয়টা ভেবে ও কান্না ভূলে গেলো। মনে হলো এটাই ঠিক। এতদিন আরমান ফারুকী বাড়িতে আসতেন না।যখন প্রথম স্ত্রী মারা গেলো ঠিক তখনই বাড়িতে আসলেন দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে। এই পরিবারটাতে জুবায়ের প্রথম মায়ের কোনো ভূমিকা ছিল না। এই ছেলেমেয়ে সবটা এই মহিলার। তাঁর জন্য এদের কোনো দুঃখ হচ্ছে না। তাই জন্য ভদ্রমহিলা ওকে মৃত্যুর আগে এভাবে সাহায্য করতে চেয়েছে। বিষয়টা ভেবে ও দ্রুত রুমে চলে গেলো। চার‍দিকে শুধু রহস্য আর রহস্যর গন্ধ। মাথা আউলে যাচ্ছে। হঠাৎ জুহির কথা ভেবেই ও মেজাজ খারাপ হলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই জুবায়ের ভেতরে প্রবেশ করলো। অধরা শুধু লোকটার মুখের দিকে তাঁকিয়ে থাকলো। জুবায়ের চুপচাপ ওর পাশে বসে হাতটা ওর কপালে রাখতে যেতেই অধরা পিছিয়ে গিয়ে বলল,

> প্লিজ স্পর্শ করবেন না।
জুবায়ের ভ্র কুচকে বলল
> কেনো?
> আপনার ছোঁয়া আমার কাছে বিষাক্ত লাগেছে। আমি চাইনা আপনার কখনও আর আমাকে স্পর্শ করেন। তাছাড়া গতকাল আপনি নিজেই বলেছেন আমাকে আর স্পর্শ করবেন না।
জুবায়ের থতমত খেয়ে বসে আছে। ভাবলো বাইরের চেচামেচি কি মেয়েটা শুনতে পেয়েছে? মাথায় ছিল না তখন রাগের জন্য কি না কি বলেছে। এখন আফসোস করতে হচ্ছে। জুবায়ের চোখ বন্ধ করে ভাবলো মেয়েটা কতটুকু জানে ওর বিষয়ে? বুঝতে হবে। ও নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বলল,

> কেনো এতদিন তো ঠিকই ছিল। শুনো ঝামেলা করোনা। চুপচাপ দেখতে দাও। গতকাল তোমার অনেক জ্বর ছিল। জ্বরের ঘোরে বাইরে চলে গিয়েছিলে। আমি উঠিয়ে এনেছি। মেয়েদের জন্য জিদ মানানসই না।
অধরা চোখ বন্ধ করে নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করলো কিন্তু হলো না। ওকে ঠকানো হয়েছে। স্বামী নামক লোকটা ওকে শুধু মাত্র ব‍্যবহার করেছে তাও নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে। এর চাইতে লজ্জার একজন নারীর কাছে কিবা হতে পারে। রাগে ক্ষোভে অধরার শরীর কাঁপছে চোখে পানি চলে এলো। নিজেকে আজ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। ঝাঝালো কন্ঠে বলল,

> একদম নাটক করবেন না। বংশধর চাই সেই জন্যই আমাকে বিয়ে করেছেন তাই না? সুলতান জুবায়ের ফারুকী আপনার বা আপনার বাবার কোনো পরিকল্পনা আমি সফল হতে দিব না। আমার জীবন থাকতে তো না।
আধর থরথর করে কাঁপছে। জুবায়ের বুঝে গেলো মেয়েটা সব শুনেছে। এখন আর লুকিয়ে কোনো লাভ হবে না। নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বলল,

> অনেক কিছুই জানো দেখি। ভালো হয়েছে আর লুকিয়ে রাখতে হবে না। আর কি জেনো বলছিলে? শুনো স্ত্রীদের কাজ হচ্ছে বংশধর দেওয়া আর স্বামীর মনোরঞ্জন করা। আমি তো তোমার কাছে শুধু এটাই চেয়েছি। আমার বিশাল এই ঐশ্বর্য ভোগ করছো তুমি । না চাইতে দামি দামি গহনা পোশাক পাচ্ছো এটা তো এমনি এমনি না। জুবায়ের ফারুকী ব‍্যবসায়ী মানুষ। কিভাবে নিজের আখের গোছাতে হয় ভালোভাবে জানে।
অধরা জ্বলে উঠলো লোকটার কথা শুনে। ওর সামনে থাকা এই মানুষটা পৃথিবীর সবচাইতে নিকৃষ্ট মানব বলে মনে হচ্ছে। ঝাঝালো কন্ঠে উত্তর দিলো,

> এই মূহুর্ত থেকে আপনি আমার চোখের সামনে থেকে দূর হয়ে যান। কখনও আপনার মুখ যেনো আমাকে দেখতে না হয়। ছিঃ আপনি সত্যিই মানুষ না। হৃদয়হীন পাষাণ। কিভাবে পারলেন একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করতে। মুক্তি দিন আমাকে। আমি চাইনা আপনার ধন সম্পদ আর ঐতিহ্য।
জুবায়ের চোখ বন্ধ করলো। কি একটা ভেবে খুব শান্ত হয়ে বলল,

