তাসের ঘরে তুমি আমি পর্ব ১১

তাসের ঘরে তুমি আমি পর্ব ১১
আয়াশ রহমান

বাসার দরজা খুলে দেখে শানের মাকে মিথিলা
দুই হাতে আগলে নিয়ে বসেছে। শানের বাবা পাশে থেকে বাতাস করছে। (প্রশ্নপর্বে মাত্র তিনজন সঠিক উত্তর দিয়েছেন। বাকি সবাইকেও ধন্যবাদ এত ক্রিয়েটিভ চিন্তা ভাবনা করার জন্য)
মনে হয় ছেলের খবর শুনে অতিরিক্ত প্রেশারে এমন হয়েছে। শান দরজার পাশে দাঁড়িয়ে মা বলে উঠল।
সাথে সাথে মিথিলা সহ সবাই শানের দিকে তাকালো। শান বুঝল ব্যাপারটা৷ সে লাঠি নিয়ে বলল,

‘মা বাবা কই তোমরা? দেখ আমি এসেছি।’
শানের মা ছেলের আওয়াজ শুনে ছুটে এসে শানকে জড়িয়ে ধরল৷
‘বাবা, তুই এসেছিল, আমি তো মনে করেছিলাম,
‘মা শান্ত হও, আমার কিছু হবেনা। বাবা কোথায় তুমি? মা এমন করছে কেনো?’
‘আর বলিস না, তোর জন্য কেদে কেটে একাকার মাথা ঘুরে পড়েই গেছিল।’ এই মেয়েটি না থাকলে কি যে হত!!’
শান মিথিলা কে দেখেও না দেখার ভান করে বলল,’কোন মেয়েটি?’

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

‘মিথিলা, পাশের বাসায় থাকে। তোর সব কথা বললাম, পুতুলের তোর উপর আমাদের উপর করা ব্যবহারের কথাও।’
শান এতসময় মাকে জড়িয়ে ধরে ভাবছে, মিথিলা সব জেনেও তার বাসায় আছে? সে বিবাহিত জানার পরও!!
শানের মাকে সে সোফায় বসালে তার মা জিজ্ঞেস করল, ‘বাবা তোকে ছাড়ল কিভাবে?’
শান তখন সব কথাই বলল৷ সে সাব্বিরের কথা বলেছে, পুতুল কতদিন থেকে অফিস যায়না সব।
সাব্বিরের সাথে তার মেলামেশা।
সব শুনে শানের মার চোখ লাল হয়ে গেছে।। ‘বাবা আনি আগেই সন্দেহ করেছিলাম। এই কালনাগিনীকে৷ এতদিন আমাদের মিথ্যা বলেছে অফিসে যাওয়া নিয়ে!!’

‘শানের মা ওর ব্যাপারে আর বলো না। সব তো বুঝাই যাচ্ছে যে ওই সাব্বির ওকে মেরে পালিয়েছে।’
‘হুম।’
মিথিলা এক নাগাড়ে তাকিয়ে আছে শানের দিকে৷ হয়ত তার ভালোবাসার মানু্ষটা কত কষ্টে আছে সেটাই দেখছে।
‘মা একটু বসো আমি রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসি।’
‘বাবা রুমে তো সিল করে দিয়ে গেছে পুলিশরা।ওইখানে ঢুকা যাবে না। আমাদের রুমে যা।’
‘অহ।’

‘চল তোকে দেখিয়ে দেই। আমাদের রুম তো চিনবি না না দেখলে।’
‘না আন্টি আমি নিয়ে যাচ্ছি।’ মিথিলা উঠে বলল।
শানের মা বাবার মিথিলাকে খুব পছন্দ হয়েছে। পিচ্চি মেয়ে একটা কিন্তু চোখে মুখে কি মায়া। শানের মায়ের বারবার মনে হচ্ছে ইসস যদি পুতুলের আগে এই মেয়েটি পেতাম‌‌‌!!
শান কি করবে? সে তো বলতেও পারছে না যে সে দেখতে পায়!
অগত্যা মিথিলা শানকে ধরে নিয়ে গেল। রুমে নিয়ে গেলেই শান জিজ্ঞেস করল,’তুমি এখানে কেনো মিথিলা?’
‘যাকে ভালবাসি তার অসময়ে এগিয়ে আসব না?’

‘এরপরও বলছো ভালোবাসো? এত কিছু হওয়ার পরও? আমি বিবাহিত মিথিলা, এজন্যই তোমাকে মেনে নেইনি।’
‘আমার কিচ্ছু যায় আসে না। আমি আপনাকে ভালোবাসি, যদি আপনি আপনার বউকে ভালবাসতেন আমি নিজে সরে যেতাম। কিন্তু এখন তো সে নেই। আর তার প্রতিও আপনার ভালবাসা থাকার কথা নয় কারন দিনের পর দিন সে আপনাকে ঠকিয়েছে।’

‘তোমার কি একটুও সন্দেহ হচ্ছে না? যদি আমি নিজেই খুন করি?’
মিথিলা শানের কথায় একটু চমকে উঠল। শান জবাবে মুচকি হাসল।
মিথিলা আরো কিছু বলবে তখনই শানের বাটনওয়ালা ছোট মোবাইল ফোন টা বেজে উঠল। শান ফোন ধরে কানের কাছে নিল,
‘হ্যালো’
—–
‘হ্যা বলুন অফিসার।’
—-
‘কিহ!!’
—–
‘আরেকজনের লাশ পাওয়া গেছে?’

তাসের ঘরে তুমি আমি পর্ব ১০

‘কার!!’
জবাবে কি বলল অপাশ থেকে শোনা গেল না কিন্তু শানের হাত থেকে ফোনটা পড়ে গেলো। মিথিলাও পাশে অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে।
আবার তখনই রুমে যারা প্রবেশ করলো তাদের দেখে শান মিথিলা দুজনই চমকে উঠল।

তাসের ঘরে তুমি আমি পর্ব ১২