কাঞ্চাসোনা ২ পর্ব ২০

কাঞ্চাসোনা ২ পর্ব ২০
জাকিয়া সুলতানা ঝুমুর

“তাহলে এখন ভুলের মাসুল দাও।”
মিতু ভ্রু কুঁচকে বললো,
“মাসুল দিতে হবে?”
সামির মিতুর হাতের আঙুল তার হাতের মুঠোয় পুরে বললো,
“হ্যাঁ।ভ/য়ংকর মাসুল।”
মিতু কিছু না বলে সামিরের জ্বরে লাল হওয়া চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে।খানিক পরে বললো,
“ভালোবাসেন আমায়?”
সামির মাথা নেড়ে বললো,
“নো,নেভার।”

মিতু হাত বাড়িয়ে সামিরের গাল ধরে বললো,
“এই হৃদয়ে এতো র/ক্তক্ষরণ হচ্ছে আপনার মায়া লাগছে না?”
সামির মিতুর হাতে ছোট করে ঠোঁট ছুঁয়িয়ে বললো,
“ভালোবাসলে আরো বেশী র/ক্তক্ষরণ হবে।সইতে পারবে?”
মিতু এক দমে বললো,
“একবার ভালোবেসেই দেখুন;আপনার জন্য জান কো/রবান।”
সামির হাসে।আস্তে করে বললো,
“জান কো/রবান করতে হবে না,আপাতত ভুলের মাসুল চুকিয়ে দাও,খেলা খতম।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মিতুর বুকের মাঝে অবস্থানরত হৃদপিণ্ড ধিমধিম তালে ছুটে যায়,মেয়েলি মন মাসুল হিসেবে ধরে নেয় সামিরের তৃপ্তি,কিন্তু এ যে অপরাধ!ঘোরতর অপরাধ।তার যথেষ্ট বিশ্বাস আছে সামিরের মতো ছেলে এমন কিছু করবেনা,কিন্তু সে যে এখন জ্বরে!যদি উল্টাপাল্টা কিছু করে?মিতুর মুখের ভাবভঙ্গিমা পরিবর্তন হয়ে যায়।চোখের পাতা ঘনঘন পলক ফেলে,সামিরের দিকে তাকিয়ে থাকে।সামির মিতুর চোখের দৃষ্টি দেখে উঠে বসে তারপর আস্তে করে খাট থেকে নেমে দাঁড়ায়।মিতু নিজেও উঠে বসে বললো,

“কি হলো!কোথায় যাচ্ছেন?”
সামির মুচকি হাসে কিন্তু কোনো কথা বলেনা।আলনার সামনে গিয়ে একটা শার্ট হাতে নিয়ে গায়ের টিশার্ট একটানে খুলে ফেলে।প্রিয় পুরুষকে এমন আদুল গায়ে দেখে মিতুর কেমন জানো লাগে,ফর্সা গায়ের সামিরকে আরো বেশী করে ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে হয়;মুগ্ধ চোখে সামিরকে পর্যবেক্ষণ করে।সামির শার্ট পরতে পরতে মিতুর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হেসে বললো,

“এভাবে তাকানোর অপরাধে কিন্তু ঘোরতর শা/স্তি হবে মিতু।”
মিতু লজ্জা-চোখে মাথা ঘুরিয়ে অন্যপাশে তাকায়।সামির কাছে এসে বললো,
“বসে আছো কেনো?উঠো।ভুলের মাসুল কিন্তু দিতেই হবে?নো ছাড়াছাড়ি।”
মিতু চোখের দৃষ্টি নিচে করে মিনমিনিয়ে বললো,
“আপনিই তো উঠে গেলেন।”

মিতুর কথায় সামির হাসে।নিচু হয়ে বললো,
“মনটা এতো দুষ্টু পথে যায় কেনো?মাথায় এসবই ঘুরে?”
সামিরের কথায় মিতু মুচকি হাসে।সামিরের চোখে চোখ রেখে বললো,
“তাহলে ভুলের মাসুল উসুল করবেন কি করে?”
সামির দরজার দিকে যেতে যেতে বললো,