> দশটা মাস সময় দাও আমি তোমাকে মুক্তি দিব। এই বাচ্চাটা আমাদের খুব দরকার। আচ্ছা আমার মতো ছেলের গার্লফ্রেন্ড থাকাটা কি খুব অবাক হওয়ার মতো কঠিন কাজ? যুবক ছেলেদের গার্লফ্রেন্ড থাকতে নেই? আমি কি জানতাম তোমার সঙ্গে আমার বিয়ে হবে! জুহিকে ভালোবাসতাম। বাবা ওকে মানেনি। বরং কন্ডিশন চাপিয়ে দিলো তোমাকে বিয়ে করতে হবে আর যত তাড়াতাড়ি তোমার বেবি হবে তত তাড়াতাড়ি আমি তোমার থেকে মুক্তি পাবো। বাচ্চাটা পেয়ে গেলে তোমার মুক্তি হবে সঙ্গে আমারও।

জুবায়ের একদমে কথাগুলো বলে থামলো। বোঝালো সে নিজেও ভুক্তভোগী। কিন্তু অধরা মানতে পারলো না। একটা বাচ্চার জন্য ওকে এই বাড়ির বউ করে আনা হয়েছিল। এই বাচ্চাটার মধ্যে কি আছে? এরা এতটা মরিয়া কেনো? অধরা কুটিল হাসলো। প্রাণ থাকতে ও এই বাচ্চাটা ও এদের হাতে দিবে না। যতদিন বাচ্চাটা না হচ্ছে এরা ওর কোনো ক্ষতি করবে না। অধরা পালাবে। সুযোগ পেলেই পালাবে। পালানোর রাস্তা আর দরকারি জিনিসপত্র সবটা হাতের মুঠোয়। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। শাশুড়ি মায়ের রহস্যটা জানা দরকার। কথাগুলো ভেবে ও উত্তর দিলো,

> বুঝলাম। এতোটাই ভালোবাসেন জুহিকে?যে নিজের মায়ের মৃত্যুতে আপনার কষ্ট হয়নি কিন্তু গার্লফ্রেন্ডের বিয়ের খবর শুনে আপনার কষ্ট হচ্ছে? মায়ের সঙ্গে যে বেইমানি করতে পারে সে স্ত্রীর সঙ্গে করবে তাতে সন্দেহ কিসের? এটা আপনার সঙ্গে মানানসই।
জুবায়ের এবার জ্বলে উঠলো। মেয়েটা না জেনে কথা বলছে। ওর ইচ্ছা হলো ঠাটিয়ে দুটো থাপ্পড় দিতে কিন্তু দিতে পারলো না।। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

> আজেবাজে কথা বলবে না। যিনি মারা গেছেন উনি আমার নিজের মা ছিলেন না তবুও আমি উনাকে যথেষ্ট ভালোবাসি শ্রদ্ধা করি। বাড়িতে যিনি আছেন উনি আমার মা।
অধরা ভ্রু কুচকে ফেলল। যাকে এতদিন নিজের শাশুড়ি ভেবে আসছিল সে আসলে ওর শাশুড়ি না। কিন্তু কে উনি? আর এতদিন এসব ওর থেকে গোপন রাখা হয়েছিল আরও কতো সত্যি আছে এই বাড়িতে? অধরা কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল,
> উনি কে ছিলেন? আপনার বাবার সঙ্গে উনার কি সম্পর্ক? আর আপনার বোনেরা ওরা কে?

> বাবারা ছিলেন জমজ দুই ভাই।মারা গেছেন উনি আমার চাচিমা ছিলেন। এই বাড়ি আর অর্থসম্পদ সব আমার চাচার ছিল। চাচার মৃত্যু হয়েছিল হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনাতে। পরে চাচির দেখাশোনার দায়িত্ব নিলেন বাবা। যেহেতু বাবা দেখতে চাচার মতোই ছিল তাই সকলে ভাবতো চাচা বেঁচে আছেন। চাচি তো ঘরবন্দি ছিলেন। বাবার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো ছিল না। বাংলাদেশের থেকে একদম খালি হতে এসেছিলেন। তবে বাবা কখনও দরকার ছাড়া এই বাড়িতে আসতেন না।

সম্পত্তি চাচির নামে ছিল। উনার কোনো ছেলেমেয়ে ছিল না। বাবার আমার মায়ের সঙ্গে বিয়ে হলো। যদিও আগে থেকে তাঁরা পরিচিত। আমাদের সব ভাইবোনদের বাবা চাচিমায়ের হাতে তুলে দিলেন। কাগজে কলমে সবটা আমাদের নামে করিয়ে নিলেন। চাচিমাও আমাদের নিজের সন্তানের মতো লালনপানল করেছেন। যাইহোক অনেক জেনে ফেলেছো আর বলতে পারবো না। আপাতত ক্ষমা দাও আর চুপচাপ খাওয়া খেয়ে নাও। প্রমিজ বাচ্চাটা আসলে তোমাকে আর আটকে রাখবো না।

জুবায়ের একদমে নিজের বাবা মায়ের ইতিহাস বর্ণনা করে ফেলল। অধরা চোখ বন্ধ করে বুঝে নিলো এদের বিষয়টা। জুবায়েরকে ওর একদম পছন্দ হচ্ছে না। স্বার্থপর মানুষ একটা। বাচ্চার জন্য কতটা জঘন্য একটা কাজ করেছে তবুও মনে কোনো অনুতাপ নেই। এই লোকটাকে ও ভয়ানক শাস্তি দিবে। গতকাল রাতের দেখা দৃশ্যটার মানে ও এতক্ষণে বুঝতে পারলো। মনে হলো এদের সবাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়নি তো?

সকালে জুবায়ের বাসা থেকে বেরিয়েছে আর ফিরে আসেনি। বিকেল হতে চলেছে।আজকে হয়তো আসবেও না। জুহির সঙ্গে থাকবেন। এখানে বউ গার্লফ্রেন্ড এসব ডাল ভাতের মতো। একজন ছেলের একাধিক গার্লফ্রেন্ড থাকাটা মনে হয় ফ‍‍্যাশান।এতো এতো কাহিনি জানার পরে ও মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছিল। শাশুড়ি মা বলে যাকে জেনে এসেছে তাঁকেই ও শাশুড়ি বলে মানে। জুবায়ের ঠিক নিজের মায়ের মতো।

এই বয়সে এসেও ভদ্রমহিলা বাচ্চাদের ড্রেস পরে ঘুরাঘুরি করে। মেয়েগুলোও তাই। কথা বলতে জানলে এরা কি যে করতো আল্লাহ্ ভালো জানেন। হঠাৎ ওর সেই ধাঁধার কথা মনে পড়লো। অধরা চুপচাপ বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়াতেই একটা অনাকাঙ্খিত দৃশ্য ওর চোখে পড়লো। বাড়ির গেটের সামনে জুবায়ের এক মেয়ের সঙ্গে গভীর চুম্বনে লিপ্ত। আশেপাশে লোকজন আছে ওরা যেনো ভূলে গেছে। অধরার চোখ ছলছল করে উঠলো। জুবায়েরকে ও ঘৃণা করে তবুও লোকটা ওর স্বামী। ওর গা গুলিয়ে আসলো। দ্রুত বাথরুমে গিয়ে বমি করে দিলো। কয়েকবার বমির পরে শরীর থরথর করে কাঁপতে লাগলো।। শরীর হঠাৎ করেই দুর্বল হতে শুরু করেছে। ঘুম হচ্ছে ক্ষুধা বেড়েছে। মাতৃত্বকালিন সমস্যা গুলো দেখা দিচ্ছে। অধরা বাথরুম থেকে বাইরে এসে দেখতে পেলে একজন কাজের মেয়ে ফল কাঁটছে। অধরা দ্রুত মেয়েটার কাছে গিয়ে বলল,

> আপনি চলে জান আমি কাটতে পারবো।
> স‍্যারের হুকুম না মানলে শাস্তি আছে ম‍্যাম।
অধরা কিছু একটা ভেবে পাশে বসে পড়লো। এক টুকরো আপেল মুখে পুরে নিয়ে বলল,
> ও আচ্ছা। আমি পানি খেতে চাই!আনতে পারবে নাকি আমি যবো?
> না না ম‍্যাম আমি যাচ্ছি।

মেয়েটা দ্রুত উঠে গেলো। অধরা অপেক্ষা করলো না। আয়নার দিকে পেছন ঘুরে ছিল তাই ফল কাটার ছুরিটা দ্রুত নিজের কাপড়ের নিচে লুকিয়ে ফেলল। এটাইতো দরকার ওর। এটা দিয়ে ও জুবায়েরকে খু*ন করে নিজেও সুইসাইড করবে। কহিনুর বলে এই পৃথিবীতে কোনো মেয়ের জন্ম নিবে না। পাপের দুনিয়ায় প্রবেশ করে নিজের মায়ের মতো ভূল কখনও সে করবে না। অধরা নিজের পেটে হাত রেখে বিড়বিড় করে বলল,” মাম্মাকে ক্ষমা করে দিস মা।

কহিনুর পর্ব ২

জুবায়ের জুহিকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিল। মায়ের সঙ্গে দেখা করানোর জন্য বাড়িতে এনেছে কিন্তু বাবার ধমক শুনে ওকে একা বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে হচ্ছে। ও বাবা চেয়েছে এই দশটা মাস ও যেনো অধরার পাশাপাশি থাকে। জুবায়ের মুখ থমথমে করে জুহিকে এগিয়ে দিয়ে অধরার ঘরের সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লো। কেনো জানি মেয়েটার সামনে ওর যেতে ইচ্ছা করছে না। অধরা অধীর অগ্রহে বসে আছে। কাছে আছে চকচকে খঞ্জর। সামনে পেলেই লোকটার বুকে ও এটা বসিয়ে দিবে। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে সুলতান জুবায়ের ফারুকী। অধরা নয়ন ভরে দেখবে সেই মৃ*ত্যু।

কহিনুর পর্ব ৪