“বিয়ে করবো।এতো বড়ো ভুল করার অপরাধে সারাজীবনের জন্য আটকে দেবো।”
কথাটা বলে সে মিতুর দিকে তাকায় মিতুর প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য।মিতু হতবিহ্বল হয়ে তাকিয়ে আছে,বিষ্ময়ে ঠোঁট ফাঁকা হয়ে গেছে।তার চোখের দৃষ্টিই বলে দিচ্ছে সে বিশ্বাস করে না।সামির বললো,
“কি!বসেই থাকবে?জলদি আসো।”
মিতু চটপট দাঁড়িয়ে সামিরের কাছে আসে।
“আসলেই কি আমরা বিয়ে করবো?”
সামির হাত মুড়ে দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়ায়।

“এই ছোট্ট মেয়েটার ছোট্ট হৃদয় থেকে আর কতো র/ক্তক্ষরণ করাবো!”
মিতু কিছু বলার আগেই সামির বললো,
“তুমি আগে বেরিয়ে যাও পাঁচ মিনিট পরেই আমি আসছি।”
“নাস্তা করে নিন;ওষুধ এনেছি তো।”
“বিয়ের পরে সব করবো।যাও”

মিতু কিছু না বলে চুপচাপ বেরিয়ে যায়।সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে ভাবে,আজকে তার সাথে সে’সবই হচ্ছে যা সে কখনো কল্পনাও করেনি;সামিরের আত্মসমর্পণ,কাছে টেনে নেওয়া,স-ইচ্ছায় আদরে লেপ্টে দেওয়া,এবং বিয়ে! মিতুর মন তখনো ঘোরে আটকে আছে।এটাও সম্ভব?কোনোমতে হেটে গেইটের বাহিরে এসে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ায়।কিছুক্ষণ পরেই সামির বেরিয়ে আসে।হাত দিয়ে চুল পেছনে ঠেলতে ঠেলতে মিতুর কাছে এসে দাঁড়ায়।একটা রিক্সা ডেকে দুজনে উঠে পড়ে।মিতু বারবার মাথা ঘুরিয়ে সামিরের দিকে তাকায়।সামির সামনে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো,

“এই যে এভাবে তাকাও এইজন্যই তো বিয়ে করছি।”
মিতু কিছু না বলে সামিরের হাত আঁকড়ে ধরে।সামিরের শরীর প্রচন্ড গরম এই গরম ছোঁয়া মিতুর অসহ্য রকম ভালো লাগছে।তারপরের মুহুর্তটা মিতু কোনো কথা বললো না,পরিবারের কথা ভুলে নিজের স্বার্থ হাসিল করতে উঠে পড়ে লাগলো।বর্তমান,ভবিষ্যৎ কোনো কিছু না ভেবেই সামিরকে বিয়ে করে নিলো।তার একমাত্র উদেশ্য হলো সামিরকে নিজের করে নেওয়া,এটা ছাড়া বাকি দুনিয়াদারি তার কছে বড়োই বি/ষাক্ত লাগছে।বিয়ের পরে সামির একটা মিষ্টির দোকান থেকে চারটা ছানা মিষ্টি কিনে।মিষ্টিগুলো মিতুর সামনে ধরে বললো,

“নাও;মিষ্টিমুখ করো।কেউতো নেই বরন করার আমিই করি।”
থেমে সামির আবার বললো,
“যা টাকা ছিলো বিয়ের কাজে সব শেষ,আপাতত তোমাকে কিছুই দিতে পারছিনা।দুঃখিত মিতু।”
মিতু জলদি বললো,
“আমার কিছুই লাগবে না।”

মনে মনে ভাবে আপনাকে পেয়ে গেছি আর কি চাইবো?আর তো কিছু চাওয়ার নেই,আপনিই আমার বড়ো পাওয়া।মিতু হেসে একটা মিষ্টি হাতে নেয়।সামির মিষ্টিটা মুখে নিতে নিতে মিতুকে দেখে।আশ্চর্যজনক ভাবে মিতুর এতো লজ্জা লাগছে যে বলে বোঝানোর মতো না।সামিরের চোখের দৃষ্টি বড়োই অসহনীয় লাগছে,মনে হচ্ছে এই চোখের দৃষ্টি বুক ছিদ্র করে দিচ্ছে।খাওয়ার পরে দুজনে আবার রিক্সায় উঠে বসে।
সামির মিতুর হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বললো,

“বাসায় এখন এসব জানানোর কোনো দরকার নেই,আমার একটা চাকরি হোক আমি প্রস্তাব পাঠাবো যদি রাজি হয় তো আবার বিয়ে করবো আর রাজি না হলে বিয়ের কথা জানাবো।কেমন?”
মিতু মাথা নেড়ে সায় দেয়।পরম শান্তিতে সামিরের কাধে মাথা রেখে সস্থির নিঃশ্বাস ফেলে আস্তে করে বললো,
“এই…”
মিতুর ডাকে সামির তার দিকে তাকায়।
“হুম!”
“আমাদের সম্পর্কটা জানি কি?”

সামির হাসে।মিতু তার মুখ থেকে শুনতে চাচ্ছে।মাঝে মাঝে জানা কথাও প্রিয় মানুষের মুখ থেকে শোনার এক অন্যরকম সুখ আছে।মিতু সেই সুখটাই পেতে চাচ্ছে।সামির মোটেই তার ছোট্ট বউটাকে সুখ থেকে বঞ্চিত করতে চাইছে না।মিতুর চোখে চোখ রেখে বললো,
“তুমি আমার বউ।”
উত্তরটা শুনে মিতু আরো শক্ত করে সামিরের হাত আঁকড়ে ধরে।তিনচাকার রিক্সায় অতি সাধারণ মানবের পাশে বসেই নিজেকে দুনিয়ায় সবচেয়ে সুখী মানুষ ভাবে।

ধ্রুব সন্ধ্যায় বাসায় এসে দেখে সকাল তার মায়ের মাথায় তেল দিয়ে দিচ্ছে।মনোয়ারা কিছু বলাতে সকাল হেসে কুটিকুটি হয়ে যাচ্ছে।এমন দৃশ্য দেখে ধ্রুবর মনটা ভরে যায়।সারাদিন কাজ করে বাসায় এসে এমন মনভালো করার মতো দৃশ্য দেখলে সব ক্লান্তি নিমিষেই পালায়।ধ্রুবকে দেখে সকাল উঠে দাঁড়ায়।মনোয়ারা চলে গেলে সেও পিছুপিছু ধ্রুবর সাথে রুমে ঢুকে।ধ্রুব হাতের ব্যাগ রেখে ফ্রেশ হয়ে আসে।সকাল তখনো দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।ধ্রুব বের হয়ে বললো,
“কি ব্যাপার!আমার পাখিটার মন খারাপ নাকি?”

সকাল মুগ্ধ চোখে ধ্রুবকে দেখে।ধ্রুবর কথাগুলো খুব আদুরে,এমন কথায় সে সুখ পায় আর সুখ পাবেনা কেনো প্রতিটা মেয়েই চায় তার বর তার কাছে নরম থাকুক,আহ্লাদী হোক,আদুরে গলায় ডাকুক;সকাল এই সব পেয়ে খুব খুশী।আজকাল ধ্রুবর কাছে গেলে বুকে আ/গুন লাগার মতো জ্ব/লাপুড়া হয়,ইচ্ছে করে সারাটাক্ষন ধ্রুবর বুকে লেপ্টে থাকতে।ধ্রুব যে তাকে খুব করে চায় এটা বেশ বুঝে,রাতের ছটফটানিও টের পায়।

তাকে কাছে টানার এতো ইচ্ছে থাকা সত্বেও কেনো কাছে টানে না?ধ্রুব কি সকালের সম্মতি চাইছে?লোকটা কেনো বুঝেনা সকালও যে সমানভাবে তাকে চায়,সময়গুলো আরো রঙ্গিন করতে প্রজাপতিরা উষ্কে দেয়।তাছাড়া মেয়েরা কি নিজে ধরা দেয়?নাকি ছেলেদেরই কাছে টানতে হয়।ধ্রুব সেখানে তার সম্মতির অপেক্ষা করছে!সকাল দম ফেলে ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে থাকে।ধ্রুব তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছে সকালের কাছে আসে।

“কি ব্যাপার?”
সকাল মাথা নাড়ে।
“কিছু না।”
“এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?মতলব কি?”
“আপনার দিকে তাকাতে মতলবের দরকার আছে?”
“হ্যাঁ।”
সকাল খুব আস্তে করে বললো,
“তাহলে,মতলব খুব ভ/য়ংকর।”

ধ্রুব মাথার পানি ঝাড়া দিয়ে সকালের উপরে ফেলে বললো,
“আমার এতো মিষ্টি বউ ভয়ংকর মতলবও করতে পারবে?”
“পারবে।”
“কখন?”
সকাল ধ্রুবকে ঠেলে সরিয়ে দেয়।দরজার দিকে যেতে যেতে বললো,
“যখন সময় তখন।”

কিছুক্ষণ পরে ধ্রুব আর সকাল সবার সাথে রাতের খাবার খায়।খাবার খাওয়ার পরে ধ্রুব ড্রয়িংরুমে তার আব্বার সাথে কথা বলতে বসে।কথা বলতে বলতে কখন যে ঘড়ির কাঁটা দশটার ঘর পেরিয়ে এগারোয় গিয়েছে সেটা ধ্রুব বুঝতেই পারেনি।সে উঠে রুমে এসে ঢুকে।রুমে পা দিয়ে দেখে রুম অন্ধকার,তার পরে পারফিউমের কড়া ঘ্রাণ এসে নাকে লাগে।হাত বাড়িয়ে লাইট জ্বালিয়ে সামনে তাকিয়ে চমকে যায়,ঘূর্নি/ঝ/ড়ের প্রবল বাতাসে ধ্রুব নড়বড়ে হয়ে যায়।সকাল একটা কালো শাড়ি পড়েছে।ফর্সা গায়ে কালো শাড়ি পরাতে শরীরটা আরো বেশী ফুটে আছে।খোলা চুলে,মুখে সাজের বাহারে ধ্রুব কথা বলতে ভুলে যায়।সকাল এগিয়ে আসে।ধ্রুবর চোখে চোখ রাখতে সাহস পাচ্ছে না।মাথা নিচু করেই বললো,

“কেমন লাগছে?”
ধ্রুব মাথা নেড়ে সম্মতি দিয়ে বললো,
“সুন্দর।”
সকাল ধ্রুবর মাতাল করা চোখের চাহনীর দিকে তাকিয়ে বললো,
“প্রেমে পড়ার মতো সুন্দর?”
ধ্রুবর মনে হাজারো মৌমাছি ভো ভো করে উড়ে যায়।হাত পা কেমন শিরশির করে উঠে।
“প্রেমে তো সেই কবেই পড়েছি।”

সকাল ধ্রুবর গায়ের সাথে ঘেষে দাঁড়ায়।
“আপনি তো প্রেমিকের মতো প্রেমে পড়েছেন।বরে’রা আরো বেশী প্রেমে পড়ে।আপনি সেভাবে পড়ছেন না।”
ধ্রুবর হাত আস্তে করে সকালের কোমড় আঁকড়ে ধরে।
“বর এর মতো প্রেমে পরার সুযোগ দিচ্ছো না তো।পরি কি করে?”
সকাল আস্তে করে বললো,
“বর নিজেই সুযোগ খুঁজে নেয় তাকে সুযোগ দিতে হয় না।”
ধ্রুব সকালকে রাগাতে বললো,

“বাচ্চা বউ তো তাই ভ য় পাই।কাছে আসলে না আবার কান্নাকাটি করে মিতুর রুমে চলে যায়।”
ধ্রুবর কথায় সকাল সত্যিই রেগে যায়।ধাক্কা দিয়ে ধ্রুবকে সরিয়ে গাল ফুলিয়ে বারান্দায় চলে যায়।এই লোক কিচ্ছু বুঝে না।সকালের খুব রাগ লাগে।অভিমানে গাল ভারী হয়।সে বাচ্চা!আরেকবার কাছে আসুক তখন মজা দেখাবে।এসব ভাবতে ভাবতেই ধ্রুব বারান্দায় চলে আসে।সকালের গা ছুঁইছুঁই করে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকায়।তারপর বললো,
“আজকে কোন চাঁদটা দেখি বলোতো?আকাশে এক চাঁদ আমার বারান্দায় আরেক চাঁদ।”
সকাল কিছু বলে না।ধ্রুব আবার বললো,

“এই;এতো সুন্দর লাগছে কেনো?ইশ!কি গুলোমুলু গাল!ইচ্ছে করছে আদরে আদরে খেয়ে ফেলতে।”
সকাল বললো,
“আমি বাচ্চা এসব চলবে না।দূরে যান।”
ধ্রুব সকালকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে,আস্তে করে বললো,
“আচ্ছা তুমি বাচ্চা না যাও।তুমি আমার সোনা বউ।অকে?”
সকাল মুচকি হাসে।
“আমি আপনার জন্য সেজেছি।”
ধ্রুব সকালকে নিজের সাথে চেপে ধরে,আদুরে গলায় বললো,
“জানি তো।”

তারপর দুজনেই চুপ।বাহিরের নিস্তব্ধতা দুজনের মাঝে বিচরণ করে।সামিরের শ্বাস ঘন হয়ে আসে।সামিরের বুকের ধুকপুকানি সকালের পিঠে লাগছে।তারও কেমন হাফসাফ লাগে।ধ্রুব আস্তে করে সকালের ঘাড়ে চুমু দেয়।সকাল কেঁপে ওঠে কিন্তু সরে যায় না যেনো ধ্রুবকে বুঝাচ্ছে সেও চাইছে।ধ্রুব ইঙ্গিতটা বুঝে নিলো।সকালকে তার দিকে ফিরিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।লম্বাগড়নের ধ্রুব ঘাড় নুইয়ে সকালের গলায় নিজের চুম্বন এঁকে দেয়।সকাল কেঁপে উঠে।খামচে ধরে ধ্রুবর গেঞ্জি।ফিসফিস করে বললো,

“আমি বোধহয় পা,গল হয়ে যাচ্ছি।”
ধ্রুব সকালের দিকে তাকিয়ে হাসে।সারা মুখে আদরে ভরিয়ে দিয়ে বললো,
“একবার পা,গল হয়ে দেখো বারবার পা,গল হতে ইচ্ছে করবে।ট্রাস্ট মি।”
একথা বলে ধ্রুব সকালের নরম ঠোঁটের মাঝে নিজের সুখ খুঁজে নেয়।কাঁপা কাঁপা দেহে সকালও ধ্রুবকে সঙ্গ দেয়।সে ধ্রুবর যতো কাছে যাচ্ছে শুধু মনে হচ্ছে ধ্রুব খুব সুখের,ধ্রুব মানেই সুখ।

ধ্রুব সকালকে ছেড়ে দাঁড়ায় কিন্তু সকাল ছাড়ে না সে লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে ধ্রুবর বুকেই মুখ লুকায়।তিরতির করে তার শরীর কাঁপছে।বি/ষাক্ত অনুভূতি ধ্রুবর সারা শরীর কাঁপিয়ে দিয়ে যায়,রন্ধে রন্ধে মিলনের তীব্র আকাঙ্খা ছেঁয়ে যায়।ধ্রুব এতো ভালো মানুষ হতে পারছেনা।কাঁপা কাঁপা হাতে সকালের ছোট শরীরটা পাজকোলা করে নেয়।সকাল কিছু বলার আগে ধ্রুব তার ঠোঁটে চুমু খেয়ে কাতর গলায় বললো,

“নো এক্সকিউজ।প্লিজ সোনাপাখিটা।”
সকাল চুপ হয়ে যায়।মন বুঝে যায় আজকের রাতটা ভিন্ন হবে।মন কুঠুরিতে ভ/য়ের আনাগোনা শুরু হয়।ধ্রুব পা,গলের মতো সকালের সানিধ্য চায়।তারপর পরম আনন্দে দুজনে এক হয়ে যায়।জন্মউপোস ধ্রুব জীবনের প্রথমবার নারী-দেহের সানিধ্য পেয়ে দিশা হারায়,

কাঞ্চাসোনা ২ পর্ব ১৯

আদরে আদরে ধ্রুব তার ছোট্ট পাখিকে পা’গল বানাতে চায়।পাখিকে খোলা আকাশে উড়াতে চায়,সুখের রাজ্যের সবকটা দেশ ঘুরিয়ে আনতে সে কি প্রচেষ্টা!ধ্রুবর মায়ার হাতছানি,আদরের তীব্রতা,পা’গল করা বেশামাল কথার তোপে সকাল লজ্জায় হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে।ইশ!ইশ!এই লজ্জা সে কোথায় রাখবে?ধ্রুব এমন কেনো?ইশ!সকালের ম/রে যেতে ইচ্ছে করছে।লজ্জায় খাটের তলায় ঢুকে গেলে কেমন হবে?নাকি সেখান থেকেও ধ্রুব টেনে তার কাছে নিয়ে আসবে?এতোকিছুর পরেও সকাল যেটা উপলব্ধি করে সেটা হচ্ছে সুখ।চোখের কার্নিশ বেয়ে যখন পানির রেখা নেমে যায় তখন সকাল মনে মনে স্বীকার করে নেয়,ধ্রুব মানেই তার এক আকাশ সুখ।

কাঞ্চাসোনা ২ পর্ব ২